এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • চিয়ারলিডার বা সুড়সুড়ি বা খেলা বা রাজনীতি

    Ishan
    অন্যান্য | ২৯ এপ্রিল ২০০৮ | ১৯৩৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 122.168.77.157 | ০৮ মে ২০০৮ ১৪:৩৩396018
  • পিনাকী বারবার একটি প্রশ্ন তুলেছেন- objective truth বলে আদৌ কিছু আছে কিনা?
    মনে হচ্ছে এটা উনি ছদ্ম-চেতনার প্রসংগে তুলছেন।
    অর্থাৎ, চেতনাকে মাপার যদি বস্তুগত কোন কষ্টিপাথর না থাকে, তাহলে কি করে কারো চেতনাকে ""ছদ্ম '' বলা যাবে?
    আর তা না হলে তো যার-যেমন-মন-লয়- সে-তেমন গোছের চরম স্বেচ্ছাবাদ হবে।

    আমার মনে হয়-- absolute truth নেই, কিন্তু objective truth আছে। তবে সেটা প্রকাশ পায় a series of summation of relative truth এর মধ্যে দিয়ে।
    কারণ cognition of truth ও হয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশেষের( দ্রষ্টার) দেখার চশমার মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হয়ে। ফলে যেই কোন ফেনমেনন কে আমরা "" ভাল'' কি ""মন্দ'' এই সব value judgement দিয়ে বিভূষিত করবো তার বেসিস ডেমোক্র্যাসি বা সাম্যবাদ ইত্যাদি পরকলা হবে।
    এই প্রশ্নে ঈশানের বক্তব্য ভ্যালিড।
    উদাহরণস্বরূপ, তিব্বতিসমস্যার সুতোয় যখন কথা উঠলো যদি অধিকাংশ মহারাষ্ট্রবাসী মনে করে ওখানে শুধু মারাঠীভাষাভাষীরাই থাকবে(false consciousness?) তখন কি করবো?
    বা অধিকাংশ পাকিস্তানী ভারত সম্বন্ধে কি ভাবে, অথবা অধিকাংশ ভারতীয়ের পাকিস্তানীসমাজ সম্বন্ধে কি ধারণা?
    যাকগে, ছুটি নিয়ে বাড়ি বসে আছি, ফলে মূলপ্রশ্ন থেকে সরে গিয়ে ভাট বকছি। সরি!
  • san | 220.226.13.45 | ০৮ মে ২০০৮ ১৫:০৫396019
  • রঞ্জন দা আর পাই কে :

    বিবাহিতা চাকুরিরতা মেয়েরা ঘরে আর বাইরে দুভাবে অপ্রেসড হলে, হয় মেয়েটির নিজের মায়া/ভালোবাসা বেশি নয় তার নিজের সাহসের অভাব। কেউ নিজে পুরুষটির উপরে প্রচন্ড ভালোবাসা দেখিয়ে বাইরের প্লাস সব ঘরের কাজ করে খেটে মরলে, সেটা তার চয়েস - খামোখা সহানুভূতির কিছু নেই।অনেকেই করেও থাকেন সেটা অপ্রেসনই নয়।আর পরেরটা হলে একটু রুড ভাবেই বলছি, এটা মেয়ে বলেও না, ঘরের কাজ করা বলেও না - জীবনের সব ক্ষেত্রেই নিজেকে অ্যাসার্ট না করতে পারলে লোকে ভুগবে , যার মেরুদন্ডের অভাব সে ভুগবেই - এর জন্য আলাদা করে আহাউহু করার কি আছে?

    নিজেকে অ্যাসার্ট করার পিছনে যাতে একটা স্ট্যান্ডিং থাকে তাইজন্যই সক্কলে রোজগার করুক এই বলে তথাকথিত ফেমিনিস্টরা লড়ে থাকে - কিন্তু ঐ অব্দিই - তার পরে নিজে চরে খাবে ব্যাস ।কেন ছেলেটি ঘরের কাজকে সম্মানজনক মনে করলো না ,কেন সেই সাংস্কৃতিক পরিবেশ নেই - এইসব কথা বললেও কিন্তু মেয়েটির নিজের দায়কে অস্বীকার করা যায়না। আমি অপ্রেসড হবো কিনা সেটাও সেই যদি অন্যের দাক্ষিণ্যের উপরেই আমি ছেড়ে দিলাম তাহলে তো আবার ব্যাক টু স্কোয়ার ওয়ান।
  • Suvajit | 58.168.42.141 | ০৮ মে ২০০৮ ১৭:৪৪396020
  • এই গুরুগম্ভীর আলোচনার মধ্যে, এই লিংকটাও থাক। http://www.anandabazar.com/8khela1.htm সুভাষবাবুর আপত্তি ওঠায়, ইডেন গার্ডেন্সে রবীন্দ্র জয়ন্তী করছে শাহরূখ খান। (আগের পোস্টে এই সম্ভাবনার কথা বলেছিলাম) নাচ, গান সব হবে, শুধু শাহরূখের রবীন্দ্রসংগীতের সংগে নাচটা বাদ গেছে।
    ভাবা যায় !

  • hanu | 125.18.104.1 | ০৮ মে ২০০৮ ১৮:৩০396021
  • সব সময়ে অপ্রেসন ব্যক্তির উপরে নির্ভরশীল নয়। যারা অপ্রেসড হন, তাঁদের বেশির ভাগ লোক ই অনিচ্ছায় অপ্রেসড হন। এটা ফ্যাক্ট। ইচ্ছা উপস্থিত থাকলে সেটাকে অপ্রেসন নাও বলার ইচ্ছে অনেকের হতে পারে!

    চারিদিকে আর্থিক ও মরাল ইকুয়ালিটি আসিয়া গিয়াছে, ইকুআলিটি -ই মূল ধারা, অতএব আসুন ইকুআলিটি ইকুয়ালিটি কে আক্রমণ করি এবং ইকুয়ালিটির সঙ্গে কনসেন্ট নির্মান বা রেগুলেটরি পাওয়ারের অলমোস্ট পারফেক্ট ইকুয়েশন, ইশানের এই প্রোজেক্টের বিরোধিতায় স্বভাবতই কিছু কথা বলার ছিল। আরো গুরুঙ্কÄপূর্ণ কথা কিছু বলার ছিল। গুরুঙ্কÄপূর্ণ মানে আমার কাছে। পুরুষ হিসেবে নারীবাদ সমূহের ডিফেন্সে নামা টা একটু আনসলিসিটেড প্রোজেক্ট তাই দেরি করছি! তবে এখন ইশান ও অন্যান্য দের কথা মন দিয়া শুনতাছি। তাই আমার বক্তব্য পরে জানাবো।

    মেথডের ব্যাপারে আমার একটি ই কথা বলার আছে, আর্ট অফ এথিকাল লিভিং স্টাইলে প্রতিটি কেস স্টাডি দিয়া ইশানকে বা স্যানকে বা পিনাকি কে প্রশ্ন করা যায় ঠিক ই কিন্তু ইন্ডিভিজুয়াল কেস স্টাডি র সমস্যা হল শেশমেশ ভ্যালু জাজমেন্টের উত্তর হয়, ফলে অনেক ধরণের উত্তর হয়। অতএব এই স্টাইল ব অমেথডের প্রেমাইসের মূল উদ্দেশ্য, কাউন্সেলিং এর ন্যায় নির্দিষ্ট কেসের প্রাকটিকাল সমাধান ইত্যাদি, সেইটা ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

    অতএব শুনছি আপাতত। ইশান মাঝে মাঝেই গোলপোস্ট বদলানোয় একটু বেশি সময় লাগছে শুনতে।
  • rimi | 24.214.28.245 | ০৮ মে ২০০৮ ১৮:৩৩396022
  • স্যান, ভালো লিখেছ। তবে এখানে একটা ব্যপার। নিজেকে অ্যাসার্ট করতে গেলে অনেক সময়েই অনেকের আজন্মলালিত বোধ ও সংস্কারকে আঘাত করতে হয়। তার ফলে অনেক সময়ে প্রচুর অশান্তির সম্ভাবনা থাকে। সেটাকে এড়ানোর জন্যেও অনেক মহিলা (বা পুরুষ, তাঁর নিজের পরিবারের অনেক অন্যায় দাবী) অনেক কিছু মেনে নিতে বাধ্য হন।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ২০:৫৮396023
  • স্যান, মেয়েটির নিজের দায়কে কেউতো অস্বীকার করেনি।
    বেশ কিছু দিন আগেই এনিয়ে কথা হয়ে গেছিলো, এখানেই বোধহয়, ax র সেই পরিবারে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এখোনো থাকা discrimination নিয়ে। আর সেখানে এটাই বলা হয়েছিলো, এটা কাটাতে মেয়েটির নিজেকে assert করাটা কত জরুরী। কিন্তু অন্য পক্ষ থেকে discrimination অন্যায় এই বোধটা আসা ও ততটাই জরুরী। আর, সেটা assertion এর চাপ এ বাধ্য হয়ে মেনে নেওয়া নয়, মেনে না নেওয়াটা ঠিক না, এই জায়গা থেকে মেনে নেওয়া।

    কেউ শুধু ভালোবাসা দেখিয়ে ঘরে ও বাইরের কাজ করে খেটে মরলে, তাই নিয়ে তো কেউ খামোখা নাক গলাতেও যাচ্ছেনা। তাকে বোধহয় কেউ সহানুভূতিও দেখায়নি।

    কিন্তু কারুর কোনো কাজ যদি একটা পারিপার্শ্বিকের expectation দিয়ে কন্ডিশন্ড হয় (সেটা হয়না, তা তো অস্বীকার ও করা যায় না), সেটা নিয়ে অবশ্যই বলার থাক্বে।

    কিন্তু এতে করে মেয়েদের দ্বারাই ঘরের কাজ টা স্বাভাবিক , এই

    বাইরে কর্মরত একটি মেয়ে নিজেকে assert করেই শারীরিকভাবে নিজে ঘরের কাজ না ই করতে পারে, কিন্তু মেয়েদের দ্বারাই ঘরের কাজ টা করা স্বাভাবিক এই ধারণাটি থেকে যে expectation তৈরি হয়, সেটার একটা চাপ আছে তো, সে চাপের কাছে নতিস্বীকার না করলে ঘরেতে physical labour দানের অপ্রেশান এর হাত থেকে হয়তো বেঁচে যায়, কিন্তু মানসিক চাপ ? কেউ don't care বলে সেই চাপ ও কাটিয়েই দিতে পারে, কিন্তু তাতে করে চাপ থাকাটা কে অস্বীকার করা যায়না আর চাপ না থাকার মতো পরিস্থিতি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাকেও।

    আর এখানেও, মেয়েটি র assertion এর চাপ এ লোকজন বাধ্য হলো মেনে নিতে, মন থেকে মেনে বা না বুঝে,মন এ সেই নিয়ে grudge চেপে রেখে, সেটাই বা কোন কাজের কথা!

    পরিস্থিতি , মানসিকতা গড়ে তোলার জন্য দুটো জিনিষ ই সমানভাবে দরকার। মেয়েটি র নিজের দিক থেকে assertion, ও সমাজের দিক থেকে ধারণা বদল।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ মে ২০০৮ ২১:২৪396024
  • হনুবাবু যদি অকারণে গোলপোস্টের সন্ধান না করে, ফর আ চেঞ্জ, দুটি সোজা প্রশ্নকে অ্যাড্রেস করতেন, তাহলে, আমার মতে, বেটার হতো। প্রশ্নগুলি পূর্বেই উত্থাপিত। তবুও আরেকবার লিখে দিই।

    এক। ইকুয়ালিস্ট মার্কসিস্ট সারপ্লাস ভ্যালু তত্বে নারীর গৃহশ্রমকে কোথায় রাখবেন?
    দুই। ঐ ঐ ঐ তত্বে যৌনকর্মীর শ্রমকে কোথায় রাখবেন?

    এই দুটি স্যাম্পল প্রশ্নের উত্তর না পেলে ইকুয়ালিটিকে খেলাধুলোর একমাত্র ফর্ম হিসাবে মানা যাচ্ছে না যে। :)

    বাকি কথায় পরে আসছি। মিটিং এর এপিডেমিক শেষ হলে।
  • san | 220.226.7.24 | ০৮ মে ২০০৮ ২২:২১396025
  • ঈশান তুমিও কিন্তু পরের ধাপে যাবার আগে দুটো সোজা প্রশ্নের সোজা উত্তর দিয়ে যেও :

    ১) রাইট টু বি ডিফারেন্ট গল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে যে মেয়েরা গৃহবধূ হয়ে থাকতে প্রেফার করবে , দুর্ঘটনায় - অর্থাৎ মৃত্যু বিচ্ছেদ প্রতারণা - এইসবে তাদের অসহায়তাকে কিভাবে ট্রিট করা হবে সেই আদর্শ সমাজে?

    ২) সম্মান আর স্বাধীনতা তো এক জিনিস নয়। ঈশানের বলা সেই মধ্যবিত্ত মাসিপিসিদের নাহয় সম্মান ছিলো , কিন্তু স্বাধীনতা কতটুকু ছিলো - নিজের জীবনের কতগুলো ডিসিশন তাঁরা নিজেরা নেবার সুযোগ পেয়েছেন? পরিণত বয়েসে সংসারের ব্যাপারে 'শেষ কথা' হওয়া আর নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জীবনের শুরুতে নেবার ক্ষমতা আদৌ এক নয়। আর পৃথিবী চলে টাকায় - যাতে রোজগার হয়না তাতে সম্মান আসতেও পারে , কিন্তু স্বাধীনতা কিভাবে আসবে? সংসারের আর্নিং এর সে হকদার ঠিকই কিন্তু অন্য কেউ সেটা জেনারেট করে দিলে তবেই - এইটা তে স্বাধীনতা কোথায়? বা কতটুকু?
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ মে ২০০৮ ২৩:১৭396026
  • ১। আদর্শ কেন, অনাদর্শ সমাজেও এগুলো ট্রিট করা হয় তো। বিচ্ছেদে বৌ খোরপোশ পায়। প্রতারণাও এর একটা সাবসেট। মৃত্যুতে বৌ চাকরি পায়। মানে পাবার কথা। আইডিয়ালি। এগুলো তো চালু ব্যবস্থা।

    ২। ঠিক কথা। সম্মান আর স্বাধীনতা এক জিনিস না। নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেবার সুযোগ এমনিতেই মানুষের খুব কম। সেটার বিভিন্ন ফর্ম আছে। চাকরি করা, বা করতে বাধ্য হওয়াটাও এক ধরণের অধীনতা। "তোমাকে শক্ত হতে হবে', "পুরুষের মতো খুঁটে খেতে হবে', এইটাও অধীনতা। এই বিভিন্ন ধরণের অধীনতা নিয়েই তো চলা। মেয়েদের গুলো ও এক ধরণের অধীনতা। আবার এর প্রত্যেকটাই এক ধরণের পাওয়ার দেয়। ক্ষমতা দেয়।

    আমার বক্তব্য হল, একজন মানুষকে, অপশন দিতে হবে, যে, সে, কোনটা চায়। চাকরি করে, চাকরির অধীনতার বিনিময়ে অর্থনৈতিক পাওয়ার চায়? নাকি চাকরিহীন স্বাধীনতা চায় অন্য রকম অধীনতার বিনিময়ে? এই দুটো অপশনই খোলা না থাকলে তার সেগুলো দাবী করার রাইট আছে। তার অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পক্ষে গলা ফাটানোর রাইট আছে। সোজা বাংলায় "অর্থনৈতিক স্বাধীনতা'র দাবীতে আমি তোমার সঙ্গে একমত। যে, এটা চাই।

    কিন্তু এর পরেও, কেউ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, আমি চাকরি করবনা। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আমার চাইনা। বাড়িতেই ভালো আছি। তিনিই তাঁর মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাঁকে "শোষিত' বলার কোনো রাইট আমার নেই।

    একই ভাবে, আমি, একটি পুরুষ, বাড়িতে বসে থাকার রাইট চাইব। না পেলে আমিও "আমার হোম মেকার হবার অধিকার নেই' বলে চেঁচাব। আমার সেই রাইট আছে। ইত্যাদি।

    বোঝাতে পারলাম কিনা জানিনা। "অপশন' গুলো চাইবার পক্ষে যেকোনো রকম মুভমেন্ট, আন্দোলন, আলোড়ন, ইত্যাদিতে আমার সায় আছে। কিন্তু ঐ অপশনটা নিতে বাধ্য করায় নেই। ঐ অপশনটাই একমাত্র অপশন, বাকিগুলি জালি, এই কথা কেউ বললে আমি তার সঙ্গে একমত নই।
  • arjo | 168.26.215.54 | ০৮ মে ২০০৮ ২৩:২৬396029
  • আচ্ছা মার্ক্স কি এ সম্বন্ধে আদৌ কিছু বলেছেন? ওনার মতে তো ফিমেল অপ্রেসন ও ক্লাস অপ্রেসন থেকেই শুরু হয়। ক্লাস অপ্রেসন শেষ হলে ম্যাজিকের মতন ফিমেল অপ্রেসন ও উধাও হবে। কি করে হবে সে সম্বন্ধে উনি কি কিছু বলেছেন।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ২৩:২৬396028
  • সেটাই, স্বাধীনতা কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই নেই বা ছিলো না, যেজন্য একটি স্বনির্ভর চাকুরিরতা র জীবন তাঁদের অনেকের কাছেই ভীষণ empowerment এর প্রতীক।
    এনারা অনেকেই হয়তো নিজেরা গৃহবধু হওয়াটা prefer করেছেন, সেরকম স্বাধীনতা নেই জেনেই ঘরে থাকা বেছে নিয়েছেন, মানে ঐ ঈশানবাবুর কথায় 'শেষ বিচার' তাঁরাই করেছেন, কিন্তু এটার মানে এই নয়, স্বাধীনতাহীনতা টাকে prefer করে করেছেন।
    preference এর জন্য আরো অনেক factor থাকতেই পারে, যেগুলো হয়তো স্বাধীনতা ( বা আরো অন্য কিছু) aspect কে outweigh করে দিয়েছে, যেজন্য তাঁরা নিজেদের শোষিত বলে claim করবেন ও না। কিন্তু সেজন্য আপনার থিওরি অনুযায়ী এই শোষণের জায়গা নিয়ে বলার দরকার নেই, এমনটি ও হয়ে যায় না।

    স্বাধীনতা র দাবীটুকুর ন্যায্যতা স্বীকার না করে সম্মানজনক বলার মানে হয়না।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ২৩:৩৭396030
  • *ন্যায্যতা টা প্রয়োজনীয়তা হবে।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ২৩:৫৪396031
  • ঈশানবাবু, বাড়িতেই ভালো আছি আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আমার চাই না এদুটো কথা একসাথে না ই আসতে পারে।

    আর বাড়িতে থেকেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তো পাওয়াই যেতে পারে, যে রোজগার হছে তাতে গৃহবধূ র পুরো অধিকার রইলো। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই তা হয়না।
    আর আমার মনে হয়না সেটা পাওয়াটা কোনো মেয়ে স্বাগত জানাবে না বা এই স্বাধীনতাটুকু, বা কোনো এক জায়গায় ইক্যুয়াল হয়ে ওঠাটা তার 'রাইট টু বি ডিফারেন্ট' কে হরণ করে নেবে !
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৮ মে ২০০৮ ২৩:৫৯396032
  • ১) প্রথম কথা গৃহশ্রমে পণ্য তৈরী হয় না - অতএব তা শ্রম নয় - এটা মার্ক্স এর কোন লেখায় আছে জানানো হোক। মার্ক্সবাদীদের নানাবিধ ফর্মূলেশনের দায় অযথা লোকটার উপরে চাপানো হচ্ছে না তো?

    ২) আমি আমার বামপন্থী রাজনৈতিক প্র্যাক্টিসে অনেক এসেন্সিয়ালিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছি। কিন্তু গৃহশ্রমের বিষয়টা যে পুরুষ ও নারীর ভাগ করে নেওয়ার বিষয় - এটা অন্তত আদর্শগত জায়গা থেকে কোন নেতাকে বিরোধ করতে শুনি নি। এর জন্য তাঁদের ইক্যুয়ালিস্ট মার্ক্সিস্ট অবস্থান ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে, এরকম-ও নয়। ইন ফ্যাক্ট ঈশান এখানে যে সল্যুশন প্রেসক্রাইব করেছে সেটার মধ্যে আমি র‌্যাডিকাল এমন কিছু পাই নি - যার সাথে মার্ক্সিস্ট অবস্থানের মৌলিক পার্থক্য আছে। ঈশান বলেছে গৃহশ্রম কে সম্মান দিতে হবে। ব্যাস, এইটুকুই। আমি অন্তত: যে স্কুলিং এ মার্ক্সিস্ট চর্চা করেছি - সেখানে এই সম্মান দেওয়া হত। তাঙ্কিÄকভাবে এটা শ্রম নয় - এরকম কোন ফর্মূলশন শুনি নি। প্রয়োগেও অন্তত: চেষ্টাটা করা হত। সবসময় পারা যেত না। প্রতিটা মানুষের-ই জীবন ধারণ করতে নিজের জন্য একটা পরিমাণ শ্রম দিতে হয়। তার মধ্যে নি:শ্বাস নেওয়া, পায়খানায় যাওয়া এগুলো-ও পড়ে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এগুলোতে পণ্য উৎপাদন হয় না। একটা বাড়ী নিয়ে থাকলে এর সাথে আরো কিছু শ্রম বাড়ে - maintainance related। দুজন থাকলে গোটা কাজটা দুজনে ভাগ করে নেওয়া উচিৎ, কারণ এটা আসলে নিজেরই বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শ্রম।গৃহশ্রম মানে এর চেয়ে বেশি কিছু কি? আমি যদ্দূর বুঝেছি আমাদের নেতারা ব্যপারটাকে এভাবেই বুঝত। এবং তাতে করে তাদের খুব অমার্ক্সিস্ট হতে হয়েছে এমন নয়। আমি জানি না, অন্য কোন স্কুলিং এ অন্য কিছু শেখানো হয়ে থাকতে পারে।
  • arjo | 168.26.215.54 | ০৯ মে ২০০৮ ০১:৪৬396033
  • আর একটা প্রশ্ন মাথায় এলো। অনেক আগে যখন সতীদাহ হত, অনেক সময়েই শোনা যায় মেয়েটি নিজের ইচ্ছেয় সতী হচ্ছে। কেন না, স্বামীর সাথে সগ্গে যাবে। নিজের ইচ্ছেয় নেওয়া সিদ্ধান্ত। অতএব এমপাওয়ার্মেন্ট কি?

    ডি: অন্য কেউ করে থাকলে আর উত্তর দিতে হবে না। উত্তরের লিংকটি দিলেই হবে।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৯ মে ২০০৮ ০৩:২৭396034
  • পাই এর আগের পোস্ট সম্পর্কে:

    ধরুন একজন মা কন্যাভ্রূণকে হত্যা করছেন। দুটো কারণে হতে পারে। এক। গায়ের জোরে করানো হচ্ছে। অথবা, দুই। স্ব ইচ্ছায় করছেন।

    গায়ের জোরে করানো হলে তার বিরুদ্ধে আমরা সবাইই কথা বলছি। কিন্তু স্বেচ্ছায় হলে? প্রশ্নটা সেখানেই ছিল, যে, স্বেচ্ছায় একটি লোক বা মহিলা যদি এমন কাজ করে, যা, তার নিজের, এবং/অথবা সমস্ত সমাজের "ভালো'র উল্টোদিকে যায়, তাহলে আমরা কি স্ট্যান্ড নেব।

    এই স্পেসিফিক কেসে, "ভালো' মানে কি আমরা সবাইই জানি। নারীভ্রূণকে হত্যা করা মানে নারীদেরকে "নিচু' মনে করা। বা "সামাজের স্বাভাবিক ব্যালেন্স' এর বিরুদ্ধতা করা। আরও অনেক কারণ আছে, সেটা আমরা জানি। বিশদে যাচ্ছিনা।

    এখানে আমার পয়েন্ট হল, এই যে, "ভালো'র বোধ, এটা তো আকাশ থেকে পড়েনা। এটা পার্ট অফ দা ডিসিপ্লিনারি পাওয়ার। যা আমাদের মধ্যে ইনজেক্টেড হয়েছে। আমরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়েছি। "ভাল-মন্দ' নিয়ে ট্রেনড হয়েছি। এবং এই "ভালো'র বোধ আমাদের একরকম করে একটা পাওয়ার দিয়েছে।

    যে মহিলা কন্যাভ্রূণ হত্যা করছেন, তিনি এই ডিসিপ্লিনারি মেকানিজম থেকে এক্সক্লুডেড। এই "ভালো-মন্দের' ট্রেনিং তাঁর হয়নি। অতএব, এই বোধের যে ট্রেনিং, সেটা আপনি তাঁকে দিতেই পারেন। ভ্রূণহত্যা খারাপ, ইত্যাদি বলে আন্দোলনও তৈরি করতে পারেন, এবং, করাই উচিত। কিন্তু ট্রেনিং এর পরেও মহিলা যদি ভ্রূণহত্যা করতেই চান, তবে তাঁকে জোর করা যাবে না ইত্যাদি।

    একই কথা পণ সম্পর্কএও খাটে। আর্যর সতীদাহের সমস্যার ক্ষেত্রেও খাটে(আর্য, বিশদের জন্য আমার Date:08 May 2008 -- 03:18 AM এর পোস্টটি লক্ষ্য করুন)। যৌনকর্মীর কন্যার ক্ষেত্রে, ঠিকই বলেছেন, উদাহরণটা খাপে-খাপে মেলেনা। কারণ, সেখানে একজন নাবালিকা জড়িত আছে। ওখানে মেয়েটির উপরে সিম্পলি জোর করা হচ্ছে। যেটা জোরের কারণেই আটকানো উচিত।

    পিনাকী,

    এক। এটা মার্কসের কোনো লেখায় নেই। মার্কসে গৃহশ্রম এবং যৌনকর্মীদের শ্রমের প্রসঙ্গটাই নেই। যদ্দুর আমি জানি। এখানে যে মডেলটা দিয়েছিলাম, সেটা আমার বানানো। এই টা দেখানোর জন্য, যে, ওটা ঢোকাতে গেলে মার্কসবাদ ভেঙে পড়ে। সেটা মেনশানও করেছি, কোনো একটা পোস্টে। (একই প্রচেষ্টা কিছু ইকুয়ালিস্ট করেছিলেন, এবং সেটা ভেঙে পড়েছিল, সে কথাও উল্লেখ করেছি)। মার্কসীয় প্রথাগত ধারণা, আপনি এবং আর্য যা বলেছেন, এক্কেবারে তাই।

    দুই। র‌্যাডিকাল কিনা জানিনা, প্রথাগত মার্কসীয় ধারণার সঙ্গে আমার প্রস্তাবিত কাঠামোর একটা তফাত আছে। মার্কসবাদে পণ্য উৎপাদনকারী শ্রমগুলিকে গৌরবের আসনে বসানো হয়েছে। যারা সে শ্রম করে তারাই সমাজ-পরিবর্তনের ভ্যান গার্ড ইত্যাদি। আর যে শ্রম পণ্য উৎপাদন করে না, তাকে স্রেফ হায়া করে দেওয়া হয়েছে। যথা, যৌনশ্রম, বা গৃহকর্ম। বা শিল্পীর অনর্থক আঁকিবুঁকি কাটা।

    আমি এই "অনুৎপাদক' শ্রমগুলিকেও "সমান' মর্যাদা দেবার পক্ষে। পণ্য উৎপাদন করেনা তো কি, সমাজ বদল হোক, বা সমাজের চালিকাশক্তিই হোক, বা ভ্যানগার্ডই হোক, যাই হোক, এরাও "শ্রমিক'। প্রথাগত মার্কসবাদ তাদের এই মর্যাদা দেয়না।
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৯ মে ২০০৮ ০৫:০৪396035
  • তবে হ্যাঁ, যৌনকর্মীদের শ্রম নিয়ে আমার দেখা মার্ক্সিস্ট নেতাদের অবস্থান বেশ কনফিউজিং মনে হয়েছে। আমি যে দলটি করতাম তাদের এ নিয়ে কোন সর্বসম্মত অবস্থান ছিল না। এই ধরণের বিতর্কিত বিষয়ে আলাদা মত পোষণ করার অধিকার ছিল। কিন্তু নেতৃত্বের মূল সুরটা যেন মনে হত লিগালাইজ করার বিরুদ্ধে। যদিও তাঁরা assert করতেন না, তবু মোটামুটি যে মতামত পাওয়া যেত সেগুলো আমি রাখার চেষ্টা করছি। তবে বিষয়টা খুব হাল্কা নয়। মানে শুধু "রক্ষণশীল" বলে দিলে অতিসরলীকরণ হয়। ( এ প্রসঙ্গে বলে রাখি পোমোগণ যেভাবে মার্ক্সিস্টদের পাইকারি হারে "রক্ষণশীল" বা "মৌলবাদী" বলে গাল পাড়েন, কিছুক্ষেত্রে জাস্টিফায়েড হলেও বহুক্ষেত্রেই তা প্রয়োগ বিচ্ছিন্ন মার্ক্সবাদ পড়ার ফল বলে মনে হয় )

    ১) প্রথম যে বক্তব্যটা আমি শুনেছি (আবারও বলছি, এগুলো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের কাছে শোনা কথার সাম আপ, অন্য কেউ মার্ক্সবাদী মত বলে অন্য কিছু শুনে থাকতে পারেন) তা হল, লিগালাইজ করা বা না করার থেকেও বেশী দরকারী হল যৌনকর্মীর শ্রমকে মার্ক্সিস্টরা কি চোখে দেখবে সেটা ঠিক করা। অর্থাৎ এই শ্রমটা কি আদৌ সমাজের পক্ষে, মানবসভ্যতার অগ্রগতির পক্ষে প্রয়োজনীয় শ্রম? নাকি কোন এক নির্দিষ্ট সামাজিক বিকাশের স্তরে এরকম একটা শ্রমের উদ্ভব? উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যে বিজ্ঞানীর মেধাশ্রম পরমাণু বোমা তৈরীর কাজে ব্যবহার হচ্ছে আজকের সমাজব্যবস্থায়, সেই মেধাশ্রমকে কি সমাজের পক্ষে প্রয়োজনীয় মেধাশ্রম বলা যায়? খেয়াল করুন এখানে কিন্তু "পণ্য" বা "সারপ্লাস" উৎপাদনের নিরিখে শ্রমকে বিচার করা হল না। সমাজের বা মানবসভ্যতার বিকাশের নিরিখে দেখা হল। এবার তাঁদের বক্তব্য হল, যৌনকর্মীর শ্রমও মানবসভ্যতার বিকাশের জন্য অপরিহার্য শ্রম নয়। (কেন? সেটা ২ নং পয়েন্টে)। অর্থাৎ যদি কোন আদর্শ সমাজব্যবস্থা (মার্ক্সবাদী মতে সাম্যবাদ) গড়ে ওঠে - সেখানে যৌনকর্মীর শ্রমের কোন প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

    ২) কিন্তু কেন? তাঁদের মতে, "যৌনকর্মী" - এই পেশাটি সমাজে এল ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের অজুহাতে যখন নারীর যৌনতাকে "পরিবার" এবং "বিয়ে" নামক দুটো প্রতিষ্ঠান দিয়ে বেঁধে ফেলা হল। নারীর বহুগামীতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হল, কিন্তু পুরুষের বহুগামীতার সুযোগ রয়ে গেল। সমাজে পুরুষের অবদমিত যৌনতার পূরণের একটা চাহিদা তৈরী হল। যেখান থেকেই মূলত: এই প্রথা চালু হয় - যেখানে কিছু নারী "পরিবার" নামক বন্ধনে নিজেদের বাঁধবেন না। পরিবারের বাইরে রয়ে গিয়ে পুরুষের বহুগামী যৌন তৃপ্তির সহায়ক হবেন। পরে এই প্রথা বহু বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে। কিন্তু তাঁদের মতে মূল সুরটা একই রয়ে গেছে। এখন মার্ক্সবাদীরা চায় ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিলোপ। মার্ক্সবাদীরা চায় পরিবারপ্রথার বিলোপ। মার্ক্সবাদীরা চায় বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটার বিলোপ। মার্ক্সবাদীরা চায় মানুষের যৌন চাহিদার অবদমনহীন বিকাশ। মার্ক্সবাদীরা চায় পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে অবাধ ও বহুগামী যৌনতা। (হায়, এরপরও মার্ক্সবাবু রক্ষণশীল :-)) তো তাহলে মার্ক্সবাদীদের মতানুযায়ী ঐ আদর্শ সমাজে যৌন অবদমন থাকবে না, অতএব পুরুষের (বা নারীর) শুধুমাত্র দৈহিক চাহিদা পূরণের জন্য কোন বিশেষ পরিষেবার-ও (রঞ্জনদা র মতানুযায়ী) প্রয়োজন থাকবে না।

    ৩) আরো একটা কথা এখানে উল্লেখ্য। (তার আগে আবার রিমাইন্ডার: উপোরোক্ত সব মতসকল হুবহু আমার নয়, এইটাও নয়) কেন যৌনকর্মীদের শ্রমের প্রতি মার্ক্সবাদীদের নাসিকা কুঞ্চণ? এঙ্গেলস দেখান "প্রেম" ব্যপারটা আসলে "ব্যক্তিগত যৌনপ্রেম"। এখন মানুষ যেহেতু মস্তিষ্ক যুক্ত প্রাণী, তাই স্বাভাবিকভাবেই ব্যক্তিগত যৌন ভালোলাগার সাথে সে ব্যাপক পরিমাণে মাথা লাগিয়েছে। তাই সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথেই যৌন সম্পর্কগুলি আর শুধু শারীরিক সম্পর্ক থাকে নি, শারীরিক এবং মানসিক সম্পর্কের একটা জটিল মিশ্রণে পরিণত হয়েছে। প্যাশন এর কনসেপ্ট এসেছে, রোম্যান্টিসিজমের কনসেপ্ট এসেছে, এসে টেসে ব্যাপারটা এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে গেছে যে মানসিক সম্পর্কহীন শারীরিক সম্পর্ক যেন অসম্পূর্ণ। এখন মার্ক্সবাদীরা তো "বিকাশ" বোঝে, সবকিছুকে আদর্শ সমাজের নিরিখে বিচার করে। তাই কোন কোন মার্ক্সবাদীর মতে যৌনকর্মীর সাথে যে শারীরিক সম্পর্ক - সেখানে মানসিক সম্পর্ক অনুপস্থিত, তাই তা আসলে পাশবিক। মানুষোচিত স্বাভাবিকতার পরিপন্থী। মানুষের বিকাশের ধারাবাহিকতা কে এধরনের সম্পর্ক উল্টোদিকে নিয়ে যেতে চায়। তাই তা বর্জনীয়।

    এই ধারণাগুলো মাথায় রেখে যৌনকর্মীর শ্রম নিয়ে অলোচনা হলে, সেটা আরো গভীরে গিয়ে হবে বলে আমি এতগুলো কথা লিখলাম। উপোরোক্ত বক্তব্যে কোথায় কোথায় আমার সমস্যা মনে হয় সেটা পরে লিখছি।
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৯ মে ২০০৮ ০৫:২৯396036
  • মার্ক্সবাদীরা (আমার দেখা) মনে করত শিল্পীর শ্রম মানুষের মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। যে কারণে শ্রমিকের ৮ ঘন্টা কাজের দাবী। ৮ ঘন্টা উৎপাদন (পণ্য বা পরিষেবা), ৮ ঘন্টা বিশ্রাম, বাকী ৮ ঘন্টা শিল্প সংস্কৃতি সাহিত্য প্রেম স্ত্রী সন্তান রাজনীতি ইত্যাদি। তবে আজ প্রযুক্তি যে লেভেলে গেছে - তাতে সবার কর্মসংস্থান হলে উৎপাদক শ্রমসময় কমিয়ে ৫ ঘন্টার দাবী করা যায়।
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৯ মে ২০০৮ ০৫:৩৫396037
  • ঈশান,

    আমি বলতে চাইছি আমি বহু বিষয়ে তোমার সাথে সহমত হয়েও (বা বাজারচলতি মার্ক্সবাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করেও) এখন অব্দি আমার এরকম অনুভূতি হয় নি যে তোমার মত মানতে গিয়ে আমার ভেতরের মার্ক্সবাদী কাঠামোটা ধ্বসে পড়ছে। সেটা আমার মার্ক্সবাদ না বোঝার কারণেও হতে পারে।
  • hanu | 220.225.84.122 | ০৯ মে ২০০৮ ০৬:৪৪396039
  • ইশান নিজের বক্তব্যের প্রতি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভুগছে। আমাকে যে দুটো প্রশ্ন করেছে তার জবাবটা খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমি নিজের ফ্রেমওয়ার্কেই দেব।

    ১।মেয়েদের গৃহকর্ম করতে হবে এই কেসটা মার্কসের থেকে একটু পুরোনো। জেন্ডার্ড রোল, প্রাইভেট স্ফিয়ার, কম্যুনিটি স্ফিয়ার আর পাবলিক স্ফিয়ারে, এটা এখন যে অবস্থায় আছে, তার পেছনে রয়েছে দীর্ঘ দিনের সম্পত্তির ইতিহাস এবং নানা সময়ের জেন্ডার অপ্রেসন, যার শিকার মেয়েরা। এটাকে ইশান মানতে না চাইলে সত্যি ই কিছু করার নেই। আলোকিত চয়েসে উদ্ভাসিত উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলারা নিজেদের নিজে এক্সপ্লয়েট করছেন নিজেদের ভোগযোগ্য উপকরণ বাড়ানোর জন্য এই ডোমেস্টিক ইকোনোমি টি ইশানের মস্তিষ্ক প্রসূত।এবং এই ডিবেট পাবলিক প্রাইভেট কে গুলোনোর কথা আমি অনেকদিন আগেই বলেছিলাম। প্রাইভেট স্ফিয়ারে একজন মেয়ে , যেখানে তার গুণমুগ্‌ধ আলোকিত পুরুষগণ তার যত্ন আত্তি করতে প্রস্তুত সেখানে নিজের কাজের দাম হিসেবে ভোগ্যপণ্য ব্যবহার করছেন বা আরো ভোগের উচ্চাশায় প্রতিনিয়ত বিচলিত হচ্ছেন এই মতামত টা আমার কাছে স্লাইটলি , রুঢ় ভাবেই বলছি, সিক। মেয়েদের অধিকারের প্রশ্নে এই জাতীয় বোগাস গেডাংকেন নির্মাণ কেই আমি বলেছিলাম গোলপোস্ট সরানো, ফ্রেমওআর্ক বদলানোর তার্কিক কৌশল মাত্র। যেটা ইশান ববহার করেই থাকে। কারণ প্রথমত: মার্কসের পুঁজিবাদের ক্রিটিকটি মূলত: তৎকালীন এমার্জিং অর্থনীতির ক্রিটিক, যেটার রেলিভয়ান্স আজ ও ফুরোয় নি। এবং এই অর্থনীতির রাজনৈতিক সম্পৃক্তি এত বেশি যে মানুষের ব্যক্তিগত ও কম্যুনিটির সম্পর্ক তার দ্বারা প্রভাবিত হতে বাধ্য হচ্ছে। মোটামুটি মার্ক্সের এই অবস্থান। এর বিভিন্ন ডিটেলে যওয়াই যায়, অন্তত কয়েকটা টেক্সট তো মনেই পড়ছে। কিন্তু সেটা করা ইশানবাবু মানা করেছেন, বলেছেন এই সব টেক্সট বুকিশ বোধির চক্রান্ত। দ্বিতীয়ত: যে সব মহিলারা প্রচন্ড বাইরে খাটার পরেও বাড়িতে স্রেফ সামাজিক জেন্ডার্ড রোলের সংজ্ঞার কারণে প্রচুর বাড়ির কাজ করতে বাধ্য এবং বেসিকালি জাঁদের শ্রমের মূল্য ঘরের বাইরে আদৌ নেই, বাড়িতেও মাথা তুলে কথা বলার অধিকার নেই, তারা ইশানের আলোকিত ইকুয়ালিটির জুজুর দ্বারা ব্যাপ্ত ভাষ্যে নাই। কেন নেই তার একমাত্র কারণ ইশান শপথ করেছে ক্লাস ক্যাটেগরিটি বর্জনীয়। এবং এইটাই ইশানের স্বকীয়তার মূল দাবী। আমাকে ইশান উড়িয়ে দিতেই পারে, কারণ ইশান অরিজিনাল , পড়ুয়া ও প্রখর বুদ্ধিমান, কিন্তু মেয়েদের সমানাধিকারেরে প্রশ্নে , ঘরে ও বাইরে, এই বিষয় গুলোকে ওভারলুক করাটাকে অরিজিনালিটি বলে চালানোটা একটা বোগাস এফর্ট।
    ২। যৌনকর্মীরা নিজেদের পেশার বৈধতা চাইছেন। আমি তার সঙ্গে মার্ক্সবাদের এমনকি ট্র্যাডিশনাল মার্কসিস্ট প্রয়োগের বিরোধ দেখছিন তার দুইটা কারণ , প্রথমত: আগেও বলেছি, পেশার বৈধতার সঙ্গে সামাজিক সে্‌ব্‌বকৃতি জড়িত। এটা আগেও বলেছি। দ্বিতীয়ত: যৌনকর্মীরা সঙ্গঠিত রাজনীতির দিকে এগোছেন। পোমো ক্রিটিকের সোফিস্টিকেশন কে উপেক্ষা করে পোস্টার দিচ্ছেন, রোদে জলে মিটিং মিছিল করছেন, কি আশ্চর্য্য মাঝে মাঝে তান্দের 'আমাদের দাবী ' ইত্যাদি খারাপ কথা বলতে শোনা গেছে। উল্টো দিকে আমি এর সঙ্গে বিরোধ দেখছি সরাসরি পুরুষ তন্ত্রের। পুরুষের পক্ষে সন্ধে বেলায় বাড়ি যাওয়ার আগে বেশ্যাপাড়ায় যাওয়ার অধিকারটি রেখে দেওয়া সোজা, কিন্তু 'বাজারি মেয়েছেলেরা' অর্গানাইজড হবে , এবং শুধু হবে না, নিজেদের পেশাকে আইনের চোখে, মেন্সত্রীম সিস্টেমের চোখে স্বীক্রিটির দাবী জানাবে এটা মানা কঠিন। আরেকটা জিনিসও আছে। পুরুষের পাবলিক স্ফিয়ারে প্রমিনেন্স - এইটা এতটাই সমাজের মজ্জাগত , যেখানে সেই প্রমিনেন্স নাই,সেটা পুরুষের অস্বস্তির কারণ হবেই। মহিলা বিল পাস থেকে সর্বত্র এই কিন্তু কিন্তু ভাব থেকে ওভার অ্যাগ্রেসিভ প্রতিক্রিয়া সবটাই থাকবে। এটা দল ও ইন্ডি নিরপেক্ষে। প্রচুর আলোকিত পুরুষকে দেখেছি, মেয়েদের নেতৃঙ্কÄ মেনে নেওয়ার বিপক্ষে। সেটা তারা মেয়েরা স্বেচ্ছায় নেতা হতে চায় না, এই যুক্তির শিখন্ডি না দাঁড় করিয়েই মনে করেন। আইডেন্টিটি পলিটিক্সের ভ্যালিডিটি সম্পর্কে তার বহুঙ্কÄ সম্পর্কে বিভিন্ন সাম্যবাদে দলের সারা প্রিথিবীতেই যে মূল সমস্যা সেটা নেতৃঙ্কেÄর জেন্ডারের কারণে। বেশি বেশি জুডিসিয়াল ইকুআলিটির দাবী নিয়ে মেয়েরা বেশি বেশি করে সেই সব দল গুলিতে উঠে না আসা পর্যন্ত এই টানাপোড়েন চলবে, আবার সময়ে অসময়ে পোলিটিকাল ব্রড আলায়েন্স ও হবে। এবং উল্লসিত হবেন না, এমনকি লিবেরাল দল গুলি ও এর বাইরে নন, কোন আলোকিত বা পুরোনো মানসিকতার পুরুষের পক্ষেই মেয়েদের প্রমিনেন্স মেনেয় নেওয়া কঠিন। কারণ আর কিছুই নয়, অ্যাদ্দিনের আরাম আর কোন শালা ছাড়ে। অতএব সমস্যাটা পুরুষ্‌তন্ত্রের ভীতির, সমানাধিকারের ভীতির।

    সবশেষে একটাই বক্তব্য এর পরের পোস্টে বা শীঘ্রই আমি সরাসরি নানা নারীবাদীদের কোট টোট করবো। চারিদিকে অরিজিনালিটির দাপটে টেক্সটের মাতৃক্রোড়ে নিরাপদ বোধ করবো। এই বিতর্কে যাঁরা সবচেয়ে কম রেফার্ড হয়েছেন তাঁরা হলেন মহিলা লেখকেরা।
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৯ মে ২০০৮ ০৮:১৪396040
  • কিন্তু হনুদা আপনি বলছেন বটে ট্র্যাডিশনাল মার্ক্সবাদীদের লাইনেও যৌনকর্মীর শ্রমকে আইনি স্বীকৃতি না দেওয়ার কারণ নেই, বাস্তবত: কিন্তু CPI(M) থেকে শুরু করে নকশাল - কেউ-ই এই স্বীকৃতি দানের দাবীতে এগিয়ে আসে নি। সেটা কেন বলে আপনার মনে হয়?
  • h | 125.18.104.1 | ০৯ মে ২০০৮ ০৯:৪৩396041
  • পিনাকিদার প্রশ্নটা একটা সময় পর্যন্ত আমাদেরো, এমনকি আমরা যারা সি পি আই এমের মেজ সেজ ছোট নেতা অথবা বস্তু ছিলাম, তাদের খারাপ লাগিয়েছে। আমরা স্রেফ বুঝতে পারতাম না, ইমপর্ট্যান্ট পজিশনে মেয়েরা নেই কেন, বা রেয়ার কেসে থাকলেও তাঁদের নারীবাদের বিভিন্ন ভার্সন নিয়ে আদৌ কোনো এনগেজমেন্ট নেই কেন বা যে সব এলাকায় মেয়েরা জোট বেঁধে শক্তিশালী হয়েছেন সেখানে পুরুষ স্কিমার রা তাঁদের বিভিন্ন কাজে বাধা তৈরী করতে চাইছেন কেন। নকশাল সংগঠন আমি করিনি, একবার শুধু একটা ভোটে লেফট ইউনিটি করে বিজেপি আর কংগ্রেস কে বিপদে ফেলেছিলাম সেটা মনে আছে। উত্তর টা সোজা , বেশি সংখ্যার পুরুষেরা দলের উচ্চতম থেকে নীচু তলা অব্দি সমস্ত গুরুঙ্কÄপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত। আইডেন্টিটি পলিটিক্সএর ভ্যালিড পয়েন্ট গুলো বুঝতে হলে শুধু ছেনছিটিভ হলে (যেমন আমার মত) লাভ নাই। পরিষ্কার চ্যালেঞ্জড হতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ টা কে দেওয়ার মত জায়গায় মেয়েরা পৌছন নি, কোনো দলে। এ ব্যাপারে তাঁদের সাহায্য কোন শালা করবে না, যত টুকু যা পাবলিক ডিবেটে স্পেস তৈরি হয়েছে, তাঁরা নিজেরাই করেছেন। বিভিন্ন ভাবে করেছেন। সারা পৃথিবীর সাম্যবাদী বা ইমানিসিপেটরি সোশাল জাস্টিসের আন্দোলনে ম্যাচো কাকু বা ম্যাচো দাদা সিন্ড্রোম প্রবল। পাবলিক প্রাইভেটের চিরনবীণ ডিভাইড। এইবার মুক্ত পুরুষেরা অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন, প্রাইভেট স্ফিয়ারের কাজকে ছোটো তাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন না তাই পাবলিক প্রাইভেট স্ফিয়ারের ডিভাইড আর দুনিয়ায় নাই। এই দলে আমি নিজে বহুদিন অব্দি পড়তাম। আমার ধারণা নিজে প্রশ্ন করা টুকু অন্তত আরম্ভ করেছি। এটা বিশেষ এগিয়ে থাকা কিছু নয়, প্রশ্ন যে আছে সেটাকে মানার প্রচেষ্টা শুরু করা।

    সিপি আই এম এর সমস্যা টা অন্য অনেক দলের সমস্যা। যতটুকু মেয়েরা গুরুঙ্কÄপূর্ণ পদে যেতে পেরেছেন ততটুকুই তাঁদের নেগোশিয়েশন পাওয়ার বেড়েছে, বা ক্লাস বা ট্রেড পলিটিক্স এর সঙ্গে জেন্ডার পলিটিক্স এর একটা ব্রড আলায়েন্স হওয়ার সুযোগ বেড়েছে। এ রাস্তায় এখনো অনেক পথ চলা বাকি প্রত্যেক দলেরি।

    এবং এটাকে ইশান দেখাতে চাইছে মার্কসের তাত্বিক ফেলিয়োর হিসেবে। তাহলে বলতে হয় পুঁজি সম্পর্কে সিমোন বোভোয়ার কি আনালিসিস নামিয়েছেন দেখি, বা ফুকো কেন সোশাল হিস্টরিয়ান বা মার্ক্সবাদী বা আনালিস্ট ইকোনোমিক হিস্টরিয়ানদের মত
    সপ্তদশ বা অষ্টাদশ ট্রেড সম্পর্কে কোন বক্তব্য কখনো রাখেন নি। এটা কোন যুক্তি নয়, অসম্পূর্ণতা নির্দেশ ও নয়। একেকজন একেকটা প্রবলেম নিয়া কাজ করেছেন। একেকটা সমস্যা কে অ্যাড্রেস করেছেন। কতগুলো লোক যদি একটা দলে বসে বলেন মার্ক্স পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফেমিনিস্ট ছিলেন বা ফুকো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ইকোনোমিক হিস্টরিয়ান তাইলে রোড শো জমে, তালি ও প্যাঁক মারা সুযোগ বাড়ে কিন্তু আর বিশেষ কিসু হয় না। মেয়েদের বা ছেলেদের।

    একটু চোখ সরিয়ে একটা মজার কেস বলি। উত্তর বম্বের বস্তির শিব সেনার মেয়েদের অর্গানাইজেশন গুলো নিয়ে কাজ করেছেন আমাদের এক বান্ধবী। তাঁর বক্তব্য ছিল তাঁরি কয়েন করা টার্ম 'কাউন্টার ভিক্টিমোলোজি' কে ভিত্তি করে। তাঁর অব্‌সার্ভেশন ছিল , বাজে ইমানিসিপেশন এর গল্প শুনিয়ে লাভ নেই, অত্যাচারীত মেয়েরা কেউ স্বামীকে স্রেফ সে মাতাল বা পুরুষ বা দায়িঙ্কÄজ্ঞনহীন বা অত্যাচারী বলে ছাড়তে চান না, (এটা হল ট্র্যাডিশনাল মহিলা সমিতির পজিশনের সমালোচনা :-) ) প্রয়োজনে দল বেঁধে কেলিয়ে টেলিয়ে দেন যদিও, তবু বস্তি গুলোর মধ্যে উগ্র দক্ষিনপন্থী অর্গানাইজেশন তাঁদের একটা এম্পাওয়ারমেন্ট দিয়েছে। যেহেতু জার্নালিস্টিক ক্লোজ অব্‌সার্ভেশন তাই ডিসকাউন্ট দিতেই হবে, কিন্তু দক্ষিনপন্থা মেয়েদের স্পেস দিচ্ছে না মেয়েরা নিজেরা দক্ষিনপন্থার মতাদর্শের মধ্যে হুল ফুটিয়ে নিজেদের জায়্‌গা নিজেরা তৈরী করে নিচ্ছেন, সঙ্গঠিত ভাবেই করছেন এই ডিবেটের শেষ নেই। এবং অন্যত্র অন্যভাবে এই কাজ যে চলছে তার ও মূল্য কমে যায় না।
  • Ishan | 12.240.14.60 | ০৯ মে ২০০৮ ০৯:৪৫396042
  • সমালোচনার জবাব পরে দেওয়া যাবে। আমার পূর্বপ্রতিশ্রুত শেষ দানটা আমি আগে দিয়ে ফেলি। বোধির ধমকের চোটে সেটা নামধাম দিয়েই করব। মানে কোনটা কার থেকে টুকছি ফরমালি লিখব। তাতে বোধির কিছু মতামত হয়তো বদলাতে পারে। :)

    ১।
    মার্কসবাদের মূল প্রতিজ্ঞাগুলোর মধ্যে হল, "পণ্যের মূল্য = পণ্য পুনরুৎপাদনের খরচা'। মার্কস এই বেসিক সূত্রটাকে শ্রমশক্তি নামক পণ্যটির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ "মজুরি = শ্রমশক্তি পুনরুৎপাদনের খরচ'। অর্থাৎ "মজুরি = শ্রমিকের শ্রমিক হিসাবে বেঁচে বর্তে থাকার খরচা এবং পরিবার ও সন্তান প্রতিপালনের খরচ'।

    এই জিনিসটা আমরা এই আলোচনায় বারবার উল্লেখ করেছি। এবার এই জিনিসটাকে খুঁটিয়ে দেখব। সমালোচনা করব। কি সমালোচনা? না, মার্কসবাদ এই "শ্রমশক্তির পুনরুৎপাদনের খরচা' টাকে একটি বিশুদ্ধ ইকনমিক এনটিটি হিসাবে দেখেছে তার পলিটিকাল অ্যাজেন্ডায়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এটি একটি "বিশুদ্ধ' অর্থনৈতিক ক্যাটিগরি নয়। প্রকৃত অর্থে "পরিবার প্রতিপালনের ন্যূনতম খরচ' এই বস্তুটির মধ্যে বহু জিনিস ঢুকে আছে, যা, প্রথাগত মার্কসীয় অর্থনীতির বাইরে। উদাহরণ স্বরূপ, আজ থেকে দুশো বছর আগে বেঁচে থাকার শর্ত হিসাবে জনস্বাস্থ্যের কোনো ধারণা ছিলনা। আজ আছে। আজকে বেঁচে থাকার ন্যূনতম খরচের মধ্যে তাই ঢুকে আছে জনস্বাস্থ্যের ধারণা। হয়তো বীমার প্রিমিয়ামের আকারে, বা অন্য কোনো ভাবে। যেভাবেই থাক, ইকনমি এই খরচার "একমাত্র' ড্রাইভিং ফোর্স না। বেঁচে থাকার ন্যূনতম যে খরচা, তার মধ্যে বীমার খরচার যে অংশ, তার ড্রাইভিং ফোর্স হল জনস্বাস্থ্যের ধারণা। একই ভাবে, ধরুন, বেঁচে থাকার ন্যূনতম খরচার মধ্যে আমেরিকায় ধরা হবে এসি এবং হিটিং এর খরচা। যেটা ভারতে ধরা হয়না। ইত্যাদি ইত্যাদি।

    মোদ্দা কথাটা হল, শুধু অর্থনীতি দিয়ে পুরোটা বুঝে ফেলা, অর্থনীতিকে স্ট্রাকচার এবং বাকিটাকে সুপার স্ট্রাকচার হিসাবে দেখার মার্কসবাদী ঘরানায় প্রচুর ফাঁকফোকর আছে। চেষ্টা করলেই খুঁজে পাওয়া যায়। ইংরিজিতে স্ট্রাকচার-সুপারস্ট্রাকচারের এই লিনিয়ার ধারণাটাকে বলা হয় এসেনশিয়ালিস্ট এবং/অথবা ডিটারমিনিস্টিক।

    এই সমালোচনাটি আমার আবিষ্কার নয়, যদিও আমি নিজের মতো শর্টে বললাম পুরোটা। এই সমালোচনাটি করেছিলেন, মারকাটারি পোস্ট স্ট্রাকচারালিস্ট তাত্বিক আলথুজার। তিনি বলেন অর্থনীতি হল কারণ, এবং বাকি সব তার ফলাফল এইরূপ লিনিয়ার কার্যাকারণ সম্পর্কের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে মার্কসবাদকে। কার্যকারণ সম্পর্কের জায়গায় তাহলে কি আসবে? আলথুজার বললেন, অর্থনীতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অবস্থা একে-অপরকে ওভারডিটারমিন করে। পরস্পর পরস্পরকে নিয়ন্ত্রণ করে। কেউ কারণ নয় কেউ কার্য নয়। সবাই কারণ, সবাই কার্য। এই ওভারডিটার্মিনেশন বস্তুটি আবার আলথুজারের নিজের আবিষ্কার নয়। মানবসভ্যতায় এটি ফ্রয়েডের অবদান। মানুষের স্বপ্নদৃশ্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি এই ধারণাটি বাজারে এনেছিলেন। স্বপ্ন এমন একটি কম্পোজিশান, যেখানে কোনো স্ট্রিক্ট কার্যকারণ সম্পর্ক নেই, কিন্তু স্বপ্নের প্রতিটি পার্টই একে অপরকে একরকম করে নিয়ন্ত্রণ করে, কেউ আরবিট্রারি নয়। সাররিয়াল শিল্পে এই কনসেপ্টটির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ধরুন বুনুয়েলের "সিক্রেট চার্ম অফ দা বুর্জোয়াজি', সিনেমাটির প্রতিটি পার্টের সঙ্গে প্রতিটি পার্টের নিবিড় যোগায্‌প্‌গ, কিন্তু কোনো কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। বা, দালির ছবি। ওয়েল কম্পোজড, কিন্তু কার্যকারণ সম্পর্কে বাঁধা নয়। ইত্যাদি ইত্যাদি।

    তো, আলথুজার বললেন, ডিটারমিনিস্টিক মার্কসবাদ জালি, ওটাকে ঠিকঠাক করতে হলে, সাংস্কৃতিক সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা, সবাই সবাইকে অতিনিয়ন্ত্রণ করছে বলতে হবে। কারণটা আমরা দেখলাম। যে, অর্থনীতির মধ্যে ঢুকে থাকে সামাজিক ধারণা, সুস্থতার ধারণা, সংস্কৃতির ধারণা। অতএব, সমালোচনাটি যথেষ্ট ভ্যালিড।(আলথুজার আরও অনেক কথা বলেছিলেন, আইডিওলজিকাল স্টেট অ্যাপারেটাস ইত্যাদি, সেগুলো আপাতত: দরকার নেই বলে কাটিয়ে গেলাম)

    এর পরে, পোস্ট মার্কসিস্ট বলে যাঁরা পরিচিত, তাঁরা, বিশেষত: রিচার্ড উলফ, বললেন, সমালোচনাটি ভ্যালিড, কিন্তু সমস্যাটা মার্কসবাদের না, সমস্যাটা মেথডলজির। পৃথিবীর যাবতীয় অ্যানালিটিকাল পদ্ধতিতেই এই সমস্যাটা থাকবে, যেটা মার্কসাদের সমস্যা বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। কেন? না আপনি যখন রিয়েলিটিকে নিয়ে ডিল করেন, তখন আপনার সামনে কোটি কোটি ভ্যারিয়েবল ঘুরে বেড়ায়। মানে মানবসভ্যতা নিয়ে কথা বলতে গেলে, ইতিহাস, পরিবেশ, অর্থনীতি, স্বাভাবিক বিজ্ঞান, ইত্যাদি ইত্যাদি বিদ্যার কোটি কোটি কনসেপ্ট আপনার সামনে এসে পড়ে। সব কটাকে নিয়ে আপনি শুরু করতে পারেন না। যেকোনো একটা বা দুটোকে বেছে নিতে হয়। হয় অর্থনীতি বা ইতিহাস। এটাকে ওনারা বললেন এϾট্র পয়েন্ট। এরপর আপনি এϾট্র পয়েন্ট দিয়ে অ্যানালিসিস শুরু করলেন। করলেই দেখবেন আবার কোটি-কোটি ভ্যারিয়েবল। অর্থনীতির মধ্যে ঢুকে অছে ইতিহাস, ইতিহাসের মধ্যে সামাজিক স্বাস্থ্য। ইত্যাদি ইত্যাদি। এই সব কটা ভ্যারিয়েবলকে নিয়ে আপনি কাজ করতে পারবেন না। সেটা অসম্ভব। কিছু ফরমুলেট করতে গেলে পাঁচটা বা সাতটা ভ্যারিয়েবলের পরেই বাকিগুলিকে আপনাকে "নগণ্য বলিয়া উপেক্ষা করিতে হয়'। সেটা ছোটোবেলা থেকে আমরা করেই আসছি সর্বত্র। এটাকে ওনারা বললেন ক্লোজার।

    এই এϾট্র এবং ক্লোজারকে যেকোনো মডেলে আপনাকে ঢোকাতেই হবে। নইলে আপনি কিছু স্টেট করতে পারবেন না। স্টেট করতে গেলেই কিঞ্চিৎ পরিমানে অ্যাপ্রক্সিমেশন করতে হবে। এবং তাতে কিছু ভ্যারিয়েবল বাদ পড়ে যাবে। সঙ্গে এটাও ঠিক, যে, আজ যে ভ্যারিয়েবলগুলোকে একটি অবস্থানে দাঁড়িয়ে বাদ দিলাম, আগামী কাল, অন্য অবস্থানে সেগুলো আর নগন্য নাও থাকতে পারে। তারা ফুঁড়ে বেরোতেই পারে, এবং আমার মডেলকে চ্যালেঞ্জ করতেই পারে।

    তো, এই জায়গায় ওনারা এবং অজিত চৌধুরি দীপঙ্কর দাশরা নিয়ে এলেন স্ট্র্যাটেজিক এসেনশিয়ালিজমের ধারণা। যে, আমি কিঞ্চুৎ মাত্রায় এসেনশিয়াল হবো। জেনেবুঝেই হবো। সেটা পার্ট অফ মাই স্ট্র্যাটেজি। আমি জানব আমার মডেলের এϾট্র কোথায়, ক্লোজার কোথায়, অ্যাপ্রক্সিমেশন কি কি। জানব। এবং তার পরে আমি এসেনশিয়ালিস্ট হব। একটি টুলকে যখন আমি ব্যবহার করছি, তখন তার লিমিটেশনগুলো জানা আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

    ২।

    এত কথা এল কেন? না আগে ডিসিপ্লিনারি পাওয়ারের ফর্মুলেশনে একটা প্রবলেম হচ্ছিল আমার। প্রবলেম টা কি? না, "আলাদা হবার অধিকার' কে কতোটা স্ট্রেচ করব। পৃথিবীর প্রতিটি লোকের যেমন খুশি "আলাদা' হবার/থাকার অধিকার কি থাকবে? সেটা সম্ভব নয়। তাহলে খুন-জখমের অধিকারকেও স্বীকৃতি দিতে হয়। সেটা সম্ভব নয়। তাহলে থামব কোথায়? কোন খানে লাইন?

    উত্তর একটাই। যে, লাইন টানতে হলে, আপনাকে একটা এসেনসিয়ালিস্ট অবস্থান নিতে হবেই। নইলে অবস্থান নেওয়া সম্ভব নয়। পিনাকি আলোচনার গোড়া থেকে যেটা বারবার বলে আসছে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে, একটি ক্ষমতার বিরুদ্ধে আপনি আরেকটি ক্ষমতা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। যা, চরিত্রে একই রকম।

    ক্ষমতার বিরুদ্ধে আমাদের কমপ্লেনটা কি? না ক্ষমতা এমপাওয়ার করার সঙ্গে সঙ্গে এক্সক্লুডও করে। এই নিয়ে বিস্তর ধস্তাধসি হয়েছে, আর বিশদে যাচ্ছিনা। অতএব ক্ষমতার ক্রিটিক করা প্রয়োজন। মার্কসবাদ ক্ষমতার একটি চমৎকার ক্রিটিক। কিন্তু তারও লিমিটেশন আছে। তা অর্থনীতিকে বেস করে গড়ে উঠেছে। তাতে অনেক কিছু বাদ দেওয়া হয়েছে। এবং মজা হচ্ছে, এই কাজ করতে গিয়ে মার্কসবাদী ডিসকোর্সও অনেক কিছুকে এক্সক্লুড করে। ঠিক ক্ষমতারই কায়দায়।

    অতএব, ক্ষমতার ক্রিটিক একমাত্র মার্কসবাদ নয়। আরও অন্যান্য ক্রিটিসিজম সম্ভব। সেগুলোর দিকে খোলা চোখে তাকান। তাদেরকেও সমান মর্যাদা দিন। প্রতিটি ক্রিটিসিজমই কিছু না কিছু এক্সক্লুড করে, প্রতিটি ডিসকোর্সই একেকটি ক্ষমতা। আপনি যখন ক্ষমতার দিগন্তকে প্রসারিত করতে চাইছেন, তখন, এদের সবার জন্যই আপনাকে স্পেস রাখতে হবে।

    "অসমান হবার অধিকার' এখানেই আসে। ক্ষমতার একটি ক্রিটিসিজম যদি একটি বর্গকে সম্মন না দেয় এবং অন্য একটি ক্রিটিসিজম দেয়, তাহলে তাদের সমান অধিকার চাই। এইটাই আমার দাবী। তত্বগতভাবে।

    তাহলে কি দাঁড়াল। ক্ষমতার একটি ক্রিটিসিজমকে আপনি বেছে নিলেন আপনার লাইনটি টানার জন্য। মার্কসবাদকেই নিলেন। ক্লাস স্ট্রাগলকে মেনে নিলেন। বেশ করলেন। এবং অধিকারের প্রশ্নে আপনর লাইন টানলেন। সঙ্গে শুধু মনে রাখবেন, অন্যান্য সমালোচনার ধারাগুলিও আছে। আপনিই "মূল' ক্রিটিসিজম এবং বাকিরা শাখা প্রশাখা তা নয়। সবাই অসমান। কিন্তু ইকুয়াল রাইটের অধিকারি।

    এইটাই বক্তব্য। ব্যস।

    ** লম্বা লিখলাম। ঘুমও পেয়েছে। দু একটা বেফাঁস কথা লিখেও ফেলতে পারি, যেগুলো পরে কারেক্ট করব। চান্স কম, কিন্তু হতেও পারে। বলে রাখলাম। :)
  • Ishan | 12.240.14.60 | ০৯ মে ২০০৮ ০৯:৪৭396043
  • হনু এবং পিনাকি একে অপরের দাদা। এইটাকে আমরা ওভরডিটার্মিনেশন বলতে পারি। :)
  • hanu | 125.18.104.1 | ০৯ মে ২০০৮ ০৯:৫১396044
  • এবং মেয়েরা দল বেঁধে দুর্গাবাহিনী তৈরী করে মুসলমানদের ঘর জ্বালিয়ে এমপাওয়ারমেন্টের প্রমাণ রাখতে গেলে অবশ্যই প্রথমে দক্ষিন পন্থাকে এবং পরে সেই মেয়েদের অর্গানাইসেশন কে প্রশ্ন করার অধিকার মানুষের এসেই যাছে। একটা কথা বোঝা দরকার তাঙ্কিÄকদের বা সংগঠক শুধু নয় লিবেরেরেটেড ব্যক্তি বর্গর সুবিধার্থে সমাজ বা ইতিহাস ঠিক চলেনা, গোলে মালে গন্ডোগোলে চলে তার মধ্যে থেকে লং স্ট্যান্ডিং স্টেটাস কুয়ো গুলো কে প্রশ্ন করা টা চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিসু বিশেষ করার নাই।
  • hanu | 125.18.104.1 | ০৯ মে ২০০৮ ০৯:৫৩396045
  • ইশান আমি সিক কথাটা বলে ফেলেছিলাম। রিয়েলি সরি মেট। তোমার উপরে রাগ করে থাকা সম্ভব না আমার পক্ষে অ্যাট অল।
  • hanu | 125.18.104.1 | ০৯ মে ২০০৮ ০৯:৫৪396046
  • এবং হ্যা কোট করতে পারো, আমারে চুপ করানোর জন্য। তাইলে তোমার অন্তত দায় কমে, বড় বড় লোকেরা যদি ছাগলামো করে থাকে তুমি আর কি করবা:-)
  • ranjan roy | 122.168.78.243 | ০৯ মে ২০০৮ ১০:০৭396047
  • মজা আ গিয়া। এই ডিসকোর্স এমন যায়গায় পৌঁছেচে যে দেখতে পাচ্ছি প্রায় সব্বাই সৌরভের উদ্দীপনী অধিনায়কত্ব, চমৎকার বোলিং ও গোটা দলের আউটস্ট্যান্ডিং ফিল্ডিং ( ব্যাটিং এখনও বেশ নড়বড়ে) দেখার বদলে টইয়ে মগ্ন থাকার অপশন বেছে নিয়েছেন। তাঁরা empowered,; বাঙালী -কম্যুনিটি ফিলিংয়ে কন্ডিশনড হন নি। কাজেই আমার কিই বা বলার আছে।
    আমার দু'পয়সা!

    স্যান, পিনাকী, ঈশান ও হনু
    ------------------------------------
    স্যান তো গৃহবধূ মহিলাদের ব্যাপারে একেবারে কমরেড লেনিনের (অন্যপ্রসংগে) ডিকটাম মনে করিয়ে দিচ্ছে----"" যে নিপীড়িত জাতি অস্ত্র ধরিতে শিখে নাই, তাহারা দাসের ন্যায় জীবনযাপনের যোগ্য''।
    স্যান, স্বাধীনতাপ্রাপ্তি (ঘরে-বাইরে) কি এতই সহজ। শুধু একজন ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে সে শোষিত হবে কি না? তাহলে তো ল্যাঠা চুকে গেল। যে শোষিত, সে প্রতিরোধ করতে পারে না বলে শোষিত?
    একজনের প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও তো নানা সামাজিক ফ্যাক্টর দিয়ে সীমিত। এর মধ্যে ঈশান কথিত কন্ডিশনিং ও আছে। এতে মেয়েদের মায়েরা শিক্ষিত করেন স্বামীদের অনেক দস্যিপনা সহ্য করে তাদের মন জিতে নিয়ে তারপর সংসারের চাবিটি আঁচলে বেঁধে রাণী হয়ে বসতে।
    আমার চোখে এটা দুর্বলের প্রতিকূল অবস্থায় অসম শক্তির বিরুদ্ধে গেরিলা ফাইট।
    রবীন্দ্রনাথ কোথাও ( সম্ভবত: শেষের কবিতায়) বলেছিলেন --যে শেকল দিয়ে বাঁধে সে ভোলায় না। কিন্তু যে মায়া দিয়ে বাঁধে , সে বাঁধে ও ভোলায় । ফলে শেকলটা দেখা যায় না।
    ইক্যুয়ালিটি দলের ফলস্‌ কন্‌শাসনেস ধারণা এই মায়াওয়ালীর প্রশ্নে ভ্যালিড্‌ মনে হয়। এটাও তো কন্ডিশনিং এর একটা রূপ।
    তবে ঈশানের লজিক বুঝতে মার্কস্‌ এর ঐ গল্পটি( হয়তো গল্পমাত্র) মনে করুন, যেখানে মার্কস পাশের বস্তিবাড়িতে স্বামী স্ত্রীকে পেটাচ্ছে দেখে হস্তক্ষেপ করতে গেলে উল্টে সেই মহিলা --আমাদের ঝগড়ার মাঝখানে তুই ব্যাটা কে রে? বলে তাড়া করেছিলো।
    এখন এই ""অদৃশ্য-শেকল'' দেখতে পাওয়া (বা না -পাওয়া) আবার নির্ভর করছে দ্রষ্টার value system যা আবার ঈশান-কথিত কন্ডিশনিং এর ওপর।

  • ranjan roy | 122.168.78.243 | ০৯ মে ২০০৮ ১০:৩৪396048
  • মার্কস্‌- ক্যাপিটাল- কমোডিটি প্রোডাকশন
    --------------------------------------------- আমি মনে করি গৃহশ্রমের ব্যাপারে ঈশানের বক্তব্য মার্কসের লেখায় প্রকটভাবে নেই, প্রচ্ছন্নভাবে আছে।( বা:, বেশ বাংলা লিখছি তো!)
    মার্কস্‌এর ""ক্যাপিটাল'' লেখার লক্ষ্য ছিলো ক্যাপিটালিজমের Dynamics কে বোঝা। উনি পণ্য-মুদ্রা- পণ্য থেকে মুদ্রা--পণ্য--মুদ্রা উৎপাদনের স্তরে পৌঁছানোকেই পুঁজিবাদ বা সারপ্লাস ভ্যালু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় মজুরের সারপ্লাস লেবার শোষণের কথা বলেছেন। এই স্তরে উৎপাদন হয় accumulation of capital এর জন্যে, উৎপন্ন বস্তুটি উপভোগের জন্যে নয়।
    এই জন্যেই তিনি ক্যাপিটালের প্রথম খণ্ডে সামাজিক স্তারে আদি ক্যাপিটাল নির্মাণকে শোষণের ফল বলেন নি।
    খেয়াল করুন , শোষণের অনেক রূপ। দাস-সামন্ত সব ব্যবস্থায়ই শোষণ ছিলো। কিন্তু মার্কস্‌ এর main concern ছিলো production forceএবং production relation এর সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সমাজ-পরিবর্তনের চালিকা-শক্তিটিকে অনুধাবন করা। আর তার জন্যে পুরনো সমাজের ব্যাপারগুলোকে দু'কথায় সেরে দিয়ে বর্তমান আধুনিক পুঁজিবাদী সমাজকে কাঁটাছেড়া করা।
    এখানে গৃহশ্রম কেবল সীমিত ব্যক্তিগত উপভোগের লক্ষ্যে নিবেদিত। বাজারে ব্যাপকহারে বিক্রির লক্ষ্যে নয়। কাজেই এতে সেই উদ্বৃত্ত শ্রম নেই যা দিয়ে সামাজিক পুঁজির নির্মাণ হবে। ফলে এতে পুঁজিবাদী শোষণ নেই, কিন্তু সামন্তবাদী ( বা বিশেষ ক্ষেত্রে দাসশোষণ )আছে।
    ডী: যদি আমার বুঝ ঠিক হইয়া থাকে, তাইলে মামুর অরিজিনালিটি গেল:))))। না হইলে বুঝাইয়া দ্যাও যে আমি বুকা। বৌয়ে কয়, পুলাপানেও কয়, এইবার তোমরাও যদি কও কোন হেলদোল নাই।
    আমর ত' "" অবোধের গো-বধে আনন্দ''।

  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৯ মে ২০০৮ ১০:৩৭396050
  • ঈশান,

    এতক্ষণে লাইনে এসেছো। তোমার Date:09 May 2008 -- 03:27 AM এর পোস্টটা দেখ। একটা প্রায় ভুল স্টেটমেন্ট দিয়েছো, যেটা স্ট্র্যাটেজিক এসেন্সিয়ালিজ্‌ম ছাড়া দাঁড় করানো যায় না। আমি আমার মত করে ব্যাখ্যা করলাম। ভুল হলে বোলো।

    তুমি লিখেছো মার্ক্সবাদে শুধু পণ্য উৎপাদক শ্রমকেই গুরুঙ্কÄ দেওয়া হয়েছে, অন্য শ্রমগুলোকে হাওয়া করে দেওয়া হয়েছে। এখানে তোমার মেনে নিতে না চাওয়া ব্যঙ্গোক্তিটা হল: ""যারা সে শ্রম করে তারাই সমাজ-পরিবর্তনের ভ্যানগার্ড, ইত্যাদি ""। কিন্তু ভেবে দেখো - মার্ক্সবাদ সমাজ-পরিবর্তনকে বোঝে উৎপাদন সম্পর্কের পরিবর্তন দিয়ে। এবং সেখানে পণ্য উৎপাদনকারী শ্রম-ই একমাত্র সেই শ্রম - যা প্রচলিত উৎপাদন সম্পর্কের সাথে অনপনেয় দ্বন্দ্ব বহন করে নিজের intrinsic character হিসেবে। অন্য কোন শ্রম (গৃহশ্রম, যৌনশ্রম, শিল্পীর আঁকিবুকি) চালু উৎপাদন সম্পর্কের সথে এইরকম মীমংসার অযোগ্য বিরোধ ক্যারি করে না। তাই সমাজ পরিবর্তনের (পড় উৎপাদন সম্পর্ক পরিবর্তনের) নিরিখে পণ্য উৎপাদনকারী শ্রম সবচেয়ে প্রায়োরিটিতে থাকবে - সেটা খুব আশ্চর্যের কি? কিন্তু এখানে যেটা অনুক্ত - তা হল আমরা একটা বিশেষ নিরিখকে আগেই নির্দিষ্ট করে নিয়েছি। সেটা হল - সমাজ পরিবর্তনের নিরিখ। যেটাকে তুমি মার্ক্সিস্ট আলোচোনার এϾট্র পয়েন্ট বলতে পারো। এখন তুমি যদি আলোচনার এϾট্র পয়েন্ট কর সমাজের / মানুষের মানসিক বা সাংস্কৃতিক বোধের বিকাশ - তাহলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই শিল্পীর আঁকিবুঁকি সবচেয়ে প্রায়োরিটিতে চলে আসবে। তাই এই এϾট্র পয়েন্টের তঙ্কÄ দিয়ে যদি আমরা ব্যাপারগুলোকে আলোচনা করি, আমার মনে হয় প্রতিটা কাজকেই তার নির্দিষ্ট পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ গুরুঙ্কÄ আমরা দিতে পারবো। যে কোন তঙ্কেÄর সবকিছুর সমাধান বাৎলে দেওয়ার অলীক আত্মবিশ্বাসকেও একটু প্রশ্নের মুখে ফেলা যাবে, আবার যেখানে সত্যি-ই তার গুরুঙ্কÄ রয়েছে সেখানে তাকে প্রয়োজনীয় গুরুঙ্কÄটাও দেওয়া যাবে।

    ঠিক বল্লাম?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন