শুধু কাঁদানে গ্যাস নয়, গুলিও চলল পরমাণু বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর। থুথুকুড়ি-র মানাপাদু গ্রামে পুলিশ অ্যান্থনি সামি নামের এক প্রতিবাদী মৎস্যজীবীকে পেটে গুলি চালিয়ে মেরে ফেলেছে। অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, একজন বাচ্চা মেয়ে মারা গেছে পদদলিত হয়ে। একবছর আগে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর এই প্রথম পুলিশ আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল ইদিনথাকারাই গ্রামে ঢোকে এবং প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তল্লাসী চালায় উদয়কুমার এবং অন্যান্য নেতাদের খোঁজে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যদি কারোর ঘরে উদয়কুমারদের পাওয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের গুলি করে মেরে ফেলা হবে। অসমর্থিত সূত্রে এও জানা যাচ্ছে, উদয়কুমারদেরকে লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল, কিন্তু মাথা নিচু করে নেওয়ার কারণে তারা বেঁচে যায়। সারা দক্ষিণ তামিলনাড়ু জুড়ে ইতিউতি প্রতিবাদের খবর শোনা যাচ্ছে, পরমাণু বিরোধী আন্দোলনের ওপর এই পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে। প্রায় ৫০ জন গুরুতর আহত বলে জানা যাচ্ছে। ইদিনথাকারাই চার্চের সামনে ১৪ জন অনশন শুরু করেছে বলে খবর। কুদানকুলামে সরকার সমস্ত ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ফলে কুদানকুলাম থেকে সরাসরি খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ... ...
অনেক বই একসাথে পড়ার মূল সুবিধা হল - অনেক বই একসাথে পড়া যায়। আর প্রধান অসুবিধা খুব মন দিয়ে পড়তে হয় - তা না হলে গুলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা। উপরের বইয়ের নামগুলি দেবার একটা কারণ আছে যেটা পরে বলব, কিন্তু আদতে যেটা চাইছি সেটা হল একটা বিভ্রান্তিমূলক বা সূচক পরিবেশের সৃষ্টি করতে। এটা সহজ কাজ নয়, আমি শত চেষ্টাতেও আপাতত পারছিনা কারণ যেদিন পারব সেদিন আমি বিখ্যাত লেখক হবার প্রথম সোপানে পা দিয়ে ফেলব। বিখ্যাত লেখক বা কবি হবার প্রাথমিক শর্তই হল বিভ্রান্তি তৈরী করার ক্ষমতা অর্জন করা। এখন প্রশ্ন হল বিখ্যাত কি জিনিস এবং কারাই বা লেখক আর কারাই বা কবি। হুমায়ুন আহমেদকে নাকি একবার একুশে বই মেলায় একজন ধরেছিল এবং নাছোড়বান্দা হয়ে স্বীকার করিয়েছিল, তিনি কবিতা লাইনে দাগ না কাটতে পেরে গদ্য লাইনে শিফট করে গ্যাছেন! বেশীর ভাগ কবিই নাকি এই লাইন শিফটের ফসল। খুবই সত্যি কথা, শুধু তাই নয় – বড় বড় (বিখ্যাত) গদ্য সাহিত্যিকও এই শিফটের ফসল বলেই আমার মনে হয়। তবে অনেকে আছেন শিফট না করেও কোনদিকেই দাগ কাটতে পারেননা এবং vice versa। ... ...
ঘুরেছি প্রেতের মত জ্বলনে স্খলনে প্রত্নপোড়া মায়া এসে ঘিরেছে শরীর মাংস-শোধনে মেখে নির্বাপিত রোদ পতঙ্গকরোটি ঘিরে অনুপম খনিজ খাদক পুরুষ্টু ওষ্ঠে, দেখি, ক্লেদ লেগে আছে গর্ভনুনে ছেয়ে আছে সামুদ্রিক জোঁক ঘোষিত-আঘাতে তন্তুময় পুরুষ-পাবক ঋতুতাপসীরা আজ স্নাত ও উভলিঙ্গ হোক! ... ...
প্রিয়মুখ শরতের মেঘে আলস্য অনুরোধ পেলে মুখ টিপে, পাশ ফিরে, জেগে। কিবা দিন উচাটন তোলা ফুলছাপ চাদরে দরোজা দমকা বাতাস ছুতো খোলা । ... ...
'তারে খুঁজিয়া পাইবে' এমন কথা পেয়ে দেখো, মাতাল হয়ে কেমন বসে আছি যদি যন্ত্রণাতে সঙ্গী হতে চেয়ে আমি যন্ত্রণাকে সঙ্গে করে বাঁচি? প্রেম ভীষণ ভালো। ভেঙে যাওয়াও ভালো। শুধু খারাপ লাগে, নিজের ভেঙে পড়া যেন বমির মতো, থকথকে আঠালো কিছু সত্যি মিথ্যে কথার নড়াচড়া ... ...
বালকদের পরনে ছিল চীরবস্ত্র। সেই অবস্থায় তারা যখন এসেছিল তখন বাকি সকলের মতই দুর্যোধনও দেখেছিল। তিনটের উচ্চতা তারই মত। বাকি দুটো এখনো বেশ কিছুটা ছোট তার চেয়ে। সবচেয়ে ভাল গড়ন ভীমের। তারপরে অর্জুন। অর্জুনের চেহারা আর ভীমের মধ্যে পার্থক্য হল ভীমকে দেখলেই মনে হয় সে খাদ্যরসিক। স্নেহ পদার্থ কিছু বেশি। অন্যদিকে অর্জুনের চেহারার মধ্যে আছে দৌড়বীরের মতন ছিপছিপে ভাব। যুধিষ্ঠিরের চেহারাতে সবলতার চেয়ে অনেক বেশি আছে সৌকুমার্য্য। নকুল আর সহদেব দেখতে অনেকটা একই রকম। সহদেবের মুখে চোখে আছে সবচেয়ে বেশি লাবণ্য। তার চোখও দেখার মতন। সকলেরই চোখের গড়ন টানাটানা। ভারী অক্ষিপল্লব সহদেব ছাড়া কিন্তু কারোর নেই। সহদেবের মতই টানা ভ্রু আছে অর্জুনের। কিন্তু ধারালো মুখের মধ্যে আছে একধরণের হালকা তাচ্ছিল্য। সেই তাচ্ছিল্যই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে। সহদেব সুন্দর হলেও তার মধ্যে এই বাড়তি টানটা নেই। বাকি তিনজনের মধ্যে নকুল আর যুধিষ্ঠিরের চোখের মধ্যে আছে শান্ত ভাব। কিন্তু নকুলের আচরণে রয়েছে কিঞ্চিত আড়ষ্টতা, যা আবার নেই যুধিষ্ঠিরের মধ্যে। ... ...
কী আছে নগ্ন নারীদেহে ? সেই আদ্দিকালে লুকাস ক্র্যানাস দ এল্ডার থেকে শুরু করে, টিশিয়ান, এল গ্রেকো, বত্তিচেল্লি, রাফায়েল, দা ভিঞ্চি, মিচেলেঞ্জেলো, সবাই। ভ্যানগগ, মনে, পিকাসো, আমাদের হুসেন, বিকাশ ভট্টাচার্য, সনাতন দিন্ডা, কে আঁকেননি ন্যুড ? কিন্তু কেন ? সবই কি ঈস্থেটিক ? রবীন্দ্রনাথও বাদ যাননি। যদিও তাঁর বহুমুখী প্রতিভার মধ্যে ছবি আঁকাটাকে গায়ের জোরে ঢোকানো হয়েছে। এবার কিছু ব্যোমকেশ ঝাঁপিয়ে পড়ল, তারা বলল, ছবিটার পোজিশন দেখে প্রত্যয় হচ্ছে, এটা জানলার বাইরে থেকে আঁকা এবং ছবির মডেল ঘরের মধ্যে মাটিতে শুয়ে ছিলেন। এ কাদম্বরী দেবী ছাড়া কেউনা। মডেল ছাড়া ন্যুড হয়না ? ভারতে একজন বিখ্যাত শিল্পী ছিলেন, কে এইচ আরা। তিনি ন্যুড আঁকতেন, একেবারে রগরগে ন্যুড। বহু পুরষ্কার পেয়েছেন, সারা পৃথিবী জুড়ে প্রদর্শনী হয়েছে, অথচ তিনি প্রথাগত আঁকার শিক্ষা পাননি, ছিলেন একজন মোটর মেকানিক। একটা ইন্টারভিউ পড়েছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করা হল, আচ্ছা এত যে ন্যুড আঁকেন, আপনার মডেল হয় কে ? তিনি বললেন, ওমা, এতে আবার মডেল লাগে নাকি, আমি তো চোখ বুজলেই পষ্টো এদের দেখতে পাই। ... ...
গত চৌত্রিশ বছর ধরে আমরা ঐ 'সুদিন'-কেই 'বিপ্লব' বলতে শিখেছি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তার নাম বদলে হয়েছে 'সুদিন'। নাম যা-ই হোক, সুদিন বা বিপ্লব আমাদের কাছে এক স্ট্যাটিক বা স্থির ক্যাটেগরি, অনেকটা তিথি মেনে আসা পুজো-আচ্চা-র মত। ফলে, আমাদের ভাবনা, চিন্তা, দায়বোধ, রাজনীতি সবই আপাতত-র জন্য। যবে 'সুদিন' আসবে তবে আমাদের ভাবনা-চিন্তাও ঠিক বদলে যাবে, এই বিশ্বাসের শিকড় অত্যন্ত গভীর। আজকের আপাতত-র ভাবনা, রাজনীতি যদি সেই সুদিনকে সক্রিয়ভাবে পিছিয়ে দেবার কাজ করে চলে, তাহলেও সেই বিশ্বাসের ভিত টলানো যায় না। ... ...
সরকারি দৃষ্টির দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে উন্নততর গভর্নেন্স-এর দাবি উঠেছে, যা দেখে মনে হয় যেন মিশেল ফুকো-র মৃতদেহের সৎকার-গাথা। অসংগঠিত শ্রমিক, কৃষক, আরো অন্যান্য সকলকে সরকারি পরিচয়পত্র দেওয়া হবে, যায়গায় যায়গায় ক্যামেরা লাগিয়ে আর আরো সব প্রযুক্তির সাহায্যে, উন্নত ম্যানেজমেন্ট-জ্ঞানের সাহায্যে সরকার (বা সরকারের হয়ে বরাত পাওয়া অন্য কেউ) নজরদারি করবে, চোখে চোখে রাখবে। তাতে নানান স্তরে দুর্নীতি কমবে। দক্ষতা দিয়ে সমানাধিকার উৎপন্ন করার এ এক অসাধারণ কল, তা সে কল চলুক আর না-ই চলুক। প্রাতিষ্ঠানিকতা দিয়ে দুর্নীতি দূর করার প্রত্যয়ের ভিতটি যে নড়বড়ে শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার panopticon বানিয়ে এক দক্ষতর controlled society বানানোর তোড়জোড় আমাদের চিন্তার দৈন্যের এক চোখ-ধাঁধাঁনো প্রকাশ। ... ...
মার্কসবাদী হই বা না হই, আমরা যখন আমাদের খসড়া নীতিমালাটি তৈরি করি, তখন ঠিক এই ‘আশু’ কর্তব্যের কথাটিই আমাদের মাথায় ছিল। অন্য কিছু না। আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গবাসী হন, আপনি ডান হোন বা বাম, ব্যবস্থাপন্থী বা ব্যবস্থাবিরোধী, প্রাতিষ্ঠানিক বা প্রতিষ্ঠানবিরোধী, কিছু ন্যূনতম জিনিস বোধহয় এখনই করা যায়, যা এই ব্যবস্থার মধ্যেও মানুষকে কিছু স্বস্তি দেবে। এবং সেই কাজ করা যায় এই ব্যবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে, বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য নির্বিশেষে। আমাদের খসড়ায় ঠিক সেই টুকুই আছে। এর পরে বাকি কথোপকথনের চিন্তা, বাকি তাত্ত্বিক আদানপ্রদান তো করাই যাবে। সে প্রস্তাবও খসড়াতেই আছে। অর্পিতা এই আদানপ্রদানে অংশগ্রহণ করেছেন এবং করছেন। সেজন্য তাঁকে ধন্যবাদ। ... ...
স্বামীজি বইটা লিখেছেন। তা বেশ করেছেন, তবে ছবিগুলো না দিলেই পারতেন, তাও খানিক বিশ্বাসযোগ্য হত। অবশ্য বেশ কিছু পাবলিক তাতেও গোল খেয়েছে। তখনকার লোকজন বড় সরল ছিল। একজন আমায় তেড়েফুঁড়ে বলল, ছবিগুলো দেখেছিস? এর চেয়ে বড় অকাট্য প্রমাণ আর কী হতে পারে। আমি বললাম, ভাইটি, আমার নিজের একটা ফোটো ল্যাব আছে জানিস তো? কত সুপারইম্পোজ, মাল্টিপ্ল এক্সপোজার করলাম, তুই আমাকেও ছবির গপ্পো শোনাবি? তখন অবশ্য ‘মরফিং’ শব্দটা শুনিনি, টেকনোলজিও অনেক পেছনে। তবু ছবিগুলো দেখে ভাবতাম, কেন উনি এগুলো দিলেন। একে তো সবই বিদেশি ছবি, তাও আদ্যিকালের। মানে, তখনকার লোক যত বোকা, আরও আগের লোক আরও বোকা ছিল, এগুলোও গিলত। কিন্তু ওদিকে, লার্জ ফরম্যাট ক্যামেরায় সরাসরি ফিল্মের ওপরই সুপারইম্পোজ করা যেত। ল্যাব অবধি যাবার দরকার পড়তনা। প্রথম কথা ভূত বলে কি কিছু আছে? দ্বিতীয় কথা, যদি থাকে। তাদের কি ছবি তোলা যায়? ... ...
কুন্তী রুদ্ধনিশ্বাসে শুনছেন। এই জন্যই যাননি তিনি আমন্ত্রণে। এই বোঝাপড়া তাঁর দরকার। অন্যদের উপস্থিতিতে হবেনা। কাল রাত্রে ব্যাসদেব রাজনীতি, ভবিষ্যৎ এসব নিয়ে যা বলেছেন তার জন্য সকলের আগে চাই এই বোঝাপড়া। এই যুদ্ধটা করতে গেলে গৃহের মধ্যে শত্রু থাকলে চলবে না। না, যা ভেবেছিলেন তা নয়। কম কথা বলা সর্বাণী যখন বলে তখন সত্যি সত্যি বলে। শোনা ছাড়া কোনো উপায় থাকেনা। নরম, সহজ গলায় কঠিনকে এমন করে বলা কি তাঁর পক্ষেও সম্ভব ছিল? এবারে মুখ তুলে তাকালো তাঁর দিকে সর্বাণী ... ... ...
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয় । ক্রমশ বাড়ছে ধর্মান্ধ আর সাম্প্রদায়িক শক্তি । প্রশাসনের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ধর্মবুদ্ধিতে আক্রান্ত । এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বুদ্ধিজীবি, শিল্পী, সাহিত্যিকদের শুভবোধের তাড়নার ক্রমবর্ধমান অভাব, তাঁদের বড় একটা অংশই এখন ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের কুবুদ্ধিচর্চায় নিয়োজিত । মোটা দাগে উপরের তিনটি ঘটনাতেই বুদ্ধিজীবি, শিল্পী, সাহিত্যিকরা ছিলেন নিস্পৃহ । যাঁরা পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন তাঁদের কেউ এক লাইন খরচ করেন নি । প্রতিবাদে এগিয়ে আসে নি কোনো সাংস্কৃতিক সংগঠন । লোকে বলছে, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, কিন্তু এই সম্প্রীতি কাজে আসছে না সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার সময় কিংবা হামলার পরে । ... ...
সাতক্ষীরায় সব কিছু শান্ত হয়ে আসবে। এই ঘটনা সবাই ভুলে যাবে। ভুলিয়ে দেওয়ার সকল আয়োজন চলছে। এরপরে আবারও সাতক্ষীরার বদলে হয়তো ঝিনাইদাহে ঘটবে। কুড়িগ্রামে ঘটবে। অথবা নরসিংদীতে, ভোলায়, হবিগঞ্জে বা যে কোনো স্থানেই ঘটতে পারে। তারও ক্ষেত্র প্রস্তুত আছে। পাকিস্তান আমলে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। এই দাঙ্গার প্রধান টার্গেটই ছিল সংখ্যালঘুরা। একাত্তরে পাকিবাহিনীর প্রধান লক্ষ্যই ছিল এই সংখ্যালঘুদের নির্মুল করা। স্বাধীন বাংলাদেশেও বিরানব্বইতে, ছিয়ানব্বইতে, দুই হাজার এক সালে নির্বাচনোত্তর সহিংসার শিকার হয় এই সংখ্যালঘুরা। এগুলো করেছে এরশাদের জাতীয় পার্টি, খালেদার বিএনপি, গোলাম আযমের জামাতে ইসলামী এবং হাসিনার আওয়ামী লীগ তেমন সোচ্চার হয় নি-- চুপ করে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পছন্দ করেছে। প্রকারন্তরে তাদের এই চুপ করে থাকাটাই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে শক্তিশালী করে। চিনাপন্থী রাজনীতিকদের সমর্থন সবসময়ই বিএনপি-জামাতের দিকে। আর প্রগতিশীল বামদের শক্তি ক্রমশ কমছে। তাদের কণ্ঠ ক্ষীণ হয়ে আসছে। ভরসা কমছে। ... ...
স্বাধীনতার ছয় দশক বাদে, গণতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজা ওড়াতে ওড়াতে, আজ আমরা ঠিক কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি? ভারত জন্ম থেকেই ছিল ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, আর পাকিস্তান, যার সৃষ্টি হয়েছিল ইসলামের নামে, ব্রিটিশ ভারতের মুসলমানপ্রধান অংশগুলোকে কেটে নিয়ে, ১১ই আগস্ট ১৯৪৭-এ কায়েদ-এ আজম জিন্নার ভাষণ অনুযায়ী তারও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে চলার কথা হয়েছিল। ভাষণে তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্রের সাথে ধর্মের কোনও বিরোধ নেই, মানুষ তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং পছন্দমত মন্দিরে, মসজিদে বা গির্জায় যাবে। তিনি আরও বলেছিলেন যে পাকিস্তানের পতাকায় সাদা রঙ সংখ্যালঘুদের জন্য উৎসর্গীকৃত। তবুও, ধর্মীয় ভেদাভেদের বীজ আগে থেকেই বোনা ছিল সে-দেশের সিস্টেমে। যতই সেকুলার ভাষণ দেওয়া হোক না কেন সমাজের অচলায়তন তাতে একচুলও নড়ে না। সাম্প্রদায়িকতা ধীরে ধীরে তাই ছড়িয়ে পড়ল পাকিস্তানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এবং সত্তরের দশকের শেষ দিকে, জিয়া-উল হক এবং মৌলানা মাউদুদির নেতৃত্বে ধর্মান্ধ মোল্লারা ক্ষমতার অলিন্দে আসতে শুরু করল। এই মোল্লা আর মিলিটারির আঁতাত, সঙ্গে আমেরিকার ইন্ধন, সমস্ত একসাথে লঙ্ঘন করতে লাগল জিন্নার সেই ধর্মীয় স্বাধীনতার বাণী, এতটাই লঙ্ঘন করল যে আজ মুসলিম ধর্মের মধ্যেই শিয়া বা আহমদীয়া গোষ্ঠীর মত সংখ্যালঘুরাও সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার হতে লাগল পাকিস্তানে, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে থাকল পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে। ... ...
না, আমার, আমাদের, মানে অফিসিয়ালি 'আসাম'এর বাঙালিদের, ব্যাঙ্গালোরে আপাতত বিপদ নেই। আমরা 'মিড্ল্ ক্লাস', আমরা টিঁকে যাবো। আমরা নিরাপদে বসে বড় বড় জাতীয় সংহতির বুলিও দেবো। ফ্ল্যাট্ করবো বেঙ্গালোর নইলে কলকাতায়। ...কিন্তু যারা তা নয়, যারা এই দেশের ৯৯ ভাগ, যারা অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত তারা বাঁচবে কীভাবে? আজ না হোক কাল টিঁকে থাকার জন্য হয় তাদের বলতে হবে 'আম্গো বাসা কইলকাত্তা' ... আর নাহলে আসামে থাকলে, মুখে কিংবা কায়দায় 'আম্গো ভাহা অহইম্মা' বলে, ভূপেন হাজারিকাকে রবীন্দ্রনাথের চেয়েও বড় বলে সালাম ঠুকে 'অহইম্মা' হয়ে। ... ...
আর এই "বেআইনী বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ" এর মিথকথা তৈরী হওয়ার আগের থেকেই শুরু হয়েছিলো আরেকটি শয়তানী গল্প - সেটি হচ্ছে "বহিরাগতদের" চাপে বিলীয়মান 'স্থানীয়' মানুষদের কথা। এর জন্য মুসলমান অনুপ্রবেশকারীরা নয়, অন্য প্রদেশের হিন্দু যারা অসমে বসবাস শুরু করেছিলেন তারাই ছিলেন সেই আক্রমণের শিকার। না, জমির দখল নিয়ে সেই আন্দোলন ছিল না। সেটি দাঁড়িয়ে ছিল যে ভুল ভাবনার উপর সেটি হচ্ছে এই বাঙালি মধ্যবিত্তদের চাপে অহমিয়ারা তাঁদের জাতি পরিচয় ভুলে যাচ্ছেন। তাঁরা সরকারি চাকরিতে সুযোগ পাচ্ছেন না এবং স্থানীয় লোকেদের জন্য যে সুযোগ বা উপকার ছিলো সেগুলিও তাঁরা ভোগ করতে পারছেন না। আর এর ফলে ১৯৬০ সালে যা বঙাল খেদা আন্দোলন হয় তা শুধু শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বানানো কাহানীর ফল। ... ...
সে গাছগুলো কিন্তু ভগবান যে কদিন জল দিলেন, সে কদিন বাঁচল। মানে, বড়জোর মাস দুই। আবার পরের বছর সিক্সথ জুন। ইতোমধ্যে দুজন ফোটোগ্রাফার টস্কে গেছেন। নতুন যাঁরা এলেন, তাঁদের একজন একটু ছটফটে। খুব মৃদুস্বরে তাঁর কানের গোড়ায় কেউ বলল, ভাই, কনুই মারবেন না, বুঝতে পারছি সার্কিটে নতুন। আমি অল্পেশ গোস্বামী, নামটা বোধহয় জানা আছে। সারা জীবনের মত পুটকি জ্যাম করে দেব। ফ্ল্যাশ, ক্লিক্, ঝাঁঝরি কাড়া, পাঞ্জাবী ভেজা, সাপলুডো, ইত্যাদি। রিওয়াইন্ড অ্যান্ড রিপ্লে।মায়া কেটে গেল এক নিমেষে। মায়া নাকি কাটে না? অরুণবাবু সামান্য মাইনের চাকরি করেন ইস্কুলে। একটা খুব দামি কলম নিয়ে এসেছেন। বকলাম, এটা কী করলেন, এত দামি – উনি বললেন, চুপ স্যার, একদম চুপ। এক ভদ্রলোক একটা বিশাল বড় বাতাবি লেবু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁকে কোনও দিন দেখেছি বলেই মনে পড়ছে না, কোনও উপকার করা তো দূরে থাক। বললেন, আমার বাগানের স্যার। আরও অনেকে ঘুরছেন খবরের কাগজে কিছু জড়িয়ে। আমার ব্যাগে একটা বিশাল সন্দেশের বাক্স কে যে ঢুকিয়ে দিল পেছন থেকে, বুঝতেই পারলামনা। বিমলি কাছে আসছেনা, দূরে গাছের আড়াল থেকে দেখছে। সুকুমার চোখ মুছল কবার। এ মায়া প্রপঞ্চময়। চলো মন নিজ নিকেতনে। ... ...
মাদ্রী এই খেলাতেই মেতেছিল একদিন। রোগগ্রস্ত পাণ্ডুকে নিয়ে কুন্তীর সঙ্গে সেই খেলাতে সে জিততে চেয়েছিল। পাণ্ডুকে বশ করে কুন্তী ক্রমাগত পুরুষসঙ্গ করে চলেছে। জন্ম দিয়ে চলেছে সন্তানের। কুন্তীর সন্তান জ্যেষ্ঠ। রাজ্যাধিকারের প্রশ্নটি মীমাংসিত। কিন্তু কেন? বারেবারে কেন হার হবে মাদ্রীর? ঋষি বা রাজন্যের আতিথ্য করা এক পালিতা রাজকুমারী তাঁর চেয়েও সুখী হবে? তিনি শল্যাধিপতির ভগ্নী, তাঁকে বিয়ে করতে রীতিমত পণ দিতে হয়েছিল পাণ্ডুকে, গাঙ্গেয় সে পণ মেনে নিয়েই বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন, সেই মাদ্রী, মদ্রসুন্দরী পরাজিত হবে কেন বারেবারে? শোধ নেবার খেলায় মেতেছিলেন তিনি। এক পুরুষের সাহচর্য্য পেয়েছিলেন। সেও কুন্তীই আয়োজন করেছিল পাণ্ডুর আদেশে। তাতে কি শরীর শান্ত হয়? কুন্তী বহু সংসর্গ করবে আর তিনি এক? ... ...