এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • মাওবাদী হামলা ও মহেন্দ্র কর্মা

    Ishan
    অন্যান্য | ২৬ মে ২০১৩ | ১৬৯৮০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৫:৫২611357
  • আমার উপপাদ্যঃ
    মানুষ দুভাবে আদি ভিটে ছেড়ে বাইরে যায়ঃ
    এক, নিজের ইচ্ছেয়।এটা উচ্ছেদ নয়, কিন্তু মাইগ্রেশন বটেক।
    দুই, ইচ্ছের বিরুদ্ধে, প্রবল প্রতিকূল শক্তির সামনে পরাজয় স্বীকার করে।

    প্রথম কারণ, অর্থাৎ নিজের ইচ্ছেয় ছেড়ে যাওয়া নিয়েও দুইখান কথা আছে।এক, পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে যাওয়া , একরকম নিমরাজি হয়ে।
    অন্যটি আনন্দের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত উন্নত জীবন যাপনের জন্যে খুশি হয়ে যাওয়া। যেমন উচ্চশিক্ষা বা ভালো কেরিয়ারের জন্যে লোকে বিদেশে যায়। পরিবারের লোক গর্বিত হয়। সেই লোকজন নতুন জায়গায় গিয়ে গ্রীনকার্ডের জন্যে চেষ্টা করেন, না পেলে বিমর্ষ। এঁরা ঘরে ফেরার অপশন পেলেও ফিরবেন না। কারণ, এঁরা যে জীবনের স্বাদ পেয়েছেন তার সঙ্গে তুলনা করে পুরনো জীবনের অপর্চুনিটি কস্ট অনেক বেশি।
    তেমনি বিয়ে করে স্বামীর ঘর করতে যাওয়া মেয়েটি যাওয়ার সময় যতই বাবুল মোরা, নৈহর ছূট হি জায়- বলে কান্নাকাটি করুন না কেন, কিছুদিন পরেই নতুন ঘরটাই নিজের ঘর হয়ে ওঠে। ভালমন্দ সব মিলিয়ে সেই ঘরেই নিজের ব্যক্ত্বিত্বের প্রকাশ পূর্ণতা পায়।

    কিন্তু যাঁরা চাকরি না পেয়ে বাধ্য হয়ে ঘর ছেড়েছেন তাঁরা স্বপ্ন দেখেন কি ভাবে ঘরের কাছে বদলি হতে পারেন। তার জন্যে আবেদন-নিবেদন ঘুষ দেয়া সবই চলে।
    খুব বড় ডিফারেনশিয়াল না থাকলে বা সামান্য কম মাইনে হলেও তাঁরা ঘরে ফেরার চেষ্টা করেন। এমনকি আমাদের PTও বলেছেন ওঁর পরিবারের লোকজন ইচ্ছে করে নদে জেলা ছাড়েন নি। সেখানে উন্নত জীবন যাপনের সুযোগ না থাকায়, অনুকূল পরিস্থিতি না থাকায় বাধ্য হয়ে কোলকাতায়। অর্থাৎ সুযোগ থাকলে আসতেন না।

    দুই, এবার বলি উচ্ছেদ বা প্রবল প্রতিকূল শক্তির সামনে পরাভব মেনে ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া।
    দুটো উদাহরণঃ
    দুই-বিঘা-জমির উপেন ও মহেশের গফুর।
    উপেনের কথা নিন। নানা তীর্থ ঘুরে, মনোহর ধাম, মনোরম দৃশ্য দেখেও সেই " তবু নিশিদিনে ভুলিতে পারিনে সেই কি জননী তুমি?"

    তেমনি আমাদের পরিবারের দাঙ্গাবিধ্বস্ত পূর্ববাংলা ছেড়ে কোলকাতায় আসা। আমাদের আগের প্রজন্ম সুযোগ থাকলে আবার সেখানে ফিরে যেতেন। ওরাঁ ভুলতে পারেন না ধনু নদীর নৌকা বাইচ, ঘাটে ঘাটু বা কৃষ্ণলীলা, নৌকোয় আসা তরিতরকারি ও রসগোল্লা কেনা আর সেখানের মাছ, বোরো ধান ইত্যাদি।
    এটা যে কেবল আবেগের কথা নয় তার প্রমাণ ১৯৭১ এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বাবার মামা ডঃ নীলমণি রায় ময়মনসিং শহর থেকে প্রাণ হাতে করে সপরিবারে কোলকাতায় আসেন। কিন্তু বাংলাদেশ হওয়ার পর আদ্দেক পরিবার নিয়ে সেই ময়মনসিং শহরে ফিরে যান। বাকি আদ্দেক কোলকাতায় উন্নত জীবিকা পেয়ে যাওয়ায় এখানেই ডেরা বানিয়েছেন।
  • কৃশানু | 177.124.70.1 | ৩১ মে ২০১৩ ১৬:০১611358
  • এ:, রঞ্জনদা অবধি লুজ বল দিচ্ছেন "তেমনি বিয়ে করে স্বামীর ঘর করতে যাওয়া মেয়েটি যাওয়ার সময় যতই বাবুল মোরা, নৈহর ছূট হি জায়- বলে কান্নাকাটি করুন না কেন, কিছুদিন পরেই নতুন ঘরটাই নিজের ঘর হয়ে ওঠে। ভালমন্দ সব মিলিয়ে সেই ঘরেই নিজের ব্যক্ত্বিত্বের প্রকাশ পূর্ণতা পায়।"
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৬:২৩611359
  • এরা হলেন খাঁটি উদ্বাস্তু।
    আমরা দেখছি যে উদ্বাস্তু হয় প্রধানতঃ দুইটি কারণে। দুটোই হিংসক।
    এক, সাম্প্রদায়িক হিংসা ,দুই, রাষ্ট্রীয় হিংসা।
    সাম্প্রদায়িক হিংসার বলি হয়ে যাঁরা ঘর ছেড়েছেন তাঁরা পারলে সবাই ঘরে ফিরবেন। গুজরাতের দাঙ্গার মানবিক মুখ কুতুব আনসারি কোলকাতা ছেড়ে আবার গুজরাতে ফিরে গেছেন। আমার ফ্যামিলির কথা তো বললামই। ছত্তিশগড়ের মানাক্যাম্প ছেড়ে বাঙালী উদ্বাস্তুরা সুনদরবনের মরিচঝাঁপিতে এসেছিল নিজভূমির কাছাকাছি থাকবে বলে, এও ভাবত হয়তো ওদিক দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া যাবে।

    দুই, রাষ্ট্রীয় হিংসার বলি।
    এইবার আমরা মূল আলোচনায় ফিরলাম। অর্থাৎ উন্নয়নের বলি আদিবাসীদের উচ্ছেদ-- যা আজকের আলোচ্য বিষয়। এখানে রুটিন আর্বান মাইগ্রেশনের সঙ্গে এই বিষয়টি ক্যাপ করায় ঘেঁটে গেছে বলে আমার মনে হয়।
    আগে অক্ষদার দেয়া হিন্দু পত্রিকার রিপোর্ট দেখুন। সর্দার সরোবর বাঁধের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পুনর্বাসন না পেলে জমি ছেড়ে নড়বেন না , দরকার হলে বাঁধের জলে ডুবে মরবেন বলে কিছু গাঁ জোট বেঁধেছে। এটা কিছু বছর ধরেই হচ্ছে। অন্য বারের মত এবারও মেয়ে-বাচ্চা সবাই লাঠি খাচ্ছে।
    এবার দেখুন সরকারি আমলারা কী বলছেন--- হ্যাঁ, ক্ষতিপুরণ দেয়া হবে, তবে শুধু জমির পাট্টা যাদের কাছে আছে।
    --কখন দেয়া হবে? আগে জমি খালি করুক, তারপর।
    --আমরা আগে ক্ষতিপূরণের টাকা চাই,।
    ---হবে না, আগে জমি খালি কর।
    --নইলে?
    -- নইলে সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগে পেনাল কোডে কেস খেয়ে জেলে পচবে।

    আপনারাই বলুন-- আগে জিনিসের দাম না পেয়ে কোন দোকানদার আপনাকে মাল দেবে? প্রিমিয়াম না পেয়ে বীমা কোম্পানি ক্লেম দেবে? আপনার জমি-বাড়ির দখল আপনি কোন প্রাইভেট খরিদ্দারকে টাকা পাওয়া এবং রেজিস্ট্রি হওয়ার আগে দিয়ে দেবেন?
    --পিটি একবার দেখুন কেন আদিবাসীদের ব্যাপারটা আপনাদের নদে থেকে কোলকাতায় আসার থেকে আলাদা?
  • MT | 120.227.231.204 | ৩১ মে ২০১৩ ১৬:৪৭611360
  • আদিবাসীদের শিক্ষা প্রসঙ্গে একটি কথা। পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় আদিবাসী সম্প্রদায় সাঁওতালরা। তাঁরা কেবলমাত্র মেদিনীপুরের জঙ্গলে নয়, রাজ্যের প্রায় সব জেলায়ই কমবেশী ছড়িয়ে আছেন। সাঁওতালী ভাষা এরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা। ৭৭সালে ক্ষমতায় আসার সময় বামফ্রন্টের প্রতিশ্রুতি ছিল সাঁওতালী ভাষাকেও শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে, সাওতাল সমাজ-সংস্কৃতির বাহন হিসাবে বিকশিত করা হবে। সাঁওতালদের মধ্য থেকে একটি ছোট্ট উচ্চবিত্ত ক্ষমতাশালী অংশকে উঠে আসতে দেখেছি আমরা, কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য শুনিনি কখনো। সেসব থাকলে লালগড়ের আন্দোলন হয়তো অন্য পথ নিত!
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৬:৪৯611361
  • এতো গেল আদ্দেক গল্প। এবার যে ভূমিহীন, ভাগচাষী ও ক্ষেতমজুররা এই জমির কৃষি উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল ছিল তারা কী পাবে?
    -কাঁচকলা।
    -- কীভাবে বাঁচবে?
    --জীব দিয়েছেন যিনি, আহার দেবেন তিনি।
    -- তাহলে ভিখিরি-লুম্পেন-বেশ্যা হবে?
    --আমাকে শোনাচ্ছেন কেন? এর জন্যে কি আমি দায়ী?
    -- কে দায়ী? ওরা নিজে।লেখাপড়া শিখে চাকরিবাকরি করতে কে বারণ করেছিল?
    -- ওদের গ্রামে যে দশ মাইলের মধ্যে শুধু একটা প্রাইমারি স্কুল !
    -- তা আমি কি করব? ওরা অমন হতচ্ছাড়া গ্রামে জন্মেছে কেন?

    এইটাই আসল কারণ। ওরা এমন জায়গায় জন্মেছে যেখানে কোন ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার নেই, যেখানে রাষ্ট্রের বাজেটের ছিঁটেফোঁটাও পৌছয় না। তাই ওরা গরীব। আর গরীব বলেই কোন দক্ষতা বা লাইফ-স্কিল অর্জন করতে পারেনি। তাই ওদের ভবিতব্য হয় সমাজবিরোধী হওয়া বা নর্মদার জলে ডুবে মরা।
    [ আমার সেই বর্তমান প্রজন্মের মহিলাটি কলেজে পড়ার সময় একজন প্রফেসারের যোগাযোগে গিয়েছিল হরসুদ গাঁয়ে, যা নর্মদার জলে ডুবে যাবে বলে নির্ধারিত। আই এ এস এর চাকরি ছেড়ে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনে যোগ দেয়া চিত্রোৎপলা পালিতের সান্নিধ্যে এসে ও এবং ওর বন্ধু হ্যান্ডিক্যাম দিয়ে একটি আধঘন্টার ডকু বানায়। রাজনীতিতে একান্ত অনাগ্রহী মেয়েটি ডকু বানাতে গিয়ে অবাক হয়ে দেখে সরকারি বিভাগ থেকে পুনর্বাসন দেবার নামে যা যা করা হয়েছে বলে আশ্বাসন দেয়া হয়েছে তা প্রায় কিছুই নেই। এতে পথে বসেছেন শুধু গরীব আদিবাসীই নয়, বেশ কিছু মধ্যবিত্ত ও একটি ছোট কারখানার মালিকও।]

    এইবার বস্তারের আদিবাসী। আগেই বলেছি ওদের ৯০ ভাগের কোন জমির পাট্টা নেই। ফলে বেশির ভাগ লোক বংশপরমপরায় আবাদ করা জমি থেকে উৎখাত হয়ে কোথায় যাবে?অধিকাংশ নিরক্ষর। হিন্দিও বোঝে না। হলবী বা গোন্দি বলে। কোথায় যাবে? শহরে? কোন শহরে? কি কাজ পাবে?
    অসুখে-বিসুখে মরে হেজে নিশ্চিহ্ণ হবে।

    যাঁরা গৌতম ঘোষের "পার" সিনেমাটি দেখেছেন তাঁরা মনে করুন বিহারের কোন চামারটোলা থেকে রনবীর সেনা গোছের কারো আক্রমণে পোড়াঘর ছেড়ে কোন রকমে প্রাণ হাতে নিয়ে কোলকাতায় এসে নাসির ও শাবানার ঘুষ দিয়ে গঙ্গায় শুয়োর পার করানোর দৃশ্য।

    তাই আশীষ নন্দী ও অনেক সমাজতাত্ত্বিকরা আশংকার সঙ্গে লক্ষ্য করছেন যে মোট জনসংখ্যার মাত্র ৮% হয়েও উন্নয়নের নামে সবচেয়ে বেশি উচ্ছেদ হয়েছেন আদিবাসীরা, অন্যেরা নয়।
    অর্থাৎ এই সংকটে টিঁকে থার জন্যে অন্য কমিউনিটির তুলনায় এরা ill-equipped।
    তাই আদিবাদীদের জন্যে আলাদা প্যাকেজ চাই, পিটি যতই রাগ করুন।ঃ)))
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৭:৩০611362
  • কৃশানু,
    কেন? টি-২০ তে ফুলটস দিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ পাওয়া যায় না?ঃ))
    মাইরি, লাইনটা লিখতে গিয়ে একটু ভেবেছি। আসলে বলতে চেয়েছি বিয়ের পর মেয়েটি নিজের মত করে সংসার গড়ে তোলে, সাজায়, লজিস্টিক ঠিক করে, সেই সংসারের স্টেক হোল্ডার হয়, তার আনন্দই আলাদা। ছেলের দিক থেকেও বলছি।

    এবার আমার বক্তব্য চাকুরিজীবী বনাম কৃষক।
    আমার দাদুর ছিল জমির টান। তাই কোলকাতায় ভারতের রাজধানী থাকাকালীন সেক্রেটারিয়েটে চাকুরিরত ভদ্রলোক রাজধানী দিল্লিতে স্থানান্তরিত হবার সময় স্পেশাল অ্যালাউন্সের প্রলোভন নস্যাৎ করে ময়মনসিং শহরে গিয়ে ওকালত করতে আর তালুকদারি দেখাশুনো করতে লাগলেন।
    বাবা চাকরিসূত্রে বার্মা-ইন্দোনেশিয়া-বোকারো-বাহরিন ঘুরে ভিলাইয়ে স্থিতু হলেন। রাজস্থানের কোটা আর ইরানের কোয়েটার হাতছানি মায়ের অনুনয়ে ছাড়লেন।
    আমিও পেয়েছি সেই মানসিকতা। কেউ ঘরের কাছে ট্রান্সফার চাইলে চটে যাই। সঙ্গে বৌ থাকলে জাহান্নমে যেতে রাজি। সবাইকে বলতাম--জহাঁ ঘরওয়ালি হ্যায়, ওহি আপকা ঘর।

    কিন্তু কৃষক? ওদের কিসের এত জমি নিয়ে আঠা? কেন ভালো দাম পেলেও ওরা জমি ছাড়তে তা-না-না-না করে? কেউ কেউ বলেন এর পেছনে ওদের আবেগ। বেশ, কিন্তু আবেগ তো হাওয়ায় ওড়ে না, এর পেছনের ভিত্তিটি কী? আসুন, দেখতে চেষ্টা করি জমি নিয়ে এই আবেগের চোলি কে পিছে ক্যা হ্যায়?
    আমার অভিজ্ঞতার পুঁজি?
    তিন-তিনটে সরকারি উন্নয়নের ফলে আদিবাসীদের উচ্ছেদ ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়াটি বেশ কাছ থেকে দেখা।
    এক,
    এনটিপিসি ২১০০ মেগাওয়াট বিজলী প্ল্যান্টের জন্যে ১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ পর্য্যন্ত ৩৬ গড়ের কোরবা জেলায় টাঙ্গামার, নগৈখার, দর্রিখার, আগারখার ও জমনীপালী গাঁয়ের অধিগ্রহণ।
    ( প্রসংগতঃ এখানেই আমাদের গুরুপরিবারের সর্বপ্রিয় দিল্লিবাসী শ্রাবণীর চাকরিজীবনের শুরু।)
    দুই, ওয়েস্টার্ন কোলফিল্ডের কোসমুন্ডা-গেবরা খনির( ওপেন-কাস্ট) জন্যে ১৫টি গাঁয়ের অধিগ্রহণ। ১৯৮১-৮৪।
    আর ১৯৮৪-৮৬তে বাঙ্গো-হসদেও বাঁধ নির্মাণের জন্যে কুড়িটি গাঁয়ের অধিগ্রহণ।

    আমার কাজ ছিল ব্যাংকের জন্যে ঘরে ঘরে গিয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্ক পাতিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে ওদের ক্ষতিপূরণের টাকা জমা করানো। এ নিয়ে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে আকচা-আকচি বিস্তর।
    কাজেই ওদের সমস্যা শোনা, কোথাও কোথাও দরখাস্ত লিখে দেয়া, ওদের বার্ড়িতে অন্নগ্রহণ সবই করতে হয়েছে।
    তবু বলি, আমার দেখা ওপর ওপর খন্ডিত দেখা। এটাই সার্বিক সত্য নয়। ভিন্ন্মত শুনতে কান পেতে থাকব।
  • কল্লোল | 125.241.58.12 | ৩১ মে ২০১৩ ১৭:৪২611363
  • আদিবাসীদের জন্য আলাদা প্যাকেজ নিয়ে পিটি বা কেউ রাগ করবে কেন? কেউ তো একবারও বলেনি যে আদিবাসীদের অন্যায় সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
    কিন্তু প্যাকেজ তো হবে। সে তো এসসি এসটির জন্য কত কিছু সেই ৬৬ বছর ধরেই আছে। তাতে কি ঘণ্টাটা হচ্ছে?
    দুটি বাবু জগজ্জীবন রাম হয়েছেন, আর হাজার খানেক মহেন্দ্র হয়েছে হয়তো। ব্যস। বাকিরা আরও আরও গরীব ও অত্যাচারীত হতে হতে হতে হতে...............................
    তাই। এদের, যেমন আছে তেমন, অবস্থানে রেখে দিলে - শান্তিতে থাকে।
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৮:১৭611364
  • ক্ষতিপূরণ পেয়ে জমি দিতে কারা আগ্রহী আর কারা নয়? কেন নয়?

    --আগেই বলে দিই, ৩৬গড়ে মাথাপিছু জমি বেশ বেশি। জনসংখ্যা কম। আর উর্বরতা গাঙ্গেয় উপত্যকার সঙ্গে তুলনীয় নয়। সেচ ব্যব্স্থা ও বৃষ্টিপাত কম। তাই পাঁচ একর জমির মালিকও গরীব। আর ভূমিহীনের সংখ্যাও তুলনামুলক ভাবে কম।
    আবার বলি, এটা বস্তারের চিত্র নয়। এটা সমতলের গাঁয়ের চিত্র, এখানকার ভোরিয়া আদিবাসীরা মূলতঃ কৃষক, এখানে সবারই জমির পাট্টা আছে।
    সবচেয়ে জমি দিতে আগ্রহী তারা যাদের কিছু জমি আছে আর পরিবার বড়। যেহেতু পাট্টা পিছু একটি করে চাকরি পাবে তাই ওরা অধিগ্রহণের অনুসূচনা প্রকাশিত হতেই পাটোয়ারি কে দক্ষিণা দিয়ে এজমালি জমিকে পরিবারে যতগুলো লোক ততগুলো ভাগ করল। কালান্তরে অতগুলো চাকরি পেলে পরিবারটা গরীব থেকে মধ্যবিত্ত হয়ে গেল।
    এইসব দেখে প্রশাসন নিয়ম করল যে একটি পাট্টায় পাঁচ ডেসিমেল এর কম জমি থাকলে সেটা গ্রাহ্য হবে না। তাই সই, পাঁচ-পাঁচ ডেসিমেল এর পাট্টা তৈরি হতে থাকল। এর পর শুরু হল পাট্টা বিক্রি। আমাকে ৫০,০০০/- দাও, তো আমার পাট্টা তোমার নামে ব্যাক ডেটে ট্রান্সফার করে দিচ্ছি, তুমি চাকরি পাবে।

    কারা অনাগ্রহী? যারা ছোটো জমির মালিক। সবাই চাকরি পাবে না। তার চেয়ে জমিই ভাল।
    আর জমি হল আশ্রয়। অংগুঠাছাপ আদিবাসী ভয় পায়-- আজকাল অতগুলো চাকরি দেবে ? কবে দেবে? তার চেয়ে জমিটা নিশ্চিত আশ্রয়। এবার ফসল ভাল হয় নি, আগামীবারে হবে। জমি ওর সম্পত্তি, কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
    কিন্তু চাকরি? কাল চলে যেতে পারে। স্কিল কিছুই নেই যে অন্য কোথাও কাজ পাবে। অধিকাংশ সময় এদের ধোঁকা দিয়ে কোম্পানির পেটি কন্ট্রাক্টরের কাছে টেম্পোরারি লাগিয়ে দেয়া হয়। কাল এখন কাজ নেই বলে ঠিকে কাজের লোকের মত তাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে।
    কিন্তু সাতপুরুষের জমি?
    তাই দাদুর 'শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই' উপেন বাবুর আশ্বাস 'ও জমি লইব কিনে' শুনেও ছাড়তে চায় না।
    তাই 'ও আমার দেশের মাটি', আর সুনীল গাঙ্গুলী একটি উপন্যাসে দেখিয়েছিলেন গাঁয়ের যুবকের কাছে দেশ মানে কোন অ্যাবস্ট্রাক্ট ভারতমাতা নয়, বরং নদীর পারে ওর ছোট্ট গাঁ আর ক্ষেত।
    তাই ছত্তিশগড়ি গান 'জমি না ছোড়ব',
    তাই ছত্তিশগড়ের লোকনাট্য গম্মতে( আমাদের যাত্রার মত) গাঁ ছেড়ে হরিয়ানায়, ইউপিতে প্রতিবছর ইঁটভাটায় বা মল-আইনক্স নির্মাণে গাঁ ছেড়ে খাটতে যাওয়া গোটা পরিবারকে পালার সমাপ্তিতে গাঁয়ে ফিরে এসে আর কখনো গাঁ ছড়ব না বলে শপথ নিতে দেখানো হয়।
    তাই সর্দার সরোবর বাঁধের আদিবাসী কৃষক নিজের ভিটেয় দাঁড়িয়ে নর্মদার জলে ডুবে যাবার জিদ ধরে।
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৮:২৭611365
  • আর যাদের জমি নেই? তাদের কি হবে? সে সর্দার সরোবরেই হোক বা সিংগুরে, কি বস্তারে টাটা বা এসারের কারখানায় তারা কি পাবে জীবিকা হারানো ছাড়া?
    খেয়াল করুন, দিদির জমানায় যখন পরীক্ষা করা হল তখন আইনানুগ বিবাদরহিত জমির মালিক, যারা প্রথমদর্শনে ক্ষতিপূরণের হকদার তাদের জমিন মাত্র ৪০ একর।
    অথচ এই বিশাল জনসমুদায় যারা সিংগুরে চাষের ওপর নির্ভর ছিলেন? তারা ভাগচাষী, ক্ষেতমজুর। তারা আইনের হিসেবে টাটার থেকে কোন ক্ষতিপূরণ পাবে না। কিন্তু তারাই তো মেজরিটি! যাবে কোথায়?
    অর্থনীতিবিদ কল্যাণ সান্যাল দেখিয়েছিলেন যে বামরাজ্যের তিনদশক পরে পরিবারের তিন প্রজন্মের ভাগাভাগির স্বাভাবিক নিয়মেই গরীবের জমি কমেছে, বেহাত হয়েছে এবং আজ তার ফলে ভুমিহীনের সংখ্যা বঙ্গে বামফ্রন্টের ভূমিসংস্কারের সময় যা ছিল তার থেকে বেড়ে গিয়েছে।

    এর বিকল্প সমাধান কি হওয়া সম্ভব?
    না, আমি অস্ত্রের ঝনৎকারে সমাধান দেখতে পাইনা। ওটা নিরুপায়ের অভিশাপ মাত্র।
    তাহলে?
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৮:৩৩611367
  • কল্লোল,
    হয়ত এখানে "প্যাকেজ" শব্দটা ভুল ব্যভার করেছি। আসলে বলতে চেয়েছি যে পিটি এবং অন্য কেউ কেউ বলছেন-- আর্বান মাইগ্রেশন একটি ইউনিভার্সাল ডায়নামিক্স, আদিবাসীদের জন্যে আলাদা নিয়ম হবে কেন? দেখাতে চেয়েছি আমাদের চাকুরিজীবিদের আর্বান মাইগ্রেশন (স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে) আর আদিবাসীদের উন্নততর বিকল্প ছাড়াই উচ্ছেদ করা একেবারে আলাদা। ওদের সমস্যা আমাদের সঙ্গে না গুলিয়ে আলাদা করে প্রণিধান যোগ্য।
  • ranjan roy | 24.99.9.172 | ৩১ মে ২০১৩ ১৮:৪৭611368
  • এবারের মত ইতিঃ
    -------------------
    বিকল্প সমাধান কী আমি হরিদাস পাল জানিনা।
    দুটো জিনিস মাথায় ঘুরছে।
    এক,
    অভিজিৎ ব্যানার্জির বই Poor Economics পড়ে প্রত্যয় জন্মেছে যে গরীবদের জন্যে ওপর থেকে সমাধান না চাপিয়ে ওদের সঙ্গে নিয়ে সমাধান খুঁজলে সেটা অনেক প্র্যাকটিক্যা, ফিয়েজিবল্‌, ও সাস্টেইনেবল হবে।
    দুই,
    রিটায়ারমেন্টের আগে নাবার্ডের একটি ট্রেনিং করতে গিয়ে ( ট্রেনার ছিলেন বঙ্গের বোলপুরের নাবার্ড ট্রেনিং সেন্টারের) মনে হয়েছে যে দুনিয়াজুড়ে গ্রাম থেকে শহরে আসার ভীড় ও প্রবণতা ঠেকাতে অনেকেই ভাবছেন। বিশেষ করে শহরে স্পেসের অভাব, ইন্ফ্রাস্ট্রাকচারের ওপর চাপ, হেল্থ, ক্রাইম ও পরিবেশ সমস্যা নিয়ে সবাই চিন্তিত।
    বিকল্প ভাবা হচ্ছে সরকারি খরচায় ও প্রাইভেট সেক্টরের সহযোগিতায় গ্রামকে নষ্ট না করে পানীয় জল, বিজলি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, বাজার ও ভোকেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে গাঁয়েই শহরের সুবিধেগুলো এবং রোজগারের ব্যব্স্থা করা। যাতে কেউ শহরে যেতে না চায়।

    তিন, শুনতে এবং কাগজপত্তরে পড়তে ভাল লাগছে। কিন্তু এর বাস্তবায়নের জন্যে যে পলিটিক্যাল উইল ও ডেলিভারি সিস্টেম চাই তা কোথায়? আমি তো দেখছি না!
    (শেষ)
  • PT | 213.110.243.23 | ৩১ মে ২০১৩ ১৮:৫১611369
  • আদিবাসীর আলাদা প্যাকেজ পেলে আমার কেন আপত্তি হবে? কিন্তু কে যেন দেখিয়েছেন যে মুসলমান সমাজের মধ্যে অশিক্ষা ও অসহায়তা আদিবাসী সমাজের চাইতেও অনেক বেশী। তাহলে তাদের হয়েও কাউকে অস্ত্র ধরতে হবে অথবা আলাদা প্যাকেজের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সে আর হচ্ছে কই? আমার স্থির বিশ্বাস যে এদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা একটা স্থিতাবস্থার অচলয়াতনে পৌঁছেছে। একটা বিশাল কোন ঝাঁকুনি ছাড়া যার বিশেষ কোন বদল হবে না।
    Things cannot continue with just a bit of tinkering along the way........ The next government needs a radical and rational platform of ideas that recognizes how dysfunctional this system has become, and finds the courage to sweep below the carpet. http://blogs.timesofindia.indiatimes.com/TheSiegeWithin/entry/where-s-the-big-idea
  • কল্লোল | 37.97.29.169 | ৩১ মে ২০১৩ ১৯:২৮611370
  • ঝাঁকুনিটা কি ও কেমন। সেটাই তো কেউ জানে না।
    আমরা ক্রমশঃ দেশ চালানো নেতাদের দুর্নীতিতে অভ্যস্থ হচ্ছি। আর বছর ১০ পরে দুর্নীতি কোন বিষয়ই থাকবে না হয়তো।
    সারা দুনিয়া জুড়ে ক্ষমতাসীনদের দম্ভ, নির্লজ্জ অনৃতভাষণ, লোভ এক অভুতপূর্ব নিম্নতল ছুঁয়েছে।

    এমন নয় যে বামেরা ক্ষমতার কেন্দ্রে এলে চিত্রটা পাল্টে যাবে। কারন এদের কারুর উন্নয়ন দর্শন মনমোহনীদের চেয়ে মৌলিকভাবে আলাদা নয়। ব্যক্তি পুঁজির জায়গায় রাষ্ট্রীয় পুঁজি।

    যারা অন্য ধরনের উন্নয়নের কথা বলেন, তারা ক্ষমতার আশেপাশে নেই। তারা ক্ষমতায় এলে কি হবে, জানি না।

    হয়তো একটা যাচ্ছেতাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়, আর একটা মহাপ্লাবন, এই সব ক্লেদ, পূঁজ ও বদরক্ত সরিয়ে দিতে পারে।

    তারপর - শূণ্য থেকে শুরু।
  • aranya | 154.160.226.53 | ৩১ মে ২০১৩ ২০:৩৬611371
  • বস্তারে মাওবাদী আন্দোলনের লাভ-ক্ষতি নিয়ে রঞ্জন-দার কি অ্যাসেসমেন্ট একটু লিখবেন।
    সালোয়া জুড়ুম জনিত যা ক্ষতি (৬০০+ গ্রাম থেক উচ্ছেদ, ক্যাম্পে সাব-হিউম্যান জীবন যাপন, অগণিত খুন, রেপ ইঃ) - সেটা আমি মাওবাদী অন্দোলনের নেগেটিভ পয়েন্ট হিসাবে দেখছি, মাওবাদীরা না থাকলে রাষ্ট্র এত দাঁত-নখ বার করে ঝাঁপাত না।
    বস্তুত শুধু প্রাপ্তির দিকটাই লিখুন। ক্ষতির লিস্টি তো দেখতেই পাচ্ছি - পক্ষে, বিপক্ষে, মাঝখানে বহু মানুষ খুন, রাষ্ট্রের অত্যাচার ইঃ।
    এর বিপরীতে প্রাপ্তি-র তালিকা কি উল্লেখযোগ্য কিছু?
  • PT | 213.110.246.230 | ৩১ মে ২০১৩ ২১:৫৪611372
  • কল্লোলদাঃ আমিও আজকাল ভাবছি-শূণ্য থেকে শুরুর কথা!!
  • কল্লোল | 37.97.29.169 | ৩১ মে ২০১৩ ২২:১৮611373
  • ঃ-)
  • PT | 213.110.246.230 | ৩১ মে ২০১৩ ২২:৩৮611374
  • একটা ছবিতে দেখেছিলাম রাইন নদীর দুধারে মিত্র শক্তি carpet bombing করে সব কিছু ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তার পরে যে জার্মানি নতুন করে উঠে দাঁড়ায় সেটা অন্য দেশ-অন্য সমাজ!!
  • ranjan roy | 24.99.39.196 | ৩১ মে ২০১৩ ২৩:৪৩611375
  • পিটি,
    বিষম দুঃখে ব্রণের পিন্ড বিদীর্ণ হয়ে তার,
    কলুষপুঞ্জ করে দিক উদগার।
    ধরার বক্ষ চিরিয়া চলুক বিজ্ঞানী হাড়গিলা,
    রক্তসিক্ত লুব্ধ নখর একদিন হবে ঢিলা।
    ( স্মৃতি থেকে, কিছু বিভ্রম হতে পারে । টের পাই যে বুড়ো হয়েছি।)

    অরণ্য,
    আমার চোখে একটাই লাভ।
    যে জনগোষ্ঠীকে এরা কীটের মত মনে করত, মারিয়া-মুরিয়া আদিবাসীদের আফ্রিকান ট্রাইবদের সঙ্গে কলোনিয়ালিস্টের মত মনে করত, মরিয়া হলে তাদের প্রত্যাঘাতের শক্তি কী ভয়ানক হতে পারে তা এরা আশা করে নি। মুখে যাই বলুক , এদের হাড়ে কাঁপন ধরেছে।
    আজকের টেলিগ্রাফে তিনটে খবর দেখুনঃ
    ১) হোম মিনিস্টার সুশীল শিন্ধে আমেরিকা থেকে কাল দিল্লি ফিরে প্রেস কনফারেন্স করে জানিয়েছেন যে ওঁর আমেরিকায় এক নামকরা চোখের ডাক্তারের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাই উনি খবর পেয়েও ফিরতে পারেন নি। কাল ছত্তিশগড় যাবেন।
    ২) কেন্দ্রীয় আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী ভি কিশোর চন্দ্র দেও বলেছেন----এই মাওবাদী হামলা সম্ভবতঃ ১৭ তারিখে সুরক্ষা বাহিনী ও সলওয়া জুড়ুম বাহিনীর দ্বারা আদিবাসী মেয়ে ও বাচ্চাদের হত্যার বদলা। উনি সিলিউরিটি ফোর্সের দ্বারা গত বছর থেকে আদিবাসী মেয়েদের হত্যার ঘটনার লম্বা ফিরিস্তি দেন। উনি প্রতিবন্ধিত সলওয়া জুড়ুম বাহিনীর কাজকে নিন্দা করে বলেন আদিবাসীরা দু'দিক দিয়েই পিষছে। সলওয়া জুড়ুম ও মাওবাদী।
    ৩) [ এটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ]ঃ
    গ্রামীন বিকাশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রীকে এক লম্বা চিঠি লিখে ক্যাবিনেট কমিটির ঝারখন্ডের সারান্ডার বনে দুটো মাইনিং প্রজেক্টকে অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করতে বলেছেন। নইলে ওই এলাকায় ৩০০ কোটি টাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা মার খাবে, মাওবাদীদের ঠেকানো কঠিন হবে।
    ওখানে JSW Steel কে আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজ খনির জন্যে ১০০০ হেক্টর জমি আর জিন্দাল পাওয়ার ও স্টিল প্ল্যান্টের জন্যে ৫০০ একর জমি দেয়ার কথা হয়েছে। এগুলো অ্যাডভাইসরি কমিটিকে বাইপাস করে বনমন্ত্রীর বিভাগ দিয়েছে।
    রমেশ বলছেন-- এর ফলে ওই উন্নয়ন প্ল্যান যাতে গৃহনির্মাণ, রোজগার ও মূলভূত সুবিধা দিয়ে আদিবাসীদের হৃদয় জয় করার কথা ছিল সেসব বসে জাবে।

    [ পিএম শুনছেন?]
    উনি বলছেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের এই স্টেপ দেখে রাজ্য সরকার উৎসাহিত হয়ে ওখানে ৮০০ বর্গকিমি এলাকায় ১৫৫ মাইনস খোলার ফন্দি করছে।
    ৪) এদিকে মাও অধ্যুষিত এলাকার জন্যে IAP বা ইন্টেন্সিভ অ্যাকশন প্ল্যান ((৯টি রাজ্যে) দু'বছর ধরে চলছিল। তাতে থানা, পোস্ট অফিস, রাস্তা , বিজলীএ এইসব কাজ করার কথা ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে তাতে ৭০% খরচ হয়েছে , তাতেও সত্যিকারের কাজ কিছুই হয় নি। তাই যোজনা বন্দ্ধ করা হল। এখন সেদিনের হামলার পর আবার শুরু হচ্ছে।
    হয়ত কিছুদিন পরে সব শান্ত হবে, কিন্তু ঠিক আগের মত হবে না। অনেকদিন রাষ্ট্রযন্ত্র সমঝে চলবে আদিবাসীদের।

    কিন্তু বেসিক ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্টের কি হবে? সেই শুন্য স্পেস কে ভরবে?
  • rabaahuta | 172.136.192.1 | ০১ জুন ২০১৩ ০১:৩২611376
  • PT, Date:31 May 2013 -- 02:24 PM প্রসঙ্গে, আমার উদ্দিষ্ট 'আদিবাসীপ্রেমী' দের প্রতি একটু বোধয় পক্ষপাত আছে, তাই আমি দেখতে পাচ্ছিনা তাঁরা কিভাবে আদিবাসীদের মাইগ্রেটেড সম্পন্ন জীবন ছেড়ে জঙ্গলে আটকে রাখতে চাইছেন। দুয়েকটা রেফারেন্স দেবেন? কোন রেটরিকেল প্রশ্ন নয়, সত্যি আমি দেখতে পাইনি, 'উন্নততর' যেকোন মাপকাঠিতেই, জীবনের সম্ভাবনা এড়িয়ে জঙ্গলে আটকে রাখতে কোন আদিবাসীপ্রেমী চাইছে আদিবাসীদের। অরণ্যের, তথা নিজভূমের 'অধিকার', আর জঙ্গলে আটকে রাখার মধ্যে আমি তফাৎ করছি।

    হিংসা কোন সমাধান নয় জানি এবং বিশ্বাস করি, কিন্তু নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করার জনেই যদি কেউ অস্ত্র তুলে নেয়, তাহলে তাকে নিতান্ত বিপথগামী বা ধান্দাবাজ বা ভূল বোঝা জনগণ বলতে দ্বিধা হয়।

    আর একটা কথা, আদিবাসী আর নিপীড়িতকে সমার্থক করে দিতে অস্বস্তি হচ্ছে, যেখানে আমি এমন একটা রাজ্যে জন্মেছি ও বড় হয়েছি, যেখানে একজন এফেকটিভ ও মানুষের শ্রদ্ধা পাওয়া মুখ্যমন্ত্রী জন্মসূত্রে আদিবাসী ছিলেন। ত্রিপুরার দশরথ দেব।
  • PT | 213.110.246.230 | ০১ জুন ২০১৩ ০৯:৪১611379
  • এটা সংখ্যা দিয়ে বোঝানো যাবে না। তবে আদিবাসীদের জল-জঙ্গলের অধিকার পাইয়ে দেওয়া নিয়ে যত শব্দব্যয় করতে শুনেছি শহরের বিদগ্ধ জনেদের তার ক্ষুদ্র শতাংশ বক্তব্য শুনিনি তাদের শিক্ষিত করে মূলস্রোতে নিয়ে আসার জন্য। এদের এই তাত্বিক অবস্থানটা খুব আশ্চর্যজনক। আমরা কম্পুতে টাইপে আদিবাসীদের কল্যাণের জন্য তক্কাচ্ছি, নিজের ছেলেপুলেদের বিশ্বের অধুনিকতম প্রকৌশলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হোয়ার সুযোগ দিচ্ছি আর আদিবাসী ঘরের কিশোর-কিশোরিদের উস্কোচ্ছি জল-জঙ্গলের "অধিকারের"-এর জন্য লড়াই করতে!!

    আগেও বলেছি-আবার লিখি। এই সব তাত্বিকদের একটা বৃহৎ অংশই পারমাণবিক বিদ্যুতের বিরুদ্ধে কথা বলে কিংবা সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পে অতকে দেওয়ার আন্দোলন করে। স্রেফ সমাপতন?
  • PT | 213.110.246.230 | ০১ জুন ২০১৩ ০৯:৪২611380
  • *প্রকল্প আটকে
  • কল্লোল | 111.63.158.90 | ০১ জুন ২০১৩ ১৫:২৫611381
  • পিটি।
    আগে আদিবাসীদের ইস্কুল-বিজলী-পানি দেওয়া হোক। তরপর ওসব উন্নয়ন ভাবা যাবে।
  • PT | 213.110.243.23 | ০১ জুন ২০১৩ ১৮:০১611382
  • সে ব্যাপারে কোনই আপত্তি নেই। কিন্তু তাহলে তো লড়াইটা মূলস্রোতের ভারতীয়দের দাবীর সঙ্গেই জুড়ে যাচ্ছে।
    ........whether an even bigger security threat is the failure of successive elected regimes over more than 60 years of co-called Independence to provide even the most basic essentials of life to 80% of the population. http://blogs.timesofindia.indiatimes.com/jugglebandhi/entry/enemy-within
  • pi | 78.48.231.217 | ০১ জুন ২০১৩ ১৯:০৪611383
  • জল-জঙ্গলের অধিকারের সাথে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের অধিকারের বিরোধ থাকবে কেন ? এগুলো একসাথেই নয় কেন ? নাকি, শহরে এসে আমাদের মতন না হলে উন্নয়ন হল না ? মূলস্রোতে নিয়ে আসা মানেই বা কি ?
  • PT | 213.110.243.23 | ০১ জুন ২০১৩ ২১:৩৯611384
  • উল্টোটা একবার চেষ্টা করে দেখলে হয়। শহর ছেড়ে জঙ্গলে গিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে ওদের মত করে বছর খানেক থেকে তারপরে আদিবাসীদের জল-জঙ্গলের অধিকার নিয়ে বক্তব্য রাখা যেতে পারে!!
  • a x | 86.31.217.192 | ০১ জুন ২০১৩ ২২:৫৬611385
  • আর্গুমেন্টগুলো পুরোপুরি রুটি নেই তো ওরা কেক খায়না কেন গোছের হচ্ছে।
  • চান্দু মিঁঞা | 127.193.32.27 | ০১ জুন ২০১৩ ২৩:০৩611386
  • ঝাঁকুনিটা খুব সোজা পিরামিডের মাথা কেটে গোড়ায় দাও। আজকালের বাজারে আমাদের মোট উৎপাদন মেপে ফেলা খুব শক্ত নয় তার র‌্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন শুরু হোক। ন্যূনতম আর সর্বাধিক রোজগারের অনুপাত বেঁধে দেওয়া হোক। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ঊর্ধসীমা বেঁধে দেওয়া হোক। এ ভাবে যা পাওয়া যাবে তা দিয়ে দরিদ্রতমের জন্য বাসস্থান হোক, শিক্ষার ব্যবস্থা হোক। চাইলে সব হয়।
  • PT | 213.110.246.230 | ০১ জুন ২০১৩ ২৩:৩২611387
  • ঠিক! রাজনৈতিক ইচ্ছে থাকলে এই ৬৫/৬৬ বছরেই অনেক কিছু করা যেত।
  • rivu | 85.102.68.137 | ০১ জুন ২০১৩ ২৩:৪২611388
  • কল্লোল বাবুর Date:31 May 2013 -- 03:14 PM পোস্টে দেখলুম "একটু খোঁজ নিন, ভারতের বড় বাঁধগুলো কোথায়। সেগুলোর প্রায় বেশীরভাগই আদিবাসী এলাকায়। খনিগুলো কোথায়? উত্তর ঐ একই।" বাঁধ হবে তো নদী থাকলে, খনি হবে তো খনিজ সম্পদ থাকলে। এখানে আদিবাসী বা অন্য যে কেউ থাকুক, গভর্নমেন্ট চাইবে তাকে উত্খাত করতে। এরকম কোনো উদাহরণ আছে কি যেটা স্ত্রাতেজিকালি বাঁধ বা খনি হওয়ার খুব উপযুক্ত জায়গা, কিন্ত নন আদিবাসীরা ছিলেন বলে এগুলো করা হয়নি?
  • অসমর্থ | 96.129.172.26 | ০২ জুন ২০১৩ ০৪:৪১611390
  • জিও রিভু
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন