এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • চিয়ারলিডার বা সুড়সুড়ি বা খেলা বা রাজনীতি

    Ishan
    অন্যান্য | ২৯ এপ্রিল ২০০৮ | ১৯৪০২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi naki | 128.231.88.6 | ১০ মে ২০০৮ ০০:১৮396085
  • আচ্ছা, স্যান এর আপত্তি টা কিসে? গৃহবধূ র অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকা নিয়ে নাকি in general বাইরের জগতে কাজ করার সাথে associated যে স্বাধীনতা , সেটা না থাকা নিয়ে?
  • Du | 67.111.229.98 | ১০ মে ২০০৮ ০০:৪০396086
  • একটা অন্য উদাহরণ হতে পারে - সমাজের প্রগতির মধ্য দিয়ে এসেছে একেশ্বরবাদ - এবং যুক্তি দিয়ে দেখলে খড়মাটি পূজোর চেয়ে উন্নত । তবুও শেষ বিচারে ওটাও একটা চয়েসই, আর একেশ্বরবাদীদের চোখে রাইট চয়েসটা অবভিয়াস হলেও অপরপক্ষের কাছে নয়।

    গৃহবধুরা পরমুখাপেক্ষী - এতটা অ্যাবসলিউটও নয় হয়তো। সেভাবে তো শুধু চাকুরীজীবী (অর্থাৎ যারা জল গড়িয়েও খায় না) রাই প্রতি বেলায় পরমুখাপেক্ষী। চাকরিটা মহিলাদের পক্ষে অনেক সময়েই স্বাবলম্বীতার পথ শুধু নয়, বরং পুরুষদের মতই পরিবারকে আরও সচ্ছল করে তোলারই পথ। সেখানে তার/ বা বরটিরও চয়েস থাকাই উচিত যে তারা ক্রুজ নিয়ে করে আনন্দ পাবে নাকি নিজের হাতে বাগান করে। অর্থাৎ তাদের প্রয়োজন (need/want) ই হওয়া উচিত উপার্জন করার ড্রাইভিং ফ্যাক্টর , কোন সামাজিক নজরের চাপ নয়।
  • san | 220.226.45.109 | ১০ মে ২০০৮ ০১:০৩396087
  • আপত্তিটা খুলে বলি। একটা ইসু হল ঘরের কাজের সম্মান দরকার - গৃহবধূদের ছোট করে না দেখা হোক, বা হাউস হাসবেন্ড দের সম্মান পাওয়া হোক। এগুলো হলে বলা বাহুল্য আমি খুশিই হব। আরেকটা ইসু হল মেয়েদের নিজে আর্ন করার প্রবণতা যত বাড়বে পণ বধূহত্যা এইসব তত কমবে । তো অসম্মান থেকে যে অপ্রেশন আসে সেটা সম্মান প্রতিষ্ঠা করে ট্রিট করা হোক, আর যে সমস্যা আসে নিজের আর্থিক পরাধীনতা থেকে সেটা স্বনির্ভর করে তোলার চেষ্টা করে ট্রিট করা হোক। এইবারে ঈশান চাইছে একঢিলে দুই পাখি। অ্যাজ ইফ ঘরের কাজকে সম্মান দিলে আর্থিক পরাধীনতা-জনিত সমস্যা কমে যাবে। এখন তাহলে সেটা ঐ মধ্যবিত্ত মাসিপিসিদের যারা প্রচন্ড সম্মান পেতেন তাদের সময়েই পাল্টাতো। তা তো পাল্টায়নি। দেখাই যাচ্ছে একটা দিয়ে আরেকটা ট্রিট করা সম্ভব না। বরং দেখা গেছে সমাজের যে অংশে যত বেশি মেয়ে বাইরের কাজ করে আর্ন করেছে সেই অংশে ততই পণ টণের গল্প কমে এসেছে। ইকুয়ালিস্ট-ফেমিনিস্ট তঙ্কÄ অ্যাড্রেস করে এই দুনম্বর দিকটা (আর্থিক স্বাধীনতা ) আর আইডিয়ালি রাইট টু বি ডিফারেন্ট থিওরির করার কথা প্রথম দিকটা ( স্বনির্ভর না হয়েও সম্মান পাওয়াটা)। তো ঈশান যদি দুটোকে আলাদা রাখে কোন চাপ নেই - কিন্তু ঐ যে বলেছে ওর থিওরি টাকে ও ফেমিনিস্ট থিওরির কাউন্টার হিসেবে প্লেস করছে। আবার বেটার বলেও দাবি করছে। আমার এই খানেই চাপ হচ্ছে । কারণ ফেমিনিস্ট থিওরির 'সাবস্টিটিউট' হিসেবে এটা দাঁড়ায় না বলেই আমার মনে হচ্ছে। 'কমপ্লিমেন্ট' হলেও হতে পারে।

    এটা একটা চাপ আরেকটা হল এই লোকের বিহেভিয়ারের লাস্ট স্টেজটাই শুধু দেখে সেটা স্বাধীন চয়েস বলে দেয়া। কয়েকটা স্টেপ পিছিয়ে গেলেই যেখানে দেখা যেত যে ঐ চয়েস টার পিছনে সত্যি কিছু ডাল মে কালা আছে কিনা যেগুলোর প্রপার ট্রিটমেন্ট দরকার।সবকিছুতেই এক কথায় এমপাওয়ারমেন্ট বা এক্সক্লুশন বলে কাটিয়ে দিলে সেই ট্রিটমেন্ট গুলো আর হয়ে উঠবে না। এই আর কি।

  • Ishan | 12.163.39.254 | ১০ মে ২০০৮ ০৩:২০396088
  • স্যান। এর জবাব আমি আগেই দিয়েছি। তক্কাতক্কির মধ্যে পড়ে ঠিকভাবে হয়তো ব্যাখ্যা করা হয়নি।

    এক এক করে বলি।
    এক। "স্বেচ্ছা'য় বলে কিছু হয়না। অ্যাবসলিউট এবং প্রভাবহীন "স্ব ইচ্ছা' অ্যাবসার্ড। এই যে ধরো টাইপ করছি, এর পিছনে টাইপিং শিক্ষা আছে। কম্পিউটার ব্যবহার করতেই হবে, পেশাগত বা সামাজিক চাপ আছে। তার আগে বাক্যগঠন, এবং ব্যকরণ শিক্ষা আছে। এছাড়াও "সভ্যতা', "ভদ্রতা', "গণতান্ত্রিক অধিকার', ইত্যাদির পাঠ আছে। সেসব শেখার পরেই আমরা মুখ খুলছি। আমি বা তুমি। এবং এই প্রতিটি শিক্ষার পিছনেই রয়েছে, পারিবারিক, সামাজিক, প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ চাপ। তাকে তুমি কন্ডিশনিং বলো আর ডিসিপ্লিনারি পাওয়ার বলো, গল্পটা একই। কারণ এগুলো আমরা কেউ "স্বেচ্ছা'য় শিখিনি।

    শুধু এখানেই শেষ নয়। "আমার ব্যক্তিত্ব', "আমি', "সত্বা', ইত্যাদি যা বুঝি, সেগুলো আসলে এই কন্ডিশনিং। সেসব খোলস ছাড়ালে শেষবিচারে পড়ে থাকে একটি মানবশিশু, বেসিক কিছু ইনস্টিংক্ট আর সাধারণ কিছু অনুভূতি ছাড়া যার আর কিছু নেই। আমরা, মানে সোসাইটি, এই ছানাটিকে একরকম করে কন্ডিশনিং করি। এবং এমপাওয়ার করি। জোর ফলিয়ে ল্যাঙ্গুয়েজ শেখাই, ভব্যতা শেখাই। এবং সে ডিসিপ্লিনড হয়। ভাষা ও ভব্যতা শিখে এমপাওয়ারড হয়। ইত্যাদি।

    দুই। একটি ছেলে বা মেয়ে বা সামাজিক জীবের সিদ্ধান্ত নেবার প্রশ্নে এই গল্পটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যে, "অ্যাবসলিউটলি নিজস্ব' সিদ্ধান্ত বলে কিছু হয়না। প্রতিটি সিদ্ধান্তই কোনো-না কোনো চাপের ফল। কোনো না কোনো কন্ডিশনিং এর ফল। কন্ডিশনিংহীন মানুষ, পেঁয়াজের খোসা ছারানোর পর পড়ে থাকা একটি ফাঁপা অস্তিত্ব। খুব ছোটো-ছোটো সিদ্ধান্ত, যেগুলো মনে হয়, নিজেই নিচ্ছি, সেগুলো ও আসলে কন্ডিশনিং। তার কিছুটা চোখে দেখা যায়, কিছুটা যায়না। যেমন, একটি মেয়ে, ধরো, আজকে, একটা টাইট বডিহাগিং জামা পরে বাইরে বেরোয়না, কারণ তার মা বকে, বা রাস্তার ছেলেরা আওয়াজ দেয়। বোঝা যায়, সেটা এক্সটার্নাল চাপ। কিন্তু ধরো, মেয়েটিকে একলা কোথাও থাকতে দেওয়া হল, যেখানে, বাপ-মা নেই, পাড়ার ছেলেরাও নেই। ভারতীয় মেয়ে হলে, ইন জেনেরাল, তখন হয়তো সে টাইট জামাটি পরবে, কিন্তু মিনিস্কার্ট পরবেনা। কখনই। এই যে মিনিস্কার্ট পরবনা, ওটা ভব্য পোশাক নয়, এই ধারণাটা, মূলত: কন্ডিশনিং। সিদ্ধান্ত, মেয়েটি নিজেই নিল। কিন্তু ওটা তার নিজের সিদ্ধান্ত নয়। এর সঙ্গে এক্সক্লুশন এবং এমপাওয়ারমেন্ট জড়িয়ে আছে, সে কথায় আমি এখানে যাচ্ছিনা।

    তিন। ফলে তুমি যখন বলো, যে, সরাসরি চাপ আর পরোক্ষ চাপের মধ্যে লাইনটা স্পষ্ট নয়, তখন একদম ঠিক বলো। এই ডিমার্কেশনটা করা অসম্ভব। এমনকি গামছা পরে বাথরুমে যাব, না পুরো পোশাক পরে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়াতেও পরোক্ষ চাপ মিশে থাকে। কন্যাভ্রূণহত্যার সিদ্ধান্ত যখন নিচ্ছেন কোনো মহিলা, তাঁর ভিতরে কোনো না কোনো কন্ডিশনিং কাজ করে চলে। করেই চলে। "মেয়ের চেয়ে ছেলে ভালো', এই ধারণাটা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাজ করেই চলে কোথাও না কোথাও। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ। এটা একটা সামাজিক কন্ডিশনিং।

    চার। অন্যদিকে, যেখানটা মিস করে যাচ্ছ, যে, তুমি বা আমি যখন এই ধারণাটার কাউন্টার করি, "মেয়ের চেয়ে ছেলে ভালো' বললে রেগে যাই, বা ধরো, "সমান অধিকার' এ পক্ষে বলি, তখন আমরাও কিন্তু সমাজের ঊর্ধ্বে উঠে, কন্ডিশনিং এর ঊর্ধ্বে উঠে, কোনো অ্যাবসলিউট ধারণার কথা বলিনা। "ছেলে আর মেয়ের সমান অধিকার', এটাও একটা কন্ডিশনিং। এটা ন্যাচারাল কিছু না, ডেভেলাপড একটি ধারণা। ইকুয়ালিটি একটি তৈরি করা ধারণা। আমি যেমন "অসমান দের সমান অধিকার' নামক একটি ধারণা তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা করছি, "সমান' এর ধারণাটাও একই ভাবে তৈরি হয়েছে। তার ঐতিহাসিক কারণও ছিল। কিন্তু মোদ্দা কথা হল, এটাও কন্ডিশনিং।

    পাঁচ। এবার, তোমার সমস্যাটাকে দেখি। তুমি কন্যাভ্রূণহত্যার বিরুদ্ধে বলতে চাও। আমিও চাই। কিন্তু ভ্রূণহত্যাও যদি কন্ডিশনিং হয়, আর তার বিরোধিতাও যদি কন্ডিশনিং হয়, উভয়েই যদি এমপাওয়ার ও এক্সক্লুড করে থাকে, তাহলে আলাদা করে একটার পক্ষে এবং অন্য কন্ডিশনিং টার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কোনো অবজেক্টিভ ভিত্তিই থাকেনা। কোন মুখে, কিকরে, তাহলে বলব, যে, নারীভ্রূণহত্যা খারাপ, আর সমানাধিকার ভালো? উভয়েই তো মুদ্রার এ পিঠ এবং ও পিঠ। এক্সক্লুশন এবং এমপাওয়ারমেন্ট। ইত্যাদি ইত্যাদি।

    ছয়। তাহলে আমাদের একটা মেজারিং স্টিক চাই। লাইন টানার যন্ত্র চাই। যে, এই কন্ডিশনিং গুলি আমি অ্যালাও করব এবং এই গুলি করব না। আমি বেসিক কিছু স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করব, যার ওদিকে গেলে, কন্ডিশনিং হোক ছাই এমপাওয়ারমেন্ট হোক, যাই হোক, আমি সেটাকে মরালি "খারাপ' বলব। যেমন বৌ ঠ্যাঙানো খারাপ। এখানে, কথার কথা, হতে পারে, বৌটি ঠেঙানি খেয়ে আনন্দ পায়, আর বরটি স্যাডিস্ট। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসেনা, আমি মরালি বলব, বৌ ঠ্যাঙানো খারাপ। ইন জেনারাল।

    সাত। তো, এই লাইনটি খুঁজে বার করা সহজ না। সেই জন্যই অতো কচকচি। বাংলা কথা হল, দুটি ডিসিপ্লিনের ধারণা যদি একে অপরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কনট্রাডিক্ট করে, তবে, কে বেশি "এমপাওয়ার' করছে আমি বেছে নেব। "গণতন্ত্র' নি:সন্দেহে মানুষের ক্ষমতার দিগন্তকে রাজতন্ত্রের চেয়ে বেশী প্রসারিত করে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ধারণা নিশ্চয়ই নারীর ক্ষমতাকে অধিকতর প্রসারিত করে। একই ভাবে ভ্রুণহত্যার চেয়ে সমানাধিকারের ধারণা "ভালো', এটাও মেনে নেব। এঅকি ভাবে মার্কসবাদ অমতার দিগন্তকে বাজারি "সমানাধিকার' এর চেয়ে বেশি প্রসারিত করে। সাধারণভাবে। বা লিবারাল গণতন্ত্র রক্ষণশীলতার চেয়ে বেটার। ইত্যাদি।

    আট। এতেও সমস্যা হল, যে, প্রতিটি ক্ষমতাই, যেমন, একাধারে এমপাওয়ার করে, তেমনই এক্সক্লুডও করে। যে ডিসিপ্লিনেরই পক্ষ নিইনা কেন, সেটাও কিছু জিনিসকে এক্সক্লুড করে। সেই জন্যই মার্কসবাদ নিয়ে অতো কচকচি। যে, ক্ষমতার ভালো ক্রিটিক হলেও, এটা কিছু কিছু জিনিসকে এক্সক্লুডও করে।
    আমরা সমস্ত রকম এক্সক্লুশনের বিরুদ্ধে। অতএব, একটি ডিসকোর্সের বদলে যখন আরেকটিকে বেছে নিচ্ছি, তখন মনে রাখতে হবে, যে, সেটিও কিছু কিছু বস্তুকে এক্সক্লুড করে। অতএব আমার চয়েস একটি কনসাস চয়েস। আমার চয়েস হল, নিজের এক্সক্লুশনের সীমান্তগুলি খুঁজে বার করে তারও সমালোচনা করা।

    নয়। অতএব, আমি জানি, সামন্ততন্ত্রের চেয়ে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ধারণা একরকম করে নারীকে বেশি এমপাওয়ার করে। ওটা একটা ফাইট। কিন্তু এ ছাড়াও অন্য কিছু থাকতে পারে, যা আমার চশমায় ধরা পড়ছে না। এখানেই আসছে বিষম দের সুষম অধিকারের দাবী। যে, অন্যরা অন্যদের মতো ফাইট করুক। তারা ঠিক কি চায় আমি বুঝিনা, কিন্তু আমি তাদের "সম্মান' দেব।

    খুব কংক্রিট ওয়েতে বলতে গেলে, নারীর অর্থনীতিক স্বাধীনতার দাবীতে লড়াই, আর গৃহবধূদের "সম্মান' এর দাবী, এই দুয়ের মধ্যে কোনো বিরোধ আমি দেখবনা। কারণ আমি সমস্ত কিছু কে একটি মাত্র ইকুয়াল চশমায় ফেলে দেখা পছন্দ করিনা।

    *** লেখা শেষ করার আগেই স্যান লিখে দিয়েছে দেখলাম। সাবস্টিটিউট না। কমপ্লিমেন্ট। একমত। কিন্তু সেটার জন্য "অসমান দের সমান অধিকার' এর ধারণাটা আগে দরকার।
  • pinaki | 131.151.54.206 | ১০ মে ২০০৮ ০৩:৫৬396089
  • কিন্তু ঈশানের গন্ধরাজ লেবুপাতায় ভাপানো নাকটার কি হল? কেউ কিছু বলছে না কেন সে প্রসঙ্গে?
  • san | 117.97.21.47 | ১০ মে ২০০৮ ০৪:১৯396090
  • যাত্তারা রাইট টু বি ডিফারেন্ট তো ইকুয়ালিস্ট-ফেমিনিস্ট তঙ্কেÄর কাউন্টার করে শুরু করেছিলে ভাই - 'কাউন্টার তঙ্কÄ' মানে তো 'সাবস্টিটিউট' বলেই জানতাম - সেখান থেকে শুরু করে এতদিন পরে বলে কিনা সাবস্টিটিউট নয় কমপ্লিমেন্ট আমি একমত - মাইরি এই পরিমাণ পাল্টি খেতে প্রতিভা লাগে। তার ওপরে আবার গন্ধরাজ পাতায় ভাপানো নাক- কম কথা? আমি এই কাটলাম।
  • Ishan | 12.240.14.60 | ১০ মে ২০০৮ ০৮:৫১396091
  • স্যান,

    রিমিকে লেখা একটা কথা লিখে প্রত্যাহার করেছিলাম। কালকে বুনুয়েলের সিনেমাটার নাম স্লাইট ভুল দিয়েছিলাম। এরকম কিছু খুচরো জিনিস ছাড়া এই সুতোয় লেখা একটি বাক্যেরও পিতৃত্ব আমি অস্বীকার করছিনা। কোথায় পাল্টিটা খেলাম, একটু দেখিয়ে দিলে খুশি হব।

    তবে আমার দিক থেকে আমি ধরে নিচ্ছি, বোঝা/বোঝানোর ভুল। আগের পোস্টে শেষটা একটি বাক্যে করা মনে হয় ঠিক হয়নি। ব্যাখ্যা করে দিই।

    আমি ইকুয়ালিস্ট অবস্থানের বিরোধী। আগেও ছিলাম এখনও আছি। "মেয়েদের বাইরে কাজ করতেই হবে, নইলে তারা পিছিয়ে পড়া', বা "পুরুষের সমান হতে হবে' এরকম একটা ইকুয়ালিস্ট অবস্থানের বিরোধিতা করেছি এবং এখনও করছি।

    এর বিপরীতে আমি বলেছি "অসমান থাকার অধিকার'এর কথা। এখনও বলছি। অসমান থাকাটা একটা বড়ো সেট। "সমান' থাকার অধিকারটা তার একটা সাবসেট। "সমান' হবার অধিকারকে কার্ব করা মানে "অসমান' হবার অধিকারকেই খন্ডিত করা। যেখানে "সমান' হবার চয়েস নেই, সেখানে অসমান হবারও চয়েস নেই। ওটা চয়েসহীনতা। বাধ্যবাধকতা।

    অতএব, কেউ যদি "সমান' হতে চান তাঁর সেই অধিকারে আমার সমর্থন আছে। কিন্তু "সমান হতেই হবে, নইলে পিছিয়ে পড়া', এই ইকুয়ালিস্ট অবস্থানের আমি বিরোধী। কারণ ওটা গায়ের জোর। অসমানকে এক্সক্লুড করার পন্থা। সমানাধিকারের দাবীদাররা যদি "অসমতার অধিকার'কে মেনে নেন, কোনো অসুবিধে নেই তো। "অসমতার অধিকার' এর একটি ফর্ম হিসাবে, একই ভাবে আমি সমতাকে মেনে নেব। জাস্ট একটি ফর্ম হিসাবে। ব্যস।

    এই হল অবস্থান। কোনোকিচ্ছু অপরিষ্কার নয়। এতে ফাঁকফোকর থাকতে পারে। আক্রমন ওয়েলকাম। কিন্তু একই কথা পঞ্চাশবার লিখতে ভাল্লাগছেনা। মাক্কালী। :)
  • Ishan | 12.240.14.60 | ১০ মে ২০০৮ ০৯:২২396092
  • এবার বোধিকে।

    বোধির আলোচনাটিতে আমি শরচ্চন্দ্রীয় প্রভাব লক্ষ্য করছি। "যে সমস্ত মহিলারা বাইরে প্রচন্ড খাটার পরেও বাড়িতে স্রেফ সামাজিক জেন্ডার্ড রোলের কারণে ...... যাঁদের শ্রমের মূল্য ঘরের বাইরে আদৌ নেই, বাড়িতেও মাথা তুলে কথা বলার অধিকার নেই' এই বাক্যটি আমায়, কিছু করার নেই, "এ সংসারে যারা শুধুই দিলে... পেলেনা কিছুই...' বাক্যটির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এতদ্বারা আমি সিক আখ্যায়িত হলে কিছু করার নেই। কারণ আমি হাগা পেলে হাগি,হাসি পেলে হেসে থাকি, এবং তত্বালোচনার সময়ে আবেগের বন্যায় অস্বস্তি বোধ করি।

    তো, বোধির আলোচনাটি সম্পর্কে প্রধান মতামত একটিই, যে, তাহা আবেগ থই থই ভরা কোটাল। অ্যানালিসিসের সেখানে এক বাঁও মেলেনা। বোধি ক্লাস নামক ক্যাটেগরিটিতে প্রবল ভাবে আস্থাশীল বোঝা গেল, আমি তাকে বর্জন করার জন্য প্রবল বকুনিও খেলাম, কিন্তু যৌনকর্মীদের প্রশ্নে ক্লাস ও উৎপাদন সম্পর্কের নিরিখে সমস্ত বিশ্লেষণকে এড়িয়ে যাওয়া হল। পুরুষতন্ত্র নিয়ে বলা হল। টোনটা অনেকটা যেন, বাওয়া, আমি এখন পুরুষতন্ত্রকে গাল দিচ্ছি, এখন ক্লাস টাস নিয়ে বিরক্ত কোরোনা। ওসব পরে দেখা যাবে।

    এই টোনের দ্বারা, প্রশ্নটা কিন্তু উবে গেলনা। যে, যোয়্‌নকর্মীদের শ্রম মার্কসীয় কাঠামোয় কি জাতীয় শ্রম। উৎপাদন সম্পর্কের নিরিখেই বা তা কোথায় অবস্থান করে। যদি এটা কোনো প্রোডাক্টোভ শ্রমই না হয়, চুরি-চামারি-ভবঘুরেপনার মতো ফালতু কেস হয়, তাহলে এটা তুলে দেবার পক্ষে সওয়াল না করে খামোখা চোর-ছ্যাঁচোড়-যৌনকর্মীদের অধিকারকে সমর্থনই বা করব কেন।

    দ্বিতীয়ত: এটুকু জানিয়ে রাখা ভালো, যে, মার্কসকে এবং তাঁর আলোচনাকে বাজারের "সমতা'র ধারণার একটি ভারি সুন্দর এবং শক্তিশালী ক্রিটিক হিসাবে আমি মানি এবং মেনে নিই। বেসিকালি ভদ্রলোক বাজার-প্রদত্ত "সমানাধিকার' এর কিছু ভাঁতাবাজি এবং এক্সক্লুশনের চমৎকার বিবরণ দিয়েছেন। আমি মনে করি, এই মুহূর্তে যে, রাবিশ, ভুলভাল জিনিসপত্রগুলি নামাচ্ছি, তারা ঐ ক্রিটিকাল আলোচনার ঘরানারই অঙ্গ। কন্টিনিউয়েশন। ক্লাস নামক ক্যাটেগরিটি আমি কদাচ বর্জন করতে বলিনি। শুধু তার মিলিটেশনগুলি সম্পর্কেও সচেতন থাকতে বলেছি।

    ব্যস। এইটুকুই।

    *** বিধিসম্মত সতর্কীকরণ। রাগিবেন না। আমাকে গাল দিলে আম্মো দেব। ওতে রাগার কিছু হয়নি। :)
  • Ishan | 12.240.14.60 | ১০ মে ২০০৮ ০৯:৩৯396093
  • পিনাকী,
    Date:09 May 2008 -- 10:37 AM এর সঙ্গে একমত। আগের পোস্টে যে "প্রায় ভুল স্টেটমেন্ট' দিয়েছিলাম, সেটা আসলে পরের ধাপটায় আসব ধরে নিয়ে। :)

    রঞ্জনদা,
    Date:09 May 2008 -- 10:34 AM পোস্ট সম্পর্কে। মার্কসের লেখায় প্রচ্ছন্নভাবে ওটা আছে কিনা সে নিয়ে তক্কো চলতে পারে, কারণ প্রচ্ছন্ন মানে অস্পষ্ট। :) কিন্তু থাক বা না থাক, আমার কোনো আপত্তি নেই। না থাকলেও মার্কসকে নিয়ে কোনো কমপ্লেন নেই। একটা লোক খামোখা সব কিছু নিয়ে ভাববেই বা কেন, মতামতই বা দেবে কেন? তিনি শুধু তাঁর ধারণামতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো নিয়ে বেশি ভেবেছেন। সেটাই স্বাভাবিক।

    b,
    পার্লামেন্টে সংরক্ষণ আমি সমর্থন করি। লেডিজ কামরাও তাই। তবে একটা টাইমফ্রেম বেঁধে এগুলো যাতে অ্যাবলিশ করা যায় একদিন সেদিকে নজর রাখা উচিত। অনন্তকাল ট্রেনে মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া হবে আর সেজন্য মেয়েদের আলাদা কামরা হবে, এটা কোনো লং টার্ম সলিউশন হতে পারে না।
  • dri | 75.3.201.43 | ১০ মে ২০০৮ ১০:৩৯396095
  • ঈশেনের থিওরি তো দেখছি ব্যাকটেরিয়ার মত মিউটেট করছে। যত ওষুধ পড়ে, ব্যাকটেরিয়া ওষুধ-রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যায়।

    হতে হতে থিওরির ফাইনাল ফর্মটা যা হয়েছে তাকে তো মনে হচ্ছে নাইয়ে খাইয়ে রোদে শুকোতে দিতে হবে। ব্যবহার আর করা যাবে না।
  • dri | 75.3.201.43 | ১০ মে ২০০৮ ১০:৪৪396096
  • তবে অন আ মোর সিরিয়াস নোট, ঈশেনের মহাকাশে নির্মিত ডিফারেন্সিও-ইকুয়ালিস্ট রাজপ্রাসাদ তো খুবই এনজয় করলাম। কিন্তু একটা উইমেন্‌স ইস্যুতে আরো বেশী উইমেন্‌স' পার্টিসিপেশান এক্সপেক্ট করেছিলাম। স্যান বক্তব্য রেখেছে। রিমি রেখেছেন। দময়ন্তী টুকটাক। এছাড়া বাকিরা কই?
  • pinaki | 131.151.54.206 | ১০ মে ২০০৮ ১০:৪৮396097
  • "পাই" কে বাদ দিলেন?

    এ মা, বলে ফেল্লাম। "পাই" এর পরিচয় গোপন রাখার কথা ছিল।
  • dri | 75.3.201.43 | ১০ মে ২০০৮ ১১:২২396098
  • ও! পাই কি আসলে পাইদি? নামটা শুনে ধরতে পারা যায় নি কিন্তু। একটা মেয়েলি নাম নিলে তখন চেনা যেত। যেমন 'ইটা'।
  • pi | 69.251.184.3 | ১০ মে ২০০৮ ১১:৩৭396099
  • এই যাহ ! এদিকে দ্রি র মতো এমন সুরেলা ধ্বনি র মধুর মেয়েলি নাম শুনে আমি ভেবেছিলাম .....
  • Tim | 204.111.134.55 | ১০ মে ২০০৮ ১২:১৬396100
  • পিনাকীর আগেই স্যানিণি ফাঁস করে দিয়েছে পাই এর দিদিত্ব।
    দ্রিদার তো পুরো নাম দ্রিঘাঞ্চু, সুরেলা নাম? ;-)
  • pi | 69.251.184.3 | ১১ মে ২০০৮ ০৯:২২396101
  • এধরণের অপরাধের শাস্তিস্বরূপ স্যানিণি আমার দিক থেকে দুখানি নাক কাটার সুপারি হতে বঞ্চিত হলো। এক, পিনাকী র নাক কেটে তাকে পি বানানো এবং ঈশানবাবু র নাক কেটে ঐ গন্ধরাজ লেবু পাতায় ইত্যাদি... :)

    তবে স্যান এর বক্তব্য নিয়ে দুটো কথা ছিলো।
    স্বনির্ভর না হলেই কি স্বাধীনতা থাকতে পারেনা ? মানে, স্বনির্ভর হলে অবশ্যই স্বাধীনতা আসবে, কিন্তু উল্টোটা অনেক সময় ই সত্যি না। অনেক ঘরে থাকা মেয়ের ই কিন্তু ইকনমিক ডিসিশান নেবার ক্ষমতা ও স্বাধীনতা রয়েছে।

    আর আমি সমাজের কাছে কিভাবে ট্রিটেড হবো সেটা সমাজের বাকি মেয়েদের আইডেন্টিটি দিয়ে নির্ধারিত হবে, এটাও মানতে পারলাম না।
    তুমিই কিন্তু একবার লিখেছিলে, বাইরে কাজ করা মেয়েরা ঘরে কাজ করতে বাধ্য হতে পারেনা, যদি তারা নিজেকে assert করতে পারে। যদিও সেটা একটু ওভার-স্টেটমেন্ট মনে হয়েছিলো, কিন্তু এই এক ই assertion সমাজের কাছে আমি কিভাবে ট্রিটেড হবো, সেখানে দেখানো যাবে না ?

    আর, সমাজ এভাবে ট্রিট করলে ,সেটা সমাজের ট্রিটমেন্ট এর দোষ, প্রতিবাদটা সেটার বিরুদ্ধে করা উচিত, বাকি মেয়েরা আমার পছন্দের কি তথাকথিত ভালো আইডেন্টিটি নিলো না, সেটার উপর দোষ না চাপিয়ে।

  • d | 117.99.7.5 | ১১ মে ২০০৮ ১২:৫১396102
  • দ্রি, আপনি মশাই কিরকম কনভেনশনাল কথাবার্তা বলছেন। উইমেন'স ইস্যুতে কি এমন হাতিঘোড়া আছে যে বেশী পার্টিসিপেশান আশা করেছিলেন? এমনিতে টই'তে কিরকম পার্টিসিপেশান দেখেন? আমি তো ঠিক সেরকমই দেখলাম, যা অন্য টইগুলোতে দেখি। আর আপনি আজকাল মন দিয়ে ভাটও পড়েন না। এই যে ইপ্পি আসলে ইরাবতী পড়ুই কিনা, তাই নিয়ে অত গজল্লা হল! উনি কিন্তু কিছুতেই "ঈশান পোড়েল' হতে রাজী হন নি। :)

    ঈশান,

    তোমার থিওরী থেকে যা বুঝলাম কন্যাভ্রুণহত্যা এবং পণ নেওয়া ইত্যাদি কোন প্রভাব ছাড়া হলে সেটা অ্যাকসেপ্টেবল। আমার এখানেই প্রচন্ড আপত্তি আছে। খুন বা ধর্ষণ যেমন দেশকালনিরপেক্ষভাবে খারাপ কাজ বলে গণ্য হয়, এগুলো'ও তেমনই হওয়া উচিৎ। "আমি আলাদা, তাই আমি খুন করতে ভালবাসি' অথবা "ধর্ষণ করতে ভালবাসি' এটা যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, তেমনই পণ নেওয়া বা কন্যাভ্রুণহত্যা'র বিরুদ্ধে আইন থাকা প্রয়োজন।

    তুমি বলেছ সরকার যদি মনে করে কন্যাভ্রুণহ্‌ত্‌য়া ক্ষতিকর তাহলে সরকার ভাল কমপেনসেশনের ব্যবস্থা করুক। কিন্তু ভারতের মত দেশে যেরকম ব্যপকহারে কন্যাভ্রুণহত্যা হয়, আর সরকারের যেরকম ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা তাতে এটা কোন উপায় হতে পারে না। অ্যাকচুয়ালি কেউ কোন বিশেষ সময় সন্তান না চাইতেই পারেন। সেটা তাঁর স্বাধীনতা। কিন্তু সন্তান "মেয়ে' কিম্বা "ছেলে' বলে চাইবেন না --- সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। মনে রাখতে হবে মায়েরা অনেকক্ষেত্রেই নিজের অবহেলিত ছোটবেলা অথবা ভবিষ্যতে "ছেলের মা' হবার গৌরবের জন্য স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। চীনের কথা মনে কর, যেখানে একটি সন্তান বাধ্যতামূলক, সেখানে কিরকম মাস রেটে কন্যাভ্রুণহত্যা হয়।

    পণের ক্ষেত্রেও একই কথা। যে সব মেয়েরা বিশেষ পরিস্থিতিতে বাবা মায়ের কাছ থেকে নিজের জন্য বেশী সুবিধা দাবী করে, সেটাও একধরণের অত্যাচারই। চিরকাল ছেলের বোয়েরা অত্যাচারিত হয়ে এসেছে, এই অজুহাতে যেমন এখন শ্বশুর-শাশুড়িকে অত্যাচার করাটা মেনে নেওয়া যায় না, তেমনি মেয়েরা তবু তো, নিজের জন্য কিছু আদায় করছে, এই অজুহাতে তাদের হ্যাংলা লোভকেও সমর্থন করা যায় না।

    দ্বিতীয় কেসে তুমি কোন স্ট্যান্ড নিতে পারনি, তাই ওটা নিয়ে আর কিছু বললাম না। তবে তুমি নিজে কিন্তু জানাও নি, যে দেহব্যবসাকে "বৈধ শ্রম'এর স্বীকৃতি দিতে চাও কি চাও না। :)

    ইপ্পি,

    আমি সমাজের কাছে কিভাবে ট্রীটেড হব, সেটা অন্য মেয়েদের আইডেন্টিটি দিয়ে নির্ধারিত হবে -- এটা মানতে পারি না ঠিকই, আমিও পারিনা। কিন্তু আনফরচুনেটলি সেটাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়। এবং নিজের স্বতন্ত্র আইডেন্টিটা অনেক সময়েই গজাল মেরে মাথায় ঢোকাতে হয়।

  • dri | 75.3.201.43 | ১১ মে ২০০৮ ১৩:২০396103
  • কথাটা সত্যি। লাস্ট তিন উইকে আমি ভাট খুবই স্কিপ করে করে পড়েছি। কন্টিনিউইটি কাট হয়ে গেলে গল্প চালু করতে একটু অসুবিধে হয়। আজকাল তাই প্রায়ই ভাট কাটিয়ে দি।

    আর ঈশেনের ঐ অত্যাশ্চর্য্য থিওরাইজেশান আমিও বুঝিনি। অবজেক্টিভ ট্রুথ বলে কিছু হয়না, তাই আমি কাউকে ঘাঁটাব না। ফুকো যদি জানতে পারতেন তাদের ছাত্ররা এইরকম ইন্টারপ্রিটেশন দিচ্ছে, খুব দু:খ পেতেন।

    তুমি কাউকে ঘাঁটাও বা না ঘাঁটাও, অন্যলোকে ঘাঁটাবেই। তুমি এই ভেবে খুশী থাকতে পারো আমি তো কারু চয়েসে আঘাত করিনি। কিন্তু চারিদিকে সদাই সবার চয়েস শেপ করে চলেছে সমাজ, পিয়ার প্রেশার, টিভি, বিলবোর্ড, ম্যাগাজিন। নেভার মাইন্ড অবজেক্টিভ ট্রুথ। তুমি যদি মনে কর যা হচ্ছে তাতে গোলমাল আছে, তুমি বল। তোমার মত করে ছোট করে ইনফ্লুয়েন্স করার চেষ্টা কর। অবজেক্টিভ ট্রুথের আশায় বসে থেকে কি লাভ?
  • hanu | 220.225.84.122 | ১১ মে ২০০৮ ১৫:৪৮396104
  • যৌনকর্মীদের পেশার স্বীকৃতির দাবীকে সমর্থন জানানো আর বারাঙ্গনাবৃত্তির ব্যাপকতা নিজেই কমে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরির প্রচেষ্টায় সমাজ পরিবর্তনের প্রচেষ্টা চালানো এই দুটো রাজনৈতিক অবস্থানের মধ্যে , আমি, বিরাট স্ববিরোধ কিছু দেখতে পারছি না। অনেক সোশালিস্ট রা অনেক সময়ে এর বিরোধিতা করেছেন, বিভিন্ন লোক বিভিন্ন সময়ে করেছেন বিভিন্ন কারণে করেছেন, হয়তো এখনো করেন। কিন্তু দুরকম ভাবে ভাবলে এই স্ববিরোধিতার ছবিটা পাল্টে চায়। প্রথমত: নাগরিক হিসেবে একটা মানুষের সাংবিধানিক ও পরিষেবা পাওয়ার অধিকারের স্বীকৃতি তার পেশার উপরে নির্ভরশীল হতে পারে না। মানে যদি নির্ভর শীল হয় তাহলে মৌলিক অধিকারের ইউনিভার্সালিটি বলে কিছু থাকে না। দ্বিতীয়ত: দেহ ব্যবসার বিশেষ দিক হল বিভিন্ন সময়ে তার সামাজিক ও মরাল ও কখনো ফিজিলা একসক্লুশন (উচ্ছেদ করা হছে ইত্যাদি)। ঊনবিংশ শতকের Contagious Diseases Act এটার একটা উদাহরণ। এই দু ধরণের আক্রমণের বিরুদ্ধে দেহব্যবসায়ী মহিলারা যখন সংগঠিত হন তখন বেশ কয়েকটা জিনিস ঘটে। প্রথমত: বাজারী মেয়েছেলেরা যে সংগঠিত হছে এতে সমাজের মরালিটির ধারক বাহকদের একটা শক এফেক্ট দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত সরকারকে তথা সমাজকে বাধ্য করা হয় যৌনকর্মীদের সাংবিধানিক ও প্রাত্যহিক পরিষেবাকে সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে। অতএব ইশানের আক্রমণে আমি বিচলিত হছি না, কারণ আমি যৌনকর্মীদের সগঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াটিতে ডিসেন্টের প্লুরাল সংগঠনের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃত হতে দেখছি। দ্বিতীয়ত মরালিটির স্টেটাস কুয়োকে থাপ্পড় খেতে দেখছি। যৌনকর্মীরা কারা কোথা থেকে এই পেশায় আসছেন কেন আসছেন তার বিশ্লেষণ, শ্রেণী বিশ্লেষণ করলেই ইশানের বক্তব্যের শেষ ক্রাক্স টাকে আক্রমণ করা যাছে। সেটা হল এই পরিস্থিতি সমাজে উদ্ভব হচ্ছে যেখান মেয়েরা অনেকে এই পেশা বেছে নিছেন। কখনো সোশাল প্রোটেকশন নেই বলে, কখনো স্রেফ পরিবারে অত্যাচারিত হয়ে, কখনো নারী পাচারের চক্রে পড়ে গিয়ে, কখনো হয়তো অনাহার বা অন্যান্য ব্রিত্তির অভাবে, হয়তো কোন পারিবারিক অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতা থেকে। সকলের জন্য কাজের অধিকার , শিক্ষার অধিকার, বাসস্থানের অধিকার, খাদ্যের অধিকার, পরিধেয়র অধিকারের স্বীকৃতি চাই এবং এদের প্রত্‌য়্‌কটিকেই নিশ্চিত করতে হবে ইত্যাদি সোশালিস্ট শ্লোগান ঐতিহাসিক ভাবে মনে হতে পারে দেহব্যবসার বৃত্তি টিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। সামাজিক বৈষম্যের যে বিভিন্ন সূত্র থেকে দেহব্যবসা চয়েস থাকছে না (মালয়েশিয়া প্রসঙ্গে বলেছিলাম) অনেক সময়েই বাধ্য বাধকতা হয়ে যাচ্ছে, ( The bourgeoisie has torn away from the family its sentimental veil and has reduced the family relation to a mere money relation ... Marx ) সেই বৈষম্য কে চ্যালেঞ্জ জানানোর রাজনীতি টা গত দু শতকের কনটেক্সটে 'সোশালিস্ট'। অতএব আমার কাছে সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক নাগরিক অধিকারের বৈষম্যের অবসান চাওয়ার যে সোশাল জাস্টিসের ব্রড রাজনীতি তার সঙ্গে যৌনকর্মীদের পেশার স্বীকৃতির রাজনীতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। স্ববিরোধ বিশেষ কিছু নেই, তার মূল কারণ অর্গানাইজ্‌ড পলিটিক্সের মূল্য ডিসেন্টের এই দুটো আর্টিকুলেশনকেই বুঝতে হচ্ছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এস্ট্যাবলিশমেন্ট হয়ে উঠছে সাধারণ শত্রু।
  • shrabani | 124.30.233.101 | ১২ মে ২০০৮ ১৬:৪৭396106
  • এই টইতে আলোচ্য সব বিষয়বস্তু গুলিকে উইমেন'স ইস্যু আখ্যা দেওয়াটা মানতে পারলামনা। কন্যা ভ্রুণ হত্যা, ধর্ষণ এসব কি শুধুমাত্র মেয়েদের ইস্যু ? মনে হয় যেন মেয়েরা মিলে একজোট হয়ে এইসব আলোচনা করবে আর মহান পুরুষেরা তাদের উৎসাহ দেবে ফাঁকে ফাঁকে তঙ্কÄ/তথ্য গুঁজে দিয়ে (অবোধরা এত গুঢ় তঙ্কÄকথা সব সময় না জানতে বা সঠিক জায়গায় না লাগাতে পারে, তাই আর কি!) - এই ধারনাটা এতই মহান, কি আর বলব। খেয়াল করবেন এগুলো একান্তই আমাদের, মেয়েদের মাথাব্যাথা, তবু আহা ওনারাও এনিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে থাকেন!
    আমরা এখানে যারা আছি তারা বেশীরভাগই সমাজের এলিট অংশকে রিপ্রেজেন্ট করি, আমরা যে যার নিজের মত করে এমন কিছু সমস্যা কে বুঝতে চেষ্টা করছি যার সঙ্গে আমাদের প্রত্যক্ষ পরিচয় কেবলমাত্র লেখা রিপোর্ট তথ্য এইসবএর দ্বারা।
    মেয়েরা বা ছেলেরা যেই হোকনা কেন যখন লেখাপড়ার সুযোগ পায়, রোজগারের সুযোগ পায় তখন তাদের সমস্যার মোকাবিলা তারা নিজেরাই করতে পারে, আমাদেরই মত। তাই মেয়েদের ইস্যু বলে এসব কে আলাদা ভাবে ট্রিট না করে রুট কজ টা অর্থাৎ সমাজের কোন sphere এ সার্বিক পরিবর্তন বা উন্নতি হলে আপনাআপনিই এসব সমস্যা কমে যাবে সেটা চিন্তাভাবনা করা ভালো কারন পিছিয়ে থাকা ছেলেদেরও সমস্যা কিছু কম নেই।
    যে মেয়েটি পড়াশোনা করে রোজগার করে, আত্মবিশ্বাসী, সংসারে সফল সে কখোনই তার নিজের মেয়ে হলে অখুশী হবেনা আর তার ছেলের বউকে অন্যরকম দেখবে না। এবার কথা হচ্ছে এরকম মেয়েদের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যায়, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি এটি একটি বিচ্ছিন্ন মানুষের সমস্যা, সামাজিক ইস্যু নয়। যে মেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন হয়েও বাড়ীতে শাশুড়ীর বা বরের হাতে নির্যাতন সয় চুপচাপ সমাজের কথা ভেবে তার শিক্ষা তার মানে বৃথা, যা আত্মপ্রত্যয় দেয়না, সে শুধু পরীক্ষা পাসের শিক্ষা, আদতে এরা শিক্ষিতই নয় । এধরনের ছেলেও দেখা যায় যাদের আমরা বলি মেরুদন্ডহীন, মেয়েরাও এরকম মেরুদন্ডহীন হতেই পারে।
    কোনো ইস্যুকে যখন ছেলেদের বলে আলাদা ছাপ্পা লাগানো হয়না তখন মেয়েদের বলেই বা হবে কেন। সবেতেই প্রত্যেক মানুষের সমান দায়িত্ব(৫০% ইচ ও নয় ১০০%) এটা যত বেশী লোকের মগজে ঢুকবে ততই ভালো সবার পক্ষে, সমাজের পক্ষে।
  • ranjan roy | 122.168.86.174 | ১২ মে ২০০৮ ২০:০৭396107
  • বোধির সঙ্গে একমত হয়ে আমি বলতে চাই যে যৌনকর্মী দের সম্মানজনক স্বীকৃতি দেয়া আর এই পেশাকে অপ্রয়োজনীয় করে ইতিহাসের যাদুঘরে পাঠিয়ে দেয়ার সংগ্রামের মধ্যে আমিও কোন বিরোধ দেখিনে।
    আমার মতে প্রথমটি সামাজিক ডিস্ক্রিমিনেশন এর বিরুদ্ধে অল্পকালীন এজেন্ডা, আর পরেরটি দীর্ঘকালীন স্ট্র্যাটেজিক এজেন্ডা ,-এইমাত্র।
    আর ঐ পেশাকে স্বীকৃতি দিলে ক্ষমতার দুর্গে একটা গোলা পড়বে বলেই আমার বিশ্বাস।
    আমি ব্যাপারটা এই ভাবে দেখি।
    ধরুন, আমি সার্বজনিক পায়খানা-নর্দমা সাফ করতে চাইনে। এও চাইনে কি অন্য কেউ এই কাজ করুক। সুলভ শৌচালয়ের মত যদি সব জায়গায় হয়ে যায় অথবা আরো মেকানাইজড কিছু হয় আমি সর্বান্ত:করণে স্বাগত জানাব। কিন্তু, যদ্দিন তা না হচ্ছে আমি মিউনিসিপ্যালিটির মেথর কে সম্মান দেব এবং নামটা পালটে হিন্দি বলয়ের মত ""সাফাই কর্মচারি'' বলব।
  • Sudipta | 122.169.132.136 | ১২ মে ২০০৮ ২০:১৪396108
  • ইয়ে, কাল খেলা দেখতে গেসলুম কলকাতা হায়দ্রাবাদ উপ্পলের মাঠে। তো চিয়ার লিডার-দের কে বা কারা যেন বিস্কুটের প্যাকেট ছুঁড়ে মেরেছিল, তারা সব নাচ গান ছেড়ে পালিয়ে গেল। তো আমার দু-একজন বন্ধুর খুব দুক্কু হয়েচে দেখলুম। নেহাৎ দাদা-র একটা অসাধারণ ইনিংস বরাতে জুটে গেল তাই! সিকিউরিটি-র প্রসঙ্গে বলি, এরা মাঠে জলের বোতল নিতে দেয় না, কিন্তু আই টি সি আর সান ফিস্ট মিলে ফিরি তে বিস্কুটের প্যাকেট বিলোচ্ছে; আর সেগুলো উড়ে গিয়ে পড়ছে মাঠে, চিয়ার লিডার্স দের গায়ে। কি ঢপের সিকিউরিটি কে জানে! আর-ও একটা কথা মনে হল, সবাই শুধু ইডেনের নিন্দে করে, কিন্তু কেউ-ই তো কম যায় না!! তবে উপ্পলের মাঠে সৌরভ-দের সমর্থনের বহর দেখে অবাক হলুম! মনে হচ্ছিল যেন মোটামুটি ইডেনে-ই রয়েছি!!
  • Ishan | 12.240.14.60 | ১২ মে ২০০৮ ২১:৫৮396109
  • হনু/রঞ্জনদা,

    একই যুক্তি অনুযায়ী "চুরি-ডাকাতি' কেও "বৈধ' পেশা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

    প্রথমত: শ্রেণী বিশ্লেষণ করলে দেখবেন, চোর-ডাকাত সাধারণভাবে তারাই হয়, যারা শ্রেণীগতভাবে সমাজের নিচের তলার মানুষ। ঐতিহাসিকভাবে এরা বঞ্চিত, সমাজের তলানি। এবং এই পেশা বেছে নেওয়া অনেকটাই বাধ্য হয়ে।

    দ্বিতীয়ত: চুরি-ডাকাতিতে আমরা "মরালিটির স্ট্যাটাস কুয়ো কে থাপ্পড় খেতে' দেখি। "ব্যক্তিগত মালিকানা' ধারণাটাকেই থাপ্পড় খেতে দেখি।

    তৃতীয়ত: ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটাকে "স্বল্পকালীন অ্যাজেন্ডা' হিসাবেও দেখতে পারেন। আপাতত: এদের সম্মানজনক স্বীকৃতি দিন, ভবিষ্যতে দীর্ঘাকালীন মেয়াদে এই পেশাকে যাদুঘরে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। ইত্যাদি।

    তাহলে চুরি-ডাকাতিকে পেশা হিসাবে সমর্থন করবনা, কিন্তু যৌনকর্মীদের কেন করব? জবাব চাই।

    পুনশ্চ: সাফাইকর্মী আর চুরিডাকাতি/যৌনকর্মীদের প্রতিতুলনায় একটাই সমস্যা। চুরিডাকাতিকে "অপকর্ম', "অনৈতিক', "সমাজের পক্ষে খারাপ' এই জাতীয় কিছু একটা ভাবা হয়। কিন্তু সাফাই কর্মকে এগুলো ভাবা হয়না। কখনও সখনও "নিচু কাজ' ভাবা হয়, কিন্তু "অনৈতিক' বা "অপকর্ম' একদমই না।
  • kallol | 122.167.79.194 | ১২ মে ২০০৮ ২৩:৪১396110
  • ঈশেন - চুরি-ডাকাতি সোজাসুজিভাবে যার চুরি যাচ্ছে বা ডাকাতি হচ্ছে তার সম্পত্তির অধিকারে হাত দিচ্ছে। চুরি-ডাকাতি দুপক্ষের ইচ্ছায় হচ্ছে না। কেউ বাধ্য হয়ে একটা পেশাতে আসতে পারে, ধর আমার একদম চাকরী করতে ভালো লাগে না, কিন্তু আমার সংসার চালানোর জন্য এছাড়া আমার আর কোন রাস্তা খোলা নেই, তাই বাধ্য হয়ে চাকরী করি। কিন্তু যখন অপিসে খুব অনিচ্ছায় কাজ করছি তখন কি আমার অপিসের বিরুদ্ধে আমার উপর জোর খাটানোর অভিযোগ আনতে পারে কেউ ?
    তেমনি যৌনকর্মী যখন কাজ করছেন তখন তার ইচ্ছেতে এবং তার পরিসেবা যিনি নিচ্ছেন তারও ইচ্ছেতে কাজটা হচ্ছে।
    চুরি-ডাকাতির বেলা তা হয় না।
    তাই................
  • ranjan roy | 122.168.76.157 | ১৩ মে ২০০৮ ০৯:০২396111
  • ক্লাসরুমে হাত তুল্লুম বুদ্ধিমানের মত একটা কোচ্চেন করবো বোলে।মাস্টারমশাই দিলে মাথায় চাঁটি মেরে বসিয়ে । ভাগ্যিস কল্লোলের মত ফার্স্টবয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিলো। ইজ্জত বচ গয়া!
    চুরি-ডাকাতিটা রাষ্ট্রের উৎপত্তির দিন থেকে ক্রিমিনাল অফেন্স। সব দেশে। কারণ এটা ব্যক্তির শরীর ও সম্পত্তির ওপর আঘাত।
    কিন্তু যৌনপেশা? যুগে যুগে? ওয়ার্ল্ড কাপে নাকি একটি সংস্থা সরকারী ভাবে বড়সংখ্যায় যৌনকর্মীদের নিয়ে পরিষেবার বন্দোবস্ত করেছিলো?
    বোধি, কিছু বল?
  • Ishan | 12.240.14.60 | ১৩ মে ২০০৮ ০৯:৪৬396112
  • সম্পত্তির অধিকারটা ফ্যাক্টর নয়। চুরিতে "ব্যক্তিগত সম্পত্তি' ধারণাটি লঙ্ঘিত হয়। আর যৌনকর্মে "ব্যক্তিগত যৌনতা'।

    ডিটেলে লিখব। কিন্তু "স্বেচ্ছা'য় পয়েন্টটা নিয়ে বোধি কি বলে জানার জন্য অপেক্ষা করছি।
  • dri | 75.3.201.43 | ১৩ মে ২০০৮ ১২:৩৪396113
  • ব্যাঙ্কে কিছু টাকা জমেছে তাই। নইলে আমি চুরি ডাকাতি লিগালইজ করার ফরেই বলতাম।
  • r | 198.96.180.245 | ১৩ মে ২০০৮ ২০:২৩396114
  • চুরিডাকাতি, প্রহার ও ধর্ষণ- "ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার", "ব্যক্তিগত শরীরেরের অধিকার" ও "ব্যক্তিগত যৌনতার অধিকারের" উপর আঘাত- অতএব অনৈতিক ও বেআইনী। কিন্তু যৌনকর্ম, যদি তার সাথে কোনোরকম বলপ্রয়োগ ও অত্যাচার (শারীরিক, আর্থিক ও মানসিক) জড়িত না থাকে, তা "ব্যক্তিগত যৌনতা"কে লঙ্ঘন তো করেই না, বরং "ব্যক্তিগত যৌনতার" ধারণাকেই স্বীকৃতি দেয়। একজন মানুষ তাঁর সম্পত্তি, শরীর, মেধা ও যৌনতা অবাধে ব্যবহার ও বিক্রয় করতে পারবেন, তৃতীয় কোনো ব্যক্তির ক্ষতি না করে- খুব বেসিক ধারণা। যদি না ঈশেন এর মধ্যে কোনো কনভলিউটেড তঙ্কÄ হাজির করে।
  • ranjan roy | 122.168.76.157 | ১৩ মে ২০০৮ ২১:৪৭396115
  • রঙ্গনকে ডিটো!!!
  • Ishan | 12.163.39.254 | ১৪ মে ২০০৮ ০০:২৯396117
  • এক। "ব্যক্তিগত সম্পত্তি' এবং "ব্যক্তিগত যৌনতা' এরা একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যক্তিগত যৌনতার প্রয়োজন হয়েছে ব্যক্তিগত সম্পত্তির উদ্ভবের কারণে। "আমার' সম্পত্তি, কনসেপ্টটা যখনই আসে, তখনই আসে সম্পত্তির উত্তরাধিকারের প্রশ্ন। "আমার' ছেলে/মেয়ে, "আমার' সন্তান ইত্যাদি আইডেন্টিফাই করার প্রয়োজন পড়ে। না করতে পারলে আর "আমার' সম্পত্তি কাকে দিয়ে যাব, ইত্যাদি। অতএব, সম্পত্তি এবং তার উত্তরাধিকারের জটিল প্রশ্নটির সমাধানের জন্য বাজারে আসে "একমুখী যৌনতা', "বিবাহ' ইত্যাদি প্রভৃতি।

    এর অনেকরকম জটিলতা স্থান কাল পাত্রে আমরা দেখেছি। যথা একটি পুরুষ অনেক নারী, বা একটি পুরুষ একটি নারী, বা মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পত্তি যেখানেই আছে, সেখানেই সন্তান "কার' এটা চিহ্নিত করার একটা ব্যবস্থা রাখতে হয়েছে। সে কারণেই রেস্ট্রিকটেড যৌনতার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।

    যৌনকর্মকে যে, সামান্য কিছু ব্যতিক্রম সহ যুগে-যুগে "অনৈতিক' হিসাবে দেখা হয়েছে, তার কারণ এইটাই, যে, মূলত: এটি "ব্যক্তিগত সম্পত্তির উত্তরাধিকার চিহ্নিতকরণ' প্রক্রিয়াটিকে আঘাত করে। অতএব, "জনপদবধূ' কনসেপ্টটি ইন জেনারাল, ঘৃণ্য, ও অনৈতিক। সমাজের দৃষ্টিতে। এরা আছে, থাকে, কিন্তু ব্রাত্য। ব্রাত্য একটি মাত্র কারণেই, যে, একমুখী যৌনতা এবং, বেসিকালি ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণাকেই এটি আঘাত করে।

    একই ভাবে, চুরি-ডাকতিও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণাকে আঘাত করে। এই ব্যাপারে সমাজের বিচারে "যৌনকর্মী' দের সঙ্গে "চোর' এর বিশেষ তফাত নেই।

    দুই। কিন্তু তফাত একটা আছে। সেটা হল "স্ব ইচ্ছা'র প্রশ্ন। চোর কারো পারমিশন নিয়ে চুরি করেনা। কিন্তু যৌনকর্মীরা কোথাও জোর ফলান না। দুটি মানুষ "স্ব ইচ্ছা'য় একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়। প্রেমের বদলে সেখানে ড্রাইবিং ফ্যাক্টর হল টাকা।

    চুরির সঙ্গে তাহলে যৌনকর্মের ডিমার্কেশন লাইনটা একটাই। "স্ব ইচ্ছা'। "ফ্রি উইল'। এটা মেনে নিতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু মেনে নিলে যে সমস্যায় পড়াঅতে হবে, সেটা শুধু বিবৃত করছি।

    "স্ব ইচ্ছা'কে বা "জোর না ফলানো' কে যখনই আপনি একটি সঠিক-বেঠিক নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হিসাবে মেনে নিলেন, তখনই আপনি ইকুয়ালিস্টদের একটি কঠিন প্রশ্নের সামনে পড়বেন। যে, "স্বইচ্ছা' বলতে কি বোঝো? এ ব্যাপারে অনেকগুলি পয়েন্ট এখানে উঠে এসেছে। যথা ভ্রূণহত্যা। একটি মেয়ে যখন নারীভ্রূণহত্যা করে, তখন "স্ব ইচ্ছা'য় করে। কিন্তু আসলে সেটা স্ব ইচ্চা নয়, পুরুষতন্ত্রের চাপ ইত্যাদি। একই ভাবে, একটি মেয়ে যখন যৌনকর্মী হয়, তখন স্ব ইচ্ছায় সেটা করলেও, আসলে সেটা স্ব ইচ্ছা কি? পুরুষতন্ত্রের শোষণ টোশন নয় তো? ইত্যাদি। (এই লজিক টা বাড়ালাম না, কারণ আগেই আলোচনা হয়েছে)।

    অতএব, "স্ব ইচ্ছা' কে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আপনারা ঘাড়ে এনে ফেললেন, সেই প্রশ্নটিকে, যা এতক্ষণ আমার উপর বর্ষিত হচ্ছিল। যে, "স্ব ইচ্ছা' কে কতটা গুরুত্ব দেব এবং কেন?

    প্রশ্ন গুলো পয়েন্টের আকারে রাখলে এরকম দাঁড়াবে:
    ১। "জোর না ফলিয়ে', "স্বেচ্ছায়' কোনো কিছু করার রাইটকে যদি সমর্থন করতে হয়, তাহলে, "স্বেচ্ছা'য় কোনো মেয়ে যৌনকর্মী হলে যেকোনো অবস্থায় তার সেই রাইটকে মেনে নিতে হয়। মানে, "বাধ্য হয়ে করছে' নয়, "স্বেচ্ছায়' করছে, বেশ করছে, অতএব এটি বৈধ, এই স্ট্যান্ডে পৌঁছতে হয়। সেটায় আসছেন কি?

    ২। "স্ব ইচ্ছা' এবং "জোর না ফলানো' কে ডিটারমাইনিং ফ্যাক্টর করলে দময়ন্তী যে কটি প্রশ্ন তুলেছিল, তার প্রতিটির উত্তর দেবার দায় আপনার উপরে আসছে। যথা "স্বেচ্ছায় কন্যাভ্রূণহত্যা'। "স্বেচ্ছা'য় করা হলে আপনি এটিকে/এদেরকে সমর্থন করবেন কি?

    ৩। এইটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, যেহেতু আমরা মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে আলোচনা করছি। মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গীতে "ফলস কনসাসনেস' একটি বড়ো জায়গা জুড়ে আছে। মানে ধরুন, শ্রমিক যখন সংগঠিত নয়, তখন সে অচেতন, "স্বেচ্ছায়' সে বুর্জোয়াদের সমর্থন করলেও আসলে ফলস কনসাসনেসের শিকার। সে অচেতন।
    প্রশ্নটা হল, এই ফলস কনসাসনেসের ধারণার মধ্যে আপনি "স্ব ইচ্ছা' কে কিকরে অ্যাকমডেট করবেন?

    এই হল তিনটি প্রশ্ন। ভুল বোঝাবুঝি হবার আগে বলে রাখি, কল্লোলদা, রঞ্জনদা, বা রঙ্গনের সঙ্গে মোটামুটি আমি একমত। কিন্তু যেহেতু মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গীকে আপনারা সমর্থন করছেন, তাই,এই স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে এই প্রশ্নগুলো উঠবেই, আপনাদের উত্তরগুলো দিতে হবে। সেখানে আমি সহযাত্রী নই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত প্রতিক্রিয়া দিন