মহেশ মিত্তির পড়াশুনো জানা যথেষ্ট শিক্ষিত লোক। চাকরি করেন ভালই। আজকাল করোনার মত সামান্য একটা ফ্লু নিয়ে এত বাড়াবাড়ি দেখলে ওঁর গা জ্বলে । বোকা বোকা লোকজনকে দেখলে বিরক্তি আরও বাড়ে । কারণ এরা বোঝেনা, এ হল ভ্যাকসিন বেচার, স্যানিটাইজার বেচার এক আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। WHO, বিল গেটস সবাই জড়িত এই ষড়যন্ত্রে। মাস্ক পরে কিছু হয়না, বরং অক্সিজেন স্যাচুরেশান কমে যায়। ভ্যাকসিন নিলেও কিছু তো হবেই না, বরং নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে, এইডসও হতে পারে। সারাদিন মহেশ কোভিড ষড়যন্ত্রতত্ত্ব চর্চা করেন। তাই কোথা থেকে কোথা থেকে ষড়যন্ত্রের অনুকূল প্রমাণে কে কী লিখছে, ইউটিউব ভিডিও বানিয়েছে, তাই দেখে যান। ... ...
গত বছর যখন করোনার প্রথম ঢেউ এসেছিল, সারা ইউরোপ সামগ্রিক বন্ধের বা lock-down র দিকে এগোচ্ছিল, ব্রিটেন কিন্তু তখনো গয়ংগচ্ছ ভাব দেখাচ্ছিল। আর নেদারল্যান্ড, সুইডেন তো এই lock-down এর বিরোধিতাই করছিল, WHO এর প্রচুর গালাগাল সত্বেও।এদের মত ছিল, এসব সামগ্রিক lock-down বিশেষ কাজের কথা নয়। বুড়ো বুড়িদের ঘরে রাখ, কারণ তাদের খতরা বেশি। ছেলে ছোকরাদের খতরা কম, তাদের চড়তে দাও। তাদের করোণা হলেও দেহে করোণার বিরুদ্ধে সম্মিলিত-প্রতিরোধ ক্ষমতা বা Herd-immunity তৈরী হবে। এর ফলে আবার যদি করোণা ফিরে আসে, তখন আর কোন বিপদ হবেনা। এদিকে ব্যবসা পত্তর , বাজার হাট যেমন চলছে তাও দিব্যি গড়গড়িয়ে চলবে। ... ...
মাস্ক ব্যবহার করলে কি কোভিড ভাইরাসের সংক্রমণ আটকানো সম্ভব? - হ্যাঁ সম্ভব, প্রমাণ আছে। নিচের রিসার্চ পেপার গুলো প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ ভাবে পরীক্ষা করে এই দাবি করেছে। ২০২০ সালে বিখ্যাত নেচার মেডিসিন পত্রিকায় তিনটি করোনা ভাইরাস (Coronavirus NL63, OC43, HKU1) মানুষের মধ্যে কিভাবে সংক্রমণ ঘটায় এবং মাস্ক কিভাবে এই সংক্রমণ আটকাতে সাহায্য করে সেটা নিয়ে আলোচনা করা হয়। তথ্যসহ দেখানো হয় যে মাস্ক ব্যবহার করলে তিনটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব। ... ...
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। গেলবারের মতন এইবছর বাড়িতে আটকে থাকার পরিস্থিতি নয়। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন তা পুনর্মূল্যায়ণের দরকার মনে করছেন নিশ্চয়ই। বিশেষতঃ চারদিক থেকে মাস্ক পরা নিয়ে এত সতর্কবার্তা আসছে, তাই আসুন, আমরা আরেকবার দেখে নিই- কী পরবেন, কেন পরবেন, কীভাবে পরবেন? ... ...
এখন যা পরিস্থিতি, তাতে একটাই মন্দের ভাল - বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে পারছেন। একবার ভাবুন কি অবস্থা হতো যদি তাদের সবার হাসপাতালে ভর্তি হতে লাগত। আমি দেখছি সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকজন দাবি করছে "পজিটিভ" খবর ছড়াতে, সরকারকে দোষ না দিতে। মানসিক স্বাস্থ্য এমনিতেই এখন দুর্বল।বেশ, মেনে নিলাম।কিন্তু, এর পরে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে।এই অবস্থাটা মনে রাখবেন যখন স্বাস্থ্য এক্টিভিস্টরা সরকারকে দায়িত্বশীল হতে বলেন, সরকারের একাউন্টেবিলিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেটাকে প্রোপাগান্ডা বলে বাতিল না করে বক্তব্যের সারবত্তা অনুযায়ী বিচার করবেন।এই অবস্থাটা মনে রাখবেন যখন ডাক্তার, নার্স, বা হাসপাতালের কর্মীদের পিটিয়ে মারেন আপনারা। এখন কিন্তু তারাই ফ্রন্টলাইনে হাসপাতালের বেডের পাশে ... ...
নিস্তব্দ কনফারেন্স রুম। আশফাক আলীর শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে। স্ত্রী আয়েশা পাশেই বসে আছে। আজকের এই পার্টির কাছে মাল বেচঁতেই হবে যে করেই হোক। এর আগেও কয়েকটা পার্টি দেখে গেছে, পড়ে জানাবে বলে আর জানায়নি। ফোন দিলেও ধরে না হারামজাদারা। একবার তো এক পার্টি প্রায় ফেঁসে গিয়েছিলো। আশফাক আলী ভালো জাল বিছিয়ে ছিলো। পার্টিও কথা দিয়েছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কেনেনি বদমাইশের বাচ্চা। আশফাক আলী বারবার ঘড়ি দেখছে। স্ত্রীর দিকে চিন্তিত মুখে তাকাচ্ছে। বারবার পানি খাচ্ছে। ম্যানেজার এসে খবর দিলো পার্টি এসে গেছে। আশফাক আলী তরতরিয়ে ঘামতে লাগলো। স্ত্রী রোকেয়া আর ছেলে সমসের কে নিয়ে উছমাত মোল্লা কনফারেন্স রুমে প্রবেশ ... ...
গুজবের মধ্যে আর ভয়ের মধ্যে দিনযাপন / যারা সব নিয়েছে গুছিয়ে তাদের কথা ভিন্ন
স্বর্গের রত্নখচিত প্রধান ফটকটি উন্মোচিত করে বিরস বদনে দ্বাররক্ষী একটি গভীর আরমোড়া ভেঙে নিল। নাহ! আর পারা যাচ্ছে না। ভারতভূমির পুণ্যক্ষেত্রে আরব্ধ ভারতযুদ্ধ স্বর্গবাসীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। যুদ্ধ শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই স্বর্গতঃ বীরগণের ঠেলাঠেলিতে প্রধানদ্বার ভেঙে পড়ার উপক্রম। অথচ প্রথমে পরিকল্পনা অন্যরকম ছিল। আয়োজনের ত্রুটি ছিল না। যুদ্ধ শুরুর খানিক পূর্ব থেকেই স্বর্গদ্বারে তূর্য-ডিন্ডিম-আতোদ্য নিয়ে বাদকরা ছিল প্রস্তুত। বন্দীরা প্রস্তুত রেখেছিল শ্রুতিসুখকর ভাষ্য। স্বর্গীয় বরনারীগণ শোভনদর্শনা হয়ে দ্বারে মঙ্গলশঙ্খ নিয়ে সমাগতা। মান্য দেবগণের নির্বাচিত মণ্ডলী পুষ্পবর্ষণের দায়িত্বে, দেবরাজ ইন্দ্র স্বয়ং আপ্যায়ন করে নেবেন আগত বীরগণকে। শাস্ত্রকারগণ বলে গেছেন, সম্মুখযুদ্ধে নিহত বীর স্বর্গস্থ হবেন। ... ...
পাপীজনশরণ প্রভু !আচ্ছা, বয়স্ক লোকগুলো কি একটু বোকা হয়? সবার কথা বলছি না, আমার বাবা মোটেই বোকা ছিলেন না।মঙ্গলা পঞ্চায়েতের কত লোকজন ওনার কাছে পরামর্শ নিতে আসে। কিন্তু যারা একটু ফ্রাস্টু গোছের? যেমন ধরুন গ্রামীণ ব্যাংকের সকরী শাখার হেড ক্যাশিয়ার বিনোদ আংকল? আমি ওনার ব্যাংকে একটা রেকারিং ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট খুলেছি। প্রতি মাসে দশ তারিখে গিয়ে একশ টাকা জমা করে আসি। উনি আমাকে লাইনে দাঁড়াতে দেন না। পাশের চেয়ারে বসিয়ে চা খাওয়ান, বাড়ির সবার কুশল মঙ্গল জিজ্ঞেস করেন। অন্য একজন সব কাজ করে পাশবুকে এন্ট্রি করে আমার হাতে ধরিয়ে দেয়। আমি নমস্তে বলে চলে আসি। ... ...
আমি একারৌদ্র দুপুরে ক্লান্ত ছায়ার মত,আমি দুঃখ পেলামআমারি ছিড়ে যাওয়া কায়া যত। আমি উপেক্ষিতউঠোন কোন থেকে উপরে ফেলা বৃক্ষের মত । আমি সুরক্ষাঅন্যদের জন্য। আমি একাএখানে কেউ নেই,কেউ ব্যথা দেখতে পায় নাআমি কাঁদি,আমি একলা ডাহুকের মত ডাকিকেউ শুনতে পায় না।আশা শেষ হয়ে গেলে -আমি একাঅপেক্ষার মত চিরন্তন একা।
ইয়
ঘোর বর্ষা। ঘোর কলমভার। ঘোর কলমবাজি। খাতা থেকে আকাশ মুখ তুলতে পারছে না। আকাশ ধূসর, আকাশে নীল নেই - শেষ বিকেলের অস্তরাগটুকুও ছিলনা। অফিসফেরতা এই এক রোখ চেপে বসে। দিনের সব তাপ শুষে নিতে চায় কবিতায়। মুখ তুলছে না। চোখ বুজছে না। খাতার কাছে সে অসীমান্তিক। খাঁ খাঁ ঘরে কলম পেষাইয়ের শব্দ। বাকি সব শব্দ জব্দ। শব্দে ভয়। শব্দ মনোরোগ। শব্দ জীবনবিতৃষ্ণা। সব শব্দ খাতায় পুরে কোন ইমারত তুলবে? ইত্যবসরে ঘরে ঢুকছে কেউ। ইঁদুরের মতো চুপিচুপি। দরজার বাইরে হাই হিল সন্তর্পনে খুলে রাখলো। বর্ষাতি ছিল না, ছিল ছাতি। টুক করে দেওয়ালে হেলান পেল সে। ইতস্ততঃ করছে। ... ...
Statistical methods for GDP calculation এর উপর আলোচনা চাই ।একটু ভেবে দেখবেন ।
এক নিবিড় রাতে আকাশের বুক থেকে চুরি হয়ে গেল অহংকারী চাঁদ। মুহূর্তেই অন্ধকারে ঢেকে গেল সমগ্র পৃথিবী। মৌ মৌ করে রটিয়ে গেল খবরটা। টিভির পর্দা থেকে ফেসবুকের পাতা হৈহৈ পড়ে গেল। যথারীতি সরকারি দল দোষ চাপিয়ে দিল বিরোধী দলের উপর। বিরোধী দল ফুঁসে উঠে বলল, সরকারের পদত্যাগ চাই। রাজপথে নামলো একদল মানুষ। উচ্ছৃঙ্খল হল শহর, উত্তাল রাষ্ট্র, বিশৃঙ্খল দেশ। কেউ কেউ আর্তনাদে হায় হায় করে উঠলো। কেউ কেউ বিদ্রুপ করে বলল, ঠিক হয়েছে, রোজ রাতে বেড়োয় কেন? এক পৌঢ়া নারী ব্যঙ্গ করে বলল, রূপের কি দেমাগ। যুবক আক্ষেপ করে বলল, ইশ, আমি যদি চুরি করতে পারতাম ঐ জৌলুস চাঁদটা। ... ...
অত করে ডেকো নাঅমন ভেঙ্গে-চিড়ে ডুকো না,আমারও তো সহ্য আছেকাতর বুকে কাম আছে। একদম আগলে ধরবোবুকের খাঁচে আটকে নেব। এমন করে এসো নাচন্দ্র রাতে জোস্না বুকে পুষো না,মাতাল হলে জাপটে ধরবোহাতের মুঠোয় আঁকড়ে নেব। উঁহু... বলছি তোফিরে চাও ফিরে যাও,আমার হলে বিপাকে পড়বে। প্রেমের ছলন, সবি আমার জানামিথ্যা খোলস গুড়িয়ে দিওনইলে বিপদে পড়বে।এমন করে কষিয়ে বাঁধবোতীব্র সুখের অসুক হবে,জড়িয়ে নেবার আগে- ভাবো এমন দহন সইতে পারবে? ... ...
মোজাম্মেল হক আরাম করে হেলান দেওয়ার ভঙ্গিতে বসে আছেন। মুখে দুনিয়ার যাবতীয় সুখ। পকেটে রাখা বিদেশী সিগারেটের প্যাকেটটা হলো খুশির কারণ। তবু তাঁকে কর্কশ গলায় ডাকাডাকি করতে দেখা গেল। “কই তারার মা, পোলাও মাংস রাঁধতে বলসিলাম নাকি। একটা কাজ যদি করে ঠিক মতো”। তাঁর মতে, ঘরের মেয়েমানুষদের সঙ্গে ছাঁড় দিয়ে কথা বলতে হয় না। বললেই বিপদ, এরা দাম দিবে না। মাথায় চড়ে ঢং-আহ্লাদ করবে। ধমকের উপর রাখলে সে সাহস গজাবে না। কৌশলটা মোজাম্মেল হক শিখেছেন তাঁর এক চাচার কাছ থেকে। যদিও চাচাজানের একটা অভ্যাস তাঁর ভালো লাগে না। অভ্যাসটা হলো গায়ে হাত তোলা। খুব মারধর করতেন চাচাজান। বউ-সাবালক মেয়ে-ধামড়া ছেলে ... ...
লকডাউনে জনজীবন বিপন্ন হওয়ার ছবি আমরা সবাই দেখেছি, সেটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরে আসার চেষ্টায় মৃত্যুর স্মৃতি এখনো তাজা। দেখা যাক, রাজনীতি কীভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, তার নমুনা। কীভাবে সংক্রামক রোগটিকে (যার মৃত্যুহার ভারতে ১.১৮%, পশ্চিমবঙ্গে ১.৫৯%, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা শ্রেয়) নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে ও হচ্ছে। হঠাৎ কেন করা হলো লকডাউন? ২০১৯ সালের শেষের দিকে CAA, NRC, NPR বিরোধী আন্দোলন ব্যাপক আকার নিয়েছিল। বিভিন্ন গণ সংগঠনগুলি দিন রাত এক করে মিছিল, সমাবেশ করে জনমত সংগ্রহ করছিল, সরকার চাপে পরছিল। এই সময়ে সরকারের দরকার ছিল সবকিছু থামিয়ে ... ...
দীর্ঘ এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকার পর আজ অফিসে গেলাম। শরীর এখনও বেশ খানিকটা দূর্বল। কোভিড হয়নি যতদূর সম্ভব। তবে যে জ্বরটা হয়েছিল। ভয়ঙ্কর হয়েছিল। এক এক করে বাড়ির সবাইকে আক্রমণ করে, দু-দিন বিছানা সাপটা করে উনি আপাতত বিদায় নিয়েছেন।অফিসে পৌঁছালাম বটে, তবে আমাকে মালিক পরামর্শ দিলেন এখনও এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকার। অগত্যা তল্পিতল্পা গুটিয়ে আবার ফিরে এলাম। বাসে উঠলাম এলগিন মোড় থেকে। রাজাবাজার - শিয়ালদহ মিনি। ভিড় সেরকম ছিলনা। আমি একেবারে শেষের সিটে গিয়ে জানালার ধারে বসলাম। আমার সামনের সিটে দুজন ছেলে বসেছিল। তারপর তাদের কথাবার্তায় বুঝলাম তারা দুজন একটা সমকামী কাপল। আর সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে লুকোচুরির কোন ব্যাপার ... ...