আরএসএস তার হাজার রকমের সহযোগী সংগঠন এবং রাজনৈতিক অঙ্গ বিজেপিকে নিয়ে '৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে। বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপ ঘিরে হিন্দু সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদি শিবিরের যে কাঙ্খিত অভিষ্পা ছিল, সেটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে তারা পেয়ে গেছে। গোটা বিশ্বের মতোই, আমাদের দেশ, ভারত যখন কোভিড ১৯ জনিত অতিমারীতে জর্জরিত, তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপের উপর তথাকথিত রামমন্দিরের ভিত স্থাপন করেছেন। আরএসএসের রাজনৈতিক কর্মসূচি 'সাম্প্রদায়িকতা'-র পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগের পথে এই ভাবে দেশের সরকার আত্মনিয়োগ করেছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে সম্পূর্ণ বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপের উপর এই তথাকথিত রামমন্দিরের ভিতপুজো আমাদের দেশকে সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদের এক ভয়ঙ্কর যুগের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। ... ...
কদিন হল অফিস বাসেই যাচ্ছি। অর্থে কুলাচ্ছে না। কত যোগান দেব ক্যাবের টাকা। যাক সেসব দুঃখ শুনিয়ে আর লাভ নেই। আজকে বাসে উঠে দেখলাম বেশ ফাঁকা। যদিও প্রতিদিন সকালে ফাঁকাই থাকে। কারণ, সিটের জন্য সকাল বেলা ভাইকে দৌড় করাই বাসস্ট্যান্ডে।
হেমন্তের সন্ধ্যায় টুপ করে আধার ঘনালো / মনে পরে সেইদিনগুলি
রাজার সঙ্গে আমার পরিচয়, ২০০৬ সালে। সে পরিচয়ে রাজনীতি একেবারেই ছিল না, ছিল পেশা সংযোগ। ২০১২ অবধিই বোধহয় আমরা একসঙ্গে একই অফিসে চাকরি করি। রাজার সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়েছিল বেলেঘাটার সুকান্ত মঞ্চে। সে ছিল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। মাঝেও দুয়েকবার দেখা হয়েছে, পথ চলতি মিছিলে। শেষ দেখা হবার পর, আমরা দুজন এক সিগারেটে টান দিয়েছিলাম। রাজা বলছিল, বইমেলার পুলিশ পেটাইয়ের কথা। পুলিশ পেটাইয়ের গল্প অনেক শুনেছি, নিজের অভিজ্ঞতাও একেবারে নেই, তা নয়। রাজার কাছ থেকে শোনা গল্পটা অন্যরকম লেগেছিল, তার কারণ, বইমেলায় রাজাকে যখন পুলিশ টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমি অন্যদিকে, ছবি তুলছিলাম। সে ঘটনার নৃশংসতা আমার প্রত্যক্ষ। আর রাজা ... ...
দা মিথ্যা কথা বলিবে। .. কখনো কাহাকেও সত্যি কথা বলিবে না। .. বলিলে গেঁড়ে বাঁশ!! বৌ কে চটাইবে না। .. তা হইলে উকিল মোকদ্দমা ইত্যাদির প্যাঁচে পড়িয়া মরিবে!! ছেলে বৌমা মেয়ে কাউকে বিশ্বাস করিবে না।
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম উপাদান লোকসাহিত্য যা সমৃদ্ধ হয়েছে জানা অজানা রচয়িতাদের রচিত অনেক মৌখিক কেচ্ছা, ধাঁধা ও কাহিনিতে। পদ্যের ছন্দে রচিত এইসব কাহিনি কিংবা গীতিকায় যেমন বিধৃত হয়েছে প্রেম ও ব্যার্থতার উপখ্যান, তেমনি উঠে এসেছে পারিবারিক দ্বন্ধ, রাজনীতি ও সামাজিক বৈষম্যের কথাও। গীতিকার প্রসঙ্গ উঠলেই, বহুল প্রচারিত ও জনপ্রিয় “ময়মনসিংহ গীতিকার” এর কথাই আগে আসে কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গীতিকাগুলো রয়ে গেছে আলোচনার কিছুটা বাইরে। সিলেট গীতিকার ক্ষেত্রেও তেমনি ঘটেছে। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার দুর্বোধ্যতাও তার বড় কারন হতে পারে। ... ...
বহুদিন অবধি বাবা আমাদের দুই ভাইবোনের চুল কেটে দিত। আমাদের বাসাবাড়ির ভেতরের উঠোনে ইঁট পেতে তার উপর বসতাম। গায়ে পুরোনো গামছা জড়ানো থাকত। বাবা নিজের দাঁড়ি কাটার কাঁচি আর আয়না নিয়ে আসত। তারপর সামান্য জলে চুল আধভেজা করে দিয়ে খ্যাঁচ খ্যাঁচ করে চুল কেটে দিত। মাথাটা হেমন্তের ফসলশূণ্য ক্ষেতের মতো হয়ে যেত! এটাতে কষ্ট হতো না বড়ো একটা। কষ্ট হতো ন্যাড়া করে দিতো যখন গরমের শুরুতে, তখন। দাঁড়ি কামানোর ক্ষুর দিয়ে নির্দয়ভাবে বাবা ন্যাড়া করে দিত। রুক্ষ চুলের গোছা ছড়িয়ে থাকতো পুরো উঠোন জুড়ে। মরুভূমির মতো মাথা আর এক সমুদ্র চোখের জল নিয়ে বসে থাকতাম ইঁটের ওপর। বাবা হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গিয়ে লাইফবয় সাবান ঘষে স্নান করিয়ে দিত। ... ...
দিল্লি এবং লাগোয়া অঞ্চলে কৃষক আন্দোলন তুঙ্গে। হরিয়ানার সমস্ত খাপ পঞ্চায়েতগুলি দিল্লির কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করেছে। অনেকগুলি খাপ পঞ্চায়েত সরাসরি বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করারও ডাক দিয়েছে। এর মধ্যে পাঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলনে খালিস্তানি স্লোগান দেবার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি খুব সম্ভবত বিজেপির আইটিসেলের প্রচার। কারণ যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছিল, বা বলা ভাল ভাইরাল করা হয়েছিল, সেটি অন্তত বছরখানেক আগের ব্রিটেনের ভিডিও। আইটি সেলের কারবার নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, কিন্তু এর মধ্যে পাঞ্জাবি অভিনেতা দীপ সিধু, যিনি আন্দোলনের মুখও বটে, একটি বিস্ফোরক কান্ড ঘটিয়েছেন। আন্দোলনে খালিস্তান যোগ থাকার অভিযোগ ওঠায় বরখা দত্ত, যিনি কারগিলের পর থেকেই প্রচন্ড 'জাতিয়তাবাদী' হয়ে উঠেছেন, দীপের একটি সাক্ষাৎকার ... ...
বসেছিলাম একা, তুমি আসলে / বসলে, বুঝলাম আমার হতে চাও, নিজের মতন করে
এমনিতে শান্তিনিকেতন বহুবার গেছি। খুব সাধের জায়গা। সাধ্যের ও বটে। মনের মধ্যে বেড়ানোর সাধ প্রচুর থাকলেও সাধের সংকুলান অপ্রতুল। করোনার জন্য সঙ্গত কারণেই এ বছর নয়। আগের বছর ঠিক এই সময়ে গিয়েছিলাম। শান্তিনিকেতন বহুবার গেলেও সোনা ঝুরির হাট টি দেখার সৌভাগ্য কোনোবারই হয়নি। এটা আমার দূর্ভাগ্য। এবার মনে মনে ঠিক করেই রেখেছিলাম, সোনা ঝু রির জঙ্গলেই রাত্রিযাপন করব। তাই আগে থেকে শকুন্তলা রিসোর্টে একটি ঘর বুক করে রেখেছিলাম। সত্যিই অপূর্ব এক রিসোর্ট, শকুন্তলা। সুচারুরূপে কৃত্রিম গ্রাম্য পরিবেশ সাজিয়ে তোলা। রিসর্টের ভিতরে পুকুরে রাজ হাঁস চরছে। গরুর গাড়ি দাঁড় করানো। মাটির প্রলেপ মাখানো খড়ের চালের কুটির। পোড়া মাটির সাজ সজ্জায় ভরানো ... ...
এই সুযোগে পুরোনো কাগজ পত্র গোছাতে গিয়ে কত বছর যে উজানে ফিরে গেলাম ! পুরনো চেকবুকের বান্ডিল, দেশে সম্পাদকের দফতরে পাঠানো চিঠি, সিকি শতাব্দী আগের ইলেক্ট্রিসিটি আর টেলিফোন বিল, অকারণে রয়ে যাওয়া বাজারের ফর্দ, উঠে যাওয়া ইস্ট ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের টিকিট, শিলংয়ের হোটেলের বিল, আংশিক পূরণ করা 'আমার শৈশব', আটানব্বই সালের এলআইসির রসিদ, ... ...
১. সুদিনের বেইল-ঠিক-দুপুর। ঝাঁঝাঁ রোদের দিকে চোখ ঘোলা করে তাকিয়ে আছে সফুরা। অই দূরে দেখা যাচ্ছে তার মরদটা মূরা বেয়ে নামছে, আলু-ক্ষেতির বেড়া নাড়ছে ছাগলটা, এক ঝাঁইর কাঁটা-মারিশ শাক নিয়ে ঘুরছে ঘষা-মাজা চেহরার একটা মেয়ে, দুয়ার লেপা মাটি থেকে গোবরের ঘ্রাণ আসছে, ছাড়াছাড়া সবুজ ঘাসে অনেকদূর পর্যন্ত চলে গেছে জমিন ধরে মাটির আইল, আরো কত কী কী সব একচোখে অপলক তাকিয়ে আছে সফুরা। তার ঘোলা চোখ। ঐ কোন না-দিকে তাকিয়ে থাকা সফুরার দৃষ্টি ধরে, মনে হওয়া ঘাসের, জামিনের, আইলের পথ ধরে, উঠানে এসে দাঁড়ায় মমিন। মূরা থেকে বয়ে আনা গাছের কচির গোছা নামাতে নামাতে যখন গজগজি মেরে কিঁয়ায় উঠে মরদটা, সফুরার বুক ... ...