এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বেঁচে আছিঃ প্রেমে-অপ্রেমে

    ranjan roy
    অন্যান্য | ০১ অক্টোবর ২০১৪ | ২১৮৫০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 24.99.96.246 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২১:৩৬650843
  • -- আমি এক্ষুনি এ নিয়ে তোমাকে কিছু বলতে চাই না। তুমি সমস্যাটাকে টিপিক্যালি একটা মেয়ের চোখ দিয়ে দেখছ। কিন্তু ব্যাপারটা এত সোজা নয়। বিপ্লবের স্বার্থে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়।
    --ত্যাগ খালি মেয়েরাই করবে?
    -- মানে?
    --- দেখ না, সব মহান পুরুষদের স্ত্রীরা তো রয়েছে পর্দার আড়ালে, মুখবুজে। তারা নিজেরা কী চায় কেউ জানতে চেয়েছে? দ্রৌপদী? সীতা, গৌতম বুদ্ধের যশোধরা,? তোমাদের মাওয়ের দ্বিতীয় বৌ?
    --- আবার বলছি,-- রাম রাজধর্ম পালন করেছেন, তাই সীতাকে পরিত্যাগ করেছেন। কিন্তু রামের কি কষ্ট হয় নি সীতাকে বনে পাঠিয়ে? গৌতম বুদ্ধের? চৈতন্য মহাপ্রভূর? মাও জে-দং এর?
    তেমনই সমাজতন্ত্রের জন্যে এসব কিছু তুচ্ছ। একদিন মানুষে মানুষে বিভেদ মিটে যাবে, তখন নারীর এই শোষণ আর থাকবে না।
  • asmita | 162.79.255.200 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২২:৩০650844
  • রঞ্জন বাবু,

    বিপ্লবের স্বার্থে মহান নেতারা নিজেদের কাম ভাবটা একটু ত্যাগ করলেও তো পারতেন, অত সন্তান পৃথিবীতে না এনে? মনে মনে ভাবুন আপনার স্ত্রী আপনাকে ছেড়ে যাচ্ছেন কারণ আদর্শ মিলছে না - এই ঘটনা যেদিন আকছাড় ঘটানোর মত ম্যাচিওর হবেন মহিলারা সেদিন পুরুষেরা বুঝবেন ত্যাগ কাকে বলে।

    যশোধরা তাও রাজার মেয়ে ছিলেন প্রাত্যহিক জীবনে তেমন অসহায়তা নিতে হয় নি, কিন্তু চৈতন্য মহাপ্রভুর স্ত্রী ত্যাগ করে বেরিয়ে যাওয়াটা অত্যন্ত দায়িত্ব জ্ঞান হীনের মত কাজ হয়েছে আমার মতে।

    পৃথিবীর বেশিরভাগ সমাজ তান্ত্রিক নেতাদের ভাবনার ফাঁকটা ওখানেই - নিজেরা নাকি সমাজে সবার দুঃখ ঘোচানোর কাজ করছি, কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে ব্যবহারে বুর্জোয়াদেরও অধম।

    অত ইগো নিয়ে সমাজে ইকোয়ালিটি আনা যায় না।
  • | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২২:৫১650845
  • আরে বুদ্ধ, চৈতন্য তো অনেক পুরানো লোকজন। রাহুল সাংকৃত্যায়ন ও তাঁর বালিকাবধুকে ত্যাগ করেছিলেন, কি নাকি তাঁর অমতে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তো অতই যদি অনিচ্ছা তো ব্যাটা তুই বিয়ের আচার কেন পালন করেছিলি? বিয়েতে রাজী কেন হয়েছিলি?
    একই কেস তো মোদিবাবুরও। বিয়ের পরে এক্কেরে সন্ন্যাস উঠলে উঠেছে।
  • | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২২:৫২650846
  • *উথলে উঠেছে
  • byaang | 132.167.254.229 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২২:৫৪650847
  • এই লিস্টিতে ঋষি অরবিন্দর নামটাও ঢুকিয়ে দিলাম।
  • byaang | 132.167.254.229 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২২:৫৫650848
  • কিন্তু টই বেলাইন হচ্ছে। রঞ্জনদা লিখুন প্লিজ।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:০০650849
  • বিয়ে জিনিসটা সমানে সমানে (আত্মমর্যাদা) হলে বোধয় শোষণ/অবিচারের স্কোপটা কমে যায়। নইলে লুজার হওয়া ছাড়া গতি নেই।
    রঞ্জনদা আপনার লেখা কিন্তু প্রচণ্ড মনোযোগ দিয়ে পড়ছি।
  • Atoz | 161.141.84.164 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:০১650850
  • বিবেকানন্দ কান ঘেঁষে বেরিয়ে গ্যাছেন, ওরও প্রায় বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিল! আরেকটু হলেই-
  • Atoz | 161.141.84.164 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:০৭650851
  • আর এইসব বিপ্লব ইত্যাদি তো ডিজাইন করছে পুরুষেরা, ওদের নামগুলোই দেখা যাচ্ছে। এ বিপ্লব যদি কাই হুই চিয়াংচি এদেরই নিজেদের পরিকল্পিত বিপ্লব হতো, তাহলে তো চিয়াংচির নামই উঠে আসতো, মাও হয়তো আসতো তার সঙ্গীর নাম হিসাবে, বা হয়তো আসতো না।
  • Atoz | 161.141.84.164 | ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:১৯650853
  • আর সেই রাম বুদ্ধ চৈতন্য থেকে শুরু করে কাছকাছির অরবিন্দ-সবেতেই তো রাজ্য, রাজধর্ম, সাধনা, উপায় অনুসন্ধান, তপস্যা, বিপ্লব, প্ল্যান- সবই পুরুষের। তাদেরই নামগুলো জানা যাচ্ছে, তারাই প্রধান। কারণ খেলাটা ওদেরই। সীতা, যশোধরা, বিষ্ণুপ্রিয়া মৃণালিনী- এদের কোনো প্ল্যান বা নিজস্ব কোনো বিপ্লব সাধন ইত্যাদির কথা কি শোনা যায়? এদের তো সব সময় প্রোজেক্ট করা হয় ঐ মহান ও কৃতী পুরুষদের সঙ্গিনী হিসাবে, যেন কাস্টমাইজড সত্তা একেকটা, পুরুষ তাকে গ্রহণ করলে সে ধন্য, ত্যাগ করলে সে দুঃখসাধনা করবে ঐ পুরুষের জন্যই। এতো সবই কাস্টমাইজেশন! ঐ নারীদের নিজস্ব স্বর কোথায়?
  • ranjan roy | 24.96.83.190 | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ১১:০৫650854
  • --- সমীরদা, তাহলে একটা কথা বলি। আমি তো বিপ্লবের জন্যে ঘর থেকে বের হইনি। তোমাদের এই বিপ্লব জিনিসটা কি আমি বুঝি না। আমি স্কুলে পড়ছিলাম, স্বপ্ন দেখতাম একদিন গ্র্যাজুয়েট নার্স হব। বড় কোন নামকরা হাসপাতালে কাজ করব। আমার নার্সিং ভাল লাগে। লোকের কষ্ট দেখলে যন্ত্রণা দেখলে মনে হয় একটা কিছু করি।
    আর কোথা থেকে ধূমকেতুর মত তুমি এলে আমাকে বিয়ে করতে চাইলে , আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল। আমার গাঁটছড়া বাঁধা হয়ে গেল তোমার সঙ্গে। এমন একজনের সঙ্গে যাকে আমি ভাল করে চিনিই না। কি গেরো!
    --- কি বলছ! তোমার লাইফ? ওটা কোন মানুষের জীবন ছিল? তোমার মা সৎমারও অধম। তোমাকে দাসী-বাঁদির মত ট্রিট করত। সারাদিন খাটাতো, ছেলেকে মাথায় তুলে রেখেছিল। তুমি কি ভাবছ ওখানে থাকলে তোমার স্বপ্ন পুরণ হত? কোয়ালিফায়েড নার্স হতে? সেনকাকু তোমায় পড়াত?
    --- ও হো! বুঝেছি।তুমি হলে সেই শিভালরাস নাইট, যে ডিসট্রেস্ড ড্যামজেলকে উদ্ধার করে বেড়ায়! বেশ।
    তা সমীরদা তুমি আমাকে দয়া করে তোমার শ্রীচরণে ঠাঁই দিয়ে যে জীবন দিয়েছ, মানে যার জন্যে আমার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, তাতে কি আমার স্বপ্ন পূরণ হবে? আমি কি কোয়ালিফায়েড নার্স হব কোনদিন?
    -- এটা তো মানবে যে আমি তোমাকে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছি। ছিলে এক ছোট্ট মাইনিং শহরের কোনায়, যেখানে পেটিবুর্জোয়া মধ্যবিত্তেরা কেঁচোর মত বেঁচে থাকে। সেই একই জীবন তিনপুরুষ ধরে। ছোট্ট বাড়ি, ছোট্ট গাড়ি, ছোট্ট পরিবার। তার বাইরে দেশ ও সমাজ নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনা ----।
    --- বাস্‌ করো, বাস্‌ করো! আপনা হি মুঁহ্‌ মিয়াঁ মিঠ্ঠু! কোন বড় স্বপ্নের কথা বলছ?
    --- বিপ্লবের স্বপ্ন, সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন।
    --- সে তো তোমার স্বপ্ন।
    -- কেন? আমার স্বপ্ন কি তোমার নয়?
    --- যা বুঝিনা, যা জানিনা তা নিয়ে কি স্বপ্ন দেখা যায়? মেরী তো ছোটি ছোটি স্বপ্না, ছোটি সি আশা।
    --- আমার স্বপ্ন তো শুধু সমাজতন্ত্র নয়, তোমাকে নিয়েও স্বপ্ন দেখি শান্তি। সব কি আগেই বোঝা যায়? পথে নামতে হয়। তুমি আমি পথে নেমেছি। পথ চলতে চলতেই সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে যাবো।

    কোনদিন এভাবে কোন পুরুষের সঙ্গে কথা বলি নি। ওদের ভয় পেতাম। সমীরদার সঙ্গে এভাবে তর্ক করবো স্বপ্নেও ভাবিনি। কী করে হয়ে গেল জানিনা। কেউ যেন আমার ভেতর থেকে বলিয়ে নিল।
    এখন ও গড়িয়ে গড়িয়ে আমার কাছে চলে এসেছে। আমার খোঁপা খুলে চুলের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে দিয়েছে। ভালো লাগছে, খুব ভালো লাগছে। আচ্ছা, এখন আমার কী করা উচিত? এই তর্কটা আপাততঃ ঝুড়ি চাপা দিয়ে রাখবো? আদরে গলে পেঁড়ি পেঁড়ি হয়ে যাবো? তাই যাই, বড় ভালো লাগছে। শান্তিলতা এখন আস্তে আস্তে ছুঁইমুই লজ্জাবতী লতা হয়ে যাচ্ছে।
    কিন্তু ভেতরে সেই মেয়েটা কিছুতেই ঘুমিয়ে পড়ছে না। সেই মেয়েটা, যে দাদাকে মারছে দেখে ছাতা দিয়ে মাওয়ালী রাজুকে চ্যাঙাব্যাঙা করে পিটিয়েছিল।
  • ranjan roy | 24.96.83.190 | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ১১:২৬650855
  • @ অস্মিতা,

    রঞ্জন বাবু,
    "মনে মনে ভাবুন আপনার স্ত্রী আপনাকে ছেড়ে যাচ্ছেন কারণ আদর্শ মিলছে না - এই ঘটনা যেদিন আকছাড় ঘটানোর মত ম্যাচিওর হবেন মহিলারা সেদিন পুরুষেরা বুঝবেন ত্যাগ কাকে বলে।" ঃ)))
    --- আমাকে মনে মনে ভাবতে হয় না। আমার স্ত্রী সত্যিই আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলেন 'আদর্শ মিলছে না" বলে। না , কোন বিপ্লব-টিপ্লব নয়। দৈনন্দিন জীবন ও ওনার স্কুল চালানো নিয়ে। আমাকে ওঁর স্কুল কমিটি থেকেও বের করে দিয়েছিলেন।ঃ((
    একই শহরে ছিলেন আলাদা বাড়িতে, আমার পুরুষ ইগোর নাকে ঝামা ঘষে দিয়ে। ছোট শহর। সবাই সবাইকে চেনে। মেয়েরা স্কুলে পড়ে, অগণিত বন্ধুবান্ধব। রাস্তাঘাটে দেখা হলে আমার সামনে দিয়ে এমন ভাবে মোপেড চালিয়ে চলে যেতেন যেন আমার অস্তিত্বই নেই। সেই তিক্ত-মধুর অভিজ্ঞতা (একবছরের) এখন এই বুড়োবয়সে আমাদের দুজনের পথচলার পাথেয় বটে।
    তবে যেটা লিখছি সেটা আমার গল্প নয়, ব্যক্তিগত কথা এখানে না লিখলেই ভালো হত।এগুলো হয়ত ভবিষ্যতে অন্য কোন লেখার মশলা হিসেবে ফিরে আসবে।
    ধ্যেৎ, মূল লেখায় ফিরে যাচ্ছি। মাক্কালী, শেষের আগে কোন রি-অ্যাক্ট করব না।
    একটাই অনুরোধ-- লেখা নিয়ে যত ইচ্ছে আলোচনা করুন, আমাকে ডাইরেক্ট অ্যাড্রেস করে পোস্ট করবেন না। তাহলে আবার বেলাইন হবার সম্ভাবনা।ঃ))))
  • ranjan roy | 24.96.83.190 | ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ১২:০১650856
  • -- সমীরদা, হয়ত একসঙ্গে চলতে চলতে তোমার স্বপ্ন প্রায় আমার স্বপ্ন হয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি না হয়! যদি তোমাদের মাওয়ের মত তোমারও মনে হয় যে আমি পিছিয়ে পড়ছি-- সেদিন তাহলে আমাকেও বিপ্লবের স্বার্থে তোমার জীবন থেকে সরে যেতে হবে? মুখ বুজে, কোন কথা না বলে?
    --- এসব কি বলছ? তোমার কি মাথা খারাপ হল?
    ---হয় নি, হতে কতক্ষণ? আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছ না কেন?
    -- ধুত্তোর! এই মুহুর্তে এই সব কথা কেন?এস, আমার দিকে সরে এস।
    ও অন্ধকারে আমার ঠোঁট হাতড়ে বেড়ায়। আমি ঠেলে সরিয়ে দিই।
    -- আগে আমার কথার উত্তর দাও।--হ্যাঁ কি না?
    ও খানিকক্ষণ চুপ করে থাকে। অন্ধকারে ওর চোখ দেখতে পাই না। শুধু ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ। তারপর যেন উদারার গান্ধার থেকে ওর গলার স্বর বেজে উঠলঃ
    -- লতা, এসব হাইপোথেটিক্যাল প্রশ্নের কোন হ্যাঁ বা না উত্তর হয় না। জীবন অংকের হিসেবে চলে না। আমার জীবনেও অংক মেলেনি।তোমার সঙ্গে দেখা না হলে হয়্ত ইউনিভার্সিটি শেষ করে তবে পার্টির হোলটাইমার হতাম। কিন্তু কোন আফশোস নেই। তুমি আমার জন্যে স্পেশাল।
    যে মেয়ে অন্যের দুঃখকষ্টে বিচলিত হয়, মুখ ফিরিয়ে চলে যায় না সে কখনো বিপ্লবের রাস্তা থেকে সরে যাবে না-- এই আমার বিশ্বাস।

    এত ভাল ভাল কথা! আমি কারো চোখে এত দামী! শান্তিলতা মরে গেল। বেঁচে উঠল লতা, শুধু লতা। কিন্তু একটা প্রশ্ন যে এখনো বেঁচে আছে। বলি? বলেই ফেলি?
    --- সব সত্যি বলছ? আমার গা ছুঁয়ে বল!
    -- হ্যাঁ, হ্যাঁ সত্যি। সত্যি সত্যি সত্যি। এই তোমাকে ছুঁয়ে বললাম।

    ছুঁয়ে কোথায়? ও তো আমাকে জাপটে ধরেছে। ওর হাত অধৈর্য্য হয়ে উঠেছে। উঃ, পুরুষেরা বড় লোভী, নিজের জিনিস নিয়ে এমন আদেখলাপনা!
    -- আচ্ছা, রেজিনা তোমার কে? মানে কে ছিল?
    জোঁকের মুখে নুন পড়ল কি? হাতের বাঁধন শিথিল। অক্টোপাসের শুঁড়গুলো পিছলে নেমে যাচ্ছে।
    -- ওকে ধরে রাখতে পারলে না!
    পেছনের গলির দিকে দরজাটা খোলার শব্দ। বিছানা হাতড়াই-- পাশের জায়গাটা খালি। গলির দিক থেকে বিড়ির কটু গন্ধ ভেসে আসছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ১৫:৩৫650857
  • জাস্ট টু মাচ্‌! দুর্দান্ত হচ্ছে।
  • সিকি | ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ১৭:১৯650858
  • রঞ্জনদার লেখা নতুন করে চিনছি।
  • kumu | 11.39.25.101 | ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ১৭:৫৭650859
  • অনবদ্য।
  • এমেম | 127.194.231.84 | ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:৩০650860
  • ভালো হচ্ছে লেখাটা।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ১২:০২650861
  • ম্যামি?
  • ranjan roy | 132.176.158.213 | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ২০:২৬650862
  • দ্বিতীয় অধ্যায়
    -------------------
    (১)
    ঘুম ভাঙে মোরগের ডাকে। প্রথমে একটা। তারপর একে একে বেশ কয়েকটা। বিছানা ছেড়ে উঠে প্রথমে চোখে জল দিই। উনুনের ছাই ঝেড়ে একটা রংচটা এনামেলের থালায় ছাই আর এঁটোকাঁটা নিয়ে ঘরের পেছনে কচুগাছের ঝোপের ধারে ছাইগাদায় ফেলে আসি। তারপর উনুন ধরিয়ে চা বানাই -- গুড়ের চা। ততক্ষণে সমীরদা উঠে পড়েছে, নিমের দাঁতন চিবিয়ে মুখ ধুয়ে নিয়েছে।
    এবার আমরা বসে পড়ি নাস্তা করতে, বাসি রুটি আর এখো গুড়।
    এই সময় আমরা কথা বলি, অনেক কথা। কাজের, অকাজের, এলোমেলো নানান ধরণের কথা।
    ধীরে ধীরে শরীরের জড়তা কাটিয়ে সমীরদা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। গামছা ও গাড়ু নিয়ে বেরিয়ে যায়। সব কিছু থেকে নিবৃত্ত হয়ে দুটো ডুব দিয়ে ঘরে আসে।
    ভেজা আদুড় গা, চুল বেয়ে টপ টপ করে জল পড়ছে। আমি বকতে গিয়েও হেসে ফেলি। তারপর গামছাটা ভাল করে নিংড়ে ওর গা মাথা মুছিয়ে দিই।
  • ranjan roy | 132.176.158.213 | ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:৩৫650864
  • এটা আমার নিত্যকর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমীরদা ইচ্ছে করে ওইরকম করে, বুঝতে পারি। সেই ফাঁকে একবার জড়িয়ে ধরে, নাকে নাক ঘষে।
    তারপর আলু-ছেঁচকি আর ছটা আটার রুটি বেঁধে দিই। ও যত্ন করে ওগুলো একটা কাঁধের ঝোলায় নিয়ে বেরিয়ে যায়। সেই ঝোলায় আরও থাকে কিছু কাগজ, পত্রিকা, বইপত্তর আর আকুপাংচারের ছুঁচের কৌটোমত।
    একটা পুরনো জংধরা সাইকেল জোগাড় হয়েছে। সেইটে চড়ে টই টই করে ঘুরে বেড়ায়। এ গ্রাম, সে গ্রাম, এ'পাড়া, সে'পাড়া। কী কাজ , না সংগঠন তৈরি করছে। গরীব-গুর্বো, চাষাভুষোদের নিয়ে।
    আর কোলকাতা থেকে পার্টির লোকজনের সাহায্যে শিখে এসেছে সূঁচ-চিকিৎসা বা আকুপাংচার। হাতে পায়ে পিঠে পেটে নাকে ছুঁচ ফুঁড়ে দেয়, তাতে নাকি অসুখ সেরে যায়। আমার তো বাবা এসব জলপড়া বাণমারা গোছের লাগে।
    আমি বলে দিয়েছি যাই কর ওইসব হাতুড়ে ডাক্তারি আমার ওপর ফলাতে এসো না।
    এই রাঢ়বাংলার গাঁয়ে গঞ্জে এগুলোকে লোকে বেশ শ্রদ্ধার চোখে দেখে। ওকে খানিকটা মানিগণ্যি করে, চাঁদশী ডাক্তারদের মত, ওই যে-- অর্শ ও ভগন্দর, বিনা ছুরিকাঁচিতে নিরাময়। ওইরকম আর কি!
    ও রেগে যায়।
    -- আমাকে হাতুড়ে বললে? কোয়াক? আমি কি লোক ঠকাই? এগুলো চীনদেশে পরীক্ষিত সত্য। কই? তোমার বাবা যে সাবুদানার মত কিসব দিয়ে লোকের জ্বর-কাশি-পেটখারাপ ঠিক করতেন তার বেলা? উনিও কি কোয়াক নন?
    -- আমার বাবাকে ছাড়ান দাও। তবু বলব-- হোমিওপ্যাথিকে গোটা দুনিয়া বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ভাবে। কিন্তু তোমারটা? বাপের জন্মে শুনিনি?
    --- অনেক কিছুই তো লোকে আগে শোনেনি। চাঁদে যে চরকাকাটা বুড়ি বসে থাকে না সেও তো লোকে আগে মানত না।
    তারপর সমীরদা আমাকে মহাউৎসাহে কোন নর্মান বেথুন বলে ডাক্তারের গল্প শোনায়। "কোটনিস কী অমর কহানী" সিনেমা আর চীনের খালি পায়ে ঘুরে বেড়ানো ডাক্তারের কথা বলে।
    আমার মনে হয় সমীরদা একটা শিশু বই নয়। এইসব নিয়ে ভুলে থাকতে চায়, থাকুক না! কারো ক্ষতি তো করছে না।

    বলতে ভুলে গেছি , আমরা কোলকাতা ছেড়েছি মাত্র তিনমাস আগে। দল থেকে এখন সমীরদার সঙ্গে আড়ি-আড়ি খেলা ছেড়ে ভাব-ভাব খেলা শুরু হয়েছে। তবে ওকে শহর থেকে সরিয়ে দিয়ে বাংলা-বিহার সীমান্তে কৃষক ও আদিবাসীদের মধ্যে সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের নেতৃত্বেও নাকি কিছু পরিবর্তন হয়েছে।
    কিন্তু বেল পাকলে কাকের কী?
    আসলে আমিও আর চামড়ার কারখানার ডিউটির পর রোজ ছ'কিলো চালগম বাছার কাজ পেরে উঠছিলাম না। কখনো কখনো রাত দুটো হয়ে যেত। অবশ্যি কোন কোন দিন ও এসে হাত লাগাত।
    এখন পার্টি থেকে মাসে দেড়শ টাকা করে দিচ্ছে। তবে টাকাটা সতে মাঝে মাঝেই দেরি হয়। আর ওই ছুঁচ ঢুকিয়েও কিছু আমদানী হওয়ার কথা। পার্টি থেকে নাকি সেরকমই নির্দেশ দিয়েছে। এতে নাকি কমরেড সমীরের একটু আর্থিক সাশ্রয় হবে আর জনসংযোগও হবে। রথ দেখা ও কলা বেচা? কাঁচকলা।
    আমাদের কমরেড তো ভালকরে পয়সা চাইতেই পারে না। না পার্টির কাছে, না রোগীর বাড়ি থেকে। টাকাপয়সার ব্যাপারে বেশ ট্যালা আছে।
    তবু মাঝে মাঝে কলাটা মূলোটা জুটে যায়, আমদের দুজনের যাহোক করে চলে যায়। আমার শরীর সেরে উঠেছে। চোখের কোনের কালি আর ঠেলে ওঠা কন্ঠার হাড় -- সব গায়েব।
    ভিন গাঁয়ের লোকজন ওকে ডাক্তারবাবু বলে ডাকে, আমার বড় আনন্দ হয়। স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে হয়।
    হয়তো আমরা কোনদিন ওর কথামত এক সব-পেয়েছির-দেশে পৌঁছে যাব, কে জানে! ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়? হে ভগবান , এই স্বপ্নটা যেন নিত্যি ভোর ভোর বিছানা ছাড়ার আগে দেখতে পাই!
  • সে | 188.83.87.102 | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৫৩650865
  • পড়ছি।
  • aranya | 78.38.243.218 | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০৬:২০650866
  • রঞ্জন-দা ফাটাফাটি লিখছেন, অ্যাজ ইউজুয়াল
  • ranjan roy | 132.176.225.25 | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ২২:৫৯650867
  • এখন জীবন একধরণের বাঁধাধরা ছাঁচে চলছে। এই গ্রামটি বেশ বড়। একদিকে সাঁওতালপাড়া আর আরেক দিকে দিকু বা অ-সাঁওতালদের। এদের মধ্যে সামান্য কয়ঘর বর্ণহিন্দু, বেশির ভাগ বাগদী-মালো আর মুসলমান। তারপর অসংখ্য ক্ষেত আর আল দিয়ে চলা পথ।
    ক্ষেতের শেষে জঙ্গলের শুরু। শালপিয়াল মাদার মহুয়ার জঙ্গল। একদিনই ওর সাথে সাইকেলে করে বেড়াতে গেছলাম।
    সাতপাঁচ ভেবে আমাকে বলা হয়েছে বড় করে সিঁদূর লাগাতে, হাতে শাঁখা-পলা পরতে। একটা মাটির ঘড়া করে কাছের পুকুর থেকে জল আনতে যাই। অন্ততঃ চারবার। গাঁয়ের অন্য মেয়েদের মত মাথায় একটা আর কাঁখে একটা নিয়ে জল আনতে পারিনা। আর জঙ্গলের চেরা কাঠ দিয়ে উনুন ধরাতে হয়, ফুঁ দিতে দিতে প্রাণ বেরিয়ে যায়। সন্ধ্যেয় ঘর থেকে বেরোই না। কাছেই পালা করে শেয়াল ডাকে।
    এখানে জীবন বড় শান্ত। গাঁয়ে অধিকাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। টেমি বা হ্যারিকেন জ্বলে। সম্পন্ন বাড়িতে চন্ডীমন্ডপে হরিসভায় হ্যাজাকবাতি।
    এদিকের লোকের কথার ধরণটাও কেমন অচেনা।
    হরদম কানে বাজে-- কুথাকে গেইছিলে গ'?
    সন্ধ্যে হতেই গোটা গাঁ কেমন ঝিমিয়ে পড়ে। লোকজনের চলাফেরা গলার আওয়াজ প্রায় শোনাই যায় না। এই গাঁয়ে কোন ডাক্ঘর নেই, ডাক্তারখানা নেই। আছে বলতে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় আর অসুখে-বিসুখে কোবরেজমশাই। সাঁওতালপাড়ায় আছে একজন গুণীন। সে বাণ মারতে জানে।
    এখানে আমার খাটুনি কম নয়। কিন্তু কোলকাতার সেই চামড়ার কারখানার মেশিনের হাতল ঘোরানো আর টিমটিমে আলোয় রাত জেগে কাঁকর বাছার কাজের চেয়ে ঢের ভাল। দুবেলা পেটপুরে ডালভাত জুটছে। রাত্তিরে ভাল করে ঘুমুতে পারছি- এই অনেক।
    প্রথম প্রথম বেশ অসুবিধে হত। হাড়কাটা গলিতে মাঝরাত অবদি নানারকম লোকজনের আনাগোনা, মাতালের হল্লা, খিস্তিখেউড় আর পাহারাদারদের লাঠির ঠকঠক-- এতে কেমন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলাম। এখানে তো রাত্তির সাতটা বাজতে না বাজতেই অন্ধকার ঝাঁপিয়ে আসে। বাড়ির সামনের তেঁতুলগাছটায় তক্ষক ডাকে।
    হ্যাঁ, সাপের উপদ্রব আছে ভাল। আমাদের উঁচু দাওয়ার মাটির বাড়ি, খোড়ো চাল। একদিন সন্ধ্যের মুখে জল আনতে যাব বলে কলসীটা তুলেছি কি দেখি কলসীর বিড়ের সঙ্গে জড়িয়ে একটা হাত দেড়েক সাইজের সাপ। হাত থেকে কলসী পড়ে ভেঙে গেল।
    সমীরদা পরের দিন একজন ঝুঁটিবাঁধা বাউলমত লোক এনে বাড়ির চারদিকে সর্পগন্ধা বলে একরকম গাছের চারা গোটা দশেক লাগিয়ে দিল । ওর গন্ধে নাকি সাপ আসে না।
    কাজ হয়ে গেলে ওকে দুটো টাকা আর এক বাটি গরম চা দিলাম।
    --- বাবাজী, এদিকের সাপগুলোর বিষ আছে?
    --- নেই আবার! দেখুন মা-ঠাকরুণ, এদিকের বেশিরভাগ সাপ হয় কেউটে-গোখরো, নয় চিতি-বোড়া।
    --- এদিকে কোন হাসপাতাল তো নেই। সাপে কামড়ালে আপনারা কি করেন?
    --- ঝাড়ফুঁক জড়িবুটি চিকিচ্ছে করি। মা-মনসার দয়া হোলে বেঁচে যায়, নইলে মরে যায়।
    আমার মুখের অবস্থা দেখে ওর বুঝি দয়া হল। ও মাটিতে নামিয়ে রাখা ঝোলার থেকে একটা অদ্ভূত বাজনা বের করল। একদিকে চামড়া দিয়ে ছাওয়া আর কাঠের ফ্রেমের সঙ্গে সূতো বাঁধা। সেটার নাম নাকি গাবগুবাগুব! তাতে আঙুলের টোকা দিয়ে আর সূতো টেনে অদ্ভূত আওয়াজ তুলে বলল-- মা-ঠাকরুণ! যদি অনুমতি করেন তো একটা গান শোনাই। আপনার মন-মেজাজ ভাল হয়ে যাবে।
    আমার মুখে একচিলতে হাসি ফুটে ওঠে। কথা না বাড়িয়ে ও গান শুরু করেঃ
    হরি তোমায় ডাকবার আমার সময় হল কই?
    কোথা কে দিবানিশি আমি হয়ে মত্ত তোমার তত্ত্ব ভুলে রই।

    সকালবেলায় মন করিলাম ডাকিব এখন,
    গোপাল এসে কোলে বসে জুড়িল ক্রন্দন।
    সেই ক্রন্দন শুনে মায়ায় ভুলে আপনা আপনি মজে রই।
    হরি, তোমায় ডাকবার আমার সময় হল কই?

    দুপুরবেলা স্নান করে যেই উঠিলাম ডাঙায়,
    নাগরীগণ কলস কাঁখে সুমুখে দাঁড়ায়।
    দেখে সেই রূপের বন্ন, হয়ে ছন্ন, আপনা আপনি মজে রই।
    হরি, তোমায় ডাকবার আমার সময় হল কই?

    সন্ধ্যেবেলায় মন করিলাম ডাকিব এখন,
    গিন্নি এসে অবশেষে জুড়িল তর্জন।
    বলে -- কোথা হা-হন্ত, ঘরে চাল-বাড়ন্ত!
    আমি অন্নচিন্তায় বাহির হই,
    হরি, তোমায় ডাকবার আমার সময় হল কই?
  • সে | 203.108.233.65 | ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:০৮650868
  • বহুৎ ভালো হচ্ছে।
  • Du | 230.225.0.38 | ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ১০:০১650869
  • হু
  • ranjan roy | 132.176.142.122 | ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ২৩:৫০650870
  • ২)
    একদিন সমীরদা আর রাত্তিরে ফিরল না। টেমি জ্বালিয়ে অনেক রাত অবদি জেগে রইলাম। ঘরে কোন ঘড়ি নেই। ওর একটা পুরনো রিকো রিস্টওয়াচ আছে। মনটা কু-ডাক ।
    ঝিঁঝির ডাক শুনতে শুনতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ভোর বেলা মোরগের ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। উঠে জল গড়িয়ে খাচ্ছি-- দরজায় ঠক ঠক। কাঁপা পায়ে গিয়ে দরজা খুলে দেখি সমীরদা--রাতজাগা লালচোখ, এলোমেলো চুল, দাঁত বের করে হাসছে।
    --- কোথায় ছিলে সারারাত? কোন খবর নেই, কিছু বলে যাও নি! আমার সময় কিভাবে কাটে কখনো ভাব?
    -- বলছি, বলছি। আগে আমার সঙ্গী কমরেডকে একটু জলটল দাও। তারপর ধীরে সুস্থে সব বলছি। দারুণ ব্যাপার!
    দেখি ওর পেছনে কিছুটা জড়সড় বছর তিরিশের এক সাঁওতাল পুরুষ। আমাকে দেখে হাতজোড় করল।
    -- এ হল কমরেড সোরেন, আমরা বলি বড়কা কমরেড। ওর ঘরেই ছিলাম কাল । শেষ রাতে
  • ranjan roy | 132.176.142.122 | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০০:১৮650871
  • শেষ রাতে উঠে দু'ঘন্টা সাইকেল চালিয়ে এই পৌঁছলাম।
    সমীরদা হেসে গড়িয়ে পড়ছে। কি ব্যাপার! হয়েছেটা কী?
    -- দারুণ সব ব্যাপার। আগে এক বালতি জল দাও আমাদের, হাতমুখ ধুয়ে নিই।
    -- সে না হয় দেব, কিন্তু তোমার মুখের থেকে কেমন একটা টক টক বিচ্চিরি গন্ধ আসছে? কী খেয়েছ?
    --ও কিছু না। কাল আমলাগোড়া গাঁয়ে মারাংবুরুর থানে পূজো হয়েছিল। তারপর শুয়োরের মাংস আর হাঁড়িয়া খেতে দিল। মুখ ধুয়ে চা খেয়ে একঘুম দেব, আমরা দুজনেই। সব ঠিক হয়ে যাবে। বড়কা কমরেড একটু বেলায় নিজের গাঁয়ে ফিরে যাবে।
    আমার মাথায় আগুন জ্বলে ওঠে। আর রাগ হলেই আমার মুখ দিয়ে হিন্দির তুবড়ি ছোটে।
    -- ভাঁড় মেঁ গয়ে তুম অউর তুমহারী কমরেড! এদিকে আমি না পারছি খেতে, না পারছি ঘুমোতে। ওদিকে তুমি সাঁওতাল পাড়ায় মদ-মাংস সাঁটিয়ে মোচ্ছব করে এলে? খালি মেঝেনদের কোমর ধরে নাচাটাই বাকি! নাকি তাও হয়ে গেছে?
    ঠাস্‌ করে একটা চড় পড়ল গালে।
    সমীরদার মুখ রাগে বিকৃত হয়ে গেছে। মুখের ভেতরে গজদন্ত স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
    --- অসভ্য ইতর মেয়েছেলে! কোন কান্ডজ্ঞান নেই? যা নয় তাই বলবে! আমার কমরেড আর তাদের পরিবারকে অপমান! ওদের নিয়ে নোংরা ইঙ্গিত! এই লেখাপড়া শিখেছ? ইস্‌ কি ভুলই করেছি!
    চড়টা এমন হটাৎ যে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি।
    আবার আমার দিকে তেড়ে আসছিল কিন্তু আমাদের মাঝখানে লাফিয়ে এসে দাঁড়িয়ে পড়েছে বড়কা কমরেড। সমীরদাকে দুহাতে জাপটে ধরে ঠেলে নিয়ে গেল দেয়ালের দিকে।
    -- কি যে করেন কমরেড! শান্ত হয়ে টুকুন বসে পড়েন দেখি। দিদিমণি খুব ভুল তো বলে নাই।
    তারপর আমার দিকে ফিরে বলে-- দিদিমণি, সব দোষ আমার বটেক। কাল বহেড়াগোড়াতে আমাদের ডাক্তার কমরেডের উপর হামলা হইতে পারত। জান চলে যেত। মারাং বুরুর কিরপায় বেইঁচে গেছেন।আমার গাঁয়ে নিয়ে এলাম, রাতটো আমার ঘরে আমলাগোড়ায় রহিবেক। সিখানে পূজা
    তারপর ক
  • ranjan roy | 132.176.142.122 | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০০:২৪650872
  • সিখানে পূজা হইল। বরার মাস তো বলির প্রসাদ। আর হাঁড়িয়া হমার মুখিয়া দিলেক। ডাগদার কমরেডকে সবাই ভালবাসে। মাঝি-মেঝেন সব। তব তো জান বাঁচিল। ইখন খাব নাই বলিলে মুখিয়ার অপমান হইবেক নাই? আজ মাফি দেও দিদিমণি।
    গালটা এখনো জ্বলে যাচ্ছে।
    কিন্তু হামলা হয়েছিল? ওর জান চলে যেত?
    অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাই।
  • SM | 123.21.70.53 | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ১৬:৫৩650873
  • Rন্জন বাবু, আগে পুরো পরি, তার্পোর জবাব দেবো, মতামোত জানবো।
  • kumu | 11.39.24.196 | ০১ নভেম্বর ২০১৪ ১৭:২৯650875
  • সমীরদার গজদন্তটি না থাকলেই ভালো হত।যাগ্গে,তারপর?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন