উৎসবের এই আয়োজনের ভিড়ে, এত আলো, এত উছ্বাসের সমারোহে প্রাণ ফিরে পায় অন্ধকার গলিটা। যে পথ দিয়ে হয়ত কেউ ফিরেও চায়না বহু দিন। আজ আলোয় সজ্জিত তাঁর শরীর সে উন্মুক্ত করেছে তাদের জন্য, যারা তাকে এতদিন উপেক্ষা করেছে।
এতে শাহরুকের কোনো দোষ নেই। কিন্তু এ একদম নির্জলা সত্য কথা, যে, 'বাবা কেন চাকর' দেখে কেউ উলুতপুলুত হলে তাকে নিয়ে আপনি যেমন হাসেন, শাহরুক খানকে নিয়ে উলুতপুলুত হলে, আপনাকে নিয়ে আমি ততটাই। হ্যাঁ, হতেই পারে, শাহরুক বিরাট শিল্পী, বড় পর্দাতে তাঁর অভিনয় দক্ষতা ঠিক আঁটেনি, হিন্দি সিনেমার খাতিতে নানা অখাদ্য ছবিতে তিনি নাগাড়ে চড়া দাগের মোটা অভিনয় করে গেছেন। তা, সে তো এও হতে পারে, আদতে স্বপন সাহা বিরাট পরিচালক, কষ্ট করে সিনেমার ছোটো ফ্রেমে আঁটেননি, কষ্ট করে 'বাবা কেন চাকর' বানিয়েছেন, স্রেফ বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতে। সবই সম্ভব, কিন্তু যা দেখেছি তার ভিত্তিতে ৮০-৯০ এর শাহরুক এবং সমকালীন বলি-সমাজকে ... ...
১ বহু ইওরোপীয় সিনেমা দেখে আমার ধারণা হয়েছে যে ইওরোপের শিল্প সাহিত্য গত শতাব্দীতে এসে অনেকটাই সামূহিক একাকীত্ব, নিঃসঙ্গতা আর বিচ্ছিন্নতাবোধের সঙ্গে যুঝে ওঠার প্রকাশভঙ্গী। অনেকাংশেই তা সংযোগস্থাপনের আকুতি। এখানে অনেক কবির গলায় ঝরে পড়তে দেখেছি ভিড়ের মাঝে, কোলাহলের মাঝে, কর্তব্যপালন আর সাংসারিক অনুজ্ঞার মাঝে নির্জনতা খুঁজে না পাওয়ার আফশোষ, ইওরোপে উলটো। সেখানে ভিড়ের মাঝেও সবাই একা। এই একাকীত্বের কথা লিখেছিলেন ফরাসী ঔপন্যাসিক জর্জ পেরেক , তাঁর ঘুমন্ত মানুষ উপন্যাসে। আর কী আশ্চর্য সেই উপন্যাসটির চলচ্চিত্ররূপও তিনি নিজেই দিয়ে যান তাঁর পঁয়তাল্লিশ বছরের সীমিত জীবনের অবসানের আগেই। সিনেমা হিসেবেও কিন্তু এটি সার্থক। ... ...
"যাক অবসাদ, বিষাদ কালো, দীপালিকায় জ্বালাও আলো” আজ দীপাবলী। আলোর আরাধনা, অথচ এই আরাধনার সূচনা অন্ধকারের হাত ধরে। বৎসরান্তের এই আলোর উৎসবের ডাকটি কি আসলে কি অশুভ বিনাশেরই ডাক? দীপাবলী কি আলোরই উৎসব? না কালোর? অবসাদ, বিষাদ ঘুচিয়ে শুভ, মঙ্গল ও আলোর আরাধনা, অথচ সে আরাধনা আদপে এক কালো মেয়ের পুজোকে কেন্দ্র করে? আলো ও কালোর দ্বন্দ্ব কি সবসমই শুভ ও অশুভের দ্বন্দ্ব? সুর ও অসুরের চিরকালীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা? ... ...
রাজার গায়ে তেলের জামাসঙ্গে গ্যাসের পাজামা;সবই স্বচ্ছদেখতে পাচ্ছদীপাবলীতে মেলোড্রামা!!
অনেকদিন আগে একটা চায়ের দোকানের দেয়ালে দেখেছিলাম কে যেন লিখেছে 'বিড়ি স্বর্গের সিঁড়ি'। এই অপার দার্শনিক কবিত্বে সেদিন মুগ্ধ না হয়ে পারি নি। কলেজে আমার এক চেন স্মোকার বন্ধু ধোঁয়া ছেড়ে বলত - 'দ্যাখ ভাই, তোরা ভালো ছেলে হতে পারিস, কিন্তু তোদের সামাজিক কর্তব্যবোধ খুব কম। আমাকে দেখে শেখ। বিড়ি, সিগ্রেট - এসব হল সমাজের শত্রু। আমি ওগুলো পুড়িয়ে ফেলি।' এক ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুর বলা গল্প আরো রোমহর্ষক। ... ...
০২.১১.২০২১ ১. দীপাবলি আর ঝাঁটার কাহিনী: এইতো চা এর দোকানে কথা হচ্ছিল, বাঙালিদের এবছর নাকি দীপাবলি উপলক্ষে ঝাঁটা কিনতে হবে তাহলে শুভ হবে, শেষমেশ শোনা গেল কোন কোন জ্যোতিষী নাকি নেটমাধ্যমে এটি প্রচার করেছেন, যাই হোক এতে সংস্কার - কুসংস্কারের প্রশ্নে না গেলে সবরকম ঝাঁটা ব্যবসায়ীদের বা এরসাথে যুক্ত শ্রমিকদের ভালোই হয়েছে!! ... ...
নভেম্বরের শুষ্ক দুপুরের শেষে, যখন অস্তগামী সূর্য্য তার শেষটুকু কমলা রঙের আলো গলিত লাভার মত ঢেলে দেয়, সেই সময় ট্রেন ছুঁয়ে যায় কয়েকটি মাঠ। দুইধারে গোলপোস্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অনন্ত স্থবির স্কুলের মাঠ; দোকান, ফ্ল্যাট, শপিং মল, সিনেমা হলের মাঝে এখনও অস্তিত্ব বজায় রাখতে পাড়া একটা-দুটো ছোটো ছোটো মাঠ। নভেম্বরের শেষ বিকেলে সেখানে ফুটবল খেলে রংবেরঙের জামা পরে থাকা ছেলেরা, আবর্জনার স্তূপের গা ঘেঁষে থাকা মাঠে ক্রিকেট খেলে। আর এই সময় যখন ট্রেন পাশ কাটিয়ে যায়, কোনো কোনো ছেলে, যাদের মুখ দেখা যায় না, ব্যাট তুলে তাকিয়ে থাকে মাঠের দিকে। ক্ষণস্থায়ী দর্শকদের কাছে নিজের কৃতিত্বের সাক্ষ্য রাখে। হাপরের মত ওঠানামা ... ...
বাচ্চা আর হাঁটবে না, তাকে বাধ্য হয়ে বাবা কাঁধে চাপিয়ে নিয়েই চললো!! মা দুই ছেলে হাতে বাটি আইসক্রিম খেতে খেতে চলছে নতুন প্যান্ডলের দিকে! যেইনা বাচ্চাটার দিকে তাকিয়েছি ফিক করে হেসে ফেলল!! সদ্য বিয়ে হয়েছে নাকি বাল্য বিবাহিত বুঝলাম না তবে শাড়ির কুচিটি কোনরকমে সামলে সামনের ঝলমলে আলোতে নিজেদের সংসার গোছানোর গল্প করতে করতে চলেছে!! এইতো প্রেয়সীর হাত ধরে হাসি মুখে পেরিয়ে গেল ঐ আর একটা বড়ো লাইনে দাঁড়াবে বলে আবার এক বছরের অপেক্ষা যখন হাত ধরার পরও কেউ কিছু মনে করবে না!! ভাবলাম একটু গাড়ির লেনে ঢুকে পড়ি, ... ...
- আপনি কি ভূত দেখেছেন? - হ্যাঁ দেখেছি, কেন আপনি দেখেননি? ভূত মানে তো অতীত, অতীত পেরিয়েই তো বর্তমানে এসে পৌঁছলাম। সুতরাং ভূত না দেখে তো আমাদের কারোরই কোনো উপায় নেই।। - না মানে এই ভূত সেই ভূত নয়। বর্তমানে বসে বসে অতীতকে দেখা। যা দেখলেই গা ছমছম করে ওঠে। -ওঃ, সে তো তাহলে সিনেমা। যেমন ধরুন উত্তম কুমার, কিংবা দেবিকা রানী কিংবা অড্রে হেপবার্ন এইরকম? কই সিনেমা হলে তাদের দেখতে তো ভয় লাগে না? -আরে ধুর মশাই ভূত তো অন্ধকারে আসে, মুখ ঢেকে, কঙকাল হয়ে, তারপর হাড়ওয়ালা হাত বের করে খুলিওয়ালা মুখ বের করে নাঁকিসুঁরে হিঁ হিঁ করে হাসে।। -ধুত্তোর, সে তো বাল্যখিল্যের গপ্পের বইতে থাকে, মেক আপ ... ...
ভূতচতুর্দশীর সন্ধ্যায় সুধী চক্রবর্তীর বাড়ির উঠোনে স্কুটার রেখে উঠোনের বেলগাছের নিচে দাঁড়িয়ে বিড়ি ধরাতে ধরাতে ভজন ধর খেয়াল করলেন অন্যদিনের চেয়ে মাথার উপরে গাছটার ডালগুলো যেন একটু বেশিই নড়ছে। গাছ তো আর হেঁটে চলে বেড়ায় না, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নড়ে। মানে ডাল নড়ে, পাতা নড়ে। একটু জোরে বাতাস বইলেই নড়ে।এ গাছ কিন্তু এমন জায়গায় যে এর চারদিকেই বাড়ি। দোতলা, তিনতলা। নেহাৎ ঝোড়ো বাতাস না বইলে এর নড়ার কোনো কথাই নাই। অথচ এর ডালগুলো দুলছে। হাওয়া নাই, বাতাস নাই, বেশ জোরে জোরে দুলছে। দুলেই চলেছে।তা এসব লক্ষণ ভজনের চেনা। ... ...
তনু - আমি তোর হত্যার বিচার চাই না। যে চাওয়ায় কঠিন থেকে কঠিনতর হত্যা হুমকির খড়গ আসে বোবা বনবাসে। তনু - আমি তোর হত্যার বিচার চাই না। যে চাওয়ায় ভাদ্র মাসের কুকুরের লালাভ জিভের শব্দে কর্ণ পর্দা ফেটে আসে। তনু - আমি তোর হত্যার বিচার চাই না। যে চাওয়ায় অসুস্থ আর সন্তানহারা মা-বাবার বিষাক্ত প্রশ্নের ছোবল খেতে হয়। ... ...
আমি তুমিহীনায় জ্বলে অঙ্গার হয়ে যাই ; তোমাকে সে অঙ্গার কিংবা ধোঁয়া দেখতে দেই না, আমার নিঃশ্বাসে গরম লু হাওয়াও টের পেতে দেই না ।
বাংলার পুতুল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আগে বলেছি যে আজকাল যে সব পুতুলগুলি তৈরি হচ্ছে তার বেশির ভাগ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে। দীপান্বিতা উৎসবে বাংলা সেজে ওঠে আলোক মালায়। দীপলক্ষ্মী বা দেওয়ালি অথবা দীপাবলি পুতুল দেওয়ালি উৎসবে সাজানো হয়। পোড়ামাটির তৈরি পুতুলের নিচের অংশটা হয় গোলাকার চাকে তৈরি ফাঁপা - যা ঘাগরার মতো দেখতে হলেও সেটি বাতি দন্ড। উপরের অংশে দেহ ও মাটি জুড়ে নারী মূর্তির মতন দেখতে ... ...