#পুরোনোলেখা প্রতিটা শহরের একটা চরিত্র থাকে। পৃথিবীতে হাজার হাজার শহর থাকলেও প্রত্যেকটা শহর তার পরিচয় বহন করে নিজস্ব ভাবে, নিজস্ব স্টাইলে। উপর থেকে দেখে মাঝেমধ্যে অন্য কোনও শহরের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া অসম্ভব নয় কিন্তু খতিয়ে দেখতে গেলে প্রতিটা শহরের মেজাজ তার নিজস্ব। তাতে কোনও ভেজাল পাওয়া যাবে না। একটা শহরের আত্মার সঙ্গে যোগ পাতানো অত সহজ নয়।লন্ডনে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে যখন চেনাজানা সমস্ত কিছুই দেখা হয়ে গেছে, তখন আমি অনুসন্ধান শুরু করলাম তুলনামূলক ভাবে অখ্যাত জায়গাগুলোর। অবশ্য লন্ডনে আর অজানা কী আছে? হাজার হাজার বছর ধরে লন্ডনকে নিয়ে লক্ষ লক্ষ গল্প লেখা হয়েছে। ... ...
যন্ত্রের বেদনাই কি যন্ত্রণা? হঠাৎ এমন ব্যাখ্যায় পড়লাম কেন? বলছি। আমার চোখের সামনে একটা শরীর যন্ত্রণায় ছটপট করছে। সে বলছে, আর কেমো দিও না আমায়। পারছি না এ যন্ত্রণা সহ্য করতে। এতবড় কারখানায় নানা যন্ত্র অবিরাম কাজ করে চলেছে। তার কোন অংশ যে বিকল যন্ত্রীও ধরতে পারছে না। শুধু অসহ্য যন্ত্রণা, যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা। তার একটা ভাষাও আছে। কখনও গর্ভধারিনী মায়ের নাম অস্ফুষ্টে বেরিয়ে আসে, কখন শুধুই নীরবতা। দুই চোখের কোণ দিয়ে সে ভাষা জল হয়ে বয়ে চলে। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি কিসের জানা নেই। কিন্তু মুক্তি ভীষণ রকম প্রয়োজন। অপেক্ষায় আছি... ... ...
স্রোত এসে হাঁতরায়, মাটি খোঁজে / অবলীলায় পিপাসার্তের মুখে মুখ ছোঁয়
যে মানুষ সারাজীবন নিজের কাজ নিজে করে গেছেন, হাট-বাজার করা, নালা,নর্দমা, বাথরুম পরিস্কার থেকে নিজের জামাকাপড় নিজে কেচে ইস্ত্রি করা
একদিন অফিস সেরে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলে তুমি। হঠাৎ দেখলে সামান্য দূরে রাস্তার পাশে যে বালির ঢিবি, তার ওপর দাঁড়িয়ে একটা সাড়ে তিন বছরের মেয়ে হাপুস নয়নে কাঁদছে। হয়তো রাস্তার বা কোয়ার্টারের কোন কাজ হবে বলে বালি ঢিবি করে রাখা ছিল। সেখানেই বেশ কিছু চার/পাঁচের বাচ্চা ছেলেমেয়ে উঠে হুটোপুটি করছিল। একবার চূড়ায় উঠছে নামছে। যখন খেলা শেষ করে সবাই নেমে চলে গেছে। তখন সেই মেয়েটি নামতে পারছিল না। কেবলই ভয় পাচ্ছে আর ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছে সেই বালুর ঢিবিতে দাঁড়িয়ে। মেয়েটির চোখের জলে, নাকের জলে কাজল ধুয়ে লেপ্টে মুখে মাখামাখি। চেনার উপায় নেই। এগিয়ে গেলে তুমি। চিনতে পেরে হাত ধরে নামিয়ে ... ...
এলইডি আলোর তলা দিয়ে যাওয়ার সময় হেলমেট আর আকাশের মাঝখানে এক পশলা ইলশেগুড়ি নেমে আসতে দেখে *অভিযানের* মনে পড়ে গেলো ছোটবেলার কথা ! সেই প্রথমবার তার ইলশেগুড়ি দেখা, সে আশ্চর্য হয়ে দেখেছিলো দুহাত বাড়ানো আকাশ জুড়ে নেমে আসা মুঠো মুঠো আনন্দ! পাশে থাকা বন্ধুরা ততক্ষনে রাস্তার ধারের দোকানের শেডে ঢুকে গেছে, রাস্তা আর দোকানের মাঝের রাস্তা টুকু মাথায় স্কুল ব্যগ দিয়ে ভিজে যাওয়া আটকেছে কোনোক্রমে! যদিও *অভিযান* সেসব করেনি ! অবাক করা ইলশেগুড়ি কে দুহাতে আপন করে নিয়ে যখন বাড়ি ঢোকে ততক্ষনে তার মা বুঝে গেছে ছেলে তার মুষলধারা বৃষ্টিতে ভেসে এসেছে! ... ...
জ্বরের ঘোর থেকে উঠলে যেমনি হয়, আমার তেমনি লাগছে। মুখটা একটানা বিস্বাদ; কালকের তেতো প্যারাসেটামল আর জলের স্বাদ যখন মুখের মধ্যে বিরাজমান, আগেরদিনের মদের গন্ধের মতো, কিন্তু বুক পেট ঘিরে প্রচন্ড ভাতের খিদে। আমার জ্বর হয়নি। বা হয়েও থাকতে পারে। সেটা বড় কথা নয়। এখন কোনো কথাই এই ভোরের বেলায় (ভোর না রাতের এক্সটেনশন, রাতের কালি বারুদ ফুরোবার বিষণ্ণতা?) তেমন কিছু নয়। সবই কেমন যেন নিস্তেজ, ম্রিয়মাণ; তেমন ভীষণ কোন ভাবের সঞ্চার নেই এই বাগানের গাছপালাগুলোদের মধ্যে, এই সকালের আলোয় ফিকে হয়ে আশা উল্টো দিকের একচিলতে পাঁচিলের মধ্যে। কিন্তু আমার মধ্যে একটা খুশি খুশি ভাব একটু একটু করে উঁকি দিচ্ছে, ... ...
মাথাটা নীচু করে বসেছিলেন বৃদ্ধ মানুষটি। দুটো চোখে শূন্য দৃষ্টি। এতক্ষণে বেশ কয়েকবার তার নাম ডাকা হয়ে গেছে। তিনি শুনেও শোনেন নি। উঠে এগিয়ে যাওয়ার তো প্রশ্নই নেই। স্থির, স্তম্ভিত অনুভূতিহীন এক মানুষ।
পুরুষ “ওঃ, সে কি হিউমিলিয়েশান, প্রদোষ! এতদিন ধ’রে মেয়েটিকে লাইন মারলাম – সুগন্ধী কার্ড, ভ্যালেন্টাইন ডেতে লাল গোলাপ, চকোলেট, তারপর দামী জুয়েলারি অবধি!”বক্তা দীর্ঘদেহী ডেনমার্ক-নিবাসী পিটার সাইডারম্যান – পদবীর কল্যাণে সারা কলেজে যার পরিচয় ‘স্পাইডারম্যান’! “তো কি হ’লো শেষ অবধি?” “ওফ্! অবশেষে একদিন তার ঘরে ডাক পেলাম! বুকটা ফুলে উঠলো, ভাবলাম এতদিনে কিউপিড মুখ তুলে চাইলেন বুঝি!” “তারপর?” “ঘরে ঢুকে দেখি, সে আর অপর একটি মেয়ে পাশাপাশি ব’সে!” “সে কি? একজনকে ধাওয়া ক’রে দু’জনকে পেলে নাকি হে!? বাপ! এরে কয় ভাগ্য! ... ...
বাইরে তখন কালো কালো মেঘ / গুমরাচ্ছে, বদলা নেওয়ার জন্য / প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষিণী সে
সবুজ-ধোলাই (গ্রীনওয়াশিং), মগজ ধোলাই-এর আধুনিকতম সংস্করণ। বিশ্বপণ্যের নিয়ন্ত্রকরা তাদের সব পণ্যে ভুয়ো পরিবেশবান্ধব চিহ্ন এঁকে ক্রমেই বাজার ও ক্রেতা-মস্তিষ্ক দখলের নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব ভেবে আমি আপনি যেটা বেশি দামে কিনলাম
কাল ছিল মেঘ-লেখা, আজ জলে লেখা হোক - যে জলটুকু কাঠফাটা কণ্ঠে তৃপ্তির অনুভুতির জন্মদান করে, আবার সেই জলই নটরাজের তাণ্ডব নৃত্যে ধ্বংসলীলায় মাতে। জল নিয়ে লিখতে গিয়ে এক পৃথিবী করে লিখেছেন সুকুমার থেকে জয় গোঁসাই থেকে কবীর সুমন।
রাজার ব্যাটা কেরোসিন তেলওয়ালা। এটা দেখতে আমরা একেবারেই অভ্যস্ত নই। কারণ বাবর পুত্র হুমায়ূন মসনদে বসেছিলেন। তারপর তাঁর পুত্র আকবর। তারপর পুত্র জাহাঙ্গীর। তাঁর পুত্র শাহজাহান। তারপরে তাঁর পুত্র ঔরঙ্গজেব। এই জাতীয় পিতাপুত্রের পরম্পরার কাহিনী ইতিহাস ছেয়ে রয়েছে। সেটা ছিল রাজরাজড়াদের একনায়কতন্ত্রের যুগ। গণতন্ত্রের বালাই ছিল না। দেশ স্বাধীন হবার পর গণতন্ত্রের জোয়ার এল। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল। জনতাই হল জনার্দন। এই আপ্তবাক্য ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচারিত হল। জনতার ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধিরা দেশ বা রাজ্য শাসন করবেন। সংবিধানের ছত্রে ছত্রে এমনটাই বর্ণিত। যোগ্যতার নিরিখেই জনপ্রতিনিধিগণ দেশ শাসনের অধিকার পাবে। গণতন্ত্রের কষ্টিপাথরে যাচাই করার পরেই মিলবে দেশ চালানোর চাবিকাঠি। জনসাধারণের ... ...
মলয় হাসে, প্রলয় নাচে মদের ঠেকে, বাড়ির নীচে / দুজনায় ভরপেটে একেবারে চুর
সেভাবে ভাবিনি একদিনও / চোয়াল শক্ত রাখতে হবে
গত ৬ই জুন আবাপ-তে মৈত্রীশ ঘটকের লেখা 'সমাজমাধ্যমের সাগরতীরে' নিবন্ধ প্রসঙ্গে আমার একটি চিঠি আজকের আবাপ-তে প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধে সমাজমাধ্যমের প্রভাব নিয়ে লেখকের মতামত ক্ষেত্রবিশেষে সরলীকৃত, এমন মনে হয়েছিল। তা নিয়েই লিখেছিলাম।যাঁরা মৈত্রীশ বাবুর নিবন্ধটি পড়েন নি আগে, তাঁদের জন্য লিঙ্ক এখানে দিলাম
#রূপকথা#অনুবাদ_রূপকথাকালকে জয়ঢাকের বর্ষা সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। আজকাল জয়ঢাকে শব্দ কল্প দ্রুম বলে একটা অডিও ভিস্যুয়াল সেগমেন্ট বেরোচ্ছে, সেটা একেবারে ফাটাফাটি। যারা নিজেকে এখনও ঠিক 'প্রাপ্তবয়স্ক' বলে মনে করতে পারেন না, তারা ছুট্টে গিয়ে পড়ে ফেলুন। পরে এসে ধন্যবাদ জানাবেন
আমি কবিতার একনিষ্ঠ পাঠক নই। কবিতার ব্যাকরণ আর ছন্দ বুঝি না, পোস্ট মডার্ন অথবা এক্সপেরিমেন্টাল কবিতা নিয়েও মাথা ঘামাই না। কারণ কিছুই বুঝতে পারি না। অত তত্ত্বকথা বোঝার ধৈর্য নেই, এই খামতি স্বীকার করে নিয়েছি। তাই কবিতা নিয়ে আলোচনা হলে আমি নিদেনপক্ষে মুখ না খোলার চেষ্টাই করি। অনেক খ্যাতমান কবিদের লেখাই আমি পড়িনি, অবশ্য গদ্যই বা পড়েছি কোনটুকু? কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি প্রায় নিয়ম করে কবিতা পড়তে চেষ্টা করি। নতুন কবি, পুরোনো কবি। যে কোনো ভাষার কবি হোক, আমার কিছু আসে যায় না। এরকম করে জন এলিয়া বা প্যাট্রিক দুবোস্তকে আবিস্কার করেছি, ল্যাং লিভ আর অরুণাচলদাকে খুঁজে পেয়েছি। ... ...
ক্ষয়াটে চেহারার হরু মুখুজ্জে পেশাদার পুরুত। আজকাল নিজের গাঁ, পাশের গাঁ পেরিয়ে শহরের দিকেও যজমান ধরছেন এজেন্ট লাগিয়ে। কমিশন বাদ দিয়ে আয় মন্দ হয় না। এবার আবার নতুন যজমান, রাজারহাটের। তাই সেই কাকভোরে রওনা দিয়েছেন ছোট ছেলে পটাইকে নিয়ে। বছর দশেকের পটাই শহর দেখেনি। বেশ উৎসাহ নিয়েই বাপের সাথে পাড়ি জমালো সে। কাজ বলতে, ঐ মালপত্তর বওয়া আর কি। অনেকটা গাধার মতোই। তা হোক। নতুন কতো কি দেখবে সে! এ আর কম কি! এরমধ্যেই বেশকিছু প্রশ্নে জেরবার হয়েছেন হরুঠাকুর। নিজের মতো করে ক'টার উত্তরও দিয়েছেন। কিন্তু রাজারহাটে কবে, কোথায় "রাজার হাট" বসে, সে হাট রবিঠাকুরের কবিতার মতো কি না ... ...
মন খারাপের বিকেল মানে মেঘ করে, সুমন বলেছেনঃ মেঘেদের রাজ্যে এখন ভীষণ ব্যস্ততা। বর্ষা সবে এসেছে। পুরুষ মেঘেরা গভীর আলোচনায়। কোন মেঘ কোথায় যাবে, কোথায় কতটা ঝরে পড়বে, এসবেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কোন নারী মেঘ অবশ্য এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না। না, মেঘেদের রাজ্যে নারী পুরুষ বিভেদ নেই। তবে নারী মেঘেরা অন্য কারণে ব্যস্ত। তারা সকলেই গর্ভবতী। প্রচুর প্রচুর নবজাতক মেঘের জন্ম দিতে হবে। সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে নবজাতক মেঘেদের। তবু, এত যে মেঘ, এত যে ঝরঝর বরিষে ধরা মাঝে শান্তির বারি হয়ে। একটা প্রশ্ন কিছুতেই হয় না সমাধান। আজ পর্যন্ত উত্তর খুঁজে পায় নি মেঘেরা। কি প্রশ্ন? সেই যে, কবি সেই ... ...