( আমার ভাগ্নে,অরণি’র জন্য আজকের পর্ব টা থাকলো)
আমার নিজের বিদ্যে বুদ্ধি নিয়ে শুধু আপনাদের নয়,আমারো বিস্তর সন্দেহ আছে।আমার বিদগ্ধ মাস্টার মশাইএরা অবশ্যি এ সত্য আগেই জানতেন।তাই,তারা সারাজীবন ‘গাধা-গোরু’ ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করে গেছেন।আর ক্যানোই বা করবেন না,পরীক্ষার খাতা পত্তরে আমি যেসব নমুনা লিখে আসতুম,তা থেকে আর কিইবা ভালো ধারণা করা যায়।সেই যে পিতা-পুত্রের বয়সের অঙ্ক ছিল।পুত্রের বয়স বেরোলো পঞ্চাশ আর পিতার বয়স পঁচিশ।স্যার কান পাকড়ে কি করে পুত্রের বয়স পিতার বয়সের ডবল হয় তা জানতে চাইছিলেন। ... ...
কাল সন্ধেতে আমার ভাই অর্ক বাড়ি ঢুকে বলল,
‘দাদা,ছেলেদের সুরক্ষার স্বার্থে বহরমপুরের রাস্তায় সুন্দরী মেয়েদের বোরখা পরে ঘোরাফেরা করা উচিত’।
আমি বই পড়ছিলাম।চোখ তুলে বললাম,
‘হঠাত এইরকম তালিবানি ফতোয়া?’
নিজের হাতের সদ্য কাটা দাগ দেখিয়ে অর্ক বলল,
‘নাহলে এরকম অ্যাকসিডেন্ট হবে। রাস্তাঘাটে এত সুন্দরী মেয়ে ঘুরলে তাদের দিকেই চোখ পড়ে।মোহনের মোড়ে এক নীল সালোয়ার খোলা চুলে যাচ্ছিল। এক নজরে প্রেমে পড়ে হাঁ করে চেয়ে রইলুম।সামনে আগুয়ান সাইকেলটাকে দেখতে পেলুম না।ধড়াম করে পড়ে গেলুম’।
আমি বললাম ... ...
আমার ভাই,অর্ক রোজ সকালে তানপুরা নিয়ে গলা সাধে। আমি সেসময় ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘুমোই।কিন্তু সকলেই তো এত ভাগ্যবান হয় না। অনেকেরই সকালে কাজ থাকে,তাদের অর্কের গানের গুঁতো সহ্য করতে হয়।
আজ সকালে অর্ক দেখছি মুখটা মমতা ব্যানার্জি’র মত করে বসে আছে।পাশের বাড়ির কাকীমাই নাকি মূল কারণ।তা এই কাঁচা বয়সে কাকীমার বয়সী কেউ যদি চিত্তবিকারের কারণ হয় তাহলে তা চিন্তার বিষয় বৈকি।ভ্লাদিমির নবোকভ কে বই এর তাকে সামনের দিকে রাখাটাই কাল হল কিনা ভাবতে যাচ্ছিলুম।এমন সময় জানতে পারলুম ব্যাপারটা নেহাতই সাঙ্গীতিক। ... ...
একটা পুরোনো ঘটনা দিয়ে শুরু করি,
এক শুক্রবার ওমরপুর থেকে ফিরছি।বেশ গরম।এফইউসি মাঠে সেদিন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী ভাষণ দিচ্ছেন।বাস থেকে এফইউসি মাঠটা বেশ স্পষ্ট দেখা যায়।তা সেদিন দেখলাম মাঠ অর্ধেকের বেশি ফাঁকা।সাকুল্যে আড়াই হাজার লোক হয়েছে কিনা সন্দেহ।মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এত কম লোক???
ফিচেল শাহনওয়াজটা পাশেই বসেছিল।বলল,
‘দাদা,এটা কিন্তু কেন্দ্রের চক্রান্ত।কায়দা করে সূর্যের ভোল্টেজ বাড়িয়ে দিয়েছে যাতে লোক বেশি না আসতে পারে’।
ফিচেল নাম্বার টু,অণির্বাণ যাকে ফেসবুক চেনে অণির্বাণ এক্স ... ...
অর্ক’টা আজকাল বাইরে বিস্তর তেলে ভাজা খাচ্ছে।যেসব পেটরোগা’রা কবজহার খেয়ে দিন কাটায়,তারা যেচে এসে বাড়িতে খবর দিয়ে যাচ্ছে যে অর্ক'কে আজ অমুক বা কাল তমুক জায়গায় পাঁচটা চপ কি সাতটা সিঙ্গাড়া খেতে দেখা গেছে।তা নিয়ে যথারীতি বাড়িতে বকাবকি চলছে।আমি সেদিন ডেকে বললুম,
‘হ্যাঁরে হতভাগা,একটু কমসম করে খেতে পারিস না?দু-একটা করে খেলেই তো ঝামেলা হয় না’।(প্রসঙ্গত,একদম তো আর না খেতে বলতে পারিনা,তাহলে তো হজরত মোহাম্মদ অণুসরণ করে আগে আমাকেই খাওয়া ছাড়তে হয়,আর সেটা অসম্ভব,পাতি বাংলায় ইমপসিবল)।
অর্ক মাথ ... ...
আমার সাথে শাহরুখ খানের খান দুয়েক মিল আছে।আরে এতে ভুরু কোঁচকানোর কি আছে ?তাও তো বলিনি যে অনুব্রতের সাথে মিল আছে।ইয়ে,আমি আর অনুব্রত ওজন-তুতো ভাই।যাকগে,এবার শাহরুখ খানের কথা কই।
এক নম্বর মিলঃ- শাহরুখ ওর জন্মদিনের পার্টিতে আমাকে নেমন্তন্ন করেনা।আমিও আমার জন্মদিনে শাহরুখ খানকে নেমন্তন্ন করিনা।
দু নম্বর মিলঃ- আমি আর শাহরুখ খান,দুজনেই তোতলা।একজন কিরণ বলতে ‘ক’-এ আটকায় আর আমি সায়ন্তিকা বলতে ‘স’-এ আটকাই।
এতক্ষণ যে পুরনো জোকস ঝেড়ে গেলাম আর আপনারাও আমাকে ক্ষমা ঘেন্না করে দিলেন তার ... ...
বাড়িতে বড্ড আরশোলা বেড়েছে। আমি এমনিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী।কিন্তু আমার দিক থেকে প্রতিরোধের আশংকা না থাকাতে হতভাগাদের সংখ্যা বেড়ে অ্যামন দশা দাঁড়িয়েছে যে বাড়িতে হয় আমি থাকবো নাহয় আরশোলা থাকবে। আর আরশোলাদের সর্বত্র অবাধ গতি এবং কিচ্ছুতে অরুচি নেই।সেদিন বই এর তাক থেকে একটা কবিতার বই নামাতে গিয়ে দেখি বই এর পাশ দিয়ে আরশোলা বেরোচ্ছে।আরশোলাদের মধ্যে এ ব্যাটা নিশ্চয় সাহিত্য প্রেমিক।তাই ক্ষমা করে দিলুম।যেদিন দেখলাম এডুকেশনাল স্ট্যাটিসটিকসের বই এর মাঝেও ব্যাটারা উঁকি দিচ্ছে,সেদিনও কিছু মনে করিন ... ...
বর্তমানে ৬ কোটির বেশি শিশু শ্রমিক ভারতে কৃষি,শিল্প আর বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে।প্রতি তিনটি শিশু শ্রমিকের মধ্যে দুটি শিশু শ্রমিক শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়।পঞ্চাশ শতাংশের বেশী শিশু যৌন হেনস্থার শিকার হয়।The Child Labor Act of 1986 নামের একটা ভাঁটের আইন আছে বটে,তবে তা নেহাতই কাগজে কলমে।
চাইল্ড লেবার বা শিশু শ্রমিক নিয়ে পাতার পর পাতা বকে যাওয়া যায়,তবে তা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সেমিনার কক্ষে পারফিউম চর্চিত লোকেরা যথেষ্ট করে থাকেন।তাদের দলে ভিড়তে গেলে অমুক কমিটি বা তমুক আকাদেমি’র একখানা শ ... ...
ক্লাস সেভেনের সুচরিতা মাঝি।বাবা অন্যত্র থাকেন।হত দরিদ্র সংসার।সেদিন দুপুরে মিড ডে মিলের পর ছুটি চাইলো।আমি ছুটি দেবোনা।সুচরিতা খুব ঠান্ডা মেয়ে।তবে সেদিন অবুঝের মত জেদ ধরলো যে সে যাবেই।আমি রেগে যাচ্ছিলাম।তবে জেদ ধরাতে যেতে দিতে বাধ্য হলাম।আমার স্কুলের এক নন টিচিং স্টাফ,মদন বাবু আমাকে অফিসের জানালা দিয়ে তাকাতে ইশারা করলেন।তাকিয়ে দেখলাম যে সুচরিতা তপ্ত রোদে পিঠে ছেঁড়া বই এর ব্যাগ আর হাতে ভাতের থালাটা নিয়ে কম পক্ষে দুকিলোমিটার দূরে বাড়ির দিকে হাঁটছে।বুঝলাম।মদন বাবু জানালেন যে সুচরিতা ম ... ...
সায়ন্তিকা’র বাবা সম্প্রতি একটা বাড়ি কিনবেন ঠিক করেছেন,সেদিন আমাকে শুনিয়ে বললেন,
‘ লেক এর ধারে বাড়ি।চোখ মেললেই নীল জলের সমুদ্দুর।আহা।ও বাড়ির নাম রাখবো ‘লেক ভিউ’।আর আজে বাজে লোকের ও বাড়িতে ঢুকতে দেবোনা’।
এই ‘আজে-বাজে লোক’ মানে যে আমি সেতো জানিই।গতকাল আমার বাইকে সায়ন্তিকা আর আমি বাড়িটা দেখতে গেলাম।শহরের বাইরের দিকের বাড়ি।বাড়িটা খারাপ নয়,তবে বাড়ির পিছনে যেটাকে ‘লেক’ বলে সায়ন্তিকা’র বাবা চালাচ্ছিলেন,সেটা আদতে মজে যাওয়া একটা বড় পুকুরের অংশ,যেখানে আশে পাশের নর্দমার জল এসে পড়ে বিচ্ছিরি গন্ধযুক্ত ... ...