এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • পায়ের তলায় সর্ষে - ৭

    Binary
    বইপত্তর | ২২ জুন ২০০৭ | ২০৯২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • siki | 202.140.54.29 | ১৮ আগস্ট ২০০৮ ১৭:০৫389102
  • ঠিক ভ্রমণ করতে যাই নি, তাই ভ্রমণকাহিনি লিখব না। বিলুন্ড বলে একটা ছোট্ট এয়ারপোর্ট দিয়ে বেরিয়ে যখন ডেনমার্কের মাটিতে পা রাখলাম, এক ঝলক ঠান্ডা তাজা বাতাস আমাকে স্বাগত জানাল। ডেনমার্কের আপিসের এক ম্যানেজার আমাদের স্বাগত জানাবার জন্য দাঁড়িয়েই ছিলেন। ছোট্ট এয়ারপোর্ট, খুঁজে নিতে কোনও অসুবিধে হয় নি একেবারেই।

    গাড়ি চলল হু-হু করে সরু উঁচুনিচু রাস্তা পেরিয়ে। দু ধারে কেবল সবুজ আর সবুজ। আর এ সবুজ রং ভারতে দেখা যায় না। কেমন যেন উঙ্কÄল ফ্লুরোসেন্ট সবুজের মত, চোখে পড়লে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। মাইলের পর মাইল জুড়ে কীসের কে জানে ক্ষেত, নয় তো ঘন জঙ্গল, নয় তো খামারবাড়ি, ঘোড়া, গরুর পাল। আর মাঝে মাঝে আকাশে চার হাত তুলে ঘুরে চলেছে বিশাল বিশাল উইন্ডমিল। ডেনমার্কের বেশির ভাগ বিদ্যুতের উৎসই এই উইন্ডমিলসৃষ্ট বিদ্যুৎ।

    সাপের খোলসের মত মসৃণ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এসে পৌঁছলাম সিল্কেবর্গে। লেক দিয়ে ঘেরা একটা টাইনি টাউন। যে হোটেলে ছিলাম, সেটাই সিল্কেবর্গ শহরের কেন্দ্রবিন্দু। শহরের ব্যাপ্তি ওর আশেপাশে এক দেড় কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যেই। রেলস্টেশন, বাস স্টপ, দোকান হাটবাজার স-অ-ব।
  • siki | 202.140.54.29 | ১৮ আগস্ট ২০০৮ ১৭:৩২389113
  • ডেনমার্কে রাজা আছে, রাজপুত্র আছে, কিন্তু ঠিক প্রমিনেন্ট নয়। মানে একটা রাজবংশ আছে, তবে কনস্টিট্যুশনাল মনার্কি। রাজা-রাজপুত্তুর থাকেন কোপেনহেগেনে, ডেনিশদের উচ্চারনে কোব্‌নহাভ্‌ন। সেখানে রাজপুত্তুর এমনিই গাড়ি চালিয়ে লোকজনের মাঝে ঘুরে বেড়ান, কেউ ফিরেও দ্যাখে না, টুপিও খোলে না, জনগণেরই অংশ রাজবংশ।

    খুব ছোট্ট দেশ, লোকসংখ্যা ঐ পঞ্চান্ন হাজারের মত, উইকি দেখে বলছি। দিল্লি শহরেই এর থেকে অনেক অনেক বেশি লোক বাস করে। ফলে লোকজন হাত পা ছড়িয়ে থাকে টাকে। রাস্তাতে খুব জ্যাম মানে, পেছন পেছন সাত আটটা গাড়ি। কেউ ট্রাফিক রুল ভাঙে না, ভাঙলেও পুলুশকাকু এসে প্রাপ্য টিকিট ধরিয়ে দেন, লোকজন দিয়ে দেয় ফাইন।

    গ্রীনল্যান্ড ডেনমার্কের অধীনে। গ্রীনল্যান্ড ছাড়া ডেনমার্কের আর কোথাও কোনও কলোনি নেই।

    ডেনমার্ক সম্বন্ধে আরও কিছু তথ্য। ডেনমার্কের পতাকা; লালের ওপর সাদা ক্রস, পৃথিবীর প্রাচীনতম ন্যাশনাল ফ্ল্যাগ।

    ডেনমার্ক ছিল ভাইকিংদের দেশ। দুর্ধর্ষ নৌচালক লুঠেরা। এক সময় বলা হত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যায় না। তো এই ডেনমার্ক কখনও ব্রিটিশ সিংহের অধীনস্থ হয় নি, বরং ডেনমার্ক হল পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যারা একসময়ে ব্রিটেন জয় করেছিল। অবশ্যই রাজ্যবিস্তারের বাসনায় নয়। ভাইকিংরা ব্রিটিশদের পরাস্ত করে অধিকার করেছিল বৃটিশদের ভূখন্ড। লুঠপাট করে আলটিমেটলি ছেড়ে দিয়েছিল অবশ্য, তবেই না হতোদ্যম ব্রিটিশরা বাকি পৃথিবীতে কলোনি স্থাপনে উদ্যোগী হল।

    সেই ভাইকিংদের নৌকোর বহর সাত সাগর পেরিয়ে এসেছিল এই ভারত দেশেও। চুঁচুড়ার আনাচেকানাচে দিনেমারদের ফেলে যাওয়া অনেক স্মৃতি আজও পাওয়া যায়। কিন্তু ঐ যে স্বভাব, দিনেমার ভাইকিংরা ছিল আসলে দস্যু। ব্যবসা করার থেকে লুঠপাট করার দিকেই তাদের বেশি নজর ছিল, তাই মোগল সুবেদারের নেতৃত্বে সুলতানি ফৌজ তাদের মেরেধরে হুগলি নদী থেকে বিতাড়িত করে। তারা আর ফিরে আসার চেষ্টা করে নি।

    ভাইকিংদের বংশ আজও আছে। এমনিতে ডেনিশদের চুল সোনালি রংয়ের হয়। কিন্তু ভাইকিংদের চুলে আছে লালের ছোপ। লালচে রংয়ের চুলওলা ডেনিশ দেখলেই বুঝবে সে আসলে ভাইকিংদের বংশধর।

    (চইলবেক)
  • shyamal | 72.24.189.126 | ১৮ আগস্ট ২০০৮ ১৭:৪৫389124
  • ডেনমার্কের জনসংখ্যা ৫৫ লক্ষ; ৫৫ হাজার নয়।
  • siki | 202.140.54.29 | ১৮ আগস্ট ২০০৮ ১৭:৫৪389135
  • ধ্যাৎতেরিকি। ডাইভার্জ করে ফেলিচি। পচ্‌পন লক্ষ।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ০২:১৪389146
  • ডেনমার্কের রাজা নেই, রানী। ডেনমার্কের রানীর স্বামী ফ্রেঞ্চ, এখনো কষ্ট করে ডেনিশ বলেন। আর ডেনিশদের রাজপরিবার সম্বন্ধে, ভক্তি ভাব পুরো মাত্রায় বিদ্যমান, সে তাঁরা গড়ী হাঁকিয়ে রাস্তায় ঘুরলেও। আমি যখন ছিলাম, তখন, ২০০৪-এ রাজপুত্রে-র বিয়ে হল, অস্ট্রেলিয়ার সধারন ঘরের মেয়ের সঙ্গে, তা সেই বিয়ে নিয়ে, ন্যাশনাল ফেস্টিভাল পালন হল। একমাস ধরে বিবাহের প্রস্তুতি, ব্যাখ্যা, চলল টিভিতে। বিয়ের দিন সব স্কুল কলেজ হাফ ছুটি, সকলে বিয়ের শোভাযাত্রা দেখতে তুমুল উৎসাহে জমা হলো রাস্তায় রাস্তায়। টিভিতে সারাদিন লাইভ টেলিকাস্ট। ঘ্যাম ব্যাপার।

    কোপেনহগেন জেটিতে, রাজপরিবারের বিলাসবহুল ইয়াট দাঁড়িয়ে থাকে, রাজপুত্র বা রাণী সপরিবার সেখানে এলে, জেটিতে লোকের ভীড় কম হয় না, নিজের চোখে দেখা।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ০২:৩৬389157
  • ভারতে, বঙ্গে, ডেনিশ-রা এসেছিলো, চুঁচুঁড়াতে নয়, শ্রীরামপুরে, চুঁচুঁড়াতে পর্তুগীজ। ডেনিশ টিভিতে শ্রীরামপুর নিয়েও ট্রাভেল এপিসোড দেখেছি। ডেনিশ সঞ্চালক, সাক্ষাতকার নিচ্ছে, ছাপোষা, শ্রীরামপুরবাসীর, শ্রীরামপুরে, রাস্তার ধারে, টিউবওয়েলে, স্নানরত অবস্থায়, আদুর গায়ে, লুঙ্গি পড়া, হাতে নিমের দাঁতন।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ০৩:৩২389168
  • গ্রীনল্যান্ড ঠিক ডেনিশ কলোনি নয়, ডেনমার্কের রাজবংশের অধিন স্বাধীন রাজ্য। যদিও গ্রীনল্যন্ডের ইকনমি চলে, ডেনিশ করদাতাদের পয়সায়। তবে গ্রীনল্যান্ড, একমাত্র নয়, এরকম স্ট্যটাসের আরেকটা দেশ আছে, ডেনমার্কের -- ফ্যারো আইল্যান্ড, আইসল্যান্ড আর নরওয়ের মাঝামাঝি। বিশেষ জানা, এই কারনে, যে, আমাদের ভীসায় লেখা থাকত -- 'Not Valid for Entry to Greenland and Faroe Island'
  • siki | 202.140.54.29 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ১১:০১389179
  • চুঁচুড়াতেও কিন্তু দিনেমাররা এসেছিল। এনিওয়ে, চুঁচড়ো আর শ্রীরামপুরে কীই বা দূরত্ব?
  • Blank | 65.218.154.195 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ১১:০৫389190
  • বাইনারি আর সিকি, দুজনেই ভালো জমিয়ে দিয়েছেন। দুজনেই পাশা পাশি (আর একটু বড় করে) লিখে চলুন ডেনিশ দিন গুলো।
    সাথে থাকুক ডেনিশ বীয়ার (এটা সিকি কে দিয়ে হবে না, বাইনারি কি পারবেন?)
  • Arijit | 61.95.144.123 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ১১:১৩389202
  • শুধু ডেনমার্ক ভাইকিংদের দেশ নয়। নরওয়েও তাই। উত্তর ইংল্যাণ্ড - অর্থাৎ নিউক্যাসল, অ্যানিক, লিণ্ডিসফার্ন - এসব চত্তরে যে ভাইকিং আক্রমণ হয়েছিলো সেগুলো নরওয়ে থেকে। বেসিক্যালি হোম অ্যাণ্ড অ্যাওয়ে ম্যাচ হত - ভাইকিংরা এদিকে এসে ক্রিশ্চিয়ান মনাস্টেরি ভেঙে দিয়ে যেত, আর তারপর এরাও গিয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে আসতো। একমাত্র ব্যামবুরা ক্যাসল ভাইকিং আক্রমণ আটকেছিলো বেশ কয়েকবার।

    ভাইকিং আক্রমণের প্রভাব উত্তর ইংল্যান্ডের ভাষায় দেখা যায় - জর্ডি, পিটম্যাটিক - এসবই ইংরিজী, ভাইকিং ইত্যাদির মিক্স - পরে কোলিয়ারীর ডায়েলেক্ট ঢুকে আরো খিচুরি হয়।
  • siki | 202.140.54.29 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ১৬:০৭389213
  • সিকি এট্টু আধটু বীয়ার খায়, তবে নিজের পয়সায় কক্ষনো নয়। :-)

    লোকসংখ্যা কম বলেই বোধ হয় ডেনিশ সরকার তার নাগরিকদের জামাই আদরে রাখতে পারে। শিক্ষা, তা যতদূর পর্যন্তই হোক না কেন, ডক্টরেট, পোস্ট ডক, পুউউরো সরকারের খচ্চা। ঠিক মনে নেই, এখানে প্রাইমারি শুরু হয় সাত না আট বছর বয়েসে, স্কুলশিক্ষা আছে ক্লাস টেন পর্যন্ত। হ্যাঁ, এরা ক্লাস টেন বলে, টেন্‌থ স্ট্যান্ডার্ড বলে না আমাদের দ্যাশের সিবিএসই-র মত। নার্সারি প্রি-প্রাইমারি এসব নিয়ে এরা চিন্তিত নয়। চার বছর বয়েসে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর কথা এরা চিন্তাও করতে পারে না।

    আর আছে বেকার ভাতা। সে এক সেক্সি জিনিস। তুমি যদি চাকরি না করো বা চাকরি না পাও, তা হলে সরকারের দায়িত্ব তোমাকে বেকার ভাতা দেবার, যতদিন না তুমি চাকরি পাচ্ছো। ফলে ডেনমার্কে এ রকম অনেক লোকই আছে যারা অপ্‌ট করে চাকরি না-করা। সরকারের থেকে মাস গেলে বাঁধা বরাদ্দ বেকার ভাতা, পরিমাণটা নেহাৎ কম নয়, আর তাতে কোনও ট্যাক্সো লাগে না। পুরো-কে-পুরো টাকা হাতে আসে। এমনিতে ডেনমার্কের ট্যাক্স একটি আছোলা বাঁশ বিশেষ। চাকুরেদের জন্য দু তিনরকমের ট্যাক্সেশন অপশন আছে। তার একখানায় ট্যাক্স দিতে হয় টোটাল স্যালারির ৭৫ পার্সেন্ট। হ্যাঁ, পঁচাত্তর পার্সেন্ট। তার পরেও দেখলাম এদের জীবন যাপনে কোনও রকমের দৈন্য নেই, বেশ ল্যাভিশলি দিন কাটায়। মাইনের পঁচিশ পার্সেন্টেই যদি এদের এমন দিন কাটে, তা হলে ভাবো এদের পে প্যাকেজ কত!

    সব কিছুর দাম বেশি। কোপেনহেগেন বা অরহুসের মত প্রাইম সিটি নয়, নিদেন সিল্কেবর্গের মত জায়গাতেও যদি একখানা বাড়ি কিনতে চাও তো তার দাম পড়বে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দেড় কোটির মত। প্রসঙ্গত এক ক্রোনারের দাম প্রায় দশ ভারতীয় রুপী। নাইন পয়েন্ট সামথিং। মানে মোটামুটি পনেরো মিলিয়ন ক্রোনার, সিল্কেবর্গে একপিস বাড়ির দাম।

    ভারতের রাস্তায় আজকাল দেশ বিদেশের সব রকম গাড়িই চলে। ডেনমার্কে তাই নতুন কোনও মডেল দেখলাম না। সুজুকির ওয়াগনআর, জেন, সুইফ্‌ট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিল্কেবর্গের রাস্তায়, কেবল স্টিয়ারিংটা উল্টোদিকে লাগানো, রাইট হ্যান্ড ড্রাইভিং যে! কিন্তু গাড়ি বেজায় কস্টলি। একশো আশি পার্সেন্ট ট্যাক্স লাগে গাড়ি কিনতে। মানে, একটা গাড়ির যদি শোরুম প্রাইস হয় একশো টাকা, তো সেই গাড়ির অন রোড প্রাইস হয় দুশো আশি টাকা।

    এই বিপুল বিপুল ট্যাক্সের পয়সায় প্রতিপালিত হয় দেশের যাবতীয় কর্মহীন লোকজন। সবাই পড়তে পায় নিখরচায়। এমনকী তুমি চাকরি করো, তোমার বউ চাকরি করে না, এমন কম্বিনেশনেও তোমার বউ বেকার ভাতা পাবে, পুউউরো ট্যাক্স ফ্রি।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২০:১৮389224
  • ডেনিশ বীয়ার তো কার্লসবুর্গ। সে বীয়ার খাওয়ার কথা তো এই পাতায় আগে লেখেছি। ডেনিশদের মদ্য পানের বহর চোখ কপালে তোলার মতো। আমার এক ঘনিষ্ঠ সহ কর্মী-র সাথে কোপেনহগেন ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে গেছিলাম ডেনমার্ক আর টার্কির প্রি-ওয়ার্ল্ড কাপ ম্যাচ দেখতে। তো, রেনো, সেই মুষস্কো মতো সহকর্মী, মাঠে ঢোকার আগে তিন ক্রেট বীয়ার নিয়ে ঢুকলো (মানে ৩৬ টে ক্যান)। আর পুরো ম্যাচে, আমি খেলাম দু-তিনটে ক্যান আর সে ব্যাটা বাকিগুলো সাবার করে পুরো ফিট।

    সিকি এট্টু বাড়ায়ে বলতাসে। আম্মো ডেনিশ ট্যাক্সো দিয়েছি চার বচ্ছর। সাধারন ইন্‌কামে ট্যাক্সো হয় ৪১%। বৎসরে ৬০০,০০০ ডেনিশ ক্রোনারের উবরে গেলে সেই স্ল্যাবটা হয় ৭৫%, পুরোটা নয়। তবে জামাই আদরের কথা যেটা বলল সেটা অনেকটা ঠিক। হাইস্কুল পজ্জন্তো ফ্রি এডুকেশন, সেতো, হক্কল দেশেই। তবে কিনা ইউনিভার্সিটি একদম ফ্রি নয়। ওদের ছয় বৎসরের নীচে দুটি ধাপ আছে, প্রথমটা হইলো নার্সারি (যাকে ওরা বলে বুগেস্টু), এটা আমাদের দেশের ডে কেয়ার সেন্টারের মতো। তারপরে পাঁচ বছরে কিন্ডারগার্ডেন (ওরা বলে বর্নহভেন)। তবে পাংচ বছর পজ্জন্তো বুগেস্টু বা বর্নহভন ফ্রী নয়। বেশ খচ্চার। তবে কিনা, হক্কল বাচ্চাদের সরকার থেকে লিভিং ভাতা দেয়, আর আবেদন করলে বুগেস্টু-র খচ্চার-ও ৬০% ফেরত দেয়। এই সব বেশী জানা, কারণ হইল, আমার কন্যা-টিও ঐ বর্নহভেন-বুগেস্টু যেতো।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২০:৪৫389235
  • এট্টা মজার জিনিষ, যে, ডেনিশ পুরুষদের মধ্যে প্রচ্চুর গে আছে। যেহেতু সেক্স নিয়ে ওখানে ঢাকঢাক গুড়গুড় নেই, লীগালী পর্নোগ্রাফি, ওপেন সেল হয়, তাই প্রচ্চুর গে পত্র পত্রিকা সাধারন স্টলে পাওয়া যায়। কোপেনহাগেন-এ বেশ কিছু পার্ক আছে সুধু-ই গে দের আখড়া। আর মাঝে মাঝে অল্প বয়সী ডেনিশ ছাত্ররা, প্রচ্চুর বীয়ার খেয়ে, ঐ সব পার্কে হানা দেয় গে-দের ধোলাই দেওয়ার জন্য। আমাদের আপিসে, পার্চেসিং সেকসনে, দুটো মেয়ে আর দুটো ছেলে কাজ করতো, ছেলে দুটো স্বঘোষিতো গে। তো একবার দেওয়াল রং করার জন্য, এক সুপুরুষ পেশীবহুল মিস্ত্রি এসেছে ঐ ঘরে। পাশের ঘরে, আমার সহকর্মী টিনা বললে, 'খাইসে ও-বেচারা ঐ ঘর থেকে বেরোলে হয়, দুটো মেয়ে আর দুটো গে-র মধ্যে - কি সাংঘাতিক !!!!'
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২১:০১389246
  • সিকি যে বিলুন্ড এয়ারপোর্টের কথা বললে, সেই জায়গাটা বিখ্যাত, লিগো টয়েস-এর গ্লোবাল হেডকোয়ার্টারের জন্য। লিগো টয়েস, যার একটা বিশাল বড় সেকশন প্রতিটি, 'টয়েস-আর-আস' এ দেখা যায়, সেটা আদতে ডেনিশ কম্পানী। বিলুন্ডে, যাওয়া গেছে দুই বার। একবার অফিশিয়াল কাজে (প্রসঙ্গত, লিগো-তে সেই সময় ওরাকেল অ্যাপলিকেশন নিয়ে বাঁশ যাচ্ছিল), আরেকবার ওখানকার লিগোল্যান্ড দেখতে, পরিবার সহ। লিগোল্যান্ড (বিলুন্ডের) খুব-ই সুন্দর। মাউন্ট ফুজিয়ামা, মাউন্ট রশমোর, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি,রোমের কলোসিয়াম-এর আশ্চর্য্য প্রতিক্‌তি আছে, লিগো ব্রিকস দিয়ে বানানো।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২১:৩৫389247
  • ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান হলেও ডেনমার্কের কারেন্সি ডেনিশ ক্রোনার, ইউরো নয়। এনিয়ে সেই সময় দুবার পাবলিক রেফারেন্ডাম হয় (ওরা ভোট বলে না, বলে রেফারেন্ডাম), তো দুবার-ই পাবলিক, ডেনিশ ক্রোনারে থেকে যেতে চায়, ইউরো নয়। তবে ইউরো দামী হওয়ার সাথে সাথে ডেনিশ ক্রোনার-ও হয়। এই যেমন, সিকি লিখেছে, ১ ক্রোনার মানে ৯ ভারতীয় টাকা (এখন বোধহয় আবার ৮.৩ তে এসেছে), ২০০৪ সালে ছিলো ৬ টাকার মতো। ২০০১ সালে ছিলো ৫ টাকা মতো। ২০০১ সালে ১০০ আমেরিকান ডলার বেচে পাওয়া যেতো ৮৬০ ক্রোনারের মতো, সেখানে ২০০৫ -এ ৪৭৫। আমাদের খুব বেদনা হতো এই নিয়ে।

    যাওগ্গা। সেক্সের কথা কই। ডেনমার্ক, এই নিয়ে মুক্তো হাওয়ার দেশ। ওদের পারিবারিক জগাখিচুরির কথা আগেই লিখেছি, এই টইতে। সেক্সটাও একেবারে জনমুক্তির মতো ব্যাপার। বাসে-ট্রেনে, মলে, পার্কে, রাস্তা-য়, অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ অবস্থা যুগলের দেখামেলে হামেশা-ই। উঙ্কÄল আলোয় সজ্জিত প্রকাশ্য সেক্স সপ পরপর, কোপেনহাগেন-এর কেন্দ্রে। আরো আছে .....
  • arjo | 168.26.215.54 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২৩:১৭389248
  • বাইনারি দা তো হেবি জায়গায় ছেড়েছেন। :-)) যাকে বলে খেলিয়ে খেলিয়ে সুতো ছাড়া। ;)
  • Blank | 170.153.62.251 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২৩:৩১389249
  • সিকির দায়িঙ্কÄ এবারে এই সুতো টা ধরা ....;-D
  • siki | 122.162.83.156 | ১৯ আগস্ট ২০০৮ ২৩:৩৩389250
  • আরে ধুর! বাইনারি সব বলে দিলে আমি খেলবো না। এখনও তো অরহুসের ন্যুড বীচের কথা বলিই নি।
  • siki | 122.162.83.156 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০০:০৪389251
  • বীয়ার হচ্ছে ডেনমার্কের পানার্থে জল, কিংবা সর্বঘটের কাঁঠালি কলা। ওখেনে লোকেদের জল খেতে খুব কম দেখেছি। খেতে বসে জল তো নৈব নৈব চ। আমরা যে জল চাইতাম রেস্তোরাঁতে খেতে গিয়ে, ওরা জাস্ট নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারত না। বীয়ার ছাড়া তোমরা খাও কী করে!

    বীয়ারের ক্রেট বা ক্যান আদানপ্রদান ওখানকার সামাজিক ভব্যতা। তুমি বাড়ির সামনে বাগান করেছো, তোমার প্রতিবেশি এসে দড়িদড়া কঞ্চি ধরে তোমাকে সাহায্য করেছেন। তুমি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তাকে চারটে বীয়ারের ক্যান বা এক ক্রেট বীয়ার দিয়ে এলে। কৃতজ্ঞতা বা সামাজিকতার মাপের সাথে ক্যানের সংখ্যা বা ক্রেটের মাপ সমানুপাতিক। কেউ কাউকে ডিনারে ডেকেছে, কি কারুর বাচ্চা হয়েছে, মুখ দেখতে গেলে বীয়ার নিয়ে চলে গেলেই হবে।

    ডিনার লেটেস্ট বাই সাতটা। সিল্কেবর্গ ছোট্ট শহর, আগেই বলেছি, বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে প্রায় সমস্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। দু একটা রেস্টুরেন্টে (যেমন যের চিনে রেস্তোরাঁয় আমি খেতে যেতাম) লেখা থাকত বটে রাত দশটা অবধি খোলা থাকে, তবে আটটার পর যেহেতু রাস্তায় কেউই থাকত না, রেস্টুরেন্টগুলোও সাড়ে আটটা নটার মধ্যে বন্ধ করে ঘুমোতে চলে যায়। প্রথমদিন এসে সে কী কেলো। হোটেলে পৌঁছেছি বিকেল ছটায়, ক্লান্ত হয়ে। ভাবলাম ল্যাদ ট্যাদ খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে নটায় খেতে বেরোব, ও হরি, বেরিয়ে দেখি সব শুনশান। পেটে তখন এক সাগর ক্ষিদে। এক রেস্টুরেন্ট তখন বন্ধ হচ্চিল। গিয়ে বললাম, দাদা, খেতে দেবেন? তা সে ব্যাটা তো আর দিল্লিওয়ালা নয়, ব্যবসার থেকেও তার নজর বেশি ঘড়ির দিকে, নটা বাজে, দিব্যি বলে দিল, সরি, উই আর ক্লোজিং। এদিকে আকাশে তখন কটকটে রোদ্দুর। সুর্য অস্ত যাবে রাত এগারোটায়। শেষে হোটেলের রিসেপশনিস্টের বুদ্ধিতে সামনের এক গ্যাস স্টেশনের দোকান থেকে কিনে আনলাম কোক আর চিপ্‌স। তাই দিয়ে শুরু হল আমাদের ডেনমার্ক সফর।

    আমরা দশটায় রাতের খাবার খাই শুনে ডেনিশ সহকর্মীদের সে কী বিস্ময়; তা হলে আমরা ঘুমোই কখন?
  • Binary | 198.169.6.69 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৪:১৩389253
  • ডেনমার্কের চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিয়ে কিছু কথা বলার ছিলো। ২০০১ সালের জানুয়ারীতে রাস্তার ব্ল্যাক আইসে আছাড় খেয়ে আমার পায়ের সীন বোন মাল্টিপল ফ্র্যাকচার হয়। রাস্তার জনগন-ই ইমার্জেন্সীতে খবর করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসে, ২ মিনিটের মধ্যে। কোপেনহাগেন-এর রিগ্‌স হাসপাতালে ট্রমা সেক্সনে ভর্তি হই, ১ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন হয়, এরপর ৭ দিন হাসপতলে থকতে হয়।

    তো সেটা হাসপাতাল নয়, নিখরচায় ৫স্টার হোটেল। ডেনমার্কে ইয়োলো কার্ড বলে একটা কনসেপ্ট আছে, অনেকটা কানাডার সোসাল ইনসিওরেন্স কার্ডের মত, কিন্ত থেকে-ও অনেক বেশী। যেকোনো ডেনিশ সিটিজেন/পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট/ওয়ার্ক পারমিট এই কার্ড করতে বাধ্য। আর এই কার্ড নিয়েই সবকিছু-র দাবী কর যায়। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, মেডিকাল ইন্সিওরেন্স, বাড়ি ভাড়া নেওয়া, ছেলে মেয়েকে স্কুলে ভর্তি ইত্যাদি।

    (আরো) ....
  • RATssss | 63.192.82.30 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৪:৪৭389254
  • মতলব, পৃথিবীতে স্বর্গ এক জায়গাতেই আছে, --- ডেনমার্ক
  • Binary | 24.66.94.142 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৫:২৬389255
  • ইয়েস স্যার ...
  • Binary | 24.66.94.142 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৫:৪৬389256
  • তবে কিনা হাসপাতাল স্টারে থাকতে হলে ঠ্যাং ভাঙ্গতে হবে, নিদেন পক্ষে একটা অ্যাপেন্ডিক্স বাধাতে হবে।

    সুইমিং পুল সম্বন্ধে দুচার কথা যা জনি ....

    কোপেনহাগেন-এ বেশ কয়েকটি পাবলিক সুইমিং পুল আছে। মানে সুইমিং পুল কমপ্লেক্স। বড় পুল, ছোটো পুল, গভীর জল, হাঁটু জল, গরম জল, ঠান্ডা জল জ্যাকুজি ইত্যাদি প্রভ্‌তি। জনপ্রতি ৫০ ক্রোনার দিলে যতক্ষন খুসি থাকা যায়। তো পেরথম গ্যালম একদিন সেইখানে। ভেতরে ঢোকার পরে মেয়েদের আর ছেলেদের সাজঘর আলাদা আলাদা। তা ভালো। তো গামছা আর হাফ প্যান্টুলুন নিয়ে ঢুকলাম ছেলেদের সাজঘরে। ঢুকেই আমার ভির্মি খাবার অবস্থা। চারিদিকে মুষকো মুষকো ডেনিশ লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে, একদম উদোম। অঙ্গে জলে রং মশাল। ঘুরছে, তেল মাখছে, গপ্প করছে, হেয়ার ড্রাই করছে, কিন্ত গায়ে সুতোটা পর্যন্ত নেই। সুধু পুলে নামার দজ্জা দিয়ে বেরোনোর সময়, কস্ট্যিউম পড়ে নিচ্ছে। এমনকি জামা ছাড়ার কোনো আড়াল পজ্জন্ত নেই। হক্কল কে একই ভাবে ঘুরতে হবে। হা ইশ্বর (জীবনে পেরথম বার ইশ্বরকে ডকি)।

    ডেনিশ টিভি-র রাতের শো-এর কথা পরে হবে .....
  • Bratin | 75.187.119.177 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৭:১৮389257
  • Binary লেখা পড়তে খুব ভালো লাগছে। এখানে বসে ই ডেনমার্ক দিব্যি দেখতে পাচ্ছি।
  • shyamal | 72.24.189.126 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৮:১৭389258
  • এটা আমেরিকাতেও আছে। আমি এক সময়ে বাড়ির কাছে একটা কলেজের সুইমিংপুলে যেতাম মাঝে মাঝে। সেখানে বাথরুমে দেখি দুই ভদ্রলোক গল্প করছে চান করতে করতে। যে বুঝলে তো ২৮৭ এ আজকাল এমন জ্যাম হচ্ছে প্রায় বাম্পার টু বাম্পার বিকেলে। আর তার ওপর কনস্ট্রাকশন হচ্ছে। ইত্যাদি। সবই ঠিক আছে। শুধু দুজনেই জন্মদিনের পোষাকে।
    আমি উল্টোদিকে একটা প্রাইভেট বাথরুমে চান করলাম।

    মেয়েদের বাথরুমেও তথৈবচ ( বৌএর কথা মত)।

    আর নিউ ইয়র্কের উত্তরে শখানেক মাইল দূরে লেক জর্জ বলে একটা লেক আছে। সেখানেও লোকে চান করে। চানের পর বাথরুমে গিয়ে দেখি একটা লোক তার বছর সাতেকের ছেলে আর বছর তিনেকের মেয়েকে গা মুছিয়ে দিচ্ছে। সবাই জন্মদিনের পোষাকে। আমি পুত্রসহ তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এলাম।

    আর নিউ জার্সিতে বিখ্যাত স্যান্ডি হুক বীচে একটা ন্যুড বীচ আছে।
  • Binary | 24.66.94.142 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৯:১২389259
  • শ্যামলবাবু তাওতো পেরাইভেট বাথরুমে চান করার সুযোগ পেলেন, আমার সে সুযোগ হয়নি, পেরাইভেট বাথরুম থাকলেতো ? দেওয়ালের গায়ে সারিসারি সাওয়ার লাগনো, তার তলায় উদোম হয়ে দাঁড়াতে হবে।, চানঘরের সামনে, মানে পস্ট নোটিশ ঝোলানো, 'সাওনা বাথ বা শাওয়ারের তলায় পোষাক পরে দাঁড়ানো চইলবে নাআআঅ' হুঁ:।

    পেরথম দিকে ভাষা গেরোয়, ন্যাজেগোবোরে হয়েছি, ডেনমার্কে। রাস্তাঘাটে লোকে ইংরাজী বললে-ও, বাড়ীতে সরকরী চিঠি পত্তর (লাইটের বিল, হিটিং বিল, কমিউনের মোটিস) সাঅব ডেনিশে আসতো। আর পরদিন সেগুলো আপিসে নিয়ে যেতে হতো, রেনো (সেই মুষকো সহকর্মী)-র কাছে অনুবাদ করতে। সুপার স্টোরে আরো মুস্কিল হতো, প্যাকেটে ভরা মাংস, তা সে গরুর ন শোয়োরের না পাঁঠার বুঝি কিকরে ? বছর খনেক পরে অবশ্য ৭০% ডেনিশ ল্যাখা পড়তে পারতাম। আর পরে কিছু ডেনিশ নাম মুকোস্ত করেছিলাম। যথা আলু - কার্তোফেল, বেগুন - ব্লোম্‌কল, পেঁয়াজ - লুগ, চিকেন - কুলিং, ভেড়া - লাম, দুধ - মাল্কে, চিকেন সসেজ - কুলিং পুল্‌সার ইত্যাদি। কন্যা মাঝে মধ্যি দোভাষির কাজ করত, শিশুরা ভাষা তারাতারি রপ্ত করে যে ....
  • ar | 151.203.238.241 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৯:৪৮389260
  • বাইনারি,

    ব্লোম্‌কল:-বেগুন না ফুলকপি?
  • Binary | 24.66.94.142 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ০৯:৫৫389261
  • ইয়েস, কারেকশন, ফুলকপি।
  • siki | 202.140.54.29 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ১০:৩২389262
  • চিকেন হল কিলিং (kyling), তবে ওদের ওয়াই-টার উচ্চারণ একটু ইউ ঘেঁষা।

    সম্প্রতি এক সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে ডেনমার্ক পৃথিবীর হ্যাপিয়েস্ট কাϾট্র। জুলাইতে TOIতে বেরিয়েছিল খবরটা।
  • siki | 202.140.54.29 | ২০ আগস্ট ২০০৮ ১১:৪৫389264
  • ডেনিশরা, ঐ বাইনারি যেমন কইল, খুব ওপেন মাইন্ডেড জনতা। কোদালকে কোদাল বলতে আপত্তি নেই, আবার প্রথম আলাপেই কাউকে বুকে জড়িয়ে ধরতেও আপত্তি নেই। ওদের হাসির শব্দ শুনে পিলে চমকে যায়। বিহেভিয়ার একেবারে বাই হার্ট। আমেরিকানদের মত সো-কল্‌ড প্রফেশনাল তো একেবারেই নয়। ওদের আরাধ্য দেবতা হল ঘড়ির কাঁটা। সেইটাকে কেউ অসম্মান করে ফেললে একটু ব্যথা আছে। আদারওয়াইজ কোনও কারণে চার ঘন্টার কাজ শেষ করতে সাত ঘন্টা লেগেছে, আগেই জানিয়ে দাও যে এটা এস্টিমেটেড টাইমে শেষ করতে পারছো না, কিছু প্রবলেম হচ্ছে, কিছু আর এন ডি মারতে হবে, এক্সট্রা টাইম লাগবে, ডেনিশ সহকর্মী কুল মেনে নেবে। তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু অফিস সকাল সাড়ে আটটার জায়গায় আটটা পঁয়ত্রিশে ঢুকলে চাট্টি কথা শুনিয়ে দেবে।

    ডেনিশদের মধ্যে একে অপরের পা ধরে টানার কালচার নেই। কাউকে বিট করে নিজের উন্নতির কথা এরা সাধারণত ভাবে না (ডি: শোনা কথা, সত্যাসত্য জানি না)। এরা একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, মানে গ্রো করা, পছন্দ করে। তাই নিজেদের ট্যাক্সের পয়সায় অন্যলোকে আয়েস করে বেকার ভাতা খায়, এই ব্যাপারেও এদের কোনও অভিযোগ ইত্যাদি নেই। সবাই সমান। অফিসের সিইও আর বিকেল বেলার ক্লিনিং স্টাফ এক সম্মান পায় অফিসে।

    প্রসঙ্গত, আমি ছিলাম ডেনমার্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্কে। ডেনমার্কের লোকসংখ্যা এত কম যে পর্যাপ্ত টেকনিকাল স্টাফ পাওয়া খুব মুশকিল ওখানে, তাই খুঁজতে খুঁজতে তাদের ইন্ডিয়া আসা। তাই ঐ ব্যাঙ্ক যত না আমার ক্লায়েন্ট, তার চেয়েও বেশি আমার কর্মস্থল। ওখানকার এমপ্লয়িরা আমার বস নয়, সহকর্মী। তাদের টেকি টিমের সাথেই আমরা কাজ করি। ঠিক টিপিকাল অফশোরিং প্রজেক্ট এটা নয়। আমরা কোনও রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালিসিসও করি না, বিজনেস প্ল্যানও বানাই না, সে সব ওখানকার কনসার্নড টিমই করে, কাজের যা ডিস্ট্রিবিউশন হয়, কিছু ওখানকার ডেভেলপাররা করে, কিছু আমরা করি, আমরা না পারলে ওরা দেখিয়ে দেয়, ওরা না পারলে আমরা সাহায্য করি। ইত্যাদি।

    আমি গেছিলাম মে-জুন মাসে। চূড়ান্ত সামার তখন। ভোর সাড়ে তিনটেয় সূর্য উঠত, রাত এগারোটায় অস্ত যেত। হায়েস্ট টেম্পারেচার বাইশ ডিগ্রি মত। আমাদের গায়ে জ্যাকেট থাকলে কী হবে, ওদের কাছে তো সেটা দাবদাহের মত। তাই রাস্তাঘাটে অবারিত খুল্লমখুল্লা পোষাক। শরীরে জামা আছে কি নেই অনেক সময়ে বোঝাই যেত না, কারণ ... না থাক!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন