এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারীদিবস ঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম ঃ কিছু সংযোজন

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৪০৬ বার পঠিত
  • ঘরকন্না ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প

    যে জীবন ফড়িং-এর দোয়েলের, মানুষের সাথে তার যে দেখা হয় না, সেকথা জানাই ছিল। কিন্তু যেসব জীবন মানুষের-মানুষীরই, তাদের আশেপাশেই থেকেও সেইসব জীবনের সাথেও যে মানুষের আসলে দেখা হয় না, তাও মাঝে মাঝে এমনভাবে জানতে পেরে অবাক হতে হয়।
    এই ক’দিন আগে আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রবন্ধ ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে দেবেন না কেন ?’ পড়ে নানাজনের কাছ থেকে পাওয়া মতামতগুলো পড়তে পড়তে কথাগুলো মনে হল। সেদিনটা দোলের ছুটির পরের দিন, কাগজের প্রিন্ট বেরোয় নি তাই লেখাটা শুধু আবাপ’র ওয়েব সংস্করণেই বেরিয়েছিল, যাঁরা পড়েছেন তাঁরা প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষিত, উচ্চবিত্তও। এবং মহিলারা বেশির ভাগই কর্মরতা। তাই এই লেখা, এই ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে’র ধারণা হয়তো সরাসরি তাঁদের জন্য নয়। যে মধ্যবিত্ত / নিম্ন মধ্যবিত্ত গৃহবধুদের কথা ভেবে এই লেখা, তাঁদের হয়ত এই লেখা পড়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু তাঁদের যে আমরা একেবারেই চিনি না, এমনও তো নয় ! কিন্তু দেখা গেল এই লেখা যাঁরা পড়েছেন সেই পাঠকগোষ্ঠীর সিংহ ভাগ মহিলা ও কিছু পুরুষ এই ব্যাপারটায় নানাভাবে আপত্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। লেখকের কাছে প্রতিটি মতামতই মূল্যবান, বিরুদ্ধ মতামত বেশীই মূল্যবান কারণ তা প্রায় টর্চের আলোর মত যেকোন ধারণার অন্ধকার কোণায় আলো ফেলে দেখিয়ে দেয় তার ভুল ভ্রান্তি। উল্টোদিকে বিরুদ্ধ মত যারা পোষণ করেন, লেখকেরও দায় থাকে তাঁদের বোঝার ভুল থাকলে তা ধরিয়ে দেওয়া।
    তাই প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো গৃহশ্রমের / গৃহকর্মের মূল্যায়নই এই লেখার মূল কথা। গৃহকর্ম বলাই বেশী ভালো কারণ ততটা শ্রমসাধ্য নয় কিন্তু অনেকটা যত্ন ও ভালোবাসা (এবং আত্মত্যাগ) মেশানো যে সব ছোট ছোট কাজ একটা ঘর কে সংসার করে তোলে আর গৃহবধু কে পরিচারিকার থেকে আলাদা করে সেগুলোর কথাও এখানে ভাবা হয়েছে। সেই গৃহকর্ম যাতে একটা সম্মানজনক পেশায় পরিণত হতে পারে এবং গৃহবধুও নিজেকে বঞ্চিত না ভাবেন বা ‘আমি তো কিছু করি না’ জাতীয় হীনম্মন্যতায় না ভোগেন, সেই জন্য তাঁর একটা নিয়মিত বেতনের কথা ভাবা, যেটা তাঁর স্বামীর বেতনের একটা অংশ (ধরুন ২০%)হিসেবে নিয়মমাফিক সরাসরি তাঁর কাছে আসবে (যেভাবে ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে আসে)। স্বামী এখানে এমপ্লয়ার নন, দাতা তো ননই, তাঁর রাজী হওয়া না হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেভাবে ট্যাক্স, পি এফ এর টাকা কাটা যায় সেই ভাবেই নিয়মমাফিক তাঁর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন কাটা হবে (অবশ্যই যদি স্ত্রী চাকরী না করেন)। সেই বেতন ঘরের কাজের দরুণ মহিলাটির নিজস্ব উপার্জন, আর এই উপার্জনই তাঁকে স্বনির্ভর করে তুলবে। নিজের ছোটখাটো চাহিদার জন্য স্বামীর কাছে হাত পাততে হবে না, কৈফিয়ৎ দিতেও হবে না। একজন গৃহবধু সসম্মানে বলতে পারবেন ‘আমি ঘরের কাজ করি’।
    এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অজস্র যুক্তি ও আপত্তির মধ্যে প্রথমই হল, গৃহবধুর আর আলাদা করে কাজ কি ? ঘরের সব কাজই তো পরিচারিকা করেন, বাচ্চাকে পড়ান টিউটর আর স্কুলে নিয়ে যায় পুলকার বা স্কুলবাস। তাছাড়াও এইসব মহিলারা স্বামীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতখরচা পান, তাতেই তাদের শখ-আহ্লাদ দিব্য মিটে যায়। আর খাওয়া-পরা সমেত সংসারের বড় খরচ তো পুরুষটির(স্বামী)উপার্জন থেকেই হয়, এর পর আবার মাইনে কিসের ! এই কথাগুলো পড়েই মনে হয়েছিল আমরা কবে খিড়কি থেকে সিংহদুয়ারের বাইরের পৃথিবীটা চিনতে শিখব ! অথচ আমরা যে একেবারেই সংবেদনশীল নই তাও নয়, গায়ক অভিজিৎ যেদিন রাস্তায় থাকা মানুষদের গালাগাল দিয়েছিলেন, সেদিন আমরা তাঁকে ছেড়ে কথা বলিনি। বাড়ির পরিচারিকাদের এমনকি যৌনকর্মীদেরও শ্রমিকের সম্মান দেওয়া নিয়ে আমরা ভাবি। তাহলে গৃহবধুদের ব্যাপারে আমরা এত উদাসীন কেন !
    আসলে আমরা অনেকেই নিজেদের চাকরী করা জীবনটা দেখতে পাই, পাশের বাড়ির / ফ্ল্যাটের গৃহবধুর আরামের জীবনটা দেখতে পাই আর দেখতে পাই নীচের তলার বাসিন্দা আমার ‘কাজের মাসি’র কঠিন জীবনটা। এর বাইরে মধ্যবিত্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন উপার্জন স্তরের বাসিন্দা যে গৃহবধুরা তাঁদের জীবনটা আমরা দেখতেই পাই না। এই শহর কলকাতায় আমাদের আশেপাশেই তাঁরা থাকেন, কোনো একটা সরকারী ইস্কুলের গেটের কাছে ছুটির সময়টা একটু দাঁড়াবেন, বাচ্চাদের নিতে আসা মায়েদের কথায় কান দেবেন, তাঁদের চেহারা-সাজগোজের দিকে নজর দেবেন, বুঝতে পারবেন গৃহবধু কাকে বলে। একপর্ব রান্নাবান্না সেরে বরকে কাজে পাঠিয়ে বাচ্চাকে নিতে এসেছেন, গিয়ে বাকি রান্নাটা সারতে হবে, ফেরার পথে হয়ত এটা ওটা বাজারও করে নিতে হবে। ঠিকে কাজের লোক একটা এঁদেরও আছে, বাসন মেজে ঘর মুছে কি সপ্তাহে একদিন কিছু কেচে দিয়ে যায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। রোজকার কাচাকাচি, ঘরগোছানো, বাচ্চাকে স্নান করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, জামা কাপড় ইস্ত্রী করা, অতিথি আপ্যায়ন, অসুখে সেবা, এই সব কাজ এঁরা নিজের হাতেই করেন। এই ডিউটি নিয়ে কিছু বলার নেই, এঁদেরও নেই, আমারও নেই কিন্তু দিনের শেষে এঁরা কেন নিজেদের ‘স্বনির্ভর’ মনে করবেন না, উপার্জনের প্রশ্নে মাথা নীচু করে থাকবেন, সেই প্রশ্ন আমাকে ভাবায়। কারণ এটাই বাস্তব, পয়লা বৈশাখে নিজের মাকে একটা শাড়ী দিতে গেলে এই মহিলাদের বরের কাছে হাত পাততে হয়, আর হাত পাতলেই সব সময় হাত ভরে এমনও নয়। এই জীবনটা ‘আমাদের’ নয়, কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের ওই প্রান্তে যে বিরাট সংখ্যক মহিলা বাস করেন যাদের স্বামীরা ছোটখাটো চাকরী বা ব্যবসা করেন, তাঁদের জীবনটা এইরকমই।
    কিন্তু নিয়ম যদি করতেই হয় তাহলে তা সকলের জন্যই করতে হবে আর তাতে আখেরে কিছুটা যাতে সুরাহা হয় সেটাই দেখতে হবে। স্বামীর মাইনের / উপার্জনের কিছু নির্ধারিত অংশ যদি স্ত্রী-র হাতে আসে আর মহিলাটি যদি তার থেকেই পরিচারিকার মাইনে দেন তাহলে একটা কিছুটা সুরাহা হতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে যিনি বেশির ভাগ কাজ নিজের হাতে করেন আর যাঁর সব কাজ পরিচারিকা করে দেয় তাঁদের মধ্যে উপার্জনগত ভাবে একটা তফাৎ থাকবে। স্বামীকে আর আলাদা ভাবে বৌকে হাত-খরচ দিতে হবে না, আর স্ত্রীও নিজের এই উপার্জনের কতটা সংসারে খরচ করবেন, কতটা নিজের হাতে রাখবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন। কিন্তু তাঁকে স্ব-নির্ভর বা উপার্জনক্ষম নন একথা আর বলা যাবে না কারণ মাসের শেষে তাঁর হাতেও নিয়ম করেই কিছু টাকা আসছে আর সেই টাকাটা তাঁর স্বামী দিচ্ছেন না। এই কথাটিই এই ব্যবস্থার মূল কথা আর এই কথাটা হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে তাই আবার লিখতে হল।
    কিন্তু যাঁরা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মতামত দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বুঝতেই পারছেন না, বাড়ির কাজ যা অনেকটা নিজের জন্যও করা, যা ভালবেসে করা তার জন্য মাইনে কেন ! পুরুষেরা কেউ কেউ আরও এক পা এগিয়ে বলেছেন যে মাইনে থেকে ভাগ দিতে হলে তো কাজের লোক রাখলেই হয়, বিয়ে করার দরকার কিসের ! আর মেয়েরা অনেকেই একটা কথা বলেছেন যে সংসারের পেছনে একজন মহিলার যা অবদান তা কি টাকা দিয়ে মাপা যায় ! অর্থাৎ নিজের সংসারে কাজ করে টাকা নিতে তাঁদের ‘ইগো’তে লাগছে। আবারও বুঝিয়ে বলি, দেখুন, একটা রাস্তায় যানজটের জন্য দেরী হলে সেই দেরীর দরুণ ক্ষতিটুকুও অর্থমূল্যে মাপা যায় কারণ তা দেশের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। ওপরে যেসব কাজের তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা সমেত একটা পূর্নাঙ্গ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে গৃহবধুরা যে তাকে তাকে সুষ্ঠু ভাবে চালান, সেটা কাজের মানুষটির(পড়ুন পুরুষটির)উৎপাদনশীলতাকে ও কর্মক্ষমতাকে নিশ্চই প্রভাবিত করে কিন্তু সেই বিরাট পরিমাণের শ্রম আমাদের অর্থনীতিতে উহ্যই থেকে যায় যুগের পর যুগ তার কোন ‘মূল্যায়ন’ হয় না, এটা কতটা সঙ্গত সেটা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। সংসারের ‘সমস্ত’ কাজের জন্য কাজের লোক রাখা এমনিতেই সম্ভব নয়, যতটা রাখা সম্ভব তার জন্যও খরচের অঙ্ক বিরাট। কিন্তু সেই খরচ দিয়েও একজন গৃহবধুর মত পরিষেবা পাওয়া যায় না, এইটা ছেলেদের ও মেয়েদের সবাইকেই বুঝতে হবে। সেভাবে দেখতে গেলে কোনো পেশাতেই পেশাগত দক্ষতা, যত্ন ও ভালোবাসা টাকা দিয়ে মাপা যায় না; যে যত্ন নিয়ে একজন আদর্শ ডাক্তার একটি শিশুর জন্ম ঘটান বা যে ভালোবাসা নিয়ে একজন শিক্ষক কঠিন বিষয়কে সহজ করে শেখান তাও কি টাকায় মাপা যায় ? তবু সেই সব পেশার ক্ষেত্রেই আমরা আর্থিক মূল্যায়নকে মেনে নিয়েছি কারণ এ ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। তাই গৃহকর্মকে একটা পেশা হিসেবে সম্মান দিলে তার মূল্যায়নের কথাও ভাবতে হবে।
    কিন্তু হয়নি এযাবৎ। আর সেই জন্যই কেউ গৃহকর্মকে পেশা হিসেবে ভাবতে পারেন না আর সেই ভাবেই সংসারের ছোটবড় কাজগুলো অকিঞ্চিৎকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সে কাজগুলো না করলে যে চলবে এমনও নয়। খেতে আপনাকে হবেই, গৃহবধু রান্না না করলে রান্নার লোক রাখা, না হলে হোম ডেলিভারী। রান্নার লোকের ওপর তদারকি না করলে রান্না খারাপ, তেল বেশি, পরপর ক’দিন খারাপ / একঘেয়ে রান্না খেলে একদিন বাইরের খাওয়া চাইই। তার মানে রান্না-খাওয়া ব্যাপারটা একেবারে এলেবেলে নয়, কিন্তু যখন তা বাড়ির বৌটি করছেন তখন আমরা সেটা আলাদা করে ভাবছি না। সেই রকমই অন্যন্য কাজও। কাউকে না কাউকে সেগুলো যত্ন করে করতেই হয়, না হলে পরিবারের ধারণা দাঁড়ায় না। তাই বিয়ে করাটা নারী-পুরুষ কারুর কাছেই সমাজসেবা নয়, নারীর যেমন নিরাপত্তা চাই, পুরুষেরও দিনের শেষে নিজের সংসার নিজের ভালোমন্দ দেখার মানুষ দরকার।
    তবে এখানে ঘরের কাজ মূলতঃ মেয়েরা করেন এবং পুরুষ বাইরেই কাজ করেন বলেই বার বার ‘গৃহবধু’ বলা হয়েছে, তবে আসলে এটা গৃহশ্রমের মূল্যায়নের গল্প। তাই যে নারী বাইরে কাজ করতে চান করুন, যে পুরুষ ঘরে কাজ করতে চান করুন (সেই ‘কি’ আর ‘কা’ এর গল্প), বেতনের নিয়মটা আলাদা কিছু হবে না কারুর জন্য। দুজনেই বাইরে কাজ করলে ঘরের কাজ তাঁরা কিভাবে করবেন সেটা নিজেরাই ঠিক করবেন কারণ সে ক্ষেত্রে মহিলাটিরও নিজের মত জানানোর যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। কিন্তু ঘরের তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলো সে মেয়েরা করুন বা ছেলেরা করুন, কাজ হিসেবে যে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটাই মনে করানোর জন্য এবং তাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য এই নিয়ম।
    গৃহশ্রমের এইভাবে মূল্যায়নকে যারা সরাসরি স্বীকার বা অস্বীকার করতে পারেন না দেখা গেছে তারা এর বাস্তবায়ন নিয়ে ভয়ানক চিন্তিত। যেমন গৃহবধু যদি ‘মাইনে’ পান তাহলে ইনক্রিমেন্ট, পি এফ, গ্রাচুইটি, ইত্যাদি কি ভাবে হবে, সি-এল, ই-এল এর সুযোগ থাকবে কিনা, আরো ভালো ‘মাইনে’ পেলে গৃহবধুর চাকরী বদলানোর সুযোগ থাকবে কিনা ইত্যাদি। বোঝাই যাচ্ছে এর অনেক কিছুই স্রেফ বিরোধিতা করার জন্য বলা, কিন্তু লেখকের দায় থাকে সব প্রশ্ন নিয়েই ভাবার। তাই এই ধরনের সমস্যারও কিছু সমাধানের কথা ভাবতে হয়। স্ত্রীর বেতন যেহেতু স্বামীর বেতনের একটা অংশ হিসেবে আসবে, সে ক্ষেত্রে স্বামীর আয় যেমন যেমন বাড়বে, স্ত্রীরও সেই অনুপাতেই বাড়বে, পেনশনও পাবেন সেই ভাবেই। কিন্তু দেশের সমস্ত চাকরীর শর্ত যেমন একরকম নয়, সেইরকম এই চাকরী থেকে ‘ছাঁটাই’ এর প্রশ্ন নেই কারণ বর এর এমপ্লয়ার নন, মহিলাই বা চাকরী ‘বদলানো’-র কথা ভাবতে পারবেন কি করে, নিজের স্বামী সন্তান ছেড়ে অন্য সংসারে অন্য স্বামী-সন্তানের মাঝখানে ফিট করে যাওয়া কি বাস্তব সম্মত কথা হল ! যাঁরা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা সম্ভবতঃ এত কিছু না ভেবেই বলেছেন। কিন্তু এর পর থেকে এইরকম প্রশ্ন করার আগে আশা করব একটু ভেবে করবেন। আর সি-এল-ই-এল ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলব আপনি যেমন অফিসে প্রয়োজনমত ছুটি নেন, গৃহবধুও দরকার মত নেবেন, তখন ঘরের কাজ কিভাবে হবে তা তিনিই ঠিক করবেন। তবে এই সব অনেক প্রশ্নই অবান্তর কারণ গৃহবধু পরিচারিকা নন, নিজের দায়িত্বেই তিনি সংসারের নানাদিক দেখে থাকেন। বিনা পারিশ্রমিকেই। শুধু পারিশ্রমিক নিলেই তাঁকে ভাড়া করার কাজের লোকের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। গৃহবধুকে তাঁর জায়গায় রেখে তাঁর পরিষেবাকে সম্মান জানাবার জন্যই এই ভাবনা।
    এই নিয়ম চালু হতে গেলে প্রাথমিকভাবে হয়তো অনেক মেয়েরা নিজেরাই এই পারিশ্রমিক নিয়ে চাইবেন না। কিছুটা চক্ষুলজ্জা (নিজের সংসারে কাজ করে পয়সা নেবো ! ছিঃ, লোকে কি বলবে ), কিছুটা ইগোয় লাগা (আমার দায়িত্ব কি টাকায় মাপা যায় !) যে কথা আগে বললাম। কিন্তু ‘সাফারার’ এর মতামত নিয়ে নিয়ম চালু করতে গেলে হয়তো সতীদাহ-বিধবা বিবাহ-বহুবিবাহ কিছুই রদ করা যেত না। কিন্তু যখনি একটা নিয়ম চালু হয়, কিছু মানুষ তার সুবিধে পেতে শুরু করেন, তখনই আস্তে আস্তে সেটা অর্থবহ হয়ে ওঠে। তার বাস্তবায়নের নানা সুবিধে অসুবিধেও তখনই সামনে আসে আর তার সংশোধনেরও রাস্তা খোলা থাকে। কিন্তু প্রস্তাবটা গোড়ায় বিনাশ করে দিলে এ সব কিছুই আর হয়ে ওঠে না।
    গৃহশ্রমের মূল্যায়নের এই মডেল একটি ধারণা মাত্র। মানে এটা নিয়েও যে ভাবা দরকার আর এভাবেও যে ভাবা যেতে পারে, সেইটা জানানো। এভাবেই যে হতে হবে তা কোথাও দাবী করা হয়নি কিন্তু কিভাবে হতে পারে সেইটা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কিন্তু মজার কথা হল, যাঁরা বিরোধিতা করেছেন তাঁরা কেউ কিন্তু কোনও সমাধান দেননি, শুধু নানারকমের প্রশ্ন তুলে ঠাট্টা-তামাশা করেই কর্তব্য সেরেছেন। তবু এই অবকাশেই এই বিষয় নিয়ে দু-চারটে কথা আবারও লেখার সুযোগ হল, এটাই বা কম কি !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৪০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৩০52096
  • না কল্লোলদা, বউ শুধু আপনার রাঁধুনি আর ঠিকে কাজের লোক নন। তাই আপনার কাছ থেকে তাঁর রান্না আর অন্য কাজের মাইনে কেউ চায় নি। কিন্তু গৃহবধু হিসেবে আপনার বেতনক্রম থেকে একটা অংশ যদি তিনি নিয়মিত পান তাহলে তার থেকে এইসব কাজের মাইনে করা লোক রাখতে পারেন বা কিছু কাজ নিজে করে টাকাটা হাতে রাখতে পারেন, ওঁর ইচ্ছে।
    যেভাবে বার বার 'দিলাম' 'নিলাম' 'কেটে রাখলাম' ইত্যাদি লিখে চলেছেন তাতে বোঝাই যাচ্ছে প্রস্তাবটির মূল লেখা, সংযোজন কিছুই পড়েন নি। তাই আপনাকে আর কিছু লিখলাম না। তবে মনে মনে বৌদিকে ধন্যবাদ দিন আপনাকে 'ডিভোর্স' না করার জন্য। সেটা হলে স্রেফ কিচ্ছু না করেই বৌদি মাসে মাসে গুনে গুনে খোরপোষ আদায় করতেন আর আপনাকে একগাদা কাজের লোক রাখতে হত কিম্বা হাড় কালি করে খাটতে হত। গান টান সব মাথায় উঠত। ঃ-) ঃ-)
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৫৭52111
  • আসলে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ঘরে যে "এগ্রিমেন্ট" হয় সেটাতে কারোরই হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়, বিশেষত রাষ্ট্রের। মানে কে ঘরে থাকবেন, কে বাইরে যাবেন, কে কখন কি কাজ করবেন, কতটুকু করবেন ইত্যাদি এগুলো এদের নিজেদের ব্যাপার। এখন প্রবলেম হলো আমাদের সমাজ হলো প্যট্রিয়ার্কাল। ফলে সেখানে সাধারনতঃ স্বামীর মত বেশি গ্রাহ্য পায়/ চাপিয়ে দেওয়া হয়। সেইজন্যেই বলেছিলাম যে কোনটা প্রবলেম আর কোনটা সিম্পটম?

    ম্যাক্রো লেভেলে দেখলে আমি নারীদের বাইরে গিয়ে কাজ করার পক্ষে। বাড়ির কাজ দুজনে মিলে ভাগ করে নিলেই ভালো (কম বেশি হতে পারে)। এছাড়াও আজকাল যন্ত্র পাতি এসে কাজ অনেক সহজ হয়ে গেছে। উনানের বদলে গ্যাস ওভেন, মাইক্রো ওভেন, ফ্রিজ, ডিস ওয়াশার, ওয়াসিং মেশিন, ট্যাপ ওয়াটারে জল, মিক্সার গ্রাইন্ডার, ওয়াটার পিউরিফায়ার, প্যাক্ড ফুড ইত্যাদি এসে গেছে। ফলে বাড়ির দুজনেই যদি বাইরে কাজ করেন তাহলে হাউসহোল্ড ইনকাম বাড়ে, তাই দিয়ে এইসব জিনিসের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ে, এবং লাইফ স্টাইলের উন্নতি হয়। মোট জিডিপিও বাড়ে (সরি এটা সামলাতে পারলাম না)।

    কিন্তু প্রবলেম তিনটি জায়্গায়। এক, নারীদের সুরক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে যাতে তারা নিস্চিন্তে বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারে। ইন্ডিয়াতে শুধু মাত্র সেইটুকুই যদি কোনো সরকার করে দেয়, নারীরা নিজেরাই আয়ের বন্দোবস্ত করে নেয়। ইন্ডিয়ার মহিলাদের অন্টরপ্রনিউরাল স্কিল দারুন।
    দুই, এত পপুলেশন আর এত গরীব যে ঐসব যন্ত্র কেনার থেকে কম পয়সায় একজন লোক পাওয়া যায়।
    তিন, এটা পুরোপুরি এলিটিস্ট আলোচোনা। যে সংসারে মাসের শেষে আসেই ৫০০০ টাকা, সেখানে এইসব থিয়োরি কাজে দেয়্না।
  • pi | 74.233.173.58 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:১৯52097
  • মনে হয় তোমাকে বোঝাতে পারিনি। আরেকবার চেষটা করে দেখবো।
  • কল্লোল | 125.242.169.145 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:২৯52098
  • কি জনি! হয়্তো আমার বোঝার ভুল।
  • dc | 132.174.189.22 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৩৩52099
  • সমস্যাটা কে নস্যাত করে দিচ্ছে সেটাও বুঝতে পারছিনা।
  • ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ধান্ধাবাজি | 203.51.104.95 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৪৯52100
  • "কিন্তু গৃহবধু হিসেবে আপনার বেতনক্রম থেকে একটা অংশ যদি তিনি নিয়মিত পান তাহলে তার থেকে এইসব কাজের মাইনে করা লোক রাখতে পারেন "-- তাকে ন্যায্য মাইনে দিলে তো আর গৃহবধুর হাতে কিছু থাকবেনা। সেক্ষেত্রে আর খামোকা গৃহবধু মারফত ফ্যাক্টর করে কি হবে?
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৫১52101
  • আমি একটা সলিউশান দিই। স্বামী ও স্ত্রীর মোট আয়ের দুভাগ করে প্রত্যেকে একভাগ করে পেলেন। সরকারের আপত্তি থাকবেনা, কারণ রাজস্ব কমবে না (হাউসহোল্ড/কাপল ইনকামের ভিত্তিতে ট্যাক্স রেট ঠিক হলো)।

    এইবারে এটি ইম্প্লিমেন্ট করবেন কি করে? আলাদা অ্যাকাউন্ট?
  • সমস্যার মূল | 203.51.104.95 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:১৬52102
  • বিয়ে যদি একটা এগ্রিমেন্ট হয় তাহলে সেই এগ্রিমেন্টের কপি না দেখে কিসুই বলা যাচ্ছেনা। সমস্যা হল কোথাও পষ্টো করে এগ্রিমেন্টটা লেখা নেই। সেটা লিখতে পারেন কিনা দেখুন। অবশ্য তাকে বিয়ে বলবেন কিনা, বা কেউ সেই এগ্রিমেন্ট মেনে বিয়ে করবে কিনা তা আলাদা বিষয়।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:১৯52103
  • বিয়ে তো এগ্রিমেন্ট না, লিগাল কন্ট্রাক্ট। রেজিস্ট্রি করতে হয়।
  • সমস্যার মূল | 203.51.104.95 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২৫52104
  • সেই কন্ট্র্যাক্টেরই ডিটেল চাই।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২৭52105
  • ইন্ডিয়ার ম্যারিটাল ল।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৩৪52106
  • একসময় এই কথাটা খুব শোনা যেত সংসার না কেরীয়ার ? অবশ্যই মেয়েদের বিষয়ে, ছেলেদের কেরীয়ারের সঙ্গে সংসারের সেই বিরোধ কোনোদিনই নেই। এখনো হিসেব নিলে দেখা যাবে তথাকথিত কেরীয়ারের ক্ষেত্রে একটা উচ্চতার ওপর যে মেয়েরা উঠেছেন তাঁরা অনেকেই সংসার করেননি। বা সংসার জীবনে তাঁর সেভাবে সফল নন। সংসারে ঢুকে যাওয়ার পর মেয়েরা বিভিন্ন কেরীয়ারের ক্ষেত্রে পিছিয়ে গেছেন। অর্থাত সংসার সত্যিই এমন একটা বিষয় যা মেয়েদের অনেকটা নিয়ে নেয়। আর যে কোন করণেই হোক মেয়েদের ক্ষেত্রে সংসারটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে একটা সময়ের পর।
    কিন্তু এ সব তো উচ্চশিক্ষিত সফল মেয়েদের কথা। একজন মাঝারী শিক্ষিত গৃহবধু যদি বিয়ের পর মন দিয়ে সংসারটাই করতে চান সেটাকে আমরা কি নজরে দেখব তার ওপরেই অনেক কিছু নির্ভর করছে। দেখা যাক এঁদের চাকরীর সুজোগ কোথায় কোথায় আছে আর তার মাইনে কেমন।
    প ব তে একজন সরকারী প্রাইমারী শিক্ষকের মাইনে মোটামুটি ১৫০০০ টাকা। একজন এল ডি ক্লর্কের মাইনেও কাচাকাছি। এর নীচেও বেতনের স্কেল আছে। বেসরকারী বচ্চাদের স্কুলে মাইনে ৫০০০ থেকে ১০,০০০ এর মধ্যে। এর বাইরে আছে বিভিন্ন বুটিক, বিউটি পার্লার, শপিং মলে কাজ, যার কোনোটারই মাইনে ৮০০০ থেকে ১০০০০ এর বেশি নয় কিন্তু কাজের সময় অনেকক্ষণ। তাই S যে হিসেবটা দিয়েছেন সেটার গোড়ায় গলদ, কিন্তু সেখান থেকেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা উঠে আসে। কারণ প্রথমত ঃ ১৫০০০ টাকা উপার্জন করার মত চাকরী জোটানো খুব সহজ কাজ নয়। সেটা যিনি পারবেন তিনি সেই কাজটাই করবেন, তাঁর জন্য এই প্রস্তাবনার দরকার নয়। দ্বিতীয়তঃ ৩০০০ টাকা দিয়ে মোটেই ঘরের সব কাজ হবে না, কলকাতায় শুধু রান্নার লোকই ৩০০০ টাকা চাইবেন। যাই হোক, বাড়ির মহিলাটি বাইরে কাজ করলে শিশুটির কি হবে, সে কথা তো ভাবেন নি। তার জন্য হয় একজন আয়া রাখতে হবে ১২ ঘন্টার, কিম্বা কোনো ক্রেশ, সেখানেও না হোক ২৫০০, তাছাড়া আসা যাওয়ার জন্য পুলকার, আরো ৮০০-১০০০। তাই হিসেব অত সহজ নয় দাদা !

    যারা দুজনেই চাকরী করেন তাঁরা যৌথভাবে করছেন বা সব কাজে সহায়ক নিচ্ছেন সেটা অন্য কথা কিন্তু জেখানে মহিলাটি ঘরেই থাকেন, সেখানে তিনিই ঘরের মূল কাজ করেন আর সেটা অন্যায়ও নয়। কিন্তু এর ওপরেও একটা কথা আছে। একজন গৃহবধুর দায়িত্ব শুধু বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু কিছু কাজ করে যাওয়া নয়। এই গোটা ব্যবস্থাটার নিয়মিত দেখশোন করে যাওয়া যার জন্য উপার্জনশীল মানুষটি সময় মত কাজে যেতে পারেন, দুপুরে টিফিনবক্সে সাজানো খাবার পান, বাচ্চারা ঠিকমত স্কুলে যায়, টিউটরের কাছে বা আরো বিভিন্ন জায়্গায় যায়, এই সবের জন্য একজন মহিলা কি পাচ্ছেন ? হ্যা, অর্থমূল্যেই, কারণ অর্থমূল্য ছড়া অন্য কোনো মূল্যায়নের উপায় আমাদের হাতে নেই। আমরা কি সেই মহিলাকে বলতে পারি ঘরের কাজ বাদ দিয়ে দোকানের সেলস কাউন্টারে দাঁড়াতে বা বুটিকে গিয়ে নকশায় রং লাগাতে কারণ তাতে যত সামান্যই হোক রোজগার হয় ! যে রান্না, যে হাতের কাজ, যে বড়ি-আচার-পাঁপড় আমরা দোকান থেকে কিনে আনছি মূল্য দিয়েই তা ঘরের মহিলাটি করলে আমরা তাকে মূল্যহীন ভাবছি, আর মহিলাটিও নিজেকে স্বনির্ভর ভাবছেন না, এটাই গৃহশ্রমের অবমূল্যায়ন।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৪৭52107
  • দাদা, যে হিসেব দিয়েছি সেখানে বেশ কিছু অ্যাজাম্পশান আছে। এবং ওটা একটা উদাহরণ। আর নীচে লিখেই দিয়েছিলাম হিসাবটা মধ্যবিত্তের।

    যেমন আপনার হিসেবেও অনেক অ্যাজাম্পশান আছে। বাচ্চার দাদু দিদা কেন তাকে দেখতে পারবেনা। বা বাচ্চার বয়স কম কেন যে সে নিজেকে দেখতে পারবেনা - বিশেষত বেশিরভাগ সময়ে যেখানে ইস্কুলে থাকবে। কোলকাতায় ৩০০০ টাকার কমে রান্নার লোক পাওয়া যায় না। বা মহিলাটি রাত্রে আর পুরুষটি দিনে কাজ করেন না, বা উল্টোটা। এগুলো আপনার অ্যাজাম্পশান। অতেব হিসেবে বেশি গলদ ধরতে যাবেন না।

    বাকি কথা নিয়ে অনেক আলোচোনা হয়ে গেছে।
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৫৮52112
  • গৃহবধূত্ব নিয়ে কত আলোচনা গড়িয়ে গেল, অথচ একটা বিশাল অংশের কাছে যে চয়েস ও না, স্বাধীনতা ও না, নেহাত রিয়েল ওয়েজ কমে আসছে বলেই শুধু সংসার চালাতেই একজনের জায়গায় দুজনকে কাজ করতে হচ্ছে ( আর এটা শুধু নারী-পুরুষ বলে না, আগেকার একান্নবর্ত্তী পরিবার এর রোজগেরে সদস্য সংখ্যা/ সদস্য সংখ্যা রেশিও ১/২ এর কমই হত সাধারণত, বেকার জোয়ান ছেলে থেকে শুরু করে কমবয়সে বিধবা পিসি কি বোনঝি সবই সাধারণত থাকত ) সেইটা একবারও এল না... নাহ, আলোচনা বাস্তবিকই এলিটদের ড্রয়িং রুম টক...

    আর এইটাই ক্যাপিটালিজম এর মজা... মোটামুটি একই পয়সা দিয়ে একজনের জায়গায় দুজনের শ্রমশক্তি নিষ্কাশনটাও নারীমুক্তি জাতীয় কিছু বলে খাইয়ে দিতে পারে...

    আর তির্জক কে,
    গৃহশ্রম ( বা গার্হস্থ শ্রম, যেটা খুশী ) , তাকে 'প্রোডাক্টিভ' শ্রম হিসেবে মর্যাদা দেওয়া সংক্রান্ত আলোচনায় গৃহবধূ কথাটা ব্যবহার করাটা বাদ দিলেই সম্ভবত ভাল হবে, ভেবে দেখবেন একটু... এখানের অনেক কনফিউশনই এড়ানো যেত বোধহয়... আমি ব্যক্তিগতভাবে গৃহশ্রমের আলোচনায় গৃহবধূ শব্দটি ব্যবহার করি না নীতিগতভাবেও ... কারণ গৃহশ্রমের জেন্ডার অ্যাসোসিয়েশনটা ভাঙতে চাই বলেই... আবারো ওই আগের একান্নবর্ত্তী পরিবারের উদাহরণে ফেরত গিয়ে বলি, বাড়ীতে বসে থাকা বেকার জোয়ান ছেলেও যা করত সেটাও ( ধরা যাক জয় বাবা ফেলুনাথ এ বিকাশ ) সেটাকেও আমি গৃহশ্রমই মনে করি...

    প্রশ্নটা যেহেতু এইটা যে গৃহশ্রম রীতিমত জরুরী ভূমিকা পালন করে, একরকম ইন্ডিস্পেন্সেবল ও ( আমার ধারণা এইতে পাই এর আপত্তি থাকবে না :) ), অথচ তার 'প্রোডাক্টিভ' শ্রমের সম্মান, মর্যাদা বা অর্থমূল্যে দাম কোনটাই না থাকাটা কতদূর যুক্তিযুক্ত বা আদৌ যুক্তিযুক্ত কিনা, তাইতে খামকা ছেলে-মেয়ে টেনে না আনাই ভাল মনে হয়...
    হ্যাঁ, আর একটাও প্রশ্ন আছে, যে কারোর শুধুই গৃহশ্রম এ নিযুক্ত থাকাটা পেশা হওয়াটা, মানে রেগুলার টাইম অকুপেশন অর্থে, আদৌ জরুরী কিনা... কারণ কেউ যদি এই পেশা হওয়াটাই অযৌক্তিক মনে করেন, তার কাছে পেশাটা কেন আরো পাঁচটা পেশার মত জীবিকা হওয়ার সুযোগটা থাকবে না এ প্রশ্ন অবান্তর। তবে, আবারো এই প্রশ্নটাও জেন্ডার বিষয়টার ধারপাশ দিয়ে না গিয়েও করা যায়...
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১১:০০52113
  • দুঃখিত, তির্যক হবে, অনিচ্ছাকৃত বানান ভুল...
  • | 127.194.86.171 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১১:০৪52108
  • তির্যক-এর ফর্মেই ভাবতে হবে এমন কোনো কথা নেই, তির্যকও তা বলছেন না। আমি আমার মতো করে সমস্যাটা সাজালাম, কারো কারো কথার সঙ্গে কিঞ্চিত ওভারল্যাপ হবে, সেটার জন্য বারবার কোটেশন চিনহ দেব না।
    ১। প্রোডাকটিভ শ্রম কী? সেই শ্রম যারা করেন, তাদের শ্রমশক্তি অক্ষুণ্ন রাখার কাজগুলো কি প্রোডকটিভ শ্রম-এর এম্বিটের বাইরে রাখা যায়? ধরুন ডাক্তার। কিছু উৎপাদন করে না, কিন্তু শ্রমের/শ্রমিকের এফেক্টিভ উৎপাদন শক্তি বাড়িয়ে দেয়। তাকে কি প্রোডাক্টিভ শ্রমের এম্বিটের বাইরে রাখব?
    আমি রাখব না। (পরিষেবা ক্ষেত্র ইত্যাদি বেশি ছড়ানো টার্ম এড়িয়ে যাচ্ছি)

    ২। ভারতের গ্রামে গিয়ে দেখবেন, পুরুষদের চাইতে মেয়েদের বিশ্রাম ইত্যাদির সময় কম। রান্না, জল আনা, দুধ খাওয়ানো ভাত বাড়া পাখা নাড়া জলপট্টি দেওয়া পাশের বাড়ি থেকে নুন চাওয়া হামানদিস্তায় পান ছেঁচা -- এগুলো সব অদৃশ্য কাজ। বাইরের কাজে মাইনে আছে দৃশ্যমানতা আছে সম্মান আছে, সেটাই 'কাজ'। এটা বদলাতে গেলে, সামাজিক আর আর্থিক, দুটো সাঁকোই নাড়াতে হবে।

    ৩। সংগঠিত ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তারাও কিন্তু জনগণের খুব ক্ষুদ্র অংশ। সুতরাং তাদের বেতনের একটা অংশ, যা ন্যায্যতই তাদের স্ত্রী (মা-ও হতে পারেন)-র পাবার কথা, যদি স্ত্রীকে দেওয়াও হয়, তাহলে অধিকাংশ নারীর আপাতদৃষ্টিতে কিচ্ছু যাবে আসবে না।
    দুটো কথা। এক, এই একই যুক্তিতে তো অর্গানিজড সেক্টরে যে কোনো পরিবর্তনকে ফ্যালনা ভাবা যেতে পারে, যেমন গর্ভকালীন ও তার পরে ছুটি। দুই, অর্গানাইজড সেক্টর একটা মাপকাঠি। অন্য জায়গার কেউ দাবি তুলতে গেলে বলেন, আমাদের পাওয়া উচিত, কেননা ওরা (অর্গানিজড সেক্টর) পায়; অতএব আমাদের দাবির বৈধতা আছে।

    ৪। কেউ কেউ চান, সাংসারিক কাজে সম-অংশগ্রহণ। তাতে বাধা কোথায়? সম-অংশগ্রহণ করেও আর্থিকভাবে 'পরিবারের রোজগার' (যার প্রত্যক্ষ শ্রমদাতা পুরুষ) সমবন্টন হলে, কী অসুবিধা? পরিবারের পাওয়ার-স্ট্রাকচার যদি তাতে উলটেপালটে যায়, তাহলে সম-অংশগ্রহণ ঠিকরকম সম-অংশগ্রহণ নয় বলেই আমার সন্দেহ।
    বিশেষ করে কল্লোল-এর অবস্থান নিয়ে বলছি। আপনি চাকরি করেন, বাজার ইত্যাদি বাড়ির কাজ করেন। আপনার স্ত্রী চাকরি করেন না, সংসারিক কাজ করেন। আপনার মাইনের একটা অংশ আপনার স্ত্রী হাতে গেলে কী ক্ষতিকর কী অসম্মানজনক পরিস্থিতি কার পক্ষে তৈরি হবে, বুঝলাম না।
  • তির্যক | 24.139.222.45 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ১১:৩৩52109
  • @S, ঠিকাছে দাদা, আপনার কথাও থাক আমার কথাও থাক ! রান্নার লোক না হয় ২০০০ টাকা নিল (যতই বলুন আমি কিন্তু আর কমাবো না ঃ-) আর বাকি কাজের জন্য আরো ২০০০। ঠিকাছে ? কিন্তু দাদু-দিদা থাকা না থাকার ওপরে তো নিয়ম নির্ভর করবে না। তাই ঐ ফ্যাক্টর কে রাখা হয় নি। ১০-১২ বছর বয়স অবধি বাচ্চাকে একেবারে একা বেশিক্ষণ রাখা যায় না, কাউকে না কাউকে খেয়াল রাখতেইহয়, এটা বাস্তব, আপনি স্বীকার করুন না করুন।
  • Arindam Chakrabarti | 113.2.135.143 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪২52115
  • গৃহশ্রম গুরুত্বপূর্ণ না অপরিহার্য? গৃহশ্রমের ক্ষেত্রে গৃহবধূ কথার ব্যবহার যুক্তিযুক্ত কীনা? বাতাসে এইরকম অজস্র প্রশ্ন। প্রশ্ন এবং তারপর প্রশ্ন। প্রশ্নের পাহাড়। কিন্তু গৃহশ্রম বা গৃহবধূ/বধূ ডিপেনডেন্ট ফ্যামিলি মেম্বার হলে CGHSস্কীমে চিকিৎসার খরচ পায়। সেইক্ষেত্রে হয়ত তার বর/বউয়ের মাইনে থেকে একটা শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। তা সেই ডিপেনেডেন্ট হওয়ার কিছু শর্ত থাকে, সেটা পূরণ করলেই পায়। এখন যদি সেইরকম ডিপেনডেন্ট কেউ থাকে তাহলে গৃহস্বাস্থ্য বা অন্যকিছু নাম নিয়ে মাইনে থেকে একটা শতাংশ কেটে বউ/বরের অ্যাকাউন্টে জমা দিলে অসুবিধা কী?

    অন্যদিক দিয়ে ভেবে দেখলে, দেখা যাবে এক অর্থে ঘরের টাকা ঘরে থাকল। তূলণামুলক্ভাবে দেখা যায়(প্রমাণ দিতে পারবনা) সমান রোজগেরে নারী-পুরুষের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবনতা নারীর বেশি(তারমানে ভাববেননা আবার আমি নারীদের কিপটে বলছি)।
    সব্চেয়ে বড় কথা ডিপেনডেন্ট হয়ে চিকিৎসার সুযোগ বা এল টি সি নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার অসুবিধা নেই। কিন্তু ঘরের কাজের জন্য টাকা পেলে অসুবিধা হবে কেন?
    "ঘরের কাজ" কথায় আপত্তি থাকলে অন্য নাম ভাবা যেতে পারে।
    (* ছেলে মেয়েও ডিপেন্ডেন্ট কিন্তু একটা বয়েস অবধি। বাবা-মা ডিপেন্ডেন্ট হয় তবে শুধু চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুবিধা পায়, বউ বা বর না-হয় একটু আলাদা হল। সম্পর্কগুলো তো আলাদাই)
    আর যেদিন বেশি রোজগার করবে, বেশি রোজগার সকলে চায়, সেদিন ডিপেন্ডেন্ট শর্ত সে পূরণ করতে পারবেনা, সুতরাং টাকা পাওয়ার প্রশ্ন নেই।
  • pi | 132.163.107.117 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০৭52116
  • স্বর্ণেম্দু, গৃহবধূ নিয়ে আপত্তি তো প্রথম লেখাতেই তুলেছিলাম।

    আগেই লিখেছিলাম,
    ' এই কাজগুলো 'মেয়েলি', এটা কাঁচা বায়োলজি না সামাজিক নির্মাণ ? এই 'মেয়েলি' কাজগুলো কি অনেক ছেলেরও করতে ভালো লাগতে পারেনা ? মানে বলতে চাইছি এই ভালো লাগাটা মেয়ে পুরুষ দুজনের ক্ষেত্রেই যে কাঁচা বায়োলজি হতে পারে,সেকথাটা আসেনা, ঘরটা মেয়েদের, বাইরে পুরুষদের এটা সামাজিক নির্মাণ বলেই মনে হয়। মেয়েদের বেলায় সেটা সানি, সেটা নিয়ে অনেক কথা হয়, মেয়েদের বাইরে বেরোতে হবে, তাই নিয়ে অনেক দাবিদাওয়া ওঠে, কিন্তু উল্টোটা কেন ওঠে না ?
    মেয়েদের ঘরের কাজই করতে হবে, এটাই মেয়েদের কাজ, মেয়েরা এটাই ভালো পারে, এই কখনো স্বাভাবিকতার দোহাই, কখনো মহত্বের আলখাল্লা পরানো, কখনো বাধ্য করা .. এই নানা ফর্ম কি আসলে সামাজিক নির্মাণ নয়, যার আরেকটা পিঠ হল, ছেলেদের বাইরে কাজ করতেই হবে, ওটাই পুরুষালি, ওসব ছেলেদেরই মানায় বা ঘরের কাজ ছেলেদের মানায় না ?
    মেয়েদের গৃহশ্রমকে সম্মান ( গ্লোরিফিকেশন বলছিনা, যথাযোগ্য মর্যাদা) দিতে হবে, এই দাবি না তুলে গৃহশ্রমকে সম্মান দেবার কথা ওঠে না কেন, হাউজহাজব্যাণ্ড না হবার পিছনে যে সামাজিক চাপ আছে, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না কেন ? প্রশ্ন রইলো।'

    নানাসুতোয় আলোচনা হওয়াতে বোধহয় অসুবিধা হচ্ছে, আগেও অনেক তর্ক হয়ে গেছে, তাই আগেরটার লিং ও রইলো।

    http://www.guruchandali.com/default/2015/04/10/1428687000000.html?commentPage=1#comments

    আর আবারো বলছি, গৃহশ্রমকে সম্মান দিতে আমার কোন আপত্তি নেই, কেউ সেটাকে চয়েজ মনে করে করলেও, কিন্তু এটা ছাড়া চলবেই না, মানে ঘরেরই কাউকে ফুলটাইম ঘরের কাজ করতেই হবে, নইলে ঠিকঠাক হবে না, ভালমতন চলবেনা, এই বক্তব্যে তে আপত্তি আছে। একে ওভরগ্লোরিফিকেশন বলছি। সে হাউজহাজব্যাণ্ডের কাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ।
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৯52117
  • আমিও কাজের ছেলেমেয়ে ভাগ করার বিরুদ্ধে, সেটা আগেও লিখেছি। যে কোন কাজই হোক, "ঘরের কাজ" বা "বাইরের কাজ" তার ছেলেমেয়ে ভাগ করা দেখলে খারাপ লাগে। আর এটা কিন্তু শুধু "ঘরের কাজে" হয় তা না, "বাইরের কাজে"ও অনেক সময়ে এরকম ভাগাভাগি চলে আসে। অফিসেও দেখবেন সাধারনত মেয়েদের কিছু কিছু কাজ বেশী দেওয়া হয়, বা এক্সপেক্ট করা হয় ওগুলো মেয়েরাই করবে। আর ছেলেদের অন্য কিছু কাজ বেশী দেওয়া হয়, বা এক্সপেক্ট করা হয় ওটা ছেলেদের ডোমেইন।
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫৭52119
  • ডিবেটে চাররকম ভিউপয়েন্টঃ

    Taking Unpaid Housework for Granted Is Wrong

    Noah Zatz

    Valuing housework is not only about so-called housewives. It equally is about single parents and two-earner couples who need child-care during their paying jobs and lack time for housework after they get home. It is about domestic workers who do get paid, yet face inadequate wages, protections and respect. Devaluing housework for one’s own family also means discounting its importance when done by others. These points suggest a broader agenda than “wages for housework,” one that acknowledges and crosses differences in family composition, race and class.

    Many problems flow from how the government measures economic well-being. In short, it privileges cash. If someone earns $15,000 and spends it on child care, the government sees income earned to help support the family. But if she cares for her kids herself, this economic activity disappears: no income, no work, no spending.

    This economic invisibility has profound consequences. Unlike the low-wage worker, the “housewife” gets no credit for contributing to the household economy. That means no protection against future disability, unemployment or retirement via Social Security or related social insurance programs. Her labor also gets ignored by tax credits and other policies that support “working families” who struggle to make ends meet. Such problems can be addressed without providing a direct wage for housework.

    Housework’s economic invisibility also harms those who cannot do it all themselves. Government poverty measurement still assumes that families have an unpaid adult staying home to do the housework. “Poverty” just means not having enough cash from a paid breadwinner to cover other needs. When that archaic assumption fails, there is no accounting for the financial and time burdens on employed adults who need to pay for housework or do it on the “second shift,” not just buy food and pay rent. The result is inadequate child care assistance and work-family conflict.

    Finally, taking unpaid housework for granted means undervaluing those who do this essential work for pay. Historically, domestic workers have been excluded from many labor protections. Despite some progress, the Supreme Court recently gave that ignoble tradition a constitutional imprimatur by disparaging home care workers as “quasi,” not “full-fledged,” employees and undermining their collective bargaining rights. Even when public policies do support necessary domestic labor, they often pay absurdly low rates and constantly seek to shift work onto unpaid family members. This comes full circle when close kin are barred from getting paid for what would earn a stranger wages.
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৬52120
  • A Better Solution to Household Chores: Work-Family Balance

    Heather Boushey

    As I sit down at my desk at home to write this brief column on the value of housework, I also find myself staring at a very large pile of laundry. Most families today in our nation do not have someone at home whose full-time job is to care for children and others, clean house and take care of other domestic chores. Certainly, that is not the case at my house. Yet, these chores still need to get done. Clean clothes and dinner on the table at a reasonable hour are the kinds of things that make a house a home, at least in our imaginations.

    Paying women wages for doing housework presumes that women are and should be the ones who do the housework, and that they do not already have a paying job. In most families in the United States today men and women are sharing housework (although she still does a lot more than he does, men are doing more each year) and most women work outside the home.

    So a more practical solution is to encourage greater household sanity by addressing the long-term rise in family hours of work and the long-term stagnation of family wages. If all adults work outside the home then someone will need to be paid to care for children, the elderly and, yes, take care of the laundry. Yet, for most families, the cost of these important services are beyond their family budgets. For the bottom 80 percent of all U.S. families, incomes are the same today as they were over a decade ago, after factoring in inflation, which means affordable high quality child care and solutions for ailing elders (let alone being able to outsource some of the household chores) is quite frankly out of reach.

    Another solution would be to make it possible for more families to have adults work just a little bit less than full time. Surveys show that this is something people would like. If everybody were to put in 30 or 35 hours a week, then there would be enough time to not only do well at work but also do some of those chores at home.

    Laundry, of course, takes a lot less time to do today than it did 50 years ago. But it still takes time. And with two jobs and no one at home all day, that extra added burden after work is a real chore. Maybe I have read too many Harry Potter books, but I know that I wish that we had a magical chore-completing household elf.
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৭52121
  • Give Women Equitable Opportunity in the Public Sphere

    Milad Doroudian

    If monetary value were placed on housework, marriage would be an employee-employer relationship, creating disparity and inequality since money means power.

    Whoever pays a partner to take care of the family would be able to exert further control. Although this is completely acceptable within the public domain, it would be pernicious for a family. Children would feel dejected when they learn that the person who loves them, and whom they have called mother or father, was in fact getting paid to raise them.

    The real way to achieve the equality is to give all women real equitable opportunity in the public sphere, where they could use the money they earn to hire someone to do the housework. That's an employee-employer relationship that would not harm any personal relations.

    What is the true value of housework? The prospect of seeing your children grow up, healthy and happy.
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৮52122
  • Compensation for Housework Should be a Family Decision

    Porcshe N. Moran

    A couple of years ago, I wrote an article titled “How Much is a Homemaker Worth?” I set out to come up with a salary for the services that a typical stay-at-home mom or dad might provide. I looked at industry standards for things like meal preparation, childcare, housekeeping and driving. My estimate came to more than $96,000 a year.

    I understand why advocates have pressed for laws to make husbands pay their wives for housework. The job of a homemaker is often taken for granted. The women and men who devote their days to keeping their households in order deserve respect and appreciation.

    But I don't think laws are beneficial or practical in this situation. It is a complicated proposal that requires examination. For starters, every homemaker has different responsibilities depending on their family's circumstances. How would the government determine a monetary value for housework that would fit every family? India's Ministry of Women and Child Development wants a mandatory percentage of men's incomes to go to their wives in exchange for housework. This makes a wife's earnings dependent on her husband's earnings, not the value of her work. Unless the government is going to provide subsidies for homemakers, there is no real economic gain. I suspect that most homemakers would recycle their earnings back into the needs of the household. Furthermore, I'm troubled by the thought of spouses as employees. Will we have to sign a W-9 with our marriage licenses? Also, how will the government enforce these laws?

    I support compensation for homemakers. But I think it is best left up to individual families, not a government mandate, to figure out the best way to do it.
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:১১52123
  • দেখতে পাচ্ছি যে ওপরের চাররকম ভিউপয়েন্টই এই আলোচনায় এসেছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স লেখাটার সাথে অনেকটা একমত। এর আগেও কিছুটা এরকমই বলতে চেয়েছি, যদিও তখনো এই ডিবেটটা পড়িনি।
  • puro | 203.55.36.75 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৪52154
  • আলোচনাটাই জনসংখ্যার একটা সুনির্দিষ্ট অংশকে টার্গেট করে। তাও সেটাকে চিহ্নিত করার মত কিছু বলা নেই। চোরকে হরিনাম করতে বলার মত।
  • | 11.39.48.47 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৩52125
  • অবিবাহিত মেয়েরা ভাই বা বাবা মায়ের সংসারে যে শ্রম দিতে বাধ্য হয় তাদের জন্য কী ব্যবস্থা এই প্রশ্ন একদম শুরুর দিকে অর্পনও তুলেছে আমিও তুলেছি। লেখক সেই প্রশ্ন সম্পুর্ন উপেক্ষা করেছেন কারণ সম্ভবত ওটা ওনার মডেলে ফিট করছে না। বিরুদ্ধমত দেখলেই সেটা সমস্যাকে অস্বীকার করার চেষ্টা বলে দাগাতে চাইছেন উনি।

    এক্সপ্লয়টেশান নির্মূল করতে বা কমাতে গেলে
    গেলে ভিক্ষে বা আট্টু ভালো ভাষায় অনুদান দিয়ে কমানো যাবে না বলেই আমি মনে করি। বরং বঞ্চিত মানুষটির হাতে আরো বেশী অপশান যাতে আসে সেটা দেখা দরকার।
  • | 11.39.48.47 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৩52124
  • অবিবাহিত মেয়েরা ভাই বা বাবা মায়ের সংসারে যে শ্রম দিতে বাধ্য হয় তাদের জন্য কী ব্যবস্থা এই প্রশ্ন একদম শুরুর দিকে অর্পনও তুলেছে আমিও তুলেছি। লেখক সেই প্রশ্ন সম্পুর্ন উপেক্ষা করেছেন কারণ সম্ভবত ওটা ওনার মডেলে ফিট করছে না। বিরুদ্ধমত দেখলেই সেটা সমস্যাকে অস্বীকার করার চেষ্টা বলে দাগাতে চাইছেন উনি।

    এক্সপ্লয়টেশান নির্মূল করতে বা কমাতে গেলে
    গেলে ভিক্ষে বা আট্টু ভালো ভাষায় অনুদান দিয়ে কমানো যাবে না বলেই আমি মনে করি। বরং বঞ্চিত মানুষটির হাতে আরো বেশী অপশান যাতে আসে সেটা দেখা দরকার।
  • Tirjak | 127.194.239.180 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৮52126
  • স্বর্ণেন্দু ও পাই,

    আমি সবকটা লেখায় বার বার বলেছি, এমনকি এই আলোচনার শুরুর দিকেও বলেছি (মূলতঃ পাই-য়ের কথা মাথায় রেখেই) ঘরের কাজ মেয়েরাই বেশি করেন বলে এখানে গৃহবধু শব্দটি লেখা হয়েছে কারণ গৃহস্বামী কথাটা টেকনিক্যালি লেখা যায় না, অন্য মানে হয়। কিন্তু এটা মূলতঃ ঘরের কাজের মূল্যায়নের গল্প, ছেলে না মেয়ে সেটা এখানে বড় কথা নয়। পাই কি সে সব কিছুই দেখো নি !
    তবে এই ঘরের কাজগুলো ছেলেরা ভালোবেসে করতে চাইলে বিভিন্ন লেভেলে যে খারাপ লাগা, যাকে সা নি বা কাঁ বা বলা যায়, তার প্রতিবাদ এই আলোচনার বিষয় নয়। পাই বা অন্য কেউ সেই বিষয়ে কিছু লিখলে তখন সেই নিয়ে আলোচনা হবে।
    এই লেখাটা শুরু হয়েছিল ২০১৫ এর ৮ই মার্চ স্বাতী ভট্টচার্যের একটা লেখা দিয়ে, যেখানে উনি বলেছেন ঘরের কাজের মোহে মেয়েরা আটকে পড়ে যায়, কিন্তু এই সব কাজ যাতে মনের প্রসারতা বাড়ে না, সেখানে আটকে থেকে কি মেয়েদের কিছু ভালো হচ্ছে ইত্যাদি। সেই লেখার রেফারেন্স আমার প্রথম লেখায় আছে। সেই লেখার তীব্র প্রতিবাদ শুনেছিলাম অনেক জায়্গায়, গুরুতেও, যে মেয়েদের কাজে মনের প্রসারতা বাড়ে না ইত্যাদি কেন লেখা হল, কে বলেছে এই সব কাজ গুরুত্বপূর্ণ নয় ইত্যাদি। সেইখান থেকেই আমার মনে হয়েছিল, সত্যি কি ঘরের কাজের কিছু মূল্য নেই ? কেনই বা নেই ? আর যদি আছেই তা হলে একজন কেন সম্মনের সঙ্গে বলতে পারেন না যে আমি ঘরের কাজ করি। মনে হয়েছিল সেটা অনেকটা এই জন্য যে এই কাজ উপার্জনশীল নয়। রোজগার হয় এমন সব কাজেও কি মনের প্রসারতা বাড়ে, কিন্তু তাতে আটকে থাকলে তো তেমন কথা ওঠে না। তাছাড়া ঘরের কাজের গুরুত্বও কি এতটাই কম, যে যদি কেউ ঘরের কাজই ভালোবেসে করেন তাহলে তিনি তেমন কিছুই করছেন না এইটা ভাবতে হবে ! এইসব ভাবনা থেকে এই লেখা। এই সব লেখা।
    এখন যে সংসারে মাসের শেষে ৫০০০ টাকা আসে সেখানেও মহিলার হাতে কিছু টাকা থাকা সংসারের ভালোর জন্যই খুব দরকার, না হলে ঐ সামান্য টাকার কিছুটা 'বাংলার' নালী দিয়ে বয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে সেই সব অসংগঠিত ক্ষেত্রে নিয়ম করা কঠিন, কিন্তু ভাবনা চিন্তা শুরু হতে পারে।
    পাই যেহেতু মনেই করো না (অনেকেই মনে করেন ন আর এটাই তো আসল অন্ধকার, বলেছি আগেই !) যে গৃহবধুদের ফুল টাইম কাজের তেমন গুরুত্ব আছে তাই তোমার কাছে এসব কথাই, মানে গৃহকর্মের জন্য বেতন ইত্যাদি, অর্থহীন মনে হবে, তাই তোমার কাছে আর ঐ সেট-সাবসেট এর বিষয়ে কিলিয়ার কিছু জানতে চাইলাম না। এইটা আগে সরাসরি লিখে ফেল্লেই হত, তাহলে আর তোমাকেও প্রতি পদের এটা ওটা প্রশ্ন করতে হত না !ঃ-) তবে আলোচনাটা এগোচ্ছে এটাই ভালো।
    S, dc, জ, অরিন্দম ও স্বর্ণেন্দু বিভিন্ন দিক থেকে দেখছেন বিষয়টাকে,এটাই সবচেয়ে ভালো। dc-র দেওয়া লিংকগুলো পড়ে দেখি আর কে কি বলে !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত প্রতিক্রিয়া দিন