এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হেদুয়ার ধারে - ১৫৮ 

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৮ জুলাই ২০২৪ | ১২৪ বার পঠিত
  • | | | | | ৬  | ৭  | ৮  | ৯  | ১০  | ১১  | ১২  | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬  | ১৭  | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২  | ২৩  | ২৪  | ২৫  | ২৬ | ২৭ | ২৮  | ২৯  | ৩০ | ৩১  | ৩২  | ৩৩  | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬  | ৩৭  | ৩৮  | ৩৯  | ৪০  | ৪২  | ৪৩  | ৪৪  | ৪৫  | ৪৬ | ৪৭  | ৪৮  | ৪৯  | ৫০  | ৫১  | ৫২ | ৫৩ | ৫৪ | ৫৫ | ৫৬ | ৫৭ | ৫৮ | ৫৯ | ৬০ | ৬১ | ৬২ | ৬৩ | ৬৪ | ৬৫ | ৬৬ | ৬৭ | ৬৮ | ৬৯ | ৭০ | ৭১ | ৭২ | ৭৩ | ৭৪ | ৭৫ | ৭৬ | ৭৭ | ৭৮ | ৭৯ | ৮০ | ৮১ | ৮২ | ৮৩ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৬ | ৮৭ | ৮৮ | ৮৯ | ৯০ | ৯১ | ৯২ | ৯৩ | ৯৪ | ৯৫ | ৯৬ | ৯৭ | ৯৮ | ৯৯ | ১০০ | ১০১ | ১০২ | ১০৩ | ১০৫ | ১০৬ | ১০৭ | ১০৮ | ১০৯ | ১১০ | ১১২ | ১১৩ | ১১৪ | ১১৫ | ১১৬ | ১১৭ | ১১৮ | ১১৯ | ১২০ | ১২১ | ১২২ | ১২৩ | ১২৪ | ১২৫ | ১২৬ | ১২৭ | ১২৮ | ১২৯ | ১৩০ | ১৩১ | ১৩২ | ১৩৩ | ১৩৪ | ১৩৫ | ১৩৬ | ১৩৭ | ১৩৮ | ১৩৯ | ১৪০ | ১৪১ | ১৪২ | ১৪৩ | ১৪৪ | ১৪৫ | ১৪৬ | ১৪৭ | ১৪৮ | ১৫০ | ১৫১ | ১৫২ | ১৫৩ | ১৫৪ | ১৫৫ | ১৫৬ | ১৫৭ | ১৫৮ | ১৫৯ | ১৬০ | ১৬২ | ১৬৩ | ১৬৪ | ১৬৫ | ১৬৬ | ১৬৭
    মজিদ আর বাবলু এখন সন্তোষের সঙ্গে কাজ করছে। সন্তোষের দোকানেও বসে।
    সন্তোষ দোকানে বসেই বলল, ' তোদের একটা খবর করতে হবে। কানুদা মার্ডার হয়েছে জানিস তো ? সাগরদার ডানহাত ছিল ... '
    মজিদ ঘাড় নাড়ল। বাবলু বলল, ' হ্যাঁ জানি। সাগরবাবুর ডানহাত ছিল। দেখিনি অবশ্য কোনদিন ... '
    ---- ' হ্যাঁ ... ঠিক। এমনি তো ছেড়ে দেওয়া যাবে না। কি বলিস ? '
    ----- ' না না ... তা হয় নাকি ! বদলা নিশ্চই নিতে হবে ... ' বাবলু বলল।
    মজিদ আবার ঘাড় নাড়ল, যার মানে সে সঙ্গে আছে।
    ----- ' হ্যাঁ ওই ... সেটাই আর কি ... বলছি আমি ...'
    ----- ' কি করতে হবে ? ' মজিদ বলল।
    ---- ' তেমন কিছু না ... কে লোক লাগাল সেটা বার করতে হবে। আগে দেখবি স্বরূপ খাঁড়ার লোক কিনা। ওদিক থেকেই শুরু করবি ... আমি খালপারের দিকটা দেখছি ... '
    ----- ' হুঁ বুঝেছি ... দেখে নিচ্ছি ... ' বাবলু বলল।

    দুপুর দুটো নাগাদ দোকান বন্ধ করে সন্তোষ বেরিয়ে পড়ল।
    প্রথমে গেল দেশবন্ধু পার্কের পিছনে শ্যামবাজার খালপারে।
    রোদ্দুর জমজম করছে। দুটো ছই দেওয়া নৌকো বাঁধা রয়েছে। তিন চারজন খালের জলে ছিপ ফেলে বসে আছে, চ্যাং, খলসে যা ওঠে। একটু ফারাকে আঠ দশটা ঝুপড়ি। দু একটার সামনে দড়ির খাটিয়া পাতা রয়েছে।
    সন্তোষ খালের ধারে গিয়ে দাঁড়াল। একপাশে দাঁড়িয়ে মাছ ধরা দেখতে লাগল।
    মিনিট দশেক এইভাবে কাটার পর সন্তোষ দেখল ওই মাছ ধরা লোকগুলোর মধ্যে কালো হাতকাটা গেঞ্জি পরা একজন রোগামতো লোক তাকে মাঝে মাঝে ঘুরে ঘুরে দেখছে। সন্তোষ চোখ ঘোরাল না, ওদের দিকেই তাকিয়ে রইল। তার মনে হচ্ছে, ছিপে অবশ্যই মাছ উঠবে।
    আরও মিনিট পাঁচেক গেল। খালের জল থেকে দু চারটে ক'রে মাছ উঠছে। ছিপ ফেলা লোকগুলো খুব উৎসাহিত বোধ করছে। আর সেই লোকটা মাঝে মাঝে ঘুরে ঘুরে দেখছে সন্তোষের দিকে।
    সন্তোষ এবার পায়ে পায়ে এগিয়ে গেল মাছধরা লোকগুলোর দিকে।
    ওই কালো গেঞ্জি লোকটা উঠে দাঁড়াল। সন্তোষের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল, ' দাদা কি এদিকে থাকেন নাকি ? '
    সন্তোষ একটা দিক দেখিয়ে বলল, ' হ্যাঁ ... ওই ওদিকে থাকি ... '
    কোনদিক দেখাল ঠিক বোঝা গেল না। তারপর বলল, ' শুনলাম সেদিন এখানে একটা মার্ডার হয়েছে ... তাই জায়গাটা দেখতে এলাম ... '
    কথাটা শুনে চারটে লোকই কেমন গুটিয়ে গেল। সন্তোষের আপাদমস্তক মাপতে লাগল সন্দেহ মাখা চোখে। সন্তোষকে বোধহয় 'খোঁচড়' -এর লোক ভেবে নিয়ে সতর্ক হয়ে গেল। ছিপ টিপ গুটিয়ে নিয়ে একজন বলল, ' নাঃ ... আজ আর উঠবে না ... চল যাই ... '
    সন্তোষ বলতে লাগল, ' এরকম শান্ত জায়গা ... এখানে একজনের মার্ডার হয়ে গেল ! আশ্চর্যের ব্যাপার ... এখানে কে খুন করবে ? '
    কথাটায় কাজ হল। কালো গেঞ্জি পরা লোকটা উত্তেজনার মাথায় তড়িঘড়ি বলে উঠল, ' আরে না না ... মার্ডার এখানে কেন হবে ... পাগল নাকি ? করে দিয়ে এখানে বডি ফেলে গেছে ... একদম সাফসুফ কথা ... '
    বলে ফেলেই সঙ্গে সঙ্গে সামাল দেবার চেষ্টা করল।
    ----- ' না ... এমনি বললাম আর কি ... আমরা ওসবের কি জানি ... হ্যাঃ হ্যাঃ ... '
    সন্তোষ ঘাঘু লোক। জায়গাটা ধরে নিল। বলল, ' তাই তো ... আমিও তো সেটাই ভাবছি ... এখানে কি ক'রে ... আজিব ব্যাপার ... কিন্তু খালাসটা হল কোথায় ? '
    ওদের মধ্যে একটা লোকের সতর্কতার বাঁধন আবার আলগা হয়ে গেল, বোধহয় উদ্বেগজনিত কারণে।
    তার সঙ্গীরা তাকে সতর্ক করার আগেই সে হড়বড়িয়ে বলে উঠল, ' নিজের চোখে দেখলাম। তা ধরুন রাত বারোটা হবে ... পেচ্ছাপ করতে বাইরে এসেছিলাম ... চেপে গেল। একটা ট্যাক্সি এসে দাঁড়াল চুপচাপ। চারটে লোক একটা বডি বার করে ফেলে দিয়ে এক মিনিটের মধ্যে হাওয়া ওই আর জি করের দিকে। গাড়িতে স্টার্ট মারাই ছিল ... '
    সন্তোষ চোখ ছানাবড়া করে লোকটার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, ' এ তো সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার ভাই ... শুনেই তো আমার হাত পা কাঁপছে। তোমার তো খুব সাহস আছে বলতে হবে ... আমি তো রাত দুপুরে এসব দেখলে প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলতাম ... মাইরি বলছি ... '
    লোকটা সন্তোষের মুখে তার প্রশংসা শুনে লাজুক ভঙ্গীতে হাসল। সন্তোষ বুঝতে পারল নিতান্তই গোবেচারা নীরিহ লোক এরা।
    তাকে খুব সম্ভবত পুলিশের লোক ভেবে এরা তাকে অগ্রাহ্য করে চলে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
    একেবারেই সরল প্রকৃতির লোকজন।
    সন্তোষ আবার বলল, ' কি অদ্ভুত ব্যাপার না ? কোন আওয়াজ নেই... কিছু নেই, চুপচাপ ডেডবডি নামিয়ে দিয়ে চলে গেল ... একটা কথাও কেউ বলল না ... '
    প্রশংসিত লোকটা বোধহয় খানিকটা অনুপ্রাণিত হবার বশে বলে উঠল, ' দ্যাখেন ... সত্যি কথা বলতে কি একটা নাম আমার কানে এল যেন ... খুব আস্তে বলছিল যদিও ... মানে নিশুত রাত বলেই শোনা গেল ... '
    সন্তোষ নির্লিপ্ত ভাব বজায় রেখে বলল, ' ও ... তাই নাকি ? কি আর বলবে ... হাড় বজ্জাত লোক সব।
    ওদের কথা সব ফিসফিসে, কিছু শোনার যায় না ... '
    এবার ওই মাছধরা লোকটা বোধহয় নিজের কৃতিত্ব জাহির করার জন্য ফস করে বলে বসল, ' তেমন কিছু শুনতে না পেলেও একটা নাম যেন পরিষ্কার শুনলাম দুবার ... '
    সন্তোষ সুকৌশলে নিজের অভিপ্রায় ঢেকে রাখল।
    নির্লিপ্তির ভান করে বলল, ' সে কি আর শোনা যায় ? ... যাকগে ... কি দরকার আমাদের ... '
    কিন্তু লোকটা ততক্ষণে সন্তোষের টোপ গিলে ফেলেছে। সে না বলে ছাড়বে না ঠিক করেছে। তার সঙ্গীরা, বিশেষ করে কালো হাতকাটা গেঞ্জি পরা লোকটা তাকে আকারে ইঙ্গিতে থামাবার চেষ্টা করছিল। কিন্তু ফল হল না কিছু।
    সে বলে ফেলল, ' না ... দেখুন ... সত্যি কথা বলতে কি, নাম কিছু শুনতে পাইনি ... ওরা কি আর অত আনাড়ি ? '
    তার সাথীরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। সন্তোষ ভাবল, ' যাঃ গেল ... '
    কিন্তু লোকটা এখনও থামেনি। সে বলল, ' যেটা দিয়ে মেরেছে, মনে হয় সেই অস্তরটার নাম বলছিল ... '
    --‐- ' আচ্ছা ! কিরকম কিরকম ? '
    ----- ' দু তিনবার শুনলাম খাঁড়া খাঁড়া। মনে হয় খাঁড়া দিয়ে মেরেছে শালারা ... ইশশ্ ... একটা জলজ্যান্ত মানুষকে এইভাবে ... মায়ের কোন মন্দিরের খাঁড়া কে জানে ... '
    সন্তোষের বুকের ভিতর দপ করে একটা আলো জ্বলে উঠল।
    সে অবশ্য উত্তেজনাটা বাইরে আনল না।
    নিপাট ভঙ্গীতে বলল, ' সে আবার কি ! খাঁড়া দিয়ে মানুষ খুন ? তা কোন মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বলি দিল বেচারাকে জানার খুব ইচ্ছে রইল ... যাক চলি এখন ... এসব কথা পাঁচকান না করাই ভাল ... কার মনে কি আছে ... '
    কালো গেঞ্জি বলল, ' সেটাই তো ... সেটাই তো ... এ গাধাটা বোঝে না কিছু ... '
    সন্তোষ পিছন ফিরল। খালের জলে নৌকো দুটো হাওয়ার ধাক্কায় হাল্কা হাল্কা দুলছে। ছইয়ের ওপর রোদ পড়েছে তেরছা হয়ে।

    সন্তোষ বেলা সাড়ে চারটে নাগাদ চোরবাগানের এক ঘিঞ্জি অপরিসর গলিতে গিয়ে পৌঁছল। গলিতে ঢুকে ডানদিকে একটা ছোট একতলা ভাঙাচোরা, পলেস্তারা খসা বাড়ি। এখানে কানুর দাদা বৌদি এবং দুই ছেলেমেয়ে থাকে। বাড়িটা খুব সম্ভবত পৈত্রিক। বহুদিন কোন সংস্কার হয়নি। কানু তার দাদা বৌদির সঙ্গে থাকত।
    কানুর দাদা কি করেন কে জানে। চল্লিশ বিয়াল্লিশ বছরের মতো বয়স হবে। বাড়িতেই ছিলেন।
    তিনি বেরিয়ে এসে বললেন, ' আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না। '
    সন্তোষ সরাসরি বলল, ' আমি সাগর মন্ডলের সঙ্গে আছি। কানুকে আমার বন্ধু বলতে পারেন ...'
    কানুর দাদা খুব একটা উৎসাহ দেখালেন না।
    খুব সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিলেন, ' ও ... '
    বাড়ির ভিতরে আমন্ত্রণ জানালেন না সন্তোষকে। আবার অভদ্র আচরণও করলেন না। বাড়ির বাইরে দরজার দুপাশে দুটো ছোট রক আছে। উনি সন্তোষকে বললেন, ' আসুন ... এখানে বসুন ... '
    বলে নিজে বসে পড়লেন সেখানে। সন্তোষও তার পাশে বসল।
    সন্তোষ কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল, ' এমনি দেখা করতে এলাম ... সাগরদাও আসবে পরে .... খুব ভেঙে পড়েছে কানুর এই ব্যাপারটায়...'
    কানুর দাদা প্রীতিময়বাবু বললেন, ' এরকম কিছু যে হবে সেটা আমাদের জানাই ছিল। খুব একটা অবাক হইনি ... সবই কর্মফল আর কি ... '
    সন্তোষ প্রীতিময়বাবুর ভাবনার গতি প্রকৃতি মোটামুটি আন্দাজ করতে পারছে। প্রীতিময় যে অন্য লাইনের লোক সেটাও বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না তার। কিন্তু সে সব নিয়ে তর্কাতর্কি করার মেজাজে সে এখন নেই। কানু চলে যাওয়ায় তার দাদার মনে কোন তাপ উত্তাপ আছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং মনে হচ্ছে হাঁফ ছেড়ে বেঁধেছে।
    প্রীতিময় আবার বলল, ' ও ছোটবেলা থেকেই এরকম ধরণের। তারপর এখন তো বদসঙ্গে পড়ল
    .... লোকের ওপর ঝামেলা মাস্তানি করলে তার ফলও তো ভুগতে হবে ... এ তো জানাই কথা ... '
    সন্তোষ বুঝতে পারল কেন এ দেশের কিছু হয় না। যে দেশের মানুষ এরকম ধান্দাবাজ, স্বার্থপর সে দেশের কি হবে। বেশ বোঝা যাচ্ছে ভদ্রলোক সাগরের নামে খোলাখুলি ভাল মন্দ কিছু বলতে পারছে না। কিন্তু ভিতরে জ্বালা আছে।
    কিন্তু সন্তোষ কোন বাতবিতন্ডায় জড়ানোর জন্য এখানে আসেনি। সে এসেছে খবর জোগাড় করতে। সেটাই তার কাজ। ওসব তক্কাতক্কি নিখিল স্যারেরা করবে।
    কানুর দাদা বোধহয় চুপচাপ থাকতে পারেন না।
    বলতে লাগলেন, ' কখন কোথায় বেরিয়ে যাচ্ছে তার ঠিক আছে নাকি ? এক পয়সা রোজগারের মুরোদ নেই, সমাজসেবা করছে ... হ্যাঃ। লোকের উপকার করতে গেলে আগে নিজে ওজনদার হতে হয় ... হ্যাঃ ... '
    সন্তোষ চুপচাপ রইল, কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে। ওটা তার কাজ না।
    ------ ' কোন বাছবিচার নেই ... যে যখন ডাকছে
    বেরিয়ে যাচ্ছে। কচিখোকা নাকি ... হ্যাঃ ... এই তো সেদিনই ধর না ... বেলা তিনটে নাগাদ ... '
    সন্তোষ চুপ করে রইল কোন কথা না বলে। সে জানে প্রীতিময় নিশ্চিত কিছু বলবে এবার।
    ----- ' .... হ্যাঁ ... আমি তখন দোকান থেকে ফিরেছি ভাত খাওয়ার জন্য ... দেখি কে একটা ডাকছে কানুকে ... কানু তাড়াতাড়ি গায়ে জামাটা গলিয়ে বেরিয়ে গেল। ভাবলাম, নিশ্চয়ই কোন জরুরী সমাজসেবার ডাক পেয়েছে ... হ্যাঃ ... '
    সন্তোষ এবার নম্রকন্ঠে বলল, ' যে ডাকতে এসেছিল তাকে চেনেন নাকি দাদা ? '
    ------ ' একটু যেন চেনা চেনা লাগল, এদিককারই ছেলে মনে হল তবে ঠিক মনে করতে পারলাম না ... '
    ----- ' কোথায় যেতে হবে কিছু বলল ? '
    ----- ' বলেছে হয়ত। আমার কানে কিছু আসেনি। তারপর তো হুড়ুম দুড়ুম করে বেরিয়ে গেল। ও হ্যাঁ ... শক্তিপদর বাড়ি, না কি একটা বলল। শক্তিপদ বিশ্বাসের বাড়ি তো ওই মোড়ে ... ফার্নিচারের ব্যবসা ... পয়সাওয়ালা লোক ... তাকে নাকি কারা মারধর করেছে। সে সব মেটাবার জন্যই বোধহয় কানুকে ডাকতে এসেছিল ... '
    ----- ' ও ... তা আপনি শক্তিপদবাবুর ওখানে কোন খোঁজ করেননি কানু না ফেরার পর ... '
    ----- ' না না ... আমি ওসব ঝামেলায় জড়াতে যাব কেন ? তাছাড়া আমি অত বুঝবই বা কি করে ? কানু তো ওরকম প্রায় দিনই রাত্রে বাড়ি ফিরত না। এখানে ওখানে অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকত ... আমার কি অত ফুরসত আছে নাকি ? '
    ----- ' আপনি স্বরূপ খাঁড়া কিংবা বংশীলালকে চেনেন নাকি ? মানে নাম শুনেছেন ? '
    সন্তোষ লক্ষ্য রাখল প্রীতিময়ের মুখের দিকে। তার নজর এড়াল না, কানুর দাদা কেমন যেন চমকে উঠলেন।
    বললেন, ' না না ... আমি ওসব কাউকে চিনি না ... আমি ছাপোষা লোক ... এরা কে ? '
    ----- ' তা ভাল। এসব লোকজন না চেনাই ভাল। এই তো দিব্যি আছেন ...'
    ----- ' কোথায় আর দিব্যি ভাই .... সংসার টানতে জেরবার হয়ে যাচ্ছি। কাপড়ের দোকানের কর্মচারী। বুঝতেই পারছ ... দুটো উপরি রোজগারের ধান্দায় হন্যে হয়ে ঘুরি ... '
    ----- ' হমম্ .... বুঝলাম ... ' সন্তোষ বলল আপনমনে।
    ----- ' কি বুঝলে ভাই ? তুমি তো দেখছি পুলিশের মতো জেরা করতে শুরু করলে ...'
    ----- ' আরে না দাদা, কি যে বলেন ... আমার যদি অত যোগ্যতা থাকত, তা'লে তো হয়েই গিয়েছিল ... আচ্ছা ঠিক আছে দাদা ... আমি আসি এখন ... আবার হয়ত দেখা হবে ... একটু সাবধানে থাকবেন কিছুদিন ... বলা তো যায় না ... '

    বিবেকানন্দ রোডের দিকে হাঁটতে হাঁটতে সন্তোষের মনে হল কানুর দাদা বড় বেশি কথা বলে। এটা কি তার স্বভাব, নাকি শুধু তার সঙ্গেই এত কথা বলল ? অভাবে স্বভাব নষ্ট হয় এটা অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই মিথ্যা নয়।
    সে এটাও ভাবল, দেখা যাক মজিদরা কি খবর নিয়ে আসে। তারপর নয় সবাই মিলে যোগ বিয়োগ করতে বসব।
    সন্ধেবেলায় নিখিল স্যারের ওখানে যেতে হবে।

    ( চলবে )

    ********************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | ৬  | ৭  | ৮  | ৯  | ১০  | ১১  | ১২  | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬  | ১৭  | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২  | ২৩  | ২৪  | ২৫  | ২৬ | ২৭ | ২৮  | ২৯  | ৩০ | ৩১  | ৩২  | ৩৩  | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬  | ৩৭  | ৩৮  | ৩৯  | ৪০  | ৪২  | ৪৩  | ৪৪  | ৪৫  | ৪৬ | ৪৭  | ৪৮  | ৪৯  | ৫০  | ৫১  | ৫২ | ৫৩ | ৫৪ | ৫৫ | ৫৬ | ৫৭ | ৫৮ | ৫৯ | ৬০ | ৬১ | ৬২ | ৬৩ | ৬৪ | ৬৫ | ৬৬ | ৬৭ | ৬৮ | ৬৯ | ৭০ | ৭১ | ৭২ | ৭৩ | ৭৪ | ৭৫ | ৭৬ | ৭৭ | ৭৮ | ৭৯ | ৮০ | ৮১ | ৮২ | ৮৩ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৬ | ৮৭ | ৮৮ | ৮৯ | ৯০ | ৯১ | ৯২ | ৯৩ | ৯৪ | ৯৫ | ৯৬ | ৯৭ | ৯৮ | ৯৯ | ১০০ | ১০১ | ১০২ | ১০৩ | ১০৫ | ১০৬ | ১০৭ | ১০৮ | ১০৯ | ১১০ | ১১২ | ১১৩ | ১১৪ | ১১৫ | ১১৬ | ১১৭ | ১১৮ | ১১৯ | ১২০ | ১২১ | ১২২ | ১২৩ | ১২৪ | ১২৫ | ১২৬ | ১২৭ | ১২৮ | ১২৯ | ১৩০ | ১৩১ | ১৩২ | ১৩৩ | ১৩৪ | ১৩৫ | ১৩৬ | ১৩৭ | ১৩৮ | ১৩৯ | ১৪০ | ১৪১ | ১৪২ | ১৪৩ | ১৪৪ | ১৪৫ | ১৪৬ | ১৪৭ | ১৪৮ | ১৫০ | ১৫১ | ১৫২ | ১৫৩ | ১৫৪ | ১৫৫ | ১৫৬ | ১৫৭ | ১৫৮ | ১৫৯ | ১৬০ | ১৬২ | ১৬৩ | ১৬৪ | ১৬৫ | ১৬৬ | ১৬৭
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন