শুভ কেমন মুজিব? চলন সই। যতখানি খারাপ মনোভাব নিয়ে গেছিলাম ততখানি খারাপ না। আমার ধরনা, দেশের বাহিরের দর্শক, যারা শুভকে চিনে না, যারা তৃষা কে চিনে না তারা ভাল করে তাদের মূল্যায়ন করতে পারবে। আমাদের চোখে দুইটাই পরিচিত মুখ, মানে মুজিবের চেহারা যেমন আমাদের মুখস্থ তেমনই শুভর চেহারাও। তাই আমাদের জন্য একটু কষ্টকর মুজিব হিসেবে শুভকে মেনে নেওয়া বা তৃষাকে বেগম মুজিব হিসেবে। দীঘিকে ছোটবেলার রেণু মানে বেগম মুজিব হিসেবে ভাল লাগছে কারণ দুইটা চেহারাই অপরিচিত। এমনেও দীঘি ভাল করছে। শুভ পরিশ্রম করছে এইটা বুঝা গেছে। কিন্তু আমি বুঝি নাই যে এত পরিশ্রম করতে রাজি ছিল সে পরচুলা পরতে গেল কেন? গোঁফটা পর্যন্ত রাখতে পারত না? এই দিকটা খেয়াল করলে আরও ভাল হত। ... ...
কী লিখছিল পোস্টে? আমি দেখলাম এক জায়গায় লিখেছে নারী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়, নারী চাকরি করলে পরিবার নষ্ট হয়, সন্তানের হক আদায় হয় না! আরেকটা দেখলাম লিখেছে ভার্সিটিতে পড়াশোনা মেয়েরা নির্লজ্জ হয়, তাদের বিয়ে করে লজ্জাশীল স্ত্রী পাওয়া যাবে না এমন একটা কথা! কোন জানি বক্তা মূর্তি ভাঙার ব্যাপারে কী লেখছে সে ওইটাই শেয়ার করছে! দারুণ না? এই ছেলের বয়স কত? হয়ত বিশ একুশ, এই বয়সে এর মনের মধ্যে এই যে এই ধরনের কথাবার্তা বাসা বাঁধছে তার প্রতিকার না করলে কোন লাভ হবে না। কোন ওষুধেই কাজ হবে না যদি না এদেরকে এখনই না ফেরানো যায়। অন্ধ জনগোষ্ঠী যারা অন্ধ ভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তাদের বক্তব্য হচ্ছে হাসিম আমলা, মইন আলীরা ক্রিকেট খেলছে তাদেরকে তো কেউ বাধা দিচ্ছে না। তাহলে তানজিব হাসনের বেলায় কেন মানুষ এমন করছে! আসলে সমস্যা যে ধর্ম পালনে না তা তারা বুঝতে রাজি না। কেউ সারাদিন ধর্ম পালন করুক না, কে ফেরাচ্ছে? কিন্তু এখানে হচ্ছে ধর্মীয় উগ্রতার প্রকাশ, যার সাথে ধর্ম পালনের কোন সম্পর্ক নাই। হাসিম আমলা নারীর চাকরি নিয়ে চিন্তিত এমন কোন নজির পাওয়া যায় নাই। ... ...
অনেকেই বলছে এইটা একটা নোংরা কাজ হয়েছে। খাওয়ানো তারপরে আবার ছবি তুলে ছেড়ে দেওয়া, খুব খারাপ কাজ হয়েছে। কোন সন্দেহ নাই, আসলেই ভাল কাজ হয়নি। কিন্তু আপনি কী চিন্তা করে এমন আন্দোলনের মধ্যে ডিবি পুলিশের সাথে খেতে বসে গেলেন? এর উত্তর কে দিবে? অনেকেই বলছে পুলিস হয়ত জোর করে খাইয়েছে! মানে পুলিশের ভয়ে তিনি খেতে বসেছেন। ধরেন এই আন্দোলনটা আওয়ামীলীগ করছে, মতিয়া চৌধুরী বা তোফায়েল আহমেদকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এদের কাওকে ডিবি পুলিশ সোনারগাঁ হোটেল থেকে খাবার এনে আপ্যায়ন করে খাওয়াত পারত? অসম্ভব! এখানেই রাজনীতিতে পরিপক্বতার প্রসঙ্গ এসে যায়। যা বিএনপির ক্ষেত্রে পাওয়া মুশকিল। ক্যান্টনমেন্ট থেকে জন্ম নেওয়া একটা দলের ক্ষেত্রে এর চেয়ে ভাল আর কিছু আশা করা যায় না। ... ...
সাইদি ওয়াজে জান্নাতের টিকেট বিক্রি করত! আর আমার দেশের সাদাসিধে মানুষ এমন মানুষের কথায় নাচত! সাইদির জেল হাওয়ার পরে মানুষ সাইদিকে চাঁদে দেখতে পাইছে বলে দাবী করছে। দেশ জুড়ে হাঙ্গামা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে! গতকাল ঢাকায় মৃদু ভূমিকম্প হয়েছে, আর সাইদির ভক্তকুল বলা শুরু করেছে সাইদির মৃত্যুতেই এই ভূমিকম্প! এই শ্রেণীর সমর্থক থাকলে লাগে কিছু আর? যাই হোক, ওয়াজের ওই সব দিনে সাইদি নিজেকে হয়ত ঈশ্বরের কাছাকাছি কিছু একটা মনে করত। একবার ইরাকে আমেরিকা আক্রমণের পরে কক্সবাজারে এক ওয়াজে তিনি বলে বসেন আমেরিকান বা ব্রিটিশ, যাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিশোধ নিতে হবে! এই ওয়াজের ক্যাসেট ইংল্যান্ডের চ্যানেল ফোরের হাতে পরে। এমন লোক কীভাবে ইংল্যান্ডের ভিসা পায় বলে প্রশ্ন তুলে চ্যানেল ফোর! ফলাফল সাইদির বিলেত সফর বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে অবশ্য সাইদির আমেরিকার ভিসা বন্ধ হয়। নাইন ইলিভেনের পরে আমেরিকা সারা দুনিয়ায় নানা জনের উপরে নিষেধাজ্ঞা দেয়, বাংলাদেশ থেকে একমাত্র সাইদির নাম ছিল সেই তালিকায়। ... ...
মুশকিল হচ্ছে এই সব হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়! আর এখানেই রোমানিয়া পিছিয়ে গেছে পশ্চিম ইউরোপ থেকে। গেম মারা চলছে, এখন গরমের সময়, এখনও চলছে, শীত আসলেও চলবে। সমস্যার গোরায় হাত না দিলে গেম মারা থামান যাবে না। গেম মারার দিক থেকে বাংলাদেশ শীর্ষে। আর সাথে সাথেই আছে ভারত পাকিস্তান। ( এখানে কিন্তু ভারত পাকিস্তানে কোন ভেদাভেদ নাই। পাকিস্তানি দালাল ধরে ভারতীয়রা হরহামেশা গেম মারছে। পাকিস্তানি নাপিতের জন্য সবাই বসে থাকে, কখন আসবে আর সস্তায় চুল কাটাবে! ) নেপালের বেশ সুনাম রোমানিয়ায়। তারা গেম মারে না বা খুব কম মারে। যতদূর জানি সামনে এই তিন দেশ থেকে আর লোক নিবে না রোমানিয়া। কিন্তু যদি শ্রমিক বান্ধব না হতে পারে তাহলে আসলে কোন কাজই কাজে আসবে না। কেন যায় এইটার উত্তর বের করতে পারলেই গেম মারা বন্ধ হবে। আমি একজন ইথুইপিয়ার নাগরিককে চিনি, তার সঙ্গী সাথী সব গেম মেরে চলে গেছে, তিনিও যাবেন। কাজেই গেমের দোষ শুধু আমাদের দিয়ে আমাদেরকে ব্ল্যাক লিস্ট করে আসলে কোন কাজ হবে না। সমস্যার গোরায় যেতে হবে। ... ...
সোমবার ফ্লাইট। তাই আমাকে বিদায় জানাতে ক্যাম্পে তেমন কেউ ছিল না। যারা ছিল তাদের মধ্যে একজনের চোখ কী ছলছল করে উঠেছিল? না কি আমারই চোখ ভিজে যাচ্ছিল? কিন্তু কেন? এই সেই কুখ্যাত ক্যাম্প, যেখানে বৃষ্টিতে আমাদের রুমে নোংরা পানি ঢুকে সয়লাব হয়ে গেছিল। এখানেই বদমায়েশ কোম্পানি দুই মাস ধরে গরম পানি বন্ধ করে রেখেছে। এখানেই শীতের সময় হিটার বন্ধ করে দিত। এই ক্যাম্পের একটা স্ক্রুরর প্রতিও কোন প্রেম থাকার কথা না আমার। অথচ বুকের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠল কয়েকবার! অদ্ভুত মানুষের মন। ... ...
একজন কোন কাজকেই পাত্তা দেন না। আরে সাদেক ভাই, আমি এই কাজ করার লোক? কোম্পানি আমার যে ট্রেড তার বাহিরে কোন জায়গায় আমাকে কোনদিন কাজ করাতে পারবে না। যেখানেই পাঠাবে, আমি এমন কাজ করব যে আমাকে ফেরত পাঠাবে। বলবে এই লোক দিয়ে চলবে না। আমিও চলে আসব, এসে রুমে ঘুমাব। অথচ আমরা সবাই জানি উনি খুব পরিশ্রমী। যে কাজেই লাগায় দেওয়া হোক তিনি একটুও গাফলতি না করে কাজ করেন। আমি যে ওষুধ কোম্পানিতে ছিলাম ওইখানে এখন উনি কাজ করেন। যাওয়ার সময় বললেন, কালকেই চলে আসব, দেইখেন! দুই মাস হতে চলল, ভাই এখনও একই কথা বলেন। দেইখেন, বেতন নিয়েই এমন কাজ শুরু করব যে আমাকে ফেরত দিয়া কুল পাবে না। আমি আর কী, শুনি শুধু! ... ...
আমি রুমে ফিরে যাব। কারণ এই ভেজা শরীরে অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। কিন্তু এমন একটা প্রস্তাব আসল যে আমি বললাম চলুন, যাওয়া যাক। আমাদের মানে আমরা পাঁচজন ছিলাম তখন। আমাদের এই পাঁচজনের মধ্যে একজন একটু সিনিয়র। তিনি বেশ দুনিয়া ভেজে খাওয়া লোক। দুবাই থেকে এসেছেন কত বছর। এখন এখানেও হয়ে গেছে কয়েক বছর। তিনি বললেন তিনি ক্যাসিনতে যাবেন। এই জায়গাটা কেমন তা আমার দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। এর আগের অভিজ্ঞতা তো সব বইপত্র আর পর্দায় যা দেখছি তা। তবুও আমি হয়ত রাজিই হতাম না। আমাকে বলা হল ৫০ রোন দিয়ে ঢুকতে হবে। এরপরে সারারাত থাকা যাবে। এতে লাভ? লাভ হচ্ছে সারা রাতই খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে! আপনি যত খুশি যা ইচ্ছা খান! আমি জানি না, সত্য মিথ্যা। হয়ত একটা মাত্রা আছে, এর বেশি গেলে হয়ত কেউ এসে না করবে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তার আগ পর্যন্ত আমাকে ফেরায় কে? আমি বললাম রাজি। ... ...
আমাদের এই ছোটখাটো এই ক্যাম্পে বাস করি চল্লিশ পঞ্চাশজন। টয়লেট আছে দশটা বারোটা। ইউরেনাল আছে পাঁচ ছয়টা। গোসলের ব্যবস্থা আলাদা। একটা রান্নাঘর আছে, চুলা আছে বেশ কিছু, অনেক গুলাই নষ্ট। চল্লিশ পঞ্চাশ জন্য এই ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না। এত জন এক সাথে থাকে, কোন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কোম্পানি দেয় নাই। উল্টো আমরা কেন পরিষ্কার রাখি না, তাই সবার দুইশ রোন করে জরিমানা করেছে বেতনের সময়। সবাই কঠোর পরিশ্রম করে, তারপর আবার এখানে এই সব কাজে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। অথচ জরমানা দিতে হয়েছে সবাইকে। দেখার কেউ নাই! ... ...
ওরা বিমানবন্দরে নেমেই একটা গাড়ি ভাড়া করে ফেলল তিনদিনের জন্য। আর জার্মানি থাকতেই ওরা এয়ারবিএনবির মাধ্যমে একটা বাড়ি ভাড়া করে ছিল। গাড়ি নিয়ে সোজা বাড়িতে গিয়ে উঠলাম। এগুলা সবই আমার জন্য নতুন। ছোট্ট একটা বাড়ি, ঘরের ভিতরে প্যাঁচানো সিঁড়ি। নিচে বসার ঘর, রান্নাঘর আর বাথরুম। উপরে শোয়ার ঘর। ছোট্ট জায়গায় এমন কায়দা করে বাড়ি বানিয়েছে যে সব সুন্দর করে সুন্দর হয়ে গেছে। বাসা বুঝে নিয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলাম। এবং আমি পড়লাম বিপদে! ... ...