এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্বামী বিবেকানন্দ ই: নির্মোহ (তিন)

    Samik
    অন্যান্য | ৩১ জানুয়ারি ২০১২ | ৪৭৮১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dukhe | 127.194.232.144 | ২৭ জুলাই ২০১৩ ০৯:৫১513641
  • মহীশূর-রাজ্যের ঘটনা। "স্বামীজীর প্রতি অতিমাত্র সন্তুষ্ট হইয়া প্রধান অমাত্য একদিন তাঁহাকে কোন একটি উপহার গ্রহণ করিতে অনুরোধ জানাইলেন এবং একজন সেক্রেটারিকে ডাকিয়া বলিয়া দিলেন, তিনি যেন স্বামীজীকে লইয়া বাজারের সর্বোৎকৃষ্ট দোকানে যান ও স্বামীজী যাহা চাহেন তাহাই কিনিয়া দেন। অমাত্যের মানরক্ষার জন্য স্বামীজী ঐ সেক্রেটারির সহিত চলিলেন এবং সেক্রেটারি সঙ্গে একখানি চেক বই লইলেন যাহাতে দ্রব্যমূল্য হিসাবে যে কোন পরিমাণ অর্থ অনায়াসে দেওয়া চলিতে পারে। শিশুস্বভাব স্বামীজী সানন্দে এদিক-ওদিক দেখিয়া বেড়াইলেন, বহু উত্তম উত্তম দ্রব্যের প্রশংসাও করিলেন; কিন্তু কিছুই লইলেন না। অবশেষে ক্লান্তপ্রায় হইয়া বিদায়কালে সেক্রেটারিকে বলিলেন, "বন্ধু, যদি আমার পছন্দমত কোন জিনিস লইলেই দেওয়ানজী তুষ্ট হন, তবে এক কাজ করুন, এখানকার সর্বোৎকৃষ্ট চুরুট আমায় কিনে এনে দিন।" সেক্রেটারি তো অবাক! কিন্তু তিনি আজ্ঞা পালন করিলেন ও স্বামীজী নির্বিকারচিত্তে বাহিরে আসিয়া প্রায় বার আনা মূল্যের ঐ একটি সিগার জ্বালাইয়া মুখে দিলেন এবং উহা টানিতে টানিতে গাড়িতে চড়িয়া রাজবাটীতে উপস্থিত হইলেন - যেন এমন অমূল্য সম্পদ আর কাহারও ভাগ্যে জোটে না। দেওয়ানজী সব শুনিয়া প্রথমে হাসিয়া উঠিলেন এবং পরে নিস্পৃহ সাধুর বৈরাগ্য দেখিয়া চমৎকৃত হইলেন।"

    - ল্যান, সেই সময় বার আনার মূল্যমান কত, সন্ন্যাসীর এত দামী চুরুট প্রয়োজন হয় কেন - এসব গম্ভীর বিতর্কের ক্ষেত্র প্রস্তুত ক'রে দিলাম।
  • দীপ | 212.142.113.199 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ০০:২৬513642
  • যাই বলেন দাদা, হাঁপানি রুগীর এতো চুরুট টানা উচিত হয়নি ;-)
  • Sibu | 183.60.205.153 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ০১:১৬513643
  • ডায়াবেটিকও।
  • ranjan roy | 24.99.16.175 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ০১:১৯513644
  • দীপকে ধন্যবাদ।
    মানবেন্দ্রনাথের সহযোগী ও টোলে গিয়ে ন্যায়দর্শন পড়া সমরেন রায়ের বা সিমলার ভারত সরকারের ইন্ডিয়ান ইন্স্টিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এর ডঃ অরবিন্দ পোদ্দারের জ্ঞানচর্চা ও নিষ্ঠা স্বীকৃত।
    দেখা যাচ্ছে বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের ছাত্রদের পাশ্চাত্ত্য দর্শনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে কৃতসংকল্প ছিলেন এবং এই ইস্যুতে একবার কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
    তারপরে আবার অধ্যক্ষ হয়ে নিজের পথে এগিয়ে যান।
    বেনারস সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ ব্যালেন্টাইনের রিপোর্টের ওপর নোট দিতে গিয়ে লেখেন যে আমাদের বেদান্ত-সাংখ্য এই দুটো "মিথ্যে দর্শন" কে পড়াতে হচ্ছে। কিন্তু while teaching these in Sanskrit we should oppose them by sound philosophy in the English course to counteract their influence"।
    সেখানে উনি বিশপ বার্কলেকেও বেদান্তের মতন ভুল বলে কোর্সের থেকে বের করে দিচ্ছেন। কিন্তু inclusion of John Stuart Mill কে বলছেন indispensible।

    সূত্রঃ The Bengalees: Glimpses History and Culture, by Samaren Roy; Allied Publishers, 1970. পৃঃ ১৭৩ থেকে।

    কথা হচ্ছে যিনি বেদান্ত ও সাংখ্যকেই নয়, বিশপ বার্কলেকেও খারিজ করছেন( যাঁর সাবজেক্টিভ আইডিয়ালিজম প্রায় শংকরের অদ্বৈত বেদান্তের কাছাকাছি) তাঁকে কি বলব?
    কোন মাপকাঠিতে ধরব।
    আর যিনি মিল কে ইন্ডিস্পেন্সিবল বলেন?
    আমি নাস্তিকের ভারতীয় ও পাশ্চাত্ত্য দুটো মাপদন্ড উল্লেখ করে দেখাতে চেয়েছি যে দুটো মাপদন্ডেই উনি আস্তিক নন; অর্থাৎ বেদও মানেন না( নইলে বেদান্তকে ভুল বলে পূর্বমীমাংসাকে ঠিক বলতেন বা ন্যায়দর্শনকে, মিল কে দিয়ে কাউন্টার করতে বলতেন না) আবার পাশ্চাত্ত্য মতেই ঈশ্বরবাদী দর্শনের অনুরক্ত নন।
    abc খামোখা রেগে গেলেন।।

    বিদ্যেসাগরের পৈতে ও চিঠিতে সম্বোধন?
    সিপিএম এর পলিটব্যুরো মেম্বার ও ভূতপূর্ব জেনারেল সেক্রেটারি হরকিষেণ সিং সুরজিত ধার্মিক শিখদের মতই পাগড়ি-দাড়ি-কঙ্গন-কাচ্ছা ধারণ করতেন। সেটা লোকাচার ও নিজের কমিউনিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার প্রচেষ্টা।কিন্তু ওঁকে কেউ ধার্মিক শিখ না ভেবে ঘোষিত কমিউনিস্টই ভাবে।
    তেমনি শেকসপিয়র পড়া বিদ্যেসাগর ধুতি-চাদর-চটিতেই রয়ে গেলেন, বালকবয়সের পৈতে ছাড়েন নি, প্ত্রাচারেও পুরনো ব্যবহার ধরে রেখেছেন। কিন্তু ওঁর কিসে আস্থা সেটা বিচার হবে উনি নিজের দর্শন হিসেবে যা বলে গেছেন তাই দিয়ে বাহ্যিক লোকাচার দিয়ে নয়। যেমন নেহরু অজ্ঞেয়বাদী ছিলেন।
  • T | 24.139.128.15 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ০১:৪০513645
  • যাঃ, এইবার বিবেকানন্দের অ্যানোমালি গুলো কেউ লোকাচার ও নিজের কমিউনিটির সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রচেষ্টা হিসেবে বলে দেয়?
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ১৪:৪১513646
  • T,
    ঠিকই বলেছেন। অনেক সময়ই আমরা ঘোষিত আদর্শ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে লোকাচার ও বিচ্ছিন্ন হবার ভয়ে সমঝোতা করে থাকি, অনেক সময় পাটোয়ারি বুদ্ধি থেকে।
    হরকিষেণ সিং সুরজিত সম্বন্ধে আমি একজন শিখ কমরেড বিলাসপুরের বিজ সাহেবকে জিগ্যেস করেছিলাম। উনি প্রথম জীবনে পাঞ্জাবে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে সুরজিতের সঙ্গে একই কমিটিতে ছিলেন।
    উনি একজন নাস্তিক শিখ কমরেডের পাগড়ি কচ্ছা ইত্যাদি ধারণকে সমর্থন করে বললেন এর ফলে আমরা গুরুদ্বারা প্রবন্ধক কমিটিগুলোতে ঢুকে আর্থিক ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে ব্যাপক শিখ সমাজের মধ্যে গণসংগঠন করে দলের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে পেরেছিলাম। ফলে অমৃতসর-রোপার-সংগ্রুর ইত্যাদি জেলায় সং,গঠন বেড়েছিল।
    আর ঈশ্বরচন্দ্র দেবশর্মণঃ ছোটবেলায় তো অজ্ঞেয়বাদী হন নি। পৈতে পরা টুলো বামুন হিসেবেই জীবন শুরু করেছেন। পরে বারো বছর ধরে কলেজে বেদান্ত-ন্যায়-স্মৃতিশাস্ত্র পড়ে বিদ্যাসাগর উপাধি পেলেন। তারও পরে পড়েছেন শেক্সপীয়র ও ইউরোপীয় সাহিত্য। অর্থাৎ ওঁর নাস্তিকতা ও ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্টের পর্ব এসেছে পরিণত বয়সে। আজ থেকে ১৫০ বছর আগের সমাজে
    ওঁর যদি বাহ্যিক আচারব্যবহারে অপরিবর্তিত থেকে চিন্তাজগতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে থাকেন তো দোষ কোথায়?
    গান্ধীও প্রথম জীবনে চিঠিতে নিজেকে বৃটিশ সাম্রাজ্যের মোস্ট ওবিডিয়েন্ট সার্ভেন্ট হিসেবে লিখেছেন। কিন্তু সেই গান্ধীজি প্রায় বছর কুড়ি পরে বৃটিশদের স্যাটানিক সিভিলাইজেশন বলতে ও ভারত ছাড় বলতে দ্বিধা করেন নি।

    আমরা সামগ্রিক পরিণতি দেখব, নাকি বিচ্ছিন্ন ভাবে পরিপ্রেক্ষিত বাদ দিয়ে অলোচনা করব?

    স্বাভাবিক ভাবেই বিবেকানন্দকেও ব্যবহারিক জীবনে কিছু কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে, দেশাচার ও লোকাচারের খাতিরে।
    কিন্তু বৌদ্ধদর্শনের অজ্ঞেয়বাদী বৈশিষ্ট্য নিয়ে খাপ্পা হয়ে কেন বৌদ্ধদর্শন বা ধর্ম একসময় সনাতন হিন্দুধর্মের প্রভাবকে সাময়িক ভাবে খর্ব করতে পেরেছিল তা নিয়ে ওঁর উক্তিগুলো না তথ্যসম্মত, না ইতিহাসা সম্মত না দার্শনিক ভাবে সঠিক। এগুলোতে এক সেক্টারিয়ান সন্ন্যাসী মনের রাগ ফুটে উঠছে ।
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ১৪:৫৪513647
  • আর আজকে যে কেউ নিজেকে হিন্দুধর্মাবলম্বী মনে করেন বা কোন ধার্মিক সম্প্রদায়ের অনুগামী হন, তাঁরা necessarily বেদান্ত দর্শনের কোন না কোন ব্যাখ্যা বা স্কুলের অনুগামী-- যেমন অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, দ্বৈত , দ্বৈতাদ্বৈত বা চৈতন্যের অচিন্তভেদাভেদ। কারণ, আজ স্কুল হিসেবে সাংখ্য, যোগ, ন্যায় বা পূর্বমীমাংসার কোন ফলোয়ার নেই, চর্চাও নেই, কলেজের কোর্স ছাড়া।
    অতএব, কেউ বেদান্তকে false philosophy বলে Mill পড়া অপরিহার্য বললে তাঁকে কোনভাবেই ধার্মিক হিন্দু বলা যায় না।

    ২) আমি মিশনের স্কুলে হোস্টেলে থেকে ৬০ এর দশকে পাঁচবছর পড়েছি। কখনো ইসলাম বা ক্রিশ্চিয়ান দর্শন সাধনা নিয়ে কোন চর্চা হত না। শুধু একটি গানের লাইন ছিলঃ
    '
    অ্যাকোয়া-ওয়াটার-পানি-বারি নাম দেয় জলে,
    আল্লা-গড-ঈশা-মুশা-কালী নাম ভেদ বলে।।
    ৮০-৯০ এর দশকে যদি কলেজ লেভেলে (বা স্কুল লেভেলেও) এই চর্চা শুরু হয়ে থাকে তো ৬০ এর দশকে আমার দেখাটা মিথ্যে হয়ে যায় না।
    যেমন, আজকে প্রধান কমিউনিস্ট পার্টি টাটা বন্দনা করে থাকেন।(রাজ্যসরকারগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি SEZ এর আবেদন বাম সরকার পাঠিয়েছিল।)
    তাতে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির টাটর ফ্যাকটরিতে একমাস স্ট্রাইক, চারজন শ্রমিকের মৃত্যু, ডাঙ্গে কে টাটায় ঢুকতে না দেয়ার গল্প মিথ্যে হয়ে যায় না।
  • dukhe | 127.194.248.185 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ১৭:৪৫513648
  • "কিন্তু বৌদ্ধদর্শনের অজ্ঞেয়বাদী বৈশিষ্ট্য নিয়ে খাপ্পা হয়ে কেন বৌদ্ধদর্শন বা ধর্ম একসময় সনাতন হিন্দুধর্মের প্রভাবকে সাময়িক ভাবে খর্ব করতে পেরেছিল তা নিয়ে ওঁর উক্তিগুলো না তথ্যসম্মত, না ইতিহাসা সম্মত না দার্শনিক ভাবে সঠিক। এগুলোতে এক সেক্টারিয়ান সন্ন্যাসী মনের রাগ ফুটে উঠছে ।"

    রঞ্জনদার এত সরল সিদ্ধান্ত থেকে একটা জিনিসই বোঝার। আমরা যখন কাউকে 'মানুষ' হিসেবে দেখতে চাই, তখন আমাদের 'মানুষ'-এর ধারণামত আমাদের বুদ্ধি অভিজ্ঞতা চিন্তাশক্তির সীমাবদ্ধতার মাপে তাঁকে মাপসই করে নিতে চাই। কিন্তু বিবুদা বিদ্যাসাগর - এঁদেরকে আমাদের ড্রয়িংরুমের মাপে সাইজ ক'রে নিতে গেলে এঁদের জীবনের অনেকটাই উড়িয়ে দিতে হয়।

    বিবুদা নিয়ে একটু পড়াশোনা করলেই দেখবেন বুদ্ধদেবকে তিনি কোন চোখে দেখতেন। 'সেক্টারিয়ান সন্ন্যাসী মনের রাগ' দিয়ে তাকে ব্যাখ্যা করতে গেলে পদে পদে ঠোক্কর খেতে হবে। "বুদ্ধদেব আমার ইষ্ট, আমার ঈশ্বর" - এই সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কি রাগ থেকে আসতে পারে? বিবুদা এমনও মনে করতেন ছোটবেলায় তিনি বুদ্ধের দর্শন পেয়েছিলেন। কিন্তু বৌদ্ধধর্মকে তিনি ঐতিহাসিক পটভূমিতেই দেখতেন এবং হিন্দুধর্মের মতই এই ধর্মকেও নির্বিচারে সাট্টিফিকেট দেননি। ব্যক্তিগত চিঠিতে লিখেছেন -

    "তিব্বতীদের যে তন্ত্রাচারের কথা কহিয়াছ, তাহা বৌদ্ধধর্মের শেষ দশায় ভারতবর্ষেই হইয়াছিল। আমার বিশ্বাস যে, আমাদিগের যে সকল তন্ত্র প্রচলিত আছে বৌদ্ধেরাই তাহার আদিম স্রষ্টা। ঐ সকল তন্ত্র আমাদিগের বামাচারবাদ হইতে আরও ভয়ঙ্কর (উহাতে ব্যভিচার অতি মাত্রায় প্রশ্রয় পাইয়াছিল), এবং ঐ প্রকার immorality (চরিত্রহীনতা) দ্বারা যখন (বৌদ্ধগণ) নির্বীর্য হইল, তখনই [তাহারা] কুমারিল ভট্ট দ্বারা দূরীকৃত হইয়াছিল। যে প্রকার সন্ন্যাসীরা শঙ্করকে ও বাউলরা মহাপ্রভুকে secret (গোপনে) স্ত্রীসম্ভোগী, সুরাপায়ী ও নানাপ্রকার জঘন্য আচরণকারী বলে, সেই প্রকার modern (আধুনিক) তান্ত্রিক বৌদ্ধেরা বুদ্ধদেবকে ঘোর বামাচারী বলে এবং 'প্রজ্ঞাপারমিতো'ক্ত তত্ত্বগাথা প্রভৃতি সুন্দর সুন্দর বাক্যকে কুৎসিত ব্যাখ্যা করে; ফলে এই হইয়াছে যে, এক্ষণে বৌদ্ধদের দুই সম্প্রদায়; বর্মা ও সিংহলের লোক প্রায় তন্ত্র মানে না ও সেই সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুর দেবদেবীও দূর করিয়াছে, এবং উত্তরাঞ্চলের বৌদ্ধেরা যে 'অমিতাভ বুদ্ধম্' মানে, তাঁহাকেও ঢাকীসুদ্ধ বিসর্জন দিয়াছে। ফল কথা এই, উত্তরের যে 'অমিতাভ বুদ্ধম্' ইত্যাদি মানে, তাহা 'প্রজ্ঞাপারমিতা' দিতে নাই, কিন্তু দেবদেবী অনেক মানা আছে। আর দক্ষিণীরা জোর করিয়া শাস্ত্র লঙ্ঘন করিয়া দেবদেবী বিসর্জন করিয়াছে। যে everything for others ('যাহা কিছু সব পরের জন্য' এই মত) তিব্বতে বিস্তৃত দেখিতেছ, ঐ phase of Buddhism (বৌদ্ধর্মের ঐ ভাব) আজকাল ইউরোপকে বড় strike করিয়াছে (ইউরোপের বড় মনে লাগিয়াছে)। যাহা হউক, ঐ phase (ভাব) সম্বন্ধে আমার বলিবার অনেক আছে, এ পত্রে তাহা হইবার নহে। যে ধর্ম উপনিষদে জাতিবিশেষে বদ্ধ হইয়াছিল, বুদ্ধদেব তাহারই দ্বার ভাঙিয়া সরল কথায় চলিত ভাষায় খুব ছড়াইয়াছিলেন। নির্বাণে তাঁহার মহত্ত্ব বিশেষ কি? তাঁহার মহত্ত্ব in this unrivalled sympathy (তাঁহার অতুলনীয় সহানুভূতিতে)। তাঁহার ধর্মে যে সকল উচ্চ অঙ্গের সমাধি প্রভৃতির গুরুত্ব, তাহা প্রায় সমস্তই বেদে আছে; নাই তাঁহার intellect (বুদ্ধি) এবং heart (হৃদয়), যাহা জগতে আর হইল না।
    বেদের যে কর্মবাদ, তাহা jew (য়াহুদী) প্রভৃতি সকল ধর্মের কর্মবাদ, অর্থাৎ যজ্ঞ ইত্যাদি বাহ্যোপকরণ দ্বারা অন্তর শুদ্ধি করা—এ পৃথিবীতে বুদ্ধদেব the first man (প্রথম ব্যক্তি), যিনি ইহার বিপক্ষে দণ্ডায়মান হয়েন। কিন্তু ভাব ঢং সব পুরাতনের মতো রহিল, সেই তাঁহার অন্তঃকর্মবাদ-সেই তাঁহার বেদের পরিবর্তে সূত্রে বিশ্বাস করিতে হুকুম। সেই জাতিও ছিল, তবে গুণগত হইল (বুদ্ধের সময় জাতিভেদ যায় নাই), সেই যাহারা তাঁহার ধর্ম মানে না, তাহাদিগকে 'পাষণ্ড'টা বৌদ্ধদের বড় পুরানো বোল, তবে কখনও বেচারীরা তলোয়ার চালায় নাই, এবং বড় toleration (উদারভাব) ছিল। তর্কের দ্বারা বেদ উড়িল, কিন্তু তোমার ধর্মের প্রমাণ ?— বিশ্বাস কর!!— যেমন সকল ধর্মের আছে, তাহাই। তবে সেই কালের জন্য বড় আবশ্যক ছিল এবং সেই জন্যই তিনি অবতার হন।
    ...
    উপনিষদের উপর বুদ্ধের ধর্ম উঠেছে, তার উপর শঙ্করবাদ। কেবল শঙ্কর বুদ্ধের আশ্চর্য heart (হৃদয়) অণুমাত্র পান নাই; কেবল dry intellect (শুষ্ক জ্ঞানবিচার)— - তন্ত্রের ভয়ে, mob-এর (ইতরলোকের) ভয়ে ফোড়া সারাতে গিয়ে হাতসুদ্ধ কেটে ফেললেন, এ সকল সম্বন্ধে গেলে পুঁথি লিখতে হয়; আমার তত বিদ্যা ও আবশ্যক - দুইয়েরই অভাব।"
  • dukhe | 127.194.249.249 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ১৮:০৮513649
  • "হিমালয় ভ্রমণের কোন এককালে স্বামীজী এক তিব্বতী পরিবারে বাস করিয়াছিলেন। দেশের নিয়মানুসারে তাহাদের নারীরা একই সময়ে অনেক স্বামীর পত্নী হইতে পারে। সেই প্রথানুযায়ী উক্ত পরিবারের ছয়জন ভ্রাতার মাত্র একজন স্ত্রী ছিল। স্বামীজী স্বভাবতই এই বীভৎস আচারের নিন্দা করিয়াছিলেন এবং ইহার বিরুদ্ধে যুক্তিও দেখাইয়াছিলেন। কিন্তু যে ভ্রাতার সহিত আলাপ হইয়াছিল, সে বিরক্ত হইয়া প্রতিপ্রশ্ন করিল, "স্বামীজী, আপনি সাধু হইয়াও অপরকে কী করিয়া এমন স্বার্থপর হইতে বলিতে পারেন? 'এমন জিনিসটি শুধু আমিই ভোগ করিব, অপর কেহ নয়' - এই রকম মতলব কি নিন্দনীয় নয়? আমরা কেন এমন স্বার্থপর হইতে যাইব যে প্রত্যেকেই একজন করিয়া স্ত্রী রাখিব? ভ্রাতারা সব জিনিস সমভাবে পাইবে - এমনকি স্ত্রী পর্যন্ত।""

    বিবুদার কাছে এইটাও একটা শিক্ষা ছিল। স্ত্রীকে 'জিনিস' হিসেবে দেখা হচ্ছে - ওসব দিকে যাচ্ছি না। 'স্বার্থপরতা'-র সংজ্ঞাও কীভাবে নির্মিত হচ্ছে, একই ঘটনাকে কত অন্য রকমভাবে দেখা যায় - সেই শিক্ষা ওনার কাজে লেগেছিল। এমনিতেও উকিলের ছেলে - নিজেই কীভাবে বিভিন্ন জিনিসের পক্ষে এবং বিপক্ষে তর্ক করতেন - অনেকের স্মৃতিকথাতেই পাবেন। মানুষকে একপেশে দৃষ্টি থেকে বের করে আনার চেষ্টা ছিল প্রবল।

    এখানেও যেমন। বিদ্যাসাগরের মাতৃশ্রাদ্ধকে কেউ এক নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণের আচরণ হিসেবে ইন্টারপ্রিট করবেন, কেউ লোকব্যবহার। মোদীর ভিজিটকে কেউ রাকৃমির মোদীকে এন্ডোর্স করা হিসেবে দেখবেন, কেউ 'ঈশ্বরের দ্বার সবার জন্য খোলা' - এর প্রকাশ দেখবেন। "আসলে যা ঘটেছে"-র চেয়ে বড় হয়ে উঠবে "আসলে যা ঘটলে আমার পছন্দসই হয়"।
  • Rit. | 213.110.243.21 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ১৯:০৮513651
  • বিবেকানন্দ কি মহাভারত পড়েননি? ঃ)
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২০:২৩513652
  • বিশাল দুহাজার বছরের বৌদ্ধসাহিত্যকে সরল লিনিয়ার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। হীনযান ও মহাযানের যে দর্শনগত ফান্ডামেন্টাল ডিফারেন্স সেটাকে উড়িয়ে দিয়ে একছাতার তলায় আনা প্রায় সিপিএম ও মাওবাদী -এসসিইউসিকে একসঙ্গে কমিউনিস্ট বলার মত ব্যাপার, যিনিই বলুন।
    সিংহল ও দক্ষিণে হীনযান, কাজেই দেবদেবীর প্রশ্নই নেই।ওরা দেবদেবীকে বাদ দেয় নি, আদি বৌদ্ধধর্মে ও হীনযানে কোন দেবদেবী ছিলই না। মহাযানে উপনিষদ -আশ্রিত বেদান্তের মত শূন্যবাদ( যার জন্যে শংকরাচার্য্যকেও প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ বলে গাল দেয়া হত) ও তারপরে যোগাচার দর্শনের বিজ্ঞানবাদ এল, সঙ্গে এল তন্ত্রসাধনা, দেবদেবী, অবলোকিতেশ্বর , তারাদেবী, ভূত-তাড়ানোর মন্ত্র আরও কত কি--- যা বিবেকানন্দ সঠিক ভাবেই বলে ছেন উত্তরে নিয়েছে, অর্থাৎ তিব্বত-চীন-জাপান।
    বিবেকানন্দ বুদ্ধদেবকে মৌখিক শ্রদ্ধা দেখালেও বৌদ্ধদর্শনের যা ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা একেবারে ওর অন্তর্বস্তুকে পাল্টিয়ে দেয়া।
    বৌদ্ধধর্মের করুণা ও সহানুভূতি ছাড়া সবকিছুই বেদে আছে বলা একেবারে সত্যের অপলাপ।
    জয়দেব দশাবতার স্তোত্রে বুদ্ধদেবকে বিষ্ণুর অবতার বানিয়ে বলা হল-- "নিন্দসি যজ্ঞবিধেয়রহযাতম,
    সদয় হৃদয় দর্শিতপশুঘাতম,
    কেশবধৃত বুদ্ধশরীর জয়-জগদীশহরে"।

    বিবেকানন্দের বুদ্ধবন্দনা এর থেকে খুব বেশি আলাদা নয়। যদিও' নিন্দসি যজ্ঞবিধেয়রহ' যিনি তিনি কি করে বৈদিক কর্মকান্ডের মূল যজ্ঞ ও বলি ( যজুর্বেদ ও অথর্ববেদের) অনুযায়ী হলেন বোঝা দুষ্কর।
    আর প্রত্যেক দর্শনের একটা ইম্পর্ট্যান্ট অংশ হল তার নির্দিষ্ট ল অফ কজালিটি। বেদান্তের ল অফ কজালিটি অনুযায়ী সমস্ত জগত ব্রহমের প
    রতিভাস, আর অদ্বৈত মতে অবিদ্যাজনিত মায়া বা ভ্রমের ফলে অস্তিত্বহীন্জগতের অস্তিত্ববোধ হয়।

    কিন্তু, বৌদ্ধদর্শনের ল অফ কজেশন হল পতিচ্ছসমুৎপাদ। এক কথায় চেইন অফ কজেশন,কোন শ্বাশ্বত সত্য বলে কিছু নেই।
    সেখানে বেদান্ত বলেন যা শাশ্বত তাই সত্য, তাই সতত পরিবর্তনশীল জগত মিথ্যা। কেবল নামরূপের পরিবর্তনের চক্র থেকে মুক্ত বিকারহীন তত্ত্ব হল ব্রহ্ম-- তাই একমাত্র ব্ড়ম সত্য।
    ঠিক এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে বৌদ্ধদর্শন বলে সবকিছুই প্রতিমুহূর্তে পরিবর্তনশীল,সব অস্তিত্বই ক্ষণিক, শ্বাশ্বত বলে কিছুই নেই। তাই একই নদীতে দুবার স্নান করা যায় না। বৌদ্ধ dialectics অনুযায়ী যে নদীতে একমুহূর্ত আগে ডুব দিয়েছি সেই জলধারা তো বয়ে গিয়েছে। কাজেই দ্বিতীয় ডুব যখন দিচ্ছি তখন সেটা এক নদী হয়েও আলাদা, পরিবর্তিত। যে শিশু বড় হয়ে আজ পূর্ণবয়স্ক হল সেই দুজন এক হয়েও এক নয়, পরিবর্তিত রূপ।
    ( ভিক্ষু নাগসেন এর সঙ্গে রাজা মিনান্দারের প্রশ্নোত্তর "মিলিন্দ্‌পঞহো" তে সুন্দরভাবে বোঝানো আছে।)

    তাই দর্শনের ভাষায় বেদান্তকে বলা হয় শাশ্বতবাদ,বৌদ্ধদর্শন কে ক্ষণিকবাদ। দুটো একেবারে বিপরীত অক্ষে দাঁড়িয়ে। দুটোকে কি করে এক বলা হবে?
    বাস্তবে বৌদ্ধদর্শনকে বেদবিরোধী নাস্তিক্য দর্শনের মধ্যেই গণ্য করা হয়। আজকে যে কোন দর্শনের স্ট্যান্ডার্ড বইয়ে--ডঃ সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তের ইন্ডিয়ান ফিলজফি বা কে সি ভট্টাচার্য্য বা ভারতীয় দর্শনের পরিচয় নিয়ে মৌলানা আজাদের পরিকল্পনায় রাধাকৃষ্ণান ও হুমায়ুন কবীরের এডিটরশিপে ভারত সরকারের প্রামাণ্য দুই ভল্যুম দেখুন।
    বিবেকানন্দ যাই বলুন।
    বাল্মিকী রামায়ণে দেখুন রামচন্দ্র নিজে মহর্ষি জাবালির চার্বাকপন্থী যুক্তি শুনে রেগেগিয়ে নাস্তিক, বৌদ্ধদের দন্ডিত করার কথা বলছেন।
    আবার ব্রহ্মসূত্রের ওই খন্ডটি দেখুন যাতে সমস্ত বেদান্তবিরোধী দার্শনিক স্কুলের সঙ্গে বেদান্তএর পক্ষ থেকে ডিবেটের শংকরভাষ্য। দেখুন তাতে কিভাবে বৌদ্ধমতকে হেরেটিক বলে খন্ডন করা হয়েছে।
    এদিকে বৌদ্ধসাহিত্যেও বেদান্তের সঙ্গে বিতর্কের বিশাল ট্র্যাডিশন রয়েছে।
    এই আমাদের ভারতীয় দর্শনের এই বিশাল সাহিত্য ও দার্শনিক বিতর্ক-সাক্ষ্য গুলো এড়িয়ে গিয়ে বিবেকানন্দের প্রতি ভক্তিতে ওঁর একটি কথা ধরে নিয়ে বৌদ্ধসাহিত্যকে এলেবেলে করে দেবেন?
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২০:৩৪513653
  • একটু উল্টো গাইছিঃ))।
    মোদীকে নিয়ে দুখের আর্গুমেন্ট ভাবাচ্ছে।
    আমার মত হল কোন মতকে খন্ডন করার আগে সেই মতটিকে পূর্ণ empathy র সঙ্গে বোঝার চেষ্টা করা উচিৎ, মানে তার দৃষ্টিকোণ থেকে। সহমত হই বা না হই।

    যদি চৈতন্যের " আচন্ডালে ধরি দেই কোল" বা "পাপীতাপী আয় না ছুটে নামতরঙ্গে ভেসে যাই" --- এটাই মিশন বা কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আদর্শ হয়, তাহলে মিশনের পক্ষে মোদীকে ফেরানো কঠিন। অর্থাৎ আমি দেখছি মিশন নিজের স্ট্যান্ডে কনসিস্টেন্ট কি না!
    এটা তো স্বাভাবিক যে মোদী এর থেকে পলিটিক্যাল মাইলেজ তুলতে চাইবেন। কিন্তু তার দায়িত্ব মিশনের হতে পারে না যদি ওঁরা মোদিকে বিশেষ সম্মান না দিয়ে সাধারণ ভক্তের মত ট্রিট করেন।
    হ্যাঁ, যদি মিশন মোদী আসায় গদগদ হয়ে এটাকে প্রচারের বড় ইস্যু বানিয়ে মোদীকে ভক্তবর করে বিশেষ সম্মান বা প্রেস কনফারেন্স করেন তাহলে আপত্তি আছে, নইলে নয়।
    এটা একান্তভাবে আমার ব্যক্তিগত মত।
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২০:৫১513654
  • এবার কুমারিল ভট্ট। ভারতীয় দর্শনের অপ্রতিম তার্কিক।
    সত্যি কথা এই যে উনি বৌদ্ধগুরুর কাছে বৌদ্ধদর্শন শিখে গুরুমারা বিদ্যে দেখিয়ে বিতর্কে বৌদ্ধদের পরাস্ত করে হিন্দুধর্মের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এইটুকু অবদি বিবেকানন্দ ঠিক বলেছেন।
    কিন্তু যেটা বলেন নি তাহল কুমারিল ভট্ট যে বৈদিক ধর্ম প্রতিষ্ঠা করলেন তা হল ঈশ্বরবিহীন, দেবতা বিহীন, যাগযজ্ঞের কর্মকান্ডের ধর্ম। কারণ উনি ছিলেন কর্মমীমাংসা বা পূর্বমীমাংসার অনুগামী মীমাংসক দার্শনিক। ওঁদের মতে দেবতা-ঈশ্বর বলে কিছু নেই, কোন দেবতা ভোগ দিলে খেয়ে যান না। দেবতা শব্দময়ী। শুধু উচ্চারণের ম্যাজিক্যাল এফেক্ট আছে।
    তাই কোন মন্ত্রে ইন্দ্রের যে নাম আছে( শক্র, সহস্রলোচন ইত্যাদি) ,exactly সেইনামে ডাকতে হবে। অন্য নামে ডাকলে ফল পাওয়া যাবে না। কারণ আসলে ইন্দ্র বলে কোন দেবতার অস্তিত্ব নেই, থাকলে যে কোন নাম ধরে ডাকলে সাড়া মিলত বা ফল পাওয়া যেত।
    কুমারিল ভট্ট তাঁর দীপিকা গ্রন্থে এও বলেছেন যে ইন্দ্রিয়দ্বার রুদ্ধ করে ধ্যানের মাধ্যমে সত্যদর্শনের প্রচেষ্টা বন্ধ্যানারীর সঙ্গে গমন করে কোন সন্তান প্রাপ্তির আশার সঙ্গে তুলনীয়।
    কাজেই কুমারিল ভট্টের নিরীশ্বরবাদী হিন্দুধর্ম কি আদৌ বিবেকানন্দের কাম্য ধর্ম?
    গীতায় এই মীমাংসাদর্শনকে বেদবাদীন বলে নিন্দে করা হয়েছে। জগদীশ চন্দ্র ঘোষের গীতা ও টীকা দ্রষ্টব্য।
  • dd | 132.167.8.42 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:০৫513655
  • নিরুক্ত মানে বেদের যজ্ঞের SOP যেখানে লেখা হোতো তাতে কৌৎস মুণি মন্ত্রের অর্থ বুঝবার চেষ্টা বৃথা বলে একেবারে "অনর্থক" বলেছেন। দুর্বোধ্য বলে নয়, যাস্ট শব্দ ব্রহ্মের উপর বিশ্বাস। মন্ত্রের এমনি ম্যাজিক্যাল শক্তি যে উচ্চারণেই কাজ দেবে, মানে ফানে বুঝবার দরকার নেই।
  • Sibu | 218.54.39.234 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:১৬513656
  • এইজন্যে এক্ষপার্টদের পাত্তা দিতে নেই ঃ-)

    মোদী ও রাকৃম নিয়ে প্রশ্চেন। আনরিপেনটেন্ট মোদীকে ভক্ত হিসেবে গ্রহন করা নিয়ে রঞ্জনদার কি বক্তব্য? ধরুন যে ডাকাত মনে করে ডাকাতি ঠিক কাজ, এবং সেটা জোর গলায় বলে, তাকে ভক্ত হিসেবে গ্রহন করা নিয়ে রাকৃমর কি স্ট্যান্ড?
  • jio | 24.99.236.171 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:২১513657
  • সারদাদেবী বহু পূর্বেই বলে গিয়েছেন- আমি সতেরও মা, অসতেরও মা।
  • দীপ | 212.142.113.199 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:৪০513658
  • "...Buddha cut through all these excrescences. He preached the most tremendous truths. He taught the very gist of the philosophy of the Vedas to one and all without distinction, he taught it to the world at large, because one of his great messages was the equality of man." (সান ফ্রান্সিস্কো, ১৯০০) - এখানে বলছেন বুদ্ধ বেদের ফিলসফিতেই এগিয়েছেন। বিদেশে আরেক জায়গায় বলছেন - "Buddha was a great Vedantist for Buddhism was really only an offshoot of Vedanta." - কিন্তু অন্যত্র শিষ্যদের সাথে আলোচনায় বলেছেন বুদ্ধের সাথে বেদ-বেদান্তের তফাতের কথা। রেফারেন্সটা এই মূহুর্তে পাচ্ছি না। খুঁজে পেলে দেব।

    "...Yet the religion of Buddha spread fast. It was because of the marvellous love which, for the first time in the history of humanity, overflowed a large heart and devoted itself to the service not only of all men but of all living things — a love which did not care for anything except to find a way of release from suffering for all beings. " (সান ফ্রান্সিস্কো, ১৯০০) - এখানে কিন্তু বৌদ্ধধর্মর প্রসারের জন্য অন্য কারন ব্যাখ্যা করলেন। আড়ম্বর, বড় মন্দির বনাম ছোট মন্দির ইত্যাদি নয়।

    ভারতে পৌত্তলিকতার জন্য বুদ্ধ দায়ী? "The result of Buddha's constant inveighing against a personal God was the introduction of idols into India. In the Vedas they knew them not, because they saw God everywhere, but the reaction against the loss of God as Creator and Friend was to make idols, and Buddha became an idol — so too with Jesus. The range of idols is from wood and stone to Jesus and Buddha, but we must have idols." - আমার ধারণা বুদ্ধ আসার আগেই মুর্ত্তিপুজো ভারতে প্রচলিত ছিল। ইতিহাসটা কেউ জানলে আলোকপাত করবেন।

    "Buddha dealt a blow at animal sacrifice from which India has never recovered; and Buddha said, 'Kill no cows', and cow-killing is an impossibility with us." - হিন্দুদের গোরু খাওয়া বন্ধ হবার পেছনে বৌদ্ধধর্মর সাথে কম্পিটিশন দায়ী, এরকম শুনেছি। কিন্তু বুদ্ধ গোরু কাটতে বারণ করেছেন, এটা কি ঠিক?

    উপরের উক্তিগুলিকি তথ্যবিকৃতি নাকি অজ্ঞানতা?

    দুখের বনাম অপছন্দ, কিন্তু এই বনামটা হয়ত পছন্দ করবেন। বুদ্ধ বনাম কৃষ্ণ? "As a character Buddha was the greatest the world has ever seen; next to him Christ. But the teachings of Krishna as taught by the Gita are the grandest the world has ever known. He who wrote that wonderful poem was one of those rare souls whose lives sent a wave of regeneration through the world. The human race will never again see such a brain as his who wrote the Gita."

    বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে ধারণা ছিল সমসাময়িক হিন্দু ধর্মের বেশিরভাগ কুপ্রথাগুলির জন্য এরাই দায়ী। তবে বুদ্ধ সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করতেন। অনেক জায়গাতেই দেখছি বলেছেন এ কথা। এমনকি এটাও বলেছেন, পৃথিবীতে মাত্র দু'জন God এসেছেন - বুদ্ধ আর যিশু। বাকি সবাই prophet. বুদ্ধ সম্পর্কে এটাই হয়ত ফাইনাল কথা - "The Lord Buddha is my Ishta — my God. He preached no theory about Godhead — he was himself God, I fully believe it. But no one has the power to put a limit to God's infinite glory. No, not even God Himself has the power to make Himself limited."
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:৪৬513659
  • শিবু,
    আমি বা আপনি যদি মিশন(রাকৃমি শুনতে বড্ড খারাপ লাগে!) হতাম তো ঢুকতেই দিতাম না। কিন্তু ঘোষিত ধার্মিক সংস্থাতো কোন ভেদাভেদ করবে না। অঙ্গুলীমালকেও ভাগিয়ে দেবে না।
    কাজেই কি গ্রাউন্ডে মিশন মোদিকে তাড়াবে?
    কিন্তু মোদীকে যদি মিশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে ওর বিশেষ" রাষ্ট্রীয় হিন্দুধর্ম" নিয়ে বক্তৃতা দিতে দেয়া হয় তবে আপত্তি আছে। এসেছ , পূজো দাও, চলে যাও, ব্যস্‌।
    যদি মোদীবাবু এসেছেন বলে মিশন ফোটো সেশন করে বা প্রেস কনফারেন্স করে তাহলে ঘোর আপত্তি আছে।
    তখন বুঝব পাটোয়ারি বুদ্ধি আদর্শের চেয়ে বড় হয়ে গেছে।
  • Sibu | 218.54.39.234 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:৪৯513660
  • মোদী যদি একটা বড় ডোনেশন দেয় তো সেটা অ্যাকসেপ্ট করা নিয়ে কি স্ট্যান্ড হওয়া উচ্ত?
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২১:৫৭513662
  • দীপ,
    অবশ্যই বিবেকানন্দ বুদ্ধের ব্যাপারে শ্রদ্ধান্বিত ছিলেন। কিন্তু তার মানে উনি বৌদ্ধদর্শনের নামে বা ধর্মের নামে যা বলে গেছেন --যেমন বৌদ্ধদর্শন আসলে বেদের থেকে উদ্ভূত, বৈদিক ধর্মের শ্রেষ্ঠদিক গুলো নিয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি--- সেগুলো আজকে বৌদ্ধদর্শনের যে কোন অ্যাকাডেমিক ছাত্রও সত্যি বলে মানবে না।
    বৌদ্ধসংঘের বা দীক্ষিতদের কথা বাদই দিলাম। বঙ্গে নেই। কিন্তু ছত্তিশগড়ে-মহারাষ্ট্রে দলিতদের মধ্যে, আম্বেদকরবাদীদের মধ্যে অনেক দীক্ষিত ও সিরিয়াস স্কলার আছেন। বইপত্রও আছে। আগের দশকের মিসেস রাইস ডেভিস, ওল্ডেনবার্গ, ভদন্ত আনন্দ কৌশল্যায়ন বা মহাপন্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়নের কথা সবাই জানেন। এঁদের রিসার্চ ও বইপত্তর আজকাল সহজ লভ্য।

    রাহুল সাংকৃত্যায়নের আসল নাম কেদার পান্ডে। প্রথম জীবনে বেদবেদান্ত পড়ে কাশীর মহাসভা থেকে মহাপন্ডিত খ্যাতিপ্রাপ্ত হলেন। বৈষ্ণব, শৈব সব হয়ে শেষে বৌদ্ধ হয়ে রাহুল নাম নিলেন। সিংহলে গিয়ে বৌদ্ধবিহারে শ্রমণদের ইউনিভার্সিটিতে কয়েকবছর বৌদ্ধদর্শন পড়ালেন।

    কাজেই আমি বৌদ্ধদর্শনের বিষয়ে বিবেকানন্দের থেকে রাহুলের বিশ্লেষণকে বেশি প্রামাণ্য মানব।
  • ranjan roy | 24.99.82.224 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২২:০০513663
  • শিবু,
    কার জায়গা থেকে? আপনার-আমার না মিশনের?
    বড় বিজনেস হাউসের ডোনেশন পেলে কমিউনিস্ট পার্টি কি রিফিউজ করে? বা করা উচিত?
  • Sibu | 218.54.39.234 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২২:০৪513664
  • মিশনের দিক থেকে।
  • pinaki | 227.211.165.102 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২২:৩০513665
  • মোদীর আসার ব্যাপারটা যেহেতু আমিই তুলেছিলাম, তাই এ ব্যাপারে আমি মিশন জাতীয় সংস্থার থেকে কি এক্সপেক্ট করি সেটা ক্লিয়ার করা উচিৎ। আমি একবারও দাবী করিনি যে মিশনের বলা উচিৎ মোদীকে ঢুকতে দেব না। মিশনের ঘোষিত দর্শনের বিপরীতে কেন যাবে তারা? আমার বক্তব্য ছিল ঢুকতে দাও, কিন্তু দর্শনের প্লেনে সাভারকার থেকে শুরু করে আরেসেস, ভিএইচপির যে আগ্রাসী হিন্দুত্ব, তাকে তো তাত্বিক ভাবে কাউন্টার করার একটা দায় তারা নিতে পারে? বিবেকানন্দকে মোদীরা কোঅপ্ট করছেন চোখের সামনে। সেটা দেখেও যদি মিশন তাঁদের নিজেদের দার্শনিক স্বাতন্ত্র অন্ততঃ কাগজে কলমে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ না নেন, সেটাকে আমি ঠিক কাজ মনে করি না। পাশাপাশি আমি যেজন্য উদাহরণ দিয়েছিলাম ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করার নিরলস তাত্বিক প্রয়াসের। অর্থাৎ, সেখান থেকে মিশনের একটা থ্রেট ফীলিং কাজ করে, তাই সেই ব্যাপারে তাঁরা সবসময় নিজেদের আপারহ্যান্ডটা ধরে রাখতে চান। অথচ সেই তাত্বিক এফর্ট তো মানুষ নিধনকারী হিন্দুত্ব নিয়ে দিতে দেখি না? কেন?
  • দীপ | 212.142.121.28 | ২৮ জুলাই ২০১৩ ২২:৫১513666
  • দুখে তোষামোদ প্রসঙ্গে ক্ষেত্রীর রাজাকে লেখা চিঠিগুলোকে কি বলবেন?
    মেমসাহেবদের কাছে তোষামোদ লাগেনি। এমনিই টাকা চেয়েছেন - মঠের জন্য, নিজের জন্য, মায়ের জন্য, চিকিৎসার জন্য - তেনারাও টাকা দিয়েছেন spirituality'র বিনিময়ে।

    তবে মঠ গড়ার প্ল্যানটা প্রথমদিকে ছিল না। ১৮৯৫ তে লিখছেন, "প্রিয় আলাসিঙ্গা, আমাদের কোন সঙ্ঘ নেই—আমার কোন সঙ্ঘ গড়তেও চাই না। স্ত্রী বা পুরুষ যে-কেহ যা কিছু শিক্ষা শিক্ষা দিতে, যা কিছু প্রচার করতে চায়, সে-বিষয়ে তার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে ।" পরে ১৮৯৬ তে দেখছি স্টার্ডিকে লিখছেন, "পল্লী অঞ্চলে আমার একটি জমি পাবার সম্ভাবনা আছে; তাতে কয়েকটি বাড়ি, বহু গাছ ও একটি নদী আছে। গ্রীষ্মকালে ওটিকে ধ্যানের স্থানরূপে ব্যবহার করা চলবে। অবশ্য আমার অনুপস্থিতিতে ওটার দেখাশুনার জন্য এবং টাকাকড়ি লেনদেন, ছাপা ও অন্যান্য কাজের জন্য একটি কমিটির প্রয়োজন হবে। আমি নিজেকে টাকাকড়ি ব্যাপার থেকে একেবারে আলাদা ক'রে ফেলেছি, অথচ টাকাকড়ি না হ'লে কোন আন্দোলন চলতে পারে না।" ঐ চিঠিতেই স্টার্ডিকে বলেছেন, "এখানে আমি তোমার মতো এমন একজন শক্তিশালী লোক চাই—যার বুদ্ধি, কর্মে দক্ষতা ও অনুরাগ আছে।" ব্রহ্মানন্দকে লেখা চিঠি থেকে - "স্টার্ডি সাহেবের টাকা, সে যে-প্রকার লোক চায়, সেইপ্রকার (ইংলন্ডে) আনাইতে হইবে।" পরে অবশ্য গুরুভাই স্টার্ডির সাথে মনোমালিন্য হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত মুলারের টাকায় নদীর ধারের জমিটি কেনা হল।
  • দীপ | 212.142.113.218 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ০০:০৫513667
  • বুদ্ধের নাস্তিকতা নিয়ে রামকৃষ্ণ-নরেনের একটি কথোপকথন আছে। নরেন বুদ্ধকে নাস্তিক বললেও রামকৃষ্ণ বোঝাতে চেয়েছেন বুদ্ধ আস্তিকতা-নাস্তিকতার ঊর্ধ্বে।
    http://www.ramakrishnavivekananda.info/gospel/volume_2/50_master_and_buddha.htm
  • ranjan roy | 24.96.121.11 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ০০:১০513668
  • শিবু,
    মিশনের দিক থেকে নিতে কোন বাধা নেই।
    রায়পুরে রামকৃষ্ণ মিশন বেশ পুরনো। এখন যিনি অধ্যক্ষ বাংলা বলতে পারেন। মাঝে মধ্যে বস্তার যান। বিজেপি সরকারের সঙ্গে সদ্ভাব আছে, মাখামাখি নেই।
    আবার নারায়ণপুরের (বস্তারে, ঘোর মাওবাদী এলাকায়) মিশনের গাঁয়ের লোককে জড়ো করে সেচের কাজ , কৃষি ও হস্তশিল্পে উৎসাহ অনেকদিন আগে থেকেই চলছে। ,মাওবাদীরাও নারায়ণপুরের মিশনের স্কুলে কোন হস্তক্ষেপ করেনি। একটা কারণ হয়ত ওখানের মহারাজ ওঁদের স্কুলকে পুলিশি অপারেশনের ঠেক হতে দেন নি বলে।
    (এটা আমার অনুমান।)
    এর পেছনে একজন দক্ষিণী মহারাজের দৃষ্টিকোণ ও উত্সাহ আসল কারক তত্ত্ব। আমার বয়োজ্যেষ্ঠ বিলাসপুরের সমাজবাদী নেতা আনন্দ মিশ্রা ও সিপিএম নেতা নন্দু কাশ্যপকেও সেই স্বামীজি আন্তরিকতা ও স্নেহের চক্ষে দেখতেন। ওঁরা দুজন নারায়ণপুরে মিশনের কাজ দেখতে গিয়েছেনও।
  • দীপ | 212.142.95.134 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ০০:৪৭513669
  • দুখে কয়েকটা পোস্ট আগে রামকৃষ্ণের শেষযাত্রায় সর্বধর্মসমন্বয়ের প্রতীকের কথা তুলেছেন। রামকৃষ্ণের নাম নিয়ে প্রচারে বিবেকানন্দের অনীহার কথাও বলেছেন। এছাড়াও এই টইয়ে মুসলমান, বৌদ্ধ ও ইতরজাতির সম্বন্ধে বিবেকানন্দ কি কি ভাল ভাল কথা বলেছেন সেগুলোও আমরা জেনেছি। কিন্তু ১৮৯৮ সালে বেলুড়ের অস্থায়ী মঠবাড়িতে কান্ডকলাপের মধ্যে এক অন্য বিবেকানন্দকে দেখে নিন।
    ------------------------------------
    "আজ ঠাকুরের শুভ জন্মতিথি, সকলেই তাঁর নাম নিয়ে শুদ্ধ হবে। তাই আজ সমাগত ভক্তমন্ডলীকে পৈতে পরাতে হবে। বুঝলি?"
    শিষ্য। আমি আপনার আদেশমত অনেকগুলি পৈতা সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছি। পূজান্তে আপনার অনুমতি অনুসারে সমাগত ভক্তগণকে ঐগুলি পরাইয়া দিব।
    স্বামীজী। ব্রাহ্মণেতর ভক্তদিগকে এরূপ গায়ত্রী-মন্ত্র (এখানে শিষ্যকে ক্ষত্রিয়াদি দ্বিজাতির গায়ত্রী-মন্ত্র বলিয়া দিলেন) দিবি। ক্রমে দেশের সকলকে ব্রাহ্মণপদবীতে উঠিয়ে নিতে হবে; ঠাকুরের ভক্তদের তো কথাই নেই। হিন্দুমাত্রেই পরম্পর পরম্পরের ভাই। ‘ছোঁব না, ছোঁব না’ বলে এদের আমরাই হীন করে ফেলেছি। তাই দেশটা হীনতা, ভীরুতা, মূর্খতা ও কাপুরুষতার পরাকাষ্ঠায় গিয়েছে। এদের তুলতে হবে, অভয়বাণী শোনাতে হবে। বলতে হবে—‘তোরাও আমাদের মতো মানুষ, তোদেরও আমাদের মতো সব অধিকার আছে।’ বুঝলি?
    শিষ্য। আজ্ঞে হাঁ।
    স্বামীজী। এখন যারা পৈতে নেবে, তাদের গঙ্গাস্নান করে আসতে বল্। তারপর ঠাকুরকে প্রণাম করে সবাই পৈতে পরবে।
    স্বামীজীর আদেশমত সমাগত প্রায় ৪০।৫০ জন ভক্ত ক্রমে গঙ্গাস্নান করিয়া অসিয়া, শিষ্যের নিকট গায়ত্রী-মন্ত্র লইয়া পৈতা পরিতে লাগিল। মঠে হুলস্থূল। পৈতা পরিয়া ভক্তগণ আবার ঠাকুরকে প্রণাম করিল, এবং স্বামীজীর পাদপদ্মে প্রণত হইল। তাহাদিগকে দেখিয়া স্বামীজীর মুখারবিন্দ যেন শতগুণে প্রফুল্ল হইল।
  • দীপ | 212.142.95.134 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ০১:০৬513670
  • টাকার কথাবার্তা ঘুরেফিরে আসছে বলে আরেকটা ব্যাপার ক্লিয়ার করি - ভুবনেশ্বরী দেবীর মাসিক ১০০ টাকা মাসোহারা প্রসঙ্গে কেউ একজন লিখলেন '১০০ টাকাটা সেই জমানায় কোনও ব্যাপারই না। শংকর গবেষণা করে বের করেছেন, মহিলার মাসে ৩০০০ টাকার উপর খরচা ছিল'। অনুরোধ করব এই প্রসঙ্গে শ্রীম'র কথামৃতটা একটু পড়ে নিতে। শ্রীম লিখছেন ১৮৫৮ সালে রানী রাসমণি রামকৃষ্ণকে মাসিক ৫ টাকা মাইনে দিতেন, যা তাঁর শেষ জীবনে বেড়ে দাঁড়ায় ৭ টাকায়। তুলনামূলকভাবে সেই জমানায় ১০০ টাকাটা একটু বেশীই মনে হচ্ছে। ৩০০০ টাকার গবেষণায় আর গেলাম না। ১৮৯৮ তে বেলুড় মঠের জন্য শুধু জমির দাম পড়েছিল ৩৯০০০ টাকা। স্পিরিচুয়ালিটি বেচে এই টাকা যোগাড়ের কৃতিত্ব বিবেকানন্দের একার।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ০৮:৫৯513671
  • দীপ কি তোষামোদের চোটে কাউকে গভীর রাত্রে উঠে তোষামোদকারীর পদসেবা করতে দেখেছেন (বিবুদা প্রকাশ্যে অ্যালাও করতেন না রাজার মর্যাদাহানি হয় ব'লে) ? আমি তো দাদা দেখি নাই। বিবুদা থাকলে এমন তোষামোদের টেকনিকটা শিখে নিতাম।
    হ্যাঁ, বিবুদা টাকা চেয়েছেন, ভক্তেরা দিয়েছেন। এখনও ভক্তেরা সাধুদের প্রণামী দেন। বিবুদার মায়ের প্রয়োজন ছিল - চিঠিতে মহেন্দ্রনাথকে সংসারের হাল ধরার জন্য তৈরি হ'তে লিখেছেন, আরো নানা অর্থী ছিলেন, পারতপক্ষে ফেরাতেন না, বাল্যবন্ধুদেরও সাহায্য করেছেন।
    ৩০০০ টাকা যাঁর সংসার খরচ, তাঁর জন্য ১০০ টাকার মাসোহারা প্রার্থনা করতে বিবুদার কেমন লেগেছিল তাই ভাবি।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২৯ জুলাই ২০১৩ ১০:২৪513673
  • "এই আমাদের ভারতীয় দর্শনের এই বিশাল সাহিত্য ও দার্শনিক বিতর্ক-সাক্ষ্য গুলো এড়িয়ে গিয়ে বিবেকানন্দের প্রতি ভক্তিতে ওঁর একটি কথা ধরে নিয়ে বৌদ্ধসাহিত্যকে এলেবেলে করে দেবেন?"

    - না, অবশ্যই না। আবার ব'লে যাই বৌদ্ধধর্ম বৌদ্ধসাহিত্য নিয়ে আমার কোন ফান্ডা নেই। জাতকের গল্পটল্প পড়েছি - ফলে বৌদ্ধমতে জন্মান্তর আছে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত নই।

    কিন্তু বিবুদার পাঠকমাত্রেই জানেন বিবুদার কাছে বুদ্ধদেব মৌখিক শ্রদ্ধার পাত্রের চেয়ে বেশি কিছু ছিলেন। মহম্মদ যিশু সবাইকেই উনি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, কিন্তু বুদ্ধকে উনি শ্রেষ্ঠ মানব (অবশ্যই রামকৃষ্ণ এই হিসেবে আসবেন না) মনে করতেন। কাজেই ওনার অ্যানালিসিসকে 'সেক্টারিয়ান রাগ'-প্রসূত বলেও ধরব না।

    "তিনি বলেন যে, বুদ্ধ অপর সকল মানুষের উপরে মাথা তুলিয়া দাঁড়াইয়া আছেন। তিনি এমন একজন ব্যক্তি, যাঁহার সম্বন্ধে কি মিত্র, কি শত্রু—কেহ কখনও বলিতে পারে না যার, তিনি সকলের হিতের জন্য ছাড়া একটিও নিঃশ্বাস লইয়াছেন বা এক টুকরা রুটি খাইয়াছেন।

    কানন্দ বলেন, আত্মার জন্মান্তরগ্রহণ বুদ্ধ কখনও প্রচার করেন নাই। তবে তিনি বিশ্বাস করিতেন যে, সমুদ্রে যেমন একটি ঢেউ উঠিয়া মিলাইয়া যাইবার সময় পরবর্তী ঢেউটিতে তাহার শক্তি সংক্রামিত করিয়া যায়, সেইরূপ একটি আত্মা তাহার ভবিষ্যৎ আত্মায় নিজের শক্তি রাখিয়া যায়। বুদ্ধ ঈশ্বরের অস্তিত্ব কখনও প্রচার করেন নাই; আবার ঈশ্বর যে নাই, তাহাও বলেন নাই।

    তাঁহার শিষ্যেরা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, ‘আমরা সৎ হইব কেন?’ বুদ্ধ উত্তর দিলেন, ‘কারণ তোমরা উত্তরাধিকারসূত্রে সদ‍্‍ভাব পাইয়াছ। তোমাদেরও উচিত পরবর্তীদের জন্য কিছু সদ‍্‍ভাব রাখিয়া যাওয়া।’ সংসার সমষ্টীকৃত সাধুতার সম্প্রসারের জন্যই আমাদের প্রত্যেকের সাধু আচরণ বিধেয়।

    বুদ্ধ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অবতার। তিনি কাহারও নিন্দা করেন নাই, নিজের জন্য কিছু দাবি করেন নাই। নিজেদের চেষ্টাতেই আমাদিগকে মুক্তিলাভ করিতে হইবে, ইহাই ছিল তাঁহার বিশ্বাস। মৃত্যুশয্যায় তিনি বলিয়াছিলেন, ‘আমি বা অপর কেহই তোমাদিগকে সাহায্য করিতে পারে না। কাহারও উপর নির্ভর করিও না। নিজের মুক্তি নিজেই সম্পাদন কর।’ "
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন