এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • কোটা বিরোধী আন্দোলন (দ্বিতীয় পত্র!)  

    কিংবদন্তি লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৬ জুলাই ২০২৪ | ১১০৯ বার পঠিত
  • অনেকের কাছেই দুর্বোধ্য লাগছে। কেন 'আমি রাজাকার' শব্দটা আপত্তিকর, কেন সব মানলেও অনেকেই এইটা মানতে পারছে না, কেন? সমস্যা কই? ওরা বললেই তো আর রাজাকার হয়ে গেল না! ওরা তো রাগ ক্ষোভ থেকেই বলছে! এগুলা খুব যৌক্তিক কথা। মুশকিল হচ্ছে এইটা এমন এক জায়গা যেটা যুক্তির না, একশ ভাগ আবেগের জায়গা। প্রায় এক যুগ আছে যে জায়গার স্লোগান ছিল ক'তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার সেখানেই, সেই অদ্ভুত জাদুকরী জায়গায়ই কালকে স্লোগান দেওয়া হয়েছে আমি রাজাকার আমি রাজাকার! কষ্টটা কোন জায়গায় এইটা সবাই বুঝবে কীভাবে? যারা এই বিস্ফোরণ সময়ের ভাগীদার ছিল না সে কতখানি বুঝবে? 

    ধরুন শাহবাগ আন্দোলন হয়নি, গণজাগরণ মঞ্চ বলে কিছু এই দেশে হয়নি। সাকা, মুজাহিদ, নিজামি, কামরুজ্জামান সবাই এখনও এই ভূখণ্ডেই বাস করছে। জামাত আগের মতোই একটা ধরার মতো শক্তি। এমন একটা  পরিস্থিতিতে কালকের ঘটনা ঘটল! অট্টহাসি চিনেন? আহ্লাদে আটখানা কাকে বলে জানেন? সব দেখতে পারতেন! পাকিস্তানের আগেরদিন নাই, থাকলে গতকাল যা হয়েছে পাকিস্তানের রাস্তায় মিষ্টি বিলানো হত। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিত যে আমাদের কোন ভাইকে যেন অন্যায় ভাবে অত্যাচার করা না হয়! তারা আমাদের ভাই, তারা আমাদের বোন! এগুলা এক সময় নিয়ম করে দেখছি আমরা। খান...র পুলায় নায়েবে আমির মনের ভিতরের সুখানুভূতি চাপা দিয়ে গম্ভীর স্বরে টিভি ক্যামেরার সামনে বলত, খুব অন্যায় হচ্ছে! বৈষম্য দূর করে সঠিক ইশতেহার দেওয়া হোক! 
    আমাদের কপাল ভালো যে সেই দিন দেখতে হচ্ছে না। এখন একবার চিন্তা করেন যারা রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে আন্দোলন করল, এই দেশে রাজাকারদের শাস্তি নিশ্চিত করল তাদের কাছেই এই স্লোগান বুলেটের মতো বিঁধছে। আর যারা সংগ্রাম করছে, যারা রাজাকাদের অত্যাচারে স্বজন হারিয়েছে, সরাসরি অত্যাচারের শিকার হয়েছে, তাদের কাছে কেমন লাগতে পারে এই স্লোগান? 

    এখন সব দোষ প্রধানমন্ত্রীর! তিনি কেন অমন কথা বলল! প্রধানমন্ত্রী যা বলেছে তার অর্থ এই না যে সবাই রাজাকার। কিন্তু আমি যদি ধরেই নেই প্রধানমন্ত্রী বলছে যারা আন্দোলন করছে তারা সবাই রাজাকার! এর জবাবেও আপনি আমি রাজাকার বলতে পারেন না! আপনি কোন অবস্থাতেই আমি রাজাকার বলতে পারেন না, এইটাই ফাইনাল। প্রধানমন্ত্রী কী বলছেন? তিনি বলেছেন কোটা মুক্তিযোদ্ধার নাতি পুতিরা পাবে না, তো রাজাকারদের নাতিপুতিরা পাবে?  আচ্ছা, কথাটা একটু অন্য ভাবে বলে দেখি, যদি বেহুশ কারও মগজে ঢুকে। কথাটা যদি এমন হয় - দেশে মানুষ চাকরি পাবে, কোটা পাবে, কোন শূয়রের বাচ্চা, কুত্তার বাচ্চা কোটা পাবে না। এতে যারা সাধারণ মানুষ তারা কিছুই বলবে না। কিন্তু কোটা আন্দোলনকারীরা মিছিল বের করবে, তুমি কে আমি কে, শূয়রের বাচ্চা, কুত্তার বাচ্চা! কেন কথার এই প্যাচ বুঝতে পারবে না? প্রধানমন্ত্রী যদি আন্দোলনকারীদের উত্তেজিত করার জন্য, ভিন্ন দিকে দৃষ্টি নেওয়ার জন্য এমন একটা কথার ফাঁদ পাতেন তাহলে সবাই মিলে সেই ফাঁদেই পড়বে? এর জবাব তো দেওয়াই যেত যে না, দেশে শুধু মাত্র মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকারই নাই, সাধারণ মানুষও আছে। চাকরির ক্ষেত্রে ন্যায্য হিস্যা পাওয়া সবার নাগরিক অধিকার। কিন্তু যে উত্তর দেওয়া হল তার কোন যুক্তি নেই। 

