এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • মাওবাদী হামলা ও মহেন্দ্র কর্মা

    Ishan
    অন্যান্য | ২৬ মে ২০১৩ | ১৬৯৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • PT | 213.110.243.21 | ০৫ জুন ২০১৩ ১২:০৫611457
  • সব ব্যাপারে কি সকলের মতামত নেওয়াই যায়? যে মানুষটা কোনদিন বিদ্যুতের ব্যবহার করেনি তাকে স্থানচ্যুত করে সেই জায়গায় বাঁধ তৈরি করে বিদ্যুত উৎপাদনে তার কি লাভ - সে বুঝবে? আর ৮০ ভাগকে বোঝানো গেলেও ২০ ভাগ হয়ত বুঝতেই চাইবে না। আমেরিকার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলে বিদ্যুত উৎপাদনে ভারতের উপকার হবে কিনা সে ব্যাপারে কি ভারতবাসীর অভিমত যাচাই করা হয়েছিল? সারা ভারতে রেল লাইন পাতার সময় কিংবা কলকাতায় মেট্রো রেল তৈরি করার সময় কতজন ভারতীয়র মতামত নেওয়া হয়েছিল?

    আসলে আমরা বেড়ে উঠেছি হেনরির লড়াইয়ের গান শুনে (তৎসহ শম্ভু ভটচাযের নাচ)। হেনরি এখনও আমাদের কাঁধে সিন্ধবাদের ভূত হয়ে বসে আছে। আর যে দেশে হেনরির গান বাঁধা হয়েছিল তারা টেকনোলজির ব্যবহারে সারা বিশ্বকে টেক্কা দিচ্ছে। মাত্র ৫% মানুষ ৩০% কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশিয়ে দিচ্ছে।

    তবে lcm-এর কথাটা অনেকটা ঠিক বলে মনে হয়। পেটের টানে আদিবাসীরাই আদিবাসীপ্রেমিদের প্রত্যাশার বিরুদ্ধেই জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে আসবে।
  • কল্লোল | 111.63.145.107 | ০৫ জুন ২০১৩ ১২:৪৫611458
  • একটা বিষয় যেটা মানুষের উপকার করবে, যারা ঘর-বড়ি জীবিকা থেকে উচ্ছেদ হবে তাদেরও উপকার হবে - এটা যদি না বোঝানো যায়, তো তেমন কাজ না করাই ভালো।
    জন হেনরী মার্কসবাদী মতে লুডাইট ছিলেন। আমি আজ মনে করি জন হেনরী ঠিকই করেছিলেন।
    তোমার কথাটি হজম হলো না - "আর যে দেশে হেনরির গান বাঁধা হয়েছিল তারা টেকনোলজির ব্যবহারে সারা বিশ্বকে টেক্কা দিচ্ছে।"
    কি বলছো খেয়াল আছে? আমেরিকায়, অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসীদের নৃশংস ভাবে খুন ও উচ্ছেদ না করলে, আজকের আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া হতো না, যারা "টেকনোলজির ব্যবহারে সারা বিশ্বকে টেক্কা" দেয়। স্প্যানিশ, বৃটিশ ও ফ্রেঞ্চদের ঐ নির্বিচার হত্যা ও কলোনী স্থাপন বড় ভালো কাজ ছিলো - এ কথা বলতে চাইছো কি? তাহলে এই তর্ক এখানেই শেষ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।
  • lcm | 34.4.162.218 | ০৫ জুন ২০১৩ ১২:৫৩611459
  • যেখানে সাদারা সাম্রাজ্য বিস্তার করে নি, সেখান থেকেও ট্রাইবাল পপুলেশন আস্তে আস্তে কমে আসছে।
  • PT | 213.110.243.21 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৩:৩৬611460
  • আমার "টেক্কা" শব্দের ভেতরে আদিবাসীদের উচ্ছেদের প্রতি কোন সমর্থন নেই। খুন-উচ্ছেদ না করেও টেকনোলজির ব্যবহার বাড়ানো যায়-যদি সরকার চায়। গত ৬৫ বছরে আমাদের দেশের সরকার ঠিক কি করতে চেয়েছিল তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়। আবার এমনও নয় যে আদিবাসী ছাড়া আর বাকি সকলের দারুণ উন্নতি হয়েছে। কোন রিপোর্ট সম্ভবতঃ দেখিয়েছে যে ভারতের মুসলমানেদের অব্স্থা আদিবাসীদের চাইতেও খারাপ।

    অবিশ্যি সত্যি সত্যি আমেরিকার বিরোধিতা করতে গেলে এই সব কম্পু-টম্পু ব্যবহার করে তক্কা-তক্কিও বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। এইসব টেকনোলজি তো আমেরিকা থেকেই এসেছে-আর সেই দেশের শুরুটাই তো আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সম্পুর্ণ বিনষ্ট করে!!
  • lcm | 34.4.162.218 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৩:৪১611462
  • *ভালো কিছু নয়
  • lcm | 34.4.162.218 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৩:৪১611461
  • অদ্দুর যেতে হবে না। আইলা ঝড়ের পরে সুন্দরবনের মানুষের অবস্থা ছত্রিশগড়ের আদিবাসীদের থেকে বালো কিছু নয়। কিন্তু ওখানে কোনো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানী ফ্যাক্টরি খুলতে যাচ্ছে না, মাইনিং ও নেই, তাই প্রতিবাদের যুৎসই সুযোগ নেই, মাও নেই, নক্সাল নেই, মিডিয়া নেই - কেউ নেই।
  • ranjan roy | 24.99.187.96 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৪:০১611463
  • বিবি ও পিটি,
    আপনাদের বক্তব্যের সঙ্গে আমার কথার কোন বিরোধ নেই। কিভাবে?
    দেখুনঃ
    আপনারা" স্ব-ইচ্ছায়" কেউ হায়্দ্রাবাদে গেছেন , কেউ খড়গপুরে, মনের মত পেশা পেয়ে।
    কি করে? কারণ, আপনারা অর্ডিনারি পার্সন ন'ন। আপনারা এমপাওয়ার্ড।ফলে আপনাদের অপশন আছে পছন্দ মতন বেছে নেয়ার বা রিজেক্ট করার।( বেশ এলিজিবল ব্যাচেলর দের মতন, কি বলেন?ঃ))
    কেন হলেন? কারণ আপনারা কোলকাতা নামক মহানগরীতে বড় হয়েছেন। বিশেষ ইন্ফ্রাস্ট্রাকচারের সুযোগ পেয়েছেন। ওদিকে বস্তার বা জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের এক্কেবারে বেসিক নীডস টুকু মেটানোর ইনফ্রাস্ট্রাকচার/সুযোগ নেই।
    সেইটা আগে করে দিন না! মাথার ওপর ছাদ, পানীয় জল, মেডিক্যাল ও শিক্ষার প্রাথমিক পরিষেবা ও কলেজ। তখন দেখবেন ওরাও কেউ কেউ পিটিদার ছাত্র হতে আইআইটি তে আসবে বা হায়্দ্রাবাদে বিবিদার কাছে শিক্ষানবিসী করবে।

    আরো একটা ঘটনা বলিঃ সলওয়া জুড়ুমের যে ক্যাম্পে আমি কেন্দ্রীয় পরিদর্শন দল (অ্যাডাল্ট এডুকেশনের) সঙ্গে ঘটনাচক্রে অক্টোবর ২০১০ এ গিয়েছিলাম সেখানকার একটি মেয়েকে রায়পুরে একটি ওয়ার্কশপে কম্প্যু ট্রেনিং এর জন্যে নিয়ে আসা হয়।
    আমি পরে ব্রেকের সময় ওকে আলাদা করে জিগ্যেস করিঃ তোমরা কোথায় থাকতে? তোমার বাবাও কি এই ক্যাম্পে আছেন? আগে তোমাদের পারিবারিক আয়ের উৎস কি ছিল? এখন বাবা এখানে কি করছেন? তুমি কি চাও?

    তো মেয়েটি জানায় ও কলেজে পড়ে শিক্ষিত হতে চায়। শহরে চাকরি করতে চায়। বিয়ে? লজ্জা পায়। বলে-পরে, আগে পড়ব।

    ওরা হল সম্পন্ন কৃষিজীবী পরিবার। ৩৫ একর জমি। বঙ্গের হিসেবে একফসলী উৎপাদকতা ধরলে এখানকার ১০ একরের মত হবে।
  • PT | 213.110.243.21 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৪:২৬611464
  • আহা-অত শিক্ষিত হওয়ার কথা বলছি না। বিহারের গ্রাম থেকে উৎখাত হয়ে কলকাতায় হাতে-টানা রিক্সা চালচ্ছে যে মানুষটা তার সঙ্গে একজন জঙ্গল থেকে উৎখাত হওয়া মানুষের ফারাক কোথায়? আমি কেন এই বিহারি আর ঐ আদিবাসী মানুষ দুজনের জন্য একি অশ্রু বিসর্জন করব না?

    আরও একটা ব্যাপার। বিভিন্ন রাজ্যের প্রত্যন্ত মানুষেরা মিলিটারিতে যোগ দেয়। আদিবাসীদের কেন মিলিটারিতে recruit করা হবেনা?
  • ranjan roy | 24.99.101.207 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৪:৪৬611465
  • অরণ্য,
    আরে না না! তখন কি জানা ছিল যে রাস্তার নীচে বুবি ট্র্যাপ? তখন মনে করা হয়েছিল যে মেন রোডের ওপর দিনের বেলায় এসব হবে না। আর দিল্লি থে সর্দারজী এক আই এ এস (ডিরেক্টর জেনারেল, ন্যাশনাল লিটারেসি মিশন) টিম নিয়ে এলেন একগাদা লোকজন ও একটি মারুতি জীপে দশজন আশা মিলিটারি সশস্ত্র ইনসাস ধারী জোয়ান সঙ্গে। আর আমি বাঙ্গাল হরিদাস পাল আমাদের দুটো গাড়ি চারজন মেয়ে ও ছয়জন ছেলে নিয়ে যেতে পারব না?
    আসলে মাওদের ওপর ভরসা ছিল যে লিটারেসি মিশন! তাই ওরা হামলা করবে না।
    ধমতরী ছাড়াতেই সিকিউরিটি চেক আপে আমাদের বকে দিল। সর্দারজীর গাড়ি থেকে লালবাতি খুলিয়ে দিল। নইলে ওই দেখে সরকারি আমলা বা পুলিশ অফিসার ভ্বে গুলি ছুটে আসবে। আর আমরা ব্যানারে গাড়ির উইন্ড শিল্ডে বড় বড় করে সাক্ষরতার প্রচার লটকিয়ে চললাম।
    এগুলো গতবছর বুলবুলভাজায় মাওবাদ ঃ এক বিহঙ্গম দৃষ্টি নামে লিখেছি।
  • ranjan roy | 24.99.101.207 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৫:১০611467
  • পিটি,
    মাইরি আপনি কিছুতেই বুঝতে চাইছেন না। গোটা বিহার কি চাষবাস জমিজিরেত ছেড়ে দিয়ে কোলকাতাতে র্রিকশা টানছে? ওদের জনসংখ্যার কত ভগ্নাংশ?
    তেমনি পালামুর গরীব মানুষ বর্ডারে ৩৬গড়ের সরগুজা জেলায় রামানুজগঞ্জে অম্বিকাপুরে রিকশা টানছে তো? আবার উড়িষ্যার দুর্ভিক্ষপীড়িত জেলাগুলো কালহান্ডি-কাটাভাঞ্জি থেকে গরীব মানুষেরা ৩৬ গড়ের ভিলাই-রায়পুরে সাইকেল রিকশা চালাচ্ছে।
    এলসিএম বা রবাহুতো যেমন দেখিয়েছেন যে পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে কিছু মানুষ সবসময় শহরে আসছে। এই নিয়ে ভাবার দরকার নেই।
    তেমনি ৩৬গড়ের বিভিন্ন শহরে আদিবাসীরা আসছেন। সবরকম কাজে। আবার ৩৬গড়ে বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে(আমাদের ব্যাংকেও) আদিবাসীদের জন্যে ১৮% রিজার্ভেশন, ১৫% এস সিদের জন্যে। ফলে বিভিন্ন সরকারি পদেও খলকো, এক্কা, তিগ্গারা আছেন। লক্ষ্যণীয় যেসব জায়গায় মিশনারীরা আশ্রম বা স্কুল খুলেছে সেই এলাকা থেকে এদের পার্সেন্টেজ খুব বেশি।
    সেই মূলভূত ইন্ফ্রাস্ট্রাকচারের , বেসিক অ্যামেনিটিজ এর প্রশ্ন।
    কিন্তু বস্তারের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে মারিয়া-মুরিয়া-গোন্দ) এই সংখ্যাটা খুব কম। কারণ ওরা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত।
    সেই ভেরিয়ার এলউইন ( আদিবাসীদের সোশ্যাল অ্যান্থ্রোপলজির পিতামহ) ছাড়া এদের নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় নি।

    আর আপনার এই কথা যে অ্যাদ্দিন তো কোন জনগোষ্ঠীকে জিগ্যেস করে কিছু ইন্ট্রোডিউস হয় নি, তো আজ এইসব নতুন নতুন ভ্যান্তারা কেন?

    আপনি বৈজ্ঞানিক। আপনার থেকে ঠিক এই কথাটা আশা করিনি। এদ্দিন যা হয়ে এসেছে সেই পথেই চলতে হবে? নতুন কিছু ভাবা হবে না?

    আপনাকে বই পড়তে বলব বা রিপোর্ট পড়তে বলব সেই আস্পদ্দা করছি না। শুধু বলছি ব্যাপারটা শুধু আদিবাসীপ্রেমীদের নয়। সারাদুনিয়াতেই এখন(ইকনমিস্ট/ পলিসি মেকার্স/ অ্যান্থ্রপল্জিস্ট)
    বাজ ওয়ার্ড হচ্ছে inclusive growth।
    প্রথমে অসুবিধে হবে ,কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী sustainable and replicable গ্রোথের জন্যে ইন্ক্লুসিভনেস এর গুরুত্ব, সবাইকে গাঁ থেকে তাড়িয়ে নিয়ে শহরে ভীড় বাড়ানোর চেয়ে গাঁ কেই উন্নত করার গুরুত্ব আর শেষে সেই প্রক্রিয়ায় জনগোষ্ঠিকেই ,stake holder বানানোর কনসেপ্ট এখন সর্বজন স্বীকৃত। ভারত সরকারের পলিসি লেভেলেও। এই খাদ্যের অধিকার, শিক্ষার অধিকারের মত। এর পেছনে অমর্ত্য সেন মশাইয়েরও অবদান আছে।
    এ নিয়ে আজকাল এক স্বতন্ত্র লিটারেচার গড়ে উঠেছে--irrespective of political affiliation।
  • PT | 213.110.243.21 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৭:০৭611468
  • কথা তো অনেক হচ্ছে-বই লেখাও হচ্ছে। কাজে হচ্ছে কই? আর হচ্ছেনা বলেই নাকি মাওদের রমরমা?

    আমার তো মনে হয় আদিবাসীদের সঙ্গে "আলোচনা" করে বিদ্যুত প্রকল্প বা লোহা নিষ্কাশনের কাজ শুরু করার চিন্তাটাই সব চাইতে অবৈজ্ঞানিক এবং অবাস্তব প্রস্তাব।

    আর গাঁকে উন্নত করে শহরের মত করার প্র্স্তাব শুনতে শুনতে আমি প্রায় বৃদ্ধ হতে চললাম। আমি experimentalist বলে বেশী তাত্বিকতায় আঁশটে গন্ধ পাই। বিশেষতঃ বাঙালীদের মধ্যে ঘনাদা (পেমেন মিত্তিরের) থেকে শুরু করে অধুনা মাওব্যথীদের তাত্বিকতার প্রাবল্যে শেষ পর্যন্ত বিশেষ কিছু হয়ে ওঠেনি।

    ওদিকে দেশের বড় শহরগুলোতে স্লামে বাস করা মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যা আটকানোর ক্ষমতা মেধা বা মাও কারওরই নেই।
  • কল্লোল | 116.76.250.176 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৭:০৮611469
  • লসাগু।
    "যেখানে সাদারা সাম্রাজ্য বিস্তার করে নি, সেখান থেকেও ট্রাইবাল পপুলেশন আস্তে আস্তে কমে আসছে।"
    কোথায় কিভাবে কতোটা কমছে, জানা যাবে কি?
    "আস্তে আস্তে কমে আসছে" - আর ইনকা, মায়া, অ্যাজটেকদের মতো নির্বিচার গণহত্যা করে জনগোষ্ঠীকে স্রেফ 'না' করে দেওয়া হয়েছে - এ দুটোর মধ্যে কোন তফাৎ লক্ষিত হয় কি?
    একটা ফিল্ম দেখে নিতে পারেন http://viooz.co/movies/9190-soldier-blue-1970.html

    পিটি।
    আমেরিকা অন্যায়ভাবে ভিয়েৎনাম আক্রমনের বিরোধীতার জন্য দূরভাষ, যন্ত্র চালিত শকট, আপেক্ষিকতা এসব বাদ দিয়ে করতে হতো নাকি?
    যাগ্গে, ক্লাসের চাপ বেড়েছে বোধ হয়। রোজ সকালে বেল খেও।
  • PT | 213.110.243.21 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৭:১৪611470
  • যাচ্চলে টেকনোলজির সঙ্গে রেড-ইন্ডিয়ানদের নির্বংশ করার কথা তো আমি তুলিনি। আমি বলেছি যে জন হেনরিকে ঝেড়েফেলে ওরা টেকনোলজিকে আশ্রয় করেছে-এমনকি কালো মানুষেরাও!!

    আর ইনকা, মায়ারা গণহত্যা করত না? দুর দুরান্ত থেকে অন্য ট্রাইবদের ধরে এনে জ্যান্ত বলি দিত সুর্যদেবতাকে। বোধহয় জ্যান্ত মানুষের হৃত্পিন্ড খুঁড়ে বের করে উৎসর্গ করত। স্প্যানিসরা নৃশংসতার দিক থেকে আরও efficient ছিল - এইটাই ফারাক।
  • কল্লোল | 116.76.213.100 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৭:৩৯611471
  • এটা তুমিই তো লিখেছিলে ঃ
    Name: PT IP Address : 213.110.243.21 (*) Date:05 Jun 2013 -- 01:36 PM
    অবিশ্যি সত্যি সত্যি আমেরিকার বিরোধিতা করতে গেলে এই সব কম্পু-টম্পু ব্যবহার করে তক্কা-তক্কিও বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। এইসব টেকনোলজি তো আমেরিকা থেকেই এসেছে-আর সেই দেশের শুরুটাই তো আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সম্পুর্ণ বিনষ্ট করে!!
    আবার এটাও বলছো ঃ
    Name: PT IP Address : 213.110.243.21 (*) Date:05 Jun 2013 -- 05:14 PM
    যাচ্চলে টেকনোলজির সঙ্গে রেড-ইন্ডিয়ানদের নির্বংশ করার কথা তো আমি তুলিনি। আমি বলেছি যে জন হেনরিকে ঝেড়েফেলে ওরা টেকনোলজিকে আশ্রয় করেছে-এমনকি কালো মানুষেরাও!!

    আমি আবারও বলছি ঃ
    আমেরিকা অন্যায়ভাবে ভিয়েৎনাম আক্রমনের বিরোধীতার জন্য দূরভাষ, যন্ত্র চালিত শকট, আপেক্ষিকতা এসব বাদ দিয়ে করতে হতো নাকি?

    ইনকা, মায়া, অ্যাজটেকদের যুদ্ধ বিগ্রহ, তাদের যুদ্ধবন্দীদের সাথে কি ব্যবহার করতো - তাই দিয়ে তুমি স্প্যানিয়ার্ডদের, বৃটিশদের, ফ্রেঞ্চদের আমেরিকান ইন্ডিয়ান গণহত্যাকে মান্যতা দিচ্ছ। এরপর, আফ্রিকার কোন কোন জাতি যুদ্ধে পরাজিতদের নরমাংস খেতো - তাই দিয়ে ইউরোপ আমেরিকার দাস ব্যবসাকে মানবজাতির পক্ষে অতি উপকারী বলবে। তা না হলে আমরা জ্যাজ পেতাম না, আঙ্কেল টমস কেবিন পেতাম না, পল রোবসন পেতাম না, কার্ল লিউইস পেতাম না, পেলে পেতাম না, সোবার্স পেতাম না। হা ভগবান, কন্ডোলিজা রাইস আর ওবামাও পেতাম না।
    ওফ - যাগ্গে, ক্লাসের চাপ বেড়েছে বোধ হয়। রোজ সকালে বেল খেও। দুপুরে কলমী শাকের ঝোলও খেও। শেষ পাতে এট্টু দই।
  • PT | 213.110.243.21 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৭:৫৯611472
  • কল্লোলদা
    তুমি আমার মুখে তোমার পছন্দের কথা বসাচ্ছ। আমি কোথাও কোন সাম্রাজ্যবাদকে মান্যতা দিইনি। ইতিহাস নতুন ভাবে লেখা যায়না-তাই এটা বলার কোন উপায় নেই যে ইনকা, মায়ারা ইউরোপে যেতে পারলে স্প্যানিস সভ্যতা ধ্বংস করে দিত কিনা। কিন্তু তারাও হিংস্রতা প্যাকটিস করত-এবং বেশ ভাল ভাবেই করত। উদাহরণ আরেকটু বাড়িয়ে বলা যেতে পারে যে ভারতীয়রা কোথাও উপনিবেশ স্থাপন করেনি মানে এই নয় যে রাজা অশোক দেশের মধ্যে গণহত্যা করেনি।

    আমি 1:36-এর আগে লিখেছিলামঃ "আর যে দেশে হেনরির গান বাঁধা হয়েছিল তারা টেকনোলজির ব্যবহারে সারা বিশ্বকে টেক্কা দিচ্ছে। মাত্র ৫% মানুষ ৩০% কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশিয়ে দিচ্ছে।" দ্বিতীয় বাক্যটায় তাদের ডমিনেশনের কথাটা পরিষ্কার করেই বলা ছিল। তবে টেকনোলজি প্রচুর ব্যবহার করতে গেলে যে স্থানীয় আদিবাসীদের নির্বংশ করতে হবে তার কোন মানে নেই। দুটো আলাদা ঘটনা এবং বিজ্ঞানের আবিষ্কার সব্সময় রাজার পেশীশক্তির আস্ফালনের সঙ্গে যুক্ত নয়।

    তুমি হয়ত কলমির শাক বা বেল ওখানে পাও না। তাই বলে একটু বেশী করে টক দই খেতে আপত্তি হওয়ার কথা নয় তো!!
  • lcm | 34.4.162.218 | ০৫ জুন ২০১৩ ১৯:৪৯611473
  • এস্কিমো
  • কল্লোল | 111.63.129.222 | ০৫ জুন ২০১৩ ২১:০৬611474
  • পিটি। আমি তো তোমায় উদ্ধৃত করলাম মাত্র।
    "অবিশ্যি সত্যি সত্যি আমেরিকার বিরোধিতা করতে গেলে এই সব কম্পু-টম্পু ব্যবহার করে তক্কা-তক্কিও বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। এইসব টেকনোলজি তো আমেরিকা থেকেই এসেছে-আর সেই দেশের শুরুটাই তো আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সম্পুর্ণ বিনষ্ট করে!!"

    আমেরিকা দেশটা শুরু "আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সম্পুর্ণ বিনষ্ট করে"। আর "এইসব টেকনোলজি তো আমেরিকা থেকেই এসেছে"। তাই, "অবিশ্যি সত্যি সত্যি আমেরিকার বিরোধিতা করতে গেলে এই সব কম্পু-টম্পু ব্যবহার করে তক্কা-তক্কিও বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।"
    আশা করি তোমার মুখে তোমার কথাই বসেছে।
    তাহলে এবার আমার কথা - আমেরিকার ভিয়েৎনাম আক্রমন বিরোধীতা করতে গেলে এই সব দূরভাষ, যন্ত্র চালিত শকট, আপেক্ষিকতা বাদ দিতে হয়। কম্পু-টম্পুও বটে। তবে সেটা ইরাক আক্রমনের বিরোধীতা করতে গেলে। কারন ভিয়েৎনামের সময় আমাদের দেশে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া কম্পু ব্যবহার করার লোক ছিলো না।
    কি, তাই তো?
    তুমি লিখেছো -
    "তাই এটা বলার কোন উপায় নেই যে ইনকা, মায়ারা ইউরোপে যেতে পারলে স্প্যানিস সভ্যতা ধ্বংস করে দিত কিনা। কিন্তু তারাও হিংস্রতা প্যাকটিস করত-এবং বেশ ভাল ভাবেই করত। উদাহরণ আরেকটু বাড়িয়ে বলা যেতে পারে যে ভারতীয়রা কোথাও উপনিবেশ স্থাপন করেনি মানে এই নয় যে রাজা অশোক দেশের মধ্যে গণহত্যা করেনি।"
    আমেরিকার আদিবাসীরা খুব হিংস্র ছিলো। তাই ইউরোপীয়দের কামান বন্দুক দেগে ওদের নির্মূল করে দেওয়াটায় খারাপ কিছু নেই।
    অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধে খুব নৃশংসতা করেছিলো। অতএব, ভারতীয়রা উপনিবেশ স্থাপন করেনি বটে, তবে তারাও কম হিংস্র ছিলো না। জেনারেল ডায়ারও তবে খুব খারাপ কিছু করেনি।
    তাই তো?
    তথ্যের খাতিরে। ভারতীয়রা দূর প্রাচ্যে বাণিজ্যে যেতো। এখানকার ধর্ম ও সংষ্কৃতি নিয়ে যেতো। বোরোবুদুর, ইন্দোনেশিয় রামায়ণ ইঃ সিংহল তো জয়ও করেছিলো। গণহত্যার গল্প নেই বোধহয়। থাকলে এতোকালে ঐতিহাসিকেরা লিখে ফেলতেন।
    অশীন দাশগুপ্তের প্রাচীন ভারতের নৌ বাণিজ্য নিয়ে খুব ভালো কাজ আছে। দেখতে পারো।
  • PT | 213.110.246.230 | ০৫ জুন ২০১৩ ২১:৪৩611475
  • "আমেরিকার আদিবাসীরা খুব হিংস্র ছিলো"-একথা কোথাও লিখিনি তো। লিখেছি ইনকা আর মায়াদের সম্পর্কে। যাদের হিংস্রতার কথা ঐতিহাসিক ভাবে স্বীকৃত।

    ২০১৩ সালে বসে ১৭৫৭-র ঘটনা সম্পর্কে শুধু আলোচনা করা যায়-কোন দলে যোগ দেওয়া যায় না। তবে একথা অবশ্যি বলা যায় যে গুটি কয়েক সাহেব এদেশে বসে ২০০ বছর রাজত্ব চালিয়েছিল শুধু নিজেদের কোমরের জোড়ে নয়। ভারতীয়দের (ভারত+পাক+বাংলা) নিজস্ব হিংস্রতা তাদেরকে অক্সিজেন জুগিয়েছিল।

    আর ভারতীয়রা কতটা হিংস্র সেটা ৪৭-এর দাঙ্গা, পুর্ব-বঙ্গের বাঙ্গালী হত্যা, ভিন্দ্রেনোআলার অপকীর্তি, শিখেদের পুড়িয়ে মারা, বাবরি ধ্বংস, মোদির দাঙ্গা....... থেকে মাওবাদীদের বিভৎস হত্যালীলা ইত্যাদির একটা তালিকা বানালেই বোঝা যাবে। সামাজিক অত্যাচারের কথা তো ছেড়েই দিলাম। প্রয়োজনের বেশী ধান উৎঅপাদন করা সমাজে পৃথিবীর বৃহত্তম সংখ্যক মানুষকে অভুক্ত বা অর্ধভুক্ত করে রাখাতাও এক ধরণের সন্ত্রাস-সেটা জেনারেল ডায়ারের হিংস্রতার চাইতে কোন অংশেই কম বলে আমি মনে করিনা।

    এবারে হেনরির ব্যাপারটা একটু বোঝানোর চেষ্টা করি। আমি যা সার বুঝেছি সেটা হচ্ছে, আদিবাসীপ্রেমি, পারমাণবিক বিদ্যুত বিরোধী, বাঁধ বিরোধী, ন্যানো বিরোধী শিক্ষিত শহুরে লোকজন আসলে রাজনৈতিক ভাবে anti-technology। তারা দ্বিচারিও বটে-কেননা প্রয়োজন মত শহরে থাকার কারণে তার এই সব টেকনোলজিও ব্যবহার করে। জন হেনরির বংশধরেরা সম্ভবতঃ এই দ্বিচারিতা থেকে বেরিয়ে এসে টেকনোলজির প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েছে। কেননা এই টেকনোলজির ব্য়্বহার একধরণের সাম্য এনেছে সমাজে। যেমন কিনা ভারি কিছু তুলতে এলে হলে একজন মহিলা এবং পুরুষ যন্ত্রের সাহায্যে একই দক্ষতায় কাজ করতে পারে। কিংবা গর্ভনিরোধোক বড়ির কল্যাণে একজন নারী গর্ভধারণের ভয় ছাড়াই একজন পুরুষের মতই যৌনতা উপভোগ করতে পারে....... ইত্যাদি ইত্যাদি। এ নিয়ে পরে আরও কিছু লেখা যেতে পারে।
  • কল্লোল | 125.242.164.205 | ০৫ জুন ২০১৩ ২২:৩৬611476
  • তুমি লিখলে, "আমেরিকার আদিবাসীরা খুব হিংস্র ছিলো"-একথা কোথাও লিখিনি তো। লিখেছি ইনকা আর মায়াদের সম্পর্কে। যাদের হিংস্রতার কথা ঐতিহাসিক ভাবে স্বীকৃত।
    ইনকা আর মায়ারা (আমি অ্যাজটেকদের কথাও লিখেছিলাম) জার্মানী বা জাপান কি সুইডেনের আদিবাসী এটা তো জানতাম না। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এরা আমেরিকারই আদিবাসী। তারাই তো হিংস্র বলে তুমি লিখলে।
    একে বলে ভাবের ঘরে চুরি।
    আমি অ্যান্টি টেকনোলজি বা অ্যান্টি সায়েন্স নই। যে টেকনোলজি মানুষের ক্ষতি করে যে সায়েন্স মানুষের ক্ষতি করে আমি তার পক্ষে নই। সে সব ছেড়ে দিয়েও বলতে পারি আমেরিকার খারাপ কাজের বিরোধীতা করতে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাকে অস্বীকার করার প্রয়োজন নেই। যারা আমেরিকায় থাকা আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাকে সম্মান দিতে আমেরিকার খারাপ কাজগুলোকে বৈধতা দেয়, তাদের করুণা করা ছাড়া আর কিই বা করতে পারি।

    আমরা অনেক কিছুই করি বাধ্য হয়ে। আমি/তুমি বাসে-গাড়ীতে চড়ি। তাতে বায়ুদূষণ হয়। এসব কথা তোমায় বলা বাতুলতা মাত্র - তুমিও জানো। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছো। যে বাসটা এলো, সেটা কেরসিন মেশানো ডিজেলে চলছে - হুড় হুড় করে কালো ধোঁয়া বেরুচ্ছে। কি করবে ? চড়বে না? চড়বে কারন তুমি চড়তে বাধ্য। একে অসহায়তা বলা যায় দ্বিচারিতা নয়।
  • pi | 172.129.44.120 | ০৫ জুন ২০১৩ ২২:৪৮611478
  • রঞ্জনদার বুলবুলভাজার লেখার তলায় বিপ্লব রহমানের মন্তব্য থেকে ঃ

    'একবার কুলাউড়ার খাসি নেতা অনিল ইয়াং ইউম আমাকে বলেছিলেনঃ

    "যে পর্যটন আমার গ্রাম ধ্বংস করবে, নষ্ট করবে গাছবাঁশ, পানের বরজ, পাহাড়ি ছড়া, আর আমার মেয়েদের, আমি নেতা হিসেবে নয়, এই পাহাড়ের সন্তান হিসেবে বলছি, যে কোনো মূল্যে সেই পর্যটন আমরা রুখে দেবো। আমি শহর চাই না, দালান চাই না, রাস্তা চাই না, বিদ্যুত, টিভি, সিনেমা — এসব কিছুই চাই না। আমার অরণ্যে যুগ যুগ ধরে আমার মতো করেই আমি বাঁচতে চাই!" '

    'গাঁও ছোড়াব নাহি' র কথা আবার মনে পড়ে গেল।
    এই ভয়েসগুলোকে আদিবাসীদের ভয়েস বলা যাবেনা কেন ?
  • pi | 172.129.44.120 | ০৫ জুন ২০১৩ ২২:৫১611479
  • এর মানে এই নয় যে ১০০% আদিবাসীই এই কথা বলছেন। কিন্তু যাঁরা বলছেন, তাঁদের কাছে সেই কথা অনুযায়ী চয়েস থাকবে না কেন? যা তাঁরা চাইছেন, তা জোর করে কেড়ে নেওয়া হবে কেন, যা চাইছেন না, তার বিনিময়ে? বা, কখনো, বিনিময়ে কিছুই না দিয়ে?
    আর আবারো, এর সাথে স্বাস্থ্য, শিক্ষা দেবার কোন বিরোধ নেই।
  • Tapas | 126.202.194.89 | ০৫ জুন ২০১৩ ২৩:০৯611480
  • Jio

    "যে পর্যটন আমার গ্রাম ধ্বংস করবে, নষ্ট করবে গাছবাঁশ, পানের বরজ, পাহাড়ি ছড়া, আর আমার মেয়েদের, আমি নেতা হিসেবে নয়, এই পাহাড়ের সন্তান হিসেবে বলছি, যে কোনো মূল্যে সেই পর্যটন আমরা রুখে দেবো। আমি শহর চাই না, দালান চাই না, রাস্তা চাই না, বিদ্যুত, টিভি, সিনেমা — এসব কিছুই চাই না। আমার অরণ্যে যুগ যুগ ধরে আমার মতো করেই আমি বাঁচতে চাই!"

    Er poreo katogulo lok takko kore jachche, korei jachchhe.
  • a x | 138.249.1.206 | ০৫ জুন ২০১৩ ২৩:৩৫611481
  • পিটি তো বললেন, ওগুলো আদিবাসীদের ভয়েস হলেও, উহারা জানেনা উহারা কি হারাইতেছে।

    "সব ব্যাপারে কি সকলের মতামত নেওয়াই যায়? যে মানুষটা কোনদিন বিদ্যুতের ব্যবহার করেনি তাকে স্থানচ্যুত করে সেই জায়গায় বাঁধ তৈরি করে বিদ্যুত উৎপাদনে তার কি লাভ - সে বুঝবে?"
  • কৃশানু | 213.147.88.10 | ০৫ জুন ২০১৩ ২৩:৫৩611482
  • কিন্তু তর্ক করা বারণ এ আবার কেমনতর সারমন!!
  • ddt | 135.20.82.166 | ০৬ জুন ২০১৩ ০২:৩২611483
  • পিটিবাবু যা বলছেন তা কিন্তু অন্যভাবে আমাদের সামনে আগে এসেছে, ভবিষ্যতেও আসবে। পিটি বলছেন বিহার ওড়িসার লোকেরা জমিচ্যুত হয়ে কলকাতায় রিকশা টানতে পারে, আদিবাসীদের কেন দুদুভাতু ট্রিটমেণ্ট? (আশাকরি মিসরিপ্রেসেন্ট করলুম না)

    আপাতভাবে এর উল্টো যুক্তি সিঙ্গুরের সময় শুনেছিলুম। 'চাষার ছেলে কি সারা জীবন চাষা হয়ে থাকবে?' এখানে চাষার ছেলেকে রিকশা টানতে পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে না। তবে তারও ভাল করা হচ্ছে। সে এবার শিল্পে বা অন্য কোথাও চাকরি করবে। বেশি আয় করবে। আদিবাসীদেরও নিশ্চয়ই শহরে রিকশা টেনে আখেরে ভালই হবে। তাই দুটো তর্কে মিল আছে।

    আবার একই সুত্রে পন্ডিতগণ (অমর্ত্য সেন?) প্রবন্ধ লিখেছিলেন এই দ্যাখো ইংলন্ডে আগে লোকে চাষবাস করত। এখন দিব্যি কারখানা আপিসে কাজ করে সুখে আছে। সবই উন্নয়নের খেল। আমাগো ব্যাঙ্গলে এরম হলে ইতিহাসের অমোঘ ভবিতব্য হিসেবে শিরধার্য করে নেওয়া ভাল।

    প্রতিটা ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হচ্ছে উন্নতির এক অকাট্য ফর্মুলা আছে। সেই গতিপথ দিয়ে হেঁটে ব্যাঙ্গল ইংলন্ড হবে। চাষার ছেলে গাড়ি কারখানায় চাগরি করবে, কাল গাড়ি হাঁকাবে। আদিবাসীরা বিহারিদের মত মাইগ্রেটেড লেবার হবে।
    এরম মনে করার কারণ (জ্ঞানত বা অজ্ঞানত) মনে হয় এই যে আজকের শিল্পোন্নত ধনি দেশগুলো এক ট্রান্সিশন দিয়ে গেছিল যখন তাদের আদিবাসী-ইকুইভালান্টদের রিকশা টানতে পাঠানো হয়েছিল।

    যা আপত্তিকর লাগে,

    ১। চাষ থেকে শিল্পনির্ভর সমাজের দিকে গতি ইতিহাসের নিয়ম হতে পারে, কিন্তু উন্নত দেশে ঘটনাটা ঘটেছিল বিশাল এক টাইমফ্রেমে। প্রায় ২০০-৩০০ বছরের। ইংল্যান্ডের এন্ড রেজ়াল্ট দেখে দুমদাম করে ইন্ডিয়াতে জোর করে চাষার জমি কেড়ে নেওয়া, আদিবাসীদের ফুটিয়ে দেওয়া (কেননা মাটিতে বক্সাইট আছে, শিল্পের কাজে লাগবে) যুক্তিযুক্ত নয়।

    ২। উন্নত দেশে কৃষি থেকে শিল্পে ট্রান্সিশন অত্যাচার খুন জখমের মধ্যে দিয়ে হয়েছিল। ওদের দেশে হয়েছিল বলে আমরা সালোয়া জুদুম, হার্মাদ বাহিনী নামাব, আদিবাসীকে উচ্ছেদ করব এটা কিন্তু কেমন কেমন। সমাজ অমোঘ গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে না বলেই মনে হয়। গায়ে আঁচ লাগলে 'অমোঘ উন্নয়নী গতিপথ' মেনে চুপ করে থাকব কেন, চেল্লাব।

    ৩। আদিবাসীদের কেন শহরে আসতে হবে তার পেছনে কারণটা একটু দেখা দরকার। এলে তাদের ভাল হবে না মন্দ সেসব পরের প্রশ্ন। ছত্তিসগড় ওড়িসার প্রতিরোধ আন্দোলনের একটা বড় কারণ এ্যাফেক্টেড লোকেরা প্রাকৃতিক সম্পদ সারেন্ডার করতে চাইছে না। সম্পদ নিতে চাইছে সরকারের হাত দিয়ে কোনো বড় কম্পানি। অর্থাৎ, উচ্ছেদ হবে কি না তার পেছনের প্রশ্নটা চাষার জীবিকা আগে, না খনি-কারখানা আগে। আবার সেই সিঙ্গুর স্টাইলে তর্কগুলো আসবে। সংক্ষেপে, কারখানা হলে কিছু লোক কাজ পাবে, তবে অঞ্চলের মানুষের ভাল হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। আরো আছে দূষণ, পরিবেশ ভারসাম্যের ভীষণ জরুরি প্রশ্নগুলি। সেইসব হিসেবে রাখলে কেন আদিবাসীদের রিকশা টানতে আদৌ আসতে হবে তার জবাব অতো সহজ থাকে না।

    এছাড়া কয়েকটা সাইড ইস্যু আছে।

    ১। যে দেহাতিদের শহরে কাজ করতে দেখা যায় তাদের বড় অংশ সিসনালি মাইগ্রান্ট লেবারার। ফসল তোলার বা রোপনের সময় এরা গ্রামে ফিরে কাজকম্মো করে। এদের সাথে আদিবাসীদের তুলনা করা ভুল হবে যাদের জমি খনি কম্পানি নিয়ে নিয়েছে।

    ২। সিসনালি মাইগ্রান্টদেরও প্রচুর ইস্যু আছে। কেন এদের মাইগ্রেট করতে হচ্ছে, জীবিকা কেন অর্থকরী থাকছে না, এসব খুব জরুরি প্রশ্ন। কিন্তু এরম শোষণের প্রকৃতি আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়ার থেকে আলাদা তা বুঝতে অসুবিধে হয় না।

    ৩। এরম দেহাতিও আছে যাদের জমি চলে গেছে ('দো বিঘা জমিন' মনে করুন; বন্যা, ভাঙনেও অনেক জমি চলে যায়, নোনাডাঙার অনেকে আইলা ভিক্টিম)। কিন্তু তাদের সাথেও আদিবাসীদের এক করা যায় না। জনজাতিগত, সংস্কৃতিগত পার্থক্য থেকে যায়। দেহাতিরা এক অর্থে আমাদের ভাই বেরাদার। যত সহজে একজন দেহাতি বিহারি কলকাতা শহরে খাপ খাওয়াতে পারবে, ঝাড়খন্ডের মুন্ডা, সাঁওতালরা পারবে?
  • কল্লোল | 111.63.219.58 | ০৬ জুন ২০১৩ ০৬:৩৫611484
  • কৃশানু।
    এটা তর্ক হচ্ছে?
    ১) ইউরোপীয়রা আমেরিকায় সেখানকার আদিবাসীদের নৃশংসভাবে নির্মূল করে কলোনী স্থাপন করেছিলো। তার বিরুদ্ধে যুক্তি(!) হলো, আমেরিকার আদিবাসীরাও তো খুব হিংস্র ছিলো, তারা ইউরোপে কলোনী করতে এলে এর চেয়েও বেশী হিংস্র হতে পারতো।
    ২) আমেরিকার খারাপ কাজের নিন্দা করতে গেলে, "আমেরিকার বিরোধিতা করতে গেলে এই সব কম্পু-টম্পু ব্যবহার করে তক্কা-তক্কিও বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।" এই যুক্তি(!) আসে।
  • lcm | 34.4.162.218 | ০৬ জুন ২০১৩ ০৮:২৯611485
  • যাক ঘুরেফিরে ব্যাপারটা আমেরিকা ব্যাশিং-এ এসে গেছে। এবার এই থ্রেড ...
  • bb | 127.221.49.125 | ০৬ জুন ২০১৩ ০৮:৩৩611486
  • আমেরিকা ব্যাশিং এলে আবার ধ্রুপদীদের অসুবিধা হয়.....
  • PT | 213.110.246.230 | ০৬ জুন ২০১৩ ০৯:১৬611487
  • কল্লোলদা
    ইনকা/মায়া আর আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সম্পর্কে আমার বক্তব্য বর্তমানের ভৌগলিক অব্স্থানের ভিত্তিতে। হাতের কাছে ম্যাপ থাকলে একটু দেখে নিও। আর এই দুটো প্রাচীন জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মধ্যে একটা বিরাট ফারাক ছিল। যে কারণে এত ধ্বংসকান্ডের পরেও ইনকা/মায়াদের সভ্যতার বিস্তর নিদর্শন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সেরকম কিছুই প্রায় অবশিষ্ট নেই। সম্ভব্তঃ এই ব্যাপারটা ইনকা/মায়াদের স্থানীয় ভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার, হিংস্রতা/নিষ্ঠুরতার সঙ্গে দাসপ্রথার ব্যবহার ইত্যাদির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। না হলে তাদের পক্ষে মাচু-পিচুর মত বিশাল এবং অন্যান্য সব মন্দির, পিরামিড ইত্যাদি structure তৈরি করা সম্ভব হত না (দানিকেনের তত্ব বাদ রেখে বলছি)। এর মানে এই নয় যে স্প্যানিসরা খুব ভাল লোক ছিল আর গোটা ল্যাটিন আমেরিকাতে খুব ভাল কাজ করেছিল।

    আবার বলি আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের নির্বংশ করার সঙ্গে আজকের আমেরিকার টেকনোলজির ব্যবহারের কোন যোগাযোগ আছে বলে মনে করি না।

    ddt
    আদিবাসীদের জন্য জঙ্গল-মহলে কারখানা হলে আমার কোনৈ আপত্তি নেই। কিন্তু সেটাও তো হতে দেওয়া যাবেনা কেননা তাহলে তাদের ট্র্যাডিশনাল জীবন-যাপনে বাধা আসবে বলে জানাচ্ছে পন্ডিতেরা। কাজেই তাদের পেতর ভাতের জন্য রিক্সা-তানা একটা টেম্পোরারি ব্যবস্থা। মিলিটারিতে রিক্রুট করার কথাও লিখেছিলাম। দেখেননি বোধহয়।

    a x
    রেললাইন পাতার আগে কেউ আপনার মতামত নিয়েছিল বলে তো মনে হয় না। আপনি কোথায় থাকেন জানিনা কিন্তু নিশ্চই কোন কম্প্লেন ছাড়াই ট্রেনে চড়েন বলে ধরে নিতে পারি। এই রেল লাইন পাততে কত সহস্র তিন ফসলী চাষের জমির বারোটা বেজেছে ভেবে দেখুন।
  • lcm | 34.4.162.218 | ০৬ জুন ২০১৩ ০৯:৫৭611490
  • সেকি, অসুবিধা কেন হবে। হাতের কাছে সহজ টার্গেটগুলো - নন্দ ঘোষ, জ্যোতি বোস, আমেরিকা ... আমিও সুযোগমত ব্যবহার করি...
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন