উৎফুল্ল দ্বীপবাসী বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্মিলিত কণ্ঠে "ধনধান্য পুষ্প ভরা' গানটি গাইতে থাকে। তাদের কার্যক্রমগুলোর মধ্যে একটি সাধারণ দ্বীপের সহজ সরল জীবন প্রকাশিত হয় কৃষিকাজ, নৌকা চালানো, খেলাধুলা, গেরস্থালি, উৎসব...। গান আর কার্যক্রমের মধ্যে পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠে তাদের সমৃদ্ধি আর সুখ-শান্তিতে বসবাসের চিহ্ন। গান গাইতে গাইতে সবাই বের হয়ে গেলে দেখা যায় এক জয়দীপ তার কয়েকটা অস্ত্রের মধ্যে একটা শান দিতে দিতে গানের একটা কলি গুনগুন করে গায় ... ...
ধরো তুমুল হাওয়া, যেন রূপবান বৃক্ষ বাড়ে / বিবিধ আত্মার মাঝে, রাতের সপ্তর্ষি দেখে তাকে / শূন্য ফ্রেমের ভিতরে - গলির ভেতরে গলি, স্থির ... ...
কেন বলো কেন হে অপ্রত্যাশিত,মুহুর্মুহু ঘন / জীবনযৌবন কেন করে তুললে জীবনো যৌবনো / বস্তিবাসী ঝ্যাং করে, গাড়িঘোড়া ক্রিইচ শব্দে থামি ... ...
তুমি কি আমার থেকে বৃষ্টি চাও? / চাও ভেজা? এফোঁড়-ওফোঁড়? / চাও তুমুল, ভিজে যাওয়া, চাও? / ... ...
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, এখানে কিছুদিন আগে যুদ্ধ হয়ে গেছে: / সাঙ্ঘাতিক, নাতিদীর্ঘ, প্রয়োজনীয় যুদ্ধ । ... ...
বিকেলের দু:সহ আলো ফিরিয়ে দিয়েছে / পুরোনো বিষাদ, ভাঙা প্রাসাদের ঝরোকা খিলান - / প্রেতের পৃথিবী হাতছানি দিয়ে ডাকে। ... ...
আমার ঘুমের দেহ / ছুঁয়ে রেখো দশদিন / দশমাস . / # / অল্প অল্প রোদ দিও- / বৃষ্টি দিও মেপে মেপে মেঘ. / শিকড়ে বিনুনি বেঁধে- / নাম দিও আদুরে আরেক. / এভাবে অষ্টতর শত ... ... ...
জানিনা - একথা যদি শুরু হয় আমাদের সাম্প্রতিক কথপোকথনের হুঁশহীন রাত্রির শেষের যেসব অযৌক্তিক রাগানুরাগের আশনাই রঙীন রাখে এই তোমার-আমার মধ্যেকার হাওয়াবাতাসের / গতিমুখ সবটাই অকল্পনীয় ভাবতে বেশ শ্লাঘা হয় তোমার আমার মুখে বয়ে যেতে থাকে কিছু বিজলী রঙ ... ...
সবগুলো ট্রেন চলে যাচ্ছে- / হুইসেলকন্যা কই তুমি? / পাথুরে অরণ্য পেরিয়ে জীবন ছুটে যাচ্ছে / ভ্রান্ত গন্তব্যে, ... ...
আমার ভিতর বয়ে চলে কোন এক নদী, কোন স্রোত নেই / অপুষ্টির এই নদীটিতে, শ্যাওলা জমেছে প্রচুর, আত্মার / আবর্জনায় জমেছে নীল, প্রণয়ের নীলে বিদ্ধ হতে হতে / পলাতক যযাতি নীলের খুব গভীরে ডুবেছে অরণ্যে। ... ...
আমার কিছু অসুস্থতা আছে, গোছানো / ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রোদ এভাবে যখন ঐ উঠোনে / প্রতিদিন সকালে ভাবি / এখানের সব অস্তিত্ব গভীর মৃত্যুচিন্তায় ডোবানো ... ...
পুজোর জগতেও এবার এসে গেল পরিবর্তন। ষষ্ঠীর দিন এক বাংলা চ্যানেল জানালেন, এবার ফোকাসে পরিবর্তন। আর কলকাতা-কলকাতা নয়। এবার পুজো গোটা বাংলার। এবার পুজো বৃহৎ চেতনার। বঙ্গ চেতনা ও মানবচেতনার। ছোটোখাটো ইস্যুতে থিমকে আর বেঁধে রাখা যাচ্ছেনা যাবেনা। হাওড়ার পুজো কমিটির প্রধান জানালেন, তাঁদের এবারের পুজোর থিম জঙ্গলমহল, সাঁওতাল সমাজ ও নাগাল্যান্ড। জঙ্গলমহল আর ভূমিপুত্র না হয় বোঝা গেল, কিন্তু নাগাল্যান্ড কেন? না, নাগাল্যান্ড সরকার তাদের ভূমিপুত্রদের নিয়ে যে ধরনের উন্নয়ন ঘটিয়েছে, বাংলার সরকার দশকের পর দশক ধরে তার কানাকড়িও করতে পারেননি। ... ...
পুজোয় কী কী সিনেমা না দেখলে জীবন বৃথা? চেখে দেখে জানাচ্ছেন লেখক। হ্যাঁ পুজোর রিলিজ বলতে আবার পুজোর মধ্যেই রিলিজ হল ভাববেন না। আমাদের উৎসব ঢের আগেই শুরু হয়ে গেছে। ... ...
(মেয়েরা ভালোবাসেনা বলে রোজ সন্ধ্যেবেলা রাগ হয় আর সেই রাগ থেকে এই সব লেখা) আপেল দেখে আদমি চেনা যায়। সুব্রতর বাড়িতে দাদা-বৌদি বেড়াতে গেল, আমরাও রাতে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ভিসিআর ভাড়া করে পানু দেখার ব্যবস্থা করলাম। সে কি সাংঘাতিক পানু। মেয়েদের মতো বুক আছে আবার ছেলেদের মতো ইয়ে। সেই প্রথম ঐ জিনিস দেখলাম। অনেক পরে জেনেছি তাদের কী বলে ইত্যাদি কিন্তু তখন আমাদের মধ্যে দারুণ তর্ক - ওরা আসলে ছেলে না মেয়ে। সুব্রত জ্ঞানী ছিল। বলল ওরা ছেলে। অ্যাডামস অ্যাপল খালি ছেলেদের থাকে। ... ...
সাঁঝের ঝোঁকে তিন মূর্তি হাজির। জলপথে আড্ডা চলছিলো এক শুক্কুর সন্ধ্যায় বন্ধু পম্পা-নীলাঞ্জনের ছাদে, সেখানে প্রায় চাঁদেরই সাম্পান বেয়ে হাজির, সৈকত, বরুণ আর গৌরব। তিনজন তিন আকৃতির। সৈকতকে ভীমের রোল দিলে আর কেউ ঠেক খাবে না। গৌরব বেশ গণেশ মতন, আর বরুণ ফ্রেঞ্চ কাটে কাত্তিকটি। এরা তিনজনাই বেঙ্গলী-ইন-ব্যাঙ্গালোরের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। সাঝেঁর ঝোঁকে এহেন অতর্কিত হামলা - কওহে ইহার কারণ কী? ... ...
অমল ধবল পালে খুব একটা হাওয়া এখনো লাগে নি, বরং আগের হপ্তাটা যা গরম গেল, "ভিক্ষে চাইনে মা, কুকুর সামলা' অবস্থায় নিয়ে এসেছে আপামর ইউ এসের পূর্ব উপকূলবাসীদের। সাউথ জার্সি, ফিলাডেলফিয়া ইত্যাদি নাকি সেই '৫৭ সালে এইরকম গরম পেয়েছিলো, আমাদের এদিকটা ঠিক ততটা না হলেও "ছোটে মিয়াঁ শুভানাল্লা', চল্লিশের ঘরের চৌকাঠ ডিঙিয়ে ঘোরাঘুরি করেছে। (দেখেছো? ডিগ্রী সেলসিয়াস বেরিয়ে এলো, ফারেনহাইটে ব্যাটারা কী সব এইট্টি নাইন্টি হাঁকে, শুনেই গরম লাগে, ওসব সাহেবসুবোদের জন্যে, তারচেয়ে দ্যাশের টান, ঐ সেন্টিগ্রেডই ভালো) ... ...
দেশজুড়ে চারদিকে যখন অরাজনৈতিকতার জোয়ার, মানুষ ব্যাপক এবং বিশাল গণআন্দোলনে যোগ দিতে দিতে জানান দিচ্ছেন যে তারা রাজনীতি করছেন না, তখন একটি কাগজ ( একা এবং কয়েকজন গুয়াহাটি) "অসমের বাঙালির রাজনৈতিক ভাবনা" এরকম একটা বিষয় বেছে নেয়াতে মনেই হয় তারা স্রোতের বিরুদ্ধে পা ফেলতে চাইছেন। কিন্তু স্রোতের বিরুদ্ধেও একটা স্রোত রয়েছে--- বলিউড পরিচালকেরাও প্রায়ই উচ্চারণ করে থাকেন "জরা হটকে"। বাঙালির রাজনৈতিক ভাবনা নিয়েও কিন্তু এই "জরা হটকের" বড় জটিল জাল ছড়ানো রয়েছে। একে "রাজনীতি", তায় "এই জাল"-কথা বলতে বেশ ভয় করেই বটে। ... ...
আমি তখন যুদ্ধক্ষেত্রে উঠে দাঁড়িয়েছিলাম। পায়ের একদিক থেকে রক্ত ঝরে যাচ্ছে তখনো, তবে বেশ কমে এসেছে। বাঁধন দিয়েই আটকেছিলাম। চারপাশে শুধু মানুষের স্তুপ। তার মধ্যেই আমার মত কয়েকজন ছটফট করছে। কারোর হাত, কারোর পা, কারোর মাথা চোট পেয়েছে। আর বাকি যারা পড়ে আছে, উঠছেনা, তারা সব মৃত মানুষ। মাঠটার চারপাশে কিছু গাছ ছিল। গাছগুলোতে এখন পাখির দল কিচমিচ করছে। মানে সন্ধ্যা হয়ে এল। এছাড়া সন্ধ্যা বোঝার উপায় এখনো নেই। আকাশটা লালচে হয়ে আছে। কনে দেখা আলো না কী বলে যেন! বেশ কিছু লোক হাতে গড়া মাচা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ... ...
দুটো নাও ধীরে ধীরে ঢুকছে নদী থেকে সোতা খাল দিয়ে। একটার খোল জুড়ে আমড়া। আরেকটার বুকজুড়ে নারিকেল। ঘাটকুলের কাছ দিয়ে যেতে যেতে জলে ঢেউ ওঠে না। মেয়েটি হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে ভাটা মাছ তোলে। কাকিলা মাছ ঘোরে ফেরে। বড়শি ফেলে মেয়েটি গাইতে থাকে- দিয়া মোরে ফাঁকি রে আমার সোনার ময়না পাখি। বাতাস প্রবল হলে সুরটা বহুদূরে উড়ে যায়। সেহাঙ্গলের ঠোঁটায় এসে সুড় সুড় করে। কড়াইগাছে একটি তক্ষক অবাক হয়ে চেয়ে থাকে। আর বাতাস মন্দ স্পষ্ট শোনা যায়- সোনার ময়না পাখিটি উড়ে যায়। ডানার শব্দ। আর কান্নার পুরণো কম্পন। বুঝতে হলে কান থাকা দরকার। ... ...
উজ্জ্বলকুমার দে চোর। সে যদি আজকে নবীনা সিনেমার ফুটে থাকতো, তাহলে মাজারের পাশের গলি দিয়ে দৌড়ে দশ গলির এক গলির মধ্যে লুকিয়ে পড়তে পারতো। নিদেনপক্ষে যদি যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের সামনে থেকে বক্তিয়ারশা রোডে ঢুকে পড়তো, তাহলেও ধরা না পড়ার একটা আশা ছিলো। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে, যে সে এর কোনওটাই করে উঠতে পারে নি। আর সময়টাও এমন, যে অসময়ে টিউশানি পড়তে আসা ছেলেপিলের বড্ড উপদ্রব। ... ...