    এই আন্দোলন শুরু হল কেন, কেনই ধরে ধরে মার খাচ্ছে এইটার কিছুই আমার বুঝে ধরে না। ২০১৮ সালে রাষ্ট্র সমস্ত কোটা বাতিল করেছে। এখন এসে আদালত বলছে সেইটা ভুল, কোটা থাকবে। আদালতে রাষ্ট্র কোটা বাতিলের জন্য আইনই লড়াই করছে না টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে? এখন যে আপিল করেছে, এতে রাষ্ট্র কোটা বহালের পক্ষে লড়ছে না বিপক্ষে লড়ছে? যদি রাষ্ট্র কোটা বাতিলের জন্যই লড়ে থাকে তাহলে কেন কোন যুক্তিতে আন্দোলন চলছে? রাষ্ট্র যদি বহালের বিরুদ্ধে আবেদন না করত, আইনই লড়াই না চালাত তাহলে বুঝতাম আন্দোলনের কারণ। এখন বলছে সংস্কার করতে হবে। হ্যাঁ, এইটা সবাই চায় যে সংস্কার হোক। কিন্তু এ জন্য তো আদালত থেকে রায় আসতে হবে! 
    এখন প্রশ্ন হচ্ছে আন্দোলন তো হচ্ছে। সবাই পাগল? সম্ভবত না। কিন্তু এইটা সম্ভবত সত্য যে এরা জানেই না আসলে কার ইশারায় কিসের আন্দোলন করছে। জ্বালাও পোড়াও না করে আমি বুদ্ধি দিতাম সরকারের উপরে ভরসা না করে আইনই লড়াই লড়ার জন্য নিজেরা প্রস্তুত হওয়ার। সরকার খামখেয়ালি করবে, তার যেন সুযোগ না থাকে। প্রয়োজনে নিজেরা আলাদা রিট কর। আদালত থেকে সমস্যাটা যখন সরকারের কাছে আসবে তখন আন্দোলন করে ফল পাওয়া যেতে পারে। এখন সম্ভবত সরকারের কাছেও উপায় নাই। 

    এবং আজকের অ্যাকশন! ছাত্রদের উপরে এমন করে ঝাঁপিয়ে পরে কী প্রমাণ হল আমি জানি না। এর সমাধান অবশ্যই অন্য ভাবে করা উচিত ছিল। ছাত্রদের উপরে অত্যাচার কোনদিনই ভালো কিছু বয়ে আনে নাই। তুই রাজাকার তুই রাজাকার থেকে আমি রাজাকার আমি রাজাকারের যে পথটা এইটার দায় তো বর্তমান সরকারেরই! এর মাঝেই তো এই প্রজন্ম বড় হচ্ছে। কেন এরা এমন চিন্তা নিয়ে বড় হচ্ছে? কেন, কোন শিক্ষায় এরা এমন শিক্ষিত হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর দিবে কে? এমন করে মারা হল ছাত্রদের। কোন ধারণা আছে এই আন্দোলনের মধ্যে একটা লাশ পড়লে কী হবে? কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়াবে? ফাঁসানোর  জন্যও তো কেউ লাশ ফেলে দিতে পারে, এইটা না বুঝার কী  আছে? তখন সামাল দিতে পারবেন সব? কে নেয় এমন সিদ্ধান্ত! এইটা লেখার সময় কয়েকজন ফেসবুক মেসেঞ্জারে জানালো যে রাতেও চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা! যদিও এই মুহূর্তে সত্য মিথ্যা নির্ণয় করা মুশকিল। কারণ এই সব পরিস্থিতিতে গুজব খুব জোরেশোরে চলে। সত্য তিন হাত যেতে যেতে গুজব দুনিয়া ঘুরে চলে আসে। তাই এই মুহূর্তের খবরের সত্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু সত্য হলেও অবাক হব না। কেন জানি ধ্বংসের পথ, হিংসার পথেই সহজে যেতে চায় মানুষ। 

    সরকার যতটা আন্তরিক কোটার ব্যাপারে ততটা আন্তরিক মুক্তিযোদ্ধাদের বাকি সব দাবী দাওয়ার ক্ষেত্রে হলে কোটা নিয়ে এতো হাঙ্গামা হতই নাই। কেন চাকরিই করতে হবে? মুক্তিযোদ্ধাদের সবার জন্য আরও অনেক কিছুই করা যায়। সহজ ঋণের ব্যবস্থা করা যায়। স্বাবলম্বী হতে যা লাগে সেই পথে সাহায্য করা যায়। সরকার তো কম করে নাই, আরও করুক। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য, তাঁদের সন্তানদের জন্য করতে তো সরকারের ইচ্ছা আছেই। তো দিক এগুলা সুবিধা। মুশকিল হচ্ছে এই ক্ষেত্রে কবি নিরব। কারণ এখন পর্যন্ত সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও বানাইতে পারি নাই আমরা। এখনও ৫০ বছর বয়সই লোক পাওয়া যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র নিয়ে ঘুরছে! এতদিন ধরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়, আজ পর্যন্ত জামাতকে নিষিদ্ধ করতে পারল না না কি করল না? কেন? মুক্তিযুদ্ধে জামাতের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ আছে? সপক্ষের দল বলে আর কিছু লাগে না, যা  করবে সব জায়েজ। 

    যাই হোক, এই আন্দোলন কেন হচ্ছে কারা এইটা ঠাণ্ডা মাথায় না ভাবলে মুশকিল। ভাবতে হবে, বুঝতে হবে দিন দুনিয়ার প্যাচগুজ। সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৬ জুলাই ২০২৪ | ১১০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • r2h | 192.139.20.199 | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০০:৩৭534739
  • এই ব্যাপারটার একটু কন্টেক্সট দিলে ভালো হয়। ফেসবুকে দেখছি, কিন্তু বুঝতে পারছি না, কারা করছে, কেন করছে, কোথা থেকে শুরু হলো।

    এই লেখার চতুর্থ অনুচ্ছেদ থেকে কিছুটা বুঝতে পারলাম যদিও।
  • কিংবদন্তি | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০১:০৯534742
  • ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলনের পরে সরকার সমস্ত কোটা বাতিল করে। মুক্তিযোদ্ধাদের তরফ থেকে আদালতে যাওয়া হয় এই আদেশ বাতিল করার জন্য।  কয়েকদিন আগে আদালত রায় দিয়েছে যে সমস্ত কোটা বাতিল এইটা অবৈধ। সরকারের ওই আদেশ বাতিল করে আদালত। মানে হচ্ছে আগের যে ত্রিশ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা তা সহ সকল কোটা আবার ফিরে আসছে! এইটা সাধারণ ছাত্ররা মানতে পারছে না, তারা শুরু করেছে আন্দোলন। সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। আদালত সিদ্ধান্ত আপাতত এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আবার শুরু হবে শুনানি। 
    আন্দোলন করছে সাধারণ ছাত্র, চাকরি প্রত্যাশী জনগণ ব্যানারে।  কিন্তু আমার সন্দেহ আছে এরা কতটা সাধারণ তা নিয়ে। এমন কি সরকারেরও কোন চাল হতে পারে! কারণ আদালতের একটা বিষয় নিয়ে এখন কেন আন্দোলন করতে হবে এইটা আমার মাথায় ধরে না। যেখানে সরকার নিজেই আপিল করছে কোটা বাদ দেওয়ার আদেশ যেন বহাল থাকে তা নিয়ে। 
    রাজাকারের ব্যাপারটা হচ্ছে, আমার কাছে সবচেয়ে বেশি কুৎসিত লাগছে তা হচ্ছে কালকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা স্লোগান দিয়েছে আমি রাজাকার বলে। কেন? কারণ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোটা আমি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের দিব না রাজাকারদের সন্তানদের দিব? কোটার ছাত্ররা মেধাবী না এইটার জবাবে তিনি বলেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা মেধাবী না তো কি রাজাকারদের সন্তানরা মেধাবী? এই যে দুইটাই অপশন দিয়ে বলা এইটাই ছাত্রদের লাগছে। তারা আমি রাজাকার বলে তুমুল মিছিল করেছে। সারা দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আমি রাজাকার স্লোগান দিয়েছে! আর আমার আপত্তিটা এখানেই। ওইটাই লিখার চেষ্টা করেছি। 
  • . | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০১:১৮534744
  • শরীফ "জাতীয় ক্ষমা" (হয়ত শব্দবন্ধটা হুবহু এমন নয়) ব্যাপারটা বঙ্গবন্ধুই তো বলেছিলেন না, স্বাধীনতার পরে?
    তাঁরই কন্যা এমন কথা বলেন কেমন করে?
  • কিংবদন্তি | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০১:৪৭534749
  • দিদি, তাহলে তো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও প্রশ্নবিদ্ধ মনে হবে আপনার কাছে। গণজাগরণ মঞ্চ, শাহবাগ আন্দোলন এগুলা সবই অহেতুক মনে হবে। কিন্তু ব্যাপারটা তেমন না। বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা সবার জন্য ছিল না। যারা মানবতা বিরোধী অপরাধে সরাসরি যুক্ত ছিল তারা এই ক্ষমার আওতায় পড়বে না।  
     
    এখন শীর্ষ রাজাকাদের ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পরে, ধুঁকতে থাকা জামাতকে সরকারই বাঁচিয়ে রেখেছে। রাজাকার শব্দটা প্রায়ই ব্যবহার করে এইটাকে হারিয়ে দিতে দিচ্ছে না! এই আন্দোলনও আমার কাছে মনে হয় নানান সমস্যা থেকে সবার চোখ অন্য দিকে রাখার চেষ্টা। আমার কাছে যেটা কোনমতেই মেনে নেওয়ার মতো না তা হচ্ছে যে যে কারণেই ফাঁদ পাতুক, কেউ এই দেশে আমি রাজাকার বলে স্লোগান দিবে? লিংক গুলা দিতে পারলে, তুমি যদি দেখতা তাহলে বুঝতা হয়ত যে কেমন লাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্র এক তালে স্লোগান দিচ্ছে আমি রাজাকার! এইটা মেনে নেওয়া সম্ভব না। কোটার সংস্কার আমি একশ একশ চাই কিন্তু এর জন্য আমি রাজাকার বলাদের মেনে নিতে হবে! এইটা হবে না আমার দ্বারা। 
  • . | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০১:৫০534750
  • তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখে নি। জিনিসটা অনুভব করতে পারছে না।
  • কিংবদন্তি | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০২:১৭534752
  • দিদি, মুক্তিযুদ্ধ তো আমিও দেখি নাই। এইটা আসলে অন্য জিনিস, থাকতে হয় ভিতরে। দেশ, দেশের ইতিহাস, কৃষ্টি , সংস্কৃতি এগুলার প্রতি যদি প্রেম না থাকে তাহলে এরা কেমন শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে আমি বুঝি না। উগ্র জাতীয়তাবাদ খারাপ কিন্তু উদাসীন জাতীয়তাবাদ কী? আমি জানি না। 
  • Guru | 2409:4060:314:e28:d460:5406:4ded:f658 | ১৬ জুলাই ২০২৪ ০৭:৫১534757
  • শরিফ, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন পুরোপুরি মেরুকরণ হয়ে গেছে। আমার নিজের মনে হয় যে, হাসিনা সরকার সবদিক থেকে বিশেষ করে গত নির্বাচনে ব্যাপক রিগ্গিং করে ক্ষমতায় আসার পরে নানা সমস্যাতে ভুগছে। রমজানের সময়ে "বয়কট ইন্ডিয়া" আন্দোলন, তারপর বেনজির দুর্নীতি ফাঁস, এই দুইদিন আগের চীন সফর আর্থিক সাহায্যে পেতে পুরোপুরি ব্যর্থতা, জালি এক্সপোর্ট তথ্য এবং সর্বশেষে ভারতের চাপে চীনের বিলিয়ন ডলারের তিস্তা প্রকল্প ও সোনাদিয়া বন্দর প্রকল্প বানচাল (যার ফলে ও ভারতীয় ট্রানজিট রেলের জন্য বাংলাদেশের ২২ ভাগ জমি ভারতকে দিয়ে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার মালিক হওয়া, এই সবকটা ঘটনাতে এখন হাসিনা সরকার ব্যাকফুটে। হয়তো এসব কারণেই মুক্তিযুদ্ধকে হাতিয়ার করাটা ছাড়া হাসিনার আর কোনো উপায় নেই। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালীর সংবেদনশীল অনুভূতির বিষয় কাজেই এখন চারদিক থেকে কোনঠাসা হাসিনা সরকারের সামনে মুক্তিযুদ্ধ রাজাকার এসব কথা বলে সমাজকে মেরুকরণ করা একমাত্র উপায়। আমি মনে করি আপনার মতো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের এই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টি পুনর্মূল্যায়নের দরকার। মুক্তিযুদ্ধ কি শুধু বাংলাদেশকে পাকিস্তানের কলোনি থেকে ভারতীয় কলোনী বানাবার জন্য করা? এটি এখন সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন। কি বলেন ভাই?
  • বিপ্লব রহমান | ১৬ জুলাই ২০২৪ ২২:৩৯534777
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও সরকারি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থানে 
  • Guru | 2409:4060:314:e28:d460:5406:4ded:f658 | ১৬ জুলাই ২০২৪ ২৩:২২534778
  • একটি YouTube video তে এইমাত্র দেখলাম যে ঢাবিতে আসলে স্লোগান উঠেছিলো এরকম, "আমরা কে আমরা কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে,  স্বৈরাচার  স্বৈরাচার"
  • কিংবদন্তি | ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৩:০০534781
  • না, শ্লোগান প্রথমে ছিল আমি রাজাকার। মানুষের প্রতিক্রিয়ার ফলে পরিবর্তন করে পরে এইটা বানাইছে। আর জাফর ইকবালের দোষ সব সময়ই। উনি কোটার বিরোধিতা করে অনেক আগে থেকেই লেখা লিখেছেন। এবারও লিখেছেন। কিন্তু তিনিও আমার মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আমি রাজাকার স্লোগান মেনে নিতে পারেন নাই, যার ফলে উনি বলেছেন উনি আর জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান না। ব্যাস হয়ে গেল,  পুরো লেখাটা না পড়েই ঝাঁপিয়ে পরেছে উনার উপরে। 
  • বিপ্লব রহমান | ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৬:০৯534786
  • আপডেট: 
     
    সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা। শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ। 
     
    জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রলীগের কর্মীদের কক্ষ ভাংচুর,  রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদের বের করে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। 
     
    বাংলাদেশে ফেসবুক লগইন এ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মোবাইল ডেটা ব্যবহারকারীরা। এছাড়া সব বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের এলাকায় ফোর-জি ইন্টারনেট নেই, ধীর গতি।
  • Guru | 103.41.197.106 | ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৭:৫৫534791
  • সাদেক,
     
    আপনি যা ভয় করেছিলেন ঠিক তাই হতে চলেছে। একটা নয় পড়েছে পাঁচ পাঁচটা তাজা প্রাণ। আজকে আবার আশুরা। সাঈদকে তো এখন কারবালা আর ইমাম হোসেনের সঙ্গে তুলনা করে সোশ্যাল মিডিয়াতে মিম দেওয়া শুরু হলো বলে।
     
  • Guru | 103.41.197.106 | ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৪:১৬534808
  • মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী যা বলছেন খুবই ইন্টারেষ্টিং | শেষ ৩-৪ মিনিট শুনুন | মুক্তিযোদ্ধার নাতি নাতনি মুক্তিযোদ্ধার কোটাতে ইউনিভার্সিটিতে ঢুকে এখন মুক্তিযোদ্ধার কোটার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করছে | sadsurprise সত্য সেলুকাস বিচিত্র এই দেশ ! 
     
  • কিংবদন্তি | ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৮:১৫534821
  • পুরোটাই শুনুন। কোন দিক থেকে মনে হয়েছে যে উনি সবাইকে রাজাকার বলেছেন? আর এর প্রতিবাদে আমি রাজাকার বলে স্লোগান দিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস কাঁপিয়ে ফেলছিল এরা। 

    কিন্তু এখন আসলে এগুলা বলার সময়ও না। ছয়টা লাশ পড়ে গেছে, এখন আর কোন কিছুরই কোন মানে থাকে না!   আমার পুরো লেখাটাই বাতিল হয়ে গেছে ছয় ছয়টা লাশের  নিচে! এইটা কোনমতেই মেনে নেওয়ার মতো না। 
    আজকে সন্ধ্যা সাতটায় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিবেন, দেখা যাক কী বলেন। 
  • Guru | 2409:4060:314:e28:aafd:1f6:3373:c182 | ১৭ জুলাই ২০২৪ ২০:০৫534825
  • মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ                                                                              https://www.prothomalo.com/politics/omlta636s7   
  • | ১৭ জুলাই ২০২৪ ২০:২২534827
  • ঢাকা আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ আক্রমণ করেছে। সম্ভবত বরিশালেও। বিকেল ৫টা নাগাদ ট্যুইটারে দেখলাম। 
    এই যে ভিডিও।
     
  • | ১৭ জুলাই ২০২৪ ২০:২৪534828
  • ছাত্রদের পিছনে পুলিশ লেলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আক্রমণ করার থেকে কুৎসিৎ কিছু হয় না। 
  • Guru | 2409:4060:314:e28:aafd:1f6:3373:c182 | ১৭ জুলাই ২০২৪ ২০:৫৮534831
  • মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বিশ্লেষণঃ 

     

    আমার মতে, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদত্যাগ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় যেহেতু হাসিনার পদত্যাগ মানে ১৫ বছর ধরে তিলেতিলে গড়ে তোলা তার একদলীয় আর্থিক ইকোসিস্টেমটি ধ্বংস হবে। এখনো হাসিনা মানেই আওয়ামী লীগ, হাসিনা না থাকলে আওয়ামী লীগেরও পতন হবে যেটি উনিজির ভারত কোনোভাবেই মেনে নেবেনা। আয়ুব খান বা এরশাদের পক্ষে পদত্যাগ ব্যাপারটি অনেক সহজ ছিলো। অদ্ভুত ব্যাপার স্বৈরাচারী সামরিক শাসকেরা গদি ছাড়তে পারেন এবং নিশ্চিন্তে জীবনের শেষ কটা দিন পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন, কিন্তু "গণতান্ত্রিক" ভাবে নির্বাচিত নেতারা পারেননা !!! সত্য সেলুকাস !!!
  • কিংবদন্তি | ১৭ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩৬534841
  • প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগামাথা কিছুই বুঝি নাই। আর না, উনি পদত্যাগ করবেন এমন আশা কেউই করে নাই। পদত্যাগের জন্য  বসে নাই উনারা। এই আন্দোলন উনাকে ফেলে দিতে পারবে না। এইটা একটু চেষ্টা করলেই থেমে যাবে। একটা রায় আসলেই সবাই খুশি  হয়ে ফিরে যাবে। এইটা বললাম শান্তিপূর্ণ কথা। হাতুড়ি সিস্টেমে সরকারের হাতে এখনও অনেক যন্ত্র আছে। সরকার বিজেবি নামাতে পারে, কারফিউ দিতে পারে,  জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে, আর্মি নামায় দিতে পারে কিছুদিনের জন্য এমন অনেক কিছুর পরে আসবে পদত্যাগের চিন্তা। তবে বিরোধী শক্তি  নিজেরা যা করতে পারে নাই এই ছাত্ররা তা করেছে।  তারা এখন হা করে এই গুড় খাওয়ার জন্য বসে আছে। এবং আন্দোলন আস্তে আস্তে সাধারণ ছাত্রদের হাত থেকে পিছলে  তাদের হাতে চলে যাচ্ছে। অভিজ্ঞ লোকজনের হাতে চলে গেলে তখন আবার খেলা অন্য রকম হয়ে যাবে। 
    @দ, পুলিশ কালকে একজনকে বগুড়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে মেরে ফেলছে! এইটা জাস্ট মেনে নেওয়ার মতো না। আমি উপরে  মন্তব্য করেছি যে এমন করে মানুষ মারার পরে আমার এই লেখার যে বিষয় বস্তু তাই আসলে হালকা হয়ে গেছে। এরপরে আসলে বলার কিছু থাকে না, কে রাজাকার বলল নিজেকে তার কোন মূল্য থাকে না। মানুষের জীবনের চেয়ে তো বড় কিছু নাই। 

    প্রথমদিন যদি ছাত্রলীগকে দিয়ে আক্রমণ না করাত, পুলিশ যদি প্রথম দিনেই যেতো  তাহলে আন্দোলন এতো বড় হত না। ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে আন্দোলনের চেহারা বদলে গিয়েছে। যদিও  প্রথম আলোর একটা রিপোর্ট দেখলাম যে এইটা আন্দোলনকারীরা নিজেরাই ছাত্রলীগকে টেনে আনছে। তারাই শুরু করে প্রথমে। কে যে কিসের ভিতরে এই বাচ্চাদেরকে ফেলে দিচ্ছে তা বুঝা মুশকিল। আগামী দুই একটা দিন খুব ক্রিটিক্যাল। অনেক কিছু নির্ভর করছে এই দুই একটা দিনের উপরে। 
  • NRO | 165.124.84.35 | ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৪:৫৬534858
  • দেখুন হাসিনা অন্য যে কোনো বাংলাদেশি নেতার চেয়ে হাজার গুনে ভালো। আমি তো ওনাকেই সাপোর্ট করবো। কোটা হয়তো ভালো একটা নীতি   নয় কিন্তু তাই বলে সরকারের সঙ্গে লড়াই করা ঠিক নয় | পরের নির্বাচনে সরকার কে হারান ও তার পর কোটা বন্ধ  করুন। ভোটেও হারবেন আর তবুও সরকারকে পরাজিতদের কথা মতো চলতে হবে এটা ঠিক নয় | মনে হয় কোটা কে majority public support করে। 
  • Guru | 2409:4060:314:e28:1455:1cbe:5618:2bfc | ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৬:৪৪534860
  • @NRO
    বাংলাদেশ আর হাসিনাকে নির্বাচনে হারানো !!!!! wink​ ওহঃ কুট্টির ভাষাতে বলতে ইচ্ছে করছে "ধীরে কন কত্তা ঘোড়ার কানে গেলে সেও হাসবে"। বাংলাদেশে শেষ মুক্ত ও অবাধ নির্বাচন ৭১ সালে পাকিস্তানী সামরিক শাসক ইয়াহিয়ার আমলে। তারপরে আর কবে অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন বাংলাদেশে হয়েছে ??? আসলে ভোট এবছরে গোড়ার দিকে ঠিকঠাক হলে হয়তো ছাত্রছাত্রীরা রাস্তাতে নামতোনা। তাছাড়া বাংলাদেশে সবাই কোটা সমর্থন করে এটা আপনি কিভাবে জানলেন? আর বাঙালী রাজপথে নেমে অনেক রাজনৈতিক পরিবর্তন করেছে। ১৯৬৯, ১৯৯০ এর গোড়ার দিক, ২০১৩-১৪ শাহবাগ ইতিহাস অনেক। দেখা যাক কি হয়?
  • NRO | 165.124.84.35 | ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩৮534863
  • @গুরু, 1975-1991 যখন সামরিক আইন Dictatorship চলছিল তখন কি কোনো anti-military মুভমেন্ট হয়েছিল? না। জিয়াউর যখন হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা কে ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছিলো তখন তো কোনো মুভমেন্ট এর কথা শুনিনি! তা ছাড়া হাসিনা জেতার আগে তো বিনপি পাওয়ার এ ছিল। সেই ইলেকশন তো অন্তত free & fair ছিল। ঘটনা হলো হাসিনার সঙ্গে খুবই বড়ো সংখ্যক জনসমর্থন আছে যদিও আমি বলতে পারবোনা তা more than 50% or not. শুনেছি বেগম জিয়ার দলের সঙ্গে fundamentalist দের আঁতাত আছে। যদি তাই হয় তো আমি বলবো হাসিনার secular পার্টি is a better option.

    এটা সত্যি জানি না যে কত পার্সেন্ট বাংলাদেশী কোটা কে সাপোর্ট করেন কিন্তু আমার মনে হয় যে যদি কোটা সত্যিই মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের উপকারে লাগে তবে সেটা একটা ভালো পলিসি। বাংলাদেশ কিন্তু হাসিনার শাসনে খুব ভালোই চলছে - আমাদের পশ্চিমবঙ্গের থেকে ভালো।
  • sda | 2405:8100:8000:5ca1::155:127b | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১০:২৯534866
  • আশার থেকে আশঙ্কার ছবি বেশি করে ভাবায়। হঠাৎ 'আমি কে তুমি কে রাজাকার রাজাকার', স্লোগান উঠলো কেন! কারা তুললো! ছাত্রছাত্রীরা? ভুল দুএকটা ভিডিওতে দিন তিনেক আগে স্লোগান এখন ঢাবি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রামের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

    বিনীত প্রশ্ন ১৯৭১এ রাজাকার বাহিনী যে পিশাচতুল্য বর্বরতা দেখিয়েছে, তার স্মৃতি মাথায় রাখলে এই স্লোগান আসে না। স্মৃতিভ্রংশ হলে ছাত্রছাত্রীদের মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভে পূর্বপুরুষদের কঙ্কাল হয়ে যাওয়া গণকবরের দেহ দেখানো হোক। কিন্তু আমার ধারণা যে ভুল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য করেছিলেন সেই একই ভুল করছেন শেখ হাসিনা ওয়াজেদ।

    লক্ষীন্দরের লৌহবাসরে কালসর্প প্রবেশের মতো বামফ্রন্টের দুর্ভেদ্য দুর্গে অতি-উগ্র-কচি-নিমরাজি বাম, লুম্পেন-নরমাংস ভোজী দক্ষিণপন্থীদের সমাবেশ ঘটে, স্থান কাল পাত্রের নিরিখে একই ভাবে বাংলাদেশে জনবিরোধী শক্তি নিজের দাপট বাড়িয়ে নিচ্ছে।
    কোটা উপলক্ষ্য মাত্র। মূল লক্ষ্য পাকি শাসনের বৈধতা, বাঙালি বিরোধী নরসংহারের জায়গায় নিজেদের 'কোর ফিলোসফি' স্থাপন করা।

    লক্ষ্য করে দেখুন ভারতীয় রেল ট্রানজিট নিয়ে জামাত-রাজাকারদের এজেন্ডা ছাত্রদের নীতির সঙ্গে ইমপ্ল্যান্ট করা হচ্ছে। আমার আশংকা ভারতীয় রেলের ওপর, দূতাবাসে আক্রমণ হওয়া, ভারতীয় জনসম্পদের ওপর আক্রমণ হওয়া বিচিত্র নয়।

    হাসিনার ওপর জামাত বিএনপির ক্ষোভ কারণ রাষ্ট্রশক্তির ভাগ ওঁদের কাছে অধরা। সন্দেহ নেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা অন্তত আজকের যুগে অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু ঘটনা হলো এই মুক্তিযুদ্ধের কোটার খয়রাত, রাষ্ট্র প্রদত্ত জাকাতের ভাগ বিএনপি জামাতে ইসলামিও পেয়েছে। এখন ক্ষমতার বাইরে। তাই আঙ্গুর ফল টক।

    যে বিপুল অর্থ হাসিনা ও তাঁর চামচের দল লুট করেছে সেটা বাংলাদেশ এর অর্থনীতির জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর। কিন্তু তারচেয়ে ক্ষতিকর, সর্বনাশের দিকচিহ্ন হাসিনার বিরুদ্ধবাদী শক্তির উত্থান।

    জাতির অস্থায়ী বাপ ইব্রাহিম কি করে হয়, এই দুর্বোধ্য প্রশ্নের উত্তরের চেয়ে অনেক সহজ উত্তর হলো মুজিব একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অনিচ্ছুক অংশকে 'বাঙালি রাষ্ট্রের', রেডিয়াসের মধ্যে আনতে ব্যর্থ হন। তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যু, খুদে রাসেলের নির্মম মৃত্যু তারই ইঙ্গিত দেয়। রাসেলের মৃত্যু, অর্থাৎ খুন, মুজিব পরিবারের হত্যা ছিল সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। ভারতের সঙ্গে থাকা, তাঁর ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রের পরিপালন চলবে না। স্বৈরাচার ইস্যু নয়। ইস্যু ভারতের পক্ষাবলম্বন। হিন্দু সেক্যুলার ভারতের সঙ্গে সহাবস্থান সম্ভব নয়।

    ভারতের পণ্যবয়কট উপলক্ষ্য মাত্র। আসল মূল লক্ষ্য 'এশিয়ার জাগ্রত' আমেরিকার ঋণ ও সস্তাজাত পণ্যে বাংলাদেশকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলা। কিংবা কক্সবাজার, মংলা বন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজের গতবিধি নিয়ন্ত্রণ।

    'সেক্যুলার বাংলাদেশের' গণপ্রজাতন্ত্রীরাষ্ট্র সংজ্ঞা যাঁদের কাছে রাসেল ভাইপারের মতো ভয়যুক্ত তাঁরা ঘাপটি মেরে ছাত্রছাত্রীদের গণআন্দোলনে ঢুকে পড়েছে। শেখ হাসিনার উন্নাসিকতা তাঁদের বল জুগিয়েছে। দম্ভ যুগিয়েছে শ্বদন্ত।

    হাসিনা যত নির্মম হবেন, জামাতের ইসলামীর ক্যাডার বাহিনী ততসক্রিয় হবে। বাংলাদেশের সেনা, পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগে আওয়ামী পরিবার কেবল নয়, জামাতও ইনফিলট্রেট করেছে। আমি দুইশতভাগ নিশ্চিত হাসিনার দলের ভেতরে লুকিয়ে থাকা হেফাজতে ইসলামের সাহায্য ও তথ্য ফাঁস ছাড়া এই মুভমেন্ট সফল হতে পারে না।

    বামফ্রন্টের অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্রের একটি অমোঘ লাইন এখনও মনে পড়ে। উনি শাহবাগের দুর্দমনীয় আন্দোলনের কালে আনন্দবাজার পত্রিকার, এপাড়ের 'হিন্দু ইন্টেলিজেন্সিয়া' (কথাটা উনি লেখেন নি), রাজাকার বিরোধী আন্দোলনে জড়াতে বারণ করেছিলেন। কারণ 'হিন্দুভারতের সাহচর্য' শাহবাগের আন্দোলনকারীদের বিরোধী শক্তিদের দুর্বল করবে। 'হিন্দু ভারতের' ঘনিষ্টতা চিরকালই 'উপমহাদেশের মুসলিম শরিয়া নির্ভর সমাজের' কাছে গরলবৎ।

    অশোক মিত্র কতবড় দূরদর্শী ছিলেন সেটা আজ বোঝা যায়। উৎখাত হওয়া স্বদেশের পরিবেশ পরিস্থিতি ওঁর চেয়ে কেউ ভালো বুঝতেন না।

    যেমন আজকের এপাড়ে তরুণ প্রজন্ম হাসিনার অপরিহার্যতা বুঝতে অক্ষম। মিশরে আলসিসি, মূর্শিকে গলা ধাক্কা দিলে ভারতে যাঁদের বুকে আর্টারিয়াল পেইন হয় তাঁরাই কিন্তু ছোবল মারতে ওঁৎ পেতে আছে।

    পদ্মা পাড়ের বাঙালি মুসলমানের 'জাতির পিতা ইব্রাহিম না বখতিয়ার' তারচেয়ে বড় প্রশ্ন হাসিনার পর কে? একটা বিরাট অন্ধকার। চলমান ছাত্রআন্দোলন কোনও দলের তত্বাবধানে হচ্ছে না। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে আঁড়কাঠীরা কলেমার পতাকা ওড়াতে দুবার ভাববে না। গঙ্গাপাড়ের 'পরিবর্তনের' চেয়ে ভয়ঙ্কর হতে পারে পদ্মাপাড়ের 'পরিবর্তন'।
  • কিংবদন্তি | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১১:২৯534867
  • NRO, এইটা সময় না শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থা কেমন তা বিচার করার। সব কিছু ম্লান হয়ে গেছে, এমন কি আমার এই লেখাটাও, ছয়টা মানুষ লাশ হয়ে যাওয়ার পরে বাকি সব আলাপই মিথ্যা। এই দুইদিন দেশ জুড়ে যা হল এর কোন ব্যাখ্যা নাই। চরম অন্যায় হইছে। এখন যদি কিন্তু ইত্যাদি বলার আর সুযোগ নাই।  
  • Alok Mondol | 109.248.149.173 | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১২:১৬534871
  • বাংলাদেশে যে রেটে সৌদি পেট্রোডলার ঢুকেছে, হাসিনা কিছুই করতে পারবে না। ইসলামিক দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বাড়বেই। 
     
    ভারতের দিক থেকে বর্ডার সীল করে দেওয়া হোক যদ্দিন না গ্লোবাল ওয়ার্মিং হয়ে বাংলাদেশ ডুবে যায়।
     
    আমরা দুদিকে পাকিস্তান চাইনা।
  • কিংবদন্তি | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১৩:২৪534875
  • @sda, সহমত। আমার লেখায় আমি এই কারণেই  নিরপেক্ষ হতে পারি না। আমি জানি কী ওঁত পেতে আছে। এবং আমি এখন এইটাও মানতে পারছি না যে এমন একটা অহেতুক ইস্যু নিয়ে সরকার ৬ জন মানুষ মারার দায় নিলো। এইটা সরকারের পক্ষে খুব সহজেই শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান করতে পারত। সরকার তা না করে সংঘাতের পথ বেছে নিলো। এই রহস্য আমি বুঝলাম না। যেখানে সরকার নিজেই আপিল করছে কোটা বাতিল অবৈধ রায় যেন বাতিল হয়। তাহলে এর সমাধান করতে মানুষ মারতে হবে? আমি আসলে  জানি না, মাথায় ধরে কিছু।  সব আবোলতাবোল লাগছে দুইদিন ধরে। আজকেও চলছে পুলিশের সাথে ছাত্রদের সংঘাত। এমনই করবে তাহলে জাতির উদ্দেশে কালকে ভাষণ দেওয়ার মানে কি? 
  • | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৪534888
  • আজকে তো আরো অনেক খুন হল। ট্যাঙ্ক নেমেছেও দেখলাম যেন। ব্যপারটা আর কোটায় সীমাবদ্ধ নেই। হাসিনা খুবই বাজেভাবে হ্যান্ডল করছেন পুরোটা। 
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন