এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • তৃণমুলী পরিবর্তনকামী বুদ্ধিজীবিদের ভূমিকা

    mousumi mukherjee
    অন্যান্য | ০৬ অক্টোবর ২০০৯ | ১১৪০২৯ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 72.83.213.179 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:০১420054
  • ব্রতীনদা,টিম, এই টইয়ে এই ডিরেইলড আ যাওয়া আলোচনার শুরু ই বোধহয় পরিকাঠামো না বানিয়ে ইংরাজী তুলে দেবার সিদ্ধান্তের সমালোচনা প্রসঙ্গে।

    বাংলা পাঠ্য বই, উপযুক্ত শিক্ষক , পরিকাঠামো .. অবশ্য ই এগুলোত্র ব্যবস্থা হওয়ার পর ই বাংলায় উচ্চশিক্ষা চালু করার কথা ভাবা উচিত ( বা উল্টোভাবে বল্লে, বাংলায় উচ্চশিক্ষার পলিসির কথা বললে আগে এই পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু করা উচিত, এবিষয়ে সম্পূর্ণ সহমত ), নৈলে তো সেই ঘোড়ার আগেই গাড়ি জোতা হবে। সেই সিপিএম যা করেছিল, প্রাথমিক স্তর থেকে দুমদাম ইংরাজী তুলে দিয়ে, এদিকে কোনো ভবিষ্যত পরিকল্পনা নেই !

    রিমিদি,তুমি বাংলা ভাষায় উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা সিপিএমের তোমার মতে সিপিএম এর না দেখা দু:স্বপ্ন, আর এদিকে আমার কি মনে হয় জানো ? ঠিক উল্টোটা। উচ্চশিক্ষায় বা চাকুরিজীবনে বাংলা র কোনোরকম বন্দোবস্ত না করে, সিপিএমের ঐ ভীষণরকম অবিমৃশ্যকারিতা টাকেই আমার মনে হয় দু:স্বপ্ন,ঐ সিদ্ধান্তের সাথে বাংলায় উচ্চশিক্ষা পরিকল্পনা, পরিকাঠামো গঠন ও তার প্রয়োগের কোনো সদিচ্ছা দেখলে ওটাকে ভীষণ ভালো একটা ভিশন বলতাম তো। :)

    আর আজ্জোদা, শুধু বাংলা ভাবছো ক্যানো। ধরো সব কটি প্রদেশেই মূলত নিজের রাজ্যের ভাষায় ( তার মানে এই নয় যে, ইংরাজীতে কেউ শিখতে চাইলে সেই সুযোগ থাকবে না)উচ্চশিক্ষা, কাজকম্মো করা হল। শুধু রাজ্য ই বা ভাবা ক্যানো, সব দেশেই, নিজেদের মাতৃভাষায় এইসব হল। আর একটা কমন গ্লোবাল ল্যাংগুয়েজ থাকল, যেটা পাকেচক্রে ইংরাজী ( আর সে নিয়ে আমার বিশেষ কোন আপত্তি নায় । এসপেরান্তো র মত কিছু একটা দাঁড়িয়ে গেলে সেটাই প্রেফার করতাম, এই অব্দি) , সেই মডেলে তোমার কি অসুবিধা ?
  • Arpan | 216.52.215.232 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:০৫420056
  • চাকুরিজীবনে বাংলার বন্দোবস্ত সিপিয়েম কীভাবে করতে পারত? প্রশাসনিক ক্ষেত্রের কিছু কাজ বাদ দিলে?
  • pi | 72.83.213.179 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:০৫420055
  • না:, স্যান মোটেই মন দিয়ে পড়ে না। ঐ জার্নালের লেখা , তার অনুবাদ এসব নিয়ে এ তক্কাতক্কির কোন শৈশবকালে লোকজনে কত পয়সা ছোঁড়াছুঁড়ি, লোপালুপি করে ফেল্লো !
  • a x | 76.247.246.200 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:০৬420057
  • আরে পাতার নং দেবে তো! খুঁজে পেতে হয়রান। তায় ক্লুলেস, তায় রাত দেড়টা! হ্যাঁ প্রশাসনিক লেভেলে শুরু তো করাউ উচিৎ। এই যে ইলেক্ট্রিক বিল, এতে বাংলায় না করার কি মানে, ইংরেজির সাথে? ইংরেজি না জানলে বিল দিতে পারবেনা, নাকি ধরেই নেওয়া যে ইংরেজি জানেনা, তার আবার কিসের বিল?

    আর উচ্চশিক্ষার ব্যপারে একমত, কিন্তু, আ বিগ কিন্তু, এর সাথে মানুষের মানসিকতা না বদলালে কি করে চলবে? আর এইটার জন্য ঐ প্রশাসনিকটা আগে করা উচিৎ। কিন্তু আমরা যদি ধরেই নিই ইংরেজি বলাই ইস দ্য অর্ডার অফ দ্য ডে, তাইলে আমার ছেলেকে যে অংক পড়াতে আসে, তার ইংরেজি উচ্চারণ কেমন দেখব। ভালো হলে প্রেফারেন্স পাবে, ইত্যাদি। উচ্চশিক্ষার ব্যপারে, দেশের ভেতরেই এটারই রিফ্লেকশন ঐ লেভেলে হয়/হবে।
  • pi | 72.83.213.179 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:০৮420058
  • সরকারি কাজকম্মো ও কি হয়েছে ? যেভাবে হিন্দি কে করা হয় ? শমীক বলুক না, হিন্দি ভাষাকে কিভাবে একটা কাজের ভাষা হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে আর তার ব্যবহার ও হচ্ছে।
  • san | 123.201.53.4 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:০৯420059
  • না না ওটা তাতিনকে লেখা। উনি বলছেন শুধু আমরা মন দিয়ে বাংলা না পড়ার কারণেই সব আটকে আছে। ( বা আমি সেরকমই বুঝেছি ওঁর পোস্ট পড়ে)। তাই ।

    আর হ্যাঁ যে মুহূর্তে একটা গ্লোবাল ল্যাংগুয়েজের অস্তিত্ব মডেলে চলে আসছে , তখনি কি আবার সেইটার অ্যাকসেস থেকে কে কতটা দূরে এই দিয়ে ক্ষমতার কিঞ্চিৎ অসাম্যের দিকে ব্যাপরটা এগিয়ে যাবে না? আবার সকলেরই যদি সমান অ্যাকসেস থাকে বা রাখা সম্ভব হয়, তবে প্রাদেশিক ভাষায় কাজকর্ম চালু রেখে সুবিধে কতটুকু হবে?
  • Arpan | 216.52.215.232 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:১৫420060
  • হিন্দির আধিপত্যকামিতার বিরুদ্ধে কেউ বক্তব্য রাখবেন না? সেও তো এক নিও-খ্যাও।
  • Arpan | 216.52.215.232 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:১৭420061
  • অক্ষদা, আগে দেখব অঙ্কে গৃহশিক্ষক/শিক্ষিকার দক্ষতা। তার সাথে ওটি ফাউ পাওয়া গেলে তো বোনাস। :)
  • a x | 76.247.246.200 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:১৯420062
  • হিন্দি নিয়ে আমি দুই প্যারা টাইপ করে কাটিয়ে দিলাম। আর এখন ঘুমোতে গেলাম। টাটা।
  • pi | 72.83.213.179 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:৪০420064
  • হ্যাঁ, ঐ মানসিকতার পরিবর্তনটুকুনি তো অন্তত দরকার, যে মানসিকতা এক অদ্ভুত অযৌক্তিক চক্রাকার আবত্রে ফেলে দ্যায়।
    একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ কি শপিং মলের দরোয়ান, কি পদার্থ বিজ্ঞানী, টু বিগিন উইথ, ফটফটিয়ে ইংজিরির ছররা ছোটাতে না পারলে তারা মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ কি শপিং মলের দরোয়ান কি পদার্থ বিজ্ঞানী ই হতে পারবে না, কারণ হলেও ঐ ফটফটানি স্কিলের অভাবে তারা পদে পদে ঠোকর খাবে এবং সেই ঠোকর খাওয়াটা জাস্টিফায়েড ধরে নিয়ে তার প্রতিকার হিসেবে এই কাজগুলির প্রিরিকোয়ারমেন্ট হয়ে উঠবে ঐ ফটফটানো ইংরিজির খই ফোটানো .. এমনতর সার্কুলার লজিক এসে গেলে তো ভারি মুশকিল।

    অর্পণ, হিন্দির কথাটা আমি এনেছি একটা প্রাদেশিক ভাষাকে কিভাবে কাজের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা যায় ও হচ্ছে, তার মডেল ও বাস্তব উদাহরণ বোঝাতে গিয়ে। বাস্তবায়িত করা যে সম্ভব, 'ফিজিবল', সেটা বোঝাতে :)
    যাদের মাতৃভাষা হিন্দি, তাদের রাজ্যে হিন্দির এরকম ব্যবহার মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহার ভাবলে ঠিক আছে, কিন্তু সেই এক ই জিনিস যখন অন্য রাজ্যের উপর রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ফলানো হয়, সেটা ততটাই আপত্তিকর।

    যে কোনো ভাষার আধিপত্যকামিতাই তো নিন্দনীয়। সে RSS এর হিন্দি হোক, কি রিমিদির বাংলা ( :P) কি আজ্জোদার ইংরাজী :)

    তবে এবার আমি সত্যি ঘুমুবো। উফ, এতো দেখি ক্লুলেসের থেকেও ভয়ঙ্কর :(
  • a | 115.117.154.76 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৩:৫৩420065
  • হিন্দি কিন্তু ভারতের (that is India) "রাষ্ট্রভাষা" (National Language) নয়। মূলত: ভারতের কোনো রাষ্ট্রভাষা নেই।

    http://en.wikipedia.org/wiki/Languages_of_India

    জাস্ট টেকনিকাল আপত্তি জানালুম আর কি
  • Arpan | 216.52.215.232 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৪:১২420066
  • আরে পাই, তোমার পোস্টের সাপেক্ষে হিন্দির অবতারণা হয়নি। জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেবার একটা প্রকট প্রয়াস তো আছেই সরকারি লেভেলে।

    ইদানীং বম্বে থেকে ব্যাঙ্কের ফোন আসলে দেখি কেউ কেউ হিন্দিতে কথা বলে। আমি নিরুত্তাপভাবে ইংরেজিতে জবাব দেই।
  • Partho | 202.177.144.3 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৪:৩৬420067
  • আমার ভাই দিল্লীর Bechtelএ চাকরি করত , তখন ওর অফিসে ফোন করে দেখেছি লোকেরা হিন্দিতে জবাব দিচ্ছে! Sony India তেও একই হাল।
  • LiNa | 114.31.249.105 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৫:২৩420068
  • এই মুহুর্তে ভারতের বিজনেস ল্যাঙ্গুয়েজ বোলতে হিন্দিকেই বোঝায়। হিন্দিতেই চোরপোরেট honchoরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে, তুমি হিন্দি না জানলে তুমি বহিরগত (outsider) :-)

    তাই এই দেশে কোরে কোম্মে খেতে হোলে ছেলেমেয়েকে ইম্মেডিয়েটলি হিন্দি শেখানো শুরু কোরে দিন!

    অবশ্য কিছু দক্ষিন ভারতিয় চোরপোরেটের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ইনজীরিই রয়ে গেছে।

    শেষ পর্যন্ত বোধয় যার টাকা বেশী, তার ক্ষমতা বেশী, আর তার মাতৃভাষাই default জাতীয় ভাষা, official ভাষা, আর আমাদের মতন ছাপোষা আমজনতাকে তাই শিখে ফেলতে হবে, নিজেদের ছেলেমেয়েকেও তাই শেখাতে হবে, আর এখানে এই সিম্পল লজিকটা কেউ না মানলে বাচ্চা বাংলা শেখার আগেই ইনজিরি শেখাতে হবে বলে তুমুল ফাটাফাটি করতে হবে!
  • Partho | 202.177.144.3 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৬:০১420069
  • L&T তে দক্ষিন ভারতীয়দেরই দাপট, কিন্তু কথাবার্তা সব হিন্দিতেই হয়, এমনকি বিজয়াড়ার মতন জায়গাতেও!
  • aka | 24.42.203.194 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৮:১৩420070
  • প্রথমে অক্ষকে,

    ১। সিঙ্গুরের গাড়ি কারখানা আর ইংরিজি দুটো এক করে দেখলে হবে? একটা ঘটনা আর একটা পলিসি কখনো এক হয় না। পলিসির ইমপ্লিকেশন অনেক বেশি।

    ২। পলিসি সবসময় ডেভলপমেন্টের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়। ডেভলপমেন্ট হয় আনএমপ্লয়মেন্ট কমিয়ে। আজকের যুগে আনএমপ্লয়মেন্ট কমাতে গেলে ইংরিজি লাগে।

    ৩। হ্যাঁ প্রান্তিক মানুষকেও ক্ষমতার ভাষা দাও। যেমন ভাবে উন্নত চিকিৎসা, বিদ্যুত সবাইকে দেওয়াটাই সঠিক পলিসি ঠিক তেমন ভাবে।

    ৪। আমি গাড়ি চড়েও গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে বলতেই পারি। কিন্তু গাড়ি আনএসেনশিয়াল এই কথাটা বলতে পারি না। তেমনি আমি যদি মনে করি ইংরিজি সুপিরিয়র ল্যাঙ্গোয়েজ নই তাহলে আমি কেন আমার নেক্সট জেনারেশনকে ইংরিজি শেখাব? আমি যে ল্যাঙ্গোয়েজ সুপিরিয়র বলে মনে করি সেটাই শেখাব তাই না।

    তবে হ্যাঁ ইলেকট্রিক বিল বাংলায় হলে কোন আপত্তি নেই। উচ্চশিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা দুয়েই আছে।

    পাই, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ হতে কেন ইংরিজি লাগে জানি না। কিন্তু লাগে দেখেছি। বোধহয় কোম্পানিরা ফ্লেক্সিবল থাকে যদি অন্য রাজ্যে পাঠাতে হয়? অধিকাংশই তো বিদেশি ফার্মা অথবা অন্য রাজ্যের। লাগে এটা জানি কেন ঠিক জানি না।

    টিমের মতন আমারও একই রকম অভিজ্ঞতা। অনেক চীনেই আক্ষেপ করে তাদের ইংরিজির দূর্বলতা নিয়ে আর আমাদের ভালো ইংরিজি নিয়ে।
  • Arpan | 204.138.240.254 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৮:১৭420071
  • অনেক আম্রিকানও করে। না না, তাদের ইংরেজির দুর্বলতার জন্য নয়। :)
  • dukhe | 122.160.114.84 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৮:২০420072
  • অন্তত: আমেরিকায় যে ইঞ্জিরি লাগে না এটা চীনেরা প্রমাণ করে দিয়েছে । ইউরোপের অনেক জায়গাতেও শুনেছি লাগে না । যত ঝাড় এই ভারতে ।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৮:২৭420073
  • ক:হ্যা:ও: ;-)
  • aka | 24.42.203.194 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ১৮:৪৪420075
  • অক্ষকে আর একটা প্রশ্ন আছে। অক্ষকি মনে করে যে ইংরিজি ভাষা প্রাথমিক থেকে তুলে দিয়ে বা উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলা ব্যবহার করে ওলচিকি ভাষার ডিসেন্টের বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে? কেমন করে জানতে চাইলাম।
  • Samik | 12.191.136.3 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২১:০৭420076
  • দাদারা দিদিরা,

    ভাষার ব্যাপারটা এমন সাদা কালো নয়। আমেরিকাতেও অনেক জায়গায় স্প্যানিশ চলে, ইউরোপেও অনেক জায়গাতে ইংরেজি লাগে না, এমন কথাও ঠিক নয়। আমার হাতের পাঁচ অভিজ্ঞতা দুটো নন্‌-ইংলিশ স্পিকিং দেশ। ডেনমার্ক, আর তুর্কী। কমন বর্ডার শেয়ার করার দৌলতে ড্যানিশরা অল্পবিস্তর জার্মান বলতে লিখতে বুঝতে পারে। কিন্তু স্কুল লেভেলে ওদেরও ইংরেজি শিখতে হয়। এবং স্কুল লেভেলের পরে ওদের আর জাস্ট ইংরেজি কাজে লাগে না। ফলে, অনভ্যেসে ভুলে যায়। কিন্তু এই আমাদের মতন লাইনে যারা আছে, যাদের সারাজীবন বই পড়ে যেতে হয় টেকনিক্যাল, যেগুলোর একটাও ড্যানিশ ভাষায় লেখা নয়। গুগল সার্চটা ড্যানিশে হয়, কিন্তু রেডবুকটা, রেডপেপারটা, ডাউনলোডেব্‌ল জার্নালটা, মানে বাইরের পৃথিবীকে জানার জানলাটা একমাত্র ইংরেজিতেই খোলে। টুকটাক গুগল ট্র্যানস্লেটর বাদ দিলে পরে, গল্পটা মেদিনীপুরেও যা, কোপেনহেগেনেও তাই। একদিন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেত না, সাম্রাজ্যের সে-দিন আর নেই, কিন্তু ইংরেজি ভাষার জন্য এ-কথা আজও সত্যি। এবং সম্ভবত সুদূর ভবিষ্যতেও সত্যিই থাকবে। ইংরেজি ভাষার জগতে সূর্য অস্ত যাবে না। যতই অল্টারনেতিভ আসুক না কেন। এটা একটা ইন্টারন্যাশনালি অ্যাক্সেপ্টেড ভাষা। সেখান থেকে অন্য কোনও বিকল্পে সুইচ করা চাপের। তাই বলে অন্যান্য ভাষাও মুছে যাবে না। তারাও থাকবে। বিবর্তিত হবে। ড্যানিশরা ড্যানিশই বলবে, বাঙালিরা বাংলাই বলবে। হয় তো ডায়ালেক্ট কমে যাবে।

    মাতৃভাষায় সমস্ত শিক্ষা, উচ্চ মধ্য নিম্ন স-অ-ব হতে পারে, আমাদের বাংলাতেও, যদি টিপিক্যাল জার্গনগুলোর আমরা বাংলা করার অপচেষ্টা না করি। আমরা বাংলায় ভৌতবিজ্ঞান পড়ার সময়ে অম্লজান না পড়ে অক্সিজেনই পড়তে পারি, উদ্‌চালিত চাপক্‌ টাইপের প্যান্টুল-ফাটা বাংলা না করে অনায়াসে বাংলাতেও হাইড্রলিক প্রেস পড়তে পারি, তবে কেন হাইড্রস্ট্যাটিক প্যারাডক্স পড়ার সময়ে উদ্‌স্থৈতিক কূট পড়ব? প্রতিফল প্রতিসরণ সাধারণ্যে ব্যাবহৃত হওয়া বাংলা, কিন্তু বিজ্ঞান পড়ার সময়ে সেটাকে রিফ্লেকশন রিফ্র্যাকশন পড়লেই হত, এই যেমন আমি বাংলা অক্ষরে লিখলাম, এইভাবেই লেখা যেত, তা হলে বাকি থাকত শুধু বাকি প্রোনাউন-অ্যাডজেক্টিভ ভার্ব-অ্যাডভার্ব-প্রিপোজিশন-কন্‌জাংশনের ইংরেজি ট্র্যানস্লেশন করা। সেটা বোধ হয় ইংরেজি ঠিকঠাক শিখলে খুব একটা অসুবিধে হত না।

    বিজ্ঞানের টার্মগুলোর বাংলা করার চেষ্টা হয়েছে অনেক, নিচু লেভেলে হয় তো তা চলেব্‌ল, কিন্তু উঁচু লেভেলে তা একেবারে অচল, সেইটা মাথায় রেখে বঙ্গানুবাদের কাজ করলেই সমস্যাটা অনেকাংশে মিটত। সৌরেন দে-র বইতে বড় বড় করে লেখা ছিল কলনবিদ্যা। ভেতরে ছিল সমাকলন, অবকলন। আমরা ইলেভেন টুয়েল্‌ভে কতবার উচ্চারণ করেছি শব্দগুলো? দু-পাঁচবারের বেশি নয় বোধ হয়, কারণ, পৃথিবী ওদেরকে ক্যালকুলাস, ডিফারেন্সিয়েশন, ইন্টিগ্রেশন নামেই জানে। আমরাও সেই নামেই ডেকেছি। এই প্রপার নাউনগুলোকে ইংরেজিতে রেখে বাকিটুকু বাংলায় লিখলেই কিন্তু মাতৃভাষায় উচ্চতর অঙ্কচর্চার সময়ে এইসব বাংলা পরিভাষা নিয়ে খিল্লি করার সুযোগ থাকত ন বাঙালিদের। খুব ক্ষতি কি হত এসবের বাংলা পরিভাষা না তৈরি করলে?
  • Samik | 12.191.136.3 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২১:৩২420077
  • এইবার হিন্দি।

    আমাকে আলাদা করে কিছু বলতে হবে না, চোখ কান খোলা রাখলেই দেখতে পাবে লোকাল ট্রেনে লেখা আছে, হিন্দি হ্যায় হম্‌, বতন হ্যায় হিন্দোস্তাঁ হমারা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দেওয়ালে স্টিকার সাঁটা থাকে, সুদূর জলপাইগুড়িতেও, হম রাষ্ট্রভাষা মে লিখে হুয়ে পত্রোঁ কো আদর কে সাথ স্বীকার করতে হ্যায়। গাজিয়াবাদের পুলিশ গ্যাঁড়ার কাছ থেকে ইংরেজিতে লেখা বাইক চুরির বিবরণ নিতে অস্বীকার করে। দরকার হলে চা-ওয়ালার কাছ থেকেও লিখিয়ে আনো, কিন্তু হিন্দিতে লেখাও।

    আগ্রাসন। অবশ্যই। যা রাষ্ট্রভাষা নয়, তকে রাষ্ট্রভাষা বলে জোর করে চালনোর চেষ্টা। এর পেছনে রাজনীতি তো অবশ্যই আছে। দিল্লিতে জায়গায় জায়গায় হোর্ডিং দেখেছি, হিন্দিকা মুকাবলা করনে লায়েক এক হি ভাষা হ্যায়, আংরেজি, অওর কোই ভারতীয় ভাষা নেহি।

    দিল্লিতে সরকরি অফিসের চাষ হয়। সেখানে টাইম টু টাইম হিন্দি পাখওয়াড়া হয়। মোটামুটি বছরে দুবার। এমপ্লয়িরা মজা করে বলে হিন্দি পকোড়া। শুধু সরকারি অফিসই নয়, রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি যেমন এনটিপিসি, বিএসেনেল, গ্যাস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, দিল্লি মেট্রো, এসব জায়গাতেও হয়।

    কী হয় ঐ হিন্দি পাখওয়াড়াতে? হিন্দিতে কবিতা আবৃত্তি করা, স্বরচিত কবিতা বা লেখা পাঠ, হিন্দিতে ডিবেট, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, ইত্যাদি ইত্যাদি। এর দুটো ক্যাটেগরি আছে। এক যাদের হিন্দি মাতৃভাষা, আর দুই হিন্দি যাদের মাতৃভাষা নয়। প্রাইজ মানি থাকে ভালোই। ফার্স্ট প্রাইজ দু হাজার টাকা, সেকেন্ড এক হাজার, থার্ড পাঁচশো টাকা।

    সরকারি অফিসে, যে কোনও সরকারি নোটিং ড্রাফটিংয়ের ক্ষেত্রে হিন্দিতে লিখলে সেটকে বাহবা দেওয়া হয়। ইংরেজিতে না লিখলে চলে না, তা নয়, তবে ঐ, হিন্দি প্রেফারেব্‌ল। মূলত বাঙালিরা ইংরেজিতে লেখে, আর তাদের অধস্তন হিন্দিভাষী কর্মচারিরা নিজেদের তাগিদে সেগুলো হিন্দিতে তর্জমা করে, প্রয়োজন-বেসিসে। অফিসের কাজে ইংরেজিতে সবচেয়ে দড় হয় কেরালাইট, বাঙালি ইত্যাদিরা, আর ইংরেজিতে সবচেয়ে উইক হয় বিহার ইউপির লোকেরা। এটা কমন অবজার্ভেশন। এরা পুরো ছাত্রজীবনের সমস্ত পড়াশোনা ইংরেজিতে করে এসেছে, কলেজেও, ইংরেজি ছিল কিন্তু কোনও জোর দিয়ে শেখে নি, ঐ কাজ চালানোর মত ইংরেজি বলতে বুঝতে পারে টারে। লিখতে গেলে ছড়িয়ে ফেলে।

    সরকারি আপিসে, নন-হিন্দি-স্পিকিং বেল্ট থেকে যারা এসেছে, তাদের জন্য হিন্দি ক্লাস হয়। তিনটে লেভেলে হিন্দি শেখানো হয়, প্রকাশ, প্রবোধ আর থার্ড লেভেলের নাম ভুলে গেছি। আমার বউ দুটো লেভেল পাস করে ফেলেছে। তিন নংটা আর করে নি। এই ক্লাস করার বিরুদ্ধে কোনও বস্‌ কাউকে আটকাতে পারে না, আটকাতে গেলে কেস খেয়ে যাবে। আর যে পাস করে, তারা এককালীন একটা পুরস্কার তো পায়ই, অর্থমূল্যে, প্লাস, তাদের স্যালারিতেও একটা ইনক্রিমেন্ট লেগে যায়। সমস্ত সরকারি অফিসেই একজন করে বা একাধিক ইন্টারপ্রেটর থাকে, যারা বিভিন্ন ইংরেজি ডকুমেন্ট, নোট ইত্যাদি হিন্দিতে ট্র্যানস্লেশন করে, সরকারের মূল উদ্দেশ্য, তার কর্মচারিদের সবাইকেই হিন্দিতে শিক্ষিত করে এই ইন্টারপ্রেটরদের পদগুলো উঠিয়ে দেওয়া।

    অ্যাগ্রেসিভ, সন্দেহ নেই, কিন্তু একটা ভাষাকে তোল্লাই দেবার জন্য রাজধানীতে এই লেভেলের এফর্ট দেওয়া হয় সরকারের তরফে। বাংলা নিয়ে এটুকুও আমরা ভাবতে পারি না? অন্তত সরকারি লেভেলে?
  • d | 121.245.186.192 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২১:৪২420078
  • আমি অবশ্য উচ্চশিক্ষিত নই। স্নাতকস্তর অবধি পড়েছি মাত্র। ১২ ক্লাস অবধি শুধু ইংরাজীটাই ইংরাজীতে পড়েছি, আর স্নাতকস্তরে শুধু সাম্মানিক পদার্থবিদ্যাটুকু ইংরাজীতে। রসায়ন আর অঙ্ক দুইই আমি বাংলায় পড়েছি।

    যাক কটা কথা।

    ১। পড়েটড়ে যা বুঝলাম, এখানে কেউই প্রথম প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনো বিশেষ দেখে নি। আমি যে স্কুলে মাধ্যমিক অবধি পড়েছি, তাতে বেশ বড় সংখ্যক ছাত্রী প্রথম প্রজন্ম অথবা দ্বিতীয় প্রজন্মের পড়ুয়া ছিল। আমি প্রথম প্রথম প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কিছুদিন নিজেও পড়িয়েছি। তো, সে যাগ্গে, কাটিয়ে দিলাম।

    ২। পুণেতে শপিং মল কেন, অধিকাংশ স্থানে নিরাপত্তারক্ষীই মারাঠীই বলে, না বুঝলে হিন্দী। প্রতি দলে একজন থাকে দেখেছি, জে ইংরাজী বুঝতে ও একতু আধতু বলতে পারে।

    ৩। পুণেতে যে কোন ফোনকলে প্রথম কথা শুরু করে মারাঠীতে। এমনকি অফিসের কনকলেও মারাঠী চলছে আর আমি ভ্যাবলা হয়ে বসে আছি -- তাও হয়েছে। তবে বিজ্ঞাপনের জন্য ফোন করলে আমি সাধারণত বাংলায় উত্তর দিই, তখন হিন্দীতে চলে যায়।
  • Arpan | 122.252.231.12 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২১:৫২420079
  • শমীক, এই স্লোগানটা কাদের? "হিন্দিকা মুকাবলা করনে কে লিয়ে ...'।
  • rokeyaa | 203.110.243.21 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২১:৫৭420080
  • এই হলো এমেনেস এফেক্ট!
    দমুদি ওখানে বাংলা বলো, তন্দুরি বানিয়ে দেবে তো!
  • Samik | 12.191.136.3 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২২:০০420081
  • অর্পণ,

    সম্ভবত দিল্লি সরকার। মিনিস্ট্রি অফ কালচার বা ঐ রকম কিছু একটা হবে। পরের বারে দেখে বলে দেব।
  • Arpan | 122.252.231.12 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২২:০২420082
  • একেবারে একমত। যেমন বুনো ওল তেমনি তার ওষুধ।
  • Samik | 12.191.136.3 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২২:০৩420083
  • দময়ন্তী,

    আমি হায়ার সেকেন্ডারিতে কেবল "অঙ্কটা ইংরেজিতে করতাম'। :-) বাকি কিছু ইংরেজিতে পড়ার বা লেখার মত ধক ছিল না। :-)) ইন ফ্যাক্ট দরকারও ছিল না। দাস মুখার্জি ছাড়া সব বইই বাংলায় পাওয়া যেত।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২২:০৭420084
  • আর্যকে উত্তর:

    ১। বাংলায় পড়াশুনো করে বাংলা দেশে ছাড়া আর কোথাও চাকরি পাওয়া যায় না। কারণ একটাই প:: ছাড়া আর বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও বাংলা অফিসিয়াল ল্যাঙ্গোয়েজ নয়। বাংলায় পড়াশুনো করে প::য়ে সবাই চাকরি পেয়ে যাবে এটা অলীক কল্পনা। প::য়ের আনএমপ্ল্যমেন্ট রেট কত? যতদূর জানি ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে বেশ নীচের দিকে। নীচের রিপোর্ট অনুযায়ী ১১ শতাংশ। যে ১১ শতাংশ আনএমপ্লয়েড তারা অন্য রাজ্যে না গেলে না খেতে পেয়ে মরবে।

    http://pib.nic.in/release/rel_print_page1.asp?relid=17746

    আমার বন্ধুরা এই ১১ শতাংশ যারা অন্য রাজ্যে গেছে, কোন এলিট নয়। আর এটাই স্বাভাবিক। এইজন্যই মাইগ্রেশন হয়।

    আমার উত্তর: একটা রাজ্যের শিক্ষিত জনসংখ্যার বেশিরভাগটাই সেই রাজ্যেই চাকরি বাকরি করবে, এটাই প্রত্যাশিত। তাইই হয়। এবং তাইই হচ্ছে। কোনো দেশ/রাজ্যের বেশিরভাগ লোক মাইগ্রেট করে/করবে এটা ভুল ধারণা। চিরকালই মাইগ্রেট করে জনসংখ্যার একটা ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ (নইলে দেশে দুর্ভিক্ষ লেগেছে বলতে হয়, সেটা ভিন্ন আলোচনা), এবং এই ক্ষুদ্র জনসংখ্যা মাইগ্রেট করবে বলে তাদের কথা মাথায় রেখে কোনো পলিসি তৈরি হয়না। হতে পারেনা। যারা থাকে, তাদের নিয়েই পলিসি তৈরি হয়, তারাই সংখ্যাগুরু।
    তোমার বা আমার কলেজের উদাহরণ দিয়ে লাভ নাই। আমাদের কলেজ এলিট কলেজ। এমনিতেই। নিজেই নিজের পাড়ার একটা স্যাম্পল দাও, বোঝা যাবে।

    ২। বার বার বলা হচ্ছে যার দরকার নেই সে কেন ইংরিজি পড়বে? কি করে জানা গেল কার দরকার আছে আর কার নেই। যদি ধরে নেওয়া হয় আরবিসি কলেজে কেউ পড়ছে বলেই তার জীবনে কোন একটি দোকানে খাতা লেখা ছাড়া আর কোন গতি নেই তাহলে অন্য কথা। ইংরিজি কে যেখানে এলিট ও অসাম্যের প্রতীক হিসেবে দেখানো হচ্ছে আসলে ঠিক তার উল্টো। ইংরিজি শিক্ষা আজকের যুগে ইকুয়ালিটির সবথেকে বড় অস্ত্র। উচ্চশিক্ষায় তো বটেই। কারণ একটাই ইংরিজিতেই সবথেকে বড় নলেজ ব্যাঙ্ক। কাউকে সেখান থেকে বঞ্চিত করে রাখা মানে তাকে প্রথমেই অসম প্রান্তে দাঁড় করিয়ে দেওয়া। ঈশান তার বন্ধু মেডিকাল রিপ্রেসেন্টেটিভ হয়েছে বলেছিল না? আমার এক বন্ধুও হয়েছে। লোকে তাকে বলে ডিসপিউটেড বিএসসি। কিন্তু শুধু ইংরিজিতে ফটফট করতে পারে বলে মেডিকাল রিপ্রেসেন্টিটিভের চাকরি পেয়েছে। ইকুয়ালিটির আর একটা উদাহরণ। ইংরিজি উঠিয়ে দিয়ে যে সাম্য আনা হচ্ছে তাহল চাষার ছেলেকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তুমি গুরু ওসব কঙ্খল টল ভেব না ওসব এলিটদের জন্য। না আমি এই সাম্যের বিরুদ্ধে।

    আমার উত্তর:
    এক, মেডিকাল রিপ্রেসেন্টেটিভ হতে ফটাফট ইংরিজি লাগেনা। অন্তত: কলকাতার বাইরে লাগেনা। কারণ ডাক্তারবাবুরাই ইংরিজি বলতে পারেনা ঠিকঠাক।
    দুই, ইংরিজি বিশ্বের একটি ক্ষমতাশালী ভাষা। তা থেকে বঞ্চিত হলে পৃথিবীর অনেক রিসোর্স থেকে বঞ্চিত হতে হয়। ঠিক কথা। ইংরিজি উঠিয়ে দিতে সে কারণেই এখানে কেহ বলেনি। ভাষাটা জানা থাক, যার দরকার লাগবে সে আরও চর্চা করবে, যার লাগবেনা, সে করবেনা, এই ছিল বক্তব্য।

    ৪। ইংরিজিতে উচ্চশিক্ষা চললে বাংলা ভাষা নাকি উঠে যাবে? এটা বিশেষ প্রমাণ দাবী করে? তাহলে এতদিনে ভাষাটা উঠল না কেন?

    আমার উত্তর: ওঠেনি, কারণ, এতদিনেও ইংরিজিতে উচ্চশিক্ষার প্রসার হয়নি। "আমি ওয়ার্ল্ডের ওয়ার্স্ট প্রোক্রাস্টিনেটর" জাতীয় বাংলা এখনও বেশিরভাগ লোকেই বোঝেনা। ইংরিজিতে পাইকিরি উচ্চশিক্ষার প্রসার হলে রাতারাতি নিশ্চয়ই ভাষাটা উঠে যাবেনা। কি হয়েছে, এবং কি হতে পারে, তার বিশদ ব্যাখ্যা আগেই দিয়েছি। এবং খিল্লি ব্যতীত তার কোনো উত্তর পাই নাই। দুর্ভাগ্যবশত:

    ৫। আবার বলি আজকের দিনে ইংরিজি সুপিরিয়র ল্যাঙ্গোয়েজ, কারণ বিশাল নলেজ ব্যাংক ও ক্রমাগত এই ভাষার বিবর্তন ও প্রসার। উদাহরণ হিসেবে বলেছিলাম বিশ্বের প্রথম পঞ্চাশটি পেপার কোন ভাষায় লেখা হয় ও বিশ্বের প্রথম পঞ্চাশটি ইউনিভার্সিটিতে কোন ভাষায় পড়ানো হয়। কিন্তু এটা বলা নাকি জর্জ বুশকে বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী পুরুষ বলার সমার্থক। অথচ আজকের দিনে দাঁড়িয়ে চাইব আমার পরবর্তী জেনারেশন ইংরিজি পড়ুক সে ভারতেই হোক বা এখানেই? পুরো লজিকটাই বুঝি নি।

    আমার উত্তর: ইংরিজি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ভাষা। ঠিক। সব্বাই ইংরিজি জানলে সব্বাই সেই ক্ষমতার আস্বাদ পেত। নেটিভ ইংরিজিবাসীরা বেশি পেত, আর ল্যালারা কম পেত, তবুও ছিটে ফোঁটা পাওয়া যেত।

    আমেরিকা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। সেই দেশের নাগরিক হতে পারলে বহু ক্ষমতার নাগাল পাওয়া যায়। পৃথিবীর বাকি লোকেরা আমেরিকায় থাকলে অনেক ক্ষমতার আস্বাদ পেত।

    কিন্তু দু:খের কথা, পৃথিবীর বেশিরভাগ লোকই আমেরিকায় থাকেনা। তাদের আমেরিকান নাগরিক করাও যাবেনা। এবং সারা পৃথিবীকে আমেরিকা করে দেব, এটাও কোনো মডেল হতে পারেনা।

    একই ভাবে গোটা পৃথিবীর বেশিরভাগ লোক ইংরিজিতে কথা বলেনা। তাদের সবাইকে ধরে ইংরিজি শেখাব, এটা কোনো মডেল হতে পারেনা। আঞ্চলিকতাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে একটি গ্লোবাল ভিলেজ তৈরি করতে হবে, এটা সেই চিরপুরাতন আমেরিকান মডেলেরই এক্সটেনশন। যেটা বস্তুত: অসম্ভব এবং অনৈতিক। সেই কারণেই, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও এই একাধিপত্যের বিকল্প মডেলের দরকার আছে। এটা নৈতিক দরকার।

    এবং মজা হচ্ছে, কেন এটা করা হবেনা র পক্ষে সেই একই যুক্তি, যা আমেরিকার একাধিপত্যের বিরুদ্ধে বলতে গেলেও দেওয়া হয়। দেয়ার ইজ নো অল্টারনেটিভ। টিনা। যুক্তির প্যাটার্নে সেই একই আধিপত্যবাদের ছোঁয়া। ইংরিজি এবং আমেরিকান আধিপত্যবাদ এখানেই এক হয়ে যায়।

    ৬। ইংরিজি শিখতে হলে নাকি হাজার হাজার টাকার স্কুল লাগে? আসল দাবী হল ক্লাস ওয়ান থেকে ইংরিজি শুরু হোক। একপয়সাও এক্সট্রা লাগে না।

    আমার উত্তর: এই হিসেবটা আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হোক। হিসেব নিকেশ নিয়ে গুচ্ছের কথা হয়েছে। তখন বলা হয়েছে প্রোজেক্টের ডিটেল না পেলে হিসেব বলা সম্ভব নয়। এখন "একপয়সাও এক্‌স্‌ট্‌রা লাগেনা" কমেন্টটা কিভাবে ডিটেল ছাড়াই করে ফেলা হল জানানো হোক।

    ৭। "ইংরিজি লোকে শেখে তার কারণ প্রভুর ভাষা'। আসলে এখনে নেটিভ ইংলিশ স্পিকিং পপুলেশন : নন নেটিভ ইংলিশ স্পিকিং পপুলেশেন =:

    আমার উত্তর: প্রভুর ভাষা বলেই তো শেখে। নইলে ভাষা শেখার শখ হলে তো চিনে-জাপানিও শিখত।

    ৮। বাংলায় রাশিবিজ্ঞান পড়ে কি কাজ পাওয়া যাবে? 'হিন্দি বা বাংলাতে রাশিবিজ্ঞান পড়ানো হলে আজ যা করা যাচ্ছে সবই যাবে'। শুধু বাংলার কথা জানতে চেয়েছি তাতে শুনেছি ঈশানের পাড়ার কেউ বিদেশে থাকে। তাহলে কি ধরে নেব রাশিবিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষা অন্তত ইংরিজিতে হবে। কারণ বাংলায় কি কি কাজ পাব এখনো জানতে পারি নি।

    আমার উত্তর: আমার পাড়ার কেউ রাশিবিজ্ঞান পড়েনি। সিঙ্গুরের একজন পড়েছে। আই এস আই তে। তাপ্পরে পি এইচ ডি রিসার্চ ইত্যাদির সুবাদে বিদেশে থাকে। ওটা গবেষণা ও বিদেশযাত্রার পার্সেন্টেজ প্রসঙ্গে বলা। ঘটনাচক্রে সিঙ্গুরে আমার চেনা একজনই বাইরে রিসার্চ করে, এইভাবেও বলা যেত। ওর সঙ্গে স্পেসিফিক রাশিবিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই। এবং এই গোটা পপুলেশনের একজন বাইরে যাবে বলে গোটা পপুলেশনকেই ধরে ইংরিজি পড়ানোর দরকার কি?, এইটা জানতে চাওয়া হয়েছিল।

    ইত্যাদি ইত্যাদি।

    তা এগুলো যদি ঈশানের যুক্তি টুক্তি বলে মনে না হয় তাহলে অন্য সমস্যা। সেক্ষেত্রে এই এত টাইপের পরেও ঐ সামারি নামে। অনেকেই করে থাকেন। আগেও দেখেছি।

    আমার উত্তর: আর্যর হতাশা স্বাভাবিক। আমিও দেখেছি অনেক টাইপের পর সেটা নিয়ে লোকে শুধু সামারি করে খিল্লি করতে ভালোবাসেন। তা খিল্লি করলে খিল্লি আসবে। তা নিয়ে বলার কি আছে? বলতে হলে প্রথম থেকে সবকটা খিল্লি নিয়েই বলা উচিত।

  • PT | 203.110.243.21 | ১১ নভেম্বর ২০০৯ ২২:০৮420086
  • Samik সব সরকারি অফিসে বা সব শ্রেণীর সরকারি কর্মচারীদের হিন্দি ক্লাশ করা বাধ্যতামুলক নয়। একটা ফর্মে হিন্দিতে সই করতে পারলে হিন্দি শেখার দরকার হয় না।

    প্রশ্ন কিন্তু অন্য! এটা বোধহয় (উচ্চশিক্ষিত) বাঙালীদের ক্ষেত্রে বেশী প্রযোজ্য। ইংরিজি ছাড়া অন্য ভাষা শেখার অনীহা। দিল্লীতে বহুদিন আছেন এমন বাঙালী রাজনীতিবিদদের হিন্দি শুনলেই সেটা বোঝা যায়। পুণাতে উচ্চশিক্ষিত অনেক বাঙালীকে চিনি যাঁরা তিরিশ বছরেরও বেশী (জন্ম, বেড়ে ওঠা প:বঙ্গে) ওখানে থাকা সত্বেও তিন মিনিটও মারাঠীতে কথপোকথন করতে পারেন না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন