প্রীতি ও শুভকামনা (এক্রোস্টিক) ————— সুপ্রিয়া চৌধুরী ————— প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইলো আজ বিজয়ার শুভ দিনে, তিমির আঁধার ধুয়ে মুছে যাক্ মায়ের বিসর্জনে। ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আমরা একে
কাবেরী পাড়াতুতো বন্ধু অনামিকার সঙ্গে ধর্মতলা স্ট্রীটে কমলালয় স্টোর্সে গেছে সোয়েটার কেনার জন্য। অনামিকা একটা কার্ডিগান এবং আরও কিছু কিনবে। অনেক দেখাদেখির পর দুই বন্ধুর কোন কিছুই পছন্দ হল না। কাবেরী বলল, ' দূর ... এসব ডিজাইন তো হাতিবাগানেই পাওয়া যায় ... ' অনামিকা বলল, ' চল বরং নিউ মার্কেটে যাই
আজ দুর্গা নবমী তিথি । বুকের ভেতর দুখ ভাবনার উতরোল হবার দিন। কেন এমন হয়? সে কি মৃন্ময়ী দেবীর কৈলাসে প্রত্যাবর্তনের সময়কাল সমাগত বলে? নাকি উৎসবের কাল পরিসমাপ্ত হতে চলেছে, আবার সেই গতানুগতিক যাপনে ফিরে যেতে হবে ভেবে অন্তর্দাহে জর্জরিত হয় আমাদের হৃদয়? হয়তো এই দুই কারণেই মনের ভেতর কিছু হারিয়ে ফেলার অস্থিরতা তৈরি হয়। এরপরও কিন্তু আমাদের দীর্ঘ সময় উৎসবের আবহে অবগাহনের পর্ব ... ...
ক্লান্ত ধ্বস্ত জেব্রাকে মুঠোর মধ্যে নিয়ে সিংহ হঠাৎ নিজের দৌড় দিল থামিয়ে; একি তামাশা-নাকি কুয়াশা; সিংহ এমনই হয়; লাভ নেই দুঃখ পেয়ে!!
মিনমিনে এই হাওয়া ঘরে ঢুকে এলোমেলো করে দিচ্ছে সব। পর্দা উড়ছে তো উড়ছেই, বালিশ থিতু হয়ে পড়ে আছে, ধনসম্পদ থিতু হয়ে এ ঘরেই আছে বটে। কাপড় নিয়ে নিয়ে শর্মি চলে গেছে। ওর শরীর দেখা যাচ্ছে না কোথাও তবে বালিশ পড়ে আছে। শর্মি বালিশ নিয়ে যায় নি। সে রেখে গেছে কিছু দায়িত্ব বটে। গোটা মানুষটার দায়িত্ব নিয়ে পিন্টু বাড়ি ও বালিশ পাহারা দিচ্ছে। মানুষটা শর্মির ছেলে যার জন্ম হয়েছিল শর্মির ... ...
১৯৭৮ সালে গ্রহণের সময় দুরদর্শনে পথের পাঁচালী দেখাচ্ছিল ফিলার হিসেব। আর আমাদের পাশের বাড়ির সদ্য সন্তান সম্ভবা কাকিমা, শোয়ার ঘরে আষ্টেপৃষ্টে জানালা বন্ধ করে বসে ছিলেন, শ্বশুর মশাইয়ের ডিক্টাম পালন করতে। "কুসংস্কারে কান দেবেন না" এসব স্লোগান জানালা ভেদ করে বাড়িতে ঢুকতে পারেনি। তারপর ১৯৯৫ সালের অক্টোবরে সকাল নটায় গ্রহণ ছিল। পুরোনো এক্সরে প্লেট কেটে পকেটে নিয়ে অপিস যাচ্ছিলাম। যদি অপিসে ঢোকার আগে চট করে দেখে নেওয়া যায়। সকালের দিকে গ্রহণের সময় ছিল। সেদিন অফিস টাইমে বাস ট্রাম একদম খালি ছিল। সবাই গ্রহণে চামড়া টামড়া পুড়ে যাওয়ার ভয়ে বাড়িতে বসে জানালা বন্ধ করে মাংসভাত খাচ্ছিলো। সে যাই হোক। এইসব পুরোনো গ্রহণ ... ...
অসমের গৌহাটি শহর থেকে প্রায় কুড়ি বাইশ কিলোমিটার দূরে পৌঁছে গেছি। আমাদের গাড়িটা যেখানে দাঁড়াল। সেটাই ভদ্র সভ্য পথের শেষ প্রান্ত। সেখান থেকে চরণবাবুর আশ্রয়ে নিজেকে সঁপে চলা শুরু করেছিলাম। গন্তব্য আরো প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এক মহান ব্যক্তির বাড়ি। ঝোপঝাড় দুদিকে রেখে মাঝখান দিয়ে সরু পথ। কদিন ধরেই গোটা অসম জুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও মুষল ধারায়। কখনও টিপ টিপ ... ...
সকালে হালকা মেঘ থাকলেও এখন আকাশ ঝকঝকে। শরতের এমনটাই দস্তুর। চারিদিকে যত বেনিয়মের বিশৃঙ্খলা, আকাশ তার থেকে আলাদা হয় কি করে ! আজ সকালেই এক সংবেদনশীল চিকিৎসক বন্ধু বার্তা পাঠিয়েছেন, তাঁর অধীনে থাকা সমস্ত অসুস্থ মানুষকে পুজোর এই আনন্দঘন মুহূর্তে সুস্থ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে চান তিনি। এমন আন্তরিক অভীপ্সার কথা পড়ে মনটা খুব ভালো লাগছে। উৎসব মানে তো কেবল জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন নয়, আসলে এ হলো আমাদের আত্মশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ সময়। নিজেকে একটু ইতিবাচক ভাবনায় বদলে ফেললেই গোটা সমাজ বদলে যাবে। এ কিন্তু আমার আন্তরিক বিশ্বাসের কথা।আজ এই সকালে চারিদিক থেকে ভেসে আসছে নানা রকমের শব্দ। ভেসে আসছে পল্লীর আবাসিক সহনাগরিকদের ... ...
সুমনার মনটা ভাল নেই । মুখেও তার একটা ছায়া পড়েছে । সে আগে থেকেই শিরিষ গাছের নীচে এসে বসে আছে । মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই প্রতিবিম্ব হন্তদন্ত হয়ে এসে হাজির হল ।-----' সরি ম্যাডাম... দেরি হয়ে গেল ... ল্যাব ছিল...'----- ' হমম্ ... '------ ' মুখটা কেমন মেঘলা মনে হচ্ছে
১মন খারাপ হলেই পুকুরটার কাছে চলে যাই আমি।এই পুকুরটা আমাদের ভাড়া বাড়ির পেছন দিকের রাস্তায় একটু গেলেই। আদ্ধেক পুকুর বোজানো অবস্থায় আছে। কিন্তু একটা ঘাট এখনো আছে যেখান দিয়ে নেমে জলের কাছে যাওয়া যায়। আমাদের পাড়ার দাদারা, যারা ক্লাস টেন ইলেভেনে উঠেছে তারা লুকিয়ে সিগারেট খেতে অনেক সময় পুকুর পাড়ে আসে। আমাকে দেখলে ওরা কিছু বলে না। মা যদিও বলে আমি নাকি বড় হচ্ছি। আমাকে হাফ প্যান্ট পড়তে দেয় না, ফ্রক পড়ায় বড় ঝুলের। আমি অবশ্য সেভেনে উঠে গেছি। আমি কিন্তু ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ি। বাবা খুঁজে খুঁজে এই স্কুলটা বের করেছে শহরের একটু বাইরে। এত সস্তা সি বিএস ই স্কুল ... ...
পুজোয় দেশের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ আমাদের কোনোদিনই হয়নি , কারণ দেশভাগের ফলে আমাদের মতো অনেককেই বাপ পিতামহের ভিটেমাটি ছেড়ে , হঠাৎ করে সীমারেখা টেনে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে দেওয়া জমিতে নতুন করে বসত গড়ে তুলতে হয়েছে অনেক অনেক শ্রম আর অধ্যবসায়ের দ্বারা। আমি অবশ্য জন্মসূত্রে একশো ভাগ এপারের। তাই মা বাবা ঠাকুমার মুখে তাঁদের ফেলে আসা দেশের বাড়ির নানান গল্প শুনলেও ... ...
কাগজ দেন যিনি সেই রবিদাকে কর্পোরেট কুপন ধরাতে গেলুম। আজকাল আর মাসের পয়সা মাসে দিতে হয়না রবিদাকে। কোম্পানিকে বছরে একবার দিলেই রোজ কাগজ। রবিদা বললেন "পুজোয় কিছু দেবেন না"। একশো দিলুম আরকি আর চোখ চলে গিয়েছিল একপিস বর্তমানের দিকে - শারদীয়া। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যয় লিখেছেন কি? লিখেছেন বটে - রাম বোলা তুলসীদাস। সেটা নাকি ধর্মীয় আখ্যান! লেখকও ... ...
বিবেকানন্দ রোড পেরিয়ে ব্রাহ্মসমাজের বাড়ি। ভিতরের হলে বিশ্বজাগরণ মঞ্চ বলে একটা প্রগতিশীল অরাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আছে আজ। অপরেশ তাকে সকালবেলায় বাজারে বলল, ' আমাদের সমিতির একটা অনুষ্ঠান আছে আজকে ব্রাহ্ম সমাজে , পাঁচটার সময় ... আসুন না ... ভাল লাগবে ... ' অপরেশ বিভূতিবাবুর চেয়ে অনেক
বিশ্বকর্মার সঙ্গে গভীর-ফণী মনসার আঁতাত ;কুটির ছিদ্র করে ফকির কান্ত নিশি তো স্যাঙাত!আদার রস কে ছিনিমিনিমাকড়সার জাল আঠালো;হঠাৎ করেই মৌ বনে'তে -মায়াবী জ্যোৎস্না আলো!?
পুজো আমি একদম মিস করিনা। পুজো একটা বিভীষিকা। তার একটা কারণ নারীঘটিত। পুজো এলেই আমাকে মেয়েদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে হয়। তাতে আমার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের একটু ভূমিকা থাকলেও মূল দোষটা অবশ্যই মেয়েদের। প্রথমত, পুজোয় মেয়েরা সাজে। সাজাটা বড় কথা নয়, এমন সব জিনিসপত্তর পরে, যা অকল্পনীয়। হয়তো একটা শাড়ি পরল, যেটা দেখতে গামছার মতো। কিংবা একটা অদ্ভুত-দর্শন বস্তু, যা দুহাজার বছর আগে ক্লিওপেট্রা পরতেন। একটা পাজামার নামই হল হারেম প্যান্ট। তা, এইসব পরে মিউজিয়ামে ঢুকে থাকলে কোনো সমস্যা ছিলনা, কিন্তু সেগুলো পরে তারা রাস্তায় বেরোয়। এবং মধ্যরাত্রে রাস্তায় বেরোয়। সেই রাস্তায় আবার কত-কিলোওয়াটের-কে-জানে হ্যালোজেন কিংবা নিয়ন আলো জ্বলে। আলোটা অবশ্য মেয়েদের ... ...
পুজোর উৎপাত থেকে কুছ দূর মফস্বলে থাকি। পুজোর বিশ্ব ল্যাদ আমাকেও কামড়েছে। বসে বসে শৈলসুতের স্তোত্র শুনছিলাম আর ভাবছিলাম এতো গুণের আধার সম্পূর্ণ ইনহিবিশন বর্জিত এক খিস্তিবাজ যৌন কর্মী ছাড়া আর কেইবা হতে পারে? মূলবাসী পরম্পরায় মহাবলী হুদুর দুর্গার স্মরণ করি যদিও তাঁর জন্য ঋষিগণ বল্লমের খোঁচা ছাড়া আর কিছু রাখেন না। মহাবলীকে প্রলুব্ধ করেছিলেন এক যৌন কর্মী তারপর গুপ্ত হত্যা। সেই কান্নার পরম্পরায় দাসাঁই পরব। কান্না হয়েই চলেছে আর শৈলসুতের বন্দনাও। সে হোক, কিন্তু শৈলসুতে ছিলেনটা কেডা? তিনি কি আর্যদের নিয়োজিত এক আর্য সম্পূর্ণা, যৌন কর্মী কাম গুপ্ত ঘাতক? নাকি এক পাহাড়ি মেয়ে যাতে দেবতার আর্য গুষ্টি উপগত হয়, ... ...
যুদ্ধ নয় শান্তি চাই ( বাটারফ্লাই সিনকোয়েন) —————————- সুপ্রিয়া চৌধুরী —————- চলো আমরা জাগি চীৎকার করে বলি, যুদ্ধ নয় আর, এবার আসুক শান্তি। হাতে হাত রেখে এসো আজ সবে মিলে গড়ি হিংসা শূণ্য পৃথ্বী। ---------------------- —————————— ... ...
পাড়ায় বাড়িতে বাড়িতে কাশ্মীরি শালওয়ালারা ঢুঁ মারছে। ওদের কাছে সোয়েটারও আছে। মোটামুটি সস্তা। এই বছর দুই হল কাশ্মীরিদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। নিতাইবাবু গতবছর একটা লেডিজ শাল কিনেছিলেন অঞ্জলির জন্য। শালটা গায়ে দিয়ে আয়নার সামনে
সম্প্রতি কবিগুরুর শান্তিনিকেতন ইউনেস্কো স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর মর্যাদা লাভ করেছে। এই নিয়ে আমাদের গর্বের ও আনন্দের কারণ রয়েছে। তবে তারই পাশাপাশি দেখা যায় শান্তিনিকেতনের শিক্ষাব্যবস্থার অবক্ষয় সম্পর্কে বহু বিদ্বান ব্যাক্তির যুক্তিযুক্ত হতাশা ও গ্লানি ও এই প্রসঙ্গে প্রবল ভাবে ব্যক্ত হচ্ছে নানা সংবাদপত্রে ও সমাজমাধ্যমে। শান্তিনিকেতনের এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মুহূর্তকে তাঁরা এক আত্মসমালোচনার মুহূর্ত হিসেবে তুলে ধরতে চান যাতে রাবীন্দ্রিক ... ...