এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • চিয়ারলিডার বা সুড়সুড়ি বা খেলা বা রাজনীতি

    Ishan
    অন্যান্য | ২৯ এপ্রিল ২০০৮ | ১৯৩৯৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ishan | 12.240.14.60 | ০৭ মে ২০০৮ ০৮:৪৫395985
  • রঞ্জন দা।

    ডোমেস্টিক লেবার নিয়ে একটু বড়ো করে লেখা যাক। পুরোটাই মার্কসিস্ট অ্যাঙ্গল থেকে লিখছি।
    ধরা যাক, আমার বাড়িতে, বাড়ির সমস্ত কাজ মাইনে করা লোক করে। হয় এজেন্সি আছে, কিংবা ঠিকে কাজ। উভয় ক্ষেত্রেই শ্রম করা হচ্ছে। এবং মাইনে দেওয়া হচ্ছে। বা মজুরি।
    এখানে মূল প্রশ্নটা হল মাইনে বা মজুরিটা কি ভাবে নির্ধারিত হচ্ছে। এটা কি শ্রমের দাম? একেবারেই না। শ্রমশক্তির একটি বাজার আছে। মজুরি হল, সেই বাজার নির্ধারিত মূল্য। শ্রমের দাম নয়। মার্কসীয় থিয়োরি অনুযায়ী শ্রমশক্তির দাম তথা মজুরি হল, "শ্রমশক্তির পুনরুৎপাদনের সামাজিক ভাবে নির্ধারিত খরচ'। অর্থাৎ একজন শ্রমিককে বেঁচে থাকতে হলে, শ্রমিক হিসাবে টিকে থাকতে হলে, সন্তানাদি পালন করতে হলে, এবং শ্রম করার দক্ষতা অর্জন করতে হলে, যে ন্যূনতম খরচটা পড়ে, সামাজিকভাবে নির্ধারিত সেই খরচাটাই হল মজুরির মূল্য। প্রিসাইজলি। (এখানে সামান্য ঘাপলা আছে, যেটা আমি আপাতত: ওভারলুক করে যাচ্ছি)। এই খরচাটা শ্রমের মূল্যের চেয়ে কম। অতএব উদ্বৃত্ত মূল্যের জন্ম হয়। শ্রমের মূল্য - মজুরি = উদ্বৃত্ত মূল্য।

    এখানে একটা জিনিসই লক্ষ্যণীয়। এই মডেলে মজুরি = বেঁচে থাকার খরচা (শ্রমশক্তি পুনরুৎপাদনের খরচা)। মোটামুটিভাবে। এবার ডোমেস্টিক লেবারের ক্ষেত্রে যদি এই মডেলটা নিয়ে আসি, তাহলে দেখা যাবে একজন কাজের লোককে সেটা, মানে মজুরিটা টাকার অঙ্কে দেওয়া হয়। যা ব্যবহার করে তিনি খেয়েপরে বাঁচেন। আর বাড়ির মহিলা টাকা পাননা। কিন্তু খেয়েপরে বাঁচেন। অর্থাৎ তিনি মজুরিটা, টাকায় নয়, অন্যভাবে পাচ্ছেন। ক্যাশে নয়, কাইন্ডসে। মানে খাওয়া-দাওয়া-বেঁচে থাকা-সন্তান প্রতিপালন ইত্যাদি যাবতীয় খরচা তো পরিবার বহন করছেই। আর মজুরি = শ্রমশক্তি পুনরুৎপাদনের খরচা। ফলে মহিলা যে কাজের লোকের থেকে খুব বেশি বঞ্চিত হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। উভয়েই মোটামুটি একই মজুরি পাচ্ছেন, আলাদা ফর্মে। ফলে নিছক মার্কসীয় অর্থনৈতিক হিসাবে অতিরিক্ত "শোষণ' এর তত্বটা দাঁড়ায়না। যদিও, উভয়েই একটা মাত্রায় শোষিত হচ্ছেন। উদ্বৃত্ত মূল্য টা পাচ্ছেন না।

    এবার এই উদ্বৃত্ত মূল্যটা কোথায় যাচ্ছে? যিনি বাইরের লোক, মজুরি-খাটা শ্রমিক, তিনি বলতে পারেন, ওটা ঐ পরিবারটি লুঠ করছে। কিন্তু পরিবারের অন্তর্গত যে মহিলা, তিনি কি বলবেন? ঐ "লুঠ' করা উদ্বৃত্ত মূল্য তো তাঁর ভোগেও লাগছে। এ যেন বিড়লার ছেলে পনেরোশো টাকায় হিন্দমোটর্সে চাকরি করছে, আর বাড়ি ফিরে বাবার পয়সায় মার্সিডিজ চড়ছে।

    ফলে উদ্বৃত্ত মূল্য অন্য কেউ পকেটে পুরছেনা। তাহলে মহিলা "শোষিত' বা "বঞ্চিত' হচ্ছেন কিভাবে? মার্কসীয় তত্ব এর কোনো উত্তর দেয়না। "পুরুষতন্ত্র', "সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতা' ইত্যাদি কিছু ভাসা-ভাসা কথা বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়। যার একমাত্র প্রেসক্রিপশন হল, যখন নারী রোজগার করবে, তখন এইসব অসাম্য টসাম্য উবে যাবে।

    বলাবহুল্য, এটা আসল সমস্যাটাকে পাশ কাটানো। আসল সমস্যাটা কোথায়? সমস্যাটা মজুরির অঙ্কে নয়। সমস্যা হচ্ছে এই মাইন্ডসেটে, যে বাড়ির কাজটা "খেলো'। কাজেই, টাকা নয়, এখানে দু ধরণের কাজের ইকুয়াল রাইটের প্রশ্নটা তুলতে হবে। মানে ইকুয়াল রাইট টু বি ডিফারেন্ট। আমি আলাদা কাজ করি, তাতে পণ্য উৎপাদিত হয়না, মার্কসীয় মাপকাঠিতে ধরা পড়েনা তো কি, আমারও কাজের জন্য "সম্মান' পাবার অধিকার আছে। ইত্যাদি ইত্যাদি।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৭ মে ২০০৮ ০৮:৪৬395986
  • সৌন্দর্যের বিকল্প সংজ্ঞা সন্ধান/তৈরি করে লাভ কি আছে খুব ? প্রচলিত ধারণা তো বেসিক বাওলজিক্যাল চাহিদা থেকেই এসেছে, সেটাকে তো অস্বীকার করা যাবেনা।

    আমার প্রশ্নটা এই ডিসিপ্লিনারি পাওয়ার কে নিয়েই , কোনো কিছুকে গ্লোরিফাই করিয়ে সেটাকেই এমপাওয়ার্মেণ্টের পন্থা বলাটাকে আর এই এমপাওয়ার্ড হবার জন্য একটা কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে দিতে।

    এটা থাকছে বলেই এই যারা এমপাওয়ার্ড হবার জন্য কণ্ডিশণ্ড হতে পারছেনা/ চাইছে না/ চেয়েও পারছে না , তাদের এক্সক্লুশানের প্রশ্নটাও থাকছে।
    আর তাকে কাউণ্টার করতে ঐ রাইট টু বি আনইক্যুয়াল এর ক্লস আনা।

    মানে কি, ঐ তথাকথিত আনইক্যুয়াল কাজ গুলি কেও গ্লোরিফাই করিয়ে এমপাওয়ার্ড করা , তাই তো ?
    এটাও তো একধরণের ডিসিপ্লিন্ড করাই, কণ্ডিশনিং ই !

    সেটা আনলে, ঐ যারা, একটি প্রোটোটিপিক্যালি গ্লোরিফায়েড কাজ এ এমপাওয়ার্ড হতে চাইছে না, বা পারছে না তাদের নাহয় ইনক্লুড করা গ্যালো।

    কিন্তু এখন এই সব রকম এর এমপাওয়ার্ড সেট এ যারা ঢুকতে পারবে না, সমাজ তাদের ঢোকার সুযোগ , সেই যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ দিচ্ছে না বলে, তাদের কি হবে ?

    এই 'এক্সক্লুডেড' সেকশান কে বিকল্প পলিটিক্স কি দিচ্ছে , সেটা জানতে চেয়েছিলাম আগে, উত্তর পাই নাই।

    আর, আরো একটা কথা মনে হচ্ছে। সবাই কি আদৌ এমপাওয়ার্ড ফিল করতে চায় নাকি সেটা হবার জন্য গ্রুম্‌ড হবার প্রসেসটা র চাপ নিতে চায় ? তারা কি সারভাইভালের অযোগ্য বলে ইররিভার্সিব্লি এক্সক্লুডেড হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে ?

    এই এমপাওয়ার্মেণ্টের জন্য এনফোর্সড কণ্ডিশনিং , গ্লোরিফিকেশান , গ্ল্যামার আসোসিয়েশন এইগুলো বাদ দিয়ে সমস্ত কিছুকে জাস্ট সম্মানজনক বলে আক্সেপ্ট করা হোক, এটা কি বেটার নয় ? রাইট টু বি আনইক্যুআল র সাথে সাথে রাইট নট টু বি কণ্ডিশন্ড কি ডিসিপ্লিন্ড ও থাকুক।
  • Ishan | 12.240.14.60 | ০৭ মে ২০০৮ ০৯:১২395987
  • পি। আপনার শেষ পোস্টটার অনেকেগুলো পয়েন্টেই আমি একমত। কয়েকটা টুকরো সমস্যা আছে। সেগুলো পরে আলোচনা করা যাবে।

    স্যান। প্রশ্ন করে ফেলো।

    পিনাকী। দু নম্বর পয়েন্টটা নিয়ে আগের পোস্টেই লিহেছি। এক নম্বরটা একটু বড়ো করে লিখতে হবে। আজ সারাদিন হয়নি, আর এখন ঘুম পাচ্ছে। কাল লিখব। :)
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৭ মে ২০০৮ ১১:৩২395988
  • একটা কথা ছিল : মেয়েদের আর্থিক স্বনির্ভরতার জন্যে মোটিভেট করার একটা বাস্তব প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কোন মেয়ে বিবাহিত জীবনের প্রথম দিকে তাঁর স্বামীর সাথে দারুণ আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর উপর ভরসা করে চাকরি ছেড়ে দিলেন এবং শুধুমাত্র ঘরের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করলেন। ৫ কি ১০ বছর পরে যদি স্বামীর সাথে ডিভোর্সের ব্যাপার চলে আসে - তিনি তো হয় পথে বসবেন নয় অনিচ্ছা সঙ্কেÄও সেই সম্পর্ক টেনে চলতে বাধ্য হবেন। আমি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে জোর করে কিছু করানোর হয়ে সওয়াল করছি না। ঘরের কাজকে অমর্যাদা করার কথাও বলছি না। কিন্তু, এসবকিছুর পরেও আর্থিক স্বনির্ভরতার অপরিহার্যতার পক্ষে কথা বলছি। প্রথাগত ইক্যুয়ালিস্ট অবস্থান যদি এইটা দাবী করে থাকে - যে শুধুমাত্র "আর্থিক স্বনির্ভরতা'-য় নারীর মুক্তি, এবং এটা করতে গিয়ে অন্য সব ভূমিকাকে undermine করে থাকে - আমার মতে তা ঠিক নয়। তেমন-ই আমার এটাও মত যে - আর্থিক স্বনির্ভরতা ছাড়া নারীর জীবন আজকের সমাজে অত্যন্ত ভাল্‌নারেবল। সেইটা বলার-ও একটা দায় কনসাস মানুষের থেকে যায়।
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৭ মে ২০০৮ ১২:৩৮395989
  • এইবার আমার সবচেয়ে দরকারি প্রশ্ন:

    ক্ষমতার চোখ দিয়ে না দেখে, ক্ষমতা যাকিছুকে "খারাপ", "নীচ", "অমর্যাদাকর" - ইত্যাদি বলে চিহ্নিত করেছে, সেগুলোকে বিকল্প দৃষ্টিতে "ভালো", "উচ্চ" বা "মর্যাদাকর" ভেবে নিলেই কি ক্ষমতার সাথে লড়াই শেষ হয়ে যায়? ব্যাক্তির ক্ষমতার কাছে হেরে যাওয়ার গ্লানি তাতে কিছুটা লাঘব হয় বটে, ক্ষমতার বাল-ও কি তাতে ছেঁড়া যায়? এমনকি কখনো কখনো তা কি ক্ষমতার সুবিধে করে দেয় না?

    ধরুন ভারতবর্ষ। এখানে বিগ ক্যাপিটাল = ক্ষমতা - যদি ধরে নিই, তার মূল ইন্টারেস্ট হল ভারতের ৩০% উচ্চ-ক্রয়ক্ষমতাযুক্ত মানুষের বাজার। বেলপাহাড়ি তে বিদ্যুৎ পৌঁছোল কি না - সে নিয়ে তার কোন দায় নেই। এই ক্ষমতার চোখে গ্রাম = অন্ধকার = backwardness = আরো যা কিছু নেগেটিভ। অন্যদিকে শহর = আলোকিত = প্রগতিশীলতা = যা কিছু পসিটিভ। এখন বেলপাহাড়ির মানুষ "বিদ্যুৎ চাই" - এই দাবি তুলবেন কি তুলবেন না? প্রশ্নটা শুনে হাসি পাচ্ছে নিশ্চয়ই। কিন্তু ধরুন এতক্ষণ আমরা যে আলোচনা করেছি, তাতে একটা পলিটিক্স এরকম-ও হতে পারে : গ্রাম কেন শহর হতে চাইবে? শহরের আলোকময়তা মানেই ভালো - কে বলেছে? গ্রামের আলোকহীনতাকেই আমরা এখন থেকে আমাদের গর্ব ভাববো। তাহলে বিদ্যুৎহীনতার জন্যে আর আমাদের খারাপলাগা, শোষণ বা বঞ্চনার অনুভূতি - ইত্যাদি হবে না। এতে করে আমরা ক্ষমতার দৃষ্টি দিয়ে গ্রাম শহর কে দেখার ট্র্যাপ থেকে বেরিয়ে এলাম।

    ব্যক্তির জীবনে যে পলিটিক্স নিয়ে আমরা এতক্ষণ চর্চা করলাম - তার সামাজিক অভিব্যাক্তিটা কি এইরকম হবে?

    হলে আমার হাল্কা অপত্তি আছে। :-))
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৭ মে ২০০৮ ১৩:১৩395990
  • প্রশ্নটাকে আর একটু অন্যভাবেও রাখা যায়। শোষণ, বঞ্চনা - এই ব্যাপারগুলি কি কেবল-ই সাবজেক্টিভ? অর্থাৎ শুধু অনুভূতি হলে শোষণ আছে, না হলে নেই? আমি দাবী করছি না কেউ শোষিত অনুভব না করলেও তাঁকে জোর করে প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটানো হোক। কোন মার্ক্সবাদ যদি এই কথা বলে থাকে - তাহলে সেই মার্ক্সবাদ ভুল। কিন্তু যেখানে অবজেক্টিভলি শোষণ আছে ( যদি অবজেক্টিভ ট্রুথ বলে কিছু না থাকে, তাহলে তো চুকেই গেল ) সেখানে মানুষকে ( মানে যে শোষণটা অনুভব করছে না তাকে ) সেই শোষণটা সম্বন্ধে সচেতন করলে আপত্তির কি আছে? যে শোষিত হচ্ছে বলে মনে করছে - সে তো তার মত করে জনগণকে ভাবাতে চাইবেই।
  • san | 220.226.11.105 | ০৭ মে ২০০৮ ১৫:২৭395991
  • এইবারে আমার দুটি কোচ্চেন ঈশানকে।

    এক। এইটা পিনাকী প্রায় বলেই দিয়েছেন। দুজনের সংসারে একজন বাইরের কাজ করলেন আরেকজন ঘরের কাজ, এবং দুজনেই সম্মান অধিকার ইত্যাদি পেলেন। ফাইন। কিন্তু দুর্ঘটনা - অর্থাৎ মৃত্যু, প্রতারণা,বিচ্ছেদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে 'সক্কলে বাইরে বেরিয়ে রোজগার করুক ' এই স্ট্যান্ড কিন্তু একটা সলিউশন দ্যায় - কোনো মেয়েকে অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকতে না হোক এইটা এনশিওর করে। তো এইটা কিভাবে ট্রিট করা হচ্ছে ঈশানের মডেলে, যেখানে স্বাবলম্বনের মূল্য শেখানো মানে জোর ফলানো?

    দুই। রাইট টু বি ডিফারেন্ট থিওরিতেও ক্ষমতার লিঙ্গজনিত অসাম্য কমবে ঠিকই - কিন্তু তার জন্য শুধু মেয়েটিকে নয় পরিবার শুদ্ধু সকলকে থিওরিটাতে বিশ্বাস রাখতে হবে। সক্কলে রোজগার করলে কিন্তু আমি ক্ষমতার ভারসাম্যে আসার সুযোগ পাই ইরেসপেকটিভ অফ পরিবারের বাকিরা সম-অধিকার সম-ক্ষমতাবন্টনে বিশ্বাস করে কিনা। অর্থাৎ তুমি সমান অধিকারে বিশ্বাস করো না করো আই ডোন্ট কেয়ার - আমার জীবনে থাকতে হলে তোমাকে ক্ষমতার সমবন্টনে আসতেই হবে- এই অপশনটা প্রত্যেকটা মেয়ের কাছে থাকবে 'পথে এবার নামো সাথী' অবস্থানে । এবারে সে ভালোবেসে/সাহস করে এটা প্রয়োগ করলো না করলো তার ব্যাপার - কিন্তু অপশনটা থাকে।

    কিন্তু নিজে রোজগার না করলে - পরিবারের বাকিরা সমান অধিকারে বিশ্বাস করলো তো করলো - না করলে কোথাও কিছু করবার নেই - কেননা টাকাকেন্দ্রিক জীবনে সম্পর্ক ছেড়ে বেরোবার অপশনই নেই - অতএব সমানাধিকার আনতে হলে জনতার মানসিকতার উপরে ভরসা করো কবে তারা কমরেড ঈশানের লেখা পড়ে উদ্বুদ্ধ হন ।

    ডি: : আমি কিন্তু ঘরের কাজ উঁচু না নিচু এসব নিয়ে কিছু বলছিনা - গিভন দ্যাট যে আমাদের দেশে ক্ষমতার প্রচন্ড অসাম্য বর্তমান, অসাম্য কমাতে ঈশানের থিওরি আর ইকুয়ালিস্ট - ফেমিনিস্ট থিওরির তুলনামূলক প্রয়োগের সুবিধে-অসুবিধে বলতে চাইছি।

    আরো প্রশ্ন আছে আলাদা করে লিখছি।

  • san | 220.226.11.105 | ০৭ মে ২০০৮ ১৫:৩২395992
  • অন্য ভাবেও বলা যায় - আমি সমান অধিকার পাবো কিনা সেটা শুধু আমার ওপরেই ডিপেন্ড করবে এই রকম পরিস্থিতিতে আমাকে নিয়ে আসার চেষ্টা করা ভালো? না সমাজ শুদ্ধু লোক কবে ঘরের কাজের মূল্য দেবে তার জন্য জনচেতনা বৃদ্ধির চেষ্টা করা ভালো? ভালো মানে বাস্তব প্রয়োগের কথা বলছি।
  • san | 220.226.34.183 | ০৭ মে ২০০৮ ১৯:১১395993
  • তিন নং টা তর্ক না - লোকে নিজেকে শোষিত না ভাবলে তাদের শোষিত বলে ঘোষাণা করা মানেই জোর ফলানো - এর প্রেক্ষিতে একটা ব্যক্তিগত কৌতুহল।

    আমাদের দেশে তো বহু বহু পরিবারে এই রকম ধারণা দিব্যি আছে যে খিদে পেলে যেমন খেতে হয় মেয়ের বিয়ে দিলে পণ দিতে হয়- একই রকম স্বাভাবিক। তাদের আলাদা করে খারাপ কিছুও লাগেনা । তা অনেকেই যখন পণ দেয়াকে স্বাভাবিক বলেই ভাবে, অত্যাচার ভাবেনা - তাদের কে গায়ের জোরে শোষিত বলে ঘোষণা করা কি কারো উচিত? বা পণপ্রথা বন্ধ হোক/বেআইনি হোক - ফেমিনিস্টরা যখন এই দাবি করে সেইটা কি জোর ফলানো? জাস্ট ঈশানের মতটা জানতে চাইছি -মানে নিজেদের অত্যাচারিত হওয়া সবাই বোঝে এই থিওরিকে ঠিক কদ্দূর ঈশান এক্সটেন্ড করতে চায় আমি দেখতে চাই আর কি।
  • kallol | 220.226.209.5 | ০৭ মে ২০০৮ ১৯:৩২395995
  • স্যান, খিদে পাওয়ার তুলনাটা ঠিক হলো না। খিদে পেলে খেতে হয়। কিন্তু যদি না খেতে হয় তবে ভালো লাগে না।
    মেয়ের বিয়ে হলে পণ দিতে হয়। না দিতে হলে খারাপ লাগে না। কোন পাত্র যদি বলে (ঐ পরিবেশেই - আমি পণ নেবো না, আমার কুষ্ঠিতে আছে পণ নিলে পিতৃবিয়োগ) - তবে?
  • san | 220.226.34.183 | ০৭ মে ২০০৮ ১৯:৪১395996
  • না দিতে হলে খারাপ লাগেনা? কে বললো কল্লোলদা? যাদের মজ্জায় মজ্জায় ঢুকে আছে এ তো রেওয়াজ তাদের দিব্যি খারাপ লাগে - নিজের স্ট্যাটাস জাহির করা হলোনা, মেয়েকে খালিহাতে পাঠালাম, আহা ওরা না চাক লোকে কি বলবে, ওবাড়িতে মা তোমার শক্ত জমি হবে - পণ দিতে না পারলেও অনেকেই প্রবল দু:খিত হয়ে পড়েন যে দেখি । সবাই না। কেউ কেউ দায়ে পড়ে দ্যান আর কেউ কেউ গায়ে পড়েও দ্যান। কেউ কেউ নিয়েই তো বলছি এতক্ষন ধরে, মানে যারা নিজেদের অত্যাচারিত ভাবেনা তাদের নিয়ে। সবাই না ।
  • ranjan roy | 122.168.77.157 | ০৭ মে ২০০৮ ১৯:৫৪395997
  • স্যান, পিনাকি এবং ঈশান এর কথা থেকে একটা ব্যাপার আমার কাছে স্পষ্ট হচ্ছে।
    এক, আমরা যদি ধরে নিই যে আমাদের পোলেমিকের লক্ষ্য হচ্ছে বঞ্চিত এবং দমিত( ঈশানের এক্সক্লুডেড এর সাব সেট)দের এম্পাওয়রমেন্টের রণনীতি খোঁজা ( তা সে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা শ্রেণী যে লেভেলেই হোক না কেন) তাহলে দেখতে পারছি - মেয়েদের ( পড়ুন বঞ্চিতদের)ইন্ডিপেন্ডেন্ট আয়ের স্রোত এর কোন বিকল্প নেই। এর মানে এই নয় যে চাকরি করলেই মেয়েটি এমপাওয়ারড হবে। অবশ্যই পরিবারের মধ্যে তার স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে সম্মান করা একটি সাংস্কৃতিক ব্যাপার। সেই আবহাওয়া না থাকলে কি হবে?
    মেয়েটিকে স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আদায়ের জন্যে লড়তে হবে। যে মডেল স্যান তুলে ধরেছে। --তুমি যদি আমার সঙ্গে থাকতে চাও তাহলে আমার স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে সম্মান দেওয়া একসঙ্গে থাকার পূর্বশর্ত। তা নাহলে বিবাহিত চাকুরিজীবি মেয়েটি doubley oppressed হবে। কাজের ক্ষেত্রে এবং বাড়িতে, দু,জায়গায় খেটে মরা।
    কিন্তু, স্বতন্ত্র আয় না থাকলে এই লড়াইটাও ভালো ভাবে লড়া যাবে না।
    আবার বলি, লড়াইটা কিসের? আমার বিবাহিত স্ত্রীর স্টিরিওটাইপের বাইরে আলাদা ভাবে বাঁচার ইচ্ছের প্রতি সম্মান ও স্বীকৃতি আদায়। । এইখানেই ঈশানের বক্তব্য প্রাসংগিক হয়ে উঠছে।
    বাকিটা পড়ে লিখছি।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৭ মে ২০০৮ ২০:৫৩395998
  • পণ কথাটাও এতো লুসলি ব্যবহার না করে একটু ডিফাইন করে নিলে ভালো হয়। মা বাবা মেয়েকে (এবং ছেলেদের ও ) এমনি ইচ্ছে হয় বলেও অনেক কিছু দিয়ে থাকেন, বিয়ের আগেও আর পরেও। বিয়ের আগের সবকিছু স্নেহের উপহার আর বিয়ে ও তৎপরবর্তী যা কিছু পণ (এবং সেটা খালি মেয়েদের বেলাতেই), এটা একটু অতিসরলীকরণ লাগলো।
    আর সেভাবে দেখতে গেলে তো সাবালিকা হয়ে যাবার পর ই , মা বাবার কাছ থেকে কিছু না নেওয়া উচিত।
    আর যে স্ট্যাটাস সিম্বল কি সোসাইটি র কাছে শো-ওফ করার তাগিদে দিচ্ছে, তার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে , কিন্তু তাকে শোষিত বলতে আপত্তি আছে।

    ডি: এর মানে এই নয় যে, 'পণ' দেওয়া নেওয়া টা স্বাভাবিক মনে করাটা খারাপ ব্যাপার নয়।

    আর, কেউ শোষিত হচ্ছে সেটা সে নিজে না বুঝলে তাকে বোঝানো টা গায়ের জোর ফলানো, এই স্টেটমেণ্ট যদি ঈশানবাবু দিয়ে থাকেন (মানে, মিস করে গেছি হয়তো) সেই পয়েন্টটা নিয়ে স্যান এর তোলা প্রশ্ন কিন্তু ভ্যালিড। আর, সেটা নিয়ে আমি কিন্তু 'তর্ক' ই করতে চাইবো। :)
  • pi | 69.251.184.3 | ০৭ মে ২০০৮ ২১:০৪395999
  • পিনাকীবাবু,
    ক্ষমতা যাকে 'খারাপ', 'অমর্যাদাকর' বলেছে, বিকল্প দৃষ্টিতে 'ভালো'বা 'মর্যাদাকর' বলে দিলেই তো লড়াই শেষ হয়ে যায় না তো।
    সেই জন্যই তো প্রশ্নটা রেখেছিলাম, যাদের যা পাওয়ার/হবার অধিকার রোএছে, কিন্তু সমাজ,পরিস্থিতি র জন্য সেটা পবার অধিকার, হবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত , সেই 'এক্সক্লুডেড' দের জন্য ঈশানবাবুর বিকল্প পলিটিক্স কি বলছে ?
  • san | 220.226.79.251 | ০৭ মে ২০০৮ ২১:২৯396000
  • শোষিত না তো। যারা নিজের ইচ্ছেয় পণ দেবে তারা খামোখা শোষিত হতে যাবে কেন? মানে আমিই বা তাদের শোষিত বলতে যাবো কেন? আমার বলার কথা হল, কিছু লোকে তো পণ ব্যাপারটা পছন্দই করে - যে দিচ্ছে তারও পছন্দ যে নিচ্ছে তারও - তাহলে পণপ্রথা ব্যাপারটাই খারাপ এই অ্যাবসলিউট স্টেটমেন্ট কি ফেমিনিস্টরা দিতে পারবেন,না পারবেন না, ঈশানের যুক্তি অনুযায়ী?

    আরেকদিকে যারা ঠিক পরম উৎসাহে দ্যান তা নয়, মানে না দিলে মনের দু:খে বনে যাবেন তা নয় - কিন্তু দেয়াটাকেও স্বাভাবিক বলেই ভেবে দ্যান , শোষণ বা অত্যাচার অতটা ভাবেন না।বেশিরভাগ লোকে তো এর মধ্যেই পড়ে। তো তারা যখন প্রতিবাদ করে এই অবস্থা পাল্টানোর চেষ্টা করেন না , মেনেই নেন - শোষণ এর মত অতটা স্ট্রং ওয়ার্ড অতটা যখন তাঁরা নিজেরা ভাবেন না, কারুর কি অধিকার আছে তাঁদের শোষিত বলে পণপ্রথা বন্ধ করতে বলার?

    * এখানে পণ মানে ডাইরেক্ট পণ,যেটা আইনত দন্ডনীয়।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ০০:৩০396001
  • ঈশানবাবু লিখেছেন, ঘরে শাশুড়ি, বউ দুজনেই সেই 'ক্ষমত ফিল' করে। এটা নিয়ে আপত্তি ছিলো কিঞ্চিত। এটা কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঠিক ক্ষমতা র অনুভূতি না, ঐ ভিখিরির ঘটিবাটি সম্বল যা আছে তাকে আঁকড়ে ধরে থাকার মতন। ভিখিরি টা একটু বাড়াবাড়ি বলা হয়ে গ্যালো হয়তো। কিন্তু নিজেদের ক্ষমতা 'ফিল' করার থেকেও, অন্য একটি চাকুরীরতা স্বনির্ভর মেয়ের ক্ষমতা ওনারা অনেক বেশি ফিল করেন। যতটা ঐ মেয়েটি নিজেও করেনা।
    সেটার একটা কারণ অবশ্যই, ঘরের কাজ টাকে তার প্রাপ্য সম্মান সমাজ দ্যায় না, তাই তারা নিজেরাও সেটাকে এমন কিছু সম্মানের মনে করেন না।
    কিন্তু আরো একটি কারণ আছে, আর সেটা ঐ অর্থনৈতিক স্বাধীনতাটা না পাওয়া। ( ব্যতিক্রম আছে অবশ্যই, যেখানে রোজগারের টাকা র পুরো acceess গৃহবধূর থাকে)

    আরো একটা কথা, এই ঘরের কাজটা র সাথে মেয়েদের ই associate করা, এটা প্রচলিত ব্যাপার। কিন্তু খুব স্বাভাবিক কি ? মানে, মেয়েদের ঐ সন্তান জন্ম দেওয়ার মতন biologically distinct ঘটনা তো এটা নয়।
    মেয়েদের বাইরের কাজ করতে পছন্দ করাটা যতটা natural, কোনো ছেলের ঘরের কাজ করতে পারাটাও তাই , বা দুই ধরণের কাজ ই দুজনের ই পছন্দ করাটাও তাই এবং এটা ভীষণ ভাবে person to person differ করে, ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে।
    প্রচণ্ড specific কিছু ক্ষেত্র ছাড়া , মেয়েলি কাজ, পুরুষোচিত কাজ এই প্রচলিত ধারণা গুলো মূলত: কণ্ডিশনিং ।
    পুরুষ chef কি fasion designer নিয়ে মাতামাতি হয়, কিন্তু পুরুষ বাড়ি বসে রান্না বা সেলাই করছে , এটা নিয়ে নাসিকা কুঞ্চন ক্যানো?

    যে রাইট টু বি ডিফারেন্ট এ মেয়েদের ঘরের কাজ করাটাকে সম্মানিত বলার দাবী আসছে, পুরুষের ঘরের কাজ করাটাকে নয় ক্যানো?
    মানে , in general ঘরের কাজ করাটাকে সম্মানীয় বলা হোক।

    আর সেটা না হলে, ঐ ঘরের কাজ জরুরী কিন্তু সম্মানজনক না এই মনোভাব, মেয়েদের বাইরের কাজ করাটা ঐ বেরোতে না পারা মেয়েদের কাছে empowerment এর একমাত্র রাস্তা মনে হওয়াটা আর বাইরে কাজ করা মেয়েটিকে ঘরে এসেও তার ই 'naturally' করার সব গৃহকর্ম করে 'double oppressed' হয়ে থাকা চলতে থাকবে।

    আরো একটা কথা, আমি খামোখা পি ক্যানো হতে যাবো ! pi যদি পি হয়, p তবে কি ?
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৮ মে ২০০৮ ০১:০৩396002
  • আপনি ইপি (ipi) হয়ে দেখতে পারেন। মনে হয় ভালো লাগবে। কন্ডিশনিং নয়। জাস্ট সাজেশন। :-))
  • shyamal | 64.47.121.98 | ০৮ মে ২০০৮ ০২:৪৯396003
  • পাই,

    আমেরিকায় যত বাঙালি দেখেছি, বেশিরভাগ পুরুষেরা রান্না, কার্পেট ভ্যাকিউম করা, ডিশ ওয়াশারে বাসন দেওয়া, বাসন মাজা, লন্ড্রি করা -- এই কাজগুলোর একটা সাবসেট করে। তবে যারা বিয়ের পর বৌএর সঙ্গে প্রথম আমেরিকায় আসেন, তাদের মধ্যে বাড়ির কাজ করার প্রবনতা কম দেখা যায়।
    মনে রাখবেন, আমরা যারা বিয়ের আগে এসেছি, তারা সবকাজে মোটামুটি সিদ্ধহস্ত হয়ে যাই বাধ্যতামুলক ভাবে।
  • nyara | 67.88.241.3 | ০৮ মে ২০০৮ ০২:৫৯396004
  • "মেয়েদের বাইরের কাজ করতে পছন্দ করাটা যতটা natural , কোনো ছেলের ঘরের কাজ করতে পারাটাও তাই , বা দুই ধরণের কাজ ই দুজনের ই পছন্দ করাটাও তাই এবং এটা ভীষণ ভাবে person to person differ করে, ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে।"

    পাই-এর এই মন্তব্যটি ইভোলিউশনারি বায়োলজি কতটা সাপোর্ট করে? hunter-gatherer সমাজের relic আমাদের জিনে রয়ে গেছে না, যেখানে গ্যাথারিং-এর ইকুইভ্যালেন্ট কাজ মহিলাদের বেশি 'natural'?
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ মে ২০০৮ ০৩:১৮396006
  • মিটিং এর জ্বালায় টই লাটে উঠেছে। :) এক এক করে উত্তর দিলে প্রচুর সময় লাগবে। তাই এক সঙ্গেই লিখি।
    কথাবার্তা মূলত: একটা লাইনেই হচ্ছে। আলাদা আলাদা করে উত্তর না দিয়ে একটাই কেস স্টাডি ধরা যাক। পিনাকী নেপালের ক্ষেত্রে যেটা লিখেছে। আমি সেটা নিজের মতো করে সাজাচ্ছি। একটু জেনেরিক কায়দায়।

    এই কেস স্টাডিতে আমরা "একটি লোক' কে নিয়ে আলোচনা করব, যে, খুব সোজা চোখে, অত্যাচারিত। ধরা যাক, লোকটি নেপালে থাকে। লোকটি সমাজের নিচের তলার। এবং ধরা যাক, লোকটির বিশ্বাস, রাজা ঈশ্বরের প্রতিভূ। তিনি কোনো অন্যায় করতে পারেন না। লোকটির এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে রাজা তাকে বেগার খাটাচ্ছেন। সে খাটছে। এবং ঠকছে। এবং তার পরেও রাজার উপর বিশ্বাস রাখছে। এবং বাকি সামন্তপ্রভুরাও একই কাজ করছেন। বেগার খাটাচ্ছেন, কাজের মূল্য দিচ্ছেন না ইত্যাদি। লোকটি এর পরেও ফোঁস করছে না। সমস্ত "অন্যায়', "অবিচার' মেনে নিচ্ছে। এবং এই ভাবেই একদিন অবহেলায় বঞ্চনায়, অনাহারে, চিকিৎসাহীনতায় মারা যাচ্ছে।

    এই হল কেস, এবং, মূল প্রশ্নটা হল, এখানে আমি কি স্ট্যান্ড নেব। আমি কি বলব না, যে, বাছা, তুমি সচেতন ভাবে ভুল করছ, ঠকছ? তোমার কনসাসনেস "ফলস কনসাসনেস' এবং তোমার কিসে ভালো হবে সেটা আমার থেকে শেখা দরকার?

    মূলত: এই একই প্রশ্ন দময়ন্তী এবং পি তুলেছে। কয়েকটা অন্য উদাহরণ দিয়ে। কোনো মেয়ে যখন "স্বেচ্ছায়' কন্যাভ্রূণ হত্যার সিদ্ধান্ত নেন, বা কোনো মেয়ে যখন "নিজেই' বাবাকে পণের জন্য চাপ দেয়, সেখানে কি বলা উচিত নয়, বাছা তুমি ভুল করছ? সব কটার আলাদা উত্তর দেব না। আমাদের কেস স্টাডির "একটি লোক' কে নিয়েই এখানে কথাবার্তা হবে।

    লক্ষ্য করুন, কেস স্টাডি টা করতে গিয়ে, আমি লিখেছি, লোকটি "শোষিত', "অত্যাচারিত' হচ্ছে। যেন ওটা একটা অ্যাবসলিউট টার্ম। যেন খালি চোখে এমনি এমনি দেখলেই বোঝা যায়, যে, লোকটি শোষণের স্বীকার হচ্ছে। আপাত:দৃষ্টিতে সেরকম মনে হচ্ছে বটে, কিন্তু শোষণ টার্মটা ইউনিভার্সাল কোনো মানবিক ব্যাপার নয়। ক্ষিধে যেমন মায়ের পেট থেকে পড়েই টের পাওয়া যায়, তেমন নয়। আবার তার মানে যে এটা পিওরলি সাবজেক্টিভ তাও না। আপনার মিষ্টি ভালো লাগে আমার লাগেনা, কিন্তু আমরা সবাইই একমত হচ্ছি, যে, লোকটি "অত্যচারিত' হচ্ছে। এর কারণ একটাই। আমরা "গণতন্ত্র', "মানবাধিকার', ইত্যাদি কয়েকটি চশমা পরে পুরোটা দেখছি। যেহেতু এই চশমাগুলি মোটামুটি ইউনিভার্সাল, কাজেই, আমাদের মনে হচ্ছে, লোকটির শোষিত হওয়া একটি অ্যাবসলিউট ফেনোমেনন। লোকটি নিজে তা মনে করছেনা, কারণ, তার ঐ চশমায় অধিকার নেই।

    এবার প্রশ্ন হল, এই চশমা ব্যাপারটা কি? হঠাৎ পাইকিরি রেটে একই চশমা আমরা পরলামই বা কি করে? সেটা টেরই বা পাচ্ছিনা কেন? এই সব কটা প্রশ্নের উত্তরই এক। যে, এই চশমার নাম "ডিসিপ্লিনারি পাওয়ার'। এর কর্মপদ্ধতি নিয়ে আগেই লিখেছি, এখন শুধু একবার স্মরণ করিয়ে দিই ছোটো করে।
    এক। এই পাওয়ার দমনমূলক নয়। মানুষ স্বেচ্ছায় পার্টিসিপেট করে এতে। "আমাকে একটা দাও' বলে চশমা পরতে চায়।
    দুই। এই পাওয়ার মূলত: একটি ট্রেনিং এর পদ্ধতি। ট্রেনিং শেষ হলে যে কন্ডিশনিং অস্থিমজ্জায় ঢুকে থাকে। সত্বার অংশ বলে মনে হয়।
    তিন। এই পাওয়ার মানুষকে এমপাওয়ার করে। পিনাকি যখন বলছে, গণতান্ত্রিক অধিকার ঐ মানুষটির অধিকারের সীমানাকে বাড়িয়ে দিত, তখন ঠিক এই কথাই বলছে। যে, গণতন্ত্রের ট্রেনিং আসলে লোকটিকে এমপাওয়ার করত।
    চার। ডিসিপ্লিনারি পাওয়ারের মার্জিন আছে। আমাদের কেস স্টাডির লোকটি মার্জিনের ওধারে বাস করে। (আরও মার্জিন থাকতে পারে, সেগুলোর কথায় পরে আসছি) লোকটি এক্সক্লুডেড।

    ফলে এখানে লোকটি অত্যাচারিত হচ্ছে যখন বলছেন তখন আপনি লোকটির এক্সক্লুশনের বিরুদ্ধে বলছেন। ডিসিপ্লিনারি পাওয়ার লোকটিকে এমপাওয়ার করতে পারে, আপনি এমপাওয়ারমেন্টের বিরুদ্ধে বলছেন। একশবার বলতেই পারেন। লোকটিকে বোঝাতেই পারেন, এবং বোঝাবেন। লোকটির এমপাওয়ারমেন্টের জন্য তাকে এবং তাদের সংগঠিতও করতে পারেন, এবং করবেন। শুধু হাজার বোঝানোর পরেও না বুঝলে তাকে আপনি জোর করতে পারেন না। "অধ:পতিত' ইত্যাদি বলেও গাল দিতে পারেন না।

    কেন পারেন না? কারণ, এক্সক্লুশন একরকম হয়না। আমাদের পুরোনো কেসের বস্তিবাসী মেয়েটির কথা মনে করুন। যার সুন্দরী হবার সাধ আছে, কিন্তু সামর্থ্য নেই। বা, যে, এমএ পড়তে চায়, কিন্তু টাকা নেই। এই লোকটিকে আমরা সেরকমি একজন মানুষ ধরে নিয়েছি। যে "চেতনা'র আলোকে আসতে চায়। কিন্তু সুযোগ নেই বলে পারেনা। যে, ডিসিপ্লিনড হতে চায়, কিন্তু সুযোগ পায়না। আমরা অতি অবশ্যই তাকে ডিসিপ্লিনড হবার সুযোগ দেব। যাতে সে সুযোগ পায় তার জন্য ফাইট দেব। এ পর্যন্ত আমি কর্মপদ্ধতির প্রস্‌সঙ্গে পিনাকীর সঙ্গে ১০০% একমত। যদিও এই ডিডাকশানটাতে আমি এসে পৌঁছলাম অন্য দিক দিয়ে, তবুও ইকুয়ালিস্ট স্ট্যান্ডের সঙ্গে আমার বিষেষ তফাত এই এই পর্যন্ত। ইকুয়ালিস্টরা বলেন ইকুয়াল হতে দিন, আমি বলি ইকুয়াল হবার বা ডিসিপ্লিনড হবার অধিকার দিন।

    কিন্তু এর সঙ্গে অন্য একটা জিনিসও আমাকে মনে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে এক্সক্লুশনের আরেকটি দিকও আছে। স্যান যেটা তুলে ধরেছিল। যে, সক্কলেই মোটেই "ডিসিপ্লিনড', "আলোকিত', "সুন্দরী' হতে চায়না। সে জন্য নিবেদিতপ্রাণও হয়। কেউ কেউ জাস্ট হতে চায়না। সামর্থ্য থাকা সত্বেও চায়না। হতে পারে, আমাদের কেস স্টাডির লোকটি সব বুঝেও শেষ পর্যন্ত জাঙ্গুলে প্রকরণকেই অপ্ট করল। জারোয়ারা চাইল নিজেদের মতো বাঁচতে। হতে পারে, পুরুলিয়ার অধিবাসীরা, কথার কথা, বিদ্যুৎ ছাড়াই বাঁচতে চাইল। তাদেরকে তাদের মতো থাকতে দিতে হবে। তাদের অসমান হয়ে থাকার রাইট আছে।

    তাহলে, খুব, প্র্যাকটিকাল প্লেনে জিনিসটা কোথায় এসে দাঁড়ালো? দাঁড়ালো এখানেই, যে, ডিদিপ্লিনড হবার, ইকুয়াল হবার রাইট থেকে কাউকে যদি এক্‌স্‌সক্লুড করা হয়, তো, তাকে নিয়ে আপনি লড়ুন। কোনো সমস্যা নেই। শুধু মনে রাখবেন, রাইট পাবার পরেও, কেউ কেউ "সমান' নাই হতে চাইতে পারে। "অসমান' হয়ে থাকাটা একটা বৃহত্তর রাইটের অঙ্গ, "সমান' হওয়ার রাইট যার একটা সাবসেট মাত্র।

    মেয়েদের স্বনির্ভরতা হোক, ভ্রূণহত্যা হোক, সব কটা ক্ষেত্রেই এই কথাগুলো খাটে। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অবশ্যই একটা ক্ষমতা দেয় মেয়েদের। আপনি নিশ্চয়ই সেই অধিকারের পক্ষে, বহির্জগত থেকে মেয়েদের এক্সক্লুশনের বিরুদ্ধে বলুন। সংগঠিত করুন। কিন্তু শেষবিচারে সে শোষিত কিনা সে ঠিক করবে। এমন কেউ থাকতেই পারে, সে, সব বুঝেও ঠিক করল, না বাপু আমি বাড়িতেই থাকব। সে ইকুয়াল হলনা। কিন্তু অসমান থাকার রাইট তার আছে।

    আপাতত: এই শেষ। দ্যাখেন, এইটাতে একমত হওয়া যায় নাকি। গেলে, আমি পরের ধাপে যাব।
  • Ishan | 12.163.39.254 | ০৮ মে ২০০৮ ০৩:২০396007
  • * সে জন্য নিবেদিতপ্রাণও হয় না।

    "না' টা বাদ পড়ে গেছে। :)

    আর "ইপ্পি' টা ভারি ভালো নাম। আমার পছন্দ। :)
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৮ মে ২০০৮ ০৬:৫১396008
  • একমত। সচেতন করার চেষ্টা অব্দি ঠিক আছে। না হতে চাইলে তাকে নিজের মত ছেড়ে দাও। তখন "তুই ব্যাটা অচেতন" বলে গাল পাড়ার বা জোর করার কোন অধিকার আমাদের নেই।

    কিন্তু কিছু কিছু ব্রাহ্মমুহূর্ত তো এরকম-ও আসে যখন একজনের নিষ্ক্রিয়তা বা প্যাসিভ অবস্থান বা অসচেতনতা একজন মানুষ বা একটা জনগোষ্ঠীর পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে যায়। রেয়ারলি হলেও এইরকম মুহূর্ত কিন্তু সমাজে বিরল-ও নয়। সেক্ষেত্রে কি হবে? যেমন পণপ্রথার উদাহরণটা। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় নিচ্ছে, তার মধ্যে দিয়ে প্রথাটা প্রবাহমান থাকছে। ক্ষতি হচ্ছে একটা বড় অংশের মানুষের। যেমন র‌্যাগিং। কোথাও কোথাও যে করছে এবং যে হচ্ছে উভয়েই এন্‌জয় করছে। কিন্তু এর ফলে প্রথাটা টিকে থাকছে, ক্ষতি হচ্ছে অন্যের। এসব ক্ষেত্রে কি হবে? সরকার বা সমাজ আইন করে থামাবে, না থামাবে না? আইন করলেই তো কিছু ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় যারা পণ দিচ্ছে বা র‌্যাগ্‌ড হচ্ছে - তাদের দমন করা হয়। কি করা হবে এই সব ক্ষেত্রে?
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৮ মে ২০০৮ ০৭:১৭396009
  • বা ধরো ঐ নেপালের লোকটা। জেনেবুঝে না হলেও সে রাজতন্ত্রের হয়ে ফাইট দিয়ে গেছে। কিন্তু অন্যদের কাছে রাজার অত্যাচার অসহ্য হয়ে উঠেছে। অন্যেরা রাজতন্ত্রের অবসান চায়। অন্যদের কাছে রাজা ক্ষতিকারক। তো রাজতন্ত্র অবসান হওয়া মানে তো ঐ লোকটির বিশ্বাস বা চেতনায় বড় আঘাত। এখন শুধুমাত্র তার আলাদা থাকার বা রাজার অধীনে থাকার মনোবাসনাকে একটা সমাজ কি করে ধারণ করতে পারে? বিষয়টা যখন ক্রুডলি একটা সমাজব্যাবস্থা রিলেটেড, ব্যক্তি রিলেটেড নয়, তখন সবসময় কি "রাইট টু বি ডিফারেন্ট" এর দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব? একটা সমাজব্যবস্থাকে মান্যতা দিয়ে তারপর তার অধীনে আলাদা ব্যক্তিগত জীবনচর্যার সম্ভাবনা থাকে। অথবা যে অপশনটা পড়ে থাকে - তা হল সেই সমাজব্যবস্থাকে পাল্টানোর চেষ্টা করা।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ০৮:৪৯396010
  • শ্যামলবাবু,এই কাজগুলো আমার পরিচিত বাংগালী পুরুষদের মধ্যেও অনেকেই করেন :)। বাধ্য হয়ে বা কর্তব্য মনে করেই।
    আমার প্রশ্ন ছিলো, ঘরের কাজ টা by default ক্যানো মেয়েদের সাথেই associate করা হবে। মানে ঐ 'এক্সক্লুডেড' সেট এ ঘরে থাকতে চাওয়া মেয়েদের কথাই বলা হচ্ছে ক্যানো শুধু , এটাই প্রশ্ন ছিলো।

    ন্যাড়াবাবু, ঐ gatherer specific spatial adaptation এর evidence এখনো মেয়েদের মধ্যে পাওয়া গেছে বৈকি, সম্প্রতি একটি গবেষণাতেই, তাতে মেয়েদের বাজারে ফল ও সব্জি র স্টল মনে রাখাতে বিশেষ দক্ষতাকে :)।
    http://sandwalk.blogspot.com/2007/09/modern-women-are-excellent-gatherers.html

    তবে, শুধু খাবার ক্যানো, শপ থেকে যেকোনো জিনিষ gather করাতেই মেয়েদের অধিকতর দক্ষতা বোধহয় প্রশ্নাতীত :)।

    আর, পিনাকী এবং ঈশানবাবু, আপনাদের কণ্ডিশণিং বিহীন 'সাজেশান'এর জন্য অনেক ধন্যবাদ।
    তবে কিনা আমিও ঐ 'রাইট টু বি ডিফারেন্ট' প্রয়োগ করিয়া ভালো বলে স্বীকৃত নামগুলি গ্রহণ না করে, আপনাদের পছন্দের সেট হতে এক্সলুডেড এই pi নামেই বহাল হইলুম। :)
  • pinaki | 131.151.54.206 | ০৮ মে ২০০৮ ০৮:৫২396011
  • তাহলে বাংলায় ওটার উচ্চারণ কি হবে? পি? না পাই? এই কনফিউশন এড়ানোর জন্যেই বলা। :-))
  • Ishan | 12.240.14.60 | ০৮ মে ২০০৮ ০৯:৩০396012
  • ঠিক কথা। একটা সমাজব্যবস্থায় কোনো সময়েই সমস্তরকম "আলাদা' হবার দাবী মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সমকামী দের "আলাদা' হবার অধিকার আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু সেই একই যুক্তিতে "আমি আলাদা' বলে যদি কেউ শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় মেনে নেবনা। বা "আমার খুন বা ধর্ষণ করতে ভালো লাগে, আমি আলাদা' বললে মেনে নেবনা।

    অতএব, "আলাদা হবার অধিকার' এ সোসাইটি সব সময়ই হস্তক্ষেপ করে চলে। শুধু বিশেষ কোনো মুহূর্তে নয়, প্রায় সবসময়েই। এবং আমরা যে ফ্রেমওয়ার্কটা দাঁড় করালাম, তাতে এটা একটা সমস্যা। আমাদের কাঠামোয় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ জোর করা মানেই হল এক্সক্লুশন। মুড়ি-মুড়কির এক দর।

    এটা একটা রিয়েল প্রবলেম। এরকম ঢালাও বন্দোবস্ত চললে লোককে যা খুশি করার রাইট দিতে হয়। যেটা সম্ভব নয়। একটা লাইন দরকার। এই লাইনটা অনেক ভাবেই টানা যায়। একটা উপায় হল, "বৈধ' ক্ষমতা যাকে লিগাল মনে করছে, আইনসঙ্গত মনে করছে, সেই পর্যন্ত আমি অ্যালাও করব। মানে "চুরি' বা "খুন' করার অধিকারকে "রাইট টু বি ডিফারেন্ট' বলব না।

    এটা একটা উপায়। কিন্তু এতেও সমস্যা আছে। এটাতে সমাজকে স্থিতিশীল বলে ধরে নিতে হয়। মানে, কোনো সমাজে সমকামীরা যদি আইনত: ইল্লিগাল হয়, তাহলে সমকামীদের "আলাদা' থাকার অধিকারকে গোল্লায় দিতে হয়। যেখানে ট্রেড ইউনিয়ন ইল্লিগাল, সেখানে ট্রেড ইউনিয়নের দাবীকে একটি রাইট হিসাবে স্বীকার করা যাবেনা। ইত্যাদি। মানে প্রকৃত অর্থে সমাজ পরিবর্তনের যাবতীয় দাবীদওয়া ভোগে দিতে হয়।

    ফলে আইঅনত: বৈধ হওয়াটা অধিকারের একটা মিনিমাম জায়গা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সেটাই সব নয়। তার বাইরেও কিছু জায়গা থাকবে, যেগুলোকে আমরা "অধিকার' হিসাবে মানব। এবং তারপরে লাইনটা ড্র করব।

    এই লাইনটা ড্র করার জন্যই আমার বক্তব্যের পরের ধাপে যাওয়া দরকার। কারণ "বৈধ'তার ক্রিটিকগুলিকেও আমাদের কনসিডারেশনে আনতে হবে লাইনটি ড্র করার জন্য। "বৈধতা' কে চ্যালেঞ্জ করে যে রাজনীতিগুলি, সেগুলোকে খুঁটিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। মূলত: "আলাদা হবার অধিকার' জিনিসটার মধ্যে চালু শ্রেণী রাজনীতি/ অন্য ধরণের রাজনীতিকে কোথায় এবং কিভাবে প্লেস করব, তার সঙ্গে এই লাইন টানার সমস্যাটা রিলেটেড। সেটা নিয়ে আমার চিন্তাভাবনাটা আজ বোধহয় হবেনা, কাল ডিটেল করব। সেটা অলরেডি দারুণ ফরমুলেটেড তা নয়, অতএব, সমালোচনা এবং আক্রমন স্বাগত:।

    এই ধাপটা নিয়েও আর কোনো সমালোচনা থাকলে করে ফেলা হোক। স্যান প্রশ্ন/সমালোচনা থাকলে করে ফেলো।

    ** তবে পিনাকী কিন্তু লাইনের লোক, এটা বলতেই হবে। একটা ফাঁকও ছেড়ে দিচ্ছে না। :)
  • dri | 75.3.201.43 | ০৮ মে ২০০৮ ১০:১৮396013
  • একটা সাদা ধবধবে হোয়াইটবোর্ড, এতগুলো রঙীন মার্কার, আর অফুরন্ত সময় দেওয়া সঙ্কেÄও মামু নিখুঁত সমাজের ছবিটি আঁকা কমপ্লিট করতে পারল না?

    ছ্যা:!
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ১২:৩০396014
  • ঈশানবাবু র লাস্টের আগের পোস্ট টা পড়ে অনেক কিছুই ঘেঁটে গেলো। কিছু কথা পিনাকীবাবু ই বলে দিয়েছেন।

    কিন্তু ঐ কোনো যৌনকর্মী র নিজের মেয়েকে লাইন এ নামানো এটা আবার ঐ মহিলার কিধরণের এক্সক্লুশান এর উদাহরণ?
    মেয়ে নিজে থেকে অন্য সুযোগ পাবার পর ও এই লাইনে নামলে সেটা হতো 'রাইট টু বি ডিফারেণ্ট' (যদি সে দেহব্যবসায় নেমে আনন্দ পাচ্ছে ভেবে নামে, কি জাস্ট টাকার জন্যই ) কি 'রাইট টু বি আন ইক্যুয়াল ' ( সে এ প্রফেশান এর সব শোষণ, বঞ্চনা ইত্যাদি জেনে নেমেছে)।
    কিন্তু মা তাকে নামানোর বন্দোবস্ত সেটা মায়ের এম্পাওয়ার্ড হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কি !

    এক ই ভাবে যে মেয়েটি, দিদিকে দেওয়া হয়েছে বলে নিজের বিয়ের পণ এর জন্য মা-বাবা কে চাপ দ্যায়, সেই বা কোদ্দিয়ে এক্সক্লুডেড হল বোঝা গ্যালো না।

    মা যখন কন্যাভ্রূণ হত্যা করান, ক্যানো করাতে চাইছেন সেই প্রেক্ষিত বিচার না করে এটাও এক্সক্লুশানের গপ্পো বল্লে মানতে চাপ লাগছে।
  • pi | 69.251.184.3 | ০৮ মে ২০০৮ ১২:৩৫396015
  • রাইট টু বি আনেক্যুয়াল বলে তো যৌনকর্মীর পেশা টিকে সম্মান দেওয়া হোক, একথা বলা হছে ।
    সম্মান দেবার মানে এটা নিশ্চয় নয় কেউ শোষিত হবে জেনে এই পেশায় এসেছে বলে সেই শোষণ টাকে propagate করতে দেওয়া হোক।
    বা শোষণের টানে তিনি এই 'ডিফারেন্ট' জীবিকাটিতে এসেছেন এমন ও নয়!
    যৌনকর্মীদের পেশা র বৈধীকরণ যখন দাবী করছেন, তখন লেবার ল ইত্যাদির মাধ্যমে শোষণ, বঞ্চনা এগুলি যাতে দূর করা যায় সেকথাই ভাবছেন তো। নাকি ?

    এক ই কথা যারা ঘরে থেকে homemaker হওয়াকে কে prefer করবেন, তাদের নিয়ে।
    preference টা কারুর আসতে পারে নিজের পছন্দ, ইনক্লিনেশান ইত্যাদি অনেক factor দিয়।আর সেখানে কিছু না পাওয়ার parameter ও থাকতেই পারে।
    সে নিজে শোষিত হচ্ছেনা এমন মনে করতেই পারে, কিন্তু সেই শেষ বিচারটা পুরোপুরি এক্টা তুল্যমূল্যের বিচার।

    নেট রেজাল্ট পসিটিভ মানে কম absolute ভ্যাল্লুর নেগেটিভ কোনো এলিমেন্ট নেই তা তো নয়।

    আর সেই নেগেটিভ জায়্‌গা পয়েণ্‌ট্‌গুলিকে address করলে কারুর এই কাজটি র প্রতি preference চলে যাবে , এমনটিও নয়।
    বরং এগুলি নিয়ে না বল্লে এই কাজটি কখনই প্রকৃত অর্থে সম্মানজনক হয়ে গৃহীত উঠবে না, সবার কাছে।
    আপনার এই মডেলের উদ্দেশ্য নিশ্চয় জাস্ট খাতায় কলমে সম্মানজনক বলে একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে দেওয়া নয় !

    আর, পিনাকীবাবু, আমারে পি বল্লে তো আপনি ই আইডেন্টিটি ক্রাইসিস এ ভুগবেন, ক্ষেত্র বিশেষে! :-))
  • ranjan roy | 122.168.77.157 | ০৮ মে ২০০৮ ১২:৫০396017
  • আমরা সবাই মিলে একটা অ্যানালিটিক্যাল মডেল দাঁড় করাতে চাইছি। যেহেতু এরকম যেকোন মডেল, ipso facto, দাঁড়ানো মাত্র স্ট্যাটিক হয়ে পড়বে, ফলে তাতে কিছুটা গ্রে এরিয়া থাকবেই, স্বয়ং মার্কস বানালেও।
    কারণ, একটা অনিবার্য প্যারামিটার-- টাইম। যাকে ধরা অসম্ভব, ফলে কোন মডেলই ১০০% কমপ্লিট হতে পারে না। বরং মডেলটিতে ঐ সময়জনিত গ্রে এরিয়াটা স্পষ্ট ভাবে ডিফাইন করলেই মডেলটি একধরণের সম্পূর্ণতা পাবে।
    সমকামী সমাজের কথাই ধরুন।
    একসময় অধিকাংশ দেশে জেলে যেতে হত। আজ বেশ কিছু দেশে গে-রাইট স্বীকৃত।
    একসময় রাজার বিরুদ্ধে কথা বল্লে কি হত সবাই জানে। আজও সিডিশনের হিন্দি "" রাজদ্রোহ''। নাস্তিকতার প্রচার করলেও একই কথা।
    প্রশ্ন উঠছে যে সমাজে সমকাম দন্ডনীয় অপরাধ সেখানে আমরা যাঁরা মনে করছি এটা ভুল হচ্ছে- তারা কি করবো?
    -- আমরা আইন বদলানোর জন্যে আওয়াজ তুলবো। ঠিক যেমন হেতাল পারেখ হত্যা মামলায় ধনঞ্জয় চ্যাটার্জির ফাঁসি রদ করার জন্যে আন্দোলন হয়েছিলো এবং যার থেকে প্রাণ্‌দণ্ডের ব্যাপারটাই শেষ করার কথা উঠেছে।
    বৃটিশ ভারতে স্বাধীনতার দাবিটাই বে-আইনি ছিলো।
    এগুলো এক্সট্রিম উদাহরণ।
    কিন্তু এছাড়াও এমন অনেক চয়েস হতে পারে( হ্যাঁ, চয়েস-দমন নয়), যা দেখে আমরা ভুরু কোঁচকাই কিন্তু সেগুলো আইনত: দণ্ডনীয় নয়।
    তখন কি করবো?
    যেমন নীনা গুপ্তা সিংগল মাদার হয়ে ভালো আছেন। শাবানা আজমী বা হেমা দ্বিতীয় স্ত্রী হয়েও নি:সংকোচ জীবন যাপন করছেন।
    সেলিব্রিটিদের নাই ধরলাম। সাধারণ মানুষের মধ্যেও কেউ কেউ ব্যতিক্রমী জীবন বেছে নিতে পারেন। আমার কলেজের এক সহপাঠিনী বাড়ির মারধোর উপেক্ষা করে এক বিবাহিত পুরুষের সঙ্গিনী। সে ব্যাংকে চাকরি করে, ফলে এমন চয়েস নেয়ার জন্যে এমপাওয়ার্ড।
    এখানে সীমারেখাটা কোথায় টানবো?
    আমার মতে যতক্ষণ কারো "আলাদা' হওয়ার অধিকার অন্যকারো স্বীকৃত অধিকারকে বাধা না দিচ্ছে, ততক্ষণ রাষ্ট্র বা সমাজের কিছু করার নেই।
    অবশ্য এখানেও গ্রে এরিয়া আছে। কেউ কেউ বলতেই পারেন যে এতে খারাপ উদাহরণ প্রস্তুত করা হচ্ছে। বা আমাদের হিন্দু বা মুসলিম ভাবনা আহত হচ্ছে।
    এখানেই সময়ের হিসেবে ওপরতলার স্ট্রাকচার বদলানোর প্রশ্ন, আইন-রাজনৈতিক ব্যবস্থা বদলানোর প্রশ্ন। আর শেষ বিচারে একটি নির্দিষট সময়ের মাপকাঠিতে সামাজিক চেতনা পরিবর্তনের প্রশ্ন।
    তবে সবসমাজেই কিছু কিছু ব্যক্তিমানুষ সমাজ বা আইন নির্ধারিত ""হ্যাঁ'' এবং ""না'' এর মাঝের জায়গাটাতে পা বাড়াবেন। তাদের ভবিতব্য হবে--""' কুমীর! তোর জলকে নেবেছি'' গোছের। কিন্তু সেটা তাদের ব্যক্তিগত চয়েসের আওতায় আসে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন