এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বেঁচে আছিঃ প্রেমে-অপ্রেমে

    ranjan roy
    অন্যান্য | ০১ অক্টোবর ২০১৪ | ২১৮৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 24.96.56.94 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০৭:৩৩651076
  • -- বেশ, বেশ! তা মন্ত্র-টন্ত্র? পুরুতঠাকুর? মালাবদল?
    মানিকদা হাসি লুকোবার চেষ্টা করলেন না।
    -- সবই আছে, লতা। সবই আছে। ভূতও আছে, ভগবানও আছে। শুধু ,Zআনতি পার না।
    নেতৃস্থানীয় কমরেডটি 'বিপ্লবের স্বার্থে বিয়ে' নিয়ে একটা ছোটখাটো বক্তৃতা দিলেন। ক্লারা জেটকিন ও লেনিনের কথা তুলে বিপ্লবের গোড়ার দিকে তরুণ রুশি ছেলেমেয়েদের মধ্যে সেক্স নিয়ে 'গ্লাস অফ ওয়াটার' থিওরির মুন্ডুপাত করে স্বাধীন চিন্তার আড়ালে বুর্জোয়া অবক্ষয়ের অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক করলেন।
    এ হল আভ্যুদয়িক। এর পর মায়াকোভস্কির কবিতা থেকে আবৃত্তি করলেন-- যার নিগলিতার্থ হল প্রিয়ার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার সময়েও বিপ্লবের পতাকা উড়ছে দেখতে পাওয়া চাই। এ হল মন্ত্র। যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম।
    তারপর আমরা, হেসো না লতা, নিজের নিজের রেডবুক অদলবদল করলাম। বুঝতেই পারছ--মালাবদল।
    শেষে সবাই মিলে চারু মজুমদারের লেখা গান গাইলাম-- " মুক্ত হবে প্রিয় মাতৃভূমি, সে দিন সুদুর নয় আর'। সেদিন খাওয়ায় ঘ্যাঁট ছাড়া পায়েসও ছিল।
    -- তারপর?
    -- তারপর 'একই অস্ত্রে হত হল মৃগী ও নিষাদ, আদি রিপু উন্মোচিল প্লাবনের বাঁধ'। আমরা রক্তমাংসের মানুষ তো, আনন্দমঠের পাতা থেকে উঠে আসিনি। একটি সন্তান হল, মেয়ে। ও মেয়েকে নিয়ে মেতে উঠল। কিন্তু বাচ্চাটা জন্ডিসে চলে গেল। ও দায়ি করল আমাকে, পার্টিকে। ফিরে গেল আমাদের ছেড়ে নিজের বাড়িতে। বাপ-মা বিদেশে পাঠিয়ে দিলেন। আর জানি না।
    আমি হাঁফিয়ে উঠেছিলাম। কি ক্লান্তিকর!
    -- আচ্ছা, এবার তো গল্প শেষ। চা খাওয়াও হয়ে গেছে। অব ইস অধিবেশন কী সমাপ্তি ঘোষণা কী জায়ে? ক্যা কহতে হ্যায় আপ?
  • সিকি | 135.19.34.86 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ ১০:১৪651077
  • অসম্ভব বিচ্ছিরি রকমের ভালো হচ্ছে - টান টান উত্তেজনা আর চমকে ভরা। বড় ভালো। সকাল বেলায় এই রকম এক দু কিস্তি পড়তে পারলে দিনটা অন্যরকম কাটে।
  • san | 113.252.218.143 | ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ ১০:২৪651078
  • দমবন্ধ করে পড়ে চলেছি। প্রতিদিনই নতুন নতুন মোড় , নতুন নতুন চমক !
  • ranjan roy | 24.96.25.58 | ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ১৯:৫০651079
  • --- ঠিক আছে, কিন্তু একটু ধৈর্য্য ধর। তেমনি যে মন্ত্র তোমায় শোনাব বলে আগে তানপুরা বেঁধেছি তার কি হবে? আরেকটু শোন।
    -- বেশ।
    -- প্রথমে একটা প্রশ্নোত্তরী পর্ব। কি, রাজি?
    -- হম তৈয়ার হ্যাঁয়। শুরু হো জাইয়ে।
    --- মেয়েদের সবচেয়ে অপমান কী?
    -- বলাৎকার।
    ---- বলাৎকার কেন হয়?
    -- শোষকশ্রেণী শোষিতশ্রেণীর মেয়েদের ভোগ্যবস্তু হিসেবে দেখে। ধর্ষণ শোষকদের ক্ষমতার দম্ভের প্রকাশ।
    -- উঃ, একেবারে পার্টির প্যাম্ফলেট মুখস্ত করে ফেলেছ। আচ্ছা, মেয়েরা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ কোথায়?
    ---কোথায় আবার? নিজেদের পরিবারের মধ্যে।
    মানিকদা নিজের মাথার চুল মুঠো করে ধরলেন। তারপর বললেন--কিন্তু লতা, স্ট্যাটিসটিক্স , ইনভেস্টিগেশন ও সোশ্যাল রিসার্চ রিপোর্ট বলছে ঘরের বাইরের চেয়ে ঘরের মধ্যে বেশি রেপ হয়। ওইসব কাকার আদর, মামার আদর, জামাইবাবুর আদর-- বেশির ভাগ কেসে পুলিশে রিপোর্টই হয় না। মেয়েটিকে ধমকানো হয়, পরিবারের সম্মানের অজুহাতে।কখনো কখনো মেয়েটিকে সুইসাইড করতে বাধ্য করা হয়।
    -- এসব আপনি কী বলছেন, মানিকদা?
    --- ঠিকই বলছি। ঘরের মধ্যে বা পরিবারের মধ্যে মেয়েরা সবচেয়ে নিরাপদ-- এটা ভুল ধারণা বা যত্নে তৈরি মিথ।
    যাকগে, বিপ্লবী মেয়েদের সবচেয়ে বেশি বলাৎকার কারা করে?
    ----- পুলিশ-মিলিটারি। জোতদার-জমিদার।
    ---- গ্রেট! তাহলে বিপ্লবী মেয়েরা কোথায় বেশি সেফ?
    -- -- পার্টির ভেতরে, সিমপ্যাথাইজারের বাড়িতে, পার্টির শেল্টারে।
    --- কেন?
    ---- কারণ, পার্টির মধ্যে যারা বিপ্লবের আদর্শে দীক্ষিত তারা নারী-পুরুষের মধ্যে ভেদ করে না। মেয়েদের ভোগ্যবস্তু ভাবে না।
    --- এক্সেলেন্ট। বিপ্লবী পার্টির জাদুকাঠির ছোঁয়ায় পুরুষেরা সব জিতেন্দ্রিয় সন্ন্যাসী হয়ে যায়?
    --- আমি কি তা বলেছি?
    -- না, তা বলনি বটে। কিন্তু এতসব নীতিবাক্য কোথায় শিখেছ জানতে পারি?
    --- সমীরদা বুঝিয়েছে। কিন্তু মানিকদা, বলতে বাধ্য হচ্ছি,আপনার এই সব প্রশ্নের ধরন আর খোঁচা আমার একটুও ভাল লাগছে না। কিছু মনে করবেন না, যদি আপনার গুরুমন্ত্র দেওয়া শেষ হয়ে গিয়ে থাকে তো শুতে যান। আমায় সকালে উঠতে হবে।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ১৩:৪০651080
  • তারপর?
  • adhuli | 24.202.185.176 | ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ১৪:৩৫651081
  • বড্ড ভালো হচ্ছে। বসে থাকি কখন পরের পর্ব আসবে।
  • ranjan roy | 24.99.62.157 | ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ১১:১০651082
  • মানিকদা একটু উত্তেজিত।
    -- না, কোন কোন জিনিস টুকরো টুকরো করে হয় না। গুরুর দেওয়া বীজমন্ত্র অ্যালোপ্যাথিক ক্যাপসুল না যে আলাদা আলাদা ১২৫ বা ২৫০ বা ৫০০ মিলিগ্রাম সাইজে রোগীকে দেওয়া যাবে।
    আজকে এই রাত্তিরে কথায় কথায় আমরা যেখানে পৌঁছেচি তাতে এর পরের ধাপগুলো বলা আমার পক্ষে যতটা সহজ, কাল দিনের আলোয় নয়।
    আমি ভয় পাই; আমি সতর্ক হই।
    -- যে কথা দিনের আলোয় বলা যায় না তা নাই বললেন দাদা।
    মানিক্দা থমকে গেলেন। উঠে গিয়ে জল গড়িয়ে খেয়ে বিড়ি ধরালেন। তারপর থেমে থেমে একটু নীচুগলায় বললেন-- তুমি হয়ত ভুল বুঝছ, লতা! দু'কথায় বলছি আমি তোমাকে কী চোখে দেখি
    তুমি পথ ভুলে এখানে এসেছ। এই অশ্বমেধ যজ্ঞে। একদিন এর তান্ত্রিক ক্রিয়াকলাপ, আচার-আচরণ তোমার অসহ্য হয়ে উঠবে। সেদিন যেন তোমার কোনটা মন্ত্র আর কোনটা তন্ত্র তার ফারাক বুঝতে পার। তোমার জন্যে আমার চিন্তা এইটুকুই। এর বেশি গুরুগিরি করার সাধ্যি বা ইচ্ছে আমার নেই।

    আমিও সহজ হবার চেষ্টা করি।
    -- বেশ বলেছেন মানিকদা,-- মন্ত্র আর তন্ত্রের ফারাক চেনার ক্ষমতা! আচ্ছা, মন্ত্র আর তন্ত্রের চেহারাটা কী করে আলাদা একটু বলুন।
    -- একটু ভেবে নি? দাঁড়াও, মন্ত্র মানুষকে বাঁধন কেটে বেরিয়ে আসার শক্তি দেয়।খোলা হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেওয়ার কথা বলে। কিছু বুঝলে?
    আমি হাসি।
    --- কুছ কুছ। ফির তন্ত্র কিস ক্ষেত কী মূলী? কিস্‌ চিড়িয়া কা নাম?
    --- তন্ত্র হাতে পায়ে বেড়ি পরায়; খাঁচায় ঢোকায়।
    -- মানিকদা! আর একটু সহজ করে বলতে পারবেন না?
    --- চেষ্টা করছি। মন্ত্র আর তন্ত্র-- দুজনেই বলে মানুষের জামাকাপড়ের দরকার। কিন্তু মন্ত্র বলে দরজির দোকানে গিয়ে সবাইকে নিজের নিজের মাপ মত জামা বানাতে। তন্ত্র বলে সবাইকে গারমেন্ট শপে গিয়ে রেডিমেড জামাকাপড় কিনতে। এবার?
    --- আগের চেয়ে বেটার। অনেকটা বুঝেছি মনে হচ্ছে। এবার শেষ করুন।
    -- আচ্ছা। আমি তোমাকে দুটো গল্প শোনাচ্ছি। নভেল নয়, শর্ট স্টোরি। বেশিক্ষণ লাগবে না। এতেই মন্ত্রদীক্ষা সম্পূর্ণ হবে মনে হয়।
  • ranjan roy | 24.96.84.213 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৩৪651083
  • আমার হাই উঠছে। তবু মানিকদার মুখের ভাব দেখে হাসি পেয়ে গেল। সেটাকে ঢোঁক গিলে বললাম-- বলেই ফেলুন। আপনি যখন ছাড়বেন না!
    মানিক্দা দেখেও দেখলেন না। ডুবে গেলেন পুরনো দিনের জাবরকাটায়।
    -- তখন বরানগর-কাশীপুর গণহত্যাকান্ড ঘটে গিয়েছে। চারু মজুমদার ধরা পড়ে হাসপাতালে রহস্যজনক ভাবে মারা গিয়েছিলেন। সরোজ দত্ত নিখোঁজ। তাঁর মৃত্যু নিয়ে উড়ো খবর ছড়িয়ে পড়েছে। সত্যনারায়ণ মিশ্র, অসীম চাটুজ্জেরা আলাদা দল গড়েছেন। সব মিলিয়ে একটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা। সবাই পালাচ্ছে, কেউ কেউ শেয়ালের গর্তে। কিন্তু লুকোনোর জায়গাগুলো ফুরিয়ে আসছে যে! বহু এলাকায় আমাদের সাথীরা ঢুকতে পারছে না। পুরনো সমর্থকরা মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন।
    ধর দুর্গাপুর। একসময়ের শক্ত ঘাঁটি। শুধু স্টিল বা অ্যালয় নয়, অনেক গুলো সরকারি প্রোজেক্টের উঁচুপদের অফিসারদের মধ্য আমাদের সমর্থ ছিল। এমন সব বাড়িতে শেলটার ছিল যে পুলিশ সন্দেহ করত না। একসময় চারু মজুমদার-কানু সান্যালরা সিক্রেট মিটিং করে গেছেন।
    কিন্তু তখন নিজেদের মধ্যে মুষলপর্ব শুরু হয়ে গেছে। মতাদর্শগত বিরোধের সমাধান খোঁজা হচ্ছে আলাপ-আলোচনায় বা তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে নয়, সোজা অ্যাকশন করে বা হননপর্বে। উপদলীয় কাজিয়ায় কমরেড নাগ হত্যার মাধ্যমে তার চরম প্রকাশ ঘ্টল।
    হটাৎ যেন মধ্যবিত্তেরা আমাদের প্রতি বিরূপ হয়ে উঠলেন।
    এক রাত্তিরে আমি একজন জুনিয়র সাথীকে নিয়ে শেল্টার নিলাম এক সমর্থকের বাড়িতে। ছাপোষা পরিবার।
    দু-কামরার সরকারি কোয়ার্টার। ভেতরের ঘরে আমরা দুজন শুয়েছি। বাইরের ঘরে ওরা স্বামী-স্ত্রী ও বাচ্চাটি। স্ত্রী আমাদের একসময়ের সক্রিয় সমর্থক।

    গতকালও এ'পাড়ায় সিআরপির কম্বিং অপারেশন হয়ে গেছে।
    কম্বিং অপারেশন বোঝ? চিরুনি তল্লাশি?
    একটা এলাকা-- ধর কয়েক বর্গ কিলোমিটার - আচমকা খুঁটি পুঁতে ফটাফট জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হল। খুঁটি গুলোর কাছে সশস্ত্র সিআরপি জোয়ানেরা দাঁড়িয়ে। পাড়ার ভেতরে ঢুকবে লোক্যাল পুলিশ । একেকটা ঘরে, যেখানে সন্দেহ বা খোচরের কাছে খবর আছে আর কি, গিয়ে বাড়ির সব লোকজনকে একটা ঘরে জড়ো করাবে। তারপর রেশন কার্ডের সঙ্গে মিলিয়ে তাদের আইডেন্টিটি ভেরিফাই করবে। কেউ হয়ত বেড়াতে এসেছে, বন্ধু বা আত্মীয়, তার নাম তো রেশন কার্ডে থাকবে না। ব্যস্‌, চল থানায়।
    যতক্ষণ তার পরিচয় তার নিজের পাড়ার থানার থেকে ভেরিফাই না হচ্ছে ততক্ষণ আটক থাকতে হবে।
    আমি অনেক ভেবে রিস্ক নিয়েছি। কাল এতবড় কম্বিং হয়ে গেছে তো আজকে নিশ্চয় অন্য এলাকায় হবে।

    রাত বারোটা বেজে গেছে।
  • potke | 126.202.18.36 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৪৯651084
  • রায়্মশায়, মেল দেখবেন একটু।
  • ranjan roy | 24.96.84.213 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১২:১৫651086
  • রাস্তা থেকে দূরগামী ট্রাকের শব্দ ভেসে আসছে। মাঝে মাঝে সাইরেন বাজিয়ে পুলিশের গাড়ি ছুটে যাচ্ছে। বুঝতে পাচ্ছি, পাশের ঘরে স্বামী-স্ত্রী জেগে আছে।
    যতবার সাইরেনের আওয়াজ শোনা যায় ততবার স্বামীদেবতাটি উশখুশ করে আর স্ত্রীর দাবড়ানি খায়।
    -- পুলিশের গাড়ি!
    -- হ্যাঁ, তুমি তো সব চেন! একেবারে পুলিশের গায়ের গন্ধ টের পাচ্ছ।
    -- না, কালকেই এখানে অপারেশন হয়ে গেল।
    --- তাতে তোমার কি?
    -- না, কিছু না। মনে হয় আজকে কেউ আসবে না।
    -- আসবে না।
    --আচ্ছা, আমাদের এই কোয়ার্টারে ঢোকবার-বেরোবার একটাই রাস্তা।
    -- তো?
    -- না, বলছিলাম কি, যদি পুলিশ এসে দরজায় নক্‌ করে--
    --করবে না!
    -- না, বলা তো যায় না! যদি আসে একটাই দরজা তো! তখন বন্ধুদের কোন দরজা দিয়ে বের করা যেতে পারে, তাই ভাবছি।
    -- আর ভাবতে হবে না। একেবারে জ্বালিয়ে খেলে।
    এর পর মহিলাটি এসে আমাদের দরজায় নক্‌ করলেন।
    -- শুনছেন, আমাদের কথা হয়ত আপনার কানে এসেছে। আমার স্বামী অকারণেই বিব্রত বোধ করছে, ভয় পাচ্ছে। বুঝতেই পারছেন---।
    আমি চুপচাপ সঙ্গের ছেলেটিকে নিয়ে কাঁধের ঝোলা তুলে তক্ষুণি বেরিয়ে যাই। হাঁটতে থাকি। সঙ্গের কমরেডটির পায়ের ক্ষত বিষিয়ে উঠছে। শেষে নদীর পাশে শুকনো বালিয়াড়ির মধ্যে চাদর বিছিয়ে রাত কাটাই।

    নাঃ, আজ মানিকদার এই গল্প আমাকে ছোঁয় না। বিরক্ত লাগে। তাই শুকনো গলায় বলি-- বেশ গল্প। কিন্তু এর সঙ্গে আমাদের আগের কথাবার্তার কি সম্পর্ক? এই যদি আপনার দুটো গল্পের একটা হয় তো --।
    -- আরে শোনই না একটু! এটা মূল গল্পের ভূমিকা। এ না বুঝলে আমার আসল গল্পটা বুঝবে না। শোন, সেই সব দিনে তোমার বয়সী অনেক মেয়ে এই আন্দোলনে ঘর ছেড়ে এসেছিল। তোমার মত পাকেচক্রে নয়, জেনে শুনে। হয়ত ঠিক জেনে বুঝে নয়।খানিকটা আদর্শবাদ, খানিকটা রোম্যান্টিসিজম। খানিকটা জীবনমৃত্যু-- পায়ের ভৃত্য-চিত্ত ভাবনাহীন গোছের।
    -- কাজের কথায় আসুন।
    -- ্সেই সময় অনেকে ভাবল যে আমরা কবে আছি কবে নেই তাই, যে ক'টা দিন আছি, ততদিন--। এমন জোড়ায় জোড়ায় সব অল্প বয়সের স্বামী-স্ত্রী শেল্টারে অনায়াসে বলত -- মেসোমশায়, আমাদের আলাদা ঘর দিতে পারলে ভালো হয়।
  • ranjan roy | 24.96.84.213 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১২:৫১651087
  • এবার আমার মুখের স্বাদ তেতো হয়ে গেছে। এই রাত্তিরে এসব কি ফালতু গপ্পো ফেঁদে বসেছেন মানিকদা? মতলবটা কী?
    -- মানিকদা, পয়েন্টে আসুন। আমি এখনও আপনার কহানীর শির-পের বুঝতে পারছি না।

    --বলতে চাইছি পরাজয়ের দিনগুলোতে সেই মেয়েগুলোর মোহভঙ্গ হল। কিন্তু ঘরে ফেরার রাস্তা সহজ নয়। কারো চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। কারো ঘর ভেঙে গেছে। বাবার চাকরি গেছে বা মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরিবারটি নিজেদের পাড়া ছেড়ে অন্য কোথাও উঠে যেতে বাধ্য হয়েছে।
    এমনি এক দিনে কোলকাতার কাছেই এক শেল্টারে রাত্তিরে বাথরুম যেতে গিয়ে দেখি একটি অল্পবয়সী মেয়ে--যার চেহারায় এখনও কিশোর বয়সের লাবণ্য-- বারান্দায় দাঁড়িয়ে হি-হি করে কাঁপছে। আমি অবাক। ওকে আমার ঘরে এনে চাদর জড়িয়ে শুতে দিয়ে আমি বারান্দায় রাত কাটালাম।
    কারণ, এক নেতৃস্থানীয় কমরেড। উনি ছিলেন পাশের ঘরে, বাচ্চা মেয়েটিকে জ্বালিয়ে মারছিলেন। ঘুমোতে দিচ্ছিলেন না।
    আমার সঙ্গে সেই কমরেডটির রাত্তিরেই কুৎসিত ঝগড়া হল। উনি তখন ক্রুদ্ধ বাঘ, আমি মুখের থেকে শিকার ছিনিয়ে নিয়েছি! আমাকে পিস্তল বের করতে হল। তখন উনি দরজায় খিল দিলেন।
    যাকগে, এসব নতুন কিছু নয়।
    আসলে হেরে যাওয়া সৈন্যবাহিনী যখন ক্রমাগতঃ পিছু হটে, তখন পালানোর পথে উচ্ছৃংখল লুঠেরা হয়ে যায়। গ্রাম কে গ্রাম, ক্ষেতখামার, ধানের গোলা --সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে যায়। আমাদেরও তখন সেই হাল।
    কিন্তু নেতাটি অপমান ভোলেন নি। বদলা নিলেন আমাকে শাস্তি দিয়ে-- প্রেমহীন বিপ্লবী বিয়ের শাস্তি। আগে যে বলেছিলাম, আমার দ্বিতীয় বিয়ের হোতা উনিই।
    আর উনি এই বিয়ে দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন।
    না, তুমি যা ভাবছ তা নয়। ওই বাচ্চা মেয়েটি আমার দ্বিতীয় স্ত্রী নয়। ওকে আমি পরের দিন অনেক বোঝাই। তারপর ওকে ঘরে ফিরতে রাজি করিয়ে সন্ধ্যের অন্ধকারে ওর পাড়ার কাছে ছেড়ে দিয়ে আসি।

    আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে এই নেতার আগে কোন যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু সেই মেয়েটি অসম্ভব তেজি আগেই বলেছি। এক শেল্টারে আশ্রয়্দাতা মেসোমশায় রাত্তিরে শ্রান্ত-ক্লান্ত মেয়েদের ঘুমন্ত শরীরে নিয়মিত হাত বোলাতেন। অধিকংশ মেয়েরা শেল্টার হারানোর ভয়ে মুখ খুলত না। কিন্তু ও ঠাটিয়ে একটা চড় মেরে দিনের বেলা পার্টি ইউনিটএ কম্প্লেন করেছিল।
    তদন্তের অবকাশ ছিল না। যেহেতু আগে কোন মেয়ে কম্প্লেন করে নি, তাই মেসোমশায়ের কথাই ঠিক ধরে নেওয়া হল।
    আমাদের ওই শেল্টারটা ভোগে গেল। মেয়েটিকে সতর্ক করে দেওয়া হল।
    তাই উনি বিপ্লবের স্বার্থে এই বিয়েটি করিয়ে আসলে আমাদের দুজনকেই শাস্তি দিলেন।
    তোমাকে এবার বীজমন্ত্র দিচ্ছি যে যখন অসহ্য মনে হবে--ঘরে ফিরে যেয়ো। তন্ত্রমতে বামাচার সবার জন্যে নয়। মন্ত্র ও তন্ত্রের ফারাক চিনে নিও।
    দীক্ষা সমাপ্ত; এবার ঘুমোতে যাও।

    বললেই হল? ঘুম কি ডাকলেই আসে!
  • সিকি | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৪:০৭651088
  • রুদ্ধশ্বাস!
  • ranjan roy | 24.99.39.92 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২১:০৩651089
  • ২)
    ছত্তিশগড়ের একটি মাঝারি গোছের রেলশহর। স্টেশনের কাছেই ইউরোপিয়ান ক্লাব। ইংরেজ আমলের। দেয়ালে ফাটল, অশ্বত্থের চারা।
    রেলের লোকজন দয়া করে বাড়িটির গায়ে Abandoned' তক্তিটি ঝুলিয়ে দেয় নি, এই যা!
    বিকেল হলে এই চত্বরে কিছু লফংগা ছেলেপিলের আড্ডা জমে।
    তার একপাশে কুলিবস্তি, রেলের নিজস্ব ইডিয়মে দেওয়া নাম পোর্টার খোলি। পেছনে রেলের জমিতেই কিছু অবৈধ ভাবে ঝোপড়ি গড়ে উঠেছে। কাঠের তক্তা আর রেললাইনের চুরি করা লোহা দিয়ে তৈরি গায়ে গায়ে লাগা এক একটা ঘর। মাথা নিচু করে ঢুকতে হয়।দরজার ভেতরে ও বাইরে লোহার শাংকল বা শেকল লাগানোর ব্যব্স্থা আছে। খাপরার ও অ্যাসবেটসের ছাত। এঁটোকাঁটা ফেলা ও প্রাকৃতিক কাজকম্মের জন্যে এক্শ' পা হেঁটে গিয়ে বেশ বড় নিচু জমি। তাতে গজিয়ে ওঠা বেশরমের ঝাড়ের আড়ালে জলের লোটা বা মগ বা টিনের কৌটো নিয়ে বসতে হয়।
    স্নান করতে পাড়ার মোড়ে রেলের বসানো হ্যান্ডপাম্প। সেখান থেকেই বালতি ভরে জল নিয়ে যাই, রান্নার জন্যে, খাবার জন্যে, কাপড় কাচার জন্যে।
    চল্লিশটাকা ভাড়ায় ওইরকম একটি ঘরই এখন আমাদের আস্তানা। আমি আর সমীরদা।
    মানিকদার স্মৃতি ফিকে হয়ে গেছে। ঠিক আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড গোছের নয়। আসলে এখন আবার অন্নচিন্তা চমৎকারা।
    তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে এসেছি যে! কমরেড নারায়ণ, ওমপ্রকাশ ও ডাক্তার কুমারের ডিসপেন্সারি কেমন অন্যজগতের ব্যাপার হয়ে গেছে।
    না, শ্বশুরবাড়িতে থাকা সম্ভব হল না। সমীরদার কথায় অল্প কিছু দিন কাটিয়ে আসব ভেবে গিয়েছিলাম। অন্ততঃ দুবেলা ভদ্র পরিচিত খাবার জুটবে, ভাল বিছানায় শোব। সকালে উঠে দৌড়োতে হবে না। শরীরটা একটু বিশ্রাম পাবে। এইসব সাত-পাঁচ ভেবেই গিয়েছিলাম। সেই অ্যাবর্শনের পরে বিশ্রামের বড় দরকার ছিল। শরীর উঠছে না।
    তা সমীরদার কথায় কোন ভুল ছিল না। মাসখানেক ভালই কাটল। আমি চাইলেও শ্বাশুড়ি খাটাখাটনি করতে দিতেন না। আমাদের দুজনকে একটা আলাদা ঘর দেওয়া হল।
    শ্বশুর এখন রিটায়ার্ড। ভালমানুষ। সন্ধ্যের দিকে নিজের ঘরে বসে একটু মদ খাওয়া ছাড়া অন্য কোন কিছু দেখিনি। সেসময় উনি পরতপক্ষে আমার সামনে আসতেন না। সকালে বাজার থেকে আমার জন্যে ছোটমাছ নিয়ে আসতেন।
    কানে এল বাবাও রিটায়ার করেছেন। ছোট বোন মাধ্যমিক দেবে। দাদা ভিলাই শহরে চাকরি পেয়েছে। আর বাবার হোমিওপ্যাথির পসার এখন বেশ বেড়ে গেছে।
    তাই পুরনো কোয়ার্টারেই রিটায়ারমেন্টের পর কায়দা করে রয়ে গেছে। বাইরের দিকে একটা কাজচালানো গোছের কামরা নাকি বানিয়ে নিয়েছে। একটা স্কুটারে চড়ে রুগি দেখতে যায়।
    কোম্পানি এইসব ছোটখাট অনিয়ম দেখেও দেখছে না। ডাক্তারবাবু বেশ পপুলার যে!
    শ্বাশুড়ি খবর দিয়েছিলেন। তবু ও'বাড়ি থেকে আমাকে কেউ দেখতে আসে নি। তাতে আমার ভারি বয়ে গেছে! তবে সমীরদাকে একদিন বলেছিলাম দাদাকে খবর দিতে। ও জানতে পারলে নিশ্চয় আসবে। সমীরদা বলেছিল যে ভিলাই থেকে ছুটিছাটায় বাড়ি ফিরলে সমীদাকে ঠিক ডেকে আনবে।
    তবু সময় মিলিয়ে দিনগুলো খুব খারাপ ছিল না। সমস্যা শুরু হল একমাস পর। দুটো ঘটনা ঘটল।
  • - | 109.133.152.163 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২২:৩৭651090
  • শাশুড়ি।
    শ্বশুর কিন্তু ব-কার-ওয়ালা
  • ranjan roy | 24.99.114.11 | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:৫৯651091
  • - কে ধন্যবাদ, এই ভুল শুধরে দেওয়ার জন্যে। আর একটা কথা। 'পড়ে' আর 'পড়ে' নিয়ে হরদম হোঁচট খাচ্ছি, আন্দাজে মারছি। কোথাও চোখে পড়লে শুধরে দেবেন।
    দময়ন্তীর কল্যাণে 'কি' ও 'কী' কে অনেকটা দুরুস্ত করে এনেছি।ঃ))
    ৪০ বছর পরে বাংলা লেখার চেষ্টা বেশ চাপের। যদিও সেটা কোন অজুহাত হতে পারে না।
  • সিকি | 131.241.127.1 | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৪৫651092
  • জামাকাপড় গয়নাগাঁটি "পরে"। আর উপন্যাস "পড়ে"। গাছ থেকে, ছাদ থেকে, আকাশ থেকেও "পড়ে"।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৫:৪৭651093
  • তারপর?
  • ranjan roy | 24.99.232.181 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১২:১১651094
  • ঘটনা দুটোর নাম দিলাম- পিতাপুত্র সংবাদ ও শাসবহু সংবাদ। কোনটা দিয়ে শুরু করি?
    একদিন শ্বশুরমশাই ছেলেকে ডেকে জানতে চাইলেন-- রোজগারপাতি নিয়ে সে কী ভাবনাচিন্তা করছে? মেঘে মেঘে অনেক বেলা হল। বিয়েও হয়ে গেছে। বউকে খাওয়াতে তো হবে।
    উনি সিপিআইয়ের ইউনিয়ন মেম্বার। এইসব কম্যুনিস্টি চিন্তা নাকি সমীরদা প্রথমে বাড়ির বইপত্তর পড়েই পেয়েছিল। তবে ওনার চিনের চেয়ারম্যান নিয়ে আদিখ্যেতা একেবারে নাপসন্দ! আর নেহরুর প্রতি বেশ ভক্তিশ্রদ্ধা আছে।
    ছেলে আড়ালে আমার সামনে বলেছে-- থাকবে নাই কেন? যদি নেহরুর দ্বিতীয় পাঁচসালা যোজনা না হত তাহলে পাবলিক সেল্ক্টরে স্টিল প্ল্যান্ট, মাইনিং কি করে হত? আর বাবার অমন সুখের চাকরি কে জোগাত?
    উনি একদিন সকালে চা খেতে খেতে বললেন-- সুবে কা ভুলা অগর শাম কো ঘর লৌট আয়ে তো উসে ভুলা নহীঁ কহতে! বিপ্লব হয় নি, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছ, বেশ করেছ। এখন ভাল করে সংসারধর্ম কর। তোমার মায়েরও বয়স হচ্ছে। আমি বলি কি, সায়েন্সের ছেলে আইটিআই এ ভর্তি হয়ে যাও। মেকানিক্যাল ড্রাফটসম্যান বা মেশিনিস্ট-কাম মিলার ট্রেড নিয়ে নাও। এক বছরের কোর্স। দেখতে দেখতে কেটে যাবে তারপর ভিলাইয়ে প্ল্যান্টে বা কাছের কোন অ্যান্সিলিয়ারি ইউনিটে চাকরি পেয়ে যাবে। কালকেই গিয়ে ফর্ম ভরে ভর্তি হয়ে যাও, আমি একজনের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। সিকিউরিটির টাকা আমি দিয়ে দেব।
    আমার শুনে মনটা বেশ ভিজে গেল। কিন্তু সেই যে বলে না-- কপালে নেইকো ঘি, ঠক ঠকালে হবে কি!
    বাবার এত ভাল ভাল কথাতেও ভবি ভুলল না।
    সমীরদা লেজে পা পড়া সাপের মত ফোঁস করে উঠল।
    -- তুমি ওই ছ্যাঁচড়া সংশোধনবাদীদের সঙ্গে আছ বলে এইসব ফালতু কথা বলতে পারলে! কে বলেছে বিপ্লব হচ্ছে না! লেনিনের "দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের পতন" পড়লে দেখতে পেতে বিপ্লবের অবজেটিভ কন্ডিশন ভারতে উপস্থিত। নেই শুধু সাবজেক্টিভ কন্ডিশন বা সাচ্চা কমিউনিস্ট দল। এখন সেই পার্টি গড়ে তোলাই একমাত্র কর্তব্য।
    যাকগে, তোমাদের এসব বলে লাভ নেই। তোমরা পড় 'ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া'। এমার্জেন্সির সময় নেহেরুর মেয়েকে সমর্থন করেছিলে, তোমাদের সঙ্গে সিরিয়াস রাজনীতির চর্চা করাই বেকার।
    --- আমরা শ্রমিক আন্দোলন করি না?
    -- ওঃ, ওই দু-আনা চার-আনা বাড়ানোর আন্দোলন? ভিক্ষে চাওয়া? লেনিন এগুলোকে অর্থনীতিবাদ পা পাইয়ে দেওয়ার শস্তা আন্দোলন বলেছেন। শ্রমিকশ্রেণীর রাজনৈতিক আন্দোলন কোথায়?
  • ranjan roy | 24.99.26.226 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১২:৪৭651095
  • ওঁর ফরসা হাসি হাসি মুখটা কালো হয়ে গেল। খানিকক্ষণ চুপ করে বাইরের দিকে তাকিয়ে উঠোনে চড়ুইপাখির ওড়াওড়ি দেখতে লাগলেন। তারপর চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বললেন-- ঠিক আছে। আমার শুধু একটাই প্রশ্ন-- এই বাচ্চা মেয়েটার কী দোষ? কাল তোমাদের সন্তানাদি হবে, তখন খরচ কী ভাবে চলবে?

    সাপ ছোবল দিয়েছে, এবার মোচড় দিয়ে বিষ ঢেলে দিল।
    -- ও, তোমার আসল চিন্তা আমাদের খাবারের খরচ? এইবার সত্যিটা বেরিয়ে এসেছে। আর ক'টা দিন! তারপর আমি ওকে নিয়ে চলে যাব। বসে বসে তোমার অন্ন ধ্বংস করব না। নিশ্চিন্ত থাক।
    আর বোধহয় আমি তোমার সঙ্গে একছাতের নিচে থাকলে পুলিশে টানাটানির ভয়ও আছে? কি বল?
    উনি গায়ের ফতুয়াটা একটু নিচের দিকে টানলেন। তারপর বেরিয়ে যেতে যেতে বললেন-- আমি ওসব ভাবিইনি। কিন্তু আমার আগামী বছর রিটায়ারমেন্ট , তারপর?
    উনি চলে গেলে আমি বললাম-- এ তুমি কী করলে? ওঁকে খামোকা--।
    -- আরে ঠিক আছে। মধ্যবিত্ত পেটিবুর্জোয়ারা শোধরাবে না। না বললে হত, কিন্তু বিপ্লব নিয়ে উল্টোপাল্টা জ্ঞান দেওয়া! মাথা গরম হয়ে গেছ্ল।
    সমীরদা অন্য আস্তানা জোগাড় করতে উঠে পড়ে লেগে গেল। কিন্তু সেখানেও ধাক্কা! ছাত্রজীবনে সমীরদার পাক্কা চেলা তেলেগু রবি কায়দা করে সমীরদাকে ওর বাড়িতে ঢুকতে দিল না। ও এখন মাইনিং এর ওয়ার্কশপে অ্যাপ্রেন্টিস।
    সমীরদা মুখে না বললেও বুঝলাম কোথায় লেগে্ছে। এই রবি আমাদের রেজিস্ট্রি বিয়ের সময় সাক্ষী ছিল।অন্য বন্ধুরাও কেউ বিশেষ এখানে নেই। সবাই পেটের ধান্দায় নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।
    এইসব দেখে আমি একদিন আমার মিশনারী স্কুলে চলে গেলাম। সেই সিস্টার যিনি আমার ক্লাস টিচার ছিলেন উনি এখন এখানে নেই। কেরালায় বদলি হয়ে গেছেন। ভেবেছিলাম-- যদি মিশনের হাসপাতালে কাজ পেয়ে যাই। কম মাইনেতেই সই!
    তাই সমীরদাকে বললাম--সোমবার দিনই আমাকে সঙ্গে নিয়ে মিশন হাসপাতালে চল। তোমারও কিছু হিল্লে হতে পারে। প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবে অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ওইরকম কিছু।
    -- চল! কেউ না কেউ চেনা ঠিক বেরিয়ে যাবে।

    আর কি আশ্চর্য! চেনা ঠিক বেরিয়ে গেল। হাসপাতালের হেড নার্স সমীরদার চেনা বটে! রেজিনা সিস্টার। যার প্রেমে সমীরদা একসময় পাগল ছিল। যার বাবা নাস্তিক বলে সমীরদাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল।
    রেজিনা খুব ভাল ব্যবহার করে। আমাদের বসতে বলে কফি আনায়। সমীরদার সঙ্গে হেসে কথা বলে। হাল-হকিকত জানতে চায়, আর মাঝেমাঝেইআড়চোখে আমাকে দেখতে থাকে।
    --- হ্যাঁ, একটা কাজ হতে পারে, তোমার মিসেসের। আয়ার পোস্ট একটা খালি আছে। কিন্তু তোমার বৌ হিন্দু, এসব কাজ করবে কি? রোগির সেবা করা, জামাকাপড় বদলে গা মুছিয়ে দেওয়া, দরকার পড়লে বেডপ্যান দেওয়া, বমি সাফ করা? আমাদের ক্রিশ্চান মেয়ে হলে কোন চিন্তা ছিল না। পীড়িতের সেবা তো যিশুর সেবা।
    অবশ্যি আমার আন্ডারে থাকবে, কোন চিন্তা নেই। একবেডরুমের কোয়ার্টার পাবে। মেডিক্যাল ফ্রি। ইউনিফর্ম ফ্রি। মাইনে যা পাবে তাতে দুটো পেট চলে যাবে।
    রাগ কর না, তুমি বোধহয় এখনো নাস্তিক। কিন্তু তোমার বৌ অমন নয় বলেই মনে হয়। অত পাকা আর অহংকারী নয়। ও যদি মিশনে যোগ দিতে রাজি থাকে তাহলে কোন চিন্তাই নেই।
  • ranjan roy | 24.96.178.62 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৩:০৭651097
  • আমার মাথায় একটাই চিন্তা। আছে, আছে--জায়গা আছে।
    কিন্তু আমি খানিকক্ষণ পরেই ওর কথা ভুলে গিয়ে ওকে দেখতে লাগলাম।
    একটু মোটা হয়েছে বটে, কিন্তু সুন্দরী বটে! বিয়ে হয়েছে কি না জানতে পারি নি। তবে ও সমীরদাকে দেখে খুশি হয়েছে। চোখে কি বিদ্যুৎ চমকায়? আর সমীরদা? ভিজে কাঠে কি আগুন জ্বলতে পারে? না জ্বললেও ধোঁয়া তো বেরোতে পারে। সে ধোঁয়া তো উঠছে বলেই মনে হয়। আমার হাত-পা কাঠ হয়ে যায়। কানে ঢোকে আসছে রোববারের মাস এর পরে আমাদের কোয়ার্টারে এস। মিঃ জোনাথান তোমাদের দেখে খুব খুশি হবেন। আর আমাদের বেবি ন্যান্সি কে দেখবে, টডলার! কিন্তু খুব কিউট!
    আমি উঠে দাঁড়াই, সমীরদার হাত ধরে বলি --আচ্ছা, এবার তাহলে আসি?
    রেজিনাও সুন্দর করে হাসে।
    --আচ্ছা, বাড়ি গিয়ে ভাল করে ভেবে দেখ--এসব কাজ করবে কি না! দুদিন সময়। ডাক্তার পরশু ফিরে আসবেন। কাজটা ধরে নাও হয়েই গেছে। শুধু তোমার মন স্থির করা।
    বাড়ি পৌঁছানোর আগেই মন স্থির হয়ে যায়।
    -- শোন, অন্য কাজের খোঁজ কর, অন্য শহরে।
    --সে কি! এত ভাল কাজ আর কোথায় পাবে? মিশন হাসপাতালে--।
    আমি মুখের কথা কেড়ে নিয়ে ঝাঁজিয়ে উঠি--সত্যি! খুব ভাল কাজ। এইজন্যেই আমাকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে বিয়ে করেছিলে? রেজিনার বাঁদিগিরি করাবে বলে? ও ইঞ্জেক্শন লাগাবে আর আমি রোগির গু-মুত ঘাঁটবো?
    সমীরদা অবাক হয়ে আমাকে খানিকক্ষণ দেখে। ওর কাঁধ ঝুলে পড়ে।
    -- ঠিক আছে, এখন বাড়ি চল। ক্ষিদে পেয়ে্ছে।
    পরের দুটো দিন আমাদের মধ্যে হ্যাঁ-- না ছাড়া কোন কথা হয় না।
    ঠিক এই সময়ই দ্বিতীয় ঘটনা ঘটল।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৩:৫১651098
  • দুর্দান্ত হচ্ছে।
  • ranjan roy | 24.96.122.214 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২১:২০651099
  • সমীরদার আমার শরীর নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা ছিল। ভাবল এই সুযোগে ভাল ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা-টরিক্ষা করিয়ে নেবে।
    মাইনসের প্রোজেক্ট হাসপাতালে তখন যিনি গাইনি তাঁর বেশ নাম ডাক। আমাকে শাশুড়ি সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন। ডঃ বিনীতা দাভে শাশুড়িকে মহিলা সমিতির বিভিন্ন কাজের সুবাদে ভাল করে চিনতেন। ভাল ভাবে পরীক্ষা করলেন। অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। বেশ কিছু ল্যাব টেস্ট হল। প্রোজেক্টের হাসপাতাল বলে বেশিরভাগই বিনে পয়সায়। তিনদিন পরে এসে রিপোর্ট নিয়ে যেতে বললেন।
    সেদিনও আমরা শাস-বহু বেশ সেজেগুজে গেলাম। উনি হাসিমুখে কিছু অ্যাডভাইস দিলেন। কিছু প্রয়োজনীয় সতর্কতা। বললেন- চিন্তার কোন কারণ নেই।
    হাসপাতালের কম্পাউন্ডে একটি শিবমন্দির আছে, খুব জাগ্রত, সবাই বলে। হাসপাতাল তৈরির সময়-- যখন গাঁ উজাড় করে কোম্পানি জমির দখল নিচ্ছে-- এই প্রাচীন শিবমন্দিরকে আরেকটু সামনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা হল। এখানে রেডিওলজি ও প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টের জন্যে বিল্ডিং তৈরি হবে।
    প্রথম খেপে মন্দিরের সামনের কয়েকদশক পুরনো বেলগাছটা কেটে ফেলার চেষ্টা হল। আশপাশের গাঁ থেকে আসা লেবাররা রাজি হচ্ছিল না।শেষে তেলেগু লেবারদের দিয়ে চেষ্টা করা হল। কি আশ্চর্য, যে গিয়ে কোদালের কোপ দেয় তারই সন্ধ্যে নাগাদ হু-হু করে জ্বর আসে।
    দু-একজন ভেদবমি হয়ে মারা যায়।
    তখন সবাই নিঃসন্দেহ হয় যে এই ভৈরবের থান জাগ্রত। ফলে ওই মন্দির আর বেলগাছকে অক্ষত রেখে নতুন নকশা বানিয়ে বিল্ডিং তৈরি হয়।
    কিছু লোক্যাল খবরি বা পত্রকার মিশনের হাসপাতালের মাথা ফাদারের কাছে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইতে গেলে উনি তাদের মিশন কম্পাউন্ড থেকে দূর দূর করে খেদিয়ে দেন।
    এসব গপ্পো শুনেই আমি এই ছোট্ট শহরে বড় হয়েছি।
    এখন শাশুড়ি বললেন --যাও বৌমা, তুমি সেরে উঠেছ। শিবের মাথায় দুটো ফুল বেলপাতা দিয়ে জল চড়িয়ে এস। আমি আর একটু ডাক্তার দাভের সঙ্গে কথা বলে তবে আসছি।

    বাড়ি ফেরার সময় শাশুড়িকে কিছু অন্যমনস্ক দেখলাম। কিছু একটা ভাবছিলেন। আমার বকবকানির জবাবে হুঁ-হাঁ করে সারছিলেন।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২১:৩৫651100
  • পড়ছি।
  • ranjan roy | 24.96.35.244 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৫:০০651101
  • ঘরে এসে কাপড়চোপড় বদলে চায়ের জল চড়িয়ে ওকে সব মেডিক্যাল রিপোর্টগুলো দেখাতে শুরু করেছি কি শাশুড়ি ডেকে পাঠালেন--- বৌমা, একটু শুনে যাও তো!
    --দাঁড়ান মা, চায়ের জল বোধহয় ফুটে গেছে। দেখে নিয়ে আসছি।
    ওনার উত্তর না পেয়ে সোজা চা বানিয়ে শ্বশুর মশায়কে দিয়ে তারপর শাশুড়ির চা নিয়ে ওনার শোয়ার ঘরে গেলাম।
    -- ডাকছিলেন মা?

    উত্তর না দিয়ে উনি দরজা বন্ধ করে আমার মুখোমুখি হলেন।
    আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এ কার মুখ? ফুলে উঠেছে নাকের পাটা, চোখ থেকে আগুন ঝরছে।
    আমি যতটা না ভয় পেয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক।
    -- কী হয়েছে মা?
    --- পেট খসিয়েছিলি কেন?
    --- মানে?
    --- বেশি চালাকি করিস না! কতবার?
    --- কী কতবার মা?
    ---হারামজাদি! ন্যাকামি হচ্ছে? তুই ছেলেকে না জানিয়ে দু-দুবার গর্ভপাত করাস নি?
    --- মা, এসব কী বলছেন? আপনার ছেলে সব জানে! ওকে না জানিয়ে কি করে--
    -- চোপ্‌! ঢলানি! আবার চোপা হচ্ছে? ছেলের থেকে জেনে্ছি যে দুবারই ও সামনে ছিল না। পরের বার তো ও মহারাষ্ট্রে ছিল। কাগজে তোর স্বামী সেজে একটা কুলি-মজদুর গোছের লোক সই করেছিল।
    তোর লজ্জা করে না? তাহলে এখানে কেন এলি? মুখে চুন-কালি মাখিয়ে? কুলি-ধাওড়ায় গিয়ে থাকলেই পারতিস্‌?
    --- মা! এমন করে বলবেন না, প্লীজ! আমার কথাটাও শুনুন। আমি কিছু করাই নি। একটা মিদনাপুরের জেলে হয়েছিল, পুলিশের মারে। আর পরের বার বাইকের ধাক্কায় অ্যাকসিডেন্ট হয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলাম। তারপর কী হয়েছিল --জানিনা। আর আমার প্রাণ বাঁচাতে যে অপারেশনের কাগজে সই দিয়েছে সে আপনার ছেলের কমরেড। ওকে জিজ্ঞেস করুন।
    --- সে তো সই দেবেই। আমার ছেলে গেছে মহারাষ্ট্রে, বনে- জঙ্গলে, প্রাণ হাতে করে। আর তুই এদিকে তোর ঘরে ওর কমরেডদের ডাকছিস।
  • ranjan roy | 24.99.77.142 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৫:২৫651102
  • এবার আমার সহ্যের সীমা ছাড়াল।
    আমি মাপা পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজার ছিটকিনি খুলি। দমবন্ধ হয়ে আসছে। বাইরে বাগানে যাই একটু।
    কিন্তু তার আগেই চুলে টান পড়ল। ক্ষিপ্র হাতে উনি আমার চুলের মুঠি ধরে ঝাঁকাতে লাগলেন।
    -- যাচ্ছিস কোথায় হারামজাদি! আমার ছেলেকে গিয়ে লাগাবি?
    -- চুল ছাড়ুন মা! চুল ছাড়ুন বলছি।
    --- কী করবি? করবি কী শুনি?
    -- দেখুন মা,গায়ে হাত দেবেন না, আর গালি দিয়ে কথা বলবেন না।আমি আপনাদের বাড়ির বউ, আমারও একটা সম্মান আছে।
    --- এঃ! চ্যাটাং চ্যাটাং কথা! এসব তোদের কমরেডদের গিয়ে শোনা। এ বাড়িতে চলবে না।
    --- চলেই যাব। এখানে থাকব না।
    -- যা না! তোকে পায়ে ধরে সেধে রাখব নাকি? যেখানে যাবার কবে যাবি বল! মন্দিরে গিয়ে পূজো দেব। পাপ বিদেয় হোক!
    এবার আমি কেঁদে ফেলি।
    -- এসব কী বলছেন মা? আমি কী পাপ করেছি?
    -- করিসনি? আমাদের বংশের মুখে চুণকালি লেপে দিস নি?
    --- মানে?
    -- শুনে নে; আমরাও ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না। তুই না বললে কি হবে? ডাক্তার দাভে আমায় আজ বললেন যে তোর পেট থেকে বাচ্চাদানি বের করে নেওয়া হয়েছে। অন্ততঃ দু-দুবার তুই পেট সাফ করিয়েছিস। আর তুই কোনদিন মা হতে পারবি না।
    আমার মাথায় বাজ পড়ল।
    -- বিশ্বাস করুন মা, আমি এসব কিছুই জানি না। হ্যাঁ, প্রথমবার জেলের হাসপাতালে ডিএন্ডসি হয়েছিল। কিন্তু পরের বার মেজর সার্জারি হয়েছিল। আমার কোন জ্ঞান ছিল না। তখন আমি মরেও যেতে পারতাম। যদি ইউটেরাস রিমুভ করেও থাকে আমার জানার উপায় ছিল না।
    উনি হটাৎ ফোঁপাতে লাগলেন।
    -- তুই আমাদের সেনদার মেয়ে। তোর বাবা আমাকে বৌদি বলে ডাকেন, অম্বলের ওষুধ দেন। এ বিয়ে আমাদের দুপক্ষেরই বিনা অনুমতিতে হয়েছে। কিন্তু কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি তুই দু-দুবার পেট খসাবি! আর-- আর আমরা কোনদিন নাতি-নাতনির মুখ দেখতে পাবো না। আমাদের নির্বংশ করে গেলি রে!
    আমি আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৫:৪৪651103
  • আই জাস্ট লাভ দিস্‌ শাশুড়ী।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৬:১৯651104
  • কোথাও একটা বোধহয় কনফিউশন হচ্ছে। বাচ্চাদানি বের করে নেওয়া হলে সেটা কিন্তু মেয়েটি জানবেই। শরীরই জানাবে। ওটি না থাকলে ঋতুচক্র হয় না।
  • ranjan roy | 24.96.186.228 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৬:৫২651105
  • সে,
    ঠিকই বলেছেন।
    কনফিউসন তো মেয়েটার মনেই। সেই অপারেশনের মাত্র দু-এক মাসের পর ওরা বিলাসপুর ছেড়েছে। অপারেশনের পরই তো ছাড়ার ডিসিশন কনফার্মড।
    আর তাই ও আর হাজব্যান্ড ডাক্তার দেখালো।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:০৩651106
  • ওকে রঞ্জনদা। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তারদের কর্তব্য ছিলো মেয়েটিকে জানানোর। অপারেশনের পরে হলেও। বোঝা যাচ্ছে যে তারা রোগিনীকে জানানোর ব্যাপারটা এড়িয়ে গেছে। এটা মারাত্মক অপরাধ।
    যাগ্গে, আপনার লেখাটাকে হাইজ্যাক করব না ;-)
  • d | 24.96.62.2 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৭:৪৬651108
  • আমার একটা অন্য খটকা আছে। এই মেয়েটি দুই দুই বার প্রেগন্যান্ট হল কিন্তু টের পেল না, কেমন অদ্ভুত! প্রথমবার বুঝতে পারে নি, ঠিক আছে। কিন্তু দ্বিতীয়বারও বুঝল না? বিশেষ করে নিজে যেখানে নার্সের কাজ করে বেড়ায়। লোকের মুখে শুনে লক্ষণ দেখে অসুখ বলতে পারে .....
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত প্রতিক্রিয়া দিন