এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ফেসবুক থেকে কিছু পুরনো লেখা

    sosen
    অন্যান্য | ১৮ আগস্ট ২০১২ | ১৭৯৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিকি | ২০ এপ্রিল ২০১৪ ১২:২৮570031
  • ভিন্টেজ কার র‌্যালির সেই গল্প এখনও মনে আছে। সেই বিখ্যাত উপমা পিকলুর দাদুর। "দেখেছিস তো দেশলাই বাক্সের মত মারুতি আর জর্দার কৌটোর মত ফিয়াট।"
  • kumu | 52.104.27.136 | ২০ এপ্রিল ২০১৪ ১২:৩৫570032
  • বর্ণহীন একাচোরা আর একঘেয়ে ঘুপচি একটা ছোটবেলা ছিল।তাই এই লেখার প্রতি অক্ষর শুষে নিই।ভাবি এই সব আমারো ছিল।
  • achintyarup | 69.93.242.194 | ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩০570033
  • ববি প্রিন্টের কথা মনে করিয়ে দিলে।

    একটা ববি প্রিন্ট বেল্ট ছিল। প্লাস্টিকের। সাদার ওপর বেগুনি গোল্লা গোল্লা। মাঝে মাঝে গোল মতো অক্ষরে ববি লেখা। কমিক সঁ ফন্ট যেমন হয়, তেমনি খানিকটা। খুব একটা পছন্দের ছিল না, কিন্তু বাবা মাণিকের দোকান থেকে এনে দিয়েছিল। ওইটেই প্রথম বেল্ট ছিল যদ্দুর মনে পড়ে। হাপপ্যান্টের ওপর পরতুম। বেশিরভাগ প্যান্টে বেল্ট গলানোর লুপ ছিল না, ফলে বেল্ট রইত কোমরে, আর হাপপ্যান্ট একটু নিচে। খয়েরি রঙের প্যান্টের ওপর বেগুনি-সাদা বেল্ট। প্যান্টটা আসলে খয়েরি ছিল না কিন্তু, ভাল করে চোখের কাছে আনলে দেখা যেত ছোট্ট ছোট্ট কমলা আর সবুজ, খুব ঘন করে গায়ে গায়ে লাগা। ওই প্যান্ট আর বেল্ট পরে বাবার সাইকেলের রডে বসে দেড় কিলোমিটার দূরের বাজারে যেতুম। আমাদের মেটে রাস্তা একটু লালচে রঙের ছিল। তার ধুলোর ওপর কিরিকিরি সাইকেলের টায়ারের দাগ।

    ববি নামের সিনেমা তার এক দু বছর আগে রিলিজ করেছিল বোধ হয়। ত্রিপল খাটিয়ে সিনেমা হয় গাঁ-গঞ্জে, সেরকম দেখেছেন কেউ? মস্ত বড় তাঁবু পড়ে ধানক্ষেতের ওপর, তার একদিকে সাদা পর্দা টাঙানো থাকে, সারাদিন ধরে মাইকে গান হয়, আর অ্যালাউন্সমেন্ট। কী কী বলত, সে সব বিস্তারিত ভুলে গেছি, বয়েসে খেয়ে নিয়েছে। শুধু মনে আছে, বিকেলের একটু পর থেকে বলা শুরু হত, আপনারা এখনও যারা দূরের পথে পড়ে আছেন, যারা এখনও ভাবছেন, যাব কি যাব না, আসব কি আসব না, তারা পা চালিয়ে চলে আসুন। মহিলাদের বসিবার এবং সাইকেল রাখিবার সুবন্দোবস্থ আছে। এই মহিলাদের বসিবার এবং সাইকেল রাখিবার কথাদুটো একসঙ্গে বলা হত বলে রুনুদিদি রাগ করত মনে আছে। তারপর, আরও সন্ধের দিকে, বার বার বলা হত, পা চালিয়ে আসুন, উনিশ পয়্সার টিকিট ফুরিয়ে গেছে। পরের দিকে টিকিটের দাম বেড়েছিল নিশ্চয়ই, কিন্তু আমার ওই উনিশ পয়সাই মনে রয়ে গেছে। ধানকাটা ক্ষেতের ওপর ত্রিপল পেতে দেওয়া হত, বসলে শক্ত উঁচুনিচু মাটি বোঝা যেত। মাঝে মাঝে কাটা ধানগাছের নাড়া। ধান কেটে নেওয়ার পর যে গোড়াগুলি পড়ে থাকে ওইগুলিকে নাড়া বলে। খোঁচা খোঁচা লাগত পেছনে। এগিয়ে পিছিয়ে সরে বসতে হত। ধুলো, শুকনো ঘাসের গন্ধ থাকত। বিড়ির গন্ধ, লোকের ঘামের গন্ধ থাকত। মাঝখান বরাবর প্রোজেক্টর বসানো হত, তার কাছাকাছি বসলে কির কির আওয়াজ শোনা যেত। বিড়ির ধোঁয়ায় দেখা যেত, তার থেকে বেরোনো আলো কেমন ছোট্ট থেকে চওড়া হয়ে গিয়ে পড়েছে পর্দায়। একদিন সন্ধের দিকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, বাবার সাইকেলেই বোধহয়, দেখি এক বুড়ি, বয়েসে নুয়ে পড়েছে সে, সাদা কাপড় পরা, সোজা হয়ে আর হাঁটতে পারে না, তাড়াহুড়ো করে যাচ্ছে মাঠের দিকে। কেউ জিগ্যেস করে, কি গো মানিমাসি, কোথায় যাও? মাসি বলে, ববি দেখতে যাই গো। সেইটে মনে লেগে আছে। ববির কথা শুনে এসব হিজিবিজি মনে পড়ল।
  • achintyarup | 69.93.242.194 | ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩০570034
  • ববি প্রিন্টের কথা মনে করিয়ে দিলে।

    একটা ববি প্রিন্ট বেল্ট ছিল। প্লাস্টিকের। সাদার ওপর বেগুনি গোল্লা গোল্লা। মাঝে মাঝে গোল মতো অক্ষরে ববি লেখা। কমিক সঁ ফন্ট যেমন হয়, তেমনি খানিকটা। খুব একটা পছন্দের ছিল না, কিন্তু বাবা মাণিকের দোকান থেকে এনে দিয়েছিল। ওইটেই প্রথম বেল্ট ছিল যদ্দুর মনে পড়ে। হাপপ্যান্টের ওপর পরতুম। বেশিরভাগ প্যান্টে বেল্ট গলানোর লুপ ছিল না, ফলে বেল্ট রইত কোমরে, আর হাপপ্যান্ট একটু নিচে। খয়েরি রঙের প্যান্টের ওপর বেগুনি-সাদা বেল্ট। প্যান্টটা আসলে খয়েরি ছিল না কিন্তু, ভাল করে চোখের কাছে আনলে দেখা যেত ছোট্ট ছোট্ট কমলা আর সবুজ, খুব ঘন করে গায়ে গায়ে লাগা। ওই প্যান্ট আর বেল্ট পরে বাবার সাইকেলের রডে বসে দেড় কিলোমিটার দূরের বাজারে যেতুম। আমাদের মেটে রাস্তা একটু লালচে রঙের ছিল। তার ধুলোর ওপর কিরিকিরি সাইকেলের টায়ারের দাগ।

    ববি নামের সিনেমা তার এক দু বছর আগে রিলিজ করেছিল বোধ হয়। ত্রিপল খাটিয়ে সিনেমা হয় গাঁ-গঞ্জে, সেরকম দেখেছেন কেউ? মস্ত বড় তাঁবু পড়ে ধানক্ষেতের ওপর, তার একদিকে সাদা পর্দা টাঙানো থাকে, সারাদিন ধরে মাইকে গান হয়, আর অ্যালাউন্সমেন্ট। কী কী বলত, সে সব বিস্তারিত ভুলে গেছি, বয়েসে খেয়ে নিয়েছে। শুধু মনে আছে, বিকেলের একটু পর থেকে বলা শুরু হত, আপনারা এখনও যারা দূরের পথে পড়ে আছেন, যারা এখনও ভাবছেন, যাব কি যাব না, আসব কি আসব না, তারা পা চালিয়ে চলে আসুন। মহিলাদের বসিবার এবং সাইকেল রাখিবার সুবন্দোবস্থ আছে। এই মহিলাদের বসিবার এবং সাইকেল রাখিবার কথাদুটো একসঙ্গে বলা হত বলে রুনুদিদি রাগ করত মনে আছে। তারপর, আরও সন্ধের দিকে, বার বার বলা হত, পা চালিয়ে আসুন, উনিশ পয়্সার টিকিট ফুরিয়ে গেছে। পরের দিকে টিকিটের দাম বেড়েছিল নিশ্চয়ই, কিন্তু আমার ওই উনিশ পয়সাই মনে রয়ে গেছে। ধানকাটা ক্ষেতের ওপর ত্রিপল পেতে দেওয়া হত, বসলে শক্ত উঁচুনিচু মাটি বোঝা যেত। মাঝে মাঝে কাটা ধানগাছের নাড়া। ধান কেটে নেওয়ার পর যে গোড়াগুলি পড়ে থাকে ওইগুলিকে নাড়া বলে। খোঁচা খোঁচা লাগত পেছনে। এগিয়ে পিছিয়ে সরে বসতে হত। ধুলো, শুকনো ঘাসের গন্ধ থাকত। বিড়ির গন্ধ, লোকের ঘামের গন্ধ থাকত। মাঝখান বরাবর প্রোজেক্টর বসানো হত, তার কাছাকাছি বসলে কির কির আওয়াজ শোনা যেত। বিড়ির ধোঁয়ায় দেখা যেত, তার থেকে বেরোনো আলো কেমন ছোট্ট থেকে চওড়া হয়ে গিয়ে পড়েছে পর্দায়। একদিন সন্ধের দিকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, বাবার সাইকেলেই বোধহয়, দেখি এক বুড়ি, বয়েসে নুয়ে পড়েছে সে, সাদা কাপড় পরা, সোজা হয়ে আর হাঁটতে পারে না, তাড়াহুড়ো করে যাচ্ছে মাঠের দিকে। কেউ জিগ্যেস করে, কি গো মানিমাসি, কোথায় যাও? মাসি বলে, ববি দেখতে যাই গো। সেইটে মনে লেগে আছে। ববির কথা শুনে এসব হিজিবিজি মনে পড়ল।
  • শিবাংশু | 127.197.252.173 | ২১ এপ্রিল ২০১৪ ১৪:৩৪570035
  • কী যে লেখে, ছবির মতো, মায়াসন্তাপী লেখা ।

    সমগ্র লেখাটি বই হয়ে কবে পাওয়া যাবে ?

    জিতা রহো...
  • nina | 84.209.30.85 | ২২ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:২০570036
  • উফ! কি ভয়ঙ্কর ভাল লিখিস রে তুই----
  • sosen | 24.139.199.11 | ০৯ জুন ২০১৪ ১৬:৩০570037
  • সম্প্রতি কিছু স্মৃতিচারণ, স্কুলের স্যুভেনিরে-এখানে তোলা থাক

    বুনোটে বুনোটে ইস্কুলকথা

    এক নম্বর প্যাটার্ন

    একটা কুকুর বসে থাকতো দোতলায়, হোস্টেলের বারান্দায়। তার বয়েস হয়েছিল অনেক। জাফরী কাটা বারান্দা আর গ্রিলের ভিতর থেকে তার গায়ে এসে পড়ত আলো-ছায়ার চিকরি মিকরি। চোখের কোণ বেয়ে কালো জলের রেখা নেমে গেছে নিচে। একটা ছোট্ট মেয়ে, টিফিনে মাঠের হুল্লোড়, খেলা, বন্ধুদের টানাটানি অগ্রাহ্য করে আস্তে আস্তে উঠে যেত দোতলায়, সবুজ কাঠের রেলিং-এ হাত দিয়ে। হাতে সাদা কমলা সবুজ চিনির আস্তরণ দেওয়া একটা বার্গার -স্টাইল বিস্কুট। দুটো বিস্কুটের মধ্যে ডালডা চিনির মিশ্রণ, যাকে কিনা সবাই ক্রিম বলত তখন, আর বিস্কুট দুটো খুলে মাঝখানের ক্রিমটা চেটে খেয়ে নিতে হত। বাবুলকাকার দোকান থেকে কেনা সেই বিস্কুটের দাম পঞ্চাশ পয়সা।

    প্রায়-অন্ধ সেই কুকুরের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে সে টুকরো টুকরো করে বিস্কুট ভেঙ্গে রাখত কুকুরের মুখের সামনে। আর চেটে পুটে কুকুরটা খেয়ে নিত সেই বিস্কুটের টুকরোগুলো। লাল জিভ বের করে।

    তার পর একদিন ইস্কুলের বড়দিদিমণি চলে গেলেন। প্রেয়ার হলের সামনে সিঁড়িতে বসে, স্কার্ট টেনে হাঁটুর নিচে নামিয়ে গ্রুপ ছবি তোলা হলো। নিশ্চুপে কখন যেন বদলে গেল ইস্কুলের চলচ্ছবি। ডালিয়া ফুলের ঝাড়গুলি কেমন ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ল, গোলাপের পাপড়ি ঝরে গেল টুপটাপ।

    সবুজ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে মেয়ে দেখলো, কুকুর দুই থাবার মধ্যে মাথা নিচু করে বসে আছে। তার কালো চোখের কোনা দিয়ে গড়ানো জলের রেখা কি আরো গভীর হয়েছে? বিস্কুট ভেঙ্গে ভেঙ্গে মেঝের উপর রেখে দিলেও সে শুঁকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। খায় না। আলো-ছায়ার ঝিকিমিকির মধ্যে কোথা থেকে উল-কাঁটা নিয়ে ঝুপ করে নেমে এসেছে বিষাদ-বুড়ি, দু:খ-রঙের মাফলারে ঢেকে দিচ্ছে চতুর্দিক, কমলা, সবুজ সাদা ফ্রস্টিং দেওয়া বিস্কুটের উপর, ঝুলো ঝুলো কুকুরের কানের উপর নেমে আসছে বিষণ্ণতা।সে কিনা বড়দিমনির কুকুর ছিল।

    তারপর একদিন কুকুরটাকে আর দেখা গেলনা। মেয়েটার ছোট্টবেলার মধ্যে, ইস্কুলকথার মধ্যে একখানা বুনতে বুনতে দশ-ঘর পড়ে যাওয়া বিষাদগর্ত রয়ে গেল। কালো অন্ধ চোখের মত।

    প্যাটার্ন দুই

    মাঠের একপ্রান্তে ছিল দুটো কাগজফুলের গাছ। সাদা, আর লাল। তাদের নাম দিয়েছিল মেয়েটা, শ্বেত আর শ্যামা।সাদাটা ছেলে, লালটা মেয়ে। মুঠো মুঠো কাগজফুল ঝরে গাছ দুটির তলা ভরে থাকতো রংচঙে কার্পেটে। তার থেকে কুড়িয়ে আনতে হত ফুল, স্কার্টের কোঁচড় ভরে, অযথাই। বড় বড় ডেস্ক, তার মধ্যে খাতা, বই, পেন্সিল গুছিয়ে রেখেও কত জায়গা। সেইখানে ছড়িয়ে রাখতে হত ফুলগুলো। ডেস্ক ভরে ছোট্ট কার্পেট।

    থ্রি বির মস্ত জানলা দিয়ে বাইরে তাকালে টুপটাপ ফুলঝরা দেখতে পাওয়া যায় সারা দুপুর। গাছের ডালেরা এ ওর গায়ে মুখ ঘষে। মিষ্টি একরকমের গন্ধ পাওয়া যায়, পুরনো পুরনো।

    ওই রকমই পুরনো গন্ধ পাওয়া যায় বন্ধ ল্যাবরেটরির কাঁচে মুখ রাখলে। ভিতরে এক নিষিদ্ধ জগত, ফানেল, রাউন্ড বটম ফ্লাস্ক, বেলজার আরো না জানি কি সব ,নাম না জানা। মাকড়সারা জাল বিছিয়ে ভরে রেখেছে বন্ধ দরজার ওপাশ, তার উপর আলো পড়লে কত রং খেলে যায়। লম্বা সেই বারান্দায় যেন বয়ে যাওয়া সময়ের পায়ের টিপ টিপ শব্দ শুনতে পায় মেয়েটা। গা ছম ছম করে, কিন্তু কি এক অমোঘ আকর্ষণে দরজা খোলা পেলেই সেই লম্বা বারান্দায় গিয়ে ঢোকে।

    আরো আছে প্রিয় জায়গা সব, প্রিয় বেঞ্চ, প্রিয় ছোট মাঠের এক কোনায় একটা সিমেন্টের গড়ানে জায়গা, টিফিনের ঘন্টা পড়লে টিপি টিপি সেই জায়গাটায় গিয়ে বসা, প্রিয় বন্ধুর সাথে অল্প একটু টিফিনের ভাগাভাগি। আরো আছে, একদিন ছোট মাঠ বেয়ে দৌড়তে দৌড়তে হঠাত কুড়িয়ে পাওয়া পঞ্চাশ পয়সা। মেয়েটা কি ভীষণ খুশি হয়, ভাবে একটা সবুজ আইসক্রিম খাবে এই দিয়ে, নাকি দুদিন আলু কাবলি। কিন্তু এ যে অন্যের পয়সা। না বলে অন্যের পয়সা নেওয়া তো অন্যায়। এই সব দোলাচলে ছোট্ট মেয়ে পয়সাটা রেখেই দ্যায়, ভাবে, একদিন সে আইসক্রিম খাবে ঐটা দিয়ে।

    তারপর ভুলে যায় , কোথায় যে সে রেখেছিল পয়সাটা। পাশ দিয়ে ছুটে চলা সময় গিলে নেয় সবুজ আইসক্রিম, কাঠি বেঁধানো আলুকাবলি। সব ওই মাফলারে পড়ে যাওয়া ঘর হয়ে যায়। কিন্তু, বিদেশের নামী আইসক্রিমের দোকানে, বিদেশী ফর্সামতম হোস্টকে নানা স্বাদের আইসক্রিম অর্ডার দিতে দিতে সেই ভুলে যাওয়া পঞ্চাশ পয়সা মাঝে মাঝেই গড়িয়ে আজো এসে ঠেকে হাতের তালুতে। ধরা যায় না তাকে। ঝরতে থাকা লাল হলুদ পাতার দিকে তাকিয়ে সেই কাগজফুলগুলোর জন্য ভারী মন কেমন করে, লাল স্কার্টের কোঁচড়ভরা সেই কাগজফুল, লাল -সাদা।

    উল্টো সোজা, সোজা উল্টো

    চ্যাপেলের মাঠে একটা কাঠবাদাম গাছ। ওর কোটরে থাকে কয়েকটা কিচিমিচি কাঠবিড়ালি। কোটরে হাত ঢোকালে এক মুঠো কাঠবাদাম পাওয়া যায়। সেগুলো ছাড়িয়ে রাখা থাকে, খোসা, কুটো, শুকনো পাতার ওমের মধ্যে। শীতের সঞ্চয়। কদিন বাদেই আর তো বাদাম পাওয়া যাবে না।

    ছোট্ট মেয়েটা কি আর বোঝে মা -কাঠবিড়ালির কষ্ট? মুঠো ভর্তি বাদাম তুলে নিয়ে আসে কোটর থেকে। খেতে কি ভালো!

    অনেক অনেক দিন পর, একলা নিরালা দুপুরে, এক লেকের ধারে গাছের ছায়ায় বসে বই পড়তে পড়তে সে দেখে এক মা-কাঠবিড়ালি, ছোট্ট ছোট্ট হাতে তুরতুর করে খোসা শুদ্ধু একটি একটি করে বাদাম এনে জড়ো করছে গাছের তলায়। তারপর, দু-হাতে ধরে, দাঁতে কামড়ে সেগুলিকে ভাঙছে। খোসা ছাড়াচ্ছে। তারপর একটি একটি করে বাদাম রেখে আসছে তার কোটরে।

    সারা দুপুর ধরে এই নিরলস কাজ দেখতে দেখতে মনে পড়ে যায়, সেই ইস্কুলের কাঠবাদাম গাছের কথা।কত পরিশ্রমের ফল যে এক মুঠিতে তুলে আনা যায়, সেই কথা। বড্ড অপরাধী লাগে নিজেকে। খেতে পেয়েছিল কাঠবিড়ালি ছানারা? সে শীতে, তার পরের শীতে? জানার কোনো উপায় নেই তো।

    টুকরো টুকরো এমন সব স্মৃতি। উল্টো সোজা, সোজা উল্টো, উপর দিয়ে সুতো তুলে সোজা, একঘর বন্ধ, এমনি করে রঙিন প্যাটার্ন ফুটে ওঠে এখনো, স্মৃতির গভীরে ডুব দিলেই। কালো মাফলারের বুনোটে বুনোটে প্যাস্টেলের তীব্র, নরম রং, মুঠো মুঠো ছবি। সেই মেয়েটার অফুরন্ত পাথেয়।

    আমার ইস্কুলকথা।
  • sosen | 111.63.194.26 | ১১ জুন ২০১৪ ২১:১৬570038
  • ইচিং বিচিং চিচিং চা/প্রজাপতি উড়ে যা
    ইচিং বিচিং চিচিং চা/প্রজাপতি উড়ে যা
    ইচিং বিচিং চিচিং চা/প্রজাপতি উড়ে যা ----

    তারপর দড়াম করে আওয়াজ হয়। পৃথিবীটা উল্টে যায় হুড়্মুড় ।
    পায়ে বেধে গিয়ে আমি ছিটকে পড়েছি, টু সির সামনের বারান্দায়। আমার থুতনি দু ফালা, আমার স্বাস বন্ধ হয়ে এসেছে, বুকে না গলায় কোথায় লেগেছে কে জানে! চতুর্দিকে ছোটাছুটি, এক ওয়াটারবোতল জল কে আমার মুখে ঢেলে দিল, গায়ে, জামা টামা ভিজে একশা, যা:।
    ইচিং বিচিং খেলতে দুজন পা ছড়িয়ে বসে। পায়ের পাতা গুলো একে অন্যের সঙ্গে লাগিয়ে একটা ডায়মন্ড শেপের ফাঁক তৈরী করতে হয়। তার মধ্যে দিয়ে একবার ওদিক একবার এদিক ঘুরে ঘুরে লাফিয়েই যেতে হয়, লাফিয়েই যেতে হয়---প্রজাপতি উড়ে যা!
    নমিতাদি আমার মুখের উপর ঝুঁকে পড়েছেন। মোটা কাঁচের চশমা, উদ্বিগ্ন মুখ, আস্তে আস্তে শ্বাস ফিরে পাচ্ছি। কি নরম , না-দিদিমনি গলায় ফিসফিস করে বলছেন 'লাগেনি তো? জল খাবি?'
    বিকেলবেলা ঢং ঢং ঘন্টা বাজলেই দাঁড়িয়ে উঠে এক নিশ্বাসে "হেআমাদেরস্বর্গস্থপিতাতোমাররাজ্যআইসুকতোমারইচ্ছাস্বর্গেয্যামনপৃথিবীতেওত্যামনসিদ্ধ হউক আর আমাদেরদৈনিকআহার আজ আমাদেরদাও আর আমাদেরসকলঅপরাধ ক্ষমা কর আমরাও যেমন আমাদের সকল অপরাধীদের ক্ষমা করিআর আমাদের পরীক্ষায়আনিও না কিন্তুমন্দ হইতে রক্ষা কর কারণরাজ্য পরাক্রম ও মহিমা যুগেযুগে তোমারি ---এইসব জড়িয়ে জড়িয়ে একশ্বাসে বলতে বলতে শেষে একটানে আআমেএএন আর দৌড় দৌড় দৌড়
    বাবা নিতে এসেছে আজ ইস্কুল থেকে, সাইকেল করে, উসকো উসকো কোঁকড়া চুল, টকটকে ফর্সা, কুঁচকানো ভুরু ---আমায় দেখতে পেয়ে একমুখ হেসে ডাকছে "পাগলি, এই পাগলি, এদিকে আয় " আমি দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছি বাবার গায়ে ---"ইসস সব্বার সামনে --পাগলি বলে ডাকে না "
    বাবা হো হো করে দরাজ গলায় হাসে-
    থুতনিতে কাটার দাগে একটা কার্টুন ব্যান্ড -এড , সাইকেলে হুস হুস বাড়ি, অনিলকাকাদের কাছ থেকে আনন্দমেলাটা নিয়ে যাই, বাবা? মলাটে একটা ছাতা মাথায় ছেলে টুপ টাপ টিয়ার ড্রপ শেপের বৃষ্টি পড়ছে, আষাঢ় সংখ্যা? বাবা আনমনে বলে, রথ এসে গেল। মুক্তাফলের রঙে আকাশ ভরে গেছে, এই সময় কীর্তিনাশার পাশে চিত হয়ে শুয়ে থাকলে উপরে সেই চিল এসে পাক দেয় আর পাক দেয় যার ডানার নামেই কিনা আমার নাম।
    এসব রহস্য শুধু আমি জানি আর জানে আমার বাবা। আর কেউ না। কেউ জানবেই না। কেমন বইয়ের পুরনো মলাটের ভেতর রুপোলি রঙের বই কাটা পোকারা ঘুরে বেড়ায়, ওরা আগের জন্মে পন্ডিত ছিল, তাই ওদের মারতে নেই। তুলি দিয়ে ঝেড়ে ফেলতে হয়।
    বাবা কেমন মাত্রা ছাড়া বাংলা লেখে। আমি জানি। আর কেউ না।
  • sosen | 111.63.194.26 | ১১ জুন ২০১৪ ২২:১৯570039
  • গোপন কথারা আনমনা ঘুরে বেড়ায় বৃষ্টির দিনে। রথে হাফছুটি, বেজায় গরম, আকাশ ঝুলো ঝুলো মেঘবরণ কুঁচকোনো চামড়া ঝুলিয়ে রেখেছে ব্যাজার বুড়োর মত। হরিকাকা তাড়া দিচ্ছে, শিগগির, শিগগির, নাগের্বাজারে রথ বেরোবে, রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে, তার আগে বাড়ি নামিয়ে দিতে হবে সব্বাইকে--
    হাফছুটির বাকি দিনটা গোপন। বাবা শিগগির শিগগির কারখানা থেকে ফিরবে, এক ঝাড় দেবদারুপাতা আর গাঁদাফুল নিয়ে, কুড়ি টাকা দামের রথ ছোটকাকা কিনে দিয়েছে। গোলাপী ফুল ফুল র্যাপিং পেপার দিয়ে তাকে মুড়তে হবে, আটা গুলে জ্বাল দিয়ে আঠা বানিয়ে দিয়েছে মা। আ: কি সুন্দর গন্ধ তার। বাবা মন দিয়ে বসে রথ সাজায়, সবুজে হলুদে, তখন মা কয়েকটা তুলে রাখা অপরাজিতা দেবে, সকালের পুজোর ফুল থেকে, ছোট ছোট থালা বাটি গেলাস দেবে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার সামনে। তাতে দুটো করে দানাদার, তার ওপর তুলসীপাতা। একটা ধূপ।
    এই রথ অসমান রাস্তায় বেশিদূর যায়না। খানিক যেতে না যেতেই ঠকাং করে ভারী অভদ্রের মত বলরাম দানাদারের ওপর উল্টে পড়ে, জগন্নাথ আর সুভদ্রা এতোল বেতোল করে। একগ্লাস জল উল্টে যায়। আমি আড়চোখে প্রসেনজিতের তিনতলা রথ দেখে নিই। আমার দোতলা। অমিতের রথ নেই। ও কিনা সব ভেঙ্গে ফেলে।
    বাড়ি এসে রথ রেখে পাতলা সুতির জামা পরে রেডি। বাবার সাথে দাদুর কালো ছাতার নিচে, ফুটো অলা ছাতার নিচে রথের মেলা। প্রত্যেকবার এক-ই দোকান থেকে জিলিপি, একই দোকান থেকে পাঁপড়, আর অন্য অন্য দোকান থেকে লিলিপুট রিক্সা, লিলিপুট মানুষ, একটা ভেঁপু, একটা তালপাতার টুপি। কাদা ছিটকে জামায়, বাবার প্যান্টে, ছোপ ছোপ। তার মধ্যে মুষলধারে নামে বৃষ্টি। বাবা সাপটে একহাতে আমায় কোলে তুলে নেয়, সবল কব্জি থেকে ঝোলে জিলিপি পাঁপড়ভর্তি প্লাস্টিক, আর জল ছপ ছপ করতে করতে সাতগাছির রাস্তা দিয়ে বাড়ি। বাড়ি ঢুকেই দেখি সাদা কালো টিভিতে উত্তমকুমার আকাশের দিকে চেয়ে উদাস মুখে গাইছেন " শোনো বন্ধু শোনো, প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা" আর গুন গুন করতে করতে মা আসনে ফোঁড় তুলছে। বাড়ি খিচুড়ির গন্ধে ম' ম'।
    এইসব কিন্তু গোপন কথা। এই যে ছোট বুকের মধ্যে কেমন একটা ফুলে ফুলে ওঠা খুশি, এই যে বাবার শক্ত কব্জির মধ্যে ছোট্ট মত হয়ে থাকা, বাবা বলবে গলা জড়িয়ে ধরো! অমনি গলা জড়িয়ে ঠান্ডা চওড়া ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে রাখা, এইসবে পায়ের আঙ্গুল থেকে আরাম আরাম, আদর আদর বৃষ্টির দিনে আরাম আরাম, শোয়ার আগে রথটার মুখ ঘুরিয়ে রাখা, একটা সুতির চাদরের নিচে বাবার পেটের কাছে গুটুলি মুটুলি--
    এসব ছোট্ট ছোট্ট গোপন কথা, কাউকে বলতে নেই, বাবাকেও না।
  • achintyarup | 69.93.246.151 | ১২ জুন ২০১৪ ০২:২৩570041
  • আরও শুনব
  • সিকি | 135.19.34.86 | ১২ জুন ২০১৪ ০৯:৪১570042
  • চুপকথা।

    শুনছি।
  • de | 190.149.51.68 | ১২ জুন ২০১৪ ১১:২৯570043
  • রূপকথার গপ্পো যেন-- খুব ভালো লাগছে!
  • sosen | 125.241.75.111 | ২৮ জুন ২০১৪ ১২:০১570044
  • আবোল তাবোল, দিনবদলের ধারাভাষ্য। গদ্যে কবিতায় যাপনে মিশে যেতে থাকে রূপকথা, সবটুকু তার সত্যি নাকি? সত্যি কারে কয়? এই যে আমার চারপাশে নরম সরম অল্পে দুখী অল্পে সুখী মানুষেরা, এদের হঠাত বৃষ্টিতে ভিজে জবুথবু হয়ে আপিস ঢোকা, হাঁচির আর নাক টানার আওয়াজ, লাল মুখ, পায়ের কাছে কাদা, বারোয়ারী বাথরুমে হরেকরকম ছাপ ছোপ-অলা জুতোর কাদাটে দাগ, ফুটপাথে উলট পালট খেয়ে যে দু'বছরের বাচ্চাটা বৃষ্টিতে ভেজে, পাশে তার মা নিশ্চিন্তে প্লাস্টিকে গা ঢেকে নেশার ঘুম ঘুমোয়, ঐটে সত্যি? না ওই যে ছোট্টটা আমাদের ঘরে দুয়ারে উপুর ঝুপুর করে, গায়ে এসে পড়ে, কাজ করতে দ্যায় না, বকে বকে পাগল করে দ্যায়, যে এক আউন্স দুধ কম বা বেশি খেলে চিন্তায় আমার মাথা ধরে যায়, ঐটে সত্যি! নাকি দুটোই আসলে রূপকথা, কেউ লেখেনি বলে, কেউ রাত্রে বলে ঘুম পাড়ায়নি বলে ওরা এখনো না-ফোটা রূপকথা, না-ফোটা ঠাকুমার ঝুলি হয়ে বেঞ্চের এক কোনায় বসে চুপটি চুপটি হুলুস্থুল ভিজে সারা হচ্ছে--অপেক্ষার গপ্পোকথা সব।
    সব সময় কি গল্প , সত্যি লিখতে ইচ্ছে করে নাকি? সব গল্প আর সব সত্যি আমার বুঝি?
    খাতা খুলে কলমটি হাতে নিয়ে দেখি বিকেল করেছে। সেই যে খাতাটি তুমি দিয়েছিলে, মনে আছে গো?
    মফস্বলী বিকেল? অনেক দিন পর, তাই না, রেল লাইন বেয়ে বিকেলের ট্রেন, বারান্দা থেকে ঝুঁকে মা আর পিসিদের সাথে লোক দেখা, একটা বাক্স হাতে ঘোষাল বাবু আপিস থেকে ফিরছেন, তাই দেখে কত জল্পনা কল্পনা, কি আছে ওতে? প্রেসার কুকার? মিষ্টির বাক্স? গিন্নির শাড়ি, বাটার চটিজুতো ?
    রোজ রোজ পাতা পোড়ার গন্ধে প্লাস্টিকের ঝাঁঝ মিশে যায় এখানে, আজ মেশেনি। বিকেলে ঠান্ডা হাওয়া দিল, বৃষ্টি পড়ল না। মেঘের উপর আরেকটা মেঘ উঠে যাচ্ছে হাঁচড় পাঁচড় করে। ওকে স্তর মেঘ বলে, না বাদল মেঘ?
    তুমি বোধহয় রেগে আছ, তাই না? সাড়া দাও না কতদিন। নিমগাছের পাতা সব ঝরে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো সেই সবুজ চিঠিটা লেখা হলো না। হাতে কোমরে ব্যথার চোটে আমি আর শ্যাওলা তুলতে যাইনে , শিলং পাহাড়ে লীলা মজুমদার একলা বসে থাকেন। পাহাড়ি ঝরনার ধারে। কাজের এমন হা হুতোশ, একটু দম নিয়ে জল ছুঁয়ে দেখতে পাইনে। লোকে বলবে, খালি অবুঝ্পনা। কোথায় কাজের কাজ করবে, পেপার লিখবে দুখানা চারখানা, তা না, যত্ত অকাজ।
    না, আমি চোখ বুজে ফেলেছি। আর দেখব না। তুমি না থাকলে আর দেখা হবে না।

    কি যে লিখে যাই, কিন্তু ঘোর আসে, না লিখে উপায় নেই, সে আমার ব্যথাতুর ফোলা আঙ্গুলকে টানে, কি বোর্ডে নামিয়ে আনে। সেই যে একটা ছোট্ট শহর, স্বপ্নের শহর। সেখানে রাস্তায় হলুদ আলো, বড্ড ভিড়, পুতুলের মত মানুষজন। ঢালা একটা স্কোয়ার, আলোকময়, টেবিল চেয়ার পাতা আছে, বসে থাকি। সারারাত বসে থাকি। কেউ উঠতে বলে না, কোথাও যাওয়ার নেই।
    একটা আধা-মাতাল মেয়ে এসে আগুন চায়। দিতে পারিনা। সে ভারী বিরক্ত হয়।
    ভোরের প্রথম ট্রেনে ভাঙ্গা ব্রিজ, শটিঘাসের জলা, হ্যারিসন পেরিয়ে ফিরে আসি হাইল্যান্ড পার্কে। রোদ্দুর ওঠে। ঘাসে নীল ফুলগুলি লাজুকভাবে উঁকি মারে। বাড়ির জন্য মন কেমন করে। কিন্তু আমার তো বাড়ি নেই! কোত্থাও না!
    সেই কোটরের কথা বলেছিলাম, না? ছোট ছোট কোটর। প্রত্যেকটার মধ্যে নিজেকে খাপে খাপে বসিয়ে নিতে হয়। ভাল্লাগে না। হাত ব্যথা করে। পা ব্যথা করে। কোমর ব্যথা করে। সবাই ব্যথার কাহিনী শুনে বিরক্ত হয়, আর আমি সেলফ-পিটিতে ডুবে যাই। ডুবি, উঠি, আবার ডুবি। সত্যি, না রূপকথা? ব্যথা কি সত্যি, না আমি হাইপোকন্ড্রিয়াক?
    বা:, আমি সওয়াল করি। অমনি করে চেপে চেপে ঢোকালে ব্যথা লাগবে না? গোল করে ঘুরিয়ে, ভাঁজ করে, অনিচ্ছাকৃত মিলনের মত, অপিচ্ছিল, শুকনো!
    ব্যথা তো ব্যথা। নেই তো নেই। কত মানুষের থাকেনা। তারা ফুটপাথে প্লাস্টিক চাপা দিয়ে ঘুমোয়। নেশা করে।
    কেউ কাঁদে এমন?
    আমি কাঁদি। আমার ভাল্লাগে না। আমার পালাতে ইচ্ছে করে। দায়, দায়িত্ব, প্রেম, স্নেহ, যশ। সব কিছুর থেকে। চাপরাশে লেখা ছিল, কালী কমলী বাবার আশ্রম। সেইখানে। মাটি থেকে অনেক ওপরে। সেখানে গেলে কি হারিয়ে যাওয়া যাবে?
    ক্রিস্টিন বলেছিল, আমার মায়ের কাছ থেকে দশহাজার ডলার ধার করেছি গতবছর। এবছর শোধ করছি। গতবছর ছেলে হলো, তাই খুব টানাটানি। বস-ও খুব অবুঝ।উইকেন্ডে আসতেই হয়।
    ওরা দুজনেই গ্রাজুয়েশন করে, বর-বউ। ছোট্ট চেহারা ক্রিস্টিনের, মাথাভর্তি লাল চুল ওদের ছেলের, এক মুখ ফোকলা হাসি।
    গা বেয়ে উঠতে চায়, আঙ্গুল ধরে টানে। আমি হাত ছাড়িয়ে নিই। সত্যি নয়, ওসব রূপকথা।
    সত্যি শুধু মায়ের গন্ধ। আমার মা। মা সারাদিন ঘামে। কাউকে কাছে আসতে দ্যায় না। ঘামের চড়া, ঝাঁঝালো গন্ধ, না ধোয়া চুলের গন্ধ, তেল-হলুদের ছেঁড়া শাড়ির গন্ধ। মায়ের নিজের গন্ধ কেমন, কে জানে।
    পাশের ঘরে মাকে রেখে মায়ের গন্ধের জন্য আমার মন কেমন করতে থাকে, এই তো এখানেই রয়েছে, পাশেই, বেশি দূর না, তবু গিয়ে জড়িয়ে ধরা হয়না, নিতান্ত কেজো মানুষের মত এক হাতে ব্যাগ নিয়ে আমি সিঁড়ি নেমে গাড়িতে উঠে যাই, মা রেঁধেই যায় আর টিভিতে সিরিয়াল চলে, সিরিয়াল আর রান্না, রান্না আর সিরিয়াল, আর আমি একটা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকি বুঝ্ভুম্বুল, বাকি জীবন ধরে, গ্লাসডোর।
  • | ২৮ জুন ২০১৪ ১২:২৩570045
  • যাঃ আমার কতগুলো কথা লিখে দিল। এখন আমি কী লিখব!

    কালী কমলিবাবার আশ্রমে যাও নি কখনো? তাহলে যেও একবার। সে ভারী মজার জয়গা .... সেখান থেকে খালি ওপরে যেতে ইচ্ছে করে ...........
  • sosen | 125.241.75.111 | ২৮ জুন ২০১৪ ১৩:৫২570046
  • দশ হাজার ডলার নয়, মায়ের কাছ থেকে একটা জীবন আমি ধার করেছি। সে আর শোধ দেওয়া হবে না। হয়েই ওঠেনা। এত কম রোজগার!
    খালি বিরক্তি জমা হয়, যেমন যেমন সারা পৃথিবীর অন্যায় এসে আছড়ে পড়তে থাকে গায়ের উপর, রোঁয়া ফুলিয়ে, পিঠ টান করে, সারাদিন যুদ্ধং দেহি করতে করতে করতে বাড়ি এসে যখন ঘরে এলিয়ে থাকি, দরজায় টোকা পড়ে, আর চা হাতে ফাইফরমাস খাটার মেয়েটাকে দেখে মায়ের দিকে হা-হা শব্দে আমার সর্বাঙ্গ ছুটে যায়। মায়ের কিনা সিঁড়ি ভাঙ্গা বারণ!
    কিন্তু আসলে আমার ভুরু কুঁচকে যায়, অসন্তুষ্ট মুখে চা নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিই। মোটা কাঠের দরজার আড়ালে সব চাপা পড়ে যায়।
    কতটুকু, এতটুকু সব চাহিদা, মাথার উপরে একটা শক্ত ছাদ, একটু বেড়াতে যাওয়ার শখ, একটু আদরে, আস্বাদে, প্রাপ্তিতে জড়িয়ে থাকার সাধ, এই সব, সময় হতে হতে ফুরিয়ে গেল সব। মায়া আর অভিমান ঠেলাঠেলি করে, কাকে জায়গা দেব বুঝে পাইনে।
    ডাক্তার কাউকে ভাত খেতে বারণ করলে মা অনেকটা আলু সিদ্ধ করে দেয়, তেল দেওয়া তরকারী খাবনা বললে হাসি হাসি মুখে জানায়, আজ তো তরকারী-ই করিনি, উচ্ছে ভাজা, পটল ভাজা, মাছ ভাজা---
    আলু খাবনা বললে কচুর তরকারি রেঁধে দেয়--উজ্জ্বল মুখে

    মায়া অভিমানকে দশ গোল দিয়ে জিতে যায়, আমি মা-কে দেখতে পাই, শান্ত, সরল, পড়াশুনোতে ভালো, বেজায় সরল, লম্বা, ভীষণ লম্বা বিনুনি বাঁধা এক ইস্কুল-মেয়ে, কি চেয়েছিলো সে? কিছু কি চেয়েছিলো? এই যে আমার বুকের মধ্যে তপ্ত আগুন চুল্লির মত চাওয়া জ্বলতে থাকে, তেমন করে?

    জিগ্গেস করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু জানি সে ভাষাই মায়ের কাছে নেই আর, যা দিয়ে উত্তর দেওয়া যায়, এ যেন আমি হিব্রুতে কথা কই আর মা ল্যাটিনে, দূর থেকে চেয়ে থাকা যায়, মনের ভিতর গজ গজ করে অজস্র কথা, সময় চলে যাচ্ছে যে সবের, কিন্তু জানি না জানাই থেকে যাবে। শোধ দেওয়া হবে না কিছুই।

    ভাতের ভিতর লম্বা চুল পেলে তাই আর আমি রাগি না।
    আমার চুলগুলিও পড়ে যাচ্ছে একে একে।
  • dd | 132.167.171.176 | ২৮ জুন ২০১৪ ২২:৪০570047
  • মারাত্মক ভালো হচ্ছে। ইচ্ছে করে সবাইকে ডেকে ডেকে পড়ে শুনাই।
  • ঐশিক | 52.104.62.219 | ২৯ জুন ২০১৪ ০০:৫৬570048
  • Khub khub bhalo lagche
  • i | 134.169.7.12 | ২৯ জুন ২০১৪ ০৪:১১570049
  • কতকাল সত্যি কতকাল এমন লেখা পড়ি নি, এমন করেও পড়ি নি...আরো লেখ্‌ বোন, আরও লেখ্‌...
  • nina | 78.37.233.36 | ২৯ জুন ২০১৪ ০৮:০৫570050
  • বয়সে মেয়েটা ছোট তবু গড় করতে প্রাণ চায়----এমন লেখার পায়ে প্রণাম করাই যায়--
  • san | 52.104.27.221 | ২৯ জুন ২০১৪ ১২:২৫570052
  • বড়ো সুন্দর !
  • achintyarup | 233.176.38.248 | ২৯ জুন ২০১৪ ১৬:৫৫570053
  • আরও অনেক অনেক লেখ রে। এত তীব্র লেখা বেশি পড়তে পাই না তো
  • Ishani | 69.92.137.170 | ৩০ জুন ২০১৪ ১০:০৩570054
  • বা: , এ তো ছবি লেখা !
  • de | 69.185.236.51 | ৩০ জুন ২০১৪ ১০:৫০570055
  • সোসেন যেন কোথায় আমাদের অনেকের হয়ে লিখে চলেছে --- চোখে জল আসে ওর লেখা পড়লে ---
  • kiki | 127.194.70.54 | ৩০ জুন ২০১৪ ১১:০৬570056
  • দে একদম মনের কথাটি বলে দিলো।
  • Uma | 34.7.53.166 | ০১ জুলাই ২০১৪ ২২:৪৫570057
  • ভাগ্যিস কিকিয়া বলেছিল , নয়ত জানতেই পারতাম না এমন একটা অনেস্ট লেখার কথা । একবারে পুরোটা পড়ে ফেললাম । সোজা হৃদয়এ ধাক্কা দিল। এমন লেখা ভালো মন্দ হয়না ।
    সোনালী , শুভেচ্ছা আর শ্রদ্ধা জানবেন ।
  • sosen | 218.107.71.70 | ১৬ আগস্ট ২০১৪ ০৫:৪৯570058
  • পুজো আসে, আকাশ চকচকে হয়। নীল রুমালের মত আকাশের গায়ে সাটিন স্টিচে তোলা মেঘ, সাদা সুতো আর ছাই-সুতো মিলিয়ে। আমাদের পুজো আসে খানিক দেরিতে, পঞ্চমীর দিন দুপুরে বাবার হাত ধরে আমরা বাসে উঠি, শ্যামবাজারের এক গদিওলা দোকানে যাই। সেখান থেকে একটি ফ্রক, মায়ের একখানা শাড়ি, উল্টোবাগে বাটার দোকান থেকে লাল সোয়েডের চটিজুতো কেনা হয়। ষষ্ঠীর দিন সকালে বাবুমামা আসে পুজোর কাপড় নিয়ে মামাবাড়ি থেকে , অম্নি জামার সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে যায়। দুপুরবেলা হাসি হাসি মুখে আলমারির লুকোনো এক তাক থেকে মা বের করে দ্যায় পূজাবার্ষিকী।

    ওদেরও পুজো আসে। লাল হলুদ ছাপার কাপড়ের পুজো। কিংবা সিন্থেটিক কাপড়ের। এই কাপড় পাওয়া যায় খান্নার হাটে। হাওড়ার হাটে। কাপড়ের কোনায় কাগজের স্টিকারে অনাম্নী এক ফর্সা মেয়ে হাসে, ছাপার শাড়িতেও সে মোহময়। কিন্তু মিতাদি যখন ঐ শাড়ি পরে দশমীর দিন নাড়ু নিতে এসে দাঁড়াতো, কালো কপালে সিঁদুর মেখে, কলারবোনের উচ্চকিত রুগ্ন ঘোষণা নিয়ে, আর মা গুণে গুণে দিতো তার ছেলেমেয়েদের জন্য নাড়ু, মুঠো ভরে নিমকি, তখন তাকে একটুও সুন্দর দেখাতো না। মুখ নীচু করে সে দুয়ারের চৌকাঠে পা ঘষতো, আরো ক'বাড়ি যেতে হবে মনে মনে হিসেব করতো। এ হেন মিতাদিকে, আমাদের বাসনমাজুনি মিতাদিকে এক দশমীতে আমি একটি পেন্নাম ঠুকে ফেলি।
    আরো কে কে ছিল ঘরে, কৃষ্ণামাসি, আমার মা, তাদের সবাইকে প্রণাম করার পর, কি ভেবে আমি মিতাদির পায়ের দিকে এগিয়ে যাই, আর টুক করে প্রণাম করে ফেলি।
    ঘরময় হাহাকার রব ওঠে, আর মিতাদি একটু পিছিয়ে গিয়েও প্রণাম এড়াতে পারে না। সশঙ্কিত মুখে একবার আমার মায়ের দিকে দেখে, একবার অন্যদের দিকে, তার পর বরাদ্দ নাড়ু না নিয়েই পালায়।
    আমাকে তখন ধরে বোঝানো হতে থাকে, কাজের মেয়েদের প্রণাম করতে হয় না।
    কিন্তু মিতাদি তো বড়!
    হোকগে বড়। খালি মুখে মুখে তর্ক, যা বলি শোনো। আত্মীয়দের ছাড়া কাউকে প্রণাম করতে হবে না।
    আত্মার কাছে যে থাকে সেই তো আত্মীয়? আমার অন্তঃস্থ ডেঁপো মেয়ে তর্ক করতে থাকে ভিতরে ভিতরে। আমার ঠাকুর্দা মোটেও আমার আত্মার কাছে থাকে না। তবে তাঁকে কেনো পেন্নাম করি?
    তর্ক করতে করতে সাবান জলে হাত ধুই আমি। কাজের মেয়েদের পায়ে হাজা হয়।

    পরের দিন বাসন মাজতে এসে এদিক ওদিক দেখে মিতাদি আমায় ডাকে , ফিসফিস করে। হাতে একটা সাদা নারকেলের নাড়ু ধরিয়ে দ্যায়।
    কাল তুমি বিজয়া করলা, কিছু দিতে পারি নাই গো মামণি। এইটা খাও। অপ্রতিভের হাসি হাসে সে, আমার ঘরে করি নাই, পরিশ্কার।
    পেয়ারাগাছের গোড়ায় বসে চুপি চুপি নাড়ুটা খেয়ে নিই আমি। কাউকে বলিনা। মিতাদির চোখ্গুলো চক্চক করে, কালো গালে একরকম আলোর আভা লাগে। গর্জন তেলের মত। আনন্দের মতো।
  • কান্তি | 113.24.190.213 | ১৬ আগস্ট ২০১৪ ০৭:৪৩570059
  • একেবারে ভিতর থেকে কাঁপিয়ে দিলে। গড় কোরলাম।
  • aranya | 78.38.243.218 | ১৬ আগস্ট ২০১৪ ০৯:৪৮570060
  • বড় ভাল লেখা
  • Tim | 12.133.45.72 | ১৬ আগস্ট ২০১৪ ১৫:০৬570061
  • পড়ছি। খুব ভালো লাগছে সোসেন।
  • nina | 78.37.233.36 | ১৯ আগস্ট ২০১৪ ০৪:২৭570063
  • বড় সুন্দর----বড় পবিত্র এ প্রণাম--
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন