নিবারণবাবু ঘরে এসে বসলেন। বললেন, ' আমি কৈলাশ বোস স্ট্রিটে থাকি। তা প্রায় পঁচিশ বছর আছি ওখানে। পোর্ট ট্রাস্টে চাকরি করি। সামান্যই পাই। তাই সাইডে কিছু করতে হয় আর কি ... আপনি কোথায় আছেন ? ' ----- ' ইস্টার্ন রেলে ' ------ ' ও আচ্ছা ... ভাল ভাল। দেবেনদার সঙ্গে আমার ... ...
আজ কাবেরী কলেজে আসেনি । কালই বলছিল শরীরটা ভাল নেই , জ্বর জ্বর লাগছে । দেড়টা বাজে । একটা অফ পিরিয়ড আছে এখন । ক্লাসের দু তিনজন গেটের বাইরে এসে ঘুগনিওয়ালার কাছ থেকে ছোট ছোট গোল গোল আলুর দম কিনে খেতে লাগল । সুপর্ণা বলল, ' ঝোলটার কি টেস্ট ... না ? আর একটু দাও তো ... 'ওর দেখাদেখি দীপালিও শালপাতার পুরিয়াটা বাড়িয়ে ধরে .... ' এই যে .... আমাকেও একটু ... 'ঘুগনিওয়ালা তিনজনকেই একটু একটু দেয় ।আজ আকাশ বেশ মেঘলা। চারপাশে ... ...
হরিপদ ঘোষ রাজারহাটের এক গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে আসে শ্যামবাজার বাগবাজারে দুধ বিক্রী করতে। রাজাবাজারে ক' বিঘে ধানজমি আছে হরিপদর। তবু জাত ব্যবসা ছাড়ে নি সে। রামকান্ত বোস স্ট্রিটে বিভূতিবাবুর শ্বশুরবাড়িতেও সে দুধ দেয়। ওখানে সবাই বলে হরিপদ দুধে জল মেশায় না, জলে দুধে মেশায়। হরিপদ একটা টিনের কৌটো ভরা দুধ দেখিয়ে বলে, 'এটা একদিন খেয়ে দেখুন না ... দুধ কাকে বলে বুঝতে পারবেন। এই দেখুন ... ' , বলে একফোঁটা দুধ নিজের হাতের উল্টোদিকে ফেলে বলে, 'দেখুন দেখুন ... একেবারে বটের আঠার মতো ... পয়সা খরচ করবেন না তার কি হবে ... '। বাড়ির কারোরই অবশ্য হরিপদর এই দামী দুধের সঙ্গেও বটের আঠার ... ...
বুধবার বিকেলে তিনজনে আবার জড়ো হল শ্যামবাজারের কফিহাউসে । অমিতাভ স্নেহাংশুকে বলল, ' সেদিন ওরা কি বলছিল রে ? '----- ' কারা ? '----- ' ওই শতদল আর কমল দাস । '------ ' ও ... কিছু না । বলছিল কলেজ স্ট্রিটের হাউসে যেতে ... যোগাযোগ রাখতে .... এইসব । আমি আমাদের ব্যাপারটা ডিসক্লোজ করিনি ... '----- ' ভাল করেছিস । ফাইনালি পত্রিকা বেরোলে তো দেখতেই পাবে । আর ওদের কাছ থেকে কোন হেল্পের আশা না করাই ভাল .... 'সুনির্মল বলল, 'ওরা নিজের ধান্দা ছাড়া আর কিছু বোঝে না । আসলে ওরা চাইছে ... ...
সন্ধে ছটা বাজে । শ্যামবাজারের কফি হাউসে তিনজন বহুক্ষণ ধরে বসে বসে ছক কষায় ব্যস্ত । স্নেহাংশু মিত্র, অমিতাভ সেন আর সুনির্মল বরাট । লিটল ম্যাগাজিনের ছক । শুধুই কবিতা পত্রিকা । একটা নাম আপাতত আলোচনার মধ্যে আছে ---- সংসপ্তক। নামটা স্নেহাংশুর পেশ করা । তবে নামটা এক কথায় খারিজ করে দিল অমিতাভ । বলল, ' দূ..র এসব চলবে না । বেশ মারকাটারি কিছু একটা চাই । ধর বুলেট বা গাঁইতি বা অন্ডকোষ বা কাতুকুতু বা গুঁতোগুঁতি এই ধরণের কিছু । সুনির্মলের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে সে অমিতাভর পাশেই আছে । একটা সিগারেট ধরিয়ে টেবিলে দুটো কনুই রেখে একটা ... ...
স্কটিশ চার্চ কলেজের অ্যানুয়াল ফাংশান হবে মহাজাতি সদনে। ওরা নাকি হেমন্তকে নিয়ে আসছে এবার। বিভূতিবাবু কথাটা শুনে একেবারে উড়িয়ে দিলেন। ---- ' ওসব বাজে কথা। ডাহা মিথ্যে কথা। হেমন্ত মুখার্জি এখন বম্বেতে। সময়ই দিতে পারবে না .... তাছাড়া টাকার ব্যাপার তো আছেই .... ' নিতাইবাবু কথাটা সমর্থন করলেন। ----- ' সে তো বটেই। তার চেয়ে বরং ধনঞ্জয় বা সতীনাথকে ট্রাই ... ...
হেদুয়ায় পুকুরের পশ্চিমদিকে একফালি জমি আছে রাস্তার দিকে। সেখানে একদিন এক বেঁটেখাটো মোটাসোটা ভদ্রলোক এলেন। গেরুয়া রঙের পাঞ্জাবী এবং ধুতি পরা। ওখানে একজন বলল, ' ইনি হলেন অখিল নিয়োগী মানে, স্বপনবুড়ো। সবপেয়েছির আসর চালান সারা বাংলায়। এখানেও একটা করবেন বলে এসেছেন। ইনি নাকি বইও লেখেন। একটা বই সিনেমাও হয়েছে ---- বাবুই ... ...
বীরেনবাবু নিতাইবাবুর অফিসের সহকর্মী। নিতাইবাবুর বাসায় প্রায়ই আসেন। নিতাইবাবুর ছেলে মেয়ে তখন ছোট ছিল। বীরেনবাবু বাসায় এলেই তাদের মন আনন্দে নেচে ওঠে। তাদের সন্ধেবেলার লেখাপড়া মুলতুবী হয়ে যায়। বাবা মা কিছু বলে না। না না, বীরেন সান্যাল কোন খাবার দাবার আনেন না। কিন্তু অনেক গল্প নিয়ে আসেন। নানা রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চারের গল্প। বেশির ভাগই সমুদ্রের তলায় জলজন্তুদের মোকাবিলা করা ... ...
হেদুয়া পার্কের একপাশে রামদুলাল সরকার স্ট্রীট। কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটের বুকের ওপর দিয়ে আড়াআড়ি বেরিয়ে গেছে ওদিকে দর্জিপাড়ার দিকে। ওই রাস্তাতেই মোড়ের মাথায় বইয়ের দোকান বৈকুন্ঠ বুক হাউস। খানকয়েক বাড়ির পরে নিতাইবাবুর মানে, নিতাইচন্দ্র ভট্টাচার্যের বাড়ি। ভাড়াবাড়ি আর কি। নিতাইবাবু পরিবার নিয়ে একতলায় থাকেন। রেল অফিসে চাকরি করেন। দোতলাতেও আর এক ঘর ভাড়াটে আছে। অনিল ঘোষ সেখানে তার পরিবার নিয়ে থাকেন। বাড়িওয়ালা বিভূতিবাবু, বিভূতিভূষণ দত্ত সপরিবারে তিনতলায় থাকেন। তার বয়স প্রায় ষাট বছর। বায়োস্কোপ দেখার খুব শখ। একা একাই দেখেন। তার স্ত্রী যান তার ... ...
(শেষ পর্ব) কলতান হেসে হরিপ্রসাদকে বলল, ' আসুন আপনারা .... আমরা পেছনের ঘরে বসে একটু কথাবার্তা বলি .... 'আগরওয়ালজি একগাল হেসে বললেন, ' হ্যাঁ চলুন স্যার ... 'স্বামী স্ত্রী দুজনে কলতানের পিছন পিছন একটা ঘরে গিয়ে ঢুকল। অনেক পুরণো বাড়ি, ছোট বড় মিলিয়ে অনেকগুলো ঘর ।----- ' বসুন বসুন হরিজি। বসুন ম্যাডাম ... আপনাদের মতো ওয়েল ম্যাচড পেয়ার আমি বেশি দেখিনি। খুব ভাল লাগে আপনাদের ... ...