ধর্ষণ-চুম্বক: আপনার ধর্ষ-কাম যাহার দিকে ধাবিত তাহাই বেশ্যা। এটি একটি ব্যবহারিক সংজ্ঞা। বেশ্যা চিহ্নিত করিবার বহু-পরীক্ষিত পন্থা। ধর্ষণ করিয়া শিওর হওয়া যাইতে হইবে ইহাই ছিল আপনার অদম্য কামের লক্ষ্যবিন্দু। ... ...
পূর্ণিমা বা শিখা যে নামেই ডাকা হোক, ওদের জীবন এরকমই। নীলকন্ঠের মত সমাজের অনেক ক্লেদ ধারণ করে ওরা সমাজের অবহেলা, অত্যাচার এত দিন মেনে নিয়েছে। ওরা বুঝেছে, সমাজ যাকে আবিলতা বলতে শিখিয়েছে, তা আসলে নিরস্ত্র জীবনের 'পরে ক্ষমতাবানের দম্ভ। তাই, ওদের সামাজিক মানসিক অর্থনৈতিক সব অত্যাচার মেনে নেয়ার দিন শেষ হোক, সেটাও ওরা সর্বান্তকরণেই চায়। তবে তার বিনিময়ে, যে পেশা ওদের পায়ের তলার মাটিটুকু ফিরিয়ে দিয়েছে তাকে ওরা আর খারাপ বলতে রাজি নয় কোনো ভাবেই। আসলে পূর্ণিমা শিখারা বাঁচতে চায়, বাঁচাতে চায়। ... ...
সচরাচরের অধিকার আন্দোলনের রাজনীতি কামনাকে বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করতেই চায়না। আমার মনে হয়, আমি হয় একজন নারী-মানুষ নই, নয় একজন যৌন-নারী-মানুষ নই, কিংবা একজন যৌন-নারী-সমকামী মানুষ নই, অথবা যৌন-নারী-সমকামী-একনিষ্ঠ মানুষ নই। কারণ ব্রাত্য হওয়া শুরু হয়েছিল নারী বলে, তারপর যৌন নারী বলে, তারপর সমকামী যৌনতাবোধসম্পন্না নারী বলে, শেষপর্যন্ত বহুগামী নারী বলে। প্রান্তিকরণের রাজনীতি কামনাকে ইন্ধন হিসেবে ব্যবহার করে। আমাকে ক্রমাগত রাজ্যপাট ছেড়ে বনে যেতে হয়, বন থেকে বনান্তরালে, চষা ক্ষেত ছেড়ে নোনা লাগা মাটি পেরিয়ে সমুদ্রের মাঝে কোন এক দ্বীপেও আশ্রয় মেলে না। "স্যাফো ফর ইক্যুয়ালিটি'তে বন্ধু পেতে আসিনি। সমমনস্ক, সমরাজনীতিতে বিশ্বাসী সহকর্মী চেয়েছিলাম। যাদের পেলাম তারা সহকর্মী, সহমর্মী বন্ধুও বটে। আমার কামনার ইতিহাস বা ভূগোল তাদের সবার মত নয়, কিন্তু প্রান্তিকরণের বিরুদ্ধে আমার রাজনীতি তাদের সঙ্গে আমাকে একসূষেন গেঁথেছে। ভিন্নতার উৎসবে আমরা সবাই শরিক। আমি, নারী, যৌন-মানুষ,সমকামী, বহুগামী, প্রান্তিক, কিম্ভুত - আমি। ... ...
আমরা জলে পা ডুবিয়ে বসি। আমরা আলকুশি গাছের তীব্র বেগুনী ফুল হাতে রগড়ে হাত মেহেন্দি করি, নোয়া লতার ডাল ভেঙ্গে বালিতে লিখি নাম, আর লজ্জাবতির ঝোপ সরিয়ে খোলা ভেঙে বার করে আনি কাঁচফল, ঠিক তিনটি করে সাদা মুক্তদানা আর কালো ফোঁটা আঁকা চোখের মত, একেকটি খোলায় ঠিক তিনটি, যেন ব্যাটারা জানত ঠিক আমরা তিনজনেই পা দেব সেখানে আজ। নৌকার মাঝি আমাদের পাগলামি দেখে তাড়া দেয়, যেতে হবে দূর বহুদূর। তাকে ভুলনো হয় নানা প্রশ্ন করে, মিলিয়ে দেখতে হবে না আমাদের কাঁটাঝোপে মোড়া আর ধুলোমাখা আগাছা ভরা ছেলেবেলাটাকে। আলকুশিকে তারা বলে নেউস। বেশ শক্ত, ঝোপে রাজার মত সবাইকে কাটিয়ে এগিয়ে সে চড়ে বসে ঝোপের মাথায়, শিরোমণি। সে গাছ হিসাবে লতা কিন্তু কোন আকর্ষ বা স্প্রিং নেই তার। অপরাজিতার মত অভিজাত ফুল ও ফল। ফলগুলি রোমে ঢাকা, যেন এক একটি শুয়োপোঁকা। হাতে লাগলে চুলকায় শোনার পর থেকে আমাদেরও হাত চুলকাতে থাকে। চুলকানোর কারনেই গ্রামের মানুষ পছন্দ করে না, তাই অভিমান করে সে আজ এই নির্বাসনে। সে এমন ভাবেই প্রকৃতির পাঠশালায় নুরুল মিয়া হয়ে ওঠে আমাদের শিক্ষক, বলে যেতে থাকে নেউস থেকে কী কী ওষুধ-বিষুধ হয়। আমরা নেহাতই আমনযোগী, তাই অনেক অনেক রাতে যখন চিলমারি বন্দরে আমাদের সোনার তরীটি ভেড়ে কোন লন্ঠনই আর জেগে নেই। ... ...
সরোদ বাজছিল। সরোদ এসেছে রাবাব থেকে। শুনেছি, জানিনা। সরোদ পার্সিতে মেলোডির মানে বয়ে চলে। সামনের জলচল খালটি বইছে না। নারীটি বইছে না। নাকি বইছে? শূন্যে স্থির হয়ে আছে কার আকাশবাড়ি? সতত ঈশ্বর তুমি চাঁদের আশেপাশেই থাকো, নাকি অন্যে আবাস তোমার আভাসে প্রকাশো? আমার এত এত জিজ্ঞাসা! আমার সারা জীবন শুধু জিজ্ঞাসা। অথচ... ... ...
বেলা চলে গেছে, ঘোচেনি এখনো খেলা রিক্সা চলেছে অংক স্যারের বাড়ি রাধিকার ব্যাগে কেসিনাগ, বই খাতা স্কুল থেকে সোজা, বাসন্তী রং শাড়ি ... ...
লোকে একটা কথা আকছারই বলে, - "ছাত্র ইউনিয়ন বন্ধ করে দাও, ছাত্র ইউনিয়ন দরকার নেই।' এই কথাটার আমি ঘোরতর বিরোধী। অবশ্যই ছাত্র ইউনিয়ন থাকা উচিত। ছাত্ররা রাজনীতি করবে না, এই কথাটা আমি মানি না। কিন্তু সেটা কি রাজনীতি? দলীয় রাজনীতি আর দলের রাজনীতি মনে হয় আলাদা জিনিস। দলীয় রাজনীতি করবে আমি তার বিরোধী, কিন্তু রাজনীতি করবে না কেন? অবশ্যই করবে। আর, যাঁরা বলবেন ছাত্ররা তার উপযুক্ত নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার তারা কিছু জানে না, তাঁদের বলব, কোন জগতে বাস করেন? পৃথিবীর দিকে তাকান। ইতিহাস ভাবুন। ... ...
ক্রমে২ সন্ধ্যা হয়ে গ্যালো। শিশুদের ভিড় চাঁদাপার্টির মতো দোর থেকে দোরে ছুটে ব্যাড়াচ্চে বাবুরা ফটাফট্ বীয়রের বোতল খুলে আয়েশ করে বসেচেন ও একে অপরের সহিত শেয়ারের দাম, গদ্দাফির মৃত্যু ও বিনেপয়সার পানুসাইটের দুÖপ্রাপ্যতা লয়ে আলোচনা কর্চেন বিবিরা পড়্শীদের ডিভোর্স্ ও পরকীয়ার কিস্যার সঙ্গে২ সুচিত্রা ভট্চাজের নতুন উপন্যাসের প্লট্ লয়ে তর্কাতর্কিতে মশগুল চারিদিকে হো২ হাসি ও সিগ্রেটের ধোঁয়ার মেঘ - ওরি মদ্যে বেচেলর তরুণরা একটু আবডালে বসে বৌদিদের বুক ও কোমরের খাঁজ দেকে কিঞ্চিৎ সুখ নিচ্চে, এবং বেঙ্গলি মেট্রিমনিতে রাখা প্রোফাইলের ছবিটি পাল্টানো উচিৎ কিনা, সেই লয়ে মনে২ জল্পনা কর্চে। খ্রীষ্টমাসের আগে আর পরব নাই, তাই সকলেরই মন একটু ভার। ... ...
মাইরি বলছি, পিত্ত কিঞ্চিৎ প্রজ্জ্বলিত হয়ে আছে। মানে এতটাই প্রজ্জ্বলিত যে ফোন করে সক্রিয় তৃণমূল কর্মী এক অত্যন্ত ভালোমানুষ বন্ধুকে ঝেড়ে গালাগাল না দেওয়া অব্দি ঠিক শান্তি হল না। ওটা একটা প্রতিক্রিয়া? তাও দিচ্ছে কে? না একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আজ্ঞে হ্যঁ¡, গতকালের (১৪/১১/২০১১) কথা বলছি। তারানন্দের ঐ পশ্চাৎপক্ক সাংবাদিক ভাইটু, যিনি কিনা মাঝেমাঝেই নিজেকে সবজান্তা দে-র সমগোত্রীয় বলে ভাবেন (বলে মনে হয়), অত্যন্ত বাজে বকেন, নিউজ-এর চেয়ে নিজের ভিউজ দিতেই বেশী পছন্দ করেন এবং সবজান্তা দে-র মতই বোঝেনও না যে একটু ভাবনাচিন্তা করা মানুষজন বিমান বসুর পরে শ্রেষ্ঠ খোরাক হিসেবে এঁদেরকে স্থান দিয়েছে - সেই ভদ্রলোকের নেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার এবং তাতে প্রশ্নকর্তা এবং উত্তরদাতা উভয়ের ভূমিকা মিলিয়ে যে টোটাল প্যাকেজটা - সেটা, সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত না হয়ে বলছি, ইয়েতে যাকে বলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ... ...
নতুন কলেবরে শ্রমজীবী হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনাকে রূপায়িত করতে যাঁরা সাহায্য করতে চান তাঁরা প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায় - ৫, জি টি রোড, বেলুড়, হাওড়া। ফোন - ২৬৫৪-১১৮১/২৮৭৭-০১১২। শ্রীরামপুরে অস্থায়ী কার্যালয় - অগ্রিমা অ্যাপার্টমেন্ট, ১৯ মুখার্জি পাড়া লেন (ইউ বি আইয়ের রিজিওনাল অফিসের পাশের রাস্তা)। ... ...
ইদানীং প্রায়শ এমন অভিযোগ শোনা যায় যে, বাঙালি তরুণ লেখকদের মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটছে অর্থাৎ তারা মৌলিকভাবে চিন্তা করতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং যুক্তিতর্কনির্ভর জ্ঞানচর্চায় দক্ষতা দেখাতে পারছে না। লেখক তাঁর এ বইয়ের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন তরুণ লেখকদের সবার বেলায়ই উক্ত অভিযোগ খাটে না। বর্তমানে আমাদের প্রবন্ধসাহিত্যে চিন্তার দারিদ্র্য, দৈণ্যদশা ও আকালের মধ্যেও আহমাদ মোস্তফা কামাল শিল্পের শক্তি,শিল্পীর দায়-বইতে এক ব্যতিক্রমী ও গভীর মননশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। এ জন্যে তাঁকে অভিবাদন। ... ...
পিতার দিকে তাকালেন বিদুর। কৃষ্ণ বর্ণের এই বিরাট পুরুষের শরীর এখনো অটুট। মুখের উপরে যে ছায়া দুলছে তা আসছে কেশভারের থেকে। জটাজুট ধারী ঋষির যে ছবি মনে আসে পিতা তেমনটি নন। বাল্যকাল থেকে বিদুর মনে করতেও পারেন না পিতা অসংবৃত থেকেছেন কবে? কেশ দীর্ঘ্য কিন্তু বিন্যস্ত এবং নিয়মিত পরিচর্য্যা হয় তার। পিতামহীর ছায়া পড়েনি ততটা যতটা লোকে বলে পিতামহের আদল দেখা যায় পিতার মধ্যে। কিন্তু সবল সুস্থ পেশীধারী এই দীর্ঘ্য পুরুষকে একদর্শনে সূরূপও বলা যাবেনা পিতামহের মত। বরং মুখমন্ডল ছোট দেহের তুলনায়। তাই এক অসমঞ্জস্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সময় নিয়ে না দেখলে ভীষণ ভাবই প্রবল। বিশেষ করে চক্ষু। তীব্র, উজ্জ্বল এবং গাঢ় বাদামী অক্ষিতারা। এর গভীরে কি আছে তা বোঝা খুব কঠিন কাজ! খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই চোখ সরিয়ে নিতে ইচ্ছে হয়। যেন খুব ভেতর থেকে কেউ সব দেখে নিচ্ছে। সব ক্লেদ, সব পাপ, সব লোভ দেখে নিচ্ছে। খুব স্বচ্ছ মনের মানুষ না হলে এই চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে কেউ পারেনা। কেউ বুঝতে পারেনা এই মানুষটার মন আসলে কী বলছে! ... ...
স্বাধীনতা স্কয়ারে ততক্ষনে নেতৃবৃন্দ এসে হাজির। আহবায়কের মাইক্রোবাসে আজকের দিনের পত্রিকাগুলো রাখা। উপস্থিত নেতৃবৃন্দ কেউ সেই পত্রিকা পড়ছেন, কেউ চা খাচ্ছেন। এর মধ্যে স্থানীয় একজন লোক আমাদের কাছাকাছি এসে কি বলে যেন হৈ চৈ করতে থাকলো। আমরা যেদিকটায় দাঁড়ানো সেদিকটায় গায়ে গায়ে লাগানো মিষ্টির দোকান, নাপিতের দোকান আর ধোপার দোকান। দোকানগুলো খোলা ছিল। সিরাজগঞ্জবাসী যারা দোকানগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা হৈ চৈ করা লোকটিকে মাতাল বলে তাড়িয়ে দিলেন। এদিকে, আনু স্যার আমাকে দেখে নূর মোহাম্মদ ভাইকে আমার লেখা প্রকাশের কথাটা বললেন। সত্যি বলতে কি খসড়া তৈরী থেকে শুরু করে প্রকাশিত হবার আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই আনু স্যার আমাকে লেখাটার অগ্রগতি বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেন। নূর মোহাম্মদ ভাই সাথে সাথে পড়ে ফেললেন লেখাটা। তারপর আমার সাথে গল্প জুড়ে দিলেন যে আমি ফুলবাড়ীর খনি বিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের কার্যকারণ বুঝতে ঐধরণের প্রত্যয় ব্যবহার করেছি কি না। কথার ফাঁকে ফাঁকে আমরা দুজনেই অন্যান্য পত্রিকাগুলোর উপর চোখ বুলাচ্ছিলাম। সিরাজগঞ্জের স্থানীয় একটি প্রত্রিকায় গতরাতের সমাবেশের খবর ছেপেছে কিন্তু ঢাকাবাসী এলিটরা যে পত্রিকাগুলো পড়েন অর্থাৎ প্রথম আলো ও ডেইলী স্টার সেগুলোতে লংমার্চের খবর আসেনি। নিউ এইজ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক আমাদের সাথে ভ্রমন করছেন তাই নিশ্চিত হয়েই বলা যায় যে তারা লংমার্চের দৈনিক খবরাখবর ছাপাচ্ছে। কিন্তু সেই কাগজ দেখার আগেই স্বাধীনতা স্কয়ারে মিছিল শুরু হয়। ... ...
অস্মিতার আঁকা ছবি ... ...
অদ্রিজার আঁকা ছবি ... ...
পট্টর আঁকা ছবি ... ...
নেতাজী খাচ্ছেন লুচি আলুর দম, জলখাবার। কিশোরী ভয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে ঘেমে যাচ্ছে, লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছে -- না জানি কী অখাদ্য হল আজ এই দেবতার ভোগ! ... ...
কচি কচি কুমড়োর ঝোল কে খেয়েছে রে? খোকা খেয়েছে সোনা খেয়েছে মণি খেয়েছে রে। লতায় হলুদবরণ ফুল খোকার চুলগুলি দুল্দুল্। খোকার মুখখানি ঢল্ঢল্ যেন পদ্ম টলমল্। ... ...
তিতিরের ছবি ... ...
মল্হারের ছবি ... ...