এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বিকল্প লেখাপত্তর, কি লিখব কেন লিখব

    Ishan
    অন্যান্য | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ | ১১৩৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • d | 117.195.39.165 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:১৭422982
  • আচ্ছা হনুকে আমার একটা জিজ্ঞাস্য আছে। এই যে তুমি নাম ধরে ধরে বলে দাও অমুক অমুক অমুক এইটা এইটা এইটা নিয়ে লেখো, সেটা কি এইজন্য যে তুমি মনে কর অন্য কেউ সেই বিষয়টা নিয়ে লিখলে "পোঁয়াপাকামো' হয়ে যাবে? তাই একটা প্রিকশনারি মেজার হিসাবে অমুক যদি এইটার ওপরে লিখেই রাখে তো বড় ভাল হয় --- এরকম কিছু?
  • h | 61.95.144.10 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:১৮422983
  • প্রথমত: একটা কথা বোঝা দরকার, গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করে খুব বেশি দূর লেখা সম্ভব না। যা প্রাণে চায় লেখা হোক। শুধু এই প্রসেসটাই একটা সুস্থ বিতর্কের পরিবেশ তৈরীর টিঁকিয়ে রাখার জন্য ইম্পর্ট্যান্ট।
    দ্বিতীয়ত: বিখ্যাতরা কি করেন কি লেখেন, তাঁদের নিয়ে পেরে না উঠে পাঠকরা কি করে ফ্যালেন, এই সব নিয়া ভাইবা বেশি লাভ নাই। লিখে সংসার চালাবেন যদি পরিকল্পনা করে থাকেন, সেটা সহজে হওয়ার নয় অথবা ফাটকা। প্রথম পরিশ্রমটা আপনারি। লেগে পড়ুন। বাদ মে দেখা যায়গা। একটা সিম্পল কথা মনে রাখবেন, যেটা আগের প্যারাতে কেন বল্লাম না আমি নিজে ক্লিয়ার নই। মেনস্ট্রীম হেজেমনি, বিকল্প প্রতিষ্ঠান সব আছে, দারুণ ভাবে আছে, কিন্তু আপনার জিহ্বা আলটপকা কি বলে ফেলবে তার উপরে আপনার এবং সিআইএ র এবং আপনার পূর্বপুং ও স্ত্রীং দের বিন্দুমাত্র ক®¾ট্রাল নাই। লিখুন। আপনি বাজে লিখলেও সেটা একটা ন্যারেটিভ। বলা যায় না, কখনো কখনো সেটা নিয়ম ভাঙতেই পারে। আর সঙ্গে একটু পড়ুন, প্রচলিতর বাইরে, কি আশ্চর্য্য সব কান্ড ঘটে চলেছে, চাক্ষুশ করুন। ইত্যাদি। মাল খেলে ম্যানিফেস্টো লেখা বহুত সোজা হয়ে যায়। আমার ধারণ বৃটিশ লাইব্রেরীর ঠিক বাইরের সেই পাবটা, যেটাতে গেলিক ফুটবল দেখায়, সেইখানে বসেই মার্ক্ষ, তাঁর ম্যানিফেস্টো নামান, তার এক কিমির মধ্যেই সোহো ;-)
  • h | 61.95.144.10 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:২১422984
  • আমি চাই সবাই সব বিষয়ে লিখুক। যখন যা নাম মনে পড়ে বলি। অর্থাৎ দ্বিতীয়টা।
  • h | 61.95.144.10 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:২৬422985
  • ইশানের থিসিসে, আরেকটা পবলেম হল, ভারতের লোকের কেন আফ্রিকার লোকের লেখা পড়া উচিত সেটা বলা নেই। মানে কলোনীকে হোমোজিনিয়স ধরা হইতেছে। আর একটা বিপদ হল, তাইলে আমি আর পবীন তোগাডিয়া সমান হই। মানে, কোন বেটা যদি বলে আমি কেন চিনুআ আচেবে পড়ব, কারণ তার সঙ্গে 'গাঁ ঘরের মিল পেছি না', তাহলে সে স্ট্রেট মূর্খ। তাকে ঢাকার ব্যবস্থা করিশ না। লজ্জার কিছু নেই, আমরা প্রত্যেকেই একটু আধটু মূর্খ, শুধু দলে ভারী হলাম এই যা। এটা জেনে যদি কেউ হালকা লজ্জা পায়, তাহলে হেবি হবে।
  • h | 61.95.144.10 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:২৮422986
  • *চিনুয়া আচেবে পড়ব না
  • h | 61.95.144.10 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:৩৩422987
  • অ্যাকচুয়ালি দ্বিতীয়টা নয়, প্রশ্নটা বুঝিনি। এইবার বুঝলাম। এর তার নাম করার কারণ হল, আমার মনে হয় যাদের নাম করলাম তারা এসে কϾট্রবিউট করলে একটা বিষয়ে অনেক দিক খুলে যাবে, তখন অনেকেই পার্টিসিপেট করতে পারবে।

    নাম নিয়ে দেখছি অনেকেরি চাপ। এত চাপ আমার জনা ছিল না। আমায় তো নাম ধরেই ডাকা হয়, এবার থেকে ইসে ইয়ে দিয়ে বলবো। আশাকরি তখন লোকে কম ভুল বুঝবে।
  • d | 117.195.34.202 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৬:৫০422988
  • আরে আমার নিজের নাম নিয়ে কোন চাপ নেই। আমিও যাদের লেখা পছন্দ করি, বেশ খোলাখুলিই জানাই।

    তবে লোককে চ্‌সপ খেতে দেখেছি। তাই জিজ্ঞাসা করলাম। আমার ধারণা আমরা যারা আর্য্যর ভাষায় অ্যাগ্রেসিভলি ভাটাই তাদের কারোরই নাম নিয়ে চাপ নেই। নিজ নিজ বক্তব্য নিয়ে সকলেই সোচ্চার। কিন্তু যারা অতটা সোচ্চার নয়, তাদের বোধহয় কখনও কখনও একটু চাপ হয়।
  • arindam | 59.93.194.202 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৭:২৭422989
  • বিক্রমের বক্তব্য পড়ে বেশ লাগল। তবে পাঠককে কী দেব আগে থেকে ভেবে বসে লেখা মনে হয় বেশ চাপের কেস। লিখতে ইচ্ছে করছে, লেখা পেয়েছে, ব্যস্‌ লিখে ফেল। লেখার পরে চুপচাপ বসে দেখ অন্যেরা কী বলছে। সমালোচকদের কথা মন দিয়ে শোন, নিন্দুকদের কথা ঝেড়ে ফেল। আবর পরের লেখায় হাত দাও। সে সাহিত্য বলুন বা শিল্প দুটো ভাগ থাকা উচিত। রসস্বাদন হোক সর্বসাধারনের আর আঙ্গিকের বিচার হেনা তেনা এইসব নিয়ে অন্যকেউ ভাবুক।
  • r | 125.18.104.1 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৩৯422990
  • বাংলায় লেখালেখি করে পয়সা হবে না। সুনীলের হয়েছে বলেই সবার হবে না। কাজেই এ লাইনে বেশি সিরিয়াসলি ভেবে লাভ নেই। ইংরিজিতে লিখতে হবে। একমাত্র প্রবলেম হল, সব টপিক ইংরিজিতে দাঁড়ায় না। যেমন, আমি ভবিষ্যতে লোকনাথবাবার যে একমাত্র অথরাইজ্‌ড জীবনীটা লিখব। ওটা ইংরিজিতে লেখা চাপ। রণে বনে জলে জঙ্গলের আধ্যাত্মিক কনোটেশনগুলো ঠিক আসবে না।
  • arindam | 202.56.207.56 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৪৮422992
  • r
    মাইরী, মা কালীর দিব্ব্যি, আপনি না একটা যাচ্ছেতাই রকমের জিনিস ছাড়েন।সারাদিন পড়ি, হাসি, চিন্তা করি। দিনের শেষে রাত নামলে আপনাকে আদর করি।
  • dipu | 207.179.11.216 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৪৯422993
  • :-O
  • r | 125.18.104.1 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৫১422994
  • শেষেরটা একদম করবেন না। প্লিইজ। ৩৭৭ নেই ঠিকই, কিন্তু আমারও কোনো FCপ্রীতি নেই।
  • Arijit | 61.95.144.123 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৫৬422995
  • খ্যা খ্যা
  • tkn | 122.162.42.156 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৫৮422997
  • ফিক
  • h | 203.99.212.224 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৫৮422996
  • র এর ইংরেজি লেখার প্ল্যান, বাংলা কবিতা লেখা প্র্যাকটিস, অসংখ্য রচিত ও প্রকাশিত ও প্রকাশিতব্য গদ্য, ত্রিপিটক পাঠ, ভবিষ্যতের লেখার প্ল্যান ও শিরোনাম, ফ্যান বেস, আকুল পাঠককুল প্লাস এই লেটেস্ট সেক্ষ অ্যাপীল সব রেডি। শুধু আরেকটু ল্যাদ কমিয়ে লিখলেই হয়।
  • vikram | 193.120.76.238 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৫:১৮422998
  • হনু কে পরে বলছি।

    অক্ষ,

    একটা ব্যাপারে আমার ডিস্যাগ্রিমেন্ট আছে। সেইটা হলো - যে শার্প আর ক্রিয়েটিভ সে পাতি মস্তি করে পেন ধরলেও একটা ভালো লেখা বেরোবে। এইটা প্রবাব্লি হবে না। সে সময় নিয়ে, তার অভিজ্ঞতা, তার মনে যা যা আছে এইসব নিয়ে ভালো করে লিখলে তবে, ইন পোস্ট ডিকশান (নট প্রি-ডিকশান) তাকে আমরা (মানে যার পছন্দ হবে) বলবো শার্প অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ - রান্নাঘরে কি ঘটছে তা তো দেখছি না, খাবার খাওয়ার কথা তাই খাচ্ছি, বাট ইট ইজ ফেয়ার এনাফ।
    এবারে, আমি তথাকথিত ''ফেমাস'' বা ''মেনস্ট্রীম'' লেখকের কথা বলছি, কারণ, অনেকে বিপুল খাজা হওয়া সঙ্কেÄও যেহেতু এনাদের মসীকেই অসি করে চলতে হয় সুতরাং এদের অনেকেরই কিন্তু ভালো লেখার ইচ্ছা ও রসদ উভয়ই আছে। তাঁদের মধ্যে, হতে পারে, কারওর চিন্তার, কারওর কর্মের স্বাধীনতা নেই, কারওর দুটো ই নেই। এবং সে সব থাকুক না থাকুক কোথাও ''মস্তি'' করে লেখার ইনসেন্টিভ হলো, একটি লোক যে ধরণের লেখা পছন্দ করে বা রেসপন্স পছন্দ করে সেরকম লাইক মাইন্ডেড ও কোয়ালিটির লেখা সে কোনও একটি জায়গায় পায়। যে কারণে লোকে একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখে, বা আড্ডা মারে, বা নতুন শহরে এসে কারও সাথে যেভাবে যে এক্সপেকটেশানে আলাপ করে সেই ইনসেন্টিভে লিখবে। খানিকটা এরকম, আমি এই সময়ে এইসব না লিখে অন্য কিছু করতে পারতাম, কিন্তু বাই চয়েস আমি এখন টাইপ করছি। বাই চয়েস অক্ষ এটি পড়েবেন ও আমার দাবি খারিজ করবেন। কমন ব্যাপার হলো যে অন্তত: দুজনেই এই কথাবার্তায় একটু হলেও সময় দিয়েছি।

    অরিন্দম,

    এইখানেই আমার বক্তব্য - কারওর কথা ভাববো না, আমার নিজের ওপর বিশ্বাস আছে জে আমি ভালো জিনিস তৈরি করবো, এইগুলির দুটো মূল প্রবলেম। এক, আমি নিজেই ঠিক করছি কে সমালোচক কে কার কথা শুনবো, বা কারওর শুনবো না - সেটা ভালো, কারণ আল্টিমেটলি মালটা দাঁড় কস্রানো আমার উদ্দেশ্য, অত ভাবতে গেলে খেলাটা আর আমার থাকে না অন্য লোকের হয়ে যায়। ফ্লিপ সাইড, যেটা আমার মনে হয়, যে এই প্রসেসে একটা বিপুল নার্সিসিস্টিক কমপ্লেক্ষ অধিকাংশ লোক ও গোষ্ঠীর মধ্যে তৈরি হয়। এত কবি কেন? - এই প্রশ্ন করছি না, কিন্তু এত একই কেসে লিটল ম্যাগাজিন কেন, এটা আমি করছি। খালি লিখে যাও, কিছু ভেবো না, সৃষ্টিসুখের আনন্দ এসব তো খাতার মধ্যে হবে - কিন্তু যখন খাধ্য পরিবেশন হবে তখন আমদের ভাবতে এইটুকু হবে যে আমার তরফ থেকে আমি কি দিতে চাইছি। তবে এটা হতে পারে, যে আমি জেনারালি ম্যাগাজিনগুলির ওপরে খামোখাই অতি চটা।

    হনু,

    ইয়েস, অধিকাংশ জিনিসেই একমত, ইনক্লুডিং আমি যে কোনও সিরিয়াস বিষয় ও লেখনব্‌হ্‌ঙ্‌গীকে সন্দেহের চোখে দেখি, ইন ফ্যাক্ট অধিকাংশ জিনিসকেই। আমি হনুর লেখা পড়ে পছন্দ করলে আবার পড়বো সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। অ্যান্ড ফাক পাব্লিক টেস্ট, ইয়েস। কিন্তু আমি তোমার লেখা পড়বো কি করে? আইদার লোকের হাতে আসে এমন একটা কাগজে, বা আমি জেনারালি অ্যাভারেজ কন্টেন্টের জন্য যেখানে যেতে পছন্দ করি তেমন কোনও ফোরাম বা সাইটে। এইটা এক। দুই, হনু যদি না জানে যে সে কি দিতে চাইছে (ভালো হোক, বাজে হোক, যাই হোক) তাইলে, আমার মনে হয় খুব বাজে হবে। হনু বলতে পারে, যে আমি আমার অনুভূতিমালাকে অঘ্রাণের বাতাসে উড়িয়ে দিলাম, কিন্তু আমি ঠিক জানি না আমি কি দিতে চেয়েছি, এইগুলি ভালো ভালো ইন্টারভিউতে বলা যায়, বা সে একটি অতি বিরল প্রতিভা যে এই লেখালেখি বাঁচে (মানে সেই রিলকের লেটার্স টু দা ইয়াং পোয়েটের প্রথম চিঠিতে যা বলা হয়েছে)। দ্বিতীয়টা আইডিয়াল, কিন্তু ওরকম লোক হয় না। ফলে হনু নাও, বাই ডিসরিগার্ডিং আ লট অফ থিংস মাইট রান দা রিস্ক অফ বীইং আ twat

    আমি খালি বলছি টু মূভ ইয়োর পীসেস উইথ লাভ। তোমার লেখার বা গাইডিং ফ্যাক্টার বিটার হলেও। তাতে তুমি অনেক বেশি ইনক্লুসিভ হতে পারবে, যে ইনক্লুসিভনেসের জন্য আমরা কলকতা কি ডাবলিন কি কামস্কাটকায় থেকেও ভিএৎনামের গ্রামের গল্প রিলেট না করেই এনজয় করতে পারি (এইটা একটি আর্বিট উদা মাত্র - ইউ গেট দা মেসেজ)।

    হ্যাঁ এগ্রীড যে কি লিখবো সেটা অনেক বেশি দরকারী প্রশ্ন। কিন্তু কিভাবে লিখবো, সেইটাও দেখো - আফটার অল, তোমার রাজনৈতিক বা যে বক্তব্যই থাক, সেইটা আমার পড়ে ভালো লেগেছে বা আমি ভবিষ্যতে পড়বো তার সাথে আমার রাজনৈতিক সচেতনতা বা আমার পড়াশুনার যত না সম্বন্ধ, তার চেয়ে অনেক বেশি সম্বন্ধ আমার স্মৃতির, আমার বেড়ে ওঠার, এবং আমার পার্সোনাল পছন্দ অপছন্দের। সেইটাকে ট্যাপ করা জরুরি। আর মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ তো আছেই :-), যদিও জেনারালি, অধিকাংশ লিখিয়ে ও পড়িয়েদের অত্যন্ত সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ১০০ বারের মধ্যে ৯৯ বারই হাবিজাবি বলছে, বা কিছু বলতে চাইছে না, জাস্ট হাতের সামনে কীবোর্ড আছে, সময় আছে বলে টাইপ করছে এইসব।
  • h | 61.95.144.10 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:৩৩422999
  • দেখ বাবা ভিকি, একজন লেখকের মোটিভেশন লেখার কী হবে, এটা তুই ঠিক করে দিতে পারিস না। মানে এই ঠিক করে দেওয়াটা বোকা মূর্খ স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী বা নির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে চলা পাবলিশিং হাউজ হলে নিজে করে দেবে, একটু চালাক, হলে পৃথিবীর হেজেমোনিক কিম্বা ডমিনান্ট সামাজিক রাজনৈতিক ফোর্স গুলোর অপেক্ষায় থাকবে, কখন তাঁরা লেখকের এজেন্ডা বদলান বা গড়ে পিটে ঠিক করে নেন। ঘাবড়ানোর কারণ নেই, অপেক্ষা দীর্ঘ নয়, বেশির ভাগ সময়েই। এইবার মুক্ত অর্থনীতির সমর্থক হলে তুই বলতে পারিস, বস, তোমার না পোসালে পাবলিশার চেঞ্জ করবে। সব-ই ঠিক আছে, কিন্তু পাবলিক টেস্ট এমন একটি নিটোল বস্তু তাতে জেনেরালি দাঁত ফোটানো মুশকিল, বিশেষত: যদি তুই সমাজে প্রচলিত সেন্সিবিলিটি গুলোকে গুঁতো দিয়ে লেখা লিখিস। তার-ও অনেক খেলা আছে। শৌভর লেখাটা পড়েছিস? সিনেমাটা দেখেছিশ ধরে নিচ্ছি, বইটা পড়েছিশ। কিস অফ আ স্পাইডার উওমান? পুইগ যে সময়ে বইটা লিখছেন, তখন লাতিন আমেরিকার সাহিত্যে 'এল বুম' চলছে, এবং শুধু তাই নয়, সংস্কৃতি তে অকারণ ম্যাচিসমো। ডিক্টেটর এবং কর্ণেল চরিত্র রা বর্ণময় এবং ল্যাটিন চরিত্রের প্রতিনিধিঙ্কেÄর দাবী করছেন। সর্বোপরি গোটা ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে বিভিন্ন প্রকারের বাম নিরীক্ষা চলছে, প্রতিটাই বেশ ম্যাচো। সে তুই, চে-ফিদেলদের ক্ষমতাদখল বল, নেরুদা-আয়েন্দে এক্সপেরিমেন্ট বল, পরের দিকে নোরিয়েগাদের সান্দিনিস্তা বিপ্লব বল কিম্বা, বা পেরুর শাইনিং পাথ বল। সর্বজন শ্রদ্ধেয় কোর্তাজার, তিনি পর্যন্ত হপ্‌স্‌কচের নায়ক ওলিভিয়েরা র বকলমে নেকু তথা মহিলা পাঠকদের প্যাঁক দিচ্ছেন। এই টিপিকালিটি গুলো কি একটা দারুণ বড় অর্থে 'বিষয়' হিসেবে বিকল্প নয়। একশো বার বিকল্প। ইউরোপের নভেলের বিকল্প তার কলোনীপ্রচেষ্টার বিকল্প, তার ব্যক্তি আর অ্যালিনিয়েনেশন কেন্দ্রিকতার বিকল্প (হয়তো)। নিজেদের তৈরী বিকল্প নিজেরাই নানা রকম প্রশ্ন চিহ্ন দিয়ে জর্জরিত কী করছেন না মার্কেজ, ফুয়েন্তেস, ভার্গাস লোসা রা। একশো বার করছেন। কিন্তু তবু একজোটিক ল্যাটিনো বলতে একটা আর্কিটাইপ তৈরী হচ্ছে, বিশেষত: যাঁদের কাছে অনুবাদের মাধ্যমে পৌঁচছে এই সব লেখা। একটা আজব একে্‌জাটিকা। ইন্টারেস্টিং কিউরিও শপের মত। সেই ইমেজের সঙ্গে লড়তে গিয়ে নিজেরা মাঝে মাঝে জিতছেন, মাঝে হারছেন 'এল বুম' এর লেখকেরা। এর মাঝে মানুয়েল পুইগের আবির্ভাব। বিষয় হিসেবে কী কী বাছছেন খেয়াল কর।

    বিট্রেড বাই রিটা হেওয়ার্থ - সিনেমার থেকে তুলে আনা একটা চরিত্র, তাকে কল্পনার কেন্দ্রে বসিয়ে লেখা। এর আগে 'আমেরিকা' এসেছে এই এল বুম কালের নভেলে কিন্তু সেটা একটু অন্য ভাবে, জ্যজ সঙ্গীতের ভক্ত ছিলেন কোর্তাজারের নায়ক নায়িকারা। অর্থাৎ একটা নতুন ক্লাসিসিজম খুঁজছেন। কিন্তু সেখান থেকে পপুলার কালচারের এরেনাতে পেড়ে ফেললেন , সিরিয়াস নভেলের আঙিনায় এটা বড় বিকল্প, ৭০ এর দশকে বুয়েনাস এয়ার্সে বসে এটা লিখতে ধক লাগতো।
    ইটার্নাল কার্স অন দ্য রিডার অফ দিজ পেজেস - এখানে সরাসরি লাটিন আমেরিকা থেকে আসা একটা অথর্ব বুড়ো ফাসিস্ত আর একটা নির্দয় তিতি বিরক্ত আমেরিকান বামপন্থী যুবার কনভার্সেশন। যখন আমেরিকা আর ইউরোপের টুনটুনিমার্কা বামপন্থার জগতে লোকে মেক্সিকো পৌঁছে গেলেই অথেন্টিসিটি দাবী করছে অথবা লাতিন আমেরিকা এক আজব অলীক উন্মাদনার মত বিপ্লবের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তখন সেই মাটি থেকে আমদানী করলেন একজন অসহায় হারামী বুড়ো ফাসিস্ট কে। বিষয় হিসেবে চমকপ্রদ। দুটো অয়্‌ডাল্ট লোক ঘনিষ্ঠ হওয়া সঙ্কেÄও একে অপরের উপরে নির্ভর হওয়া সঙ্কেÄও বেসিকালি ছক না করে থাকতে পারছেনা। বাডি ফিল্মের দেশে বসে এটা লেখা সোজা কথা নয় বস।
    হার্টব্রেক ট্যাংগো - এক পিস পাড়ার ডন হুয়ানের টিবি হয়েছে, সমস্ত পোঁয়াপাকামি শেষ এবার ম্যাচিস্মোর এই লসের মুখোমুখি সে নিজে কীভাবে হচ্ছে। তখন অন্তত পরিস্থিতি যা ছিল, বিষয়ের দিক থেকে প্রত্যেকটাই বিকল্প। বা অন্তত তখনকর লাতিন সাহিত্যের ইমেজকে কয়েকটা প্রশ্ন ছুঁড়ছে অন্তত।
    এইবার শৌভর লেখাটা আরেকবার চোখ বুলিয়ে নে, দেখবি, মূলত: সাবেকী বামপন্থীরা হোমোসেক্সুয়ালিটিকে হ্যান্ডল করতে গিয়ে ধ্যাড়াচ্ছে এই নিয়ে গল্প, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক, মূলত: সংলাপ। ৭০ এর দশকে এটা ঐখানে ব্যাপক বিকল্প। কিন্তু ধর এখন, বিশেষত: অনূদিত সাহিত্যের জগতে, মার্জিনালিটি আর নতুন কোন বিষয় নয়, পপুলার বিষয়, গভীর চিন্তার বিষয় কিন্তু নতুন নয়। আজ ফ্রান্স বা লন্ডন বা কলকাতা বম্বের আন্তরজাতিক সাহিত্য পাঠ করা ক্রাউডের কাছে একটা নতুন রিয়েলিটি এসে উপসি্‌ঠত। সেটা হল নানা ধরণের সেক্সুয়ালিটি কে আস্তে আস্তে অন্তত: পশ্চিম বলতে আমরা যা বুঝি, ইউরোপে, সেখানে মেনে নেওয়া হচ্ছে। গে বলে লোকে খুন হচ্ছে হয়তো এখনো মস্কো তে বা এমনকি লন্ডনে কোনো পাড়ায়, কিন্তু আবার বন্ধুর হাত ধরে বসে থাকা জাচ্ছে কাফেতে, বারে বা ক্লাবে। অথচ চাকরীর নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না, হেটেরো হোমো হগলেরি চাকরি যাচ্ছে, কালো মুসলমান হলে চাগরি মোটে পাওয়াই যাচ্ছে না। ইত্যাদি, এখন এই জগতে যদি কোন লেখক এসে গে বা লেসবিয়ান সম্পর্কের মধ্যেকার জেলাসি বা এক্সপ্লয়েটেশন নিয়ে জটিল মনস্তাঙ্কিÄক কাহিনী ফাঁদেন, সেটা র জন্য তাঁকে খানিকটা কৃতিঙ্কÄ দেওয়া যেতেই পারে। সোশিওলোজি আর পাব্লিক পলিসি কিম্বা হোমোফোবিয়ার চেনা জগত আর তার পোলিটিকাল রেজিস্টান্স এর এরেনা থেকে সাহিত্যকে বিকল্প ভাবে একটু আলাদা করে দেওয়ার জন্য।

    এইবার আমায় বল, এতে বিষয় ঠিক করে দিচ্ছে কিনা বিকল্প প্রস্তাব। কী ভাবে লেখা হবে বিষয়টা গুরুঙ্কÄপূর্ণ কিন্তু পাব্লিক টেস্টের কথা ভেবে যাদি লোকজন বসে থাকে, পাঠক কে হাত ধরে হাঁটতে শেখানোর মত পেট্রোনাইজ করে লেখে, সেটা মুর্খামি কিনা।

    বাংলা বক্তব্য হল যা আমার মোটিভেশন যখন, সে অনুযায়ী যে লেখা লিখতে ইচ্ছে করবে লিখবো, পাঠকরা আদৌ গ্রহণ না করলেও সত্যি কিছু এসে যায় না, কারণ আমার বক্তব্য যদি ভ্যালিড হয় কারো না কারো মাধ্যমে সে কথা ঠিক লোকের কানে পৌঁছবে। এই আশায় বাঁচে চাষা, এই জমি বিতর্কের আমলে ;-)

    এটা কী আত্মরতি জানি না। প্রচুর রিপিটেশনের সম্ভাবনা সঙ্কেÄও তো আমার পর্যবেক্ষনের আর উপলব্ধির কথা আমাকেই লিখতে হবে? প্রেমের উপন্যাস যদি এক-ই লোক বছরে পঁচিষটা লিখতে পারে, প্রতিটা ইউরোপীয় লোক-ই যদি, নিজেদের যৌবনকে ডিফেন্ড করে লেখা লিখতে পারে, তাইলে আমি ধর হারিয়ে যাওয়া বুড়োদের নিয়ে অন্তত একটা উপন্যাস লিখতে পারবো না কেন? আর্বান ট্রান্‌স্‌ফর্মেশন কে নিয়ে লিখতে পারবো না কেন, যেখানে মানুশ্‌গুলো পার্শ্ব চরিত্র, শহরি নায়ক আর নায়িকা একটা লাইব্রেরী? হোয়াই দ্য ফাক? ভিকি ;-)
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৩২423000
  • বিক্রম অত্যন্ত বিপজ্জনক কিছু কথাবার্তা বলছে। :) কিন্তু প্ররোচনায় পা না দিয়ে আমি প্রথম থেকে শুরু করি। এক এক করে।

    এক, বিকল্প লেখাপত্তর কেন বলছি? অন্য কোনো কারণ নেই, আমি মনে করি, যখনই একটা লোক পাবলিক স্পেসে এসে একটা বাক্যও লিখল, বা বলল, তখন, তার একটিই মোটোভেশন, যে, সে নতুন কিছু বলবে, যা ঐ স্পেসে হয়নি। মানে, আমি যদি ফুকো নিয়ে এখানে চাট্টি অন্যত্র বহুচর্চিত কথা এখানে বলি, তার মোটিভেশন একটাই যে এখানে ফুকো নিয়ে ঐ কথাগুলো কেউ জানেন না। সবাই যদি জানতেন, তাহলে আমার কথাগুলো রিডানড্যান্ট হয়ে যেত, এবং লোকে আমায় প্যাঁক দিত।

    তো, বিকল্প মানে এইটাই। চালু লেখালিখির বাজারে আমি নতুন কি দিলাম। চালু লেখালিখির পরিবর্তে আমি কি বিকল্প মাল দিলাম। এইটাই কারো লেখার মোটিভেশন হতে পারে। অন্য কিছু নয়। এর মানে এই নয়, যে, সব কিছুই নতুন হতে হবে। "প্রেম' বা "আতাক্যালানে' জাতীয় বহু পুরাতন বিষয়েও আমি এমন কিছু জিনিস বলতে পারি, যা লোকে আগে ভেবে দেখেনি। এমন কোনো এক্সপ্রেশন দিতে পারি, যা খুব ছোট্টো কিন্তু লোকে যা পড়ে ফট করে ভাবতে বসবে, কই, এমনটা আগে ভাবিনি তো। ইত্যাদি। এর বাইরে যা কিছু, তা মূলত: মুদির দোকানের ফর্দ লেখা।

    ( তা এটা বেসিকালি মৌলিকতা সম্পর্কে লেখা। এই ধরণের মৌলিকতার ধারণায় কি অসুবিধে, এবং পরিবর্তে কি করা যায়, সেটা নিয়েই ঐ গাব্দা ম্যানিফেস্টো। সে কথা এখানে আর রিপিট করলাম না)।
  • vikram | 193.120.76.238 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৫০423003
  • হনুকে পরে লিখবো, অতি মনোযোগ দিয়ে কিছু দাবি করেছে। ইন ফ্যাক্ট , আমি ওর বক্তব্যের সাথে একমত হই না হই, এই লেখাটা মানে রিজয়েন্ডারটা আমার অতি ভালো লাগছে।

    এবারে মামুকে, উইদাউট প্ররোচনা,

    এক) তুমি বিকল্প লেখা কেন বলছ এইটা আমার ইছুতেই মাথায় ঢুকছে না। মানে তুমি বলছো যে লোকে যা পায় সেটা ভালো না, আমরা ভালো ভালো জিনিস দেবো? এইটা কেমন কথা। তার চেয়ে ওহে শোনো, এইখানে এসো, ভালো তেলেভাজা পাবে এই বললে বেটার। অল্টার্নেটিভ তেলেভাজা দেবো এইটা ঠিক না। তুমি বলবে লেখাটা বিকল্প ধরণের নয়, মডেলটা বিকল্প - এগ্রীড, কিন্তু তাতে কি এলো গেল - লোকে তো পড়তে এসেছে। এই নয় যে মডেল টাকে আমি ছোটো করছি, কিন্তু একটা ব্লগ টাইপের ব্যাপারের সাথে মূলত: কোনও তফাত নেই। বিকল্পটা পরিবেশনার প্রযুক্তিতে।

    দুই) একটা লোক, একটা কেন, অধিকাংশ লোক, ইনক্লুডিং আমি, ইনক্লুডিং তুমি, বহু এবং অনেক সময় পাবলিক স্পেসে কোনও নতুন কিছু বলার জন্য লিখি না। পাতি কথার পিঠে কথা লিখি। আমি ধরে নিচ্ছি ''ফুকো'' নিয়ে জানেন না তুমি এটা বলছো ফ্রম দা সেন্স অফ পার্সপেকটিভ। নইলে কারওর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তোমার কাছে ফুকো বিষয়ে প্রাইমার নিতে আসবে কেন খামোখা? ঐ যে বলছো, লোকে ভাববে এমনটা ভাবিনি তো, সেইটা দরকারি। আর আমি আরও এগিয়ে বলবো যে তুমি পুরো ব্যাপারটাকে ইন্টেলেকচুয়ালি ধরছো। সবাইকে ভাবতেও হবে না, কারুর লেখা পড়ে তোমার যদি মনে হয়, আহা অমুক পুজোয় গেলে আমার অতি মজা লাগতো, বা অহো অহো অমুকের প্রেমে আমি পড়লেই ভালো হতো সেইটাই মেন। মৌলিকতা কি, বা কি নয় সেইটা অনুভূতিনির্ভরও বটে।

    চালু লেখালেখির বাজারে তো অনেক কিছুই নতুন দেওয়া যায়। এবং ভালো লেখা তো মৌলিক যৌগিক এসব হবেই। কিন্তু বিকল্প নয়।

    দেখো, তুমি বেসিকালি বলছো ভো বাবাসকল, তোমরা জনগনের স্বার্থে লিখ, সকলে পড়ি। তো এবারে লোকে লিখলেই হলো। সেইখানে কারওর সাথে তুলনা করে নূতনঙ্কেÄর খোঁজ করে লাভ আছে?

    বেস্ট হয়, তুমি যদি, ধরো, এই গু চ এর কয়েকটি লেখা নিয়েই উদাসহকারে ব্যাপরটা কি বলতে চাইছো বলো। কেন বিকল্প।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৫০423001
  • দুই। খামোখা এই টই কেন খুললাম। ম্যানিফেস্টোর রিভিউ এর জন্য? নাকি ছাপা গুরুর কনটেন্ট বিষয়ে আলোচনার জন্য।

    কোনোটাই না। অনেক কারণ আছে, মাথায় আসছে। তার মধ্যে দুটো লিখি।
    এক স্রেফ ইচ্ছে হল। :)
    দুই, কদিন ধরেই কাগুজে গুরুর জন্য কোটি কোটি পুরোনো লেখা পড়ছি। ভাট টই, প্রকাশিত লেখা ইত্যাদি। পড়তে পড়তে অবাক হয়ে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, যে, আমাদের লেখকরা সম্পূর্ণ দুটো আলাদা ভাষায় লেখেন (বোঝাই যাচ্ছে জেনারালাইজেশন করছি, কিন্তু ইন জেনারাল কথাটা ঠিক, অবশ্যই কিছু ব্যতিক্রম সহ)। ভাটে টইয়ে তাঁরা লেখেন সম্পূর্ণ কথ্য এবং ইন্টারেস্টিং একটা ভাষায়। আর "সাহিত্য' কি "প্রবন্ধ' লিখতে গেলেই ভাষা গোমড়া হয়ে একটা ফর্মাল আবরণ পরে ফেলে। যা বহু বহু জায়গায় আড়ষ্ট। কষ্ট করে লেখা। পড়তেও ভালো লাগেনা। সেগুলো, পড়তে গিয়ে দেখলাম, একটু ইনফর্মাল ভঙ্গীতে লিখলে, কি ভালই না লাগত।

    উদাহরণ দিই। জাস্ট একটা। দীপ্তেন্দা। ভাটে টইয়ে দীপ্তেন্দার কতো অজস্র মণিমুক্তো ছড়িয়ে আছে ভাবা যায়না, কিন্তু প্রবন্ধ লিখতে গেলেই, দীপ্তেন্দা, কেমন মতো একটা হয়ে যায়, কেন কে জানে।

    তা, এইসব পড়ে আমার দুটো জিনিস মনে হল।

    এক। আমরা কথ্য ভাষা, কথ্য ভঙ্গীকে আসলে একটু নিচু নজরে দেখি। সেই প্রাচীনকালে মাইকেল বঙ্গভাষাকে যেমন দেখতেন, সেরকম। আমরা মনে করি, এই ভাষায় কথা বলা যায়, কিন্তু লেখা যায়না। লেখার জন্য আছে পোশাকি ভাষা, যা, দেশানন্দ ডিকটেট করে দেবে। অ্যাকাডেমিক গুরুরা ডিকটেট করে দেবেন। আমরা সেই ভঙ্গীতেই লিখব। এবং লিখে চলব। একেই আমি পিতার ভাষা বলেছি। আমরা দেশানন্দের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করব, পিতার বিরুদ্ধে বিপ্লব করব, কিন্তু শেষ বিচারে পিতার ভাষাতেই কথা বলব। পিতার সামনেই নতজানু হব। ইত্যাদি।

    অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, কথ্য ভাষায় লিখতে হবে, এটা নতুন কিসু কথা না, সেই রবীন্দ্রনাথের আমলের রেজলিউশন। কিন্তু আজও সেই মিনিমাম রেজলিউশনে আমাদের সমস্যা আছে। আজও আমরা কথ্য ভাষার প্রতি নয়, আসলে পিতার প্রতি নতজানু।

    দুই। এবং এই নতজানুপনাকে নিয়ে আমরা বেশ স্যাটিসফায়েড। ফিল গুড। আসলে পিতার ভাষায় পিতার ভঙ্গীতে, গুরুটাকুরের নির্দেশেই লিখে চলেছি, সেটা আমরা বুঝছিনা। ভালো হচ্ছে না মন্দ হচ্ছে সে পরের কথা, কিন্তু পিতার ডিকটেশনই আমরা অলঙ্ঘনীয় মনে করছি, এটা বেশ চাপের ব্যাপার।

    তা, এইটা মনে হবার পরে মনে করলাম, একপিস টই খুলি, যাতে এইগুলো নিয়ে আমাকে বলতে হবে। হাতের কাছে পুরোনো লেখাটা ছিল, যাতে আমার বক্তব্যের কিয়দংশ আছে, তাই ঐ লিংক।
  • vikram | 193.120.76.238 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৫১423004
  • সরি, তুমি শেষ করো আগে।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২২:০৭423005
  • তিন। বিক্রমের বক্তব্য। আমাকে অবাক করে, বিক্রমও এই "ফিল গুড' মনোভঙ্গীতে বিলং করে গেল। বিক্রমের বক্তব্যে দুটো এসেন্স আছে।

    এক। লিখব বলে বেসি(বানামটা ইচ্ছাকৃত) চাপ নেবেন না। যা মনে আসে লিকুন। কে পড়বে কে কি ভাববে অত্তো ভাববেন না। মস্তি করতে লিখুন, এবং মস্তি পেতে পড়ুন।

    এই এসেন্সটা নিয়ে কিছু বলার নেই। এতে আমি ১০০% একমত। ফুর্তি না পেলে লোকে পড়বেই বা কেন, আর লিখবেই বা কেন।

    কিন্তু এর সঙ্গে যে দ্বিতীয় এসেন্সটা বেরিয়ে আসে, তা অতি বিপজ্জনক। যা মনে আসে তাই লিখুন, বেসি চাপ নেবেন না, এর আরেকটা মানে এই হয়, যে, লেখা মূলত: রিফ্লেক্স অ্যাকশন। প্রতিবর্ত ক্রিয়া। হাতে পেন বা কি বোর্ড আছে। ধরুন এবং মারুন। হল কি হলনা, পরে দেখা যাবে।

    এইটা অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ, এতে লেখালিখির মতো একটা জটিল ব্যাপারকে রিডিউস করে নিয়ে আসা হল মশা মারার পর্যায়ে। ওভাবে লেখা হয়না, হক্কলেই জানেন। "দেশ ও দশের জন্য লিখছি' কথাটা যেমন একটা এক্সট্রিম, ওভাবে ভেবেচিন্তে কিচ্ছু লেখা যায়না, তেমনই, কিস্যু না ভেবে লিখে চলেছি, সেটা আরেকটা। প্রথম এক্সট্রিমে স্বত:স্ফূর্ততা নামক বিষয়টাকে একদম বাদ দিয়ে দেওয়া হল, আর দ্বিতীয়টায় এডিটিং নামক বিষয়টাকে। অথচ কে না জানেন, স্বত:স্ফূর্ততা এবং এডিটিং, উভয়েই না থাকলে কোনো লেখা লেখাই হয়না। হুড়ুমদাড়ুম চারটে প্যারা আপনি লিখে ফেললেন, কিকরে লিখলেন জানেন না, এটা লেখার একটা আবশ্যক অংশ। অন্য দিকে যা লিখেছেন, তার ভূষিমালগুলোকে বেছে বেছে ট্র্যাশক্যানে নির্মম হাতে ফেলে দিতে হয়, এ ছাড়াও লেখা হয়না। বস্তুত: নিজের লেখার মিনিমাম অর্ধেক যিনি ফেলে দেন না, তিনি লেখক হবেন বলে দাবী করতেই পারেন না।

    তাই, আংশিক ভাবে শৌভ এবং বিক্রমের বক্তব্যের জবাবে এইটুকুই বলার আছে। যে, প্রতিবর্তক্রিয়া আসলে শেষমেশ আপনাকে হুড়িমতাল পিতার ভাষার দিকেই ঠেলে দেবে। সেটাকে চেক করার জন্য, এডিটিং দরকার। এবং এডিটিং যখনই করছেন, তখন, কি লিখছেন, কেন লিখছেন, কিভাবে লিখছেন, সেই প্রশ্নগুলো আপনি বাদ দিতে পারেন না। ওগুলো যেকোনো এডিটিং এর এবং তৎসম্লগ্ন লেখার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

    এখনকার মতো "সংক্ষেপে' এই টুকি। :) আবার পরে।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২২:১৬423006
  • বিক্রম মাঝে ফুট কেটেছে। অতএব শেহ হইয়াও হইলনা শেষ।

    বিক্রমের দুটো পয়েনের জবাব এক ও দুই দিয়ে লিখি:
    এক। বিকল্প লেখা কথাটায় আপত্তি থাকলে ওটাকে আমরা অন্য কোনো নাম দিয়ে রিপ্লেস করতে পারি। যথা টুনটুনি মূলক লেখা। :) আমার কাছে প্রতিটি নতুন লেখাই বিকল্প বা টুনটুনিমূলক। । কারণ চালু লেখাপত্তরের বাইরে তারা নতুন কিছু বলতে চায়। একটা লেখায় যদি শুধু গোটা চারেক "আমি তোমাকে ভালোবাসি' বলে লাইন থাকে, তাহলে সেটাকে আমি বিকল্প বা যাথেষ্ট টুনটুনিমূলক মনে করবনা।

    দুই। আমরা সমস্ত কথাই "নতুন' কিছু বলে লিখিনা ঠিকই। কিন্তু কোনোটাই "নতুন' বলব বলে লিখিনা তা নয়। লেখালিখির উদা দিয়ে কাজ নাই। খুব মোটা দাগে লিখি। এমনি গোদা জীবনের কথা। আমরা সক্কলে প্রেমিক/প্রেমিকার ছাঁদমুখ ধরে কিছু মধুর কথা বলেছি। সেসব কোনোটাই নতুন কিছু না, কিন্তু তার পরেও সক্কলেই প্রেমিক/প্রেমিকার জন্য এমন কিছু একটা লেখা/এমন কিছু একটা কথা বলা/এমন কিছু করা/এমন কিছু দেবার কথা ভেবেছি, যেটা ইউনিক। কেউ প্রেছি, প্রায় কেউই হয়তো পারিনি। কিন্তু চেষ্টা করেছি। লেখাতেও একদম তাই। বাজারের ফর্দ লিখে আমরা আনন্দ পাইনা, কিন্তু অন্য কিছু লিখে পাই। এই আনন্দটা নতুনত্বের। ক্রিয়েটিভিতির। অন্য কিছুর না।

    কিন্তু এখন আর আমাকে বকিও না। এবার কাজে যাব।
  • h | 203.99.212.224 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৩:৫৪423007
  • স্টিভ বিকো, অমিয়ভূষণ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সতীনাথ ভাদুড়ি এই কজনের বিভিন্ন কী লিখি কেন লিখি জাতীয় লেখা পড়েছিলাম, ইন্সিডেন্টালি। একটা সামারি দোবো।
  • r | 125.18.104.1 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৪:০২423008
  • বাজারের ফর্দ লিখতে বললে আমার মেয়ে খুব আনন্দ পায়।
  • san | 121.50.4.34 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৪:১৬423009
  • আরে, আমি এখনও পাই। বাজার কেন যেকোনো লিস্টিকরণেই আমি প্রভূত আনন্দ পাই। মাথার মধ্যে দশ জায়গায় দশটা জিনিস ছড়িয়ে আছে তাদের এক জায়গায় এক লিস্টিতে পুরে ফেলা যে কি আনন্দের কাজ !

    সরি , আব্বুলিশ :-)
  • r | 125.18.104.1 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৪:২৬423010
  • আমিও পেতাম। ক্রিকেটারদের লিস্টি তৈরি করে- অল টাইম বেস্ট ইন্ডিয়া, ওয়ার্ল্ড ইলেভেন ইত্যাদি। :-)
  • Arijit | 61.95.144.123 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৪:২৯423011
  • কাকে কাকে প্রভুত ক্যালানো উচিত বা অ্যাকচুয়ালি কাদের বেঁচে থাকারই রাইট নেই;-)
  • d | 144.160.5.25 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৪:৩০423012
  • আমি কাগজে কলমে বইয়ের লিস্টি করতে খুউব ভালোবাসি।
  • h | 203.99.212.224 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৪:৩১423014
  • আমার সাহিত্য অনুপ্রেরণা কে এই যে র আর স্যান মিলে ফর্দ বল্লো আর এই যে অরিজিৎ তাকে হিট লিস্ট বল্লো, এর বদলা আমি নোবো-ই নোবো। জাস্ট কি করে নোবো টা ক্লিয়ার নই, এই মুহুর্তে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন