আজ, ২০১১ সালে এই ব্যাপারগুলো অনেক বেশিমাত্রায় অ্যাডপ্ট করে নিয়েছে মিনিস্ট্রির এমপ্লয়ীরা। অন্য সব মিনিস্ট্রির কথা জানে না গ্যঁ¡ড়া, তবে পাওয়ার মিনিস্ট্রির নিজস্ব ইনট্রানেট আছে, নিজস্ব ইমেল সিস্টেম আছে, এমনকি আর ক্যাশ সেকশন থেকে আগেকার মত স্যালারি স্লিপও নিতে হয় না, ইন?ট্রানেটে লগিন করলে সেখানেই ই-পেস্লিপ দেখতে পাওয়া যায়, দরকারমতো ডাউনলোডিয়ে নিলেই হল। ইন?ট্রানেটে সরাসরি চলে আসে এনআইসি-র ডেটা, নর্দার্ন গ্রিড ইস্টার্ন গ্রিড সাদার্ন গ্রিড ইত্যাদির ডেটা, সরাসরি সেখান থেকে কপি করে তুলে নেওয়া যায় প্রয়োজনীয় তথ্য। ... ...
কারণ, এটা তো মানতে হবে: হে নিশান, যতোই জীর্ণ হও, হে লাল নিশান, তুমিই তো আমাকে লালন-পালন করেছিলে! তুমি তো আমাকে একের পর এক প্রেম-প্রস্তাব শিরা ছিঁড়ে যাওয়া যন্ত্রণায় প্রত্যাখ্যান করতে শিখিয়েছিলে, শুধুমাত্র রাজনীতির কারণে! তুমিই তো আমাকে যৌবন-দিনে দীর্ঘ-দীর্ঘ নিদাঘ শুধু মিছিলে হাঁটিয়েছো কলেজ-ÏØট্রট থেকে সিধো-কানহো-ডহর! যখন আমার আমার ক্লাসের বন্ধু-বান্ধবীরা সিনেমা দেখতে যেতো, তখন আমি হেঁটেছি গলা-অ্যাসফল্টের রাস্তায়, শুধু তোমার জন্য। ও আমার জীর্ণ লাল নিশান, তুমিই তো আমাকে মুঠো করে ধরতে শিখিয়েছো কবিতা! বলো, কেন আজও আমার উত্তর দিনাজপুরের ডি-সি-এম শুধু কবিতার কথা বলে? কেন আমার রাজ্য-কমিটির সদস্য কবিতার কথা বলে? ও আমার বিবর্ণ নিশান, আমার নিজের ছেলে বড়ো হয়ে কী করবে জানি না, কিন্তু অনেক বামপন্থী ছেলে-মেয়েরা কি একদিন তোমাকে রাঙিয়ে তুলবে না? ... ...
পরাধীন ভারতের অন্যতম সেরা নাট্যপ্রযোজক ভদ্রলোকের নাম রবীন্দ্রনাথ। ইউরোপিয়ানদের এদেশে মঞ্চসজ্জা দেখে যিনি অনুধাবন করতে পারেন বাস্তবতার নাম করে বোকামো করা হচ্ছে এবং যিনি জানেন আসলেই একটি স্টুলকে একই মঞ্চে রাজসিংহাসন থেকে দারোয়ানের বসার জায়গা সব বানানো যায় দর্শকের কল্পনাশক্তির উপরে ভর করে(বাঙ্গালীর কাছে যাত্রা,কথকতায় কল্পনা বিস্তারের পাখা ছিল),তিনিও কিছু কথা বুঝেছিলেন,বলেছিলেন। যেমন গানের ব্যবহারের শক্তি,যেমন মঞ্চসজ্জায় স্বাতন্ত্র্য তৈরী করা,যেমন একটিমাত্র জালের আড়াল দিয়ে রক্তকরবীর গোটা নাটকে যক্ষপুরীকে তুলে আনা ইত্যাদি। তা কল্পনা যদি এতটাই পারে,তাহলে সেই কল্পনা একটি মঞ্চেই আবদ্ধ থাকে কেন? নাটক যদি শিক্ষার মাধ্যম হয়,নাটক যদি সচেতনতার প্রচারক হয়,নাটক যদি সমস্যা আলোচনার একটি নিবিড় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ স্থান হয় তাহলে সেই নাটক শুধু মঞ্চেই আটকে থাকবে কেন? তাহলে তো মঞ্চ পাওয়া না পাওয়া,তার জন্য বিশেষ কর্তৃপক্ষকে খুশী করা ইত্যাদি হিসেবে, আর দর্শককূল হিসেবে শুধু পরিশীলিত মধ্যবিত্ততেই খেলা শেষ! সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন বাদল সরকার। কিন্তু মঞ্চ বিরোধিতা করেননি। সেটা নিতান্তই অপপ্রচার। আসলে নিজের কাজ নিয়ে শহর-গ্রাম তোলপাড় করে বেড়াচ্ছিলেন। আমাদের নাট্যকর্মীকূলের একটি বড় অংশ অফিস শেষ করে এসে থিয়েটারের মহড়ায় অভ্যস্ত। অভ্যস্ত হাফ বা ফুল ছুটি নিয়ে এসে মঞ্চে অভিনয় করায়। তাঁরা যেমন-তেমন ব্যবস্থায় অভিনয় বা প্রযোজনা করেন না। গোছানো সাজানো গ্রামীণ মঞ্চ নেই। আলো,শব্দের বিশেষ প্রক্ষেপণ নেই খোলা মঞ্চে। মানুষ এক জায়গায় বসে প্রবন্ধ পাঠের মুখ করে দেখছেন না নাটক। আসছেন-যাচ্ছেন,ধরে না রাখতে পারলে হেসে বিদ্রুপ করে চলে যাবেন,পাশেই বিক্রেতারা বিক্রি করে চলেছে,ক্রেতা কিনছে,সেই পরিবেশ তাঁদের সমস্যা করেছে। তাঁদের সমস্যা করেছে বাদল সরকারের শরীরি ভাষা। ... ...
অন্য কথায় চলে যাচ্ছি, "কবি'-তে ফেরা যাক। কুসংস্কারমুক্ত সীতা থেকে ন্যাশনাল সে?শালিস্ট মহান্ত - পিতৃতন্ত্র এভাবেই দিন কাটাচ্ছিল। এর মাঝখানে বাড়তে শুরু করল মুচি রাজন ডোম নিতাই আর ভোজপুরী মজুর বালিয়ার বাস্তবতা। "কবি' চলচ্চিত্রের জোরটা এইখানে যে সে এই অন্য বাস্তবতাটাকে নিয়ে এল সেই একই পিতৃতন্ত্রের কাছে। দর্শক তো সে-ই যে তারাশঙ্করের পাঠক ছিল, কিন্তু দর্শনীয় গেল নড়ে। যতটা নড়ার সম্ভাবনা ছিল উপন্যাস "কবি'-তে, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি করে। তারাশঙ্করের অন্তর্বিরোধ, তাঁর লেখাতেই মহান্তের যে নীল চশমার কথা পেলাম, সেই নীল চশমা দিয়ে তিনি যে নিজেই দেখছেন, তাঁর শিল্পীসত্তার সমস্ত পর্যবেক্ষণ ও আবিষ্কারের পরও, তার অবস্থানই তার চোখে ওই চশমাটা গুঁজে দেয়, এই জায়গাটাই আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে "কবি' চলচ্চিত্র দেখতে দেখতে। লেখাটা এবার ক্রমে গুটিয়ে আসছে। চলচ্চিত্রে আমরা পৌঁছেছি পঁয়ত্রিশ মিনিটের কিছু বেশি, তার মানে মোট দৈর্ঘের এক তৃতীয়াংশেরও কম। এখনও পরপর দৃশ্য ধরে, উপাদানগুলোকে পরপর স্পষ্টতায় নিয়ে আসাই যায়। কিন্তু কোনও নতুনতর দৃষ্টিকোণ নয়, তা হবে এতক্ষণ ধরে তুলে আনা দৃষ্টিকোণগুলো দিয়েই বারবার আলাদা আলাদা উপাদানকে দেখানো। এবং সেটা এখন আপনারা নিজেরাই করে চলতে পারবেন। আমি এই লেখাটা শুরু করেছিলাম, দেবাশিসের মত আমার ছাত্রস্থানীয় কারুর কারুর জন্যে, কেন "কবি' চলচ্চিত্রটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ সেটা বোঝাতে, ওই নানা সম্ভাব্য দৃষ্টিকোণগুলো সামনে ধরে দিতে। সেগুলো এতক্ষণে মাথায় বসেই গেছে। এর পরেই আসছে নিতাইয়ের নিমন্ত্রণ, মহাদেব কবিয়ালের কাছ থেকে, দিন প্রতি ছয় টাকা বায়নায়। টাকাটাকে বাজারদরের সঙ্গে তুলনা করতে পারবেন, মনে করুন, মেলায় এসে যে মালাটা দর করেছিল ঠাকুরঝি, তার খুব বেশি দাম মনে হয়েছিল, সেটার দাম ছিল ছয় পয়সা। এই প্রথম অর্থনৈতিক রকমে সেই স্বীকারটা এসে পৌঁছতে শুরু করল, যেটা এতক্ষণ আমরা সাংস্কৃতিক রকমে দেখছিলাম। ... ...
এই চল্লিশজনকে বলা হত চল্লিশ চোর। এই উপাধি দিয়েছিলেন কবি আব্দুল গণি হাজারী। অনেক সইদাতা উত্তরকালে অনেক মূল্যে কলঙ্কমোচনের প্রয়াস পেয়েছেন, অনেকে বাংলার স্বাধীনতার পক্ষে মূল্যবান কাজ করেছেন। কিন্তু সঙ্গতভাবেই 'চল্লিশ চোর'-এর অধিকাংশ মুক্তিযুদ্ধে অনতিপ্রচ্ছন্ন রাজাকার ভূমিকা পালন করেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন। ... ...
এই বাংলায় নতুন সরকার এসেছে। গুরুচন্ডালিতে লেখেন বা গুরু পড়েন এরকম কিছু মানুষ,অত্যন্ত ঘরোয়া ভাবে কিছু আলোচনার পর নতুন সরকারের কাছে দাবি বা প্রত্যাশার একটি প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেন। খসড়াটি পাঠানো হয় শ্রী দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। খসড়াটি শুধু প্রাথমিকই নয়,অসম্পূর্ণও। শিক্ষা স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি এখানে আসেনি। একে পূর্ণতা দেবার জন্য এবং আলোচনার জন্য বুলবুলভাজায় খসড়াটি প্রকাশ করা হল। ঠিক এই ফর্মেই খসড়াটি সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। আলোচনা করুন, মতামত দিন। টইয়ে দিন, বা মেল করুন গুরুর ঠিকানায়। আপনার মতামতে পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত হয়ে খসড়াটি পুনরায় পাঠানো হবে সরকারের কাছে। ... ...
১. পাকিস্তানের জন্মমৃত্যুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ জড়িত। পাকিস্তান শুধু একটা রাষ্ট্র নয়-একটা পন্থাও বটে। এই পাকিস্তানপন্থা মানুষের সম্প্রীতির জায়গাটি ভেঙে দিতে চেয়েছে-চেয়েছে সাম্প্রদায়িক ভেদনীতি চাগিয়ে তুলতে। উদ্দেশ্য বাঙালি নামক একটা বিকাশমান জাতির ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে শেষ করে ফেলা। একটি নিরঙ্কুশ উপনিবেশ কায়েম করার লক্ষ্যে জাতি হিসাবে বাঙালিকে পঙ?গু করে দেওয়া। খুব কঠিন কথা। কিন্তু সরল সত্যি। তারা পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই এই পন্থাটিকে হাজির করে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভেতর দিয়ে। তারা ধর্মকেই রাষ্ট্র গঠনের ও জাতীয়তা নির্ধারণের একমাত্র নীতি হিসাবে গ্রহণ করে। এই নীতির মধ্যেই পাকিস্তানের জন্ম ১৯৪৭ সালে। মৃত্যু ১৯৭১ সালে। এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে পাকিস্তানের ভূতটির আছর দেখা দিচ্ছে। ... ...
গুরু ব্যাপারটা নিতান্তই হিন্দু। অন্য কোনো ধর্মে বা সমাজে এর ঠিকঠাক প্যারালাল কিছু পাওয়া যায় না। শুধু শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বা আচার্য্যই নন, গুরু সবেতেই একস্ট্রা অনেক কিছু, অনেক বেশী। অনেকাংশে বাবা-মায়ের মতনই গুরুত্বপুর্ণ। ফ্রেন্ড, গাইড অ্যান্ড ফিলোজফার। ক্রমশই এই শ্রদ্ধার সম্পর্কের সাথে আরো একটা সম্পর্ক, আরো জোরদার হয়ে উঠতে লাগল, সেটা আনুগত্যের। প্রশ্নাতীত আনুগত্য। গুরুর আদেশ অলঙ্ঘনীয়, সেটি পালনের সাথে নিজের বিচারবুদ্ধির বা বিবেকের কোনো অজুহাত থাকতে পারবেনা। এই আনুগত্য আরো বেশী করে দেখা যায় যখন গুরু হন ধর্মগুরু। উদ্দালক আরুণীর বহু প্রচলিত গল্পটি তো সবার জানা। আলের গর্ত দিয়ে যাতে জল না ঢোকে ক্ষেতে, গুরুর সেই আদেশ পালন করতে গিয়ে অনন্যোপায় হয়ে আরুণী সারারাত আলের ধারে নিজের দেহ দিয়ে ঢেকে রাখলেন আলের গর্ত্ত। পরের ভোরবেলা গুরু ধৌম তাকে খুঁজে পেয়ে উদ্ধার করলেন, খুব খুশি হলেন ও নামকরণ করলেন উদ্দালক। বা শিষ্য বিন্ধ্যপর্বত ঘাড় গুঁজে রইলো চিরকালের জন্য গুরু অগস্ত্যের ফিরে আসার জন্য। শুধু গুরু নয়, গুরুপুত্রের জন্যেও একটা ধারাবাহিক দুর্বলতা। সরাসরি রণাঙ্গনে .. ... ...
কঠিন বইপত্তর নিয়ে ফান্ডা লড়াতে চান? বই রিভিউ করে বাজারী গুরুদের মুখে ঝামা ঘষে দিতে চান? পড়ুন "গুরু হবার সহজ গাইড - কী লিখবেন কেন লিখবেন" পণ্ডিতরা এতদিন আমাদের বুঝিয়ে এসেছেন, বইপত্তর রিভিউ করা খুব কঠিন কাজ। এর জন্য উচ্চমানের ফান্ডা লাগে। লম্বা দাড়ি ও ঝোলা ব্যাগ দরকার হয়। এতদিন আমি-আপনি কঠিন বই নিয়ে লিখতে গেলে ওঁরা "তুই ব্যাটা কী জানিস' বলে সর্বসমক্ষে হ্যাটা করেছেন। বাজারের ব্যাগ থেকে টপাটপ ইংরিজি রেফারেন্স তুলে এনে নাকের ডগায় ছুঁড়ে মেরেছেন। ডানদিকে-বাঁদিকে দেরিদা ও নেরুদা, ফ্রয়েড ও ফুয়েন্তেস ঝেড়েছেন। দূর-দূর করে নিজেদের ঠেক থেকে গলাধাক্কা দিয়ে বিদেয় করে দিয়েছেন। আমরা, অনধিকারী শুদ্দুরেরা, জুতোপেটা খেয়ে নীরবে ফিরে এসেছি ঘরে। এই রচনা সেই অপমানিত ও অসুখী আত্মাদের জন্য, যাঁরা আঁতেলদের কাছে এভাবেই আজীবন অপদস্থ হয়েছেন। লাথিঝাঁটা খেয়ে, মুখ চুন করে, দিনের শেষে, বিফলমনোরথ, ফিরে এসেছেন ম্লান কফিহৌস থেকে। সেই সকল বঙ্গভাষী, যাঁরা ব্যর্থ-লেখক, যাঁরা ল্যালা, মূর্খ, চণ্ডাল, অনাথ ও আতুর, তাঁদের এই অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি ও নতুন জীবনের এক রত্নগুহার গুপ্তধনের সন্ধান দেবার নিমিত্তই রচিত হল ঈশ্বরপ্রদত্ত এই সটীক দশটি বিধান (টীকা বর্তমান লেখকের)। পাতি-পাবলিকরা একে হতচ্ছেদ্দা করলে পাবেন অনন্তকাল নরককুণ্ডের পারপিচুয়াল গরম তেলের ছিটে। দিনে দশবার তেলেভাজা হবেন, ডেলি আপনার মুণ্ডু কেটে আপনারই হাতে ধরিয়ে দেবে বিশালবপু বরকন্দাজরা। আর শুদ্ধচিত্তে নিষ্ঠাভরে অনুসরণ করলেই তুড়ি মেরে প্রবন্ধ লিখবেন। এনি ডে পণ্ডিতদের নাক কেটে নেবেন। ম্যাগাজিনে ম্যাগাজিনে আপনার নাম দেখা যাবে। জীবদ্দশায় যশ ও ধন পাবেন, পরকালে মেনকা-রম্ভা (লেডিসদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে)। ... ...
যাই হোক, সাঁইবাবার প্রয়াণের পর ক্ষমতাতে উচ্চপ্রতিষ্ঠিত শিম্পাঞ্জীরা মধু খাওয়ার জন্য মৌমাছির মত তাঁর মরদেহের চারপাশে ভিড় জমিয়েছিলেন। কেউ জানেন না, এই রাজ্য বা কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা যে ভীড় জমিয়েছেন - সেটা ব্যক্তি না সরকারী পর্যায়ে! কেউ জানেন না, এই ধরণের সম্মান দেখানো সংবিধান সম্মত কিনা! আমরা সবাই জানি - এ ধরণের বিশ্বাস বা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ব্যক্তিগত স্তরে সংবিধান সম্মত, কিন্তু রাজনৈতিক এবং সরকারী স্তরে নৈব নৈব চ! আমাদের সংবিধান বার বার যুক্তিপূর্ণ চিন্তাকে প্রচার করতে বলে। আব্রাহাম কুভুর এবং প্রেমানন্দের মতো যুক্তিবাদীদের প্রতিবাদ; ক্ষমতার কেন্দ্র, অগ্রাহ্য করেছেন। তাঁদের তোলা প্রশ্নগুলোর জবাব দেওয়া বা কর্ণপাত করার কোনো প্রয়োজন, ওই ক্ষমতাসীনরা, বোধ করেন নি। কোনো একজন, বেশ মনোজ্ঞ মন্তব্য করেছেন এই ব্যাপারে! দুই ধরণের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই ভগবানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রথম জনেরা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তাদের পাপ লুকোবার চেষ্টা করে আর দ্বিতীয় জনেরা অকপট কিন্তু প্রথম দলের সঙ্গে কাজ করেন। ... ...
রাম পুনিয়ানি তাঁর প্রবন্ধটিতে সাঁইবাবা ও অন্যান্য godman- দের প্রবল সমালোচনা করেছেন। অবশ্য সমালোচনার কাঠামোটি ন্যায়শাস্ত্রমতে "বিতণ্ডা'র কাছাকাছি, যেখানে কোনো একটি পক্ষ অপরকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই তর্কে নামেন। আমি আমার পাঠ প্রতিক্রিয়ায় পুনিয়ানির সাথে অনেক বেশি করে "বাদ' করতে চাইব। এই তর্কে পুনিয়ানি হবেন আমার পূর্বপক্ষ। প্রথমেই আমি পুনিয়ানির পাণ্ডিত্য এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে তাঁর বহুদিনের সংগ্রামকে নমস্কার জানাই। তাঁর সাথে এই একমুখী তর্কে প্রথমে তাঁর যুক্তির মধ্যে ফাঁক ফোকর দেখাতে চাইব আর তারপর একটি বিকল্প সমালোচনা রাখব। ... ...
- তবে ভেবে দ্যাখ দিনি, এই জগত সংসারের হাজার হাজার কোটি কোটি মানুষদের মধ্যে তুই লাখে এক। - তা বটে। - কেমন গর্ব হয় বল? - তা হয়। - হয়ে গ্যালো। তোরে অহম ধরলো। তোর দ্বারা আর কিছু হবে না। - সে তো তুমিও। - অ্যায়, ধরেছিস এক্কেরে ঠিক। - তবে? - তাই তো মাধুকরী। - সে আবার কী? - সে ভিক্ষেই তো। ভিক্ষে করলে সবার কাছে মাথা নীচু করতে হয়। মাথা নীচু করতে শেখ, তবে পার পাবি। রোজ তিন জনের কাছে ভিক্ষে করবি। পয়সা চাইবি না। এই যেমন চা খাওয়াতে বলবি, একটা বিড়ি চাইবি, তাতেই হবে। সক্কলের কাছে মাথা নীচু করতে শিখবি। সেই যে মাথাটা নামিয়ে দিয়েছিলেন। অমাবস্যায় চাঁদের উদয়। সে তো গুরুই পারেন। যিনি অ¡ন্ধার (গু) দূর করেন (রু)। আমার সনাতন গুরু। ... ...
এই পৃথিবীতে দুই তান্ত্রিক গুরু আছে। তাদের নাম হল ধনা আর গণা। তারা তন্ত্রবিদ্যায় খুব পারদর্শী। কী বলছেন? কেমন তাদের তন্ত্রবিদ্যা? বলব, বলব। বলব বলেই তো গপ্পো ফেঁদে বসেছি। কিন্তু তাদের বিদ্যার পরিচয় দেবার আগে তাদের নিজেদের পরিচয়টা আরেকটু খোলসা করে জেনে নিলে বেশ হয়। লোকে বলে ধনা আর গণা হল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দুই তান্ত্রিক। তবে তাদের মধ্যে কে কার থেকে বড় তান্ত্রিক তা নিয়ে বেশ তর্ক আছে। এটুকু বলে নিই যে বয়সে গণা ধনার থেকে অনেকটাই বড়। গণার বাবা-কাকারাও কিন্তু তান্ত্রিক ছিল, তারা নানা দেশে তাদের বিদ্যার চর্চা করত, যেমন এথেন্স, স্পার্টা, মেসোপটেমিয়া, ভারত (মানে আজকের ভারত যে ভূগোলে সেইখানে) ইত্যাদি প্রভৃতি। গণা তার গুরুজনদের বিদ্যাকে আরো প্রসারিত করে তাদের মুখোজ্জ্বল করেছে। এখন গণা আজ ইউরোপ তো কাল আমেরিকা তো পরশু ভারত, থুড়ি ইন্ডিয়া করে বেড়ায়। গণার এখন খুব ডিমান্ড। পৃথিবীর সব দেশই গণাকে চায়। ... ...
আসুন, আজ সেই ঘটনার ৫০-তম বর্ষপূর্তিতে সশ্রদ্ধ ও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি সেই অমর শহীদদের, যাঁরা জীবনের বিনিময়ে বাংলাভাষা ও বাঙালীর অধিকার রক্ষা করেছেন। দেশভাগের পর ব্রিটিশ আসামের কাছাড় জেলা এবং সিলেটের হিন্দুপ্রধান কিছু অংশ (বরাক উপত্যকা) ভারতবর্ষের আসাম রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৬১ সালে আসাম রাজ্য সরকার অহমিয়া-কে একমাত্র সরকারী ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলে বরাক উপত্যকার বাঙালীরা আন্দোলনে নামেন। ক্রমশ তীব্রতর হতে থাকে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াই। ১৯৬১ সালের ১৯শে মে, ভাষা-আন্দোলনকারীরা শিলচরে রেলপথ অবরোধ করার সময়ে তাঁদের ওপর গুলি চালায় আসাম রাইফেলস-এর একটি ব্যাটেলিয়ন। শহীদ হন ভাষা-আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ কমলা ভট্টাচার্য্য সহ মোট ১১ জন। আহত হন অর্ধশতাধিক। তাঁদের আত্মবলিদান আসাম সরকার-কে বাধ্য করে বাংলা-কে দ্বিতীয় সরকারী ভাষার মর্যাদা দিতে। ... ...
আমরা মনে করি, ব্লগ ও ফেইসবুকের ওপর এ হেন খবরদারী মুক্তচিন্তার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপেরই বহি:প্রকাশ, এটি কোনো সভ্য, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না। পাশাপাশি আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পাহাড় থেকে সেনা-সেটেলার প্রত্যাহারেরও জোর দাবি জানাই। ... ...
রাজনৈতিক দলের কর্মী হয়েও দলতন্ত্রের বিরুদ্ধে তাঁর একটা সহজাত প্রতিক্রিয়া ছিল। তাই গড়ে তুলেছিলেন আর একটি সংগঠন - সিটিজেন্স রাইটস্ অ্যান্ড প্রোটেক্সন ফোরাম। এই সংগঠনের ব্যানারে রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে "আর নয় রক্তপাত' এই বিষয়ের উপর সভা করার অনুমতি চাইতে সেদিন ৬ মে তিনি বালি থানায় গিয়েছিলেন। ফেরার পথে নিজেই রক্তাক্ত হয়ে গেলেন। এরপরে নিশ্চয় ব্যখ্যা করার অবকাশ নেই কেন তপন দত্তের হত্যা কোনো আলোড়ন তুলল না, কেন তাঁকে বিস্মৃতির আড়ালে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যারা তাকে গুলি চালিয়ে মারল তারা কি প্রকৃত দায়ী? যদি পুলিশ তাদের ধরে এবং শাস্তিও দেয় আসল অপরাধী কি আড়ালে থেকে যাবে না? ফলে যথার্থ তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা, কিছু পরিবেশ ও মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার সংগঠন। সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়ে যাওয়া ছাড়া এই ঘটনার কোনো যথার্থ প্রতিকার পাওয়া যাবে না। ... ...
চিঠি লেখা যে এমন রুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে তা দেখিয়েছেন তিনি । নিজের জীবনে তিনি শুধু চিঠিই লিখেছিলেন হাজার পাঁচেক, যে লো পড়ে, ট¥কে, বিশ্লেষণ করে শত শত বাঙালী বিদ্বান হয়ে গেছে । যেকোন ব্যক্তির লেখা চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করতেন, জবাবও দিতেন নিজের দুর্দান্ত হÙ¡¹ক্ষরে, কিন্তু জনসাধারণের উদ্দেশ্যে খোলাচিঠি লেখেননি কখনও । নিজের জীবনের দেড়শো বছরে এস এম এস, ব্লগ, স্ক্র্যাপ নির্ভর আধুনিক বাঙালীকে নিজের ভাবনার কথা ফেসবুক মারফৎ জানালেন রবীন্দÊনাথ । ... ...
যে কোনও সিম্পটম নিয়ে খনির কাছে গেলে খনি কিছু টিপিক্যাল প্রশ্ন করতেন, আর কিছু ওষুধ দিতেন। বেশি দিতেন ব্রুফেন নামে এক পেইনকিলার। আমার রুমমেট কে-কে একবার কাশি হয়েছিল বলে খনির কাছে গিয়েছিল ওষুধ আনতে, খনি তাকেও ঐ একই কোশ্চেন করেছিল : সিগারেট খাও? খারাপ পাড়ায় টাড়ায় যাও? অত:পর একপাতা ব্রুফেন হাতে দিয়ে বিদায়। এই জন্য ছেলেপুলে খনির ওপর একইসঙ্গে রেগেও থাকত, আর খনিকে নিয়ে মজাও করত। শোনা যায় একবার ওভালে খেলতে গিয়ে একটা ছেলের প্রচুর কেটে গিয়ে রক্তপাত হয়েছিল। তাকে ধরাধরি করে খনির কাছে নিয়ে যাওয়া হলে পরে, খনি তাকে দেখে আঁতকে উঠে বলেছিলেন, "এখানে কেন? এখানে কেন? ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও!' অত:পর একপাতা ব্রুফেন। ... ...
অধিকরণ থেকে বেরিয়ে নিজের রথে চড়লেন। রথ পথের ধুলো আর রাতের নৈ:শব্দ্যকে খণ্ড খণ্ড করে চিরে চলল হস্তিনাপুরের প্রান্তের দিকে। চোরাদুয়ারের কাছে এসে রথ ছেড়ে দিলেন বিদুর। এখান থেকে যে রাস্তাটি যাচ্ছে সেই রাস্তাটি একটি জঙ্গলের মধ্যে ঢুকবে। রথ এখান থেকে ফিরে যাবে নগরীর পশ্চিম প্রান্তে। এই পূর্বপ্রান্তের জঙ্গলটি ধরে কিছুটা গেলে একটি মন্দির আছে। সেই মন্দিরের সামনে এসে দাঁড়ালেন বিদুর। ভোর হতে আর বাকী সামান্যই। মন্দিরের ভিতরে খুব সামান্য একটি আলো জ্বলছে। কিন্তু এত নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে সেই আলোই মনে হচ্ছে অনেক। আলোক লক্ষ্য করে এগোলেন তিনি। বুকের ভিতরে একটা চাপা উত্তেজনা। কেমন একটা লাগছে নিজেকে! কিছুটা অচেনা। হঠাৎ করে যেন ফিরে গেছেন তাঁর নবযৌবনের দিনগুলোতে। যখন ধর্মাত্মা বিদুর গভীর রাতে একটি কালো অশ্বের পিঠে সওয়ার হতেন এবং এই জঙ্গলের মধ্যে এসে তাকে বেঁধে রেখে প্রায় ছুটতে ছুটতে পৌঁছে যেতেন এই মন্দিরে। এক রমণী সেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষায় থাকতেন। ... ...
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনকালে সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম একটি অসমর্থিত খবর ছেপে চলেছে যে, বাংলাদেশ ও ভারতের মতো শ্রীলংকার জাতীয় সংগীতটির রচয়িতা ও সুরকারও রবীন্দ্রনাথ। এ খবর সত্য হলে সেটা আমাদের জন্য নিরানন্দের ব্যাপার নয় নিশ্চয়ই। বরং আমরা এ অর্থে গর্বিত বোধ করতে পারি যে, পৃথিবীতে বাংলাভাষার লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই একমাত্র ব্যক্তি যিনি তিন-তিনটি স্বাধীন দেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে যে, এ সংবাদটি যারা প্রকাশ করছেন, তারা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র ব্যবহার করছেন না কেন? আর এরকম একটা খবর দেশের বড়ো বড়ো সংবাদ মাধ্যমগুলো চেপে যাচ্ছে কেন? তা ছাড়া আমার জানা নেই, আজ পর্যন্ত কোনো রবীন্দ্র জীবনীকার বা গবেষক এরকম দাবি করেছেন কি না ... ...