এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • পায়ের তলায় সর্ষে - ৭

    Binary
    বইপত্তর | ২২ জুন ২০০৭ | ২০৯৫০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • rimi | 168.26.215.135 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ০০:২৩389298
  • গল্পদাদু, থামলে চলবে না। শিগ্গির বাকিটা বল।
  • Du | 72.64.99.24 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ০০:২৮389299
  • দেখে এলাম মিত্তি হাতিকে। আর দেখেছ ,তোমাদের কাজিরঙ্গা যাওয়ার পথেই ( জখলাবান্ধায়) দুদিন আগে কেমন মানুষখেকো ধরা পড়েছে !
  • nyara | 64.105.168.210 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ০০:৩৭389300
  • গল্পদাদু আমায় ওটা কী বলল? কেন?
  • Megh | 63.82.71.141 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ০০:৫১389301
  • উজান, তোমার বাবা হচ্ছে আমায় হচ্ছে ছবি শো করছে না। তোমার বাবাকে হচ্ছে একটু বলবে?
  • rimi | 168.26.215.135 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ০১:৩৫389302
  • হাতির ছবি লিংক থেকে দেখা যাচ্ছে না। অর্কুট খুলে ইন্দোদাদার album থেকে দেখতে হবে।
  • I | 59.93.247.21 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ২১:৪৬389303
  • তিনমাসের জেল আর সাদ্দিনের ফাঁসি খেয়ে ন্যাড়ার বিদ্যেবুদ্ধি ঘুলিয়ে গেছে। নইলে ব্যাকরণ শিং বি. এ-কে বেমালুম ভুলে যায় !
  • I | 59.93.247.21 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ২১:৫৬389304
  • উজানের পাপালু জিগ্গেস করলো : ছোট্ট বন্ধু আবার কারা? আমি তাতে অবাক হয়ে বল্লাম, কেন , যারা ১৯৯০-এর পরে উ: মা দিয়েছে ! এতে আর সন্দ কি ? এই ব্ল্যাঙ্কি, ভুতো, স্যান,টিম, ঝিলপিপি-এরা সব !
  • I | 59.93.247.21 | ২৭ মার্চ ২০০৯ ২২:১৫389305
  • (গল্পদাদুকে সরিয়ে দিয়ে এবার পাপালু বলছে) ...হাওড়া স্টেশনে তো গিয়ে পৌছলাম। দেখি কি, ও মা, বেশী না , মাত্তর দশখানা লাগেজ। তারি মধ্যে টুংকাই নেচে বেড়াতে লাগলো। এটা ধরে টানে, সেটা ফেলে দেয়, মাটিতে বসে পড়ে, নোংরা হাত মুখে দেয় ...মাম্মামকে পুরো পাগল করে দিয়েছে আর কি । খানিকক্ষণ পরেই বড় ঘড়ির তলায় নিন্নিন আর দিদান এসে হাজির। নিন্নিনকে পেয়ে টুংকাই আহ্লাদে আরো আটখানা; হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো একখানা খেলনার স্টলের কাছে। সেখানে একটা লাল রংয়ের হিট -মি পুতুল কেনা হলো; নাম দেয়া হল খাঁদা। পরে মাথা গরম হয়ে গেলে পরে খাঁদাকে এপিঠওপিঠ করে বদলে করা হবে শুওর। সেসব ট্রেনের মধ্যের গল্প। কেন শুওর? কেন আবার ! কুতকুতে চোখ, নাকটা চ্যাপ্টা, শুওরের মত বলে!

    এর মধ্যে মাম্মাম বললো, হাওড়া স্টেশনে কতদিন বাদে এলাম ! তখন হিসেব কষে দেখা গেলো, বিয়ের পর পাপালু আর মাম্মাম -কেউই আর এমুখো হয় নি। ট্রেনে ওঠাই হয় নি ! শুধু একবার লেপচাজগৎ, সে-ও শ্যালদা থেকে। পাপালুর এটুকু মনে ছিল, বহুকাল ট্রেনবাহনে কোথাও যাওয়া হয় নি। সেই সেবার দিল্লী গেল প্লেনে চড়ে, সেবার ঈশেনমামু বল্ল, কেউ আজকাল আর ট্রেনে চড়ে না ! বলে একখানা বুলবুলভাজা মিস হওয়ার শোকে শ্বাস ফেল্ল।

    তাই এবার ট্রেনে চড়ে।
  • pepe | 165.91.215.149 | ২৮ মার্চ ২০০৯ ০০:৩৮389306
  • ট্রেনে চড়ে কি হোলো?
  • I | 59.93.219.253 | ২৮ মার্চ ২০০৯ ২০:৫৮388870
  • ট্রেনে চড়ে আবার কি হবে? রেলকম ঝমাঝম হলো। সবুজ সবুজ ধানক্ষেত, লাল লাল লালশাক ক্ষেত, বাঁশঝাড়, গ্রামের বাচ্চাদের ক্রিকেট আর ফুটবল খেলা আর ছোট্ট মিষ্টি লাল ধূলোমাখা ইস্টিশন গুলো সরে সরে গেলো। টুংকাই জিগ্গেস করলো, ওরা চলে যাচ্ছে কেন? আর জিগ্গেস করলো, কই, কোথায় বকপাখি? আর সারসপাখি? ছাগলছানাদের দেখিয়ে বললো-ঐগুলো সারসপাখি?
    আর বললো : ধানক্ষেত কি? ধান কি?
    তারপর হিট-মি খাঁদাকে খুব দুমদাম মারল, কিন্তু একবারও শুইয়ে দিতে পারল না। তখন বিরক্ত হয়ে বললো-কাজিরঙ্গা তো দেখা হয়ে গেলো, এবার তবে বাড়ি চলো !

    রাতে আমরা ট্রেনের খাবার খেলাম না। বাড়ি থেকে আনা রুটি-কষা আলুর দম-মিষ্টি খেলাম। টুংকাই বেজায় জ্বালাতন করলো। বললো-এত রাত্তিরে কি কাজিরঙ্গা যেতে হয়? বাড়ি চলো। ট্রেনে ঘুমোতে হয় না। আবার কালকে সকালবেলা কাজিরঙ্গা যাবে।

    পরদিন ঠিকঠাক সময়ে ট্রেন গুয়াহাটি ইস্টিশানে পৌঁছে দিল। কিন্তু টুংকাইয়ের তখন ধূম জ্বর। আর বমি পাচ্ছে। গুয়াহাটি স্টেশনের হাল দেখে আমাদেরো বমি পেতে লাগলো। গোটা স্টেশন চলটা -ওঠা, আর গাদা গাদা বেতের ঝুড়িতে ভর্তি-তাতে কি ফল আছে কে জানে। কিন্তু হাঁটার কোনো জায়গা নেই যে ! তারি মধ্যে জ্বোরো ছেলে, রাশি রাশি মালপত্তর নিয়ে পল্টনবাজার পৌঁছনো গেল। যেতেই গাড়ির দালাল একদম ছেঁকে ধরল আর কি! কাজিরঙ্গা যেতে তারা চায় ৫০০০ টাকা। পাপালু বলল ১৫০০। ধস্তাধস্তি করে ২৫০০ টাকায় রফা হল, যদিও পাপালু জানে ১৮০০-২০০০এর বেশী ভাড়া হয় না (ছোট্ট বন্ধুরা, মনে রেখো); তবু ছেলে তখন বেদম হয়ে পড়েছে বলে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ল আর কি।
  • pepe | 74.192.194.238 | ২৮ মার্চ ২০০৯ ২২:২৫388871
  • ছোট্ট বন্ধুক রা ওতজন মিলে যাবেই বা কেন?
  • Ri | 122.175.73.34 | ২৮ মার্চ ২০০৯ ২৩:০৪388872
  • তাপ্পর?
  • Du | 71.252.203.133 | ২৯ মার্চ ২০০৯ ২২:০৬388873
  • ওমা সঙ্গে সঙ্গে রওনা হলে? সেদিনটা ওখানে থাকলে হত না?
  • I | 59.93.199.247 | ২৯ মার্চ ২০০৯ ২৩:১৫388874
  • (বলে এমনিতেই সময়ের অনটন !)
    হ্যা, তাপ্পর কাজিরঙ্গা পৌঁছে গেলুম। মাত্র সাড়ে পাঁচ ঘন্টায়। আসামদেশের ধুলো সর্বাঙ্গে মেখে। সব্বাই বলেছিল অবিশ্যি, এখন আসামে ধুলো খুব সস্তা হয়েছে। ছ-মাস বৃষ্টি হয় নি। তোমরাও তো কাগজে পড়েছে, আসামী আঁধির কথা, পড়ো নি? সেসব আমরা যাওয়ার ঠিক আগের দিন, আর ফিরে আসার দু-দিন পর থেকেই শুরু হল। আমরা আঁধি পাই নি। তবে যা পেয়েছি , তাই বা কম কি। গোটা ব্রহ্মপুত্রের চরের সব ধুলো যেন গায়ে মেখে এলাম। আর সে কি রাস্তা ! গোটা আসাম জুড়েই কিনা কে জানে, নতুন করে হাইওয়ে বানানোর কাজ চলছে । তারপরে আবার ভোটের মরশুম বলে কথা। কাজ চলাছে পুরোদমে। সর্বত্র ডাঁই করা মাটি, বালি, পাথর। গোটা রাস্তায় তরুন গগৈর হাসিমুখ ছবি দেখতে দেখতে এলাম। পেরিয়ে এলাম নওগাঁ, জাখলবান্ধা(দু-দির মানুষখেকো যেখানে ধরা পড়েছে), গোলাঘাট। গোলাঘাট জেলাতেই কাজিরঙ্গা। তার অনেক আগে অবশ্যি জোড়াবাটে একটা দোকানে (গৌরবে রেস্তোরাঁ) ভাত-ডাল-আলুভাজা(গৌরবে লাঞ্চ) খেলাম। ওষুধ-পত্তর খেয়ে টুংকাই ততক্ষণে একটু চাঙ্গা হয়েছে।
    এই জোড়াবাটে কাজিরঙ্গার রাস্তা এসে দুদিকে ভাগ হয়ে গেছে; একটা দিক গেছে গুয়াহাটির দিকে, অন্যটা মেঘালয়। এখানে আমাদের আবার আসতে হবে, যখন কাজিরঙ্গা থেকে শিলং আসব।
    অবশেষে কাজিরঙ্গা পৌঁ ছনো গেলো। সে এক বিশাল এলাকা; যেখানে রাস্তার সামনে ওয়েলকাম টু কাজিরঙ্গা লেখা বোর্ড দেখতে পেলাম, সেখান থেকেও কাজিরঙ্গার সেন্টার(কোহরা) আরো পঁচিশ কিলোমিটার। কিন্তু গাড়ি পাহাড়ে চড়তেই মন ভালো হয়ে গেলো। ভ্রমণসঙ্গী বলেছিল বাঁদিকে চোখ রাখবেন, আর কপাল করে আমি বাঁদিকেই বসেছিলাম। সবাই বাঁদিকে তাকিয়ে থাকলো। এই সেই বুড়াপাহাড় রেঞ্জ কাজিরঙ্গার, যেখান থেকে নীচের ভ্যালিতে তাকালে ভাগ্যবান লোকে জন্তুজানোয়ার দেখতে পায়। আমরা অবিশ্যি কিছু তেমন দেখিনি। তবে একপাশে চা-বাগান, অন্যদিকে বন, তাই বা মন্দ কি !
  • I | 59.93.199.247 | ২৯ মার্চ ২০০৯ ২৩:৩৫388875
  • কোহরা বাসস্ট্যাণ্ড ছাড়িয়ে গাড়ি যখন ট্যুরিস্ট লজের রাস্তা ধরল, কি বলব, আহা, শরীর-মন জুড়িয়ে গেল। চা -বাগানের মধ্য দিয়ে একটুখানি রাস্তা সামান্য পাক খেয়ে একটা ছোট টিলার ওপরে উঠে এল; সেইখানে আমাদের থাকার জায়গা : অরণ্য ট্যুরিস্ট লজ। ছোট্ট বান্ধবীরা তাদের বন্ধুদের নিয়ে হানিমুন করতে এলে খুব ভালো লাগবে। কটেজ নিয়ে নেবে। কটেজের ছবি এই দেখো :
    http://www.orkut.co.in/Main#AlbumZoom.aspx?uid=11723220060108641319&pid=1237738324799&aid=1237712683$pid=1237738324799
    ঘরে ঢুকে কি আর বলব, মনে হল সগ্গে এলুম। বিশাল বড় ঘর, পেছনের দরজা খুলে ব্যালকনি,তাতে বেতের চেয়ার-টেবিল পাতা; বসে রেলিংয়ে পা তুলে দিতেই মুখ দিয়ে শান্তির নি:শ্বেস বেরিয়ে এল : আ! দূরে নীল নীল পাহাড়, লিচু গাছে প্রচুর প্রচুর বোল ধরেছে, অচেনা ফুলের গন্ধে চাদ্দিক ম-ম কচ্ছে, খুব একচোট পাখিফাকি ডাকছে, গাছ থেকে গাছে বাঁদর লাফিয়ে যাচ্ছে, নীচে তকতকে সবুজ লন, তাতে ফুল ফুটেছে। তাপ্পরে যখন চায়ের সরঞ্জাম নিয়ে রুম সার্ভিসের লোক এসে হাজির হল, তখন সগ্গ তৈরী হতে আর কী বাকি থাকে বলো ! সুখ-শান্তিতে আমি খুব বিশ্বাস করি।
  • I | 59.93.195.249 | ০১ এপ্রিল ২০০৯ ২২:০৩388876
  • অনেকটা লেপচাজগতের মত লাগছিল। কিন্তু লেপচাজগতের বাংলোটা আরো ঘরকুনো, দূরের পাহাড় আরো মাথাওলা; আর মেঘেরা যখন-তখন দরজা ধাক্কিয়ে কোথাকার কে এক অবনীর খোঁজ নিয়ে যাচ্ছিল। যত বলি , অবনী মাঝরাতের পর তাল-বেতাল পায়ে বাড়ি ফেরে, কিচ্ছুতেই বিশ্বাস করছিল না। আর খুব রডোডেন্ড্রনের হল্লা ছিল সেখানে।
    কিন্তু টুংকাইয়ের জ্বর আর শরীর খারাপ একধাক্কায় অনেকটা কমে গেল। খুব দৌড়াদৌড়ি করতে লাগল সামনের খোলা লনে। দোলনায় চড়ল, স্লিপ চড়ল, পড়ে গিয়ে হাঁটু ছড়ে আনল।
    রাত্তিরে লজের মানুষরা যেচে জিগ্গেস কল্লেন, আমরা হাতি আর জিপ সাফারিতে -কোনটায় , কখন যাবো। তবে যে শুনেছিলাম বহু ভাগ্যি করলে তবে হাতির পিঠে চড়া যায়, হাতি যাকে-তাকে পিঠ দেয় না; একজন নাকি দুমাস তক্কে-তক্কে থেকে তাও উঠতে পারেনি, আরেকজনা নেটে লিখেছে হাতিতে-চড়া কত খটোমটো ব্যাপার : প্রথমে নাম লেখাও রে, তাপ্পরে সন্ধ্যেতে হলঘরে জমা হও রে, রোলকলে ইয়েস-প্লিজ বলো রে , তাপ্পর শিকে-ছিঁড়লে পিঠে ওঠোরে....
    সেই হাতি কি তবে আমাদের দোরগোড়ায় হাঁটতে হাঁটতে হাজির হবে? তাই হলো, কিন্তু এমনি কপাল, ছেলেটা ট্রেনে জ্বর বাঁধিয়ে বসেছে। ভোর পাঁচটায় কি বেরোনো যায়, অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে? আমরা তাই হাতি ক্যান্সেল করে দিয়ে দুটো জিপ সাফারি বুক করলাম-সকাল আটটায় সে¾ট্রাল রেঞ্জে আর দুপুর দুটোয় ওয়েস্টার্ন রেঞ্জে।
  • I | 59.93.195.249 | ০১ এপ্রিল ২০০৯ ২২:৩৩388877
  • পরদিন ভোরবেলা, যখন সুর্যেরো ঘুম ভাঙে নি, পাপালু চুপটি করে বেরিয়ে এল। হাঁটতে হাঁটতে টিলার উল্টো দিকটাতে গেল। আস্তে আস্তে আলো ফুটলো, বজ্জাত বাঁদরেরা মুখ ভ্যাংচালো কিন্তু আর কোনো অসভ্যতা করলো না, বুনো গাছের পাতায় পাতায় সিরসিরে ভোরের হাওয়া দিল। টিলার অন্যদিকটায় যেখানে বনানী আর বনশ্রী লজ রয়েছে, পাপালু সেদিকটায় হেঁটে হেঁটে গেল। দেখলো বনশ্রী-বনানী আরো সুন্দর, ছোট্ট কাঠের বাংলো। তবে সুযোগ-সুবিধে মনে হয় কম হবে। দাওয়ায় একজন মানুষ ঝাঁটপাট দিচ্ছে; অন্যদিকে অরেকজন লুঙ্গিপরা মানুষ হক্ষ করে কাশছে আর চা খাচ্ছে; আদা-চা হতে পারে। তাই দেখে পাপালুরো চা-তেষ্টা পেয়ে গেল। অরণ্য লজের পেছনের সোন্দর রাস্তা, কাল সন্ধ্যেয় যেখানে মানুষজনকে হাঁটতে দেখেছে, সেই রাস্তায় গিয়ে দেখে খানিকটা দূরেই রাস্তা জুড়ে একটা আড়াআড়ি বাঁশের বাধা; তার উল্টোদিকেই লেখা : এইখানে কার্বি আংলং অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট শুরু হল। সেই কার্বি আংলং? পাপালু যখন ছোট্ট ছিল আর ঈশেনমামু তার ছোট্ট লাল বন্ধু ছিল, সেইসময়ে এ এস ডি সি, কার্বি আংলং নিয়ে কত উৎসাহ সিপিআইএম এল পার্টি অফিসে ! জয়ন্ত রংপি এম পি হলেন।

    অনেক নীচে পাহাড়ী নদী দেখা যাচ্ছিল, সেখানে মেয়েরা কাপড় কাচছে। কার্বি আংলং-এর রাস্তায় একটা রেস্তোরাঁ খোলার চেষ্টা হয়েছিল, এখন তার ঝাঁপ বন্ধ। অহমিয়া পিঠা দিয়ে ব্রেকফাসের লোভ দেখানো টিনের পাতটা বেঁকে পড়ে আছে। গাছের মাথা বেগনী ফুলে ভর্তি। ফিরে আসছে যখন, তখন মোড়ের চায়ের দোকানও খুলে গেছে।
  • rimi | 168.26.215.135 | ০৩ এপ্রিল ২০০৯ ২০:৫৮388878
  • এইটা এগোচ্ছে না কেন? গল্পদাদুর হলটা কি?
  • I | 59.93.221.74 | ০৩ এপ্রিল ২০০৯ ২১:০৬388879
  • বাড়ি খুঁজে পাচ্ছে না, তাই মন খারাপ।
  • I | 59.93.195.153 | ০৪ এপ্রিল ২০০৯ ২১:৩৩388881
  • কাজিরঙ্গা নামটা নিয়ে একখানা গল্প চালু আছে। কাজি নামের এক কার্বি ছেলে রঙ্গা নামের একজন মেয়েকে ভালোবাসতো। আর নানারকম বেড়াবেড়ী ডিঙিয়ে দুজনে প্রেম করতে আসত জঙ্গলে। কিন্তু লোকের সেসব বেশীদিন সহ্য হল না, নাকি অন্য কিছু হল কে জানে-একদিন তারা দুজন জঙ্গলেই মিলিয়ে গেল। আর তাদের খুঁজে পাওয়া গেল না। কে জানে তারা এখন সুখে-শান্তিতে আছে কিনা। থাকুক না থাকুক, তাদের নামেই জঙ্গলের নাম হয়েছে কাজিরঙ্গা।
    তো এই সেই জঙ্গল। ১৯৩০ সালে প্রকৃতিবিদ G. P. Lee যখন কাজিরঙ্গা যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন, তখন এক বৃটিশ ফরেস্ট অফিসার বলেছিলেন- জলা জংলা জায়গা; জোঁকে ভর্তি। হাতিতেই যেতে পারে না, আপনি যাবেন কী মহায়?

    সেই জঙ্গল এখন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। গণ্ডার, হাতি, বুনো মোষ,বাঘ, নানা রকমের হরিণ, বুনো শুওর, অজস্র পাখীতে(বিশেষ করে শীতকালে) ভর্তি। পাঁচখানা রেঞ্জ আছে কাজিরঙ্গার, সে¾ট্রাল, ওয়েস্টার্ন, ইস্টার্ন, বুড়াপাহাড় -আর একটা কী যেন। সে¾ট্রাল রেঞ্জ অরণ্য লজ অর্থাৎ কিনা কাজিরঙ্গার সে¾ট্রাল পয়েন্ট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে, ওয়েস্টার্ন ১২, ইস্টার্ন ২৫ আর বুড়াপাহাড়ও অমনি দূরে। বুঝতেই পারছো জঙ্গল কত বড়ো।
    ওয়েস্টার্ন রেঞ্জে জন্তুজানোয়ার দেখার চান্স সবচেয়ে বেশী; আর আমরা দেখলামও তাই, টুংকাইয়ের ভাষায়-গন্ডারের পর গন্ডার, রাশিরাশি গন্ডার। ইস্টার্ন রেঞ্জ ব্রহ্মপুত্রের গা ঘেঁষে, সেখানে প্রচুর পাখী দেখতে পাওয়া যায়, আর ডলফিন। আমরা যেতে পারিনি সেখানে, আর বাকি দুটো রেঞ্জেও। হাতির পিঠে চাপিনি, সেকথা তো শুরুতেই বললাম।
    আসলে, কাজিরঙ্গাকে তারিয়ে তারিয়ে দেখতে হলে দিন পাঁচ-সাত হাতে সময় নিয়ে আসতে হবে; অত হুড়োহুড়ি করলে চলবে না। সত্যি বলতে কী, যাওয়ার আগের দিন আমাদের একদম ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছিল না, একে-অন্যকে বলছিলামও সেকথা। যে, শিলং না গেলেই নয়? তা-ও অ্যাদ্দূর এসছি যখন আর ছেলেটিও সুস্থ হয়ে গেল যখন-এইসব ভেবে চলেই গেলাম। পরে দেখলাম, না গেলেই হত। সে গল্পে পরে আসছি।
  • I | 59.93.211.59 | ০৫ এপ্রিল ২০০৯ ১৩:১১388882
  • সকালে গেলাম সে¾ট্রাল রেঞ্জে। সাড়ে সাতটায় বেরোলে ভালো হত, গড়িয়ে আটটা হল; তাপ্পরেও ফরেস ডিপাটমেনের পারমিট পেতে আরো আধা ঘন্টা। কী বাজে ব্যাপার ! সামনে দিয়েভস ভস করে কয়েকটা জিপ বেরিয়ে গেল, একটাতে গাদা গাদা লালমুখো, অন্যটাতে এক লম্বু বাঙালী, হাতে একখানা য়্যাব্বড় লেন্সওলা ক্যামেরা ,খাকি টুপি-হাপ পেন্টুল পরা, দেখে মনে হল চিনি-চিনি; তারপর খ্যাল হল দেবল সেন ডাক্তারবাবুর মত দেখতে বলে চেনা লাগছে ( দেবল স্যানকে চেনো? নামী কার্ডিওলজিস্ট, তেমনি খ্যাপা, যখন-তখন ক্যামেরা নিয়ে জঙ্গলে বেরিয়ে যান আর রাশিরাশি ভালো ছবি তোলেন , চক্কোত্তি সব্যসাচীর সঙ্গে মিলেমিশে একজিবিশান করেন, বই ছাপান, বনের জন্তু-জানোয়ার বাঁচানোর জন্য কাজকম্মো করেন)।
    বেজায় বিরক্ত লাগছিল। কিন্তু জাগাটার নাম (যেখান থেকে আমাদের জিপ ছাড়বে) মিহিমুখ-সুন্দর নাম না? আর শেষমেশ যখন জিপ ছাড়ল, তখন মন ভালো হয়ে গেলো। জিপের ড্রাইভারসায়েবের নাম এ. এন গগৈ, খুব ভালো মানুষ।
    জঙ্গলে ঢুকলাম। আমাদের সামনে সামনে আরেকটা , পেছনেও আরো গোটা-দুয়েক জিপ; সামনের জিপে আবার বন্দুকওলা এক সান্ত্রী, তার বন্দুক অবিশ্যি জন্তু মারবার না, শূন্যে গুলি ছুঁড়বার। গতকালই একজন বনকর্মীকে গন্ডারে গুঁতিয়ে মেরে ফেলেছে, তাই সবাই বেশ টেনশনে আছে। (জন্তুটন্তু সামনে এলে কিছুতেই ছবি তোলার জন্য জিপ থেকে নামতেদিল না, এমনি পাজী)। খানিকদূর যেতেই একখানা গাছের গুঁড়ি দেখলাম, তার ছাল-বাকলা কে যেন ধারালো নখ দিয়ে আঁচড়ে আঁচড়ে তুলে ফেলেছে; গগৈ দাদা বল্লেন,শিকারে বেরোনোর আগে বাঘ এই গাছের গুঁড়িতে নখ আঁচড়ে নখের ধার বাড়ায়-সত্যি কি মিথ্যে কে জানে বাবা ! আমায় বল্লো, আমিও তোমাদের জানিয়ে দিলাম, ব্যাস ! তবে বেশ শানদার গুঁড়ি কিন্তু।
    বনের মাঝখানে একটা ছেড়ে -যাওয়া আধভাঙা ওয়াচ টাওয়ার দেখতে পেলাম। তার খুঁটির গায়ে দাগ দিয়ে দিয়ে কোন বছর বন্যায় কতটা জল উঠেছিল, তা লেখা আছে। কাজিরঙ্গায় প্রবল বন্যা হয়, অজস্র জন্তু-জানোয়ার ভেসেও যায়। দাগের হাইট দেখে আমাদের চক্ষু-চড়কগাছ; দোতলা-আড়াইতলা অবধি জল উঠেছে একেক বছর।

  • I | 59.93.211.59 | ০৫ এপ্রিল ২০০৯ ১৩:২৪388883
  • আরেকটু দূর যেতেই রাস্তা আটকে দিল এক বড়সড় হাতির পাল, তাতে গোল্লু একটা ছানা হাতিও আছে; রাস্তা ছেড়ে তারা কিছুতেই যাবে না। আর ইদিকে আমাদের সামনের জিপখানা আমাদের চোখ এমনি আটকে রেখেছে, যে ভালো করে দেখাও যাচ্ছে না, ছবিও তোলা যাচ্ছে না। শুধু সামনে দেখতে পাচ্ছি একগুচ্ছ হোঁতকা মাড়োয়ারী, তারা প্রচুর প্রচুর ডালমুট খাচ্ছে, প্রচুর প্রচুর হল্লা কচ্ছে আর পাখী তাড়াচ্ছে; আবার তাদের হুমদো হাতির মতন মেয়ে আমাদের জিপের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে বলছে-শ্‌শ্‌শ্‌শ !!! যেন গোটা দেশটার মত জঙ্গলেও তাদের একচেটে অধিকার, বাকিরা সব বানের জলে ভেসে এয়েছে। বুঝলাম বাকি রাস্তাটা কেবল মানুষ -হাতি দেখেই কাটাতে হবে।
    অবশেষে অনেক বৃহংণ-টিংহণ করে হাতির পাল রাস্তা ছাড়ল; বেতের জঙলে মিলিয়ে যাওয়ার আগে তাদের কালচে গায়ের আভাস আর ন্যাজটুকুই যা দেখতে পেলাম। আর খালিখালি দু:খ হতে থাকলো -হায় আমার একখান লম্বা টেলি আর অনেকখানি ওয়াইড অ্যাঙলওলা ভালো ক্যামেরা নাই। এই দু:খ বাকি বেড়ানোটাতেই হবে, বিশেষ করে কাজিরঙ্গায়; আর তাই এই গল্পের নীতিকথা দিয়েছি : বেড়াতে গেলে ভালো ক্যামেরা নিয়ে যেয়ো।
  • I | 59.93.211.59 | ০৫ এপ্রিল ২০০৯ ১৪:১৩388884
  • সে¾ট্রাল রেঞ্জ বেশ সবুজ, মাঝখান দিয়ে বেশ কয়েকটা নদী, সরু সরু নালা বয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার জল আটকে গিয়ে ছোট-বড়ো বিল মত হয়েছে। এইরকম একখানা নালাতেই আমাদের ছবির সেই হাতি চান কচ্ছিল, আমাদের ছিঁডেফোঁডাও গেরাহ্যির মধ্যে না এনে অনেকক্ষণ ধরে শুঁড় দিয়ে জল তুলে তুলে গায়ে ছড়ালো সে। তারপর আলসে রাজার মত থামওলা পা দিয়ে চড়ার বালি ভেঙ্গে ওপাড়ের জঙ্গলে মিলিয়ে গেলো। একখানা মাত্তর দাঁত তার, আমাদের সান্ত্রী বললেন -গনেশ। আর কপালে হাত ঠেকিয়ে বললেন, প্রণাম বাবা!আমার খুব ভালো লাগলো এই নমস্কারটুকু। আমাদের সব্বার হয়ে , মানুষের হয়ে উনি যেন প্রণাম করলেন জঙ্গলের অধিপতিকে।

    এইখানে শিবুদা-র সঙ্গে একটা খটকা নিয়ে কথা বলে ফেলি। আমি যেন জানতাম এক-দাঁতওলা হাতিমাত্রেই গণেশ হাতি, আমাদের গাইডও তো তাই বললেন; এর আবার ডানদিক-বাঁদিক আছে , জানতাম না তো !

    এর পরে এই দাঁত-শুঁড় নিয়ে একটা ছোট্ট মজা হল, সেটা অবশ্য দুপুরে। টুংকাইয়ের দিদান অন্য এক হাতিকে জলে চান করতে দেখে বললেন, এটার দেখেছো, দুটো শুঁড়।তাই শুনে গগৈদাদা মুচকি হেসে বল্লেন, দুই শুঁড়ওলা হাতি কলকাতায় পাওয়া যায় বুঝি? কাজিরঙ্গায় তো দেখিনি !

    তাপ্পর আরো দেখলাম, বুনো শোর দেখলাম, হরিণ দেখলাম, রঙ্গীন পাখী দেখলাম (নাম-ধাম জানিনা বাপু; একটা ছিল মাছরাঙ্গা, কয়েকটা নীলকণ্ঠ, ব্যাস এইটুকুই)। আর দেখলাম গঁড়, হিন্দিতে যাকে বলে গেণ্ডা, বাংলায় গণ্ডার, গ্রেট এশিয়ান ওয়ান-হর্ন্‌ড রাইনো,rhinoceros unicornis। তাদেরি একজন আমাদের পাছু দেখিয়ে চলে গেলো, ঝিলপিপি সেই ছবি দেখে আবাজ দিলো কত। আরেকজনা হাতির পালের মতই রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে রইল, নট নড়-চড়ন। তার ছবি তুলে নাম দিলাম-যেতে নাহি দিব।
  • kali | 76.114.76.159 | ০৬ এপ্রিল ২০০৯ ০২:০০388885
  • এক দাঁতওয়ালা হাতির যদি ডানদিকের দাঁত থাকে তাইলে গণেশ, বাঁ দিকে থাকলে তাকে বলে একদন্ত।
  • rimi | 24.42.203.194 | ০৭ এপ্রিল ২০০৯ ০৮:০৬388886
  • অনেক রকম আশ্চর্য্য জিনিস দেখেছ।
    আচ্ছা, জিপ থেকে নেমে মাড়োয়ারীদের জিপের সামনে চলে গিয়ে হাতির পালের ছবি তুললে না কেন?
  • I | 59.93.207.245 | ০৭ এপ্রিল ২০০৯ ২১:৩২388887
  • বল্লাম না, জিপ থেকে নামতে দিচ্ছিল না বন্দুকওলা সান্ত্রী? নামলেই বকছিল?

    দেখেছ, পড়ে নি মন দিয়ে। এইজন্যেই বলছিলাম, কঠিন লেখা। না বুঝতে পারো তো হনুদার সহজ সহজ গদ্য পড়লেই পারো। এখেনে আসতে কে বলেছে?
  • rimi | 168.26.215.135 | ০৭ এপ্রিল ২০০৯ ২২:০০388888
  • ওহোহো ব্র্যাকেটে লিখেছ, তাই চোখ এড়িয়ে গেছে।
    এবার বাকিটা চটপট লিখে ফ্যালো তো। :-)এখানে না এলে কাজিরঙ্গার কথা জানব কোত্থেকে? :-((
  • rimi | 168.26.215.135 | ১৪ এপ্রিল ২০০৯ ১৯:০৭388889
  • এটা তুলে দিলাম। ইন্দোদাদা লেখো এবার। গুরুতে তার্কিকরা ছাড়াও অনেকে আসে তো!!!
  • Du | 65.124.26.7 | ১৪ এপ্রিল ২০০৯ ১৯:২৬388890
  • হ্যাঁ, এই সুযোগে গল্পদাদু বেশ ঘুমিয়ে নিচ্ছে :)।
  • I | 59.93.204.235 | ১৯ এপ্রিল ২০০৯ ২১:৫০388892
  • কবে একদিন নাকি শুনলাম কাজিরঙ্গায় এক সায়েবকে হাতিতে পিষে মেরে ফেলেছে-কাগজে বেরিয়েছে। তাই শুনে আমার ভুলে যাওয়া গল্পটার কথা মনে পড়ল। গল্পের অবশ্য খুব বেশী বাকি নেই আর।

    দুপুরে ওয়েস্টার্ন রেঞ্জ বেড়াতে বেরোলাম। এবার আর সকালের মত সবুজ নেই-মাইলের পর মাইল এলিফ্যান্ট গ্রাসের জঙ্গল আগুনে পুড়ে গেছে, অজস্র গাছের ডালপালা দাঁড়িয়ে আছে পাতাহীন। সে আরেক দৃশ্য। বর্ষার পর এই জঙ্গলে এলেই হয়তো দেখা যাবে অন্য রূপ। সবুজ একেবারে নেই তা নয়, মাঝে মধ্যে সবুজের টুকরোটাকরা, তার সঙ্গে আমাদের জিপের চাকায় তৈরী ধুলোয় ব্যাপক কনট্রাস্ট হয়েছে রংয়ের।
    রাস্তার ধার ধরে অজস্র উইঢিপি। আর শিমূলের ছোট্ট ছোট্ট চারা ছাইয়ের মধ্যে আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। নতুন ডালের ডগায় সবুজের আভাস-ওরা সব পাতার কুঁড়ি। ডালগুলো প্রায় একশো আশি ডিগ্রী ছড়ানো। যেন আকাশের দিকে চেয়ে জল চাইছে -জল দাও , জল দাও বলে।

    খুব সম্ভব দাবানল। ফরেস্ট গার্ডকে জিগ্গেস করে কিছু বোঝা গেল না। একে আমি পিছনে দাঁড়িয়ে, কথা আদ্ধেক উড়ে যাচ্ছে সামনের খোলা হাওয়ায়, তারপর যা টুকরোটাকরা উড়ে আসছে, তাও হেভিলি অ্যাক্সেন্টেড। যা-ই হোক, হ্যাবিটাট পুড়ে যাওয়ায় জন্তু-জানোয়ারেরা প্রচণ্ড রেগে আছে নাকি। দেখাও গেল, একটা বুনো মোষ প্রায় শূন্য থেকে উঠে এসে আড়াআড়িভাবে প্রান্তর পেরিয়ে আমাদের দিকে ছুটে এল অনেকটা দূর, তারপর কী ভেবে খানিকক্ষণ জিপের প্যারালালি দৌড়ে তবে ক্ষান্ত দিল। আরেকবার একটা গণ্ডার বেশ কাছ থেকে আমাদের আগের জিপের দিকে দৌড়ে এল, আমাদের জিপটা বেশ কিছুটা পিছিয়ে গেল তার জন্য। না, শেষমেষ চার্জ করেনি।

    ওয়েস্টার্ন রেঞ্জের ব্যাপারে বইতে যে লিখেছে, এক্কেবারে খাটি কথা। কিলবিল করছে জন্তুজানোয়ার। গন্ডার-হাতি-মোষ-শুওর, স্পেশালি গন্ডার দেখতে না পাওয়া কঠিন নয়, অসম্ভব। টুংকাই কত এদিক-ওদিক গণ্ডার দেখালো আমাদের। ওর চোখের লেভেলে যা পড়ছিল আর কি। বাচ্চাদের চোখ বেশ ভালো হয়।

    শেষবেলায় গেলাম বিশাল এক বিলের ধারে। আমাদের ড্রাইভার সাহেবের মতে এটাই নাকি সেরা স্পট-ওয়েস্টার্ন রেঞ্জের। বিশাল বড় বড় চিতল মাছেদের সাঁতার দিতে দেখা গেল। আমি একাই দেখতে পেলাম যদিও; বাকিরা এসে পৌঁছতে না পৌঁছতেই তারা সব ভোঁ। কী করে যে মানুষের আসাটাসা টের পায় ওরা ! ওপাড়ে অজস্র হরিণ আর গন্ডার ছানাপোনাসহ চড়ে বেড়াচ্ছিল।

    আলো পড়ে এলো। যাতায়াতের পথে কালো কালো ডালপালা মেলা গাছের ইকড়িমিকড়িতে ঢাকা সরু রাস্তার শেষে ওয়াচ টাওয়ার দেখে ভালো লাগলো। ছবি তুলে রাখলাম। পাখপাখালিরা বাড়ি ফিরছিল।
    আমরাও ফিরে চললাম। ফেরার পথে গায়ে এক ঝলক ঠাণ্ডা, পাহাড়ী হাওয়া এসে লাগলো। প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। এখন, এই কাঠফাটা গরমের মধ্যে সে কথা ভাবলেও তেষ্টা পায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন