Commonwealth War Graves Commission নামে একটা সংস্থা আছে। এরা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ব্রিটিশ যত সৈন্য নিহত হয়েছে তাদের প্রতি সম্মান জানানোর কাজ করে। বিভিন্ন জায়গায় যত কবর আছে যুদ্ধের সব গুলোর যত্ন নেওয়া, ইতিহাস তুলে রাখা এবং তাদের যেন কখনোই মানুষ ভুলে না যায় তা নিশ্চিত করা হচ্ছে এদের কাজ। CWGC একটা ওয়েব সাইট আছে, তাতে তারা বলছে পুরো দুনিয়ায় ২৩ হাজার স্থানে ওয়ার সিমেট্রি আছে আর তাতে শায়িত আছে ১.৭ মিলিয়ন নর নারী সৈনিক। এই সংস্থা ১৯১৭ সালে Imperial War Graves Commission নামে যাত্রা শুরু করে, ১৯৬৫ সালে নাম পরিবর্তন করে Commonwealth War Graves Commission হয়। কিন্তু কাজ একই আছে, এই দীর্ঘ দিন ধরে তারা নিজেদের বীরদের সম্মান দিয়ে আসছে। ... ...
হিন্দি সিনেমার নায়ক নায়িকা চেনা ছিল বিশেষ গুন। সবাই পারত না, ফট ফট করে নাম বলে দেওয়া এ কি সোজা কথা? ডিডি ওয়ান আমাদের কাছে বিটিভির মতই ছিল। তাই আমরাও দুই একটা নাম জানতাম। কিন্তু আমাদের চেয়েও পাকনা কেউ আসলে অবাক হওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন রাস্তা থাকত না। একটু ঘাইঘুই করে মেনে নিতাম। ঢাকা থেকে কোন আত্মীয় আসছে, তাদের সাথে আমরা পারি? হয়ত বাসায় তাদের ভিসিআর আছে, ততদিনে ক্যাবল লাইনও চলে গেছে ওদের ঘরে। নিত্য নতুন সিনেমার গল্প, নায়ক নায়িকার কিচ্ছা আমরা কই পাব? রবিবার করে রঙ্গোলী আর চিত্রাহার দিয়া খুব বেশি ফাইট দেওয়া যেত না। তাই মেনে নিতাম। ... ...
লোকটা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। চাকরি দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল যে মৃত মানুষ নিয়ে কারবার। চাকরি দরকার, আমি রাজি হয়ে গেছি। কিন্তু আমাকে নদীর পাড়ে, ঠিক শ্মশানের পিছনে নিয়ে আসল কেন বুঝে উঠতে পারছি না। এদিকে অন্ধকার থাকে সব সময়। শ্মশানে আগে আসলেও পিছনে আসা হয়নি। কিন্তু আমার সুপারভাইজারের কোন দিকে কোন খেয়াল নেই, তিনি হনহন করে হাঁটছেন আর বলছেন, "আসেন, জলদি আসেন। কাজ ছোট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সময়ের এদিক সেদিক হয়ে মহা কেলেঙ্কারি!" আমি তার সাথে তাল মিলিয়ে হাঁটার চেষ্টা করছি, আর ভাবছি, সমস্ত ব্যস্ততা শেষ করেই তো মানুষ শ্মশানে আসে, এখানে এত কিসের তাড়াহুড়া? আমার সুপারভাইজার, যার নাম মোহাব্বত, তাকে যে জিজ্ঞাস করব, তার সুযোগ তিনি দিচ্ছেন না। বিড়ি টানতে টানতে দ্রুত হাঁটছেন তিনি, পারলে দৌড় দেন! ... ...
সাড়ে পাঁচশ পৃষ্ঠার বই যখন শেষ হয়ে আসছে, মহারাজা যখন সমানে অসুস্থ হয়ে পরছেন তখন আমাদেরকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছিল এই লোকটা কী জিনিস ছিল। আমি সিনেমার হিসাব করছিলাম তখন, শুধু মনে হচ্ছিল না, এই অসুস্থতায় তিনি যাবেন না, এখনো তো আগন্তুক করা বাকি, এর আগে যাবেন কী করে? অসুস্থ অবস্থায় শেষ সিনেমা আগন্তুক তৈরি করলেন, উৎপল দত্ত তার জীবনের অন্যতম সেরা অভিনয় করলেন। আর শেষ সিনেমায় এসেও সত্যজিৎ দেখালেন তিনি কত বড় পরিচালক, কী দুর্দান্ত কাজই না করে গেছেন। আগন্তুক সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পর, শেষ শট নেওয়ার পর তিনি বলে উঠেন, "যাঃ, আমার যা কিছু বলার ছিল সব ফুরিয়ে গেল, আমার আর কিছুই বলার নেই।" এই কথা শোনার পর বিজয়া রায়ের যেমন লেগেছিল, আমাদেরও তেমনি যেন লাগে। আমরা জানি তাই সত্য হয়েছিল। কিংবা বলা চলে উনার সময় ফুরিয়ে গেছিল, সত্যজিতের মত মানুষ কী কোনদিন ফুরিয়ে যায়? ... ...
আমাদের আগের প্রজন্ম হয়ত সরাসরি উনার সংস্পর্শ পেয়ে ধন্য হয়েছে। কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। আমরা ধন্য হয়েছি বই পড়ে। বইয়ের মাধ্যমেই উনি আমাদের এত কাছের হয়ে ছিলেন যে আমরা যখন ২০১৩ সালে শাহবাগে বিশাল ক্যানভাসে উনার অদ্ভুত জ্যোতির্ময় ছবিটা দেখি তখন বিন্দুমাত্র অবাক হইনি। রাতের বেলা যখন ছবিটার দিকে তাকাতাম তখন মনে হত ওই তো শহীদ জননী তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, আমাদের ভয় কী? ... ...
"যদি বেঁচে যাও এবারের মতো যদি কেটে যায় মৃত্যু ভয়, জেনো বিজ্ঞান একা লড়েছিল মন্দির মসজিদ নয়" কথা গুলো নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে। অনেকে একে ব্লাসফেমি মনে করছে, উদ্ধত্য মনে করছে এই উক্তিতকে। আসলেই কী তেমন মনে করার সুযোগ আছে? আমার মনে হয় না। তবে কথাটা আমার কাছে সম্পূর্ণ মনে হয়নি। বিজ্ঞান একা লড়েছে ঠিক আছে, তবে মসজিদ মন্দির একাই যে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে তা না, লড়াই শব্দটার সাথে যা যা জড়িত সেই সবও তাকিয়ে দেখছে শুধু। কোটি কোটি ডলারের মারণাস্ত্র, নিমিষে দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার মত পারমানবিক বোমা, যুদ্ধ বিমান, যুদ্ধ জাহাজ, কামান, গোলা- বারুদ এই সমস্ত কিছুও অকেজো হয়ে পরে রইছে। ... ...
এক লোক হাটে যাচ্ছিল। রাস্তায় ছেলের শ্বশুর বাড়ি পড়ায় সেখানে একটু ঢুকছে। খালি মুখে আলাপ চলল কিছুক্ষণ। পরে বেয়াই যখন উঠতে যাচ্ছে বেয়াইন তখন বলছে যদি পান থাকতো, নাহয় সুপাড়িটা অন্য কারো থেইকা আইনা দিতাম। কিন্তু চুন-ই তো নাই! সব দোষ হচ্ছে চুনের! আসলে কিন্তু কিছুই নাই। করোনা মোকাবেলা বাংলাদেশের অবস্থা এখন অনেকটাই এমন। কোন পরিকল্পনা খুঁজে পাওয়া যায়নি, নিরাপত্তা সরঞ্জামের তীব্র অভাব, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব। কিন্তু দোষ সব গিয়ে পরছে চুনের ওপরে মানে ডাক্তারদের ঘাড়ে! আসলে আমাদের পান সুপারি ও চুন কোনটাই নাই! ... ...
আগামীকাল থেকে সমস্ত গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাপারে সরকারের দায় আরও বেশি। এবং সেই দায় সরকার কোন ভাবেই এড়াতে পারে না। যদিও উভয় সঙ্কট পরিস্থিতি তবুও বিকল্প কোন পন্থা খুঁজে বের করা উচিত ছিল। যারা ক্রয়াদেশ বাতিল করেনি তারা তাদের পণ্য তৈরি চাইতেই পারে। সেক্ষেত্রে কারখানা খোলা রাখতে হবে। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন ভাবেই কারখানা চালু রাখার সুযোগ নাই। কিন্তু সরকার কাল থেকে কারখানা চালু করে দিচ্ছে এবং বিজিএমইএ কারখানা খুলে দিতে সম্মত হয়েছে। এতে যে এক দেশে দুই নীতি চালু হল তা কি কেউ খেয়াল করে দেখেছে? শ্রমিকদের জীবনের মূল্য নাই? সবাই নিরাপদ থাকার জন্য, নিরাপদ রাখার জন্য ঘরে বসে থাকার সুযোগ পাচ্ছে কিন্তু শ্রমিক নামক এই প্রাণীদের আজকে ঠেলে দিলাম আমরা জীবনের ঝুঁকি নিতে! বলা হচ্ছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে কারখানা চালু রাখবে! কীভাবে সম্ভব এই জিনিস? যারা বলছে তারা কোনদিন একটা তৈরি পোশাক কারখানা ঘুরে দেখেছে? কীভাবে কাজ করে আর কীভাবে খাওয়া দাওয়া করে? তারা কোনদিন শ্রমিকরা কে কীভাবে থাকে তা জানে বা জানার চেষ্টা করেছে কোনদিন? সম্ভবত না। যার কারনেই এমন জিনিস কল্পনা করে বলতেছে যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে কারখানা চালু করতে। স্বাভাবিক সময়েই আমাদের শ্রমিকরা কত ভাল থাকে তা আমরা জানি, এই দুঃসময়ে তারা খুব ভাল আর নিরাপদে থাকবে তেমন আশা করি কোন যুক্তিতে? ... ...
এখন মাঝে মাঝেই মাকে স্বপ্ন দেখি। স্বপ্নেও আমি ভুলতে পারি না যে আম্মা আমাদের সাথে নাই। যতবার দেখি ততবার আমি আম্মাকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকি, কাঁদতে কাঁদতে ঘুম ভাঙে আমার। জরিয়ে ধরার সুখটুকুই শুধু থাকে তখন। ... ...
দেশ এবার মুজিব জন্মশত বর্ষ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুরো দেশ এই প্রস্তুতিতে অংশ নিয়েছে। ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে ১০ জানুয়ারি থেকে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস থেকে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বিশেষ আয়োজন থাকবে এবার। ওই বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব৷ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ জায়েদ আল নাহিয়ান, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, ভারতের কংগ্রেস দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন-সহ অনেকেই থাকবেন সেদিনের অনুষ্ঠানে৷ এত এত বিশেষ ব্যক্তিত্বের ভিতরেও বাংলাদেশ সরকার ওই অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসেবে রেখেছেন নরেন্দ্র মোদীকে। ভারতেরে প্রধানমন্ত্রীকে এই বিশেষ সম্মান সরকার দিচ্ছে। ... ...