এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নারীদিবস ঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম ঃ কিছু সংযোজন

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৪৮৩ বার পঠিত
  • ঘরকন্না ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গল্প

    যে জীবন ফড়িং-এর দোয়েলের, মানুষের সাথে তার যে দেখা হয় না, সেকথা জানাই ছিল। কিন্তু যেসব জীবন মানুষের-মানুষীরই, তাদের আশেপাশেই থেকেও সেইসব জীবনের সাথেও যে মানুষের আসলে দেখা হয় না, তাও মাঝে মাঝে এমনভাবে জানতে পেরে অবাক হতে হয়।
    এই ক’দিন আগে আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রবন্ধ ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে দেবেন না কেন ?’ পড়ে নানাজনের কাছ থেকে পাওয়া মতামতগুলো পড়তে পড়তে কথাগুলো মনে হল। সেদিনটা দোলের ছুটির পরের দিন, কাগজের প্রিন্ট বেরোয় নি তাই লেখাটা শুধু আবাপ’র ওয়েব সংস্করণেই বেরিয়েছিল, যাঁরা পড়েছেন তাঁরা প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষিত, উচ্চবিত্তও। এবং মহিলারা বেশির ভাগই কর্মরতা। তাই এই লেখা, এই ‘ঘরের কাজের জন্য মাইনে’র ধারণা হয়তো সরাসরি তাঁদের জন্য নয়। যে মধ্যবিত্ত / নিম্ন মধ্যবিত্ত গৃহবধুদের কথা ভেবে এই লেখা, তাঁদের হয়ত এই লেখা পড়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু তাঁদের যে আমরা একেবারেই চিনি না, এমনও তো নয় ! কিন্তু দেখা গেল এই লেখা যাঁরা পড়েছেন সেই পাঠকগোষ্ঠীর সিংহ ভাগ মহিলা ও কিছু পুরুষ এই ব্যাপারটায় নানাভাবে আপত্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। লেখকের কাছে প্রতিটি মতামতই মূল্যবান, বিরুদ্ধ মতামত বেশীই মূল্যবান কারণ তা প্রায় টর্চের আলোর মত যেকোন ধারণার অন্ধকার কোণায় আলো ফেলে দেখিয়ে দেয় তার ভুল ভ্রান্তি। উল্টোদিকে বিরুদ্ধ মত যারা পোষণ করেন, লেখকেরও দায় থাকে তাঁদের বোঝার ভুল থাকলে তা ধরিয়ে দেওয়া।
    তাই প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো গৃহশ্রমের / গৃহকর্মের মূল্যায়নই এই লেখার মূল কথা। গৃহকর্ম বলাই বেশী ভালো কারণ ততটা শ্রমসাধ্য নয় কিন্তু অনেকটা যত্ন ও ভালোবাসা (এবং আত্মত্যাগ) মেশানো যে সব ছোট ছোট কাজ একটা ঘর কে সংসার করে তোলে আর গৃহবধু কে পরিচারিকার থেকে আলাদা করে সেগুলোর কথাও এখানে ভাবা হয়েছে। সেই গৃহকর্ম যাতে একটা সম্মানজনক পেশায় পরিণত হতে পারে এবং গৃহবধুও নিজেকে বঞ্চিত না ভাবেন বা ‘আমি তো কিছু করি না’ জাতীয় হীনম্মন্যতায় না ভোগেন, সেই জন্য তাঁর একটা নিয়মিত বেতনের কথা ভাবা, যেটা তাঁর স্বামীর বেতনের একটা অংশ (ধরুন ২০%)হিসেবে নিয়মমাফিক সরাসরি তাঁর কাছে আসবে (যেভাবে ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে আসে)। স্বামী এখানে এমপ্লয়ার নন, দাতা তো ননই, তাঁর রাজী হওয়া না হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেভাবে ট্যাক্স, পি এফ এর টাকা কাটা যায় সেই ভাবেই নিয়মমাফিক তাঁর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন কাটা হবে (অবশ্যই যদি স্ত্রী চাকরী না করেন)। সেই বেতন ঘরের কাজের দরুণ মহিলাটির নিজস্ব উপার্জন, আর এই উপার্জনই তাঁকে স্বনির্ভর করে তুলবে। নিজের ছোটখাটো চাহিদার জন্য স্বামীর কাছে হাত পাততে হবে না, কৈফিয়ৎ দিতেও হবে না। একজন গৃহবধু সসম্মানে বলতে পারবেন ‘আমি ঘরের কাজ করি’।
    এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অজস্র যুক্তি ও আপত্তির মধ্যে প্রথমই হল, গৃহবধুর আর আলাদা করে কাজ কি ? ঘরের সব কাজই তো পরিচারিকা করেন, বাচ্চাকে পড়ান টিউটর আর স্কুলে নিয়ে যায় পুলকার বা স্কুলবাস। তাছাড়াও এইসব মহিলারা স্বামীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতখরচা পান, তাতেই তাদের শখ-আহ্লাদ দিব্য মিটে যায়। আর খাওয়া-পরা সমেত সংসারের বড় খরচ তো পুরুষটির(স্বামী)উপার্জন থেকেই হয়, এর পর আবার মাইনে কিসের ! এই কথাগুলো পড়েই মনে হয়েছিল আমরা কবে খিড়কি থেকে সিংহদুয়ারের বাইরের পৃথিবীটা চিনতে শিখব ! অথচ আমরা যে একেবারেই সংবেদনশীল নই তাও নয়, গায়ক অভিজিৎ যেদিন রাস্তায় থাকা মানুষদের গালাগাল দিয়েছিলেন, সেদিন আমরা তাঁকে ছেড়ে কথা বলিনি। বাড়ির পরিচারিকাদের এমনকি যৌনকর্মীদেরও শ্রমিকের সম্মান দেওয়া নিয়ে আমরা ভাবি। তাহলে গৃহবধুদের ব্যাপারে আমরা এত উদাসীন কেন !
    আসলে আমরা অনেকেই নিজেদের চাকরী করা জীবনটা দেখতে পাই, পাশের বাড়ির / ফ্ল্যাটের গৃহবধুর আরামের জীবনটা দেখতে পাই আর দেখতে পাই নীচের তলার বাসিন্দা আমার ‘কাজের মাসি’র কঠিন জীবনটা। এর বাইরে মধ্যবিত্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন উপার্জন স্তরের বাসিন্দা যে গৃহবধুরা তাঁদের জীবনটা আমরা দেখতেই পাই না। এই শহর কলকাতায় আমাদের আশেপাশেই তাঁরা থাকেন, কোনো একটা সরকারী ইস্কুলের গেটের কাছে ছুটির সময়টা একটু দাঁড়াবেন, বাচ্চাদের নিতে আসা মায়েদের কথায় কান দেবেন, তাঁদের চেহারা-সাজগোজের দিকে নজর দেবেন, বুঝতে পারবেন গৃহবধু কাকে বলে। একপর্ব রান্নাবান্না সেরে বরকে কাজে পাঠিয়ে বাচ্চাকে নিতে এসেছেন, গিয়ে বাকি রান্নাটা সারতে হবে, ফেরার পথে হয়ত এটা ওটা বাজারও করে নিতে হবে। ঠিকে কাজের লোক একটা এঁদেরও আছে, বাসন মেজে ঘর মুছে কি সপ্তাহে একদিন কিছু কেচে দিয়ে যায়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। রোজকার কাচাকাচি, ঘরগোছানো, বাচ্চাকে স্নান করানো, খাওয়ানো, পড়ানো, জামা কাপড় ইস্ত্রী করা, অতিথি আপ্যায়ন, অসুখে সেবা, এই সব কাজ এঁরা নিজের হাতেই করেন। এই ডিউটি নিয়ে কিছু বলার নেই, এঁদেরও নেই, আমারও নেই কিন্তু দিনের শেষে এঁরা কেন নিজেদের ‘স্বনির্ভর’ মনে করবেন না, উপার্জনের প্রশ্নে মাথা নীচু করে থাকবেন, সেই প্রশ্ন আমাকে ভাবায়। কারণ এটাই বাস্তব, পয়লা বৈশাখে নিজের মাকে একটা শাড়ী দিতে গেলে এই মহিলাদের বরের কাছে হাত পাততে হয়, আর হাত পাতলেই সব সময় হাত ভরে এমনও নয়। এই জীবনটা ‘আমাদের’ নয়, কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের ওই প্রান্তে যে বিরাট সংখ্যক মহিলা বাস করেন যাদের স্বামীরা ছোটখাটো চাকরী বা ব্যবসা করেন, তাঁদের জীবনটা এইরকমই।
    কিন্তু নিয়ম যদি করতেই হয় তাহলে তা সকলের জন্যই করতে হবে আর তাতে আখেরে কিছুটা যাতে সুরাহা হয় সেটাই দেখতে হবে। স্বামীর মাইনের / উপার্জনের কিছু নির্ধারিত অংশ যদি স্ত্রী-র হাতে আসে আর মহিলাটি যদি তার থেকেই পরিচারিকার মাইনে দেন তাহলে একটা কিছুটা সুরাহা হতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে যিনি বেশির ভাগ কাজ নিজের হাতে করেন আর যাঁর সব কাজ পরিচারিকা করে দেয় তাঁদের মধ্যে উপার্জনগত ভাবে একটা তফাৎ থাকবে। স্বামীকে আর আলাদা ভাবে বৌকে হাত-খরচ দিতে হবে না, আর স্ত্রীও নিজের এই উপার্জনের কতটা সংসারে খরচ করবেন, কতটা নিজের হাতে রাখবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন। কিন্তু তাঁকে স্ব-নির্ভর বা উপার্জনক্ষম নন একথা আর বলা যাবে না কারণ মাসের শেষে তাঁর হাতেও নিয়ম করেই কিছু টাকা আসছে আর সেই টাকাটা তাঁর স্বামী দিচ্ছেন না। এই কথাটিই এই ব্যবস্থার মূল কথা আর এই কথাটা হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে তাই আবার লিখতে হল।
    কিন্তু যাঁরা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মতামত দিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বুঝতেই পারছেন না, বাড়ির কাজ যা অনেকটা নিজের জন্যও করা, যা ভালবেসে করা তার জন্য মাইনে কেন ! পুরুষেরা কেউ কেউ আরও এক পা এগিয়ে বলেছেন যে মাইনে থেকে ভাগ দিতে হলে তো কাজের লোক রাখলেই হয়, বিয়ে করার দরকার কিসের ! আর মেয়েরা অনেকেই একটা কথা বলেছেন যে সংসারের পেছনে একজন মহিলার যা অবদান তা কি টাকা দিয়ে মাপা যায় ! অর্থাৎ নিজের সংসারে কাজ করে টাকা নিতে তাঁদের ‘ইগো’তে লাগছে। আবারও বুঝিয়ে বলি, দেখুন, একটা রাস্তায় যানজটের জন্য দেরী হলে সেই দেরীর দরুণ ক্ষতিটুকুও অর্থমূল্যে মাপা যায় কারণ তা দেশের উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে। ওপরে যেসব কাজের তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা সমেত একটা পূর্নাঙ্গ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে গৃহবধুরা যে তাকে তাকে সুষ্ঠু ভাবে চালান, সেটা কাজের মানুষটির(পড়ুন পুরুষটির)উৎপাদনশীলতাকে ও কর্মক্ষমতাকে নিশ্চই প্রভাবিত করে কিন্তু সেই বিরাট পরিমাণের শ্রম আমাদের অর্থনীতিতে উহ্যই থেকে যায় যুগের পর যুগ তার কোন ‘মূল্যায়ন’ হয় না, এটা কতটা সঙ্গত সেটা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। সংসারের ‘সমস্ত’ কাজের জন্য কাজের লোক রাখা এমনিতেই সম্ভব নয়, যতটা রাখা সম্ভব তার জন্যও খরচের অঙ্ক বিরাট। কিন্তু সেই খরচ দিয়েও একজন গৃহবধুর মত পরিষেবা পাওয়া যায় না, এইটা ছেলেদের ও মেয়েদের সবাইকেই বুঝতে হবে। সেভাবে দেখতে গেলে কোনো পেশাতেই পেশাগত দক্ষতা, যত্ন ও ভালোবাসা টাকা দিয়ে মাপা যায় না; যে যত্ন নিয়ে একজন আদর্শ ডাক্তার একটি শিশুর জন্ম ঘটান বা যে ভালোবাসা নিয়ে একজন শিক্ষক কঠিন বিষয়কে সহজ করে শেখান তাও কি টাকায় মাপা যায় ? তবু সেই সব পেশার ক্ষেত্রেই আমরা আর্থিক মূল্যায়নকে মেনে নিয়েছি কারণ এ ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। তাই গৃহকর্মকে একটা পেশা হিসেবে সম্মান দিলে তার মূল্যায়নের কথাও ভাবতে হবে।
    কিন্তু হয়নি এযাবৎ। আর সেই জন্যই কেউ গৃহকর্মকে পেশা হিসেবে ভাবতে পারেন না আর সেই ভাবেই সংসারের ছোটবড় কাজগুলো অকিঞ্চিৎকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সে কাজগুলো না করলে যে চলবে এমনও নয়। খেতে আপনাকে হবেই, গৃহবধু রান্না না করলে রান্নার লোক রাখা, না হলে হোম ডেলিভারী। রান্নার লোকের ওপর তদারকি না করলে রান্না খারাপ, তেল বেশি, পরপর ক’দিন খারাপ / একঘেয়ে রান্না খেলে একদিন বাইরের খাওয়া চাইই। তার মানে রান্না-খাওয়া ব্যাপারটা একেবারে এলেবেলে নয়, কিন্তু যখন তা বাড়ির বৌটি করছেন তখন আমরা সেটা আলাদা করে ভাবছি না। সেই রকমই অন্যন্য কাজও। কাউকে না কাউকে সেগুলো যত্ন করে করতেই হয়, না হলে পরিবারের ধারণা দাঁড়ায় না। তাই বিয়ে করাটা নারী-পুরুষ কারুর কাছেই সমাজসেবা নয়, নারীর যেমন নিরাপত্তা চাই, পুরুষেরও দিনের শেষে নিজের সংসার নিজের ভালোমন্দ দেখার মানুষ দরকার।
    তবে এখানে ঘরের কাজ মূলতঃ মেয়েরা করেন এবং পুরুষ বাইরেই কাজ করেন বলেই বার বার ‘গৃহবধু’ বলা হয়েছে, তবে আসলে এটা গৃহশ্রমের মূল্যায়নের গল্প। তাই যে নারী বাইরে কাজ করতে চান করুন, যে পুরুষ ঘরে কাজ করতে চান করুন (সেই ‘কি’ আর ‘কা’ এর গল্প), বেতনের নিয়মটা আলাদা কিছু হবে না কারুর জন্য। দুজনেই বাইরে কাজ করলে ঘরের কাজ তাঁরা কিভাবে করবেন সেটা নিজেরাই ঠিক করবেন কারণ সে ক্ষেত্রে মহিলাটিরও নিজের মত জানানোর যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। কিন্তু ঘরের তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলো সে মেয়েরা করুন বা ছেলেরা করুন, কাজ হিসেবে যে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেটাই মনে করানোর জন্য এবং তাকে স্বীকৃতি দেবার জন্য এই নিয়ম।
    গৃহশ্রমের এইভাবে মূল্যায়নকে যারা সরাসরি স্বীকার বা অস্বীকার করতে পারেন না দেখা গেছে তারা এর বাস্তবায়ন নিয়ে ভয়ানক চিন্তিত। যেমন গৃহবধু যদি ‘মাইনে’ পান তাহলে ইনক্রিমেন্ট, পি এফ, গ্রাচুইটি, ইত্যাদি কি ভাবে হবে, সি-এল, ই-এল এর সুযোগ থাকবে কিনা, আরো ভালো ‘মাইনে’ পেলে গৃহবধুর চাকরী বদলানোর সুযোগ থাকবে কিনা ইত্যাদি। বোঝাই যাচ্ছে এর অনেক কিছুই স্রেফ বিরোধিতা করার জন্য বলা, কিন্তু লেখকের দায় থাকে সব প্রশ্ন নিয়েই ভাবার। তাই এই ধরনের সমস্যারও কিছু সমাধানের কথা ভাবতে হয়। স্ত্রীর বেতন যেহেতু স্বামীর বেতনের একটা অংশ হিসেবে আসবে, সে ক্ষেত্রে স্বামীর আয় যেমন যেমন বাড়বে, স্ত্রীরও সেই অনুপাতেই বাড়বে, পেনশনও পাবেন সেই ভাবেই। কিন্তু দেশের সমস্ত চাকরীর শর্ত যেমন একরকম নয়, সেইরকম এই চাকরী থেকে ‘ছাঁটাই’ এর প্রশ্ন নেই কারণ বর এর এমপ্লয়ার নন, মহিলাই বা চাকরী ‘বদলানো’-র কথা ভাবতে পারবেন কি করে, নিজের স্বামী সন্তান ছেড়ে অন্য সংসারে অন্য স্বামী-সন্তানের মাঝখানে ফিট করে যাওয়া কি বাস্তব সম্মত কথা হল ! যাঁরা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা সম্ভবতঃ এত কিছু না ভেবেই বলেছেন। কিন্তু এর পর থেকে এইরকম প্রশ্ন করার আগে আশা করব একটু ভেবে করবেন। আর সি-এল-ই-এল ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বলব আপনি যেমন অফিসে প্রয়োজনমত ছুটি নেন, গৃহবধুও দরকার মত নেবেন, তখন ঘরের কাজ কিভাবে হবে তা তিনিই ঠিক করবেন। তবে এই সব অনেক প্রশ্নই অবান্তর কারণ গৃহবধু পরিচারিকা নন, নিজের দায়িত্বেই তিনি সংসারের নানাদিক দেখে থাকেন। বিনা পারিশ্রমিকেই। শুধু পারিশ্রমিক নিলেই তাঁকে ভাড়া করার কাজের লোকের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। গৃহবধুকে তাঁর জায়গায় রেখে তাঁর পরিষেবাকে সম্মান জানাবার জন্যই এই ভাবনা।
    এই নিয়ম চালু হতে গেলে প্রাথমিকভাবে হয়তো অনেক মেয়েরা নিজেরাই এই পারিশ্রমিক নিয়ে চাইবেন না। কিছুটা চক্ষুলজ্জা (নিজের সংসারে কাজ করে পয়সা নেবো ! ছিঃ, লোকে কি বলবে ), কিছুটা ইগোয় লাগা (আমার দায়িত্ব কি টাকায় মাপা যায় !) যে কথা আগে বললাম। কিন্তু ‘সাফারার’ এর মতামত নিয়ে নিয়ম চালু করতে গেলে হয়তো সতীদাহ-বিধবা বিবাহ-বহুবিবাহ কিছুই রদ করা যেত না। কিন্তু যখনি একটা নিয়ম চালু হয়, কিছু মানুষ তার সুবিধে পেতে শুরু করেন, তখনই আস্তে আস্তে সেটা অর্থবহ হয়ে ওঠে। তার বাস্তবায়নের নানা সুবিধে অসুবিধেও তখনই সামনে আসে আর তার সংশোধনেরও রাস্তা খোলা থাকে। কিন্তু প্রস্তাবটা গোড়ায় বিনাশ করে দিলে এ সব কিছুই আর হয়ে ওঠে না।
    গৃহশ্রমের মূল্যায়নের এই মডেল একটি ধারণা মাত্র। মানে এটা নিয়েও যে ভাবা দরকার আর এভাবেও যে ভাবা যেতে পারে, সেইটা জানানো। এভাবেই যে হতে হবে তা কোথাও দাবী করা হয়নি কিন্তু কিভাবে হতে পারে সেইটা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কিন্তু মজার কথা হল, যাঁরা বিরোধিতা করেছেন তাঁরা কেউ কিন্তু কোনও সমাধান দেননি, শুধু নানারকমের প্রশ্ন তুলে ঠাট্টা-তামাশা করেই কর্তব্য সেরেছেন। তবু এই অবকাশেই এই বিষয় নিয়ে দু-চারটে কথা আবারও লেখার সুযোগ হল, এটাই বা কম কি !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৪৮৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Tirjak | 127.194.239.180 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৬52127
  • না না 'দ', আপনাকে উত্তরটা দেওয়া হয়নি। এটা উপেক্ষা নয়, ত্রুটি। তার একটা কারণ সত্যিই এই উত্তরটা আমার জানা নেই। তবে দেখুন অবিবাহিত অনুপার্জনশীল বোন সংসারে বাধ্যতামূলক ভাবে কতটা শ্রম দিচ্ছেন, তার পরিমাপও তো সহজ নয়। একতা নিয়মে কি সব কিছু প্রথমেই কভার করা যায় ? আপনিই কিছু প্রস্তাব দিন না। কি হলে হবে না শুধু সেইটুকু না বলে কি করতে হবে, তার একটা রূপরেখা দিন না সবাই মিলে ! তবে প্লীজ ভিক্ষে বা অনুদান ইত্যাদি জাজমেন্টাল কথাগুলো না বল্লেই ভালো, কারণ এতদিনে এত লেখার পর এটা বুঝে যাওয়া উচিত যে এখানে সরাসরি বেতনের কথা বলা হচ্ছে, ভিক্ষে-অনুদান-হাতখরচা ইত্যাদির ক্থা নয়।
  • sosen | 184.64.4.97 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:৫২52128
  • পরিবার ইউনিটটা যতদিন থাকবে ততদিন পরিবারের উপার্জনশীল ব্যক্তির কাছ থেকে আসা টাকাপয়সা হাতখরচা বলেই মান্য হবে, বেতন বলে একটা স্ট্রাকচারে ফেলা কঠিন। বহু সংসারে উদ্বৃত্ত টাকাপয়সা, হেসেখেলে গৃহিণী টাকা ওড়ান, কিন্তু মতবিরোধ হলেই কে রোজগার করেছে সেই প্রশ্ন আসে, আসা অস্বাভাবিক বলেও মনে করি না। উদ্বৃত্ত না থাকলে তো পদে পদে মনে করিয়ে দেওয়া হবেই। এ তো মানবচিত্তের সাধারণ ঝোঁক।
  • de | 24.97.128.175 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:০৭52129
  • মহিলাদের উপার্জনশীল হওয়াও বাধ্যতামূলক হবে খুব শিগ্গিরি - পরিস্থিতির চাপেই হবে। খুবই উচ্চবিত্ত কিছু সেক্টর ছেড়ে মধ্যবিত্ত খুব বেশীদিন আর গৃহবধূসুখ (ডিঃ উভয়তঃ)ভোগ করতে পারবেন না। দুজনে আয় না করলে সামলানোই মুশকিল হবে।

    ঘরের কাজকে মেয়েদের কাজ বলে মনে করাতেই আমার বেসিক আপত্তি। বাকি পয়সা-টয়সা পেলে ভালোই। এমনিতেও আমার দেখা গৃহবধূদের অধিকাংশই বরকেই হাতখরচ দিয়ে থাকে।

    চাকুরীরতা মহিলাদের জন্যও কিছু আইন হলে পারে! গৃহবধূদের চেয়ে অনেক বেশী চাপ বরং তাদের নিতে হয়। ঘরে-বাইরের পুরোপুরি চাপ।
  • Arpan | 233.227.103.192 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:০৯52130
  • বোন শুধু না, বেকার ভাই, বৃদ্ধ বাবা-মা সবাই ডিপেন্ডেন্ট। টোনাটুনির সংসার কিন্তু আলোকপ্রাপ্ত এলিট গোষ্ঠীরই একচেটিয়া। শতাংশের হিসেব কষতে গেলে সত্যিই দাদা অঙ্ক বড় কঠিন না হয়ে যায়।

    সে যাউগ্গা, ইম্প্লিমেন্টেন্শনের খুঁটিনাটি নিয়ে আলুচানা হচ্ছে মানে লোকজন মডেল ও তার বাস্তবায়ন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে এইটা ধরা যেতেই পারে। এইরকম আইন করা যেতেই পারে তবে তার এনফোর্সমেন্ট করবে কেডা? আর দ্বিতীয়ত আইন থাকলে তার ফাঁকও থাকবে। দু তিনটে বিকল্প জিনিস ভেবে দেখা যায়। এক, সবার জন্য বেকারভাত, যেটা সোশাল ডেমোক্রেটিক নেশন তাও উন্নত জিডিপি না হলে অসম্ভব। দুই, আইন না করে মহিলাদের হাতে বেশি টাকা আসার কালচারকে রাষ্ট্রের হয়ে প্রোমোট করা। যেমন ধরুন কিছুটা অতিরিক্ত আয়কর ছাড় অথবা/এবং মেয়েদের নামে করা অ্যাকাউন্টে কিঞ্চিং অধিক সুদের বন্দোবস্ত। এইসব।

    কিন্তু দিনের সেশে ঐখানেই আটকে যেতে হয়। এই মডেলের সুবিধা পাবেন ক শতাংশ মানুষ? যারা দোকানদার, কৃষিজীবী, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষ তাদের সংখ্যা কত? এইসবের কিছুটা হদিস আমি "সংযোজিত" অংশে আশা করেছিলাম। পেলাম না এবং বুঝলাম এখনো মডেলটি একটি হাওয়ায় ভাসানো জনহিতৈষী প্রস্তাবনা হয়েই দাঁড়িয়ে আছে।
  • Arpan | 233.227.103.192 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:১৩52131
  • বেকারভাতা

    * বাজে টাইপো (মোবাইলজনিত)
  • Arpan | 233.227.103.192 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:২৩52132
  • দ্বিতীয়ত, যারা ঠাট্টাতামাশা করেছেন সমাধান দেন নাই কিছুই তাদের উপরেও এত খড়্গহস্ত হবার কোন কারণ নেই। এক, তারা অংশগ্রহণ (বলা ভালো প্রস্তাবিত মডেলের কাটাছেঁড়া) করে আলুচানাকে জিইয়ে রাখতে অন্তত কাঠবিড়ালীর ভূমিকাটুকু পালন করেছেন। আর দুই, আলোচনাসভায় সবাই এক রঙের টুপি মাথায় দিয়ে আসেন না। সেটা আশা করাও উচিত না। ডি বনো স্মতর্ব্য।
  • Robu | 11.39.39.253 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:৩২52133
  • "আইন না করে মহিলাদের হাতে বেশি টাকা আসার কালচারকে রাষ্ট্রের হয়ে প্রোমোট করা। যেমন ধরুন কিছুটা অতিরিক্ত আয়কর ছাড় অথবা/এবং মেয়েদের নামে করা অ্যাকাউন্টে কিঞ্চিং অধিক সুদের বন্দোবস্ত। এইসব।

    কিন্তু দিনের সেশে ঐখানেই আটকে যেতে হয়। এই মডেলের সুবিধা পাবেন ক শতাংশ মানুষ? যারা দোকানদার, কৃষিজীবী, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষ তাদের সংখ্যা কত?"
    ক।
  • de | 24.97.128.175 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:৪০52134
  • হ্যাঁ, প্পন ডিপেন্ডেন্টের যা সংজ্ঞা লিখলো তাতে গৃহবধূর বাপ-মাও তো ইনক্লুডেড। তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেবার কথাও গৃহবধূর ভাবা উচিত।
  • pi | 74.233.173.177 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:৪৬52135
  • আমি কি অনেক আগেই এটা লিখিনি? পড়ে দেখো তো।

    বরম আমি প্রশ্ন করতে ফুলটাইম গৃহবধূর কাজ এত অপরিহার্য কেন ? দুজনে চাকরি করলে সেই সন্গ্সার চলে না নাকি ? না চললে কেন নয় বোঝানো হোক। সেক্ষেত্রে এটাও বলব লোকজনকে বাইরে না বেরোতেই এনকারেজ করা হচ্ছে কারণ ঘরের ফুলটাইম কাজ মাস্ট বলা হচ্ছে।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:১১52136
  • বাচ্চার ভার মাকেই নিতে হয়। অনেক সময়ে চাকরি ছেড়েই নিতে হয়। এটা মনে হয় একটা উনিভার্সাল সত্য। ৩-৫ বছর এক্জন বসে গেলে তারপরে আবার কাজ শুরু করা মুশকিলের।

    তবে ঐযে একজন বললেন যে দুজনকেই কাজ করতে হবে - অব্স্থা সেদিকেই যাচ্ছে। তবে মহিলারা উপার্জন করলে সাধারণতঃ তাদের "দাম" বাড়ে। ডিসিশান মেকিঙ্গ পাওয়ার আসে। এবং স্বনির্ভরতা আসে, ফলে নির্যাতন কম হয়।
  • pi | 74.233.173.181 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৮52137
  • বাচ্চার ভার মাকেই নিতে হয় , কেন ? মানে তার জন্য তিন চার বছর বাড়িতে থাকতেই হবে, কেন? মানে হয়ে থাকে বলা হচ্ছে নাকি হতেই হবে ? আমাদের আলুচুনা তো কী করিতে হইবে লইয়া। তাতে কেউ বাধ্য হয়ে ঘরে থাকলে সেটাকে ই আরো সহনশীল অবস্থা করে তুলে প্রোপাগেট করার চেষটা করা ভাল নাকি সেই অবস্থা থেকে বেরিনোর ? এখানেই বেসিক্যালি গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।
  • pi | 11.39.36.235 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:০০52138
  • বাচ্চার ভার মাকেই নিতে হয় , কেন ? মানে তার জন্য তিন চার বছর বাড়িতে থাকতেই হবে, কেন? মানে হয়ে থাকে বলা হচ্ছে নাকি হতেই হবে ? আমাদের আলুচুনা তো কী করিতে হইবে লইয়া। তাতে কেউ বাধ্য হয়ে ঘরে থাকলে সেটাকে ই আরো সহনশীল অবস্থা করে তুলে প্রোপাগেট করার চেষটা করা ভাল নাকি সেই অবস্থা থেকে বেরিনোর ? এখানেই বেসিক্যালি গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৩52139
  • কিছুটা তো নিতেই হয় মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য। প্রথম ৬ মাস বা ১ বছর? ম্যাটারনাল লীভও তো এই জন্যেই বেশি হয়। তারপরে প্রায় উপায় থাকেনা। বাচ্চাকে একা রেখে বেড়োনো মুশকিল - সেক্ষেত্রে লোক রাখো বা ক্রেসে দাও বা যদি বাড়িতে অন্য কেউ থাকে তাহলে একটু বেটার।

    পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও এই ট্রেন্ডটা দেখা যায়। ফলে ইন্ডিয়ার মতন সোসাইটিতে হঠাত করে বাচ্চার বেড়ে ওঠাকে মায়ের প্রেসেন্সের থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট করে ফেলার সম্ভাবনাটা কমই লাগছে।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৫৮52155
  • পাই, আমি যেটা বলতে চেয়েছি সেটা আমার পোস্টেই আছে। অনেক মেয়েদেরকেই ৩-৪ বছর ব্রেক নিতে হয়। আমি নিজে অনেক সাকসেসফুল মহিলাদের বলতে শুনেছি যে মেয়ে হওয়ার সময় চাকরি ছাড়তে হয়েছিলো। পরে আবার মেয়ে একটু বড় হওয়ার পরে অন্য/একই কোম্পানী জয়েন করতে হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও তাদের কেরিয়ার হ্যাম্পার্ড হয়। অনকেই ছুটি/ব্রেক নেন না কারণ উপায় নেই। আমাদের গৃহসহায়িকার ৬ মাস - ১ বছর ছুটির দরকার হলেও আমরা দিই না, দিলেও মাইনে দিই না, দিলেও অল্প স্বল্প দিই। আমার তো মনে হয় মহিলাদের ১ বছর ছুটি দেওয়া উচিত অন্তত হাফ পেমেন্টে।

    আরো আছে। আমার এক মহিলা বস বলেছিলেন যে বাড়ি ফিরে তাঁকেই রান্না করতে হয় কারণ তাঁর বর ও মেয়ের বাইরের লোকের হাতের রান্না পছন্দ হয়না। যত্তসব। রেস্তোরায় খাওয়ার সময়ে সেসব মনে থাকেনা।
  • কৌতুহল | 203.55.36.42 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৩৩52156
  • মহিলা বসের রান্না করতে ভালো লাগেনা তা কি জানা আছে? অনেকেই বাড়ির লোকের জন্য রান্না করতে ভালোবাসে, আমিই তাই।

    কেউ কেউ কোন কোন রুটিন কাজেও রিল্যাক্সেশন পায়।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৫৭52157
  • হয়তো ভালো লাগে। কিন্তু তাতে খাটনিটা তো কমেনা।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৫৮52158
  • আর সেটা ইম্পর্ট্যান্ট নয়। ইম্পর্ট্যান্ট হলো যুক্তিটা।
  • করঞ্জাক্ষ | 203.55.36.42 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:০১52159
  • একমত হবেন কিনা জানিনা তবে মানুষ নিজেকে সব চেয়ে বেশি বোকা বানায়। ঐ গোত্রের যুক্তি তার নিদর্শন।
  • pi | 74.233.173.185 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:১০52140
  • তো দেশের চাকুরিরতা মেয়েরা কী করেন নাকি সেই বাচ্চারা ঠিকঠাক মানুষ হয়না ? আপনাদের কথা মানতে গেলে মেয়েদের তিন চার বছর বাচ্চার জন্য ঘরে বসে থাকা মাস্ট। যেটাতে একেবারেই একমত নই।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৩৬52160
  • মন্ত্র টন্ত্র পড়ে যে বিয়ে হয় তাতে "ভাত কাপড়" এই রিচুয়ালটা কি এখনও হয়? সেখানে ভর্তা ভার্যাকে খাদ্য-বস্ত্র-আশ্রয় দেবার গ্যারান্টি দিচ্ছে, এইরকম কিছু একটা দেখানো হয় না? আর ঐ যে একমুঠো মন্ত্রপূত চাল ছুঁড়ে দেবার রিচুয়াল হয়, সেটাও সেই পিতৃমাতৃঋণ সিম্বলিকভাবে শোধ করে স্বামীর আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে, এরকম কিছু একটা ব্যাপার দেখানো হয় না?
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৩৮52141
  • আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি, যদিও আবার সেটা তির্যক এর প্রব্লেম সেটের বাইরে চলে যাবে। আমার বেশীর ভাগ বিয়ে করে ফেলা বন্ধু আর আত্মীয়, যারা আমার বয়েসি, আমার মাসতুতো-পিসতুতো ভাইবোনেরা বা আমার স্ত্রীর দিকে যারা মোটামুটি আমাদের এজ গ্রুপের, তাদের বোধায় অন্তত ৮০% দুজনেই চাকরি/ব্যাবসা করে। আমি মোটামুটি যা জানি, এরা সবাই বাচ্চা হওয়ার সময়্টাতেও প্রায় যৌথ দায়িত্বেই ইভেন্টটা সামলেছেন। ম্যাটারনিটি লিভ ৬ মাস থেকে ১ বছর বা হয়তো আরেকটু বেশী নেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারপর আবার দুজনেই কর্মজীবন শুরু করেছে। আর বছর তিন চারেক মা বাবা পালা করে বাচ্চাকে সামলেছে, তাতে মা/বাবা কারুরই তেমন অসুবিধে হয়নি। এটুকু মনে হয় যে অন্তত শহরগুলোতে কাজের জেন্ডার স্টিরিওটাইপিং কিছুটা হলেও বোধায় বদলাচ্ছে। এই পুরো আলোচনাটাই বেশ কিছুটা জেন্ডার স্টিরিওটাইপিং এর ওপর ভর করে, কিন্তু আমার মনে হয় স্টিরিওটাইপিং কিছুটা ভাঙছে। তির্যক যেভাবে সমস্যাটা দেখছেন, বাস্তবে হয়তো আমরা তার থেকে অল্প কিছুটা সরে এসেছি। আর এই সরে আসাটা এনকারেজ করতে পারলে সেটাও একটা সল্যুশান হতে পারে।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৫০52142
  • দেশের অনেক চাকুরিরতা মেয়েদেরকেই দেখেছি ঐসময় লম্বা স্যাবাটিকাল নেয়। বা অনেককে চাক্রীও ছাড়তে দেখেছি। বাকী অপসান গুলো-ও দিয়ে দিয়েছি। কোনো পুরুষ সেটা করেছে বলে তো দেখিনি।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৫৩52161
  • হুম। এখনো আছে।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:০৮52162
  • মন্ত্রতন্ত্রের বিয়ে যারা করেছেন, তাহলে তো তেনারা এক অর্থে একরকম সমাধানেই রয়েছেন। তক্ষুনি তক্ষুনি অগ্নিসাক্ষী করে সব কিছু ডীল তো ঠিক করাই হয়ে গেছে।
    সেই ক্ষেত্রে স্ত্রী বাইরে কাজ করে রোজগার করলেও তো সেই রোজগার পুরোটাই স্বামী মহাশয়ের। পিতৃকুল তো মন্ত্র পড়ে মহিলাকে সম্প্রদান করে দিয়েছে নতুন প্রভুর হস্তে।
    সেই যে আদরিনী গল্পের হাতীকেনা লোকটি জমিদারকে বলছিলেন, "আজ্ঞে আমিই যখন আপনার, তখন আমার হাতীও যে আপনারই হবে, তাতে আর সন্দেহ কী?"
  • dc | 47.48.65.116 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:১২52143
  • হুঁ প্যাটারনিটি লিভ আমাদের দেশে এখনো চালু হয়নি।
  • S | 108.127.180.11 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:১৭52163
  • না স্ত্রীর রোজগার ট্রান্সফারের কোনো ডীল হয়না। ঐ ভাতকাপর ইত্যাদির দায়িত্বের ভার্বাল এগ্রিমেন্ট হয়।
  • Arpan | 233.227.103.192 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২৪52144
  • আমাদের আছে তো। এক হপ্তার যদিও।
  • Arpan | 233.227.103.192 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:২৬52145
  • আর দেশি কর্পোতে চার মাসের বেশি মেটার্নিটি লিভ কখনোই দেয় না। তবে অনেক আপিসেই আজকাল ক্রেশের ব্যবস্থা থাকছে।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৩৭52164
  • সম্প্রদানের মন্ত্রে কী বলেন, যিনি সম্প্রদান করেন পাত্রীকে?
  • Arindam Chakrabarti | 113.2.135.17 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৫২52146
  • অর্পন ও দ

    ডিপেন্ডেন্ট ফ্যামিলি মেম্বারের মধ্যে বাবা-মা, বিধবা বোন, হ্যান্ডিকাপ ভাই-বোন,ছেলে মেয়ে, বিধবা মেয়ে থাকে, এবং কিছু ক্ষেত্রে শাশুড়িকেও রাখা যায়। তবে নির্দ্দিষ্ট শর্ত আছে কিন্তু বেকার ভাই বা ছেলেকে ২১ বছরের পরে আর ডিপেনডেন্ট করা যায়না।

    তবে এসবই চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এখনও, অন্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। এবার বাড়ির কাজ বউ ও বিধবা বোন মিলে করে, সেক্ষেত্রে ব্যক্তি মানুষকে বা পরিবার সিদ্ধান্ত নেবে কার নাম দেওয়া হবে।

    আর অন্যদিক দিয়ে ভাবলে বর/বউ মারা গেলে অর্ধেক পেনশান কে পায়? সেরকমই হয়ত এই ক্ষেত্রে একমাত্র গৃহ্স্বামী বা স্ত্রী এই টাকা পাবেন কিন্তু ওই ডিপেন্ডেন্ট শর্তাবলী মানতে হবে।

    এইজন্য সরকারকে কোন বাড়তি টাকা বাজেটে রাখতে হবেনা। খুব সহজে রাজ্য-কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ওপর এই নিয়ম লাগু করা যাবে। এখন বেসরকারী ও বিশেষ করে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কীভাবে প্রয়োগ হবে সেটা ভাবার বিষয়। অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন হতে পারে।
    এও তো ঠিক CGHS মেডিক্লেইম, ESI স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন স্কীম কেউ কারুর মতন নয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন