এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারীদিবস ঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম ঃ কিছু সংযোজন

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৪০৮ বার পঠিত
  • ঘরকন্না ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প

    যে জীবন ফড়িং-এর দোয়েলের, মানুষের সাথে তার যে দেখা হয় না, সেকথা জানাই ছিল। কিন্তু যেসব জীবন মানুষের-মানুষীরই, তাদের আশেপাশেই থেকেও সেইসব জীবনের সাথেও যে মানুষের আসলে দেখা হয় না, তাও মাঝে মাঝে এমনভাবে জানতে পেরে অবাক হতে হয়।
    এই ক’দিন আগে আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রবন্ধ ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে দেবেন না কেন ?’ পড়ে নানাজনের কাছ থেকে পাওয়া মতামতগুলো পড়তে পড়তে কথাগুলো মনে হল। সেদিনটা দোলের ছুটির পরের দিন, কাগজের প্রিন্ট বেরোয় নি তাই লেখাটা শুধু আবাপ’র ওয়েব সংস্করণেই বেরিয়েছিল, যাঁরা পড়েছেন তাঁরা প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষিত, উচ্চবিত্তও। এবং মহিলারা বেশির ভাগই কর্মরতা। তাই এই লেখা, এই ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে’র ধারণা হয়তো সরাসরি তাঁদের জন্য নয়। যে মধ্যবিত্ত / নিম্ন মধ্যবিত্ত গৃহবধুদের কথা ভেবে এই লেখা, তাঁদের হয়ত এই লেখা পড়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু তাঁদের যে আমরা একেবারেই চিনি না, এমনও তো নয় ! কিন্তু দেখা গেল এই লেখা যাঁরা পড়েছেন সেই পাঠকগোষ্ঠীর সিংহ ভাগ মহিলা ও কিছু পুরুষ এই ব্যাপারটায় নানাভাবে আপত্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। লেখকের কাছে প্রতিটি মতামতই মূল্যবান, বিরুদ্ধ মতামত বেশীই মূল্যবান কারণ তা প্রায় টর্চের আলোর মত যেকোন ধারণার অন্ধকার কোণায় আলো ফেলে দেখিয়ে দেয় তার ভুল ভ্রান্তি। উল্টোদিকে বিরুদ্ধ মত যারা পোষণ করেন, লেখকেরও দায় থাকে তাঁদের বোঝার ভুল থাকলে তা ধরিয়ে দেওয়া।
    তাই প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো গৃহশ্রমের / গৃহকর্মের মূল্যায়নই এই লেখার মূল কথা। গৃহকর্ম বলাই বেশী ভালো কারণ ততটা শ্রমসাধ্য নয় কিন্তু অনেকটা যত্ন ও ভালোবাসা (এবং আত্মত্যাগ) মেশানো যে সব ছোট ছোট কাজ একটা ঘর কে সংসার করে তোলে আর গৃহবধু কে পরিচারিকার থেকে আলাদা করে সেগুলোর কথাও এখানে ভাবা হয়েছে। সেই গৃহকর্ম যাতে একটা সম্মানজনক পেশায় পরিণত হতে পারে এবং গৃহবধুও নিজেকে বঞ্চিত না ভাবেন বা ‘আমি তো কিছু করি না’ জাতীয় হীনম্মন্যতায় না ভোগেন, সেই জন্য তাঁর একটা নিয়মিত বেতনের কথা ভাবা, যেটা তাঁর স্বামীর বেতনের একটা অংশ (ধরুন ২০%)হিসেবে নিয়মমাফিক সরাসরি তাঁর কাছে আসবে (যেভাবে ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে আসে)। স্বামী এখানে এমপ্লয়ার নন, দাতা তো ননই, তাঁর রাজী হওয়া না হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেভাবে ট্যাক্স, পি এফ এর টাকা কাটা যায় সেই ভাবেই নিয়মমাফিক তাঁর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন কাটা হবে (অবশ্যই যদি স্ত্রী চাকরী না করেন)। সেই বেতন ঘরের কাজের দরুণ মহিলাটির নিজস্ব উপার্জন, আর এই উপার্জনই তাঁকে স্বনির্ভর করে তুলবে। নিজের ছোটখাটো চাহিদার জন্য স্বামীর কাছে হাত পাততে হবে না, কৈফিয়ৎ দিতেও হবে না। একজন গৃহবধু সসম্মানে বলতে পারবেন ‘আমি ঘরের কাজ করি’।
    এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অজস্র যুক্তি ও আপত্তির মধ্যে প্রথমই হল, গৃহবধুর আর আলাদা করে কাজ কি ? ঘরের সব কাজই তো পরিচারিকা করেন, বাচ্চাকে পড়ান টিউটর আর স্কুলে নিয়ে যায় পুলকার বা স্কুলবাস। তাছাড়াও এইসব মহিলারা স্বামীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতখরচা পান, তাতেই তাদের শখ-আহ্লাদ দিব্য মিটে যায়। আর খাওয়া-পরা সমেত সংসারের বড় খরচ তো পুরুষটির(স্বামী)উপার্জন থেকেই হয়, এর পর আবার মাইনে কিসের ! এই কথাগুলো পড়েই মনে হয়েছিল আমরা কবে খিড়কি থেকে সিংহদুয়ারের বাইরের পৃথিবীটা চিনতে শিখব ! অথচ আমরা যে একেবারেই সংবেদনশীল নই তাও নয়, গায়ক অভিজিৎ যেদিন রাস্তায় থাকা মানুষদের গালাগাল দিয়েছিলেন, সেদিন আমরা তাঁকে ছেড়ে কথা বলিনি। বাড়ির পরিচারিকাদের এমনকি যৌনকর্মীদেরও শ্রমিকের সম্মান দেওয়া নিয়ে আমরা ভাবি। তাহলে গৃহবধুদের ব্যাপারে আমরা এত উদাসীন কেন !
    আসলে আমরা অনেকেই নিজেদের চাকরী করা জীবনটা দেখতে পাই, পাশের বাড়ির / ফ্ল্যাটের গৃহবধুর আরামের জীবনটা দেখতে পাই আর দেখতে পাই নীচের তলার বাসিন্দা আমার ‘কাজের মাসি’র কঠিন জীবনটা। এর বাইরে মধ্যবিত্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন উপার্জন স্তরের বাসিন্দা যে গৃহবধুরা তাঁদের জীবনটা আমরা দেখতেই পাই না। এই শহর কলকাতায় আমাদের আশেপাশেই তাঁরা থাকেন, কোনো একটা সরকারী ইস্কুলের গেটের কাছে ছুটির সময়টা একটু দাঁড়াবেন, বাচ্চাদের নিতে আসা মায়েদের কথায় কান দেবেন, তাঁদের চেহারা-সাজগোজের দিকে নজর দেবেন, বুঝতে পারবেন গৃহবধু কাকে বলে। একপর্ব রান্নাবান্না সেরে বরকে কাজে পাঠিয়ে বাচ্চাকে নিতে এসেছেন, গিয়ে বাকি রান্নাটা সারতে হবে, ফেরার পথে হয়ত এটা ওটা বাজারও করে নিতে হবে। ঠিকে কাজের লোক একটা এঁদেরও আছে, বাসন মেজে ঘর মুছে কি সপ্তাহে একদিন কিছু কেচে দিয়ে যায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। রোজকার কাচাকাচি, ঘরগোছানো, বাচ্চাকে স্নান করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, জামা কাপড় ইস্ত্রী করা, অতিথি আপ্যায়ন, অসুখে সেবা, এই সব কাজ এঁরা নিজের হাতেই করেন। এই ডিউটি নিয়ে কিছু বলার নেই, এঁদেরও নেই, আমারও নেই কিন্তু দিনের শেষে এঁরা কেন নিজেদের ‘স্বনির্ভর’ মনে করবেন না, উপার্জনের প্রশ্নে মাথা নীচু করে থাকবেন, সেই প্রশ্ন আমাকে ভাবায়। কারণ এটাই বাস্তব, পয়লা বৈশাখে নিজের মাকে একটা শাড়ী দিতে গেলে এই মহিলাদের বরের কাছে হাত পাততে হয়, আর হাত পাতলেই সব সময় হাত ভরে এমনও নয়। এই জীবনটা ‘আমাদের’ নয়, কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের ওই প্রান্তে যে বিরাট সংখ্যক মহিলা বাস করেন যাদের স্বামীরা ছোটখাটো চাকরী বা ব্যবসা করেন, তাঁদের জীবনটা এইরকমই।
    কিন্তু নিয়ম যদি করতেই হয় তাহলে তা সকলের জন্যই করতে হবে আর তাতে আখেরে কিছুটা যাতে সুরাহা হয় সেটাই দেখতে হবে। স্বামীর মাইনের / উপার্জনের কিছু নির্ধারিত অংশ যদি স্ত্রী-র হাতে আসে আর মহিলাটি যদি তার থেকেই পরিচারিকার মাইনে দেন তাহলে একটা কিছুটা সুরাহা হতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে যিনি বেশির ভাগ কাজ নিজের হাতে করেন আর যাঁর সব কাজ পরিচারিকা করে দেয় তাঁদের মধ্যে উপার্জনগত ভাবে একটা তফাৎ থাকবে। স্বামীকে আর আলাদা ভাবে বৌকে হাত-খরচ দিতে হবে না, আর স্ত্রীও নিজের এই উপার্জনের কতটা সংসারে খরচ করবেন, কতটা নিজের হাতে রাখবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন। কিন্তু তাঁকে স্ব-নির্ভর বা উপার্জনক্ষম নন একথা আর বলা যাবে না কারণ মাসের শেষে তাঁর হাতেও নিয়ম করেই কিছু টাকা আসছে আর সেই টাকাটা তাঁর স্বামী দিচ্ছেন না। এই কথাটিই এই ব্যবস্থার মূল কথা আর এই কথাটা হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে তাই আবার লিখতে হল।
    কিন্তু যাঁরা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মতামত দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বুঝতেই পারছেন না, বাড়ির কাজ যা অনেকটা নিজের জন্যও করা, যা ভালবেসে করা তার জন্য মাইনে কেন ! পুরুষেরা কেউ কেউ আরও এক পা এগিয়ে বলেছেন যে মাইনে থেকে ভাগ দিতে হলে তো কাজের লোক রাখলেই হয়, বিয়ে করার দরকার কিসের ! আর মেয়েরা অনেকেই একটা কথা বলেছেন যে সংসারের পেছনে একজন মহিলার যা অবদান তা কি টাকা দিয়ে মাপা যায় ! অর্থাৎ নিজের সংসারে কাজ করে টাকা নিতে তাঁদের ‘ইগো’তে লাগছে। আবারও বুঝিয়ে বলি, দেখুন, একটা রাস্তায় যানজটের জন্য দেরী হলে সেই দেরীর দরুণ ক্ষতিটুকুও অর্থমূল্যে মাপা যায় কারণ তা দেশের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। ওপরে যেসব কাজের তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা সমেত একটা পূর্নাঙ্গ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে গৃহবধুরা যে তাকে তাকে সুষ্ঠু ভাবে চালান, সেটা কাজের মানুষটির(পড়ুন পুরুষটির)উৎপাদনশীলতাকে ও কর্মক্ষমতাকে নিশ্চই প্রভাবিত করে কিন্তু সেই বিরাট পরিমাণের শ্রম আমাদের অর্থনীতিতে উহ্যই থেকে যায় যুগের পর যুগ তার কোন ‘মূল্যায়ন’ হয় না, এটা কতটা সঙ্গত সেটা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। সংসারের ‘সমস্ত’ কাজের জন্য কাজের লোক রাখা এমনিতেই সম্ভব নয়, যতটা রাখা সম্ভব তার জন্যও খরচের অঙ্ক বিরাট। কিন্তু সেই খরচ দিয়েও একজন গৃহবধুর মত পরিষেবা পাওয়া যায় না, এইটা ছেলেদের ও মেয়েদের সবাইকেই বুঝতে হবে। সেভাবে দেখতে গেলে কোনো পেশাতেই পেশাগত দক্ষতা, যত্ন ও ভালোবাসা টাকা দিয়ে মাপা যায় না; যে যত্ন নিয়ে একজন আদর্শ ডাক্তার একটি শিশুর জন্ম ঘটান বা যে ভালোবাসা নিয়ে একজন শিক্ষক কঠিন বিষয়কে সহজ করে শেখান তাও কি টাকায় মাপা যায় ? তবু সেই সব পেশার ক্ষেত্রেই আমরা আর্থিক মূল্যায়নকে মেনে নিয়েছি কারণ এ ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। তাই গৃহকর্মকে একটা পেশা হিসেবে সম্মান দিলে তার মূল্যায়নের কথাও ভাবতে হবে।
    কিন্তু হয়নি এযাবৎ। আর সেই জন্যই কেউ গৃহকর্মকে পেশা হিসেবে ভাবতে পারেন না আর সেই ভাবেই সংসারের ছোটবড় কাজগুলো অকিঞ্চিৎকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সে কাজগুলো না করলে যে চলবে এমনও নয়। খেতে আপনাকে হবেই, গৃহবধু রান্না না করলে রান্নার লোক রাখা, না হলে হোম ডেলিভারী। রান্নার লোকের ওপর তদারকি না করলে রান্না খারাপ, তেল বেশি, পরপর ক’দিন খারাপ / একঘেয়ে রান্না খেলে একদিন বাইরের খাওয়া চাইই। তার মানে রান্না-খাওয়া ব্যাপারটা একেবারে এলেবেলে নয়, কিন্তু যখন তা বাড়ির বৌটি করছেন তখন আমরা সেটা আলাদা করে ভাবছি না। সেই রকমই অন্যন্য কাজও। কাউকে না কাউকে সেগুলো যত্ন করে করতেই হয়, না হলে পরিবারের ধারণা দাঁড়ায় না। তাই বিয়ে করাটা নারী-পুরুষ কারুর কাছেই সমাজসেবা নয়, নারীর যেমন নিরাপত্তা চাই, পুরুষেরও দিনের শেষে নিজের সংসার নিজের ভালোমন্দ দেখার মানুষ দরকার।
    তবে এখানে ঘরের কাজ মূলতঃ মেয়েরা করেন এবং পুরুষ বাইরেই কাজ করেন বলেই বার বার ‘গৃহবধু’ বলা হয়েছে, তবে আসলে এটা গৃহশ্রমের মূল্যায়নের গল্প। তাই যে নারী বাইরে কাজ করতে চান করুন, যে পুরুষ ঘরে কাজ করতে চান করুন (সেই ‘কি’ আর ‘কা’ এর গল্প), বেতনের নিয়মটা আলাদা কিছু হবে না কারুর জন্য। দুজনেই বাইরে কাজ করলে ঘরের কাজ তাঁরা কিভাবে করবেন সেটা নিজেরাই ঠিক করবেন কারণ সে ক্ষেত্রে মহিলাটিরও নিজের মত জানানোর যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। কিন্তু ঘরের তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলো সে মেয়েরা করুন বা ছেলেরা করুন, কাজ হিসেবে যে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটাই মনে করানোর জন্য এবং তাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য এই নিয়ম।
    গৃহশ্রমের এইভাবে মূল্যায়নকে যারা সরাসরি স্বীকার বা অস্বীকার করতে পারেন না দেখা গেছে তারা এর বাস্তবায়ন নিয়ে ভয়ানক চিন্তিত। যেমন গৃহবধু যদি ‘মাইনে’ পান তাহলে ইনক্রিমেন্ট, পি এফ, গ্রাচুইটি, ইত্যাদি কি ভাবে হবে, সি-এল, ই-এল এর সুযোগ থাকবে কিনা, আরো ভালো ‘মাইনে’ পেলে গৃহবধুর চাকরী বদলানোর সুযোগ থাকবে কিনা ইত্যাদি। বোঝাই যাচ্ছে এর অনেক কিছুই স্রেফ বিরোধিতা করার জন্য বলা, কিন্তু লেখকের দায় থাকে সব প্রশ্ন নিয়েই ভাবার। তাই এই ধরনের সমস্যারও কিছু সমাধানের কথা ভাবতে হয়। স্ত্রীর বেতন যেহেতু স্বামীর বেতনের একটা অংশ হিসেবে আসবে, সে ক্ষেত্রে স্বামীর আয় যেমন যেমন বাড়বে, স্ত্রীরও সেই অনুপাতেই বাড়বে, পেনশনও পাবেন সেই ভাবেই। কিন্তু দেশের সমস্ত চাকরীর শর্ত যেমন একরকম নয়, সেইরকম এই চাকরী থেকে ‘ছাঁটাই’ এর প্রশ্ন নেই কারণ বর এর এমপ্লয়ার নন, মহিলাই বা চাকরী ‘বদলানো’-র কথা ভাবতে পারবেন কি করে, নিজের স্বামী সন্তান ছেড়ে অন্য সংসারে অন্য স্বামী-সন্তানের মাঝখানে ফিট করে যাওয়া কি বাস্তব সম্মত কথা হল ! যাঁরা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা সম্ভবতঃ এত কিছু না ভেবেই বলেছেন। কিন্তু এর পর থেকে এইরকম প্রশ্ন করার আগে আশা করব একটু ভেবে করবেন। আর সি-এল-ই-এল ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলব আপনি যেমন অফিসে প্রয়োজনমত ছুটি নেন, গৃহবধুও দরকার মত নেবেন, তখন ঘরের কাজ কিভাবে হবে তা তিনিই ঠিক করবেন। তবে এই সব অনেক প্রশ্নই অবান্তর কারণ গৃহবধু পরিচারিকা নন, নিজের দায়িত্বেই তিনি সংসারের নানাদিক দেখে থাকেন। বিনা পারিশ্রমিকেই। শুধু পারিশ্রমিক নিলেই তাঁকে ভাড়া করার কাজের লোকের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। গৃহবধুকে তাঁর জায়গায় রেখে তাঁর পরিষেবাকে সম্মান জানাবার জন্যই এই ভাবনা।
    এই নিয়ম চালু হতে গেলে প্রাথমিকভাবে হয়তো অনেক মেয়েরা নিজেরাই এই পারিশ্রমিক নিয়ে চাইবেন না। কিছুটা চক্ষুলজ্জা (নিজের সংসারে কাজ করে পয়সা নেবো ! ছিঃ, লোকে কি বলবে ), কিছুটা ইগোয় লাগা (আমার দায়িত্ব কি টাকায় মাপা যায় !) যে কথা আগে বললাম। কিন্তু ‘সাফারার’ এর মতামত নিয়ে নিয়ম চালু করতে গেলে হয়তো সতীদাহ-বিধবা বিবাহ-বহুবিবাহ কিছুই রদ করা যেত না। কিন্তু যখনি একটা নিয়ম চালু হয়, কিছু মানুষ তার সুবিধে পেতে শুরু করেন, তখনই আস্তে আস্তে সেটা অর্থবহ হয়ে ওঠে। তার বাস্তবায়নের নানা সুবিধে অসুবিধেও তখনই সামনে আসে আর তার সংশোধনেরও রাস্তা খোলা থাকে। কিন্তু প্রস্তাবটা গোড়ায় বিনাশ করে দিলে এ সব কিছুই আর হয়ে ওঠে না।
    গৃহশ্রমের মূল্যায়নের এই মডেল একটি ধারণা মাত্র। মানে এটা নিয়েও যে ভাবা দরকার আর এভাবেও যে ভাবা যেতে পারে, সেইটা জানানো। এভাবেই যে হতে হবে তা কোথাও দাবী করা হয়নি কিন্তু কিভাবে হতে পারে সেইটা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কিন্তু মজার কথা হল, যাঁরা বিরোধিতা করেছেন তাঁরা কেউ কিন্তু কোনও সমাধান দেননি, শুধু নানারকমের প্রশ্ন তুলে ঠাট্টা-তামাশা করেই কর্তব্য সেরেছেন। তবু এই অবকাশেই এই বিষয় নিয়ে দু-চারটে কথা আবারও লেখার সুযোগ হল, এটাই বা কম কি !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৪০৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 127.194.84.54 (*) | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৩২52067
  • আশ্চর্য! কেউ কথাটি বলছে না!
  • দেবব্রত | 212.142.76.9 (*) | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:৫২52068
  • এই কনসেপ্ট টি ৪৫ বছরের পুরানো - " Shadow Work " এই নামে ইভান ইলিচ দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখে প্রায় অমর করে গেছেন , ২০ বছর পূর্বে অচালান লিখে রেখেছেন " Housewifisation does not only aim to recreate an individual as a sex object; it is not a result of a biological characteristic. Housewifisation is an intrinsically social process and targets the whole of society. Slavery, subju- gation, subjection to insults, weeping, habitual lying, unas- sertiveness and flaunting oneself are all recognised aspects of housewifisation and must be rejected by the freedom-moral- ity. It is the foundation of a degraded society and the true foundation of slavery. It is the institutional foundation upon which the oldest and all subsequent types of slavery and im- morality were implemented. Civilisational society reflects this foundation in all social categories. If the system is to func- tion, society in its entirety must be subjected to housewifi- sation. Power is synonymous to masculinity. Thus, society‘s subjection to housewifisation is inevitable, because power does not recognise the principles of freedom and equality. If it did, it could not exist. Power and sexism in society share the same essence. " লেখক বা লেখিকা কেবল ইভান ইলিচ পড়লে লেখাটি জোরালো যুক্তি সম্মত হত তবে ইলিচের মত কাব্যিক হত কিনা জানিনা ।
  • dc | 120.227.236.223 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১১52088
  • Tirjak একটা কথা জিগ্যেস করি, ছেলেদের কাজ আর মেয়েদের কাজ এই ডিফারেন্সটা করা হয় কেন? ঘরের কাজ হলো ঘরের কাজ, সেই কাজ স্বামী আর স্ত্রী দুজনে মিলে নিজেদের সুবিধেমতো করবে। মানে এখানে এমপ্লয়ার-এমপ্লয়ি হিসেবে দেখাটাই বোধায় ভুল হচ্ছে (যে কারনে মেয়েদের গৃহশ্রমের বিনিময়ে পারিশ্রমিকের কথাটা আসছে)। এবার যদি কোন একজন উপার্জন করেন করেন আর অন্যজন শুধু গৃহকাজ সামলান তাহলে হয়তো গৃহকাজ কে কতোটা করবেন সেটার রেশিওটা অদল বদল হতে পারে, কিন্তু তাহলেও দুজনেই যথাসাধ্য গৃহকাজে কনট্রিবিউট করবে। এমন না যে একজন উপার্জন করছে মানে সে সঁসারের কোন কাজ করবেনা। ছোটবেলার থেকে পুরুষ আর স্ত্রী দুজনের মধ্যেই কি এই অ্যাওয়ারনেসটা গ্রো করানো যায়না, যে সংসারের কাজের কোন ছেলেমেয়ে নেই, যে যার সুবিধে মতো (আর যে যেটা বেশী ভালো পারে) কাজ করবে? আর সংসারে দুজনেই কনট্রিবিউট করবে? জানিনা এটাও ইমপ্র্যাক্টিকাল হলো কিনা।
  • কল্লোল | 125.242.134.83 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪১52069
  • কিন্তু আমার দুটো কথা আছে।
    ১) আমার বউ, সে ঘরের কাজ করে - ১) রান্না, ২)ঘরদোর ঠিকঠাক করে রাখা, ৩) আমাদের জামাকাপড় গুছিয়ে রাখা, ৪) অতিথির জন্য চা ইঃ বানানো, ৫) বাচ্চাকে দেখাশুনা করা, ৬) বাচ্চাকে পড়ানো, ৬) বাচ্চাকে ইস্কুলে দিয়ে-নিয়ে আসা, ৭)আমার ও বাচ্চার অসুখে সেবা করা। এরকম আরও অনেক কাজ।
    আমি তাকে পারিশ্রমিক দেবো।
    কিন্তু
    ২) আমিও কাজ করি - ১) বাজার করা, ২) নানান বিল ইঃ দেওয়া, ৩) বাচ্চাকে পড়ানো, ৪) বাচ্চাকে নিয়ে গানের ইস্কুল, ক্রিকেটের ইস্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসা, ৫) বউ বা বাচ্চার অসুখে সেবা করা, ৬) বাচ্চা ও বউকে বছরে একবার বেড়াতে নিয়ে যাওয়া। এরকম আরও অনেক কাজ।
    আমায় কে পারিশ্রমিক দেবে?

    আমি বউকে পারিশ্রমিক দিলে ওর থেকে খাওয়া-থাকা বাবদ টাকা নেবো কি?

    আমরা যে কাজগুলো করছি সেটা কি আমাদের নিজেদের জন্য নয়? তবে পারিশ্রমিকের প্রশ্ন কেন?

    মেয়েদের সম্মান না দেওয়া, তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে দেখা - এসব সামাজিক ব্যাধি, যার নিরাময় হওয়া জরুরী। তার নানান রাস্তা আছে। পারিশ্রমিক দেওয়াটা খুব অপমানজনক বলে মনে হয়। আমি কি বউয়ের সাথে যৌন সম্পর্কের জন্যো তাকে টাকা দেবো, না সে আমায় দেবে?
  • দেবব্রত | 212.142.76.9 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১০52089
  • পাই ঃ- আপনার প্রশ্নের উত্তর প্রথমে প্রশ্ন দিয়ে করি ঃ- আপনি কি মনে করেন এইযে আধুনিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল জগত , wage বেসড ইকনমি যেখানে প্রায় সবকিছুর বিনিময় মূল্য বর্তমান সেখানে " shadow work " ( সমস্ত ধরনের ) কি পুঁজি বৃদ্ধিতে , লাভ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ? আপনি কি মনে করেন " দাস " ব্যবস্থা এক ধরনের ক্রুড ফর্ম অফ " shadow work "? এই প্রশ্নের উত্তর পেলে তবেই এগোনো যাবে অথবা এই আলোচনা কতিপয় সুশীল আমার আপনার মত অতিশয় ভদ্রলোক একে ওপরের সাহায্যকারী - এ ন্যাপি বদলে দেয় তো ও দুধ খাওয়ায় এবং প্রায় সব কর্মই প্রায় যৌথ দায়িত্বে করে থাকে এবং উভয়েই চাকরী করে এই অতি সীমিত সংখ্যক মানুষের পরিধির পর্যায়ে থেকে যাবে । বাকিরা " shadow work " করেই যাবেন এবং আমরা তার ফল লাভ করব এবং আমরাও প্রতি দিন একটু বেশী আরেকটু বেশী " shadow work "করতে থাকবো । শুধু একটা দেশের একটা ক্ষেত্রের shadow ওয়ার্ক কি মারাত্মক একটু দেখুন " 1998, the Internal Revenue Service estimated that taxpayers spent six billion hours per year on “tax compliance activities.” That’s serious shadow work, the equivalent of three million full-time jobs." আজ থেকে ৩০ ৪০ বছর পূর্বে যে " shadow work "মূলত মহিলারা করতেন বর্তমানে সেই " shadow work " আমি , আপনি সবাই করছি পুঁজির স্বার্থে , অন্যের মুনাফার স্বার্থে ঃ- খুব ভারী কিছু নয় মেনস্ত্রিম কাগজের লিঙ্ক ঃ- Our Unpaid, Extra Shadow Work http://nyti.ms/1ApIbKw ইচ্ছা থাকলে পরবর্তীতে গভীরে ঢোকা যাবে ।
  • Arpan | 233.227.9.25 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৪২52070
  • সংযোজন কী হয়েছে সেইটাই তো বুঝলাম না।

    এনিওয়ে, সবার জন্য বেকার ভাতার দাবি তুললেই তো হয়। যে মহিলার বিয়ে হয়নি, তাকে কে গৃহশ্রমের পারিশ্রমিক দেবে? বৃদ্ধ মা বাবাই বা বার্ধক্য ভাতা পাবেন না কেন?
  • PM | 116.78.27.56 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:১০52071
  • দুর দুর, বৌ এর কছ থেকে আমাকে হাত খরচ নিতে হয় ---- আমি বউকে দেবো কি ?
  • দেবব্রত | 212.142.76.9 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪০52072
  • না পারিশ্রমিকের প্রশ্নের পূর্বে এই পয়েন্ট গুলী মনে রাখা প্রয়োজন ঃ- Shadow work ঠিক সেই ধরনের কাজকর্ম যা কাজ অথচ মূল্যহীন এবং পুরুষ কিংবা নারী সিস্টেমের কারনে পুঁজির স্বার্থে বিনা পারিশ্রমিকে করতে বাধ্য থাকে । যেমন আমাদের দেশে পেট্রোল পাম্পে গেলে আপনার গাড়িতে তেল ভরার কাজ , চাকায় হাওয়া ভরার কাজ , উইন্ডস্ক্রিন পরিষ্কার করার কাজ পেট্রোল পাম্পে নিযুক্ত কর্মচারী করে থাকে , কর্মচারী তার বিনিময়ে পাম্প মালিকের থেকে বেতন পায় - অথচ যে কোন উন্নত দেশে কাউন্টার এ রসিদ কাটা থেকে তেল ভরা পর্যন্ত সমস্ত কাজ আপনাকেই করতে হয় - পাম্প মালিক অতি নগণ্য সংখ্যক কর্মচারী রেখে পাম্প চালায় এবং আমি বা আপনার " Shadow work" এর মাধ্যমে পুঁজি বৃদ্ধি করে । এইরকম অসংখ্য " Shadow work" পুঁজি আমাদের নারী পুরুষ নির্বিশেষে করতে বাধ্য করে । আমাদের এই " Shadow work" এর মাধ্যমে লাভ করে পুঁজি । হাউস ওয়াইফ এইরকমই এক জটিল হাজারো বছরের " Shadow work" যার কোন জিডিপি পরিমাপ নেই । একজন হাউস ওয়াইফ যদি ঠিক ঠাক তার দায়িত্ব পালন না করে বা করত তাহলে তার বিপুল প্রভাব পড়তে বাধ্য জিডিপি তে । ক্লান্ত শ্রমিক -রান্না করে , ছেলে কে স্কুলে পৌছিয়ে , ঘর গুছিয়ে , কাপড় কেচে যখন কর্মস্থলে পৌঁছাত তার অবশ্যম্ভাবী প্রভাব পড়ত কর্মস্থলে - ক্ষমতা এই রসায়ন বিষয়ে অবগত তাই বিবাহ'র পবিত্রতা , পরিবার ইত্যাদির এত মাহাত্ম্য । প্রশ্ন হোল এই Shadow work এর জিডিপি পরিমাপ এবং সেই অনুযায়ী পারিশ্রমিক নির্ধারণ । হাউস ওয়াইফ পারিশ্রমিক পাবেন কিন্তু কার থেকে ? তার স্বামীর নিয়োগকর্তার থেকে ( কারন তার " Shadow work" এর ফল লাভ করছে তার স্বামীর নিয়োগকর্তা ) না স্বামীর থেকে ? আমার মতে স্বামীর নিয়োগকর্তার থেকে । মূলত রাষ্ট্রের থেকে । এই যে বিপুল পরিমাণ শ্রম যার কোন মূল্য নির্ধারণের মাপদন্দ নেই এবং তার ফললাভ করছে পুঁজি , নিয়োগকর্তা এবং রাষ্ট্র সুতরাং এই শ্রমের মূল্য নির্ধারণ এবং মজুরী দেওয়ার দায়িত্ব নিয়োগ কর্তার এবং রাষ্ট্রের ।
  • pi | 120.227.78.101 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪৮52090
  • নাঃ, কোন মডেল প্রোপোজ করলে এই প্রশ্নগুলো এড়িয়ে গেলে তো চলবে না। এখন আদর্শ সিস্টেম না বলে, চাকরি করা ও যৌথ দায়িত্ব নেওয়া লোকজন সংখ্যায় তুলনায় কম বলে তাঁরা আলোচনাতেই আসবেন না, সে তো হয় না। আর আরৈ আসবে এই কারণে যে আপনাদের মডেলে এঁরা ঢুকলেই মডেল ফেইল করে যাচ্ছে ,এদিকে এঁরাই কিন্তু একটা বিকল্প মডেল হতে পারেন।
  • dc | 120.227.236.223 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৫52073
  • আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই চাকরি করি। ঘরের নানান কাজও আমরা দুজন মিলেই করি। অনেক সময়েই আমাদের রান্না করার বা ঘরের কাজ করার লোকেরা না এলে সেই কাজগুলো আমরা করি। সাধারন্ত স্ত্রী রাঁধে, আমি বাসন ধুই, আবার আমি বার্বিকিউ করলে বা কোন পানীয় বানালে স্ত্রী সেসব গুছিয়ে রাখে। ঘরের কাজ করতে গিয়ে আমাদের দুজনের কখনোই মনে হয়না আমরা একে অন্যের ওপর কাজ চাপাচ্ছি বা একজন আরেকজনকে এক্সপ্লয়েট করছি। আমাদের মেয়েকে আমরা দুজনেই পালা করে স্কুলে পৌঁছে দি আর স্কুল থেকে নিয়ে আসি। আমাদের দুজনের রোজগারের টাকা নানান অ্যাকাউন্টে আর স্কিমে একসাথে রাখা, আলাদা আলাদা করা নেই। আমাদের দুজনেরই স্যালারি অ্যাকাউন্ট আছে, কিন্তু সেখান থেকে অন্যান্য অ্যাকাউন্টে টাকা সরানো হয়, মেডিক্লেম বা এলাইসির প্রিমিয়াম বা পিপিএফ কমন অ্যাকাউন্ট থেকে ভরা হয়। আমার স্ত্রী কি আমার থেকে পারিশ্রমিক পাবে? বা আমি কি আমার স্ত্রীর থেকে পারিশ্রমিক পাবো?

    রাষ্ট্র আমাদের দুজনকেই পারিশ্রমিক দিলে দারুন খুশী হবো, কারন টাকা যতো আসে ততো ভালো।
  • dc | 120.227.236.223 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৮52074
  • আরেকটা তথ্য, আমরা দুজনেই আলাদা ভাবে ইনকাম ট্যাক্স দি।
  • cb | 192.70.95.21 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৯52075
  • dc = cb
  • | 11.39.101.113 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১৬52077
  • সং্যোজন কী হয়েছে সেটা আমিও বুঝলাম। না। কেউ একটু আগের লেখাটার লিং এখানে দিয়ে দাও না পিলিজ। মোবলি থেকে পারছি না। একই হেডিং দিয়ে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। বুলবুলভাজায় বেরিয়েছিল।

    অবিবাহিতা এবং ভাই বা বাবা মায়ের সংসারে শ্রমদান করতে বাধ্য হওয়া মেয়েদের সম্বন্ধে কী ব্যবস্থা এ প্রশ্ন আমারও।
  • | 11.39.101.113 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১৬52076
  • সং্যোজন কী হয়েছে সেটা আমিও বুঝলাম। না। কেউ একটু আগের লেখাটার লিং এখানে দিয়ে দাও না পিলিজ। মোবলি থেকে পারছি না। একই হেডিং দিয়ে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। বুলবুলভাজায় বেরিয়েছিল।

    অবিবাহিতা এবং ভাই বা বাবা মায়ের সংসারে শ্রমদান করতে বাধ্য হওয়া মেয়েদের সম্বন্ধে কী ব্যবস্থা এ প্রশ্ন আমারও।
  • pi | 74.233.173.53 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২২52078
  • যে বাড়িতে দুজনেই ঘরের কাজ করে বাইরের কাজ করেন সেখানে কী হবে দেবব্রতবাবু? চাকুরির নিয়োগকর্তা দুজনকেই ঘরের কাজ করার জন্য আলাদা টাকা দেবেন ? বা ঘরের কাজের জন্য গৃহসহায়িকা রাখলে তেনার বেতন ও স্বামী স্ত্রীর চাকুরিদাতারা দেবেন ?
  • pi | 74.233.173.63 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৩52079
  • ওহো ডিসিও প্রায় একই প্রশ্ন করেছেন।
  • Tirjak | 147.59.159.133 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৬52080
  • dc (=cb),

    যিনি বাইরে কাজ কোরে উপার্জন করেন না, প্রস্তাবটি সেইসব গৃহবধুদের কথা ভেবে রাখা হয়েছে। তাঁরা ঘরের সব কাজ করেন কিন্তু তাঁদের স্বনির্ভর ভাবা হয় না কারন তাঁদের নিজেদের উপর্জন বলতে কিছু থাকে না। আপনি ও আপনার স্ত্রী দুজনেই যখন উপার্জন করেন তখন এই প্রস্তাব আপনাদের জন্য নয়। কিন্তু এই প্রস্তাব পছন্দ না হলেও যদি সমস্যাটি স্বীকার করেন তাহলে বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারেন, সাগ্রহে অপেক্ষা করছি।

    কল্লোলদা,
    বউকে আপনি পারিশ্রমিক দিচ্ছেন, এমন কথা তো এই প্রস্তাবে কোথাও নেই ! একটু কষ্ট করে প্রস্তাবটা পড়ে নিলে বোধহয় নিজেই উত্তর পাবেন। তবে একটা কথা বলে রাখি। যে কাজগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, সেই কাজগুলো নিজে না করলে কাউকে দিয়ে করাতে হত।পরিবারের উপার্জনশীল মানুষ হিসেবে সেক্ষেত্রে তাকে পারিশ্রমিক আপনাকেই দিতে হত। নিজে কাজ করে সেই টাকাটা বাঁচিয়ে ফেল্লেন, সেইটাই আপনার আয় ! গৃহবধুদের ক্ষেত্রেও সেই একই প্রস্তাব রাখা হয়েছে, পরিচারিকা রাখলে তার মাইনে সেখান থেকেই হবে। পারিশ্রমিকের বিষয়টা যেহেতু আপনি ভুল বুঝেছেন তাই সেটা দেওয়া অপমান কিনা সেটা নিয়ে আর আলোচনায় গেলাম না।
  • Tirjak | 147.59.159.133 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৯52081
  • পাই,
    তুমিও কি প্রস্তাবটা না পড়েই লিখ্ছ ? না হলে এই প্রস্তাব কাদের জন্য আর কি পদ্ধতিতে বেতন দেওয়া হবে সেটা সবাই কি করে ভুল বুঝছে !
  • pi | 74.233.173.58 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৩৬52082
  • `রোজকার কাচাকাচি, ঘরগোছানো, বাচ্চাকে স্নান করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, জামা কাপড় ইস্ত্রী করা, অতিথি আপ্যায়ন, অসুখে সেবা, এই সব কাজ এঁরা নিজের হাতেই করেন।`

    এটা ছাড়াও আরেকটা জায়গা কোট করার আছে। মোবাইল থেকে একই পোস্টে কোট হচ্ছে না। পরের পোস্টে দিয়ে প্রশ্ন করছি
  • pi | 74.233.173.53 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৩৮52083
  • আমি দেবব্রতবাবুকে প্রশ্ন করেছি তো। ওনার মডেল নিয়ে।

    তোমাকে পরের পোস্টে করছি।
  • dc | 120.227.236.223 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:১৯52084
  • Tirjak, আমাদের দেশের বহু জায়গা মেয়েদের ঘরের কাজকে সম্মান দেওয়া হয়না, তার উপযুক্ত প্রতিদানও দেওয়া হয়না, পুরুষরা বেশীর ভাগ সময়ে "ওটা তো কোন কাজই না" বলে এড়িয়ে যায়, এতে আপনার সাথে সহমত।

    কিন্তু "ঘরের কাজ" এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক, এই সল্যুশনটা আমার নানান কারনে সঠিক মনে হয়নি।

    আপনি যে প্রশ্নটা তুলেছেন সেটা অনেক ক্ষেত্রেই তোলা যায়। কিন্তু আপনার সল্যুশানটা মনে হচ্ছে ভুল। যদি প্রশ্ন করেন তাহলে কি সল্যুশান, তাহলে উত্তর দিতে পারবো না। তবে এগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত, এটাও মনে করি। হয়তো আরো আলোচনার মাধ্যমে আরো বেটার কোন সল্যুশান পাওয়া যেতে পারে।
  • S | 117.151.136.202 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:২৪52091
  • ""ঘরের কাজকে কেউ আদতে কাজ বলেই মানেনা। সফলতা আসে কোথা থেকে? বহির্জগত থেকে।"
    এটার মুল কারণ হলো বাড়ির কাজের জন্য সস্তায় লোক পাওয়া যায়।

    খুব ক্রুড উদাহরণঃ বাড়ির নারীটি যদি বাইরে চাকরি করে মাসে ১৫,০০০ টাকাও কামাতে পারে তাহলে তার মধ্যে ৩,০০০ টাকা দিয়ে কাজ-ও-রান্নার জন্যে সহায়ক/সহায়িকা রাখা যায় আর নেট লাভ ১২,০০০ টাকা। তাই যারা শুধুমাত্র বাড়ির কাজ করেন তাদের দাম সত্যিই কম হয় - বাড়ির লোকেদের কাছে, বাইরের লোকেদের কাছেও।

    ওয়েজ রেট বেড়ে গেলেই বাড়ির কাজেরও দাম বেড়ে যাবে। এইবারে মনে করুন নারীটি রোজগার করতে লাগলেন ৩০,০০০ টাকা আর কাজ-ও-রানার জন্যে সহায়ক/সহায়িকা চাইলেন ১০,০০০ টাকা (বলাই বাহুল্য এই বৃদ্ধিটা বিভিন্ন রেটে হবে)। তাহলে আর তেমন লাভ দেখা যায়্না। সেক্ষেত্রে হয়তো পার্ট টাইমে রেখে ৫,০০০ খরচ করা হলো আর বিভিন্ন সহায়্ক যন্ত্রের (মাইক্রো ওয়েভ থেকে ওয়াসিং মেশিন) আগমণ ঘটলো।

    এখন এগুলো সবই হলো মধ্যবিত্তদের হিসাব।
  • Tirjak | 147.59.159.103 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:২৯52085
  • ধন্যবাদ ডিসি। যেহেতু আপনি সমস্যাটা স্বীকার করছেন, তাই আপনার আপত্তির কারণগুলো ও যদি একটু সময় করে লেখেন তাহলে সত্যি কারের কাজের কাজ হয়। হয়তো আমরা একসঙ্গে ভেবে কিছু বেটার সল্যুশন বার করতে পারব।
  • pi | 74.233.173.58 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৩১52086
  • 'সংসারের ‘সমস্ত’ কাজের জন্য কাজের লোক রাখা এমনিতেই সম্ভব নয়, যতটা রাখা সম্ভব তার জন্যও খরচের অঙ্ক বিরাট। কিন্তু সেই খরচ দিয়েও একজন গৃহবধুর মত পরিষেবা পাওয়া যায় না, এইটা ছেলেদের ও মেয়েদের সবাইকেই বুঝতে হবে। '

    এটা ও আগের কোটটা পড়ে মনে হচ্ছে বাড়ির কাজ গৃহবধু
    র মত কেউই পারবেন না। এটা মাস্ট বা অম্নি কিছু। তাহলে দুজনে বাইরে কাজ করলে চলে কীকরে নাকি সেটা য্স হচ্ছে ভাল হচ্ছে না ?

    আর টাকার কথা উঠলে গৃহবধূ উপার্জন করলে তো খরচটা আফোর্ড কর যাবে। কেউ কাজ খুজেও না পেলে বা কততে ইচ্ছুক না হলে সেটা আলাদা কথা।

    কাজ ছোট করার ও দরকার নেই , ওভারগ্লোরিফিকেশনেরও না।
  • Arindam Chakrabarti | 113.2.135.110 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ১১:২৪52087
  • প্রথমত লেখাটিকে মর‌্যালি সাপোর্ট করি। কারণ অজস্র কথা, মুখে বলা হোক বা লেখা বা দুই সত্বেও "ঘরের কাজ"কে কেউ আদতে কাজ বলেই মানেনা। সফলতা আসে কোথা থেকে? বহির্জগত থেকে। সোজাসাপটা বললে বহির্জগতের সাফল্যকেই আমরা সফলতা বলে ধরি। এই নিয়ে আপাতত তর্কের কোন জায়গা নেই। আবার অন্যদিক দিয়ে ভাবলে দেখবো বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটি এখনও গৃহকর্মে নিপুন পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন দেয়, সুতরাং গৃহকর্মের প্রয়োজনীয়তা আছে এবং নারী গৃহকর্ম করলে সে প্রকাশ্যে বলতে পারে(স্টাইল গীতা দে বা মলিনা দেবী যাই হোক, কি এন্ড কা এখনও সিনেমা, বহুল প্রচলিত জীবন নয়) অগৌরবের কিছু নেই।
    এখন ধরে নেওয়া যাক এই কাজ বিষয়ে নারীকে কভাবে ভাগ করব?
    ১ যারা শুধুই ঘরের কাজ করে, সে অর্থে বাইরের সাফল্য থেকে বঞ্চিত।
    ২ যারা ঘরের কাজ করে এবং একই সঙ্গে বাইরের সাফল্যের স্বাদও গ্রহণ করে।

    এখন তির্যকের লেখায় আছে সমাজের ভিন্ন শ্রেণীর দিকে তাকাতে হবে। সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এই টাকা বা পারিশ্রমিক দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের একটু ভাবা দরকার। একটু লিগ্যালি দিকটা চিন্তা করা যাক।

    কল্লোলবাবু যেমন কিছু প্রশ্ন তুলেছেন বা অন্যরা। সেগুলো মাথায় রেখেই বলছি-

    ধরুন সরকারী চাকরিতে ডিপেন্ডেন্ট ফ্যামিলি মেম্বারের একটা সংজ্ঞা আছে। সেখানে বার্ষিক বা মাসিক আয়ের প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রেও সেরকম কিছু করতে হবে।
    সুতরাং যে নারী, ধরা যাক মাসিক ২১৫৫টাকার ওপর রোজগার করে, সে এই টাকা পাবেনা।
    (* এখানে রোজগার বলতে চাকরি হতে পারে, বিভিন্ন সোর্স থেকে সুদ হতে পারে)
    যারা এর থেকে কম রোজগার করে তাদের জন্যই একমাত্র এই ব্যবস্থা।
    এবং একই সঙ্গে "ঘরের কাজ"কে কী কী কাজ? বাসন মাজা থেকে স্প্যাগটি রান্না করা নানারকম সাব ডিভিসানে ভাঙলাম না। সম্ভব নয় বলেই।
    (শরীরের প্লেজার কে ঘরের কাজের বাইরে রাখলাম, অন্তর্ভুক্ত করার কোন কারণ দেখলাম না)
    সুতরাং "ঘরের কাজ" এবং ডিপেন্ডেন্ট সংজ্ঞার ওপর ভিত্তি করে চাকুরিরত পুরুষ বা মহিলার বেতন থেকে(ধরে নেওয়া যাক বেসিক+ ডি এ বা শুধুই বেসিকের ওপর "একটা শতাংশ" কেটে নিয়ে তার বেটার হাফের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।

    (এবার সেই টাকায় সে বাপের বাড়িতে কাউকে কিছু দেবে না নিজে চুরমর খাবে নাকী বরের জন্য একটা গিফট কিনবে তা নিয়ে কারুর মাথাব্যাথা থাকবেনা।)

    অসংগঠিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু কঠিন তবে ভাবলে নিশ্চয়ই রাস্তা পাওয়া যাবে।

    আর ঐ যে শুরুতে বলেছি বহির্জগতের সাফল্য সকলেই চায়, চায় আর একটু বেশি রোজগার তাই "ঘরের কাজ" করে টাকা পেলেই সকলে চুপচাপ ঘরে বসে থাকবে এ ভাবনা অমলূক।

    অপ্রয়োজনীয় প্রশংসা বা অহেতুক নিন্দা সব-কাজের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকারক।
  • কল্লোল | 111.63.210.219 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৪52092
  • আমি এখনো বুঝ্লাম না।
    আমি চাকরী করি, আমার বউ করে না।
    আমার বাড়িতে একজন কজের লোক জামা-কাপড় কাচে, ঘর ঝাঁট দেয়, মোছে, বাসন মাজে। তার জন্য সে ১৫০০ টাকা পায় মাসে। রান্নার লোক পায় ২০০০টাকা। এই কাজগুলো আমার বউ করলে এই টাকাটা তার প্রাপ্য হয়। কিন্তু সেই কাজের লোকেরা আমার বাড়িতে থাকে না, খায়ও না। বউকে ঐ সব কজের জন্য ৩৫০০টাকা মাসে দিলে, আমি কি তার থেকে থাকা-খাওয়া বাবদ টাকা চাইতে পারি?
    একটা লোক রেখে বাজার করা, নানান বিল দেওয়া, প্লাম্বার, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, কাঠের মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করানো - অর্থাৎ জামা-কাপড় কাচা, ঘর ঝাঁট দেওয়া, মোছা, বাসন মাজা, রান্না করা ছাড়া আর যে যে বাড়ির কাজ হয় সেগুলো করার জন্য লোক রাখলে তাকে কত দিতে হবে আমার কোন ধারনা নেই। তবু তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম ২০০০টাকা মাসে। সে টাকাটা কি আমি বউকে দেয় টাকার থেকে কেটে রাখবো? নইলে আমায় সে টাকাটা কে দেবে?
  • dc | 132.174.189.22 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩২52093
  • তির্যক যেভাবে ব্যাপারটা দেখেছেন তাতে বোধায় দুরকম কাজ গুলিয়ে গেছে। আমরা একরকম কাজ করি টাকা উপার্জনের জন্য। যেমন ব্যাবসা, চাকরি, কনসাল্টেন্সি ইত্যাদি। এই কাজগুলো করার কারন খুব সোজা - টাকা পাওয়া, কারন পয়সা বিনে জীবন অচল।

    আরেকরকম কাজ করি নিজেদের জন্য, যে কাজগুলো করার বিনিময়ে সাধারনত আমরা টাকা এক্সপেক্ট করিনা। যেমন খুব গরম পড়েছে, চেয়ার থেকে উঠে ঘরের জানলা দরজা বন্ধ করে এসিটা অন করে এসে বসলাম, এই কাজটা না করলে আমি নিজেই গরমে ঘামতে থাকব। এই কাজটা করার জন্য আমাকে কেউ টাকা দেবেনা বা আমি অন্য কারুর কাছে টাকা চাইতেও পারব না। এবার ধরুন স্বামী-স্ত্রী এই দুজন ইকুয়াল পার্ট্নার মিলে সংসার করছেন। সেই সংসারের বেশীর ভাগ কাজ তাঁরা নিজেদের জন্যই করেন, যেমন ঘর গোছানো, পরিষ্কার রাখা, বাচ্চা বড়ো করা, ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং ইত্যাদি। সংসারটা যেহেতু তাঁদের দুজনেরই, তাই এই কাজগুলোও তাঁদের দুজনেরই। এই কাজগুলো করার জন্য কি তাঁরা একে অপরের কাছে টাকা চাইতে পারেন? এই নিয়ে তির্যকের মত জানতে পারলে ভালো হয়। আমার মতে নিজেদের কাজ নিজেরা ভাগাভাগি করে করা উচিত, পরষ্পরের বোঝাপড়া থাকা উচিত যে আমরা দুজন একে অপরের সুবিধে মতো সংসারের কাজ করবো।

    আর S এর সাথে একমত, আমরা বাড়ির কিছু কিছু কাজ করার জন্য সহায়িকা রাখতে পারি কারন আমাদের দেশে লেবার চিপ। গৃহসহায়িকাদের যদি উপযুক্ত পরিমানে মাইনে দিতে হয়, যদি ওনাদের শনি-রবি ছুটি দিতে হয়, একটা নির্দিষ্ট ইনক্রিমেন্ট দিতে হয়, বছরে একবার বোনাস দিতে হয়, (এগুলো নিয়ে মাঝখানে সরকার বিল আনবে বলেছিল, তারপর কি হলো কেজানে), তাহলে কিন্তু দেখবেন অনেকেই গৃহসহায়িকাকে দিয়ে না করিয়ে নিজেরাই অনেক কাজ করে নিচ্ছে। আরেকটা ব্যাপার, আজকাল ওয়াসিং মেশিন, মপিং, ডিশ ওয়াসার এসব দিয়েও কিন্তু "ঘরের কাজ"এর কায়িক শ্রমের দিকটা অনেক কমে এসেছে। এই অ্যাপ্লায়েন্সগুলো দিয়ে স্বামী বা স্ত্রী যে কেউ কাজগুলো করে ফেলতে পারছেন। তাহলে কি "ঘরের কাজ" ব্যাপারটা দুজনে মিলে ভাগাভাগি করে করাটাই বেশী সুবিধেজনক হচ্ছে না?
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৬52094
  • আসলে কোনটা প্রবলেম আর কোনটা সিম্পটম সেটাতেই গন্ডগোল। হাউসওয়াইফের সন্মান ব্যাপারটা প্রবলেম নাকি সিম্পটম?
  • pi | 120.227.67.58 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:০৪52110
  • যেটা বলতে চাইছি বারবার, একটা নতুন মডেল বানানো হচ্ছে, কিছু রুল; সেট করে। এবার সেই রুল কেবল একটা সাবসেটের উপরেই খালি প্রযোজ্য হবে, বাকিরা সেই রুলের যুক্তি অনুযায়ী ফিট করলেও বাইরে থাকবেন , এটা কী করে হয় ?

    আর আমার ( নৈতিক, বা অনৈতিক জানিনা) আপত্তি, মেয়েদের বাইরের কাজ না করায় নয়। হ্যাঁ, বাইরের অন্য কোন কাজ না করা বা শুধু সংসারের কাজ করা আমি ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করতে পারি, নিজের জন্য , বা আমার চয়েজ এটা কখনো হবেনা, লোকজনের বাইরে কাজ করা, অন্য কিছু করা , বাইরে থেকে উপার্জন করার চাপ নেওয়া, বা চাপ পার্টনারের সাথে শেয়ার করা, এগুলো পছন্দ করতে পারি, কিন্তু কেউ ইচ্ছে না হলে ঘরের বাইরে কোন কাজ নাই করতেই পারেন, বা কেবল ঘরের কাজ করার ইচ্ছে থাকলে তাই করতে পারেন, বা অন্য কোন সুযোগ না থাকলেও। বা কোন কাজ না করে বসে থাকলেও আমার বলার কিছু নাই। যার যা ইচ্ছা। সে নিয়ে আমার কিছু বলার নেই বা আপত্তির নেই। আপত্তি হল, এই গৃহশ্রম অনেক সুপিরিয়র, অপরিহার্য, এই রকম কথাগুলোয়। এটাই আমার ওভারগ্লোরিফিকেশন লাগছে। কারণ আমি মনে করিনা, এই কাজগুলো কোন গৃহবধূ সংসারে পুরো সময় দিয়ে না করলে ঠিকঠাক হত না। এক তো, ঠিকঠাক কথাটা সাবজেক্টিভ । আর যদি না হয়, তাহলে অবজেক্টিভলি বলতে গেলে বলবো, গৃহবধূরা ফুল টাইম ঘরের কাজ না করলেও ঘরের কাজ দিব্বি হতে পারে। মানে যেটা হবে, সেটা যে যথেষ্ট নয়, বা ভালো নয়, একথা কীকরে বলা যায় ?

    আর একদিকে বলা হচ্ছে, বাইরের কাজ মেয়েরা করুক, অন্যদিকে বলা হচ্ছে, ঘরের এই কজাগুলোর জন্য ফুল টাইম গৃহবধূত্ব মাস্ট, এতো একসাথে যায়না।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:১৩52095
  • শেষ প্রশ্নটার উত্তর প্রথমে দিই। কারণ সেটাই আলোচনার কেন্দ্র। হাউসওয়াইফের সম্মান নিয়ে আসল কথা নয়, আসল কথা হল হাউসহোল্ড ওয়ার্কের সম্মান ও মূল্যায়ন নিয়ে। সেটাই প্রবলেম, গৃহবধুদের সম্মান না পাওয়া তারই সিম্পটম।
    এই কথা যে আমি প্রথম বলছি, তা তো নয়, এই নিয়ে আলোচনা চলেই। দেবব্রত বাবুও সে কথা উল্লেখ করেছেন। তাই আপনারা সমস্যাটা কি করে নস্যাত করে দিচ্ছেন বুঝতে পারছি না। কিন্তু সমস্যার প্রকাশটা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। আমাদের দেশের আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই সমস্যা সমাধানের একটা প্রস্তাবনা করেছি মাত্র। এটা একেবারে ফ্ল-লেস আদর্শ ব্যবস্থা একথা কেউ বলছে না কিন্তু এখনও আমি কোনো বিকল্প প্রস্তাব পাই নি। যারা এই প্রস্তাবের বাস্তবায়নের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম দিকগুলো নিয়ে ভীষণ চিন্তিত তারও কেউ কোনো সমাধানের রাস্তা দেখান নি।
    তবু এক এক করে কিছু উত্তর দিই, সব কথাই আগে বলা। কিন্তু এই ধরনের লেখায় এটা হবেই।

    প্রথমে পাই। তুমি প্রায় সব প্রশ্নই এড়িয়ে যাচ্ছ আর তোমার প্রশ্নের উত্তর দিলেও সেটা স্বীকার না করে অন্য প্রশ্নে চলে যাচ্ছ। তুমি বার বার এই আলোচনাকে উপার্জনশীল মেয়েদের (চাকরী করেন যারা) কথায় এনে ফেলছো, যৌথ দায়িত্ব নেওয়া দম্পতির হিসেবে এনে ফেলছ কিন্তু প্রথমেই তো বলা হয়েছে এই আলোচনা শুধুই ঘরের কাজ যাঁরা করেন তাঁদের নিয়ে। তেমন পুরুষ থাকলে এই মডেল তাঁর জন্যও কিন্তু মূলতঃ মেয়েরাই এই কাজ করেন বলে বার বার গৃহবধুদের কথা বলা হয়েছে।
    ওভারগ্লোরিফিকেশনের প্রশ্নই নেই কিন্তু গৃহকর্ম আমাদের আর্থসামাজিক পরিকাঠামোয় যে জায়গাটা পাওয়ার কথা সেটা পায় না, সেই ডিফেমেশনের বিরুদ্ধেই বলা। এই যে তুমি বা কল্লোলদা বা অরো অনেকে যাঁরা বুঝতেই পারছেন না গৃহবধুর ২৪X৭ যে দায়িত্ব তা কখনই ঠিকে কাজের লোকের কাজের সমান নয়। এইটা হল গৃহকর্মের অবমূল্যায়ন। আসল ব্যাপারটা তেমন নয় বলেই লোকে বিয়ে করে, সংসার পাতে। না হলে তো সারাজীবন মেসে থাকলেই হত।
    গৃহবধু কাজ করলে কি হবে সেটা এখানে আলোচ্য বিষয় নয়, বিষয়বহির্ভূত কথা টেনে এনে প্রস্তাবটার ব্যর্থতা প্রমাণ করে ঠিক কি উপকার হচ্ছে ?
    এটা বুঝলাম তুমি সার্বিকভাবে মেয়েদের ঘরের কাজে আটকে না থেকে উপার্জনশীল হবার পক্ষে। তাই হয়ত কোনোভাবেই এই প্রস্তাবে নৈতিক সমর্থন করতে পারছ না। সেই খানটা এই আলোচনার একটা ধূসর জায়গা, যেখানে ঠিক হ্যাঁ-না বলা খুব কঠিন। কেন, তা মূল লেখায় বলেছি, আবারো একবার বলছি অন্য একটি উত্তর দেওয়ার প্রসঙ্গে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